আমদানির লাগাম টেনে ধরতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া নানামুখী পদক্ষেপের সুফল মিলতে শুরু করেছে। কমছে পণ্য আমদানির ঋণপত্র বা এলসি খোলার পরিমাণ। আপাতদৃষ্টিতে এতে সরকার পরিতৃপ্তির ঢেকুর তুলতে পারে।
কিন্তু এর উল্টোপিঠও আছে। দেশে নতুন বিনিয়োগের অন্যতম নির্দেশক মূলধনি যন্ত্রপাতি (ক্যাপিটাল মেশিনারি) আমদানি এক ধাক্কায় তলানিতে নেমে এসেছে। শিল্পের কাঁচামাল আমদানিও কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক পণ্য আমদানির সবশেষ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য মাত্র ২২ কোটি ১১ লাখ ডলারের এলসি (ঋণপত্র) খুলেছেন বাংলাদেশের শিল্পদ্যোক্তারা। এই অঙ্ক গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে ৫৬ শতাংশ কম।
২০২১ সালের জুলাই মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির দ্বিগুণেরও বেশি ৫০ কোটি ডলারের এলসি খুলেছিলেন শিল্পেদ্যোক্তারা।
এর অর্থ হচ্ছে, ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা কলকারখানা স্থাপনে আগের চেয়ে যন্ত্রপাতি আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলার পরিমাণ অনেক কমিয়ে দিয়েছেন। এতে দেশে বিনিয়োগ ও উৎপাদন ‘ধস’ নামার একটা অশনিসংকেত পাওয়া যাচ্ছে। কারখানা সম্প্রসারণ হোক অথবা নতুন কারখানা স্থাপন হোক মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমা- এটাই হলো তার পরিষ্কার ইঙ্গিত।
২০২১ সালের জুলাই মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির দ্বিগুণেরও বেশি ৫০ কোটি ডলারের এলসি খুলেছিলেন শিল্পেদ্যোক্তারা। ফাইল ছবি
টাকার বিপরীতে আমেরিকান মুদ্রা ডলারের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় শিল্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা।
তারা বলেছেন, পণ্য আমদানির জন্য ব্যাংকগুলো ১১০ টাকার বেশি নিচ্ছে। এতে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি খরচ ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে। এত বেশি খরচ করে যন্ত্রপাতি আমদানি করে শিল্প স্থাপন করলে সেই শিল্প লাভজনক হবে কি না- তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। সে কারণেই সবাই মূলধনি যন্ত্রপাতি কমিয়ে দিয়েছেন বলে মনে করছেন তারা।
মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি করে উদ্যোক্তারা সাধারণত নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপন বা কারখানার সম্প্রসারণ করে থাকেন। অর্থাৎ শিল্প খাতে বিনিয়োগ বাড়ে। বিনিয়োগ বাড়লে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে। সামগ্রিক অর্থনীতিতে গতিশীলতা আসে।
কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে তথ্য দিচ্ছে, তাতে এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে, আগামী দিনগুলোতে দেশে শিল্প খাতে বিনিয়োগ কমবে। আর বিনিয়োগ কমা মানে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে না। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে না। সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেল এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে ঘিরে দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির যে আবহ দেখা দিয়েছিল, তা কিছুটা হলেও হোঁচট খেয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী নেতা ও অর্থনীতির গবেষকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে (১২ মাস, ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন) মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ৬৪৬ কোটি ৩৭ লাখ (৬.৪৬ বিলিয়ন) ডলারের এলসি খুলেছিলেন উদ্যোক্তারা, যা ছিল আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) চেয়ে ১৩ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি।
