টানা ছয় কর্মদিবস উত্থানের পর একদিনের বিশ্রাম নিয়ে নতুন করে শক্তি দেখাল পুঁজিবাজার। সংশোধনে সূচক যতটা পড়েছিল, উত্থানে বেড়েছে তার দ্বিগুণ। সেই সঙ্গে লেনদেন বেড়ে চলতি বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে সংশোধনে যাওয়া পুঁজিবাজারে প্রায় সব দাবি পূরণ, বিশ্ব অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর আলোচনাসহ নানা কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। সক্রিয় হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও। আর দীর্ঘ প্রায় এক বছরের ঘুম কাটিয়ে জেগে উঠেছে পুঁজিবাজার।
গত সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস থেকে পুঁজিবাজারে উত্থান শুরু হয়। এর মধ্যে ছয় কর্মদিবসে সূচক বাড়ে ১৬৭ পয়েন্ট। সেই সঙ্গে গত দুই কর্মদিবসে লেনদেন দেড় হাজার কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই হয়ে যায়, যা ছিল গত সাত মাসের সর্বোচ্চ।
তবে মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর এমডি তা আমিন ভূঁইয়ার পদত্যাগের পাশাপাশি টানা উত্থানের পর বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতায় বুধবার ডিএসইতে ঘটে দরপতন। ৩৫ পয়েন্ট সূচকের পতনের পাশাপাশি লেনদেন কমে যায় ৩৫৩ পয়েন্ট।
তবে এই পতনের পুরোটাই বলতে গেলে উসুল হয়ে গেছে বৃহস্পতিবার। এদিন সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধিতে সূচকে যোগ হয় ৭৪ পয়েন্ট। আর লেনদেন ছাড়ায় এক হাজার সাত শ কোটির ঘর, যা চলতি বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থান।
বেলা শেষে লেনদেন হয় এক হাজার ৭৭৭ কোটি ৪৫ লাখ ২৭ হাজার টাকার, যা আগের দিন ছিল এক হাজার ১৩৩ কোটি ৭১ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
চলতি বছর সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় গত ১১ জানুয়ারি। সেদিন হাতবদল হয় ১ হাজার ৯৭৬ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।
এদিন লেনদেন শুরুই হয় সূচক বেড়ে। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা কেবল বাড়তেই থাকে। শেষ পর্যন্ত ২৩০টি কোম্পানির দর বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৫৮টির দর আর অপরিবর্তিত থাকে ৯১টির দর।
বেলা শেষে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৫৫ দশমিক ০৭ পয়েন্ট, যা গত ১২ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ। সেদিন সূচক ছিল ৬ হাজার ৩৫৫ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট।
সাধারণ ও জীবন বিমা, প্রকৌশল, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্য ও আনষঙ্গিক খাতের শেয়ারদর বেড়েছে একই সঙ্গে। এর প্রভাবেই সূচক দিয়েছে লাফ।
তবে এই উত্থানেও ব্যাংক-মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো ঘুমিয়ে আছে বলা যায়। ব্যাংক খাত জাগলে বাজার আরও অনেক দূর যাবে সন্দেহ নেই।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফ্লোর প্রাইস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগসীমা গণনা পদ্ধতি শেয়ারের ক্রয়মূল্যে হিসাব করাসহ নানা কারণে বিনিয়োগকারীরা এখন অনেকটাই নির্ভার। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর অর্থনীতি নিয়ে যে আতঙ্কে পুঁজিবাজারে ক্রমাগত দরপতন হচ্ছিল, তার মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুঁজিবাজার নিয়ে রক্ষণশীল নীতি পরিবর্তনের আভাস বিনিয়োগকারীদেরকে কিছুটা হলেও সাহস দিচ্ছে।
মাঝে একদিন বিরতি গিয়ে আগের দিনই লেনদেনের শীর্ষে ফেরা বস্ত্র খাত তার অবস্থান ধরে রেখেছে। সব মিলিয়ে ২২০ কোটি ৫০ লাখ টাকা হাতবদল হয়েছে খাতটিতে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে, যাতে হাতবদল হয়েছে ২০৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা। তৃতীয় অবস্থানে থাকা আর্থিক খাতে লেনদেন হয়েছে ১৮২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতে লেনদেন হয়েছে ১৬৮ কোটি ১০ লাখ টাকা, পঞ্চম স্থানে থাকা প্রকৌশল খাতের ১৩৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার কিনেছেন বিনিয়োগকারীরা। বিমা খাতে হাতবদল হয়েছে ১২৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যার মধ্যে জীবন বিমাতেই লেনদেন হয়েছে ৯৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। চামড়া খাতে হাতবদল হয়েছে ১১৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার।
