ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিআইএফসি ২০১৭ সালে ১০ টাকার শেয়ারপ্রতি ৬৯ টাকা ৫৫ পয়সা লোকসান দেয়ার পর বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিতে পারলেই বাঁচে। একপর্যায়ে দর নেমে আসে দুই টাকার ঘরে। সেই কোম্পানির শেয়ার এখন ছুটছে পাগলা ঘোড়ার মতো।
ওই বছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি কোনো সম্পদ ছিলই না, ছিল ৬৬ টাকা ৪০ পয়সার দায়।
গত ১৪ জুলাই কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ৬ টাকা ২০ পয়সা। সেদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৩২৪ পয়েন্ট। সেখান থেকে ধস নেমে ফ্লোর প্রাইস ঘোষণার দিন ২৮ জুলাই সূচকের অবস্থান নামে ৫ হাজার ৯৮০ পয়েন্ট। অর্থাৎ ১০ কর্মদিবসে কমে ৩৪৪ পয়েন্ট বা ৫ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট।
তবে বাজারের গতির বিপরীতে গিয়ে এই সময়ে বিআইএফসির শেয়ারদর এই সময়ে বাড়ে ৫১ শতাংশের বেশি। সেদিন শেয়ারদর দাঁড়ায় ৯ টাকা ৪০ পয়সা। ১০ দিনে বাড়ে ৩ টাকা ২০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পাশাপাশি ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিট ক্রয়মূল্যে গণনার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার আসার পর পাঁচ দিনে ৩৩১ পয়েন্ট সূচক বাড়ার পর বিআইএফসির শেয়ারদর বাড়ে আরও বেশি।
একপর্যায়ে তা ১৩ টাকা ৬০ পয়সায় উঠে যায়। অবশ্য এখন সেখান থেকে কিছুটা কমে ১২ টাকা ২০ পয়সায় নেমেছে।
২০১৭ সালের হিসাব দেয়ার পর বিআইএফসি ২০১৯ সালের আর্থিক হিসাব প্রকাশ করেছে। এই বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১২ টাকা ২০ পয়সা।
২০১৭ সালের তুলনায় লোকসান কমলেও শেয়ারপ্রতি দায়ের দিক থেকে আরও অবনতি হয়েছে। ২০১৯ সাল শেষে শেয়ারপ্রতি দায় দাঁড়ায় ৯৪ টাকা ২৭ পয়সায়।
এমন একটি কোম্পানির শেয়ারদর ১৮ কর্মদিবসে শতভাগের বেশি বেড়ে যাওয়া কোনো স্বাভাবিকতার মধ্যে পড়ে না- এটা বলাই যায়।
বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে, বিআইএফসির মতো ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় সব শেয়ারদরই একইভাবে ঊর্ধ্বগামী।
সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই বাড়ছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ফাস ফাইন্যান্স, প্রিমিয়ার লিজিং ইউনিয়ন ক্যাপিটালের দর।
ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া এসব কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিকভাবে বাড়লেও দেশসেরা কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বাড়েনি সে রকম।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব কোম্পানির দর বাড়ার পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এগুলোর দর বাড়ে জুয়াড়িদের কারণে। আর গুজবে কান দিয়ে কিছুটা দাম বাড়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারী।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং
২০১৯ সালে কোম্পানিটি ১০ টাকার শেয়ারের বিপরীতে লোকসান দিয়েছে ১২৬ টাকা ৩৬ পয়সা। পরের বছর লোকসান দাঁড়ায় ৩১ টাকা ৩০ পয়সা। ২০২১ সালের আর্থিক হিসাব এখনও প্রকাশ হয়নি। সম্প্রতি প্রকাশ পাওয়া ওই বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের হিসাব শেষে জানানো হয়, তিন প্রান্তিক মিলে শেয়ারপ্রতি লোকসান ৭ টাকা ৭১ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি দায় ১৫২ টাকা ৬৪ পয়সা।
গত ২০ জুলাই কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৫ টাকা। গত দুই কর্মদিবস কিছুটা কমার পরও এখন ৬ টাকা ৭০ পয়সা। বেড়েছে ১ টাকা ৭০ পয়সা বা ৩৪ শতাংশ। দুই দিন আগে তা ছিল আরও বেশি, ৭ টাকা ১০ পয়সা।
গত বছর কোম্পানিটির সাবেক এমডি পিকে হালদারের যোগসাজশে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় আলোচনায় আসে প্রতিষ্ঠানটি।
ইউনিয়ন ক্যাপিটাল
২০১৮ সালে শেয়ারপ্রতি ৫৬ পয়সা লাভের পর ২০১৯ সালে ৬ টাকা ১৩ পয়সা লোকসান হয়। ২০২০ সালে ৩ টাকা ৮ পয়সা এবং ২০২১ সালে সর্বশেষ ৮ টাকা ৩ পয়সা লোকসান গুনেছে কোম্পানিটি।
গত ২ নভেম্বর বিভিন্ন অনিয়মের কারণে এক কোটি টাকার বেশি ঋণ প্রদানে নিষেধাজ্ঞা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর কারণ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে পারছে না ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেড।