গত বছরের আগস্ট থেকে দেশে আমদানি ব্যয় বাড়তে থাকে। বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়। টাকার বিপরীতে ডলারের দর অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকে। এপ্রিল মাস থেকে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানি ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরতে একটার পর একটা পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। যার সুফল জুন মাস থেকে পড়া শুরু করে। জুলাই মাসে তা ভালোভাবে দৃশ্যমান হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, এপ্রিল মাসের আগে গত অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির এলসি খোলার পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। ডলারের দাম বাড়ায় ১৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে অর্থবছর শেষ হয়।
ডলারের বাজারে অস্থিরতা চলছে বেশ কয়েক মাস ধরে। বেড়েই চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর এই মুদ্রার দর। কমছে টাকার মান। এক বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে ১২ শতাংশের বেশি।
গত বছরের ২৫ আগস্ট আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলার-টাকার বিনিময় হার ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ ওই সময় ১ ডলার কিনতে ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা লাগত। গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার লেগেছে ৯৫ টাকা।
কিছুদিন আগে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দর ১২০ টাকায় উঠেছিল। এখন অবশ্য তা ১১০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। ব্যাংকগুলো ১০৪ টাকা থেকে ১০৭ টাকায় নগদ ডলার বিক্রি করছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক বৃহস্পতিবার এলসি খুলতে আমদানিকারকদের কাছ থেকে ১১৪ টাকা নিয়েছে। রেমিট্যান্স এনেছে ১০৯ টাকা ২০ পয়সায়।
দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা করোনা মহামারির ধকল কাটতে না কাটতেই ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচ লফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। যার চাপ পড়ে অর্থনীতিতে। আমদানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স না বাড়ায় বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ১২ জুলাই ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। গত দেড় মাসে তা আরও কমে বৃহস্পতিবার ৩৯ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য ৭৩৮ কোটি ২৬ লাখ (৭.৩৮ বিলিয়ন) ডলারের এলসি খুলেছিলেন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা, যা ছিল ৯ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর আগের মে মাসে ৮২০ কোটি ডলারের এলসি খোলেন ব্যবসায়ীরা। এর অর্থ এক মাসের ব্যবধানে প্রায় ৮২ কোটি ডলার সাশ্রয় হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য আমদানির জন্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তারা মোট ৯ হাজার ২২৩ কোটি ৪৯ লাখ (৯২.২৩ বিলিয়ন) ডলারের এলসি খুলেছেন, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি।
২০২০-২১ অর্থবছরে এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ৭০৩ কোটি ৭৪ লাখ (৬৭.০৩ বিলিয়ন) ডলার।
করোনা মহামারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই আমদানি খাতে খরচ বাড়তে থাকে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য ৫১৪ কোটি ৫৩ লাখ (৫.১৪ বিলিরয়ন) ডলারের এলসি খোলা হয়। আগস্টে তা এক লাফে ৪৫ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়ে ৭১৮ কোটি ৪১ লাখ ডলারে ওঠে। সেপ্টেম্বরে তা আরও বেড়ে ৭৭৭ কোটি ডলার দাঁড়ায়। অক্টোবরে এলসি খোলা হয় ৭৪২ কোটি ১৬ লাখ ডলারের।
নভেম্বরে এলসি খোলা হয় ৮১০ কোটি ৬৯ লাখ (৮.১০ বিলিয়ন) ডলারের। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক মাসে এলসি খোলার পরিমাণ ৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায় ওই মাসে। ডিসেম্বরে এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৮৬৪ কোটি ৬২ লাখ ডলার।
চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৮২৮ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের এলসি খোলেন ব্যবসায়ীরা। পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে অবশ্য কমে ৭১০ কোটি ডলারে নেমে আসে। ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিন হওয়ায় এলসি খোলার পরিমাণও কমেছিল বলে জানান ব্যাংকাররা।
