বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাতে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ কমবে বলে মনে করছেন পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক রিয়াজ খান।
তিনি বলেছেন, ‘নতুন গভর্নর মহোদয় এসে ঋণ পুনঃ তফসিল ও পুনর্গঠনে ব্যাংকগুলোর ওপর যে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই নির্দেশনা মানলে, সঠিকভাবে এ-সংক্রান্ত সার্কুলার ব্যাংকগুলো অনুসরণ করলে আমরা আমাদের ব্যাংকব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারব। ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণ সামনের দিনে কমে আসবে।’
নিউজবাংলাকে দেয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এই আশার কথা শুনিয়েছেন তারেক রিয়াজ খান।
২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি পদ্মা ব্যাংকের নবযাত্রা হয়। নবজন্মের পর সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। এ সময়ে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ কমেছে, মূলধন বেড়েছে। আমানত বেড়েছে কয়েক গুণ।
ব্যাংকটির ৬০ শতাংশ ইক্যুইটি রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কাছে। ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পদ্মা ব্যাংক। এ বছরের শেষ নাগাদ বেসরকারি খাতের এই ব্যাংকটিতে আসছে বিদেশি বিনিয়োগ।
মহামারি করোনার ধকল কাটতে না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ওলটপালট হয়ে যাওয়া বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের চ্যালেঞ্জ, মুদ্রাবাজারের অস্থিরতা, খেলাপি ঋণ, নতুন গভর্নরের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপসহ ব্যাংক খাতের নানা বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলছেন পদ্মা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী তারেক রিয়াজ খান।
নিউজবাংলা: করোনা-যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। বাংলাদেশ এর বাইরে নেই। করোনার মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যাংক খাত গ্রাহকদের সেবা দিয়েছে। সেই ব্যাংক খাতের সার্বিক অবস্থা এখন কেমন?
তারেক রিয়াজ খান: করোনার সময় সরকার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশ কিছু পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিটা থেমে যায়নি। বিভিন্ন সময়ে লকডাউন দেয়া হয়। সব কিছু বন্ধ থাকলে পুরো সময় ব্যাংক খাতের কর্মীরা প্রচণ্ডভাবে এবং সাংঘাতিক একটা হেরোইক পদক্ষেপ নিয়ে আমাদের অর্থনীতির পাশে থেকেছেন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সরকারের বড় পদক্ষেপ ছিল প্রণোদনা প্যাকেজ। বাংলাদেশ ব্যাংক এটা বাস্তবায়নে সব সময় সাপোর্ট দিয়েছে। এ জন্য আমি সাধুবাদ জানাই। প্রণোদনার সুফল প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেয়ার ফলে অর্থনীতির অগ্রযাত্রা থেমে যায়নি।
করোনায় এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি, তৃতীয় ঢেউ চলমান। করোনা-পরবর্তী এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলছে। গ্লোবাল ইকোনমিতে এটার প্রভাব পড়ছে। জ্বালানি তেল, খাদ্যপণসহ সব কমোডিটির মূল্যের ওপর বেশি প্রভাব পড়েছে।
সারা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী। ফলে কৃচ্ছ্রসাধন করছে সবাই। আমাদের দেশেও কৃচ্ছ্রসাধনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এটা ধীরে ধীরে কমে আসবে বলে আমি মনে করি।
নিউজবাংলা: সারাবিশ্বে অস্থির ডলার বাজার। মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। মানি এক্সচেঞ্জ ও ব্যাংকগুলোতে চলছে পরিদর্শন কার্যক্রম। ডলার সাশ্রয়ে আমদানির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। ফলে আমদানি কমতে শুরু হয়েছে। আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে কি এর সুফল পাওয়া যাবে?
