জ্বালানি সাশ্রয়ে সূচি করে লোডশেডিং করার খবরে পুঁজিবাজারে যে ধস দেখা গিয়েছিল, অফিস সূচি পুনর্নির্ধারণ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি একদিন করে বাড়ানোর সিদ্ধান্তে সেই আতঙ্ক দেখা যায়নি। সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড গড়ার পর দিন বাজারে সূচক বাড়ল আরেকটু, কিছুটা বেশি হলো লেনদেনও।
এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে টানা তিন আর সব মিলিয়ে টানা ছয় দিন বাড়ল সূচক। লেনদেন হলো গত ১০ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
সোমবার মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি অফিস সূচি হবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ব্যাংকে লেনদেন চলবে ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত আর পরের দুই ঘণ্টা ব্যাংকের অন্যান্য কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর দিন সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার শুরুই হয় শেয়ারের দর ও সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে। শুরু থেকেই লেনদেনের গতি ছিল ভালো।
এর আগে যখন জ্বালানি সাশ্রয়ে প্রথমবারের মতো সূচি তৈরি করে লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত হয়, তার প্রভাবে গত ১৮ জুলাই পুঁজিবাজারে দেখা যায় ধস। সেদিন আতঙ্কে দর হারায় ৩৫২টি কোম্পানি, বিপরীতে বাড়ে কেবল ১০টির দর। দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ বহাল থাকার পরও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক সূচকের পতন হয় ৮৭ পয়েন্ট।
তবে এখনকার পরিস্থিতি ভিন্ন। তবে জুলাইয়ের শেষে সব শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়ার পর পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর মধ্যে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট শেয়ারের ক্রয়মূল্যে গণনার বিষয়ে সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে জানানো হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগসীমার গণনাও একই পদ্ধতিতে হবে।
এর মধ্যে বন্ড ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকে এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার অনুরোধ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন। এর মধ্যে বন্ডের বিনিয়োগ এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখতে বিএসইসির অনুরোধও আছে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান শিবলী-রুবাইয়াত উল ইসলাম জানিয়েছেন, এ বিষয়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নমনীয়।
দীর্ঘ এক যুগ পর পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিবাচক মনোভাবের পাশাপাশি অর্থনীতি নিয়ে আতঙ্ক কাটতে শুরু করার প্রভাব পুঁজিবাজারে স্পষ্ট। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে টাকার অবমূল্যায়ন থেমে ডলারের দরপতন, যা অর্থনীতির জন্য একটি ভালো খবর হিসেবে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি। সব মিলিয়ে চাপ কাটিয়ে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর অপেক্ষায় সবাই।
অর্থনৈতিক সংকটের আশঙ্কা কাটতে শুরু করার পর গত সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস থেকেই পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে বাড়তে তাকে। সেই সপ্তাহের তিন কর্মদিবসে ৯২ পয়েন্ট এবং চলতি সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ১৮ পয়েন্টের পর দ্বিতীয় দিন আরও ৪০ এর পর তৃতীয় দিন বাড়ল আরও ১৫ পয়েন্ট।
এ নিয়ে টানা ছয় কর্মদিবসে বাড়ল ১৬৭ পয়েন্ট।
সূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতি বৃদ্ধি পুঁজিবাজারে নিষ্ক্রিয় বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় হয়ে উঠার প্রমাণ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর দিন থেকে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে অলস বসে থাকা বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনা শুরু করেন চলতি মাসের শুরুর দিকেই। এর মধ্যে সোমবার ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড হয়। সেটিকে আরও একটু ছাড়িয়ে গেল আজ।
১২৩ কোম্পানির উত্থান ও ১৬৯টির দরপতন এবং ৮৯টি আগের দিনের দরে লেনদেন হওয়ার দিন হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ৪৮৭ কোটি ৪৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার শেয়ার, যা গত ১০ জানুয়ারি লেনদেন হওয়া ১ হাজার ৪৮৭ কোটি ৪৫ লাখ ৪৪ হাজারের চেয়ে কিছুটা কম মাত্র।
চলতি বছর মঙ্গলবারের চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে কেবল আট কর্মদিবস।
তবে লেনদেন ও সূচকের এই ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে তাড়াহুড়ো নেই সেটি স্পষ্ট। কোনো একক খাতে হুট করে দর বেড়ে যাওয়ার যে প্রবণতা এক আগে নানা সময় দেখা গেছে, সেটি এবার নেই বললেই চলে।
উত্থানের পুঁজিবাজারে এক দিনে বহু সংখ্যক শেয়ারের দর সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে হাতবদলের চিত্রও সেভাবে দেখা যাচ্ছে না।
কেবল দুটি কোম্পানির দর সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে লেনদেন হয়েছে। আরও তিনটি কোম্পানির দর ৮ শতাংশের বেশি, দুটি করে কোম্পানির দর ৭ শতাংশ, ৬ শতাংশ এবং ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে ৪টি কোম্পানির দর আর ৯ শতাংশের বেশি বেড়েছে ৩টির দর।
অন্যদিনে দরপতনের শীর্ষে দেখা গেছে দুর্বল কোম্পানির প্রাধান্য যেগুলোর দর নানা গুঞ্জনে গত কয়েক মাসে বেড়েছে অনেকটাই।
এর মধ্যে সর্বোচ্চ দর হারানো দুটি কোম্পানিটি দর হারিয়েছে ৭ শতাংশ, ৬ শতাংশ হারিয়েছে একটি, ৩টির দর হারিয়েছে ৫ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি, ৬টির দর হারিয়েছে ৪ শতাংশের বেশি, ১৩টির দর কমেছে ৩ শতাংশের বেশি।
পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক উত্থানের বিষয়ে ট্রেজার সিকিউরিটির অপারেটিং অফিসার মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা সাবধানে পা ফেলেছেন। সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করছেন, যার কারণে বাজারের উত্থানটা ধীরে ধীরে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বড় মূলধনি কোম্পানিতে বেশ কিছু ফান্ডের ইনজেকশন লক্ষ করা যাচ্ছে। এটি স্থায়ী হবে কি-না তা বোঝা যাবে আরও কিছু দিন পর।’
বস্ত্রকে ছাড়িয়ে গেল ওষুধ ও রসায়ন
লেনদেনে এদিন প্রাধান্য ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের। এক মাসেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো বস্ত্রকে হটিয়ে শীর্ষে উঠে এলো এই খাত। লেনদেন হয়েছে ২৪৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
এই খাতে ১৯টি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১০টির দর। বিপরীতে দুটি কোম্পানি লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে।
বস্ত্র খাতে লেনদেন হয়েছে ২২৯ কোটি টাকা। দ্বিতীয় স্থানে নেমে আসার পাশাপাশি কমেছে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদরও। ১৩টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৩১টির দর। ১৫টি লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতে লেনদেন হয়েছে ১৮২ কোটি টাকা। এই লেনদেনের অর্ধেকই ছিল বেক্সিমকো লিমিটেডের দখলে। আগের দিন ১২৬ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হওয়া কোম্পানিটিতে এদিন হাতবদল হয়েছে ১০৮ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয়েছে চতুর্থ সর্বোচ্চ ১৫০ কোটি ৯০ লাখ টাকা আর খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ১৪৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
এদিন প্রধান খাতগুলোর মধ্যে ওষুধ ও রসায়ন ছাড়া প্রায় সবগুলোতে বেশিরভাগ দর হারিয়েছে।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি সূচক বাড়িয়েছে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস। কোম্পানির ৬.১২ শতাংশ দরবৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ১৬.৪৬ পয়েন্ট।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮.৪৯ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা। কোম্পানির দর বেড়েছে ২.৭১ শতাংশ।
আর ওরিয়ন ফার্মার দর ৫.৬৪ শতাংশ বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ৫.৭ পয়েন্ট।
এ ছাড়াও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, আইপিডিসি, লাফার্জ হোলসিম, বেক্সিমকো, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সের দরবৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে।
সব মিলিয়ে এই দশটি কোম্পানি সূচকে যোগ করেছে ৫০.০৩ পয়েন্ট।
বিপরীতে ওয়ালটন হাইটেক, তিতাস গ্যাস, পাওয়ার গ্রিড, আরএকে সিরামিকস, ব্রিটিশ আমেরিকার টোব্যাকো, স্কয়ার ফার্মা, জিপিএইচ ইস্পাত, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, প্রাইম ব্যাংক ও বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের দরপতনে সূচক কমেছে।
এই দশ কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ৩১ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
দর বাড়ার শীর্ষে রয়েছে রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড । ১ টাকা ৭০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়ে শেয়ারটি সর্বশেষ ১৮ টাকা ৭০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
৭৪৩ বারে কোম্পানির ১১ লাখ ৫৭ হাজার ৯৮৯টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ১৭ টাকা ৩০ পয়সা বা ৯.৯৫ শতাংশ। শেয়ারটি সর্বশেষ ১৯১ টাকা ২০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
তৃতীয় স্থানে থাকা সেন্ট্রাল ফার্মার দর ১ টাকা ১০ পয়সা বা ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়ে ১৩ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।
এ ছাড়াও দরবৃদ্ধির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে পেপার প্রোসেসিং, রিজেন্ট টেক্সটাইল, বিডি মনোস্পুল পেপার, ইয়াকিন পলিমার, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, বিকন ফার্মা ও ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেড।
দর পতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকার শীর্ষে ছিল ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিআইএফসি, যেটির দর গত কয়েক মাসে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। শেয়ারটির দর ৮০ পয়সা বা ৬.৭২ শতাংশ কমে সর্বশেষ ১১ টাকা ১০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
১৪৬ বারে কোম্পানির ৩ লাখ ৫ হাজার ২৪৬টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যার বাজার মূল্য ৩৪ লাখ টাকা।
আনলিমা ইয়ার্ন ছিল এই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। শেয়ারটির দর ৩ টাকা ২০ পয়সা বা ৭.৪১ শতাংশ কমেছে। লোকসানি কোম্পানিটির সর্বশেষ দর দাঁড়িয়েছে ৪০ টাকা।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে সাফকো স্পিনিং মিলস। ২ টাকা বা ৬.৪১ শতাংশ কমে এদিন শেয়ারটি সর্বশেষ ২৯ টাকা ২০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
পতনের তালিকায় প্রথম দশের মধ্যে রয়েছে- সোনারগাঁও টেক্সটাইল, জুট স্পিনার্স, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, কেডিএস অ্যাক্সেসরিজ, আরডি ফুড, প্রাইম টেক্সটাইল ও শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
আরও পড়ুন:
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য