রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মতো বিদেশি বিনিয়োগের পালেও জোর হাওয়া লেগেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার দেশে বিদেশি বিনিয়োগের সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৪৭০ কোটি ৮০ লাখ (৪.৭১ বিলিয়ন) ডলারের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে দেশে, যা আগের বছরের চেয়ে ৩৯ শতাংশ বেশি।
নিট এফডিআই এসেছে আরও বেশি– ৬১ শতাংশ। গত অর্থবছরে ২ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার নিট এফডিআই এসেছে দেশে।
২০২০-২১ অর্থবছরের ৩৩৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের এফডিআই পেয়েছিল বাংলাদেশ। আর নিট এফডিআই এসেছিল ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।
দুই বছরের বেশি সময়ের করোনা মহামারির ধাক্কা কাটতে না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ওলটপালট হয়ে যাওয়া অর্থনীতি নিয়ে যখন নানান হতাশা ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছিল, তখন স্বস্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগের এই উল্লম্ফন। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেলসহ কয়েকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে আগামী দিনগুলোতে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আরও বাড়বে বলে আশার কথা শুনিয়েছেন অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার ও ব্যবসায়ী নেতারা।
আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়ে ডলারের তীব্র সংকট দেখা দেয়ায় টানা কয়েক মাস টালমাটাল অবস্থার পর অবশেষে দেশের অর্থনীতি নিয়ে স্বস্তির খবর দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
গত ১২ জুলাই দায়িত্ব নেয়ার পর বৃহস্পতিবার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমদানি কমছে। বিপরীতে বেড়েছে রপ্তানি ও প্রবাসী আয়। নিম্নমুখী মূল্যস্ফীতিও। আর এতে আগামী দুই মাসের মধ্যে অর্থনীতিতে চাপ কেটে যাবে বলে আমি আশাবাদী।’
বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার কারণে মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রা বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া পদক্ষেপগুলো ইতিবাচক ফল নিচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩২৩ কোটি ৩০ লাখ (৩.২৩ বিলিয়ন) ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। নিট বিনিয়োগের অঙ্ক ছিল ১২৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।
২০১৮-১৮ অর্থবছরে প্রায় ৫ বিলিয়ন (৫০০ কোটি) ডলার বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল দেশে। এর মধ্যে নিট এফডিআইয়ের পরিমাণ ছিল ২৬৩ কোটি ডলার।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আসে ওই বছর। এর মধ্যে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে জাপানের কোম্পানি জাপান টোব্যাকো। আকিজ গ্রুপের তামাক ব্যবসা কেনা বাবদ প্রায় ১৫০ কোটি (১.৫ বিলিয়ন) ডলার বিনিয়োগ করেছিল তারা।
বিভিন্ন খাতে মোট যে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আসে, তা থেকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মুনাফার অর্থ দেশে নিয়ে যাওয়ার পর অবশিষ্ট অঙ্ককে নিট এফডিআই বলা হয়।
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই দেশে বিনিয়োগের আবহ তৈরি হয়। ২৫ জুন বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু চালু হয়েছে। এই সেতুকে ঘিরে কয়েক মাস ধরে দেশে বিভিন্ন খাতে নতুন বিনিয়োগ হচ্ছিল। সে কারণেই শিল্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনি যন্ত্রপাতি বা ক্যাপিটাল মেশিনারি, পরিবহন খাতের বাস-ট্রাক তৈরির যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য খাতের সব ধরনের যন্ত্রপাতি-সরঞ্জামের আমদানি বেড়েছে। সব মিলিয়ে দেশে বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে।