মার্চে ৮৯০ কোটি ২৬ লাখ ডলারের এলসি খোলেন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা, যা ছিল এক মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি এলসি খোলার পরিমাণ।
এপ্রিলে তা কমে ৮২৮ কোটি ৯৭ লাখ ডলারে নেমে আসে। মে মাসে এলসি খোলা হয় ৮২০ ডলারের। জুনে খোলা হয় ৭৩৮ কোটি ২৭ লাখ ডলারের এলসি। সর্বশেষ জুলাই মাসে তা আরও কমে ৫৬৯ কোটি ১০ লাখ ডলারে নেমে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে শিল্পের কাঁচামাল আমদানির এলসি কমেছে ১০ শতাংশের মতো। এই মাসে ১৮৯ কোটি ১০ লাখ ডলারেরিএলসি খোলা হয়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে খোলা হয়েছিল ২১০ কোটি ১৬ লাখ ডলার।
জুলাইয়ে জ্বালানি তেল আমদানির এলসি খরচ বেড়েছে ৯৩ শতাংশ। গত বছরের জুলাই মাসে এলসি খোলঅ হয়েছিল ৫০ কোটি ৫৮ লাখ ডলারের। এই বছরের জুলাইয়ে খোলঅ হয়েছে ৯৭ কোটি ৫৭ লাখ ডলার।
অন্যদিকে খাদ্য আমদানির এলসি খোলা পরিমাণ বেড়েছে ২৪ শতাংশের মতো।
‘মূলধনি যন্ত্রপাতির এলসি না কমে অন্য সব পণ্যের এলসি কমলে খুব ভালো হতো’ এই মন্তব্য করে গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এবং ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানি কমা মানে, ভবিষ্যতে বিনিয়োগ কমে যাওয়া। অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কিন্তু এ কথাও ঠিক যে, একটি কঠিন সময় পার করছে গোটা বিশ্ব। আমরাও তার বাইরে নই। এই অবস্থায় ডলারের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। স্বাভাবিক কারণে ব্যবসায়ীরা আমদানি কমিয়ে দিয়ে অপেক্ষা করছেন। বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন। পরিস্তিতি যখন স্বাভাবিক হবে, তখন আবার আমদানি করবেন। কিন্তু কবে স্বাভাবিক হবে, সেটাই এখন বড় বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘বেশ কিছু দিন ধরে বাজারে ডলারের তীব্র সংকট চলছে। ব্যাংকগুলো চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিদিন যে ডলার বিক্রি করছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম; সরকারের আমদানি খরচই মিটছে না তাতে। বেসরকারি ব্যাংকগুলো কোনো ডলার পাচ্ছে না। সে কারণেই তারা প্রবাসীদের কাছ থেকে বেশি দরে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করছে। বাধ্য হয়ে এলসি খুলতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশি দর রাখছে।’
‘একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েই চলেছে। দুর্বল হচ্ছে টাকা। এখন যে করেই হোক টাকাকে শক্তিশালী করতে হবে।’
‘তবে সুসংবাদ হচ্ছে, সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের ফলে আমদানি ব্যয় কমছে। রেমিট্যান্স বাড়ছে। এটা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। দেখা যাক কী হয়?’
বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ চেম্বারের বর্তমান সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অন্য সব পণ্যের সঙ্গে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমবে-এটাই স্বাভাবিক। কেননা, ১১৪ টাকা দিয়ে ডলার কিনে ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানি করে শিল্প স্থাপন করলে, সেই কারখানা যখন উৎপাদনে যাবে-তা থেকে মুনাফা আসবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সে কারণেই উদ্যোক্তারা আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।’
‘এতে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ঠিক। কিন্তু লোকসান হতে পারে-এমন আশঙ্কা থেকে তো কোনো ব্যবসায়ী শিল্প স্থাপন করবে না।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে একটি চুক্তি এবং আটটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার চার দিনের চীন সফরের তৃতীয় দিন শুক্রবার দুই দেশের মধ্যে এ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও স্মারকগুলো স্বাক্ষর হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে রয়েছে দুই দেশের কালজয়ী সাহিত্য ও শিল্পকর্মের অনুবাদ ও সৃজন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও খবর আদান-প্রদান, গণমাধ্যম, ক্রীড়া এবং স্বাস্থ্য খাতে বিনিময় সহযোগিতা। এর পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় চীন সফরে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ বিষয়ে সহযোগিতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়েছে।