স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঋণের অর্থ আদায় না করেই অবলোপন বা রাইট অফ করছে। এভাবে নানা অনিয়মের মাধ্যমে সম্পদ শেষ করে দায় পরিশোধের সক্ষমতা হারাচ্ছে আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানটি। শত কোটি টাকা আটকে রেখে ঋণ দিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত ২০ জুলাই এই কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৬ টাকা ৯০ পয়সা। এক পর্যায়ে গত রোববার উঠে যায় ৯ টাকা ৪০ পয়সায়। পরদিন কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ৯ টাকায়। এই কয়দিনে বেড়েছে ২ টাকা ১০ পয়সা বা ৩০ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
এই কোম্পানির শেয়ারদরে অস্বাভাবিকতা আগেও দেখা গেছে। ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এর শেয়ারদর ১৫ টাকা ৫০ পয়সায় উঠে গিয়েছিল। পরে আবার ৬ টাকা ৬০ পয়সায় নেমেও যায়।
ফাস ফাইন্যান্স
পি কে হালদারের ঋণে কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া কোম্পানি এটিও।
২০২০ সালে শেয়ারপ্রতি ১৪ টাকা ৬১ পয়সা লোকসান দেয়া কোম্পানিটি পরের বছরের আর্থিক প্রতিবেদন এখনও প্রকাশ করেনি। ওই বছরের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত আয় ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ হয়েছে প্রায় এক বছর পর।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী ওই বছরের তিন প্রান্তিকে ফাস ফাইন্যান্সের শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৭ টাকা ২০ পয়সা। এর এই সময় পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দায় আছে ২০ টাকা ৫৯ পয়সা।
গত ১৯ জুলাই এই কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ৪ টাকা ৯০ পয়সা। বর্তমান দর ৬ টাকা ৩০ পয়সা। বেড়েছে ১ টাকা ৪০ পয়সা বা ২৮ দশমিক ৬০ শতাংশ।
তবে দর আরও বেড়ে হয়েছিল ৬ টাকা ৭০ পয়সা।
গত বছর সেপ্টেম্বরেও কোম্পানিটির শেয়ারদর অস্বাভাবিকবাবে বাড়তে দেখা যায়। নানা গুজব-গুঞ্জনে এক পর্যায়ে তা ১১ টাকা ৭০ পয়সায় উঠে যায়।
ফারইস্ট ফাইন্যান্স
এই কোম্পানিটি চলতি অর্থবছরের কোনো প্রান্তিকের হিসাব প্রকাশ করেনি এখনও। ২০২১ সালের চূড়ান্ত হিসাবও দেয়নি। ওই বছরের ১ নভেম্বর প্রকাশ করে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত হিসাব দিয়েছে।
এতে দেখা যায় গত বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৭০ পয়সা। শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য কেবল ১ টাকা ১৫ পয়সার।
গত ১৯ জুলাই কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৫ টাকা ২০ পয়সা। বর্তমান দর ৬ টাকা ৩০ পয়সা। বেড়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা বা ২১ দশমিক ১৫ শতাংশ।
তবে দর বেড়েছিল আরও বেশি, ৬ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত।
গত বছরের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্তও কোম্পাটির দর অস্বাভাবিকহারে বাড়তে দেখা যায়। সে সময় দর উঠে ১০ টাকা ৭০ পয়সা পর্যন্ত। গত ২২ মে নেমে আসে ৪ টাকা ৭০ পয়সায়।
ফার্স্ট ফাইন্যান্স লিমিটেড
২০২১ সালের আর্থিক হিসাব ও চলতি অর্থবছরের দুই প্রান্তিকের হিসাব একসঙ্গে প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি। এতে দেখা যায় গত ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের এর শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৮ টাকা ৪৭ পয়সা। আর গত জুন শেষে দুই প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৪ টাকা ১২ পয়সা।
কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি কোনো সম্পদ নেই, উল্টো দায় আছে ১৮ টাকা ৪৪ পয়সার।
এই কোম্পানির শেয়ারদর গত ২০ জুলাই ছিল ৫ টাকা। বর্তমান দর ৬ টাকা। অর্থাৎ এক মাসেরও কম সময়ে বেড়েছে এক টাকা বা ২০ শতাংশ।
গত বছরের সেপ্টেম্বরেও একবার শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে তা উঠে যায় ৯ টাকা ৯০ পয়সায়।
প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স
এই কোম্পানিটি ২০২০ সালে শেয়ার প্রতি ৯৩ টাকা লোকসান দেয়ার পর ২০২১ সালের আর্থিক হিসাব এখনও প্রকাশ করেনি।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকের হিসাব অনুযায়ী কোম্পানিটি ওই বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ার প্রতি ৬ টাকা ৩৩ পয়সা লোকসান দিয়েছে। তখন প্রতি শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ ছিল ৯ টাকা ৮১ পয়সার।