তারেক রিয়াজ খান: ডলারের যে সংকট হচ্ছে- এটা কমন ফেনোমেনা। কারণ আমদানি খরচ বেড়েছে। কমোডিটি প্রাইস বেড়েছে। আমরা আমদানিনির্ভর দেশ। রপ্তানির চেয়ে আমদানি অনেক বেশি করতে হয়। কমোডিটি, ফুয়েল, এনার্জি প্রাইস ওভার না হলে ঘাটতি হতো না।
এটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্যও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। টাকা অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমদানি কমানোর জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এর সুফল আমরা পাচ্ছি।
ব্যাংক রেটের সঙ্গে কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে ডলারের পার্থক্য বেশি। কার্ব মার্কেটে বা মানি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো চড়া দামে ডলার বিক্রির কারণে আমাদের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আরও কঠোর হয়েছে। বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করছে। কিন্তু দেশের নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠানের লাভের আগে দেশের ভালো সবার মাথায় রাখতে হবে। দেশ ভালো থাকলে আমরাও ভালো থাকব।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে আমরা ভালো দিন দেখতে পাব। আমিও সে ব্যাপারে আশাবাদী।
নিউজবাংলা: ব্যাংক খাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণ। এ থেকে উত্তরণের উপায় কী? ঋণখেলাপিদের বিভিন্ন সুবিধা দেয়ার কারণে অনেকে ইচ্ছা করে ঋণ পরিশোধ করেন না। এই ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি’দের থেকে ঋণ আদায় কি ধরণের পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে বলে আপনি মনে করেন।
তারেক রিয়াজ খান: খেলাপি ঋণ আদায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। ‘আগ্রাসী ব্যাংকিং’ শব্দটা মাঝে মাঝে আমরা ব্যবহার করি। আগ্রাসী ব্যাংকিং ও প্রুডেন্ট ব্যাংকিং-এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। প্রফেশনাল ব্যাংকারদের এ বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে।
আমরা অনেক ক্ষেত্রে বলছি, ঋণগ্রহীতারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। তাদের দোষ দেয়ার আগে নিজের কাঁধে দোষটা নিতে হবে। আমি কেন, ওই লোনগুলো এক্সটেন করছি, কেন আননেসাসারিলি নর্মস ও ক্রেডিটের যে স্ট্যান্টার্ডগুলো আছে, ক্রেডিট পলিসির যে গাইডলাইন আছে সেগুলো বাইপাস করে কেন আমরা একটা অসুস্থ প্রতিয়োগিতায় লিপ্ত?
ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রি ও প্রফেশনাল ব্যাংকাররা যদি স্ট্রং হয়ে যায়, কঠিন একটা জায়গায় যদি চলে যায় যে, না আমরা আমাদের ইন্ডাস্ট্রি বাঁচাব, দেশকে বাঁচাব তাহলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশের অবস্থা অনেক ভালো হবে।
সোয়া লাখ কোটি টাকার ওপর যে খেলাপি ঋণ সেখানে বসে থাকলে হবে না। এর থেকে আলোর পথে এগোতে হবে। সেই পথে এগোনোর জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেয়া পদক্ষেপের আবারও স্যালুট জানাই। কারণ সম্প্রতি ঋণ পুনঃ তফসিল ও পুনর্গঠনে মাস্টার সার্কুলার দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নির্দেশনার আলোকে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবাদিহি নিশ্চিত করা হয়েছে। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ অপারেশনাল না। নতুন গভর্নর এসে ঋণ পুনঃ তফসিল ও পুনর্গঠনে ব্যাংকগুলোর ওপর যে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই নির্দেশনা মানলে, সঠিকভাবে সার্কুলার অনুসরণ করলে আমরা আমাদের ব্যাংকব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারব। ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণ সামনের দিনে কমে আসবে।
পদ্মা ব্যাংক সম্পর্কে বলতে হয়, ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি ব্যাংকটির নবজন্ম হয়েছে। এরপর থেকে আমাদের টিম খেলাপি ঋণ কমিয়ে এনেছে। ৭৮ শতাংশ খেলাপি ঋণ এখন ৬৭ শতাংশে নেমেছে। এ বছরে আরও ১০ শতাংশ কমানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের লোন রিকভারি ডিভিশনকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। রিকভারি রিলেশনশিপ অফিসার হিসেবে যারা ফ্রন্ট লাইনে আছেন তারা ছাড়াও হেড অফিসের মনিটরিং আরও জোরদার করা হয়েছে। আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে আমরা খেলাপি ঋণের কশাঘাত থেকে বেরিয়ে আসব।
নিউজবাংলা: নতুন গভর্নর যোগদান করার পর বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো দুর্বল ১০ ব্যাংককে সবল করার উদ্যোগ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা চাই না কোনো ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাক, যারা দুর্বল তাদের সবল করতে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আমানতকারীদের ব্যাংক খাতের ওপর আস্থা ধরে রাখতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’ নতুন গভর্নরের নতুন এ প্রচেষ্টা আপনি কিভাবে দেখছেন?