আর দেশি বিনিয়োগ বাড়লে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ে– অর্থনীতির এই সূত্রকে সত্যি প্রমাণ করেই দেশে এখন বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এই যে গত কয়েক মাস ধরে প্রচুর আমদানি হচ্ছিল, ডলারের চাহিদা বেড়েছে তার মানে এখন দেশে বিনিয়োগ বেড়েছে। আর এ সব কিছুই কিন্তু পদ্মা সেতুকে ঘিরে হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু যেভাবে দেশের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে দিয়েছিল, পদ্মা সেতু তার থেকেও বেশি অবদান রাখবে অর্থনীতিতে। এ বিষয়টি দেশি বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বুঝতে পেরেছেন। সে কারণেই দেশি বিনিয়োগের সঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগও বাড়ছে।
‘কয়েক বছর ধরে আমাদের বিনিয়োগ একই জায়গায় আটকে আছে; জিডিপির ৩১ থেকে ৩২ শতাংশের মধ্যে। করোনার মধ্যে সরকারি বিনিয়োগ কিছুটা হলেও বেড়েছিল, বেসরকারি খাতে তেমন বিনিয়োগ হয়নি। এখন সবকিছু অনুকূলে থাকায় সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে গতি এসেছে। বেসরকারি বিনিয়োগকারীরাও নতুন উদ্যমে বিনিয়োগ করছেন। সে কারণেই আমদানি বেড়েছিল। বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।’
আগামী দিনগুলোতেও এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন আহসান মনসুর।
‘তবে ডলারের বাজারকে দ্রুত স্বাভাবিক করতে হবে। অনেক পতন হয়েছে টাকার; আর নয়। এখন যে করেই হোক টাকাকে শক্তিশালী করতে হবে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, দেশের বিনিয়োগ বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান নিয়ামক বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি বেড়ে ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশে উঠেছে, যা গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
টানা আট মাস ধরে বাড়তে বাড়তে ২০২২ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকটি ১১ শতাংশ ছাড়িয়ে ১১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশে উঠেছিল।
তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ফেব্রুয়ারিতে এই প্রবৃদ্ধি কমে ১০ দশমিক ৭২ শতাংশে নেমে আসে। মার্চে তা দশমিক ৫৭ শতাংশ পয়েন্ট বেড়ে ১১ দশমিক ২৯ শতাংশে ওঠে। সর্বশেষ জুন মাসে তা আরও বেড়ে ১৩ শতাংশ ছাড়িয়ে ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশে উঠেছে।
অন্যদিকে গত ২০২১-২২ অর্থবছরের ৮ হাজার ২৪৯ কোটি ৫০ লাখ (৮২.৪৯ বিলিয়ন) ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক আগের বছরের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি।
তবে আমদানির লাগাম টেনে ধরতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক নানা পদক্ষেপ নেয়ায় আমদানি খরচ কমতে শুরু করেছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পণ্য আমদানির ঋণপত্র বা এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে প্রায় ৩২ শতাংশ।
গত অর্থবছরে রপ্তানি আয় বেড়েছিল ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ। সেই ধারাবাহিকতায় নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়েও ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
২০২১-২২ অর্থবছরে রেমিট্যান্স কমেছিল ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ। জুলাইয়ে ২১০ কোটি (২.১০ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা ১৪ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
অর্থনীতির আরেক সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভও বাড়তে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৯ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাই মাসের ৫ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলারের আমদানি খরচ হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে সাত মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
১২ জুলাই এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। চাহিদা মেটাতে রিজার্ভ থেকে অব্যাহতভাবে ডলার বিক্রির ফলে আরও কমে যায় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এই সূচক।
কয়েক দিন ধরে টানা কমে ২৬ জুলাই তা ৩৯ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যায়। ২৭ জুলাই তা আরও কমে ৩৯ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। এরপর থেকেই তা বাড়তে শুরু করেছে।