গত ১৯ জুলাই এই কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ৬ টাকা ৪০ পয়সা। বর্তমান দর ৭ টাকা ৭০ পয়সা। এই কয়দিনে বেড়েছে ১ টাকা ২০ পয়সা বা ১৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
সোমবার দর ৮ টাকা ১০ পয়সাতেও উঠেছিল, পরে সেখান থেকে কমে ৪০ পয়সা।
এই কোম্পানির দর বাড়া শুরু হয় গত ২২ মে। সেদিন হাতবদল হয় ৬ টাকা ১০ পয়সা দরে।
গত বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে এই কোম্পানিটির শেয়ারদরে এবারের চেয়ে বেশি উল্লম্ফন দেখা যায়। সে সময় দর ৫ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়ে যায় ১৪ টাকা ৬০ পয়সায়। সেখান থেকে পরে নেমে আসে ৬ টাকায়।
‘এর কারণ জুয়া’
যেসব কোম্পানির অদূর ভবিষ্যতে মুনাফায় ফেরা বা লভ্যাংশ দেয়ার ন্যূনতম সম্ভাবনা নেই, সেসব কোম্পানির শেয়ারদরে এভাবে লাফ দেয়ার পেছনে জুয়াড়িয়াদের প্রত্যক্ষ হাত রয়েছে বলে মনে করেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক বলেন, ‘এসব কোম্পানি তো আর রাতারাতি ভালো হয়ে যায় না। কিন্তু তারপরও এগুলোর দাম বাড়ে, এর কারণ হলো জুয়া খেলা। জুয়াড়িরা এসব শেয়ারের দাম টেনে তোলে। আর গুজবে কান দিয়ে অনেকেই এই শেয়ার কেনেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশে যদি ২০ লাখ বিনিয়োগকারী থাকেন, এর মধ্যে ৫০ থেকে ৭০ হাজার হবে যারা প্রকৃত বিনিয়োগকারী। তারা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করেন। বাকিরা ওমুক ভাই, তমুক ভাইকে ফলো করে শেয়ার কেনেন।
‘এসব গুজব এবং জুয়াড়িদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হয়তো তিন বারের মধ্যে একবার উইন করেছে, তাই বেশি টাকা বানানোর আশায় সেই পথই বারবার অনুসরণ করে। এতে জুয়াড়িরা লাভবান হয়, কিন্তু তারা কোনো আয় করতে পারেন না।’
আরও পড়ুন:স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিলিয়ন ডলারের অর্থ ফিরিয়ে আনতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের (ইসিবি) প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডের সহায়তা চেয়েছেন।
স্থানীয় সময় বুধবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে ক্রিস্টিন লাগার্ডের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।
ওই সময় তিনি ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের কাছে এ সহায়তা চান।
অধ্যাপক ইউনূস ক্রিস্টিন লাগার্ডকে বলেন, স্বৈরাচারী শাসকের ঘনিষ্ঠ ধনকুবেররা শুধু দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে এবং শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে প্রতি বছর ১৬ বিলিয়ন ডলার করে দেশ থেকে পাচার হয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এটি ছিল একটি বিশাল ডাকাতি।’
তিনি উল্লেখ করেন, প্রথমে এসব ধনকুবেররা ব্যাংক দখল করে নেয় এবং পরে যে ঋণ নিয়েছে, তা আর পরিশোধ করেনি।
লাগার্ড অন্তর্বর্তী সরকারের পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধার উদ্যোগে সমর্থন জানান এবং তিনি সুপারিশ করেছেন, বাংলাদেশ এ অর্থ পুনরুদ্ধার ও দেশে ফেরানোর জন্য আইএমএফের সাহায্য নিতে পারে।
বৈঠকে তারা জুলাই বিপ্লব এবং বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন। ওই সময় লাগার্ড বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি তার সমর্থনের কথাও জানান।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের টেক জায়ান্ট ওয়ালটনের ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘পার্টনার্স টুগেদার-২০২৫’ শীর্ষক সম্মেলন।
এতে দেশজুড়ে ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত সহস্রাধিক ব্যবসায়িক অংশীদারসহ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের বিক্রয় প্রতিনিধি, কর্মকর্তা এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা অংশ নেন।
গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক পার্কে বৃহস্পতিবার সকালে বেলুন উড়িয়ে ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের ওই সম্মেলন উদ্বোধন করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম।
ওয়ালটন ব্র্যান্ডের প্রতি সিংহভাগ ক্রেতার আস্থা বজায় রাখা, পণ্য বিক্রয়ে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, গ্রাহককে সর্বোচ্চ সেবা ও সুবিধা প্রদান, বাজার গবেষণা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে সময়োপযোগী বিপণন কৌশল প্রণয়নের মতো বিষয়ে সম্মেলনে আগত ডিস্ট্রিবিউটররে গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা ও পরামর্শ দেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