তারেক রিয়াজ খান: নতুন গভর্নর মহোদয় যোগদানের পর ব্যাংক খাতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন, সেগুলো খুবই সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। দিকনির্দেশনাগুলো খুব ইউনিক। আমাদের বর্তমানে ৬২টি ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি নয়, খেলাপি ঋণ, মূলধন পর্যাপ্ততার হারের দিকে এ সংখ্যা আরও বেশি হবে। ব্যাসেল-৩-এর গাইডলাইন অনুসরণ করে মূলধন সংরক্ষণের বিষয়ে যা বলা হয়েছে, অধিকাংশ ব্যাংক সেটা বাস্তবায়নে স্ট্রাগল (লড়াই) করে যাচ্ছে। কিন্তু চারটি প্রাইমারি ইন্ডিকেটরের (সূচক) ওপর বেজ করে ১০টি ব্যাংককে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের হার, লিকুইডিটি, মূলধন সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা সঞ্চিতি- এ চারটি ইন্ডিকেটর ছাড়াও আরও কিছু সাব-ইন্ডিকেটর রাখা হয়েছে।
নতুন গভর্নর যে স্ট্রাটেজিক প্ল্যান নিয়েছেন, সেটা শুধু ব্যাংকগুলো বাঁচানোর জন্য নয়। এরা যেন আরও শক্তিশালী হয়, সে চেষ্টাও করছেন। এসব ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক একটা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) করে কিছু ইন্ডিকেটরের ব্যাপারে উল্লেখ করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা এসব তদারকি করবেন।
পদ্মা ব্যাংকে রেগুলেটর হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অলরেডি তিনটি পলিসি সাপোর্ট দিয়েছে। যেমন- আমাদের ফিন্যানশিয়াল স্টেটমেন্ট রিস্ট্রাকচারিং করে দিয়েছে।দ্বিতীয়ত- ক্যাপিটাল রিস্ট্রাকচারিংয়ের ফলে পেইড আপ ক্যাপিটাল ফিরে পেয়েছি। তৃতীয়ত-রিভাইজড লিক্যুইডিটি ফ্রেমওয়ার্ক। এটার ফলে ব্যাংকে নগদ জমার হার (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ সংরক্ষণের হারের (এসএলআর) ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু সুবিধা দিয়েছে। ফলে আমাদের লিক্যুইডিটির অনেক উন্নতি হয়েছে। রিভাইজড লিক্যুইডিটির ফলে আমরা এ মুহূর্তে মানি মার্কেটে নেট বরোয়ার না, নেট লেন্ডার। আমরা অন্যান্য ব্যাংককে লিক্যুইডিটি সাপোর্ট দিচ্ছি।
নিউজবাংলা: এখন দেশে অনেক ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তীব্র প্রতিযোগিতামূলক এ সময়ে ব্যাংক খাতের সামনে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে?