এগুলো হলো বিনিয়োগ আলোচনা শুরু করা, চীনের বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু, মোংলা বন্দরের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ, একটি রোবট ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ এবং একটি কার্ডিয়াক সার্জারি গাড়ি অনুদান।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের উত্থাপিত বিষয়গুলো চীন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং।
স্থানীয় সময় শুক্রবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট এ কথা জানান।
ড. ইউনূসের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্টের বৈঠককে অত্যন্ত সফল উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ইউএনবিকে বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি বিষয় উত্থাপন করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশকে দেওয়া চীনা ঋণের সুদের হার কমানো ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় দেশটির সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়টি ছিল।’
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে আলোচনা অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ, গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ হয়েছে।’
প্রেস সচিব বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার এটি ছিল প্রথম দ্বিপক্ষীয় বিদেশ সফর। এখন পর্যন্ত এটি একটি বড় সফলতা।’
প্রেসিডেন্ট শির বক্তব্যের বরাতে শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও কারখানা স্থাপনে চীন তার দেশের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করবে।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট শি ফুজিয়ান প্রদেশের গভর্নর থাকাকালীন দুইবার বাংলাদেশ সফর করেছেন এবং ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে তিনি পড়াশোনা করেছেন। সে কথাও উল্লেখ করেছেন চীনের রাষ্ট্রপ্রধান।
প্রেসিডেন্ট শির উদ্বৃতি দিয়ে শফিকুল আলম বলেন, তিনি বাংলাদেশি আম ও কাঁঠাল খেয়েছেন। এগুলো সুস্বাদু। আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশ আগামী মৌসুমে এ দুটি ফল চীনে প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি করবে।
চীনা প্রেসিডেন্ট ও প্রধান উপদেষ্টা চীনের পিপলস গ্রেট হলে করা বৈঠকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
তারা দুই দেশের সম্পর্ককে জোরদার করা ও ঢাকা-বেইজিংয়ের পারস্পরিক ও কৌশলগত স্বার্থকে এক নতুন উচ্চতায় নেওয়ার উপায় নিয়েও আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের বাজারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সি৩২ ইলেকট্রিক বাইক এনেছে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড রিভো। অত্যাধুনিক ৭২ ভোল্ট ২৬ অ্যাম্পিয়ার সম্পূর্ণ গ্রাফিন ব্যাটারি পরিচালিত এই ইলেকট্রিক বাইকের উদ্বোধন ঘোষণা করেন রিভো বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ভেন নি।
ফিচার
সি৩২-এর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য শক্তিশালী ১৮০০ ওয়াট মোটর, যা ব্যতিক্রমী পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। বাইকটির ইকো মোডে গতি ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা এবং একবার চার্জে এটি ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে।
অন্যদিকে স্পোর্ট মোডে সর্বোচ্চ গতি ৬০ কিলোমিটার/ঘণ্টা এবং এক চার্জে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে।
সি৩২ ইলেকট্রিক বাইকে উন্নত ৭২ ভোল্ট ২৬ অ্যাম্পিয়ার গ্রাফিন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে, যা পাঁচ শতাধিক চার্জিং সাইকেল সাপোর্ট করে এবং প্রতিটি পূর্ণ চার্জে মাত্র ২.০৮ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করে।