আমদানি ব্যয় কমার পাশপাশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয় বাড়ার কারণে প্রতিদিন রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রির পরও রিজার্ভ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে জানিয়েছেন আহসান মনসুর।
বিদেশি বিনিয়োগে ইতিবাচক ধারায় সন্তোষ প্রকাশ করে বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের চেম্বার অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার ধাক্কা সামলে বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও আমদানি-রপ্তানি বাড়ছে। অন্য সূচকগুলোও ভালো।’
তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে অস্থিরতা নেই দীর্ঘদিন। পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেছে। মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেলসহ কয়েকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলও এ বছরেই চালু হবে। সব মিলিয়ে দেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগেও একটি ভালো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশে। এখন এটাকে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দিলে দেশে এফডিআই আরও বাড়বে।’
এরশাদ আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে এফডিআইয়ের প্রধান সমস্যা হচ্ছে ব্র্যান্ডিং। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে আমরা এখনও আমাদের ব্র্যান্ডিং যথাযথভাবে তুলে ধরতে পারিনি। এ ছাড়া আমাদের বন্দরের সমস্যা আছে। এতদিনেও আমরা আমাদের বন্দরের অটোমেশন করতে পারিনি।’
এগুলো ঠিক হলে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ আসবে বলে আশার কথা শুনিয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগকারীরা একা বিনিয়োগ করে খুবই কম। দেশি বিনিয়োগকারীদের হাত ধরে বিদেশি বিনিয়োগ আসে। সে কারণে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হলে দেশি বিনিয়োগও বাড়াতে হবে।
‘নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এই সেতু ঘিরে এখন যেহেতু দেশি বিনিয়োগ বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিদেশি বিনিয়োগও আসবে।’
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সূত্রে জানা যায়, আগের বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় তৈরি পোশাক খাতে কোরিয়া, চীন ও হংকং থেকে উল্লেখযোগ্য বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ, ব্যাংক, টেলিকমিউনিকেশন খাতেও কিছু বিনিয়োগ এসেছে।
আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী, বিদেশি কোম্পানিগুলো তিনভাবে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারে। মূলধন হিসেবে নগদ বা শিল্পের যন্ত্রপাতি হিসেবে, বাংলাদেশে ব্যবসা করে অর্জিত মুনাফা বিদেশে না নিয়ে পুনর্বিনিয়োগ করে এবং এক কোম্পানি অন্য কোম্পানি থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করতে পারে।
এ তিন পদ্ধতির যেকোনোভাবে দেশে বিনিয়োগ এলে তা এফডিআই হিসেবে গণ্য করা হয়।
গত অর্থবছরে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা মোট বিনিয়োগের প্রায় ১৭ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে সিঙ্গাপুর। তারা মোট বিনিয়োগের ১৬ শতাংশের মতো বিনিয়োগ করেছে। তৃতীয় অবস্থানে নেদারল্যান্ডসের বিনিয়োগ ৮ শতাংশ।
এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, চীন, মিসর, যুক্তরাজ্য, হংকং এবং অন্যান্য দেশের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ রয়েছে।
২০১৫-১৬ থেকে ২০২১-২২ এই পাঁচ অর্থবছরে দেশে মোট ২৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার এফডিআই এসেছে। এর মধ্যে নিট এফডিআইয়ের পরিমাণ ১৭ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার।