ক্যাল সিকিউরিটিজের সিইও রাজেশ সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল ছয় দিনের উত্থানের পরে কিছুটা প্রফিট টেকিং হয়েছিল এবং ডিএসইর এমডির পদত্যাগের বিষয়টি মানসিকভাবে বিনিয়োগকারীদের দুর্বল করেছিল। এ ছাড়া আর কিছু না। তবে এটা দেশের মানুষের জন্য কনসার্নের কিছু না হলেও বারবার ডিএসইর এমডির পদত্যাগের বিষয়টি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মাঝে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেয়। যা পুঁজিবাজারের জন্য মোটেও ভালো নয়।’
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ৭২ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার। শেয়ারটির দর ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ দর বেড়েছে।
আইপিডিসি ফাইন্যান্সের দর ৮ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৪ দশমিক ২৩ পয়েন্ট।
ওরিয়ন ফার্মা সূচকে যোগ করেছে ৩ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ।
এ ছাড়া ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আইডএলসি, আইসিবি, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, বিকন ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মা ও জিপিএইচ ইস্পাত সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ১৩ পয়েন্ট সূচক কমেছে ওয়ালটন হাইটেকের দর পতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ।
আর কোনো কোম্পানি এককভাবে এক পয়েন্ট সূচক কমাতে পারেনি।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৫৬ পয়েন্ট কমেছে বেক্সিমকো গ্রিন সুকুকের কারণে। বন্ডটির ইউনিট দর কমেছে ১ দশমিক ১৪ শতাংশ।
ম্যারিকো বাংলাদেশের দর শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৪৭ পয়েন্ট।
এ ছাড়া শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, এসিআই, মেঘনা পেট্রলিয়াম, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও যমুনা অয়েলের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৩ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ বা ২০ টাকা দর বেড়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের। গতকাল শেয়ারটির ক্লোজিং প্রাইজ ছিল ২০০ টাকা, সেটি আজ দাঁড়িয়েছে ২২০ টাকায়।
ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স দর বৃদ্ধির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এটির দর বেড়েছে ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৪ টাকা ৫০ পয়সা বেড়ে শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৪৯ টাকা ৫০ পয়সায়। আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৪৫ টাকা।
৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ দর বাড়া ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স রয়েছে তালিকার তৃতীয় স্থানে। সর্বশেষ শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ১৫৫ টাকা ৩০ পয়সায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইজ ছিল ১৪১ টাকা ২০ পয়সা।
দর বৃদ্ধির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জিকিউ বলপেন, ইস্টার্ন হাউজিং, হাক্কানি পাল্প, মেট্রো স্পিনিং, আরএসআরএম স্টিল ও ফনিক্স ফাইন্যান্স।
দর পতনের শীর্ষ ১০
দরপতনের শীর্ষে রয়েছে সোনারগাঁও টেক্সটাইল। শেয়ারটির দর ৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ কমে সর্বশেষ ৭১ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়।
সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস দর পতনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। শেয়ারটির দর ৫০ পয়সা বা ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ কমেছে। শেয়ারটির ক্লোজিং প্রাইজ দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ১০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে এমারেল্ড অয়েল। ১ টাকা ২০ পয়সা বা ৩ দশমিক ১৬ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ৩৬ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়।
দর কমার শীর্ষ দশে ছিল এস আলম স্টিল, সাফকো স্পিনিং, দুলামিয়া কটন, বিডি থাই ফুড, ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড, তশরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ ও আইএফআইসি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য