সংকট উত্তরণে অর্থনীতিবিদরা ব্যাংকঋণের সুদের হার বাড়ানোর পরামর্শ দিলেও গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার তা নাকচ করে দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘মহামারি করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় ব্যাংকঋণের সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা তুলে দেয়া যাচ্ছে না। কারণ এখন সুদহারের এক অঙ্কের (৯ শতাংশ) নির্দেশনা তুলে দিলে বেসরকারি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিঘ্নিত হবে সরবরাহ। তাই লেন্ডিং ক্যাপ (ঋণের সুদহার) তুলে নেয়া হবে না।’
রাজধানীর মিরপুরে শনিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত ‘নবম বার্ষিক ব্যাংকিং কনফারেন্স’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন গভর্নর।
তিনি বলেন, ‘গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর পরই আমি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনা জানার চেষ্টা করেছি। এখন যে সমস্যা (ডলার সংকট) দেশে বিরাজ করছে এটি বেশিদিন থাকবে না। সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী ধারাও নিম্নমুখী হবে।’
বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য ও আমেরিকান মুদ্রা ডলারের দাম বেড়ে গেছে। এর প্রভাবে বেড়েছে খাদ্য, ভোগ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে। চাপে পড়েছে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তসহ নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ।
মূল্যস্ফীতি নিয়ে চাপে আছে প্রায় সব দেশ। তারা মুদ্রা সরবরাহ কমাতে সুদহার বাড়ানোর ওপরই মূলত ভরসা করছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে সুদের হার কয়েক দফা বাড়িয়েছে। ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি) বাড়াচ্ছে একটু ধীরগতিতে। রাশিয়া বাড়িয়েছে। বড় অর্থনীতির মধ্যে কেবল জাপানই শূন্য সুদের হার বজায় রেখেছে। আর ৮০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি নিয়ে পুরো বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে সুদের হার কমিয়েছে তুরস্ক।
সুদের হার যে কয়টি দেশ বাড়ায়নি, তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশও। এখানে ঋণের সুদের সর্বোচ্চ হার ৯ শতাংশই রেখে দেয়া হয়েছে। আর এই সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির জনগোষ্ঠী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গাড়ি, দামি ফ্ল্যাট, স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন বিলাসপণ্য কিনছেন। ঋণের সুদ কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও দেদার ব্যাংকঋণ নিচ্ছেন। ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ঋণ যাচ্ছে, আমানত আসছে তার চেয়ে কম। ফলে দেশে মূলত মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে যাচ্ছে।
২০২০ সালের এপ্রিলে ব্যাংকঋণের সুদহার নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় আর করোনার সংক্রমণ শুরু হয়েছিল একই সময়ে। ওই সময়ে সব ধরনের ভ্রমণ বন্ধ হয়ে যায়। কেনাকাটাও ছিল কম। এ সময় আমানত বাড়ে। ব্যবসায়ীরাও নতুন বিনিয়োগ বন্ধ রাখেন। বরং কম সুদের ঋণ ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করে উদ্যোক্তাদের। আবার এই ঋণ নিয়ে অনেকেই অপব্যবহার করেন। ব্যাংকেরও মুনাফা বাড়ে, কারণ নতুন করে ঋণখেলাপি হওয়া স্থগিত রাখে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে গত বছর থেকে করোনার প্রকোপ কমে এলে ঋণ নেয়া বাড়তে থাকে। আমানতের সুদহার কমে এলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত বছরের আগস্টে নির্দেশনা দেয়, ব্যক্তির মেয়াদি আমানতের সুদহার তিন মাসের গড় মূল্যস্ফীতির কম হবে না। এরপরও ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি আগের চেয়ে কমে যায়, এর বিপরীতে ঋণ বাড়ে বেশি। গত জুনে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা আগের ৪৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
করোনা মহামারির ধাক্কা কাটতে না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে ওলোটপালট করে দিয়েছে। তার প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিও সংকটে পড়েছে।
এ অবস্থায় অর্থনীতিবিদেরা ব্যাংকঋণের সুদের হারের সীমা তুলে দেয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন কিছুদিন ধরে।
গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর জুলাই মাসের প্রথম দিকে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ডলারের বিপরীতে টাকার মান অনেক কমে গেছে। এখন যে করেই হোক টাকাকে শক্তিশালী করতে হবে। আর সেজন্য ছয় মাস-নয় মাস বা এক বছরের জন্য হলেও ঋণের সুদের হার বাড়াতে হবে। এতে বেসরকারি খাত কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে ভালো ফল দেবে।’
রাশিয়া সুদের হার বাড়িয়ে বেশ ভালো ফল পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক মঞ্জুর হোসেনও একই পরামর্শ দিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে গভর্নর রউফ তালুকদার প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অনুষ্ঠানে বলেন, ‘সুদহার সীমা তুলে দিলে অর্থ খরচ আরও বাড়বে উদ্যোক্তাদের। পাশাপাশি ব্যাংকেরও তহবিল ব্যবস্থাপনা খরচ বৃদ্ধি পাবে। আমরা উদ্যোক্তাদের কম খরচে ঋণ দিতে চাই। যাতে উৎপাদন খরচ কমে আসে।’
পরিচালকদের হস্তক্ষেপে ব্যাংকেরই ক্ষতি