তারা চলতি বছর নতুন নতুন মডেলের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব, সর্বাধুনিক ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং ফিচারের প্রযুক্তিপণ্য বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দেন।
ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের হেড অব সেলস ফিরোজ আলমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন প্লাজার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ রায়হান, ওয়ালটন হাই-টেকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এএমডি) ও চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) মো. জিয়াউল আলম, এএমডি মো. ইউসুফ আলী, ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের এএমডি প্রকৌশলী লিয়াকত আলী, ওয়ালটন হাই-টেকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মফিজুর রহমানসহ অনেকে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক এবং ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান।
২০২৪ সালে বিক্রয় বৃদ্ধিতে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করায় সম্মেলনে ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের ১৭৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য শেষ হয় ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের দিনব্যাপী এই সম্মেলন।
আরও পড়ুন:গাজীপুরের কাজী নেচার ক্যাম্পে শনিবার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে ট্রেইনারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের।
দিনব্যাপী লার্নিং গেমসভিত্তিক ট্রেইনার্স ট্রেনিং ও রিট্রিটে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৫০ জন প্রশিক্ষক অংশ নেন।
এ আয়োজন প্রশিক্ষণের নতুন নতুন কৌশল শেখার পাশাপাশি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বন্ধন সুদৃঢ় করার এক অনন্য সুযোগ তৈরি করে।
ট্রেইনারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সহসভাপতি ইউসুফ ইফতি বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষক তৈরি, আয়ের নতুন পথ সৃষ্টিতে সহায়তা, প্রশিক্ষকদের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম তৈরি এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ হাজার প্রশিক্ষক তৈরির লক্ষ্যে কাজ করব। এই উদ্যোগ দেশের পেশাগত এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
ট্রেইনারসের নেতৃত্বে রয়েছেন সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কেএম হাসান রিপন, প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সহসভাপতি ইউসুফ ইফতি, সহসভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোহাম্মদ মোরাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জিয়া উদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দেল এইচ খান, পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য লায়লা নাজনীন এবং পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জিয়া উদ্দিন মাহমুদ।
অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ ও কার্যকর করার জন্য রওনক জাহান নিসাকে সমন্বয়কারী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।
ট্রেইনারসের সভাপতি কে এম হাসান রিপন বলেন, ‘আজকের অনুষ্ঠানটি শুধু শিক্ষামূলকই নয়, বরং উদ্বুদ্ধ করার মতো একটি মাইলফলক। এটি নেটওয়ার্কিং এবং দক্ষতা উন্নয়নের একটি চমৎকার সুযোগ তৈরি করেছে। আমরা দেশের সকল প্রশিক্ষকদের আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাই।’
কাজী নেচার ক্যাম্পের সুযোগ-সুবিধার প্রশংসা করে ট্রেইনারসের সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করার পর আমরা কাজী নেচার ক্যাম্পকে প্রশিক্ষণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান হিসেবে পেয়েছি। এখানে ট্রি-টপ অ্যাক্টিভিটিস, বোটিং, কায়াকিং, টেন্ট, ফায়ার ক্যাম্প, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী খাবারসহ অসাধারণ সেবা রয়েছে। এটি প্রশিক্ষণের জন্য আদর্শ পরিবেশ।’