তারেক রিয়াজ খান: আমাদের ব্যাংক খাত ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ট্রাডিশনাল ব্যাংকিং দিয়ে আমরা বেশি দিন চালাতে পারব না। নতুন জেনারেশন ব্যাংকে যায় না। মোবাইল অ্যাপ-ইন্টারনেটে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। এ কম্পিটিশনে বেঁচে থাকা এবং নিজেকে সেভাবে গড়ে তোলা বড় চ্যালেঞ্জ।
পদ্মা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকে অলরেডি কোর ব্যাংকিং সিস্টেম মাইগ্রেশন অ্যাপ্রুভাল পেয়েছি। পদ্মা ওয়ালেট ও পদ্মা ইন্টারনেট ব্যাংকিং পুরোপুরি ঢেলে সাজাচ্ছি। আমরা নিজেদের ভালোভাবে তৈরি করছি, আগামী ৫-৭ বছরের মধ্যে ডিজিটাল স্যাভিব্যাংকে পরিণত হওয়ার জন্য। এ প্রতিযোগিতায় পদ্মা ব্যাংক অবশ্যই টিকে থাকবে।
নিউজবাংলা: পদ্মা ব্যাংকের গ্রাহকদের উদ্দেশে কিছু বলুন।
তারেক রিয়াজ খান: গ্রাহকের বলতে চাই, ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি পদ্মা ব্যাংকের নবযাত্রা হয়েছে। ব্যাংকের ৬০ শতাংশ ইক্যুইটি হোল্ড করছে রাষ্ট্রীয় ব্যাংক সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ। আমাদের শক্তিশালী পরিচালনা পর্ষদ আছে। এখানে ইনডিভিজ্যুয়াল কোনো ডিরেক্টর নেই। সবাই প্রাতিষ্ঠানিক ও নমিনেটেড। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নির্দেশে খুব তাড়াতাড়ি একটা এমওইউ করব। সেখানে অনেকে কী পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর এগ্রি করব। বেশ কিছু সাপোর্ট বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পেয়েছি। এ বছরের শেষ নাগাদ পদ্মা ব্যাংকে ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্টের (এফডিআই) মাধ্যমে ফরেন ইক্যুইটি ইনজেক্ট করে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থান আরও বাড়িয়ে নেব।
আমানতকারীদের উদ্দেশে বলতে চাই, ব্যাংকের কাছে আপনাদের যে টাকা জমা সেটা সম্পূর্ণ নিরাপদ। গত বছরের তুলনায় আমানত চার গুণ বেড়েছে এবং এটা হয়েছে আমানতকারীদের আস্থার কারণে। আমানতকারীদের এই আস্থার প্রতিদান দিতে ব্যাংকের ম্যানেজমেন্ট ও পরিচালনা পর্ষদ বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানার ব্যাংক হিসাবের বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
বিএফআইইউর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মঙ্গলবার ইউএনবিকে বলেন, সোমবার বিএফআইইউ দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়ে নির্দেশনা পাঠিয়েছে।
বিএফআইইউর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, লেনদেন তলব করার জন্য মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালার সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
চিঠিতে তলব করা ব্যক্তিদের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেয়া হয়েছে।
বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টে ওই টাকা কোথায় ও কীভাবে এসেছে, পরে ওই টাকা কোথায় খরচ হয়েছে এবং নগদে উত্তোলন করা হয়েছে কি না, তা জানাতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে এই ট্রাস্টের ঠিকানা হিসেবে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু ভবন হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
শেখ হাসিনা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান এবং তার বোন শেখ রেহানা একজন ট্রাস্টি।
এ ছাড়া এই ট্রাস্টের সঙ্গে জড়িত অন্যদের বা ট্রাস্টের হিসাব থেকে যেসব অ্যাকাউন্টে অর্থ স্থানান্তর বা জমা হয়েছে, তাদের বিষয়েও তথ্য চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:অর্থনীতিতে টাকার প্রবাহ সচল করার লক্ষ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
৮ আগস্ট ক্ষমতায় আসার পর থেকে যেসব প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলোর ওপর গুরুত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সরকার নীতিগতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল মাত্র ৮ শতাংশ।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, এখন থেকে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একনেক সভা সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাস্তবায়নের হার ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে সরকারের অনুমোদিত এডিপি প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘এভাবে আমরা চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ বাস্তবায়নের হার বাড়াতে পারব বলে আশা করছি।’
সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে দুর্নীতিমুক্ত ও উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। আর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী যেকোনো দিক থেকে দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মনে করে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঠিকাদার নিয়োগসহ প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায়ে নানা অনিয়ম হয়। এর ফলে বেশ কিছু প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে গিয়েছিল।
উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু থেকেই সরকারি অর্থের অপচয় ও দুর্নীতি বন্ধ করার চেষ্টা করেছে। পাশাপাশি প্রকল্পের সংখ্যা কমিয়েছে। এতে বাস্তবায়নের হার অনেকাংশে কমে যায় এবং অর্থনীতিতে টাকার প্রবাহে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অবশ্যই প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করব। নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেসব ভালো প্রকল্পের কথা ভাবছি এবং যেগুলো নতুন প্রকল্প পরিচালক পেয়েছে, সেগুলো দ্রুত এগিয়ে নেয়া হবে।’
গণঅভ্যুত্থানের পর গত ৮ আগস্ট ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেক উন্নয়ন প্রকল্প রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের চার মাসে উন্নয়ন বাজেটের মাত্র আট শতাংশ বাস্তবায়ন করে সর্বনিম্ন বাস্তবায়নের রেকর্ড গড়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এটি বাস্তবায়নের হার ছিল ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, তাদের ক্ষেত্রে এ হার ১২ থেকে ১৩ শতাংশ।
বিশেষ করে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে সরকার।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম একনেক সভায় উন্নয়ন বাজেট কমানোর সিদ্ধান্ত হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দেয়।
এডিপিতে সর্বোচ্চ ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা (বাজেট বরাদ্দের ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ) বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত।
স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপিসহ ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এডিপির মোট আকার দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকায়।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে ভোক্তা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৬৭ টাকা থেকে ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা করা হয়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দামও একই হারে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫৭ টাকা লিটার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সোমবার ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড ভেজিটেবল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার তেলের নতুন দাম ঘোষণা করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রেমিট্যান্স প্রবাহে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অক্টোবর-নভেম্বরে তুলনামূলক কম রেমিট্যান্স এলেও ডিসেম্বরের শুরুতেই বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম এই খাতে সুবাতাস বইছে।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেশে ৬১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ৮ কোটি ৮১ লাখ ডলার প্রবাসী আয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম সাতদিনে দেশে এসেছে ৬১ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স। আর গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্স এসেছিল ৫০ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ১১ কোটি ডলার।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮ কোটি ৫২ লাখ ২০ হাজার ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে চার কোটি ৫৮ লাখ ২০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩৮ কোটি ৩৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২০ লাখ ৩০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে উঠা-নামার প্রবণতা দেখা গেছে। গত জুনে ২৫৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসার পর জুলাইয়ে তা কমে দাঁড়ায় ১৯১ কোটি ডলারে, যা গত দশ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ ও দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেমিট্যান্সের পালে ফের হাওয়া লাগতে শুরু করে।