ব্যাটারিটি সম্পূর্ণ চার্জ হতে ১০.৬ ঘণ্টা সময় নেয়, যা রাতে চার্জ দিয়ে দিনব্যাপী ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।
নিরাপত্তা এবং আরামকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে রিভো সি৩২। এতে রয়েছে সামনে ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনে ড্রাম ব্রেক সিস্টেম, যা সর্বোচ্চ স্টপিং পাওয়ার নিশ্চিত করে।
ফ্রন্ট ও রিয়ার হাইড্রোলিক সাসপেনশন থাকার ফলে রাইডাররা মসৃণ ও আরামদায়ক রাইড উপভোগ করতে পারেন। এমনকি অপ্রশস্ত বা অসমান রাস্তাতেও।
রাতে নিরাপদ যাত্রার জন্য সি৩২-এ রয়েছে পূর্ণ এলইডি লাইটিং সিস্টেম, যার মধ্যে এলইডি হেডলাইট, টেইললাইট এবং টার্ন সিগন্যাল অন্তর্ভুক্ত।
রিভো সি৩২ শুধু শক্তিশালী পারফরম্যান্সই দেয় না, এটি ডিজাইনেও বেশ কার্যকর। ১৪০ কেজি ওজনের মজবুত অথচ হালকা ফ্রেম এবং সামনে ও পিছনে ৯০/৮০-১২'' ভ্যাকুয়াম টায়ার যুক্ত বাইকটি দুর্দান্ত গ্রিপ এবং স্থিতিশীলতা প্রদান করে।
২০৫ এমএম পর্যন্ত গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স থাকায় এটি যেকোনো ধরনের রাস্তার জন্য উপযোগী। সিট বাকেটে ২৪ লিটার স্টোরেজ স্পেস রয়েছে, যা ব্যক্তিগত জিনিসপত্র বহনের জন্য আদর্শ।
ব্যবহারকারীবান্ধব ডিজাইন এবং আরামের সমন্বয়ে এটি শহরের যাতায়াতকারী এবং দূরপাল্লার রাইডারদের জন্য একটি পারফেক্ট পছন্দ।
এখন থেকে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯০০ টাকা মূল্যে বাংলাদেশের সব শোরুমে পাওয়া যাচ্ছে।
সি৩২ যাতায়াতকে সহজ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব করতে উন্নত প্রযুক্তি, শক্তিশালী পারফরম্যান্স নিশ্চিত করছে, যা প্রতিদিনের যাত্রীদের পাশাপাশি পরিবেশ সচেতন রাইডারদের জন্য আদর্শ হতে পারে।
আরও পড়ুন:আলু রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। এ স্থলবন্দর দিয়ে নতুন করে আরও ১০৫ টন আলু গিয়েছে নেপালে।
এ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার ৫৫৪ টন আলু নেপালে রপ্তানি করা হলো।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কোয়ারিনটিন ইন্সপেক্টর উজ্জল হোসেন জানান, বুধবার বিকেলে স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচটি ট্রাকে ১০৫ টন আলু নেপালে গেছে।
তিনি জানান, আলুগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এগুলো রপ্তানি করছে থিংকস টু সাপ্লাই ও ফাস্ট ডেলিভারি নামে দুটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে থিংকস টু সাপ্লাই ৪২ ও ফাস্ট ডেলিভারি ৬৩ টন রপ্তানি করে। এ ছাড়াও বন্দরটি দিয়ে হুসেন এন্টারপ্রাইজ, ক্রসেস এগ্রো, সুফলা মাল্টি প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং লোয়েড বন্ড লজিস্টিক নামের কয়েকটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানও নেপালে আলু রপ্তানি করছে।
উজ্জ্বল হোসেন বলেন, রপ্তানিকারকরা প্রয়োজনীয় নথিসহ অনলাইনে আবেদন করলে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের ল্যাবে পরীক্ষা করার পর ফাইটোসেনেটারি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়। রপ্তানিকৃত আলুগুলো স্টারিজ এবং লেডিও রোজেটা জাতের।
বাজারে নতুন আসা স্মার্টফোন ‘অপো এ৫ প্রো’ রেকর্ড গড়া পারফরম্যান্স করেছে বলে জানিয়েছে বৈশ্বিক প্রযুক্তি কোম্পানি অপো।
কোম্পানিটি শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আগের জেনারেশনের ডিভাইসের তুলনায় নতুন স্মার্টফোনটি ৪৫০ শতাংশ বেশি বিক্রয় প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা বাংলাদেশের বাজারে অপোর ধারাবাহিক সফলতার নির্দেশক। তাৎপর্যপূর্ণ এ প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের বাজারে অপোর ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি এবং ব্রান্ডটির প্রতি গ্রাহকদের গভীর আস্থা ও আনুগত্যের প্রতিফলন।
অপো প্রতিনিয়ত স্মার্টফোন প্রযুক্তির অভিনব উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোম্পানিটির ‘অপো এ৫ প্রো’ ডিভাইসের ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। ফোনটি নিত্যদিনের বৈচিত্র্যময় চাহিদা পূরণে ভোক্তাদের আধুনিক ও উন্নত সব ফিচার ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে।