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমেছে। রেকর্ড দাম হওয়ার পর কিছুটা কমানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা কমিয়ে নতুন দাম ১ লাখ ১১ হাজার ১৫৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এ দাম কমানো হয়েছে। আগামীকাল বুধবার থেকে এ দাম কার্যকর করা হবে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটির বৈঠকে করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এর আগে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গত ৭ মার্চ ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১২ হাজার ৯০৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ১৩ দিন রেকর্ড দামে বিক্রির পর এখন স্বর্ণের দাম কিছুটা কমল।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ১৫৮ টাকা।
২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৬৩৩ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬ হাজার ১৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরিতে এক হাজার ৪০০ টাকা কমিয়ে ৯০ হাজার ৯৭৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ঈদের পর কারওয়ান বাজারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা হবে। আর এখানকার পাইকারি কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীদের গাবতলীতে ডিএনসিসির পাইকারি কাঁচাবাজারে স্থানান্তর করা হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম সোমবার এসব কথা বলেন।
গাবতলীতে ডিএনসিসির প্রস্তাবিত কাঁচাবাজারে ডিএনসিসির আওতাধীন কারওয়ানবাজার কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীদের আমিনবাজার পাইকারি কাঁচাবাজারে স্থানান্তরের বিষয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন ডিএনসিসি মেয়র।
এ সময় তিনি বলেন, ‘কারওয়ানবাজার কাঁচাবাজারের ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় এটি ধসে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে বহু মানুষের জীবন হুমকিতে রয়েছে।
‘এখানকার ব্যবসায়ীদের দ্রুতই গাবতলিতে বরাদ্দ দেয়া হবে। বরাদ্দ দেয়ার পরও যারা আসবেন না তাদের দায় নিজেদেরকেই নিতে হবে। আর বরাদ্দ পাওয়ার পর কেউ না এলে সেটি নিয়ম অনুযায়ী অন্যজনকে বরাদ্দ দিয়ে দেয়া হবে।’
মতবিনিময় সভার শুরুতে কারওয়ান বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ গাবতলীতে ব্যবসায়ীদের স্থানান্তরে ক্ষেত্রে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।
মেয়র বলেন, ‘প্রথম ধাপে কারওয়ান বাজার আড়ৎ মার্কেটের প্রথম তলার ৪০০ বর্গফুটের ৬২টি দোকান এবং দ্বিতীয় তলার ১৭০ বর্গফুটের ১১৪টি দোকান অর্থাৎ মোট ১৭৬টি দোকান স্থানান্তর করা হবে।
‘এছাড়াও কারওয়ানবাজারে সম্পত্তি বিভাগ কর্তৃক বরাদ্দকৃত ১৮০টি টিনশেড দোকান আমিনবাজারে পাইকারি কাঁচাবাজারের আশপাশের উন্মুক্ত স্থানে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘কারওয়ান বাজারের ভবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কোন দুর্ঘটনা ঘটলে বা আগুন লাগলে বহু মানুষ হতাহত হবে। আমরা আর মৃত্যুর মিছিল দেখতে চাই না৷ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে- ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কোনো ব্যবসা চলতে দেয়া যাবে না। ঈদের পর কারওয়ান বাজারের কাচাবাজারের ব্যবসায়ীদের স্থানান্তর শুরু হবে। ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিন। আপনাদের জন্য সব সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।’
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘কারওয়ান বাজার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রায় ৫শ’ বছর আগে। এটি যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন ঢাকার কেন্দ্রবিন্দু ছিল সদরঘাট। পর্যায়ক্রমে ঢাকা গুলিস্তান, মতিঝিল হয়ে অনেকদূর প্রসারিত হয়েছে। তাই কারওয়ান বাজার ঢাকার প্রান্তে স্থানান্তর করার মাধ্যমে স্মার্ট শহর নিশ্চিত করতে হবে। গাবতলীতে বাজার শুরু হলে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সার্বিক ব্যবস্থা নেবে।’
মতবিনিময় সভা শুরুর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডিএনসিসি মেয়র গাবতলী পাইকারি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখেন।
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ১৭ মার্চ, ২০২৪ রোববার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ কথা জানানো হয়।