আগস্টে দেশে রেমিট্যান্স আসে ২২২ কোটি ডলার এবং সেপ্টেম্বরে আসে ২৪০ কোটি ডলার, যা চলতি অর্থবছরে এক মাসে সর্বোচ্চ।
এরপর অক্টোবরে (২৩৯ কোটি ডলার) ফের রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা পড়ে, যা নভেম্বরেও (২১৯ কোটি ডলার) অব্যাহত থাকে। তবে ডিসেম্বরে ফের ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:বিশ্বের বৃহত্তম পিৎজা ব্র্যান্ড ডোমিনো’জ পিৎজার ব্যবসায়িক যাত্রার ৬৪ বছর উদযাপন করা হবে সোমবার।
প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আগামী ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে ডোমিনো’জ পিৎজা তাদের ব্যবসার ৬৪ বছরের অসাধারণ যাত্রা উদযাপন করতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশের সকল পিৎজাপ্রেমীদের জন্য ডোমিনো’জ পিৎজার ৩৬টি রেস্টুরেন্টে ৩৬টির বেশি পিৎজার ওপর ৩৬% আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট ঘোষণা করা হয়েছে।
‘ক্রেতাগণ এই অফার উপভোগ করতে পারবেন ডোমিনো’জ পিৎজার অ্যাপ (অ্যাপ স্টোর ও প্লে স্টোরে উপলব্ধ) অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার করে। অফারটি ডাইন-ইন, টেকঅ্যাওয়ে এবং ডেলিভারির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এ উদযাপন শুধু একটি অফারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি এক অসাধারণ যাত্রার ৬৪ বছরে পদার্পণ উদযাপন, যা শুরু হয়েছিল একজন ব্যক্তির স্বপ্ন দিয়ে।
শুরুর গল্প
এই গল্প শুরু হয় ১৯৬০ সালে, যখন টম মোনাহ্যান ও তার ভাই জেমস ৯০০ ডলারে মিশিগানের সিল্যান্টিতে একটি ছোট পিৎজা রেস্টুরেন্ট ডোমিনিক’স পিৎজা কিনে নেন। খাবারের ব্যবসায় কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই এবং সামান্য কিছু মূলধন নিয়ে টম শুরুতে অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। কিছুদিন পর তার ভাই ব্যবসা ছেড়ে চলে যান এবং টম একাই রেস্টুরেন্ট চালাতে থাকেন।
টম প্রায়শই দীর্ঘ সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করতেন এবং নিজে ডেলিভারিও দিতেন।
এক বছরের মধ্যে টম ব্যবহৃত একটি ভক্সওয়াগন বিটল গাড়ির বিনিময়ে তার ভাইয়ের শেয়ার কিনে কোম্পানির সম্পূর্ণ মালিকানা লাভ করেন। এ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই ডোমিনো’জ পিৎজার সাধারণ স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্ট থেকে বৈশ্বিক পিৎজা সাম্রাজ্যে পরিণত হওয়ার ভিত্তি তৈরি করে।
টমের লক্ষ্য ছিল একটি পিৎজা ব্রান্ড তৈরি করা, যা শুধুমাত্র স্বাদের জন্য নয়, বরং সেবার জন্যও পরিচিত হবে। তিনি গরম ও ফ্রেশ পিৎজা ডেলিভারি নিশ্চিত করার দিকে জোর দেন, যা সেই সময়ে এক বিপ্লবী ধারণা ছিল।
১৯৬৫ সালে তিনি ব্যবসার নাম বদলে ‘ডোমিনো’জ পিৎজা’ রাখেন। ডোমিনো'জ-এর লোগোর তিনটি ডট তখনকার তিনটি রেস্টুরেন্টকে নির্দেশ করত এবং তার পরিকল্পনা ছিল ভবিষ্যতে নতুন রেস্টুরেন্ট যোগ হলে লোগোতে একটি ডট বাড়ানো হবে। তবে দ্রুত ব্যবসা সম্প্রসারণের ফলে এটি আর সম্ভব হয়নি।
বর্তমানে ডোমিনো’জ পিৎজা বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশে প্রায় ২১ হাজারের বেশি রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করে এবং প্রতিদিন গ্রাহকদের নিকট লক্ষাধিক পিৎজা পরিবেশন করে।
বাংলাদেশে ডোমিনো’জ পিৎজা
ডোমিনো’জ পিৎজা ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে।
সম্প্রতি মিরপুরের সনি স্কয়ারে নিজেদের ৩৬তম রেস্টুরেন্ট খুলে শাখার সংখ্যার দিক দিয়ে রাজধানীর সর্ববৃহৎ রেস্টুরেন্ট চেইনে পরিণত হয়েছে ডোমিনো’জ পিৎজা।
আরও পড়ুন:বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, জ্বালানি খাতে প্রতি বছর প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। সে হিসাবে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে দেশের মানুষের মাথাপিছু ভর্তুকির হার প্রায় ৩ হাজার টাকা।
শনিবার ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘জ্বালানির সহনীয় মূল্য ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘গ্রাহকরা প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় মূল্য ৮ দশমিক ৫৫ টাকা দিলেও সরকার তা ১২ থেকে ২৫ টাকা দরে কিনে থাকে। এলএনজি আমদানিতে প্রতি ইউনিট ৭০ টাকা খরচ পড়লেও শিল্প খাতে ৩০ টাকা হারে সরবরাহ করা হচ্ছে। মূল্যের এ পার্থক্যটা সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয়।’
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে প্রতিযোগিতা না থাকা এবং গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে আমাদের অধিক মূল্যে জ্বালানি কিনতে হচ্ছে। আমাদের চার হাজার এমএমসিএফটি গ্যাস প্রয়োজন। অথচ রয়েছে তিন হাজারেরও কম।
ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, তেল আমদানিতে উন্মুক্ত দরপত্রের কারণে আগের চেয়ে ৩৫ শতাংশ কম দামে পাওয়া গেছে। এর ফলে সাশ্রয় হবে ৩৭০ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ খাতে আইপিপির পরিবর্তে মার্চেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট ব্যবস্থা চালু হবে।
‘পর্যায়ক্রমে ৪০টি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিজ্ঞাপন দেয়া হবে এবং এ ধরনের প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান সরকার থেকে করা হবে। সরকারি কিছু সংস্থা যেমন- বিদ্যুৎকেন্দ্র, রেল, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক বিভাগের অনেক জমি আছে। এই জমিগুলো ব্যবহার হচ্ছে না। সেখানে এ ধরনের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প করা হবে।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্বিবিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ও খনিজসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তামিম।
তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ ব্যবহারিক হবে না। বরং এক্ষেত্রে তিন থেকে পাঁচ বছরের কর্মপরিকল্পনা অধিক কার্যকর। বাংলাদেশকে জ্বালানি আমদানি করতে হয়। তবে অদূর ভবিষ্যতে দেশকে জ্বালানি স্বনির্ভর করা ও জ্বালানির মূল্য হ্রাসে নিজেদের গ্যাস অনুসন্ধানের ওপর জোর দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন, কনফিডেন্স গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ইমরান করিম, বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুল আক্তার, আইএফডিএল বাংলাদেশ পার্টনার ব্যারিস্টার শাহওয়ার জামাল নিজাম এবং বিএসআরএমের হেড অফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স সৌমিত্র কুমার মুৎসুদ্দি।
আরও পড়ুন:‘বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে অসহযোগিতা করলে আমরা একা ক্ষতিগ্রস্ত হবো না, ভারতও হবে। ভারত আমাদের বিনা পয়সায় কিছু দেয় না, টাকার বিনিময়ে দেয়। কাজেই তারা যদি রপ্তানি বন্ধ করে তাহলে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এর সঙ্গে দু’দেশের লাখ-লাখ লোক জড়িত।’
নৌ-পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এসব কথা বলেছেন।
শনিবার দুপুরে ভোমরা স্থলবন্দরের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত।
তিনি বলেন, ‘আর্থিক ক্ষতির কথা চিন্তা করে তারা রপ্তানি বন্ধ করবে বলে আমার মনে হয় না। তবে যা হচ্ছে তা সবই রাজনৈতিক।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা প্রশ্নের সুরে বলেন, ‘কখনও কি শুনেছেন যে সব পলিটিক্যাল পার্টি এক জায়গায় বসে কথা বলেছে। আজ হোক কাল হোক রাজনীতিবিদরা দেশ চালাবেন। সে জায়গাতে যদি রাজনীতিবিদদের মধ্যে ঐকমত্য না হয় তাহলে জাতীয় যে পথ নির্ধারণ করার কথা সেটা তখন এলোমেলো হয়ে যায়। একদল একরকম বলবে, আরেক দল সেটা অপোজ করবে। এখন সবাই একত্রে বসেছেন- এটা একটা বড় অর্জন। এটা একটা উদাহরণ হয়েছে।’
পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে ভোমরার কার্যক্রম চালু করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংকটের বিষয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এক হাজার ১০০ কোটি টাকার চলমান উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হলে ভোমরা স্থলবন্দর তার কার্যক্রম পুরোদমে চালাতে পারবে।’
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টের সভাপতি আবু হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজিব খানসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হোসেন এর আগে ভোমরা স্থল বন্দরের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য