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শায়লা আশরাফ, সামিরা হক, আজিজ সেলিম, ইসরাত জাহান, সুমন ও ইকবাল কার্যক্রম নিয়ে তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি ট্রেইনারসের ঐতিহাসিক সূচনা চিহ্নিত করে। ভবিষ্যতে আরও প্রশিক্ষণ ও কার্যক্রমের মাধ্যমে ট্রেইনারস দেশের প্রশিক্ষণ ক্ষেত্রকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শক্তিশালী নেতৃত্ব ও উদ্ভাবনী চিন্তাধারার মাধ্যমে ট্রেইনারস প্রশিক্ষকদের ক্ষমতায়ন ও জাতীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম শনিবার ইউএনবিকে এমন তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২ জানুয়ারি মাসুদ বিশ্বাসের নামে মামলা করে দুদক।
এ মামলায় মাসুদ বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে সংস্থার একটি দল তাকে আদালতে হাজির করবে।
এর আগে ২ জানুয়ারি দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এক কোটি ৮৭ লাখ ৭২ হাজার ৬২২ টাকার জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে।
মাসুদ বিশ্বাসের স্ত্রী কামরুন নাহারের সম্পদের বিবরণীও চেয়েছে দুদক। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আছে বলে দুদক জানিয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। ২ জানুয়ারি তার নামে মামলা হয়।
মূলত অর্থ পাচার প্রতিরোধেই কাজ করে বিএফআইইউ। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মাসুদ বিশ্বাস পদত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন:বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে ছোট হলেও গণমুখী উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অর্থনীতি এখন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করতে একনেকের কয়েকটি সভায় উপদেষ্টারা এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, খুব দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায়, এমন ছোট ছোট প্রকল্প বাছাই করতে সরকার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে।
ইউএনবিকে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘তবে এসব ছোট প্রকল্প অবশ্যই স্থানীয় জনগণের জন্য ব্যাপকভাবে উপকারী হতে হবে, এটিই বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্য।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে একনেক সভায় স্পষ্টভাবে বলা হয়, সরকার দেশের মানুষের কল্যাণে কিছু ভালো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়।
এ বিষয়ে একনেক সভায় এসব প্রকল্প থেকে যারা উপকৃত হবেন, তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আলোচনা করতে বলা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, নির্দিষ্ট এলাকায় কোনো উন্নয়ন করার সময় প্রথমে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কোনো সেচ প্রকল্প নির্দিষ্ট এলাকার জন্য নেওয়া হলে তা স্থানীয় জনগণের সঙ্গে যথাযথ আলোচনা করে তাদের প্রচলিত সেচ প্রক্রিয়া ও নতুন সেচ ব্যবস্থার প্রতি তাদের মনোভাব সম্পর্কে জানতে হবে।
তিনি বলেন, ‘নতুন সেচ প্রকল্পটি যদি স্থানীয় জনগণের সঙ্গে আলোচনা না করে রাজধানী শহর থেকে নকশা করা হয়, তাহলে তা ব্যবহারকারীদের জন্য কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে না। কারণ স্থানীয় জনগণ হয়তো এ প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবেন না বা ব্যবহার করতে উৎসাহিত হবেন না।’
পরিকল্পনা কমিশনের এ কর্মকর্তা বলেন, ঋণদাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে বড় প্রকল্প চালু করলে ভালো রক্ষণাবেক্ষণের সুযোগ নাও থাকতে পারে।
তিনি বলেন, ‘তাই সরকার এডিপি বাস্তবায়নের হার বৃদ্ধি এবং অর্থনীতিকে চাঙা করতে স্থানীয় পরামর্শ নিয়ে ছোট ছোট প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়।’
বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জুলাই-নভেম্বর মেয়াদে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ১৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ। আওয়ামী লীগ সরকারের গত বাজেটে পাস হওয়া ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার এডিপির মধ্যে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ছিল মাত্র ১২ দশমিক ৩ শতাংশ।
ছাত্র-নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়।
আইএমইডির তথ্যে দেখা যায়, জুলাই-নভেম্বর সময়ে এডিপির ব্যয় হয় ৩৪ হাজার ২১৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৬ হাজার ৮৫৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান ও নতুন প্রস্তাবিত সব প্রকল্প পর্যালোচনায় বিলম্বের পাশাপাশি অর্থ ছাড়ে ক্রমবর্ধমান বিলম্বকে এডিপি বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন আইএমইডি কর্মকর্তারা।