ব্যাংকের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ব্যাংকের ডাইরেক্টর বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ও নাসির উদ্দিন, এফসিএমএ এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আলতাফ হুসাইন।
লোকসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে ভারত। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এ ভোটগ্রহণ আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে চলবে ১ জুন পর্যন্ত। ফলাফল ঘোষণা হবে আগামী ৪ জুন।
শনিবার ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজিব কুমার এ ঘোষণা দেন।
দেশটির নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, এবারের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটগ্রহণ হবে ১৯ এপ্রিল, দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ ২৬ এপ্রিল, তৃতীয় দফা ৭ মে, চতুর্থ দফা ১৩ মে, পঞ্চম দফা ২০ মে, ষষ্ঠ দফা ২৫ মে এবং সপ্তম দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১ জুন।
আনন্দবাজারে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় (১৯ এপ্রিল) পশ্চিমবঙ্গ, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ছত্তিসগড়, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, লক্ষদ্বীপ, আন্দামান নিকোবার, বিহার, সিকিম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, আসাম ও অরুণাচলপ্রদেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
দ্বিতীয় দফায় (২৬ এপ্রিল) ভোট হবে কেরালা, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিসগড়, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, জম্মু ও কাশ্মীর, আসাম, মণিপুর ও ত্রিপুরায়।
তৃতীয় দফায় (৭ মে) জম্মু ও কাশ্মীর, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ছত্তিসগড়, গোয়া, দাদরা-নগর হভেলি ও দমন-দিউয়ে নেয়া হবে ভোট।
চতুর্থ দফায় (১৩ মে) মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, তেলাঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে ভোটগ্রহণ হবে।
পঞ্চম দফায় (২০ মে) ভোট হবে লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও মহারাষ্ট্রে।
ষষ্ঠ দফায় (২৫ মে) দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায় ভোট হবে।
সপ্তম দফায় (১ জুন) হিমাচল প্রদেশ, পঞ্জাব, চণ্ডীগড়, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, বিহার, গুজরাট, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান এবং তামিলনাড়ুসহ একাধিক রাজ্যের ২৬টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে ওই সময়ের মধ্যে।
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া খবর প্রচারের বিরুদ্ধে শক্ত বার্তা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত করা উচিত।
রাজিব কুমার বলেন, ভুয়া খবর প্রচার আইন অনুযায়ী কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে। ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৭৯ (৩) (বি) ধারা প্রতিটি রাজ্যের নোডাল অফিসারদের বেআইনি বিষয়বস্তু অপসারণের ক্ষমতা দিয়েছে।
২০১৯ সালের নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয়বারের মতো কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসে বিজেপি। তারা জয় পায় ৩০৩টি আসনে। আর বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পায় ৩৫৩ আসন। ওই নির্বাচনে বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৩৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ। পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৮৯ সালের পর ভারতের কোনো রাজনৈতিক দল এত বেশি ভোট আর পায়নি।
ওই নির্বাচনে মাত্র ৫২ আসনে জয় পেয়েছিল শতাব্দীপ্রাচীন দল কংগ্রেস। আর কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট জিতেছিল ৯৮ আসনে।