অনুষ্ঠানে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনার কাজে পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ করতে মানা করেছেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
তিনি বলেন, পরিচালকদের জন্য নির্দিষ্ট দায়িত্বের বাইরে হস্তক্ষেপ করলে তা ব্যাংকের জন্যই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গভর্নর লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘ব্যাংকের পরিচালক ও ব্যবস্থাপনার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব ও কাজ সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী তারা কাজ করবেন। পরিচালকরা ব্যবস্থাপনার কাজ করবেন না। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করে যাবেন।’
দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকের মালিকদের সংগঠন এবং ব্যাংকের নির্বাহীদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে এ বার্তা দিয়েছেন বলে জানান নতুন গভর্নর রউফ তালুকদার।
সুশাসনের উপর জোর দিতে গিয়ে গর্ভনর বলেন, ‘ব্যাংক শুধু মুনাফাই করবে না, সুশাসনের চর্চাও অব্যাহত রাখবে, নইলে পুরো খাতটিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে দেশের চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আগ্রাসনে বিশ্বে সরবরাহ ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর জেরে দেশে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারও বেশ চাপে পড়েছে।
এ পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন কোনো উদ্যোগ নেবে কি না- এ প্রশ্নে গভর্নর বলেন, আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে তিনি আশাবাদী।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় ধরনের উদ্বেগ নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘এখন যে মূল্যস্ফীতি, তা কিন্তু আমদানির কারণে … তেল ও সার কিনে আনতে হয়। তেলের দাম বেড়েছে। সার বিকল্প উপায়ে কম দরে কেনার চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক যে পদ্ধতিতে এগোচ্ছে …ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ ভালোর দিকে আছে।’
সাম্প্রতিক সময়ে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশের মধ্যে দিয়ে পার করছে। ডলারের দাম ব্যাংকেই ১১০ টাকায় আর খোলা বাজারে ১২০ টাকায় উঠেছিল।
ডলার লেনদেনে অতিরিক্ত মুনাফা করায় সম্প্রতি দেশীয় ও বহুজাতিক ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ বিষয়ে পরবর্তী কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে- তা জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, ‘বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষ হলে কথা বলব।’
বৈদেশিক মুদ্রাবাজার যে বেশ চাপে রয়েছে, তা উঠে এসেছে এবারের বার্ষিক ব্যাংকিং কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া অধ্যাপক শাহ মো. আহসান হাবিবের মূল প্রবন্ধে।
তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির বর্তমান চিত্রে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যাপ্ত উদ্যোগ না নিলে বাজেটে নেয়া বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন দুরূহ হয়ে দাঁড়াবে।’
এ প্রসঙ্গে গভর্নর রউফ তালুকদার বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়িয়ে বৈশ্বিক এ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক যে উদ্যোগ নিচ্ছে, তা আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।’
মূলপ্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, মুদ্রাবাজারে সরবরাহ অর্থ সরবরাহ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে মুদ্রানীতিতে। কিন্তু মূল্যস্ফীতির চাপে ঋণ প্রবাহ কমে যাওয়া মানেই অর্থ পরিশোধ কমে যাবে ব্যাংকে। যার ফলে খেলাপির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্যে বিআইবিএম এর মহাপরিচালক ড. আকতারুজ্জামান বলেন, ‘বার্ষিক ব্যাংকিং কনফারেন্স ব্যাংকারদের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করে দেয় নিজেদের কাজের অভিজ্ঞতা, চ্যালেঞ্জ পরস্পরের সঙ্গে বিনিময় করার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেয়া নীতিমালার তাত্ত্বিক বিশ্লেষণও উঠে আসে এখানে।’
প্রতি বছর বার্ষিক ব্যাংকিং কনফারেন্সের আয়োজন করে বিআইবিএম। এতে দেশি-বিদেশি ব্যাংকাররা অংশ নেন। ব্যাংক পরিচালনায় বিষয়ভিত্তিক প্লেনারি সেশনে একাধিক প্রেজেন্টেশন পেপার উপস্থাপন করা হয়।
কোভিড মহামারির কারণে গত ২০২০ ও ২০২১ সালে এ আয়োজন হতে পারেনি। দুই বছরের বিরতির পর এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
দুই দিনব্যাপী এবারের আয়োজনে ভারত, মালয়েশিয়া ও নেপাল থেকে ব্যাংকাররা অংশ নিচ্ছেন অনলাইনে।
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির উদ্যোগে ঢাকা সেন্ট্রাল, কুমিল্লা, খুলনা ও সিলেট জোনের এজেন্ট ব্যাংকিং কর্মকর্তাদের জন্য ‘সাইবার সিকিউরিটি প্রটেকশন’ নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়েছে।
ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে সোমবার এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে এম মাহবুব মোরশেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আবু সাঈদ।
কর্মশালায় মূল বিষয়ের ওপর বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম মিজানুর রহমান ও ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এম এ হামিদ।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় জোনগুলোর অধীন বিভিন্ন শাখা ও এজেন্ট আউটলেটের ৭৬২ জন কর্মকর্তা অংশ নেন।
এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসি রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী ও কাপ্তান বাজারে নতুন দুটি উপশাখা চালু করেছে। প্রথাগত সাধারণ সকল ব্যাংকিং সেবার পাশাপাশি শরীয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকিং সেবাও পাওয়া যাবে নতুন উপশাখা দুটিতে।
কাপ্তার বাজারে রোববার উপশাখার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল। একই দিনে সিদ্ধেশ্বরী উপশাখার উদ্বোধন করেন ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও পরিচালক মোহাম্মদ আদনান ইমাম।
উপশাখা দুটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ব্যাংকের পরিচালক একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, এএম সাইদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী গোলাম আউলিয়া, সিদ্ধেশ্বরী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ জুলহাস উদ্দিন, ওয়ারী জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এসএম শামীমসহ গ্রাহক ও স্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল বলেন, ‘এনআরবিসি ব্যাংক সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের আস্থার ব্যাংক। নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে ব্যাংকটি। প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা সবার কাছে সহজ করেছে এনআরবিসি ব্যাংক। নতুন উপশাখা দুটির মাধ্যমে স্থানীয়দের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বেগবান হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।’
ব্যাংকের ইসি কমিটির চেয়ারম্যান ও পরিচালক মোহাম্মদ আদনান ইমাম বলেন, ‘এনআরবিসি ব্যাংক কর্মসংস্থানমুখী ব্যবসাবান্ধব একটি ব্যাংক। নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে এনআরবিসি ব্যাংক বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।’
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়া বলেন, ‘সারাদেশের দেড় হাজারেরও বেশি সেবাকেন্দ্র থেকে মানুষদেরকে সেবা দিচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক। আজ আরও দুটি নতুন উপশাখা চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এনআরবিসি ব্যাংক উদ্ভাবনী সেবাগুলো মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে।’
এনআরবিসি ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য সেবার মধ্যে রয়েছে এনআরবিসি হোম লোন, রেমিটেন্স সেবা, নগদ লেনদেন সুবিধা, ফান্ড ট্রান্সফার, ইউটিলিটি (গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ) বিল গ্রহণ, বিআরটিএ ফি গ্রহণ, ভূমি রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ফি গ্রহণ, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড সেবা, ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা।
এছাড়া এ সকল সেবা এক সঙ্গে পেতে রয়েছে মোবাইল অ্যাপ ‘এনআরবিসি প্লানেট।’ গ্রাহক সহজেই তার একাউন্ট থেকে এনআরবিসি প্লানেটের মাধ্যমে যেকোনো বিকাশ ও নগদ নম্বরে টাকা পাঠাতে পারবেন। সাধারণ ব্যাংকিংয়ের সকল সেবার পাশাপাশি সকল শাখা-উপশাখায় ইসলামিক ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে এনআরবিসি ব্যাংক।
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি মাস্টারকার্ড এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৩-এ ‘এক্সিলেন্স ইন মাস্টারকার্ড প্রিপেইড বিজনেস (ডমেস্টিক) ২০২২-২০২৩’ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে। সম্প্রতি
রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে সম্প্রতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আবুল ফায়েজ মুহাম্মদ কামালউদ্দীন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের নিকট থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।
এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেইভ, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের পরিচালক মো. শরাফত উল্লাহ্ খান, ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নাজিম উদ্দীন তালুকদার ও মোহাম্মদ মানজুরুল হক, অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ওসমান গণি ও আ ন ম তাওহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
ডলারের দাম আরও ২৫ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকগুলো। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনায় ডলারের দাম পড়বে ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা। আর আমদানিতে পড়বে ১১০ টাকা ২৫ পয়সা।
বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) বুধবার অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা কার্যকর হবে আগামী রোববার থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠন দুটি।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কিনতে ডলারের দাম হবে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা, যা আগে ছিল ১১০ টাকা। আর আমদানি দায় মেটাতে ডলারের দাম নেয়া যাবে ১১০ টাকা ২৫ পয়সা, আগে যা ছিল ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।
প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে সরকারের ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি ব্যাংকও সমপরিমাণ প্রণোদনা দিতে পারবে। ফলে প্রবাসী আয় পাঠালে ডলারপ্রতি সর্বোচ্চ ১১৫ টাকার কিছু বেশি পাবেন উপকারভোগীরা।