কোম্পানির কর্মকর্তা ও গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া
বিজ্ঞপ্তিতে অপো এ৫ প্রোর বিক্রয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা ও একাধিক গ্রাহকের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেছে অপো।
ডিভাইসটির প্রথম দিনের বিক্রয়ের বিষয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অপো বাংলাদেশ অথরাইজ এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেমন ইয়াং বলেন, ‘এ সফলতা অপোর প্রতি বাংলাদেশি গ্রাহকদের আস্থা ও আগ্রহের বিষয়টিই সফলভাবে চিত্রিত করছে। তাদের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো অভিনব পণ্য উদ্ভাবন ও সেবা প্রদানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
একটি বেসরকারি প্রকৌশল কোম্পানিতে চাকরিরত তারেক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ অপোর নতুন ডিভাইস নিয়ে তার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, ‘অপো এ৫ প্রোর ওয়াটারপ্রুফ, ডাস্টপ্রুফ এবং শকপ্রুফ ফিচার আমার সবচেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
‘আমি এ রকম একটি টেকসই ও সহনশীল স্মার্টফোনের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করছিলাম এবং আমার অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। স্মার্টফোনটি কিনতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত।’
আরেক গ্রাহক শারমিন আক্তার বলেন, “ঈদের আগে আমি একটি মোবাইল কেনার কথা ভাবছিলাম। এ ক্ষেত্রে স্মার্টফোনের দারুণ ডিজাইন ও উন্নত ফিচারগুলো আমার অগ্রাধিকারে ছিল।
“আমার মতে, বাজারের একই ঘরনার ফোনগুলোর মধ্যে এ বিষয়গুলোতে ‘অপো এ৫ প্রো’ই সেরা। ফোনটি পছন্দ করতে পেরে মনে হচ্ছে আমি সঠিক মোবাইলটিই বেছে নিয়েছি।”
নতুন ডিভাইসের ফিচার
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘অপো এ৫ প্রো’ বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন, যেটি আইপি৬৬, আইপি৬৮ এবং আইপি৬৯ রেটিং অর্জন করেছে। ডিভাইসটি পানি, ধুলা ও যেকোনো ধরনের শক থেকে সুরক্ষিত। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মোবাইলটির অনন্য স্থায়িত্ব।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, মোবাইলটিতে সংযুক্ত আছে মিলিটারি গ্রেডের ইমপ্যাক্ট রেজিস্ট্যান্স প্রযুক্তি। পাশাপাশি ডিভাইসের মাদারবোর্ড থার্মাল কনডাকটিভিটি বৃদ্ধি করে এবং আগের জেনারেশনের স্মার্টফোনের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি সক্ষমতা প্রদান করে। মোবাইলটি এক হাজার বেন্ডিং টেস্টও উতরে গেছে। অর্থাৎ প্রতিদিনের যেকোনো পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে এটি ব্যবহার উপযোগী।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, স্মার্টফোনটি নান্দনিক ফটোগ্রাফির জন্য অনন্য। এতে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা এআই সংবলিত উন্নত ফিচার। ডিভাইসটিতে এআই ইরেজার ২.০ ব্যবহার করে সহজেই ছবিতে থেকে অপ্রয়োজনীয় বস্তু মুছে ফেলা যায়। এআই রিফ্লেকশন রিমুভার ব্যবহার করে অযাচিত রিফ্লেকশন সরিয়ে দেওয়া যায়।
এ ছাড়া এআই আনব্লার ফিচার ব্লারি বা অস্পষ্ট ছবিকে আরও স্পষ্ট করে তুলতে সাহায্য করে।
দাম
অপো জানায়, দেশজুড়ে রিটেইল স্টোর এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে স্মার্টফোনটি ২৩ হাজার ৯৯০ টাকায় ৮জিবি+২৫৬ জিবি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে।
বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে অপোর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান থেকে চালবোঝাই আরও দুটি জাহাজ।
এক দিনের ব্যবধানে দুটি জাহাজ বন্দরে পৌঁছায়।
এবার এসেছে ৪৮ হাজার ৭৫০ টন আতপ ও সিদ্ধ চাল। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে আসে ২৬ হাজার ২৫০ টন এবং ভারত থেকে আসে ২২ হাজার ৫০০ টন চাল।