আরও পড়ুন:চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ। অথচ অর্থবছরের অর্ধেক সময় শেষে ডিসেম্বর নাগাদ প্রাপ্তি মাত্র ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ। এমনটা উল্লেখ করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) উল্লেখ করেছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে সরকারের বাজেট ঘাটতি ৮২ হাজার কোটি টাকা হবে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় এই থিঙ্ক ট্যাঙ্কের নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা এখনও অর্জিত হয়নি। বাকি ছয় মাসে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে প্রায় ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ হারে রাজস্ব সংগ্রহ করতে হবে, যা হবে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।’
এতে দেশের রাজস্ব ঘাটতি ৮২ হাজার কোটি টাকা দাঁড়াতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব নিয়ে শনিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি এসব কথা বলেছে।
ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫: সিপিডির সুপারিশমালা’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষক মুনতাসীর কামাল প্রমুখ।
দেশের অর্থনীতি এক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বড় ধরনের চাপের মধ্যে আছে। বিশেষত মূল্যস্ফীতির চাপে মানুষের জীবনযাত্রা সংকটে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করাই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত বলে মনে করে সিপিডি।’
তিনি বলেন, ‘এমন একটা সময় বাজেট প্রণয়ন হতে যাচ্ছে যখন সামষ্টিক অর্থনীতি নেতিবাচক ধারায় রয়েছে। দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকে তারল্য সংকট, বাজেট বাস্তবায়নে নিম্ন ও স্লথ গতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নগামী এবং রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স নিচের দিকে।
‘এই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বিশেষ করে উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও নিম্ন মূল্যস্ফীতিসহ অন্যান্য সূচক যেখানে থাকার কথা সেটা নেই; বরং চরমভাবে চাপের মুখে পড়েছে। এর কারণ আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ দুটোই।’
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বাজেট প্রণয়ন হয় এক বছরের জন্য। বাজেটে যে নির্দেশনা থাকবে সেগুলো যেন চ্যালেঞ্জগুলো মেটাতে পদক্ষেপ নিতে পারে। মূল্যস্ফীতির চাপ কমানো, টাকার বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা রাখা ও দরিদ্র মানুষের স্বার্থের দিকে নজর দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের উন্নয়ন ব্যয়ও কমেছে। গত বছর ২৭ শতাংশের মতো থাকলেও এখন তা ২৫ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
সিপিডির মতে, নীতিনির্ধারকদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা। বৈদেশিক মুদ্রার হারকে স্থিতিশীল করা এবং মূল্যস্ফীতি কমানোর দিকে নজর দিতে হবে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির পরিবর্তে দুর্বল ও সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীর জন্য সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।’
সিপিডির সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- অর্থপাচার রোধে এনবিআরের শক্তিশালী ভূমিকা নেয়া, অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ বন্ধ করা, করদাতাদের হয়রানি বন্ধ করা, ইএফডি যন্ত্র সহজলভ্য করা এবং ওষুধের ওপর ভ্যাট কমানো।
সিপিডির পক্ষ থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ও আমদানি করা বই- এসবে শুল্ক, ভ্যাট এবং কর কমানোরও প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুসলিমদের জন্য একটি অফার নিয়ে এসেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নগদ।
নগদ ইসলামিক অ্যাপ বা *১৬৭# ডায়াল করে মোবাইল রিচার্জ, পেমেন্ট, ব্যাংক বা কার্ড থেকে অ্যাড মানিসহ যেকোনো লেনদেন করে মক্কা ও মদিনা সফরের সুযোগ পেতে পারেন গ্রাহকরা।
শর্ত হলো নগদ ইসলামিকের ব্যবহারকারী হতে হবে এবং পরিপূর্ণ সক্রিয় একটি নগদ ইসলামিক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