এ ছাড়া আগস্টের শুরুতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর অনেক ঠিকাদার প্রকল্পগুলো ছেড়ে চলে যায়।
আরও পড়ুন:সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) ভিত্তিতে মিয়ানমার থেকে ২২ হাজার টন আতপ চাল নিয়ে ‘এমভি গোল্ডেন স্টার’ নামের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, এটি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত চালের প্রথম চালান। জাহাজে রক্ষিত চালের নমুনা সংগ্রহ করে ভৌত পরীক্ষা শেষে দ্রুত খালাসের কাজ শুরু হবে। এ জন্য এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এর আগে পাকিস্তান থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্তের কথা জানায় অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১৪ জানুয়ারি খাদ্য অধিদপ্তর ও ট্রেডিং করপোরেশন অফ পাকিস্তানের (টিসিপি) মধ্যে এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল খালেক ও টিসিপির চেয়ারম্যান সৈয়দ রাফিউ বশির শাহ নিজ নিজ পক্ষে সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সরকারের ক্রয় কমিটির অনুমোদনের পর চাল আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হবে। ওই চাল আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশে আসতে শুরু করবে।
এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করতে এ সমঝোতা স্মারক এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:শতাধিক পণ্যে শুল্ক ও কর বাড়ানো হলেও দেশের মানুষের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর জন্যই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যটা ভালো হবে। দেশের মানুষেরই উন্নয়ন হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের অজনপ্রিয় হওয়ার কোনো কারণ নেই।
রাজধানীর ফরেন একাডেমিতে রোববার প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, ‘বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশে ট্যাক্স আদায় সবচেয়ে কম। সরকার চায় ট্যাক্স, জিডিপি এমন জায়গায় থাক, যাতে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটে। তাহলে সামনে দেশের মানুষেরও উন্নয়ন হবে।
‘ম্যাক্রো ইকোনমি বাড়ানোর জন্য ট্যাক্স বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইএমএফের চাহিদার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশেও তো ভালো অর্থনীতিবিদ আছেন। তাদের পরামর্শেই এটা করা হয়েছে। এটা করা না হলে ডলারের দাম ১২৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৯০ টাকা হয়ে যাবে। বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। কারণ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেখেন দেশের ট্যাক্স আদায়ের পরিমাণ কেমন; অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যটা কতটা মজবুত।
‘এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও উচিত বিষয়টি নিয়ে জনগণকে বোঝানো।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘খরচ কীভাবে কমানো যায়, সরকার সে জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। আগের প্রধানমন্ত্রী ৩০০ লোক নিয়ে বিদেশে যেতেন। এখন প্রধান উপদেষ্টার বহরে ৫০ জন যাচ্ছেন। তারও একটি বড় অংশ থাকছে নিরাপত্তার জন্য।
‘আগে দেখা গেছে, একজন মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর জন্য কর্ণফুলী টানেল করা হয়েছে। টানেল থেকে নেমে তার বিশ্রাম নেওয়ার জন্য সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা খরচ করে সেভেন স্টার হোটেল বানানো হয়েছে।’
পাচার করা অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘সেগুলো ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। গতকালও পূর্বাচলের একটি প্লট নিয়ে দুদকের মামলা হয়েছে। এগুলো সরকারের কোষাগারে আনা যায় কি না, সেই চেষ্টা চলছে।’
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেখতে হবে বাজারে সরবরাহ চাহিদা মতো আছে কি না। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যটা ভালো থাকলে মূল্যস্ফীতিও কমিয়ে আনা যাবে।
‘যারা ভ্যাট-ট্যাক্সের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তারা অনেক বুঝে-শোনেই দিয়েছেন। মানুষের ভালোর জন্যই এটা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য