চট্টগ্রাম বন্দরের সাইলো জেটি ও কাফকো-সংলগ্ন জেটিতে এই দুই জাহাজ নোঙর করে বলে শনিবার দুপুরে নিশ্চিত করেন খাদ্য অধিদপ্তরের চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক জ্ঞানপ্রিয় বিদূর্শী চাকমা।
পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজটি শুক্রবার চট্টগ্রাম সাইলো জেটিতে বার্থিং করেছে জানিয়ে তিনি জানান, জাহাজ এমভি মারিয়ম গত ১১ মার্চ ২৬ হাজার ২৫০ টন আতপ চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে প্রবেশ করে।
অন্যদিকে ১২ মার্চ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে প্রবেশ করে ভারতের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি তানাইস ড্রিম। জাহাজটি শুক্রবার কাফকো সংলগ্ন জেটিতে বার্থ করে।
এ জাহাজ থেকে ২২ হাজার ৫০০ টন বাসমতি নয় এমন সিদ্ধ চাল আনা হয়েছে।
পাকিস্তানের জাহাজ এমভি মারিয়মে আসা চালের নমুনা সংগ্রহ শেষে ভৌত বিশ্লেষণ সম্পন্ন হয়েছে মন্তব্য করে জ্ঞানপ্রিয় বিদূর্শী চাকমা জানান, এ চালের খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অন্যদিকে ভারত থেকে আসা জাহাজ এমভি তানাইস ড্রিমের চালগুলোর নমুনা সংগ্রহ করা শেষ হয়েছে।
এর আগে বুধবার ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা ৩৮ হাজার ৮৮০ টন চাল বাংলাদেশে এসে পৌঁছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় ভিয়েতনাম থেকে ১৭ হাজার ৮০০ টন আতপ চাল এবং আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় ভারত থেকে ২১ হাজার ৮০ টন সিদ্ধ চাল কেনা হয়েছে।
গত ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে আরও ৬ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানি করা হয়।
আরও পড়ুন:জনপ্রিয় বৈশ্বিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘অপো’ পবিত্র রমজান মাসে গ্রাহকদের জন্য বিশেষ ‘ঈদ মেগা গিফট ক্যাম্পেইন’ ঘোষণা করেছে।
১৩ মার্চ থেকে শুরু হয়ে সারা দেশে অপোর আউটলেটগুলোতে বিশেষ এ ক্যাম্পেইন চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত।
ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ক্রেতারা তাদের চাহিদা উপযোগী দারুণ সব ডিল ও অফার উপভোগ করতে পারবেন।
এ বছর অপো ভোক্তাদের জন্য ‘মেগা’ লটারি অফার ঘোষণা করেছে। এতে অংশ নিয়ে ক্রেতারা ১ লাখ টাকা সমমূল্যের গৃহস্থালি উপকরণ (হোম অ্যাপ্লায়েন্স), অপো প্যাড, অপো ওয়াচ অথবা ‘বাই ১, গেট ওয়ান ১’, ডিল উপভোগ করতে পারবেন।
এ ছাড়াও অপো সব ক্রেতার জন্যই বিশেষ ও নিশ্চিত উপহারের ঘোষণা দিয়েছে, যাতে করে সবাই এ আনন্দের ভাগিদার হতে পারেন। নির্দিষ্ট কিছু মডেলের স্মার্টেফোন কিনেও গ্রাহকরা উপহারের ভাগিদার হতে পারবেন। যেমন- ‘রেনো১২এফ’-এর সঙ্গে বিশেষ হুডি, ‘রেনো১৩এফ’-এর সঙ্গে বিশেষ ব্যাগ এবং নতুন বাজারে আসা ‘এ৫ প্রো’র সঙ্গে ‘অপো সুপার শিল্ড কার্ড’ পাবেন তারা।
অপো বাংলাদেশ, অথরাইজ এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেমন ইয়াং বলেন, “আমাদের গ্রাহকদের সেরা সেবা দিতে অর্থাৎ কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স বৃদ্ধিতে অপো প্রতিনিয়ত অভিনবভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির স্মার্টফোন উপভোগের মাধ্যমে এই ঈদে তারা অসাধারণ সব পুরস্কার জিতে নিতে পারবেন। ‘এ৫ প্রো’র উন্মোচন এবং মেগা গিফট ক্যাম্পেইনের এই ঘোষণা ভোক্তাদের রমজান উদযাপনে বাড়তি মাত্রা যোগ করবে। অপোভক্তদের সঙ্গে এই বিশেষ উপলক্ষ যুক্ত করতে পেরে আমরা আনন্দিত।”
একটি অনলাইন লটারির মাধ্যমে মেগা গিফট লটারির বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে এবং তা অপো এ৩এক্স, এ৬০, রেনো সিরিজ এবং নতুন লঞ্চ হওয়া অপো এ৫ প্রোসহ বিভিন্ন ডিভাইসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এ ক্যাম্পেইন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ক্রেতাদের নিকটস্থ অপো আউটলেট পরিদর্শনের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
আকর্ষণীয় ঈদ অফার ও অন্যান্য তথ্য পাওয়া যাবে অপো বাংলাদেশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/OPPOBangladesh এবং ওয়েবসাইটে website https://www.oppo.com/bd/।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য