যদি কোনো নগদ ইসলামিক গ্রাহক মক্কা-মদিনা সফরের জন্য মনোনীত হন, তাহলে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে তাকে নগদ ইসলামিকের গ্রাহক সেবা থেকে এসএমএস, কলের মাধ্যমে জানানো হবে এবং উপহার গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট তারিখ ও স্থানে নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে উপস্থিত হতে হবে।
নগদ ইসলামিক শুধু বিজয়ী নির্বাচন, ঘোষণা এবং পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে দায়বদ্ধ থাকবে।
নতুন এই ক্যাম্পেইনের বিষয়ে নগদের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আমিনুল হক বলেন, ‘এমএফএস হিসেবে নগদই প্রথম ইসলামিক এমএফএস সেবা চালু করেছে। আমরা চাই ধর্মীয় বিধিবিধান মেনে চলা মুসলমান গ্রাহকেরা তাদের পছন্দমতো লেনদেন যেন নগদ ইসলামিকের মাধ্যমে করতে পারেন। অনেকের মক্কা-মদিনা ভ্রমণের ইচ্ছাপূরণ করার জন্য আমরা নতুন ক্যাম্পেইন নিয়ে এসেছি।’
আরও পড়ুন:প্রযুক্তি নির্ভর পৃথিবী পাল্টাচ্ছে প্রতিদিন। বর্তমান সময়ে যেকোনো কাজ, শিক্ষা কিংবা বিনোদনের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে ল্যাপটপের ব্যবহার। আধুনিক জীবনের সব রকমের প্রয়োজন মেটাতে ক্রমাগত আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে এসব ডিভাইস।
ফলে যত বেশি কাজ, তাপও উৎপন্ন হচ্ছে সেই হারে। এই তাপ কমাতে সাধারণত পোর্টেবল কুলিং ফ্যান ব্যবহার করা হয়। এভাবে বাহ্যিক তাপ কমানো গেলেও ল্যাপটপের ভেতরে আটকে পড়া তাপ নিয়ে চিন্তা থেকেই যায়।
তবে ল্যাপটপেই যদি একটি শক্তিশালী কুলিং সিস্টেম থাকে, তাহলে বাহ্যিক কুলিং ফ্যানের আর প্রয়োজন হয় না। বিষয়টি মাথায় রেখে গত বছর ইনবুক সিরিজের এক্স২ ল্যাপটপ বাজারে আনে ইনফিনিক্স। এই ল্যাপটপের ভেতরে আছে আইস স্টর্ম ১.০ নামক কুলিং প্রযুক্তি। এটি ল্যাপটপে একটি আদর্শ তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্যে করে। আইস স্টর্ম কুলিং সিস্টেম তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে মিলিটারি-গ্রেডের বায়ু চলাচল ব্যবস্থা। গেমিংসহ অন্যান্য কাজ কিংবা বিনোদনের সময় যা নিঃশব্দে পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে।
ইনফিনিক্সের এই প্রযুক্তিটি ল্যাপটপের কুলিং সিস্টেমের গুরুত্ব তুলে ধরে। ল্যাপটপ কিংবা এর ব্যবহারকারী, উভয়ক্ষেত্রেই এর প্রভাব রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক, কীভাবে কার্যকর কুলিং সিস্টেম ব্যবহারকারীদের কাজে আসে এবং এর মাধ্যমে কী কী সমস্যার সমাধান হয়?
পারফরম্যান্স
ল্যাপটপ অতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে প্রথম সমস্যা হয় এর পারফরম্যান্সে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে ল্যাপটপের কাজের মান ও গতি কমে যায় এবং ল্যাগ সৃষ্টি হয়। একে থার্মাল থ্রটলিং বলে। কার্যকর কুলিং সিস্টেম দ্রুত এই তাপমাত্রা কমিয়ে এনে নিরবচ্ছিন্নভাবে উন্নত পারফরম্যান্সের লেভেল বজায় রাখতে পারে। ফলে মাল্টিটাস্কিং করা সহজ হয়, সফটওয়্যারগুলো দ্রুত কাজ করে এবং ব্যবহারকারীদের সামগ্রিক অভিজ্ঞতাও ভালো হয়।
স্থায়িত্ব ও জীবনকাল
ল্যাপটপের সিপিউ ও জিপিউ’র মতো অভ্যন্তরীণ উপাদানগুলো বেশ তাপ সংবেদনশীল। সময়ের সঙ্গে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে এসব উপাদানের ক্ষতি হয়। এতে ডিভাইসের নির্ভরযোগ্যতা কমে যায় এবং জীবনকালও সংক্ষিপ্ত হয়ে আসে। এক্ষেত্রে একটি ভালো কুলিং সিস্টেম দক্ষতার সঙ্গে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে অকালে হার্ডওয়্যার নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এমন সক্রিয় ব্যবস্থা ল্যাপটপের জীবনকাল বাড়িয়ে তোলার পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের আর্থিক লোকসানও কমিয়ে আনে।
পরিবেশবান্ধব
তাপমাত্রা বেশি হলে ফ্যানকে আরও বেশি কাজ করতে হয়, ফলে আরও বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়। ল্যাপটপে সার্বক্ষণিক ফ্যানের ব্যবহার কমিয়ে কার্যকরভাবে তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে উন্নত কুলিং সিস্টেম। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়, বিদ্যুৎ বিল কমে আসে এবং পরিবেশের সুরক্ষা হয়।
স্বস্তি এবং স্বাস্থ্য
ডিভাইসের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ল্যাপটপ ব্যবহার করা খুবই অস্বস্তিকর