ডলারের জোগান ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে সময় সময় বাফেদা ও এবিবি বিদেশি মুদ্রাটির বিনিময় হার নির্ধারণ করে আসছে। এ দুটি সংগঠন মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংকসংশ্লিষ্ট। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে তারা সময় সময় ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করছে।
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) গাইডলাইন অনুযায়ী বাংলাদেশের ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ নেমে দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলারে। ব্যাংকিং ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্রে মঙ্গলবার এমন তথ্য জানা গেছে।
দু’বছর আগে কোভিড-১৯ মহামারির সময় আমদানি-রপ্তানির চাহিদা কমে যাওয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব এবং আমদানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার পর থেকে কমতে শুরু করে ডলারের মজুদ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ বৈদেশিক মুদ্রা রপ্তানি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএমএফের নির্দেশিকা (ব্যালেন্স অফ পেমেন্টস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল) বা বিপিএম৬-এর আলোকে ২৩ নভেম্বর দেশে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার।
নির্দেশিকা অনুযায়ী নিট রিজার্ভ মোট রিজার্ভের পরিমাণের চেয়ে ৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার কম হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক ইউএনবিকে বলেন, ‘রিজার্ভ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা প্রতিদিন ব্যয় ও নতুন করে জমা হয়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার খবরে সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি দেশের একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা বিপিএম৬-এর প্রস্তাবিত একটি নির্দেশিকা বা সূত্র অনুযায়ী বৈদেশিক রিজার্ভ গণনা শুরু করে বাংলাদেশ।
নতুন হিসাব অনুযায়ী, সে সময় দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে ২৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের ৪৭তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে সোমবার এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কমিউনিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। উক্ত সভায় কয়েকটি বিনিয়োগ প্রস্তাব ও ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এ সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল আইজি (এ্যাডমিন) কামরুল আহসান, র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন, বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অ্যাডিশনাল আইজি মনিরুল ইসলাম, এন্টি টেররিজম ইউনিটের অ্যাডিশনাল আইজি এস এম রুহুল আমিন।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন মো. মাজহারুল ইসলাম, অ্যাডিশনাল আইজি, এলএন্ডএএ, বাংলাদেশ পুলিশ, মো. আতিকুল ইসলাম, অ্যাডিশনাল আইজি, ক্রাইম এন্ড অপারেশন্স, বাংলাদেশ পুলিশ, আবু হাসান মুহম্মদ তারিক, অ্যাডিশনাল আইজি, ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ পুলিশ, মো. মাহাবুবর রহমান, অ্যাডিশনাল আইজি, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পুলিশ, বাংলাদেশ পুলিশ।
হাবিবুর রহমান, কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, বাংলাদেশ পুলিশ, জনাব মো. আমিনুল ইসলাম, ডিআইজি, প্রশাসন, বাংলাদেশ পুলিশ, কাজী জিয়া উদ্দিন, ডিআইজি, এইচআরএম, বাংলাদেশ পুলিশ, ড. শোয়েব রিয়াজ আলম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি, ডেভেলপমেন্ট রেভিনিউ-১, বাংলাদেশ পুলিশ, মুনতাসিরুল ইসলাম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি, বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ পুলিশ।
সুফিয়ান আহমেদ, অ্যাডিশনাল ডিআইজি এবং পরিচালক, একাডেমিক, পুলিশ স্টাফ কলেজ, বাংলাদেশ পুলিশ, বি এম ফরমান আলী, ইন্সপেক্টর, বাংলাদেশ পুলিশ ও সভাপতি, বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন, মাসুদ খান, এফসিএ, এফসিএমএ, স্বতন্ত্র পরিচালক, কাজী মসিহুর রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক, ড. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, স্বতন্ত্র পরিচালক এবং জনাব মসিউল হক চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির উদ্যোগে কুমিল্লা, ঢাকা সেন্ট্রাল, খুলনা ও সিলেট জোনের এজেন্ট ব্যাংকিং কর্মকর্তাদের জন্য ‘সাইবার সিকিউরিটি প্রটেকশন’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা সম্প্রতি ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর এফসিএস জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মাকসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে এম মাহবুব মোরশেদ। মূল বিষয়ের উপর বক্তব্য দেন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মাহবুব আলম, অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাঈদ কামরান আহমেদ ও মো. হেদায়েত উল্লাহ।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় জোনসমূহের অধীন শাখা ও এজেন্ট আউটলেটের ৭৬২ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
মন্তব্য