জ্বালানি সাশ্রয়ে সূচি করে লোডশেডিং করার খবরে পুঁজিবাজারে যে ধস দেখা গিয়েছিল, অফিস সূচি পুনর্নির্ধারণ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি একদিন করে বাড়ানোর সিদ্ধান্তে সেই আতঙ্ক দেখা যায়নি। সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড গড়ার পর দিন বাজারে সূচক বাড়ল আরেকটু, কিছুটা বেশি হলো লেনদেনও।
এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে টানা তিন আর সব মিলিয়ে টানা ছয় দিন বাড়ল সূচক। লেনদেন হলো গত ১০ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
সোমবার মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি অফিস সূচি হবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ব্যাংকে লেনদেন চলবে ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত আর পরের দুই ঘণ্টা ব্যাংকের অন্যান্য কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর দিন সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার শুরুই হয় শেয়ারের দর ও সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে। শুরু থেকেই লেনদেনের গতি ছিল ভালো।
এর আগে যখন জ্বালানি সাশ্রয়ে প্রথমবারের মতো সূচি তৈরি করে লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত হয়, তার প্রভাবে গত ১৮ জুলাই পুঁজিবাজারে দেখা যায় ধস। সেদিন আতঙ্কে দর হারায় ৩৫২টি কোম্পানি, বিপরীতে বাড়ে কেবল ১০টির দর। দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ বহাল থাকার পরও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক সূচকের পতন হয় ৮৭ পয়েন্ট।
তবে এখনকার পরিস্থিতি ভিন্ন। তবে জুলাইয়ের শেষে সব শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়ার পর পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর মধ্যে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট শেয়ারের ক্রয়মূল্যে গণনার বিষয়ে সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে জানানো হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগসীমার গণনাও একই পদ্ধতিতে হবে।
এর মধ্যে বন্ড ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকে এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার অনুরোধ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন। এর মধ্যে বন্ডের বিনিয়োগ এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখতে বিএসইসির অনুরোধও আছে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান শিবলী-রুবাইয়াত উল ইসলাম জানিয়েছেন, এ বিষয়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নমনীয়।
দীর্ঘ এক যুগ পর পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিবাচক মনোভাবের পাশাপাশি অর্থনীতি নিয়ে আতঙ্ক কাটতে শুরু করার প্রভাব পুঁজিবাজারে স্পষ্ট। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে টাকার অবমূল্যায়ন থেমে ডলারের দরপতন, যা অর্থনীতির জন্য একটি ভালো খবর হিসেবে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি। সব মিলিয়ে চাপ কাটিয়ে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর অপেক্ষায় সবাই।
অর্থনৈতিক সংকটের আশঙ্কা কাটতে শুরু করার পর গত সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস থেকেই পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে বাড়তে তাকে। সেই সপ্তাহের তিন কর্মদিবসে ৯২ পয়েন্ট এবং চলতি সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ১৮ পয়েন্টের পর দ্বিতীয় দিন আরও ৪০ এর পর তৃতীয় দিন বাড়ল আরও ১৫ পয়েন্ট।
এ নিয়ে টানা ছয় কর্মদিবসে বাড়ল ১৬৭ পয়েন্ট।
সূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতি বৃদ্ধি পুঁজিবাজারে নিষ্ক্রিয় বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় হয়ে উঠার প্রমাণ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর দিন থেকে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে অলস বসে থাকা বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনা শুরু করেন চলতি মাসের শুরুর দিকেই। এর মধ্যে সোমবার ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড হয়। সেটিকে আরও একটু ছাড়িয়ে গেল আজ।
১২৩ কোম্পানির উত্থান ও ১৬৯টির দরপতন এবং ৮৯টি আগের দিনের দরে লেনদেন হওয়ার দিন হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ৪৮৭ কোটি ৪৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার শেয়ার, যা গত ১০ জানুয়ারি লেনদেন হওয়া ১ হাজার ৪৮৭ কোটি ৪৫ লাখ ৪৪ হাজারের চেয়ে কিছুটা কম মাত্র।
চলতি বছর মঙ্গলবারের চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে কেবল আট কর্মদিবস।
তবে লেনদেন ও সূচকের এই ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে তাড়াহুড়ো নেই সেটি স্পষ্ট। কোনো একক খাতে হুট করে দর বেড়ে যাওয়ার যে প্রবণতা এক আগে নানা সময় দেখা গেছে, সেটি এবার নেই বললেই চলে।
উত্থানের পুঁজিবাজারে এক দিনে বহু সংখ্যক শেয়ারের দর সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে হাতবদলের চিত্রও সেভাবে দেখা যাচ্ছে না।
কেবল দুটি কোম্পানির দর সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে লেনদেন হয়েছে। আরও তিনটি কোম্পানির দর ৮ শতাংশের বেশি, দুটি করে কোম্পানির দর ৭ শতাংশ, ৬ শতাংশ এবং ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে ৪টি কোম্পানির দর আর ৯ শতাংশের বেশি বেড়েছে ৩টির দর।
অন্যদিনে দরপতনের শীর্ষে দেখা গেছে দুর্বল কোম্পানির প্রাধান্য যেগুলোর দর নানা গুঞ্জনে গত কয়েক মাসে বেড়েছে অনেকটাই।
এর মধ্যে সর্বোচ্চ দর হারানো দুটি কোম্পানিটি দর হারিয়েছে ৭ শতাংশ, ৬ শতাংশ হারিয়েছে একটি, ৩টির দর হারিয়েছে ৫ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি, ৬টির দর হারিয়েছে ৪ শতাংশের বেশি, ১৩টির দর কমেছে ৩ শতাংশের বেশি।
পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক উত্থানের বিষয়ে ট্রেজার সিকিউরিটির অপারেটিং অফিসার মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা সাবধানে পা ফেলেছেন। সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করছেন, যার কারণে বাজারের উত্থানটা ধীরে ধীরে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বড় মূলধনি কোম্পানিতে বেশ কিছু ফান্ডের ইনজেকশন লক্ষ করা যাচ্ছে। এটি স্থায়ী হবে কি-না তা বোঝা যাবে আরও কিছু দিন পর।’
বস্ত্রকে ছাড়িয়ে গেল ওষুধ ও রসায়ন
লেনদেনে এদিন প্রাধান্য ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের। এক মাসেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো বস্ত্রকে হটিয়ে শীর্ষে উঠে এলো এই খাত। লেনদেন হয়েছে ২৪৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
এই খাতে ১৯টি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১০টির দর। বিপরীতে দুটি কোম্পানি লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে।
বস্ত্র খাতে লেনদেন হয়েছে ২২৯ কোটি টাকা। দ্বিতীয় স্থানে নেমে আসার পাশাপাশি কমেছে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদরও। ১৩টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৩১টির দর। ১৫টি লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতে লেনদেন হয়েছে ১৮২ কোটি টাকা। এই লেনদেনের অর্ধেকই ছিল বেক্সিমকো লিমিটেডের দখলে। আগের দিন ১২৬ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হওয়া কোম্পানিটিতে এদিন হাতবদল হয়েছে ১০৮ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয়েছে চতুর্থ সর্বোচ্চ ১৫০ কোটি ৯০ লাখ টাকা আর খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ১৪৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
এদিন প্রধান খাতগুলোর মধ্যে ওষুধ ও রসায়ন ছাড়া প্রায় সবগুলোতে বেশিরভাগ দর হারিয়েছে।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি সূচক বাড়িয়েছে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস। কোম্পানির ৬.১২ শতাংশ দরবৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ১৬.৪৬ পয়েন্ট।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮.৪৯ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা। কোম্পানির দর বেড়েছে ২.৭১ শতাংশ।
আর ওরিয়ন ফার্মার দর ৫.৬৪ শতাংশ বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ৫.৭ পয়েন্ট।
এ ছাড়াও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, আইপিডিসি, লাফার্জ হোলসিম, বেক্সিমকো, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সের দরবৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে।
সব মিলিয়ে এই দশটি কোম্পানি সূচকে যোগ করেছে ৫০.০৩ পয়েন্ট।
বিপরীতে ওয়ালটন হাইটেক, তিতাস গ্যাস, পাওয়ার গ্রিড, আরএকে সিরামিকস, ব্রিটিশ আমেরিকার টোব্যাকো, স্কয়ার ফার্মা, জিপিএইচ ইস্পাত, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, প্রাইম ব্যাংক ও বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের দরপতনে সূচক কমেছে।
এই দশ কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ৩১ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
দর বাড়ার শীর্ষে রয়েছে রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড । ১ টাকা ৭০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়ে শেয়ারটি সর্বশেষ ১৮ টাকা ৭০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
৭৪৩ বারে কোম্পানির ১১ লাখ ৫৭ হাজার ৯৮৯টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ১৭ টাকা ৩০ পয়সা বা ৯.৯৫ শতাংশ। শেয়ারটি সর্বশেষ ১৯১ টাকা ২০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
তৃতীয় স্থানে থাকা সেন্ট্রাল ফার্মার দর ১ টাকা ১০ পয়সা বা ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়ে ১৩ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।
এ ছাড়াও দরবৃদ্ধির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে পেপার প্রোসেসিং, রিজেন্ট টেক্সটাইল, বিডি মনোস্পুল পেপার, ইয়াকিন পলিমার, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, বিকন ফার্মা ও ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেড।
দর পতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকার শীর্ষে ছিল ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিআইএফসি, যেটির দর গত কয়েক মাসে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। শেয়ারটির দর ৮০ পয়সা বা ৬.৭২ শতাংশ কমে সর্বশেষ ১১ টাকা ১০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
১৪৬ বারে কোম্পানির ৩ লাখ ৫ হাজার ২৪৬টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যার বাজার মূল্য ৩৪ লাখ টাকা।
আনলিমা ইয়ার্ন ছিল এই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। শেয়ারটির দর ৩ টাকা ২০ পয়সা বা ৭.৪১ শতাংশ কমেছে। লোকসানি কোম্পানিটির সর্বশেষ দর দাঁড়িয়েছে ৪০ টাকা।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে সাফকো স্পিনিং মিলস। ২ টাকা বা ৬.৪১ শতাংশ কমে এদিন শেয়ারটি সর্বশেষ ২৯ টাকা ২০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
পতনের তালিকায় প্রথম দশের মধ্যে রয়েছে- সোনারগাঁও টেক্সটাইল, জুট স্পিনার্স, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, কেডিএস অ্যাক্সেসরিজ, আরডি ফুড, প্রাইম টেক্সটাইল ও শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
আরও পড়ুন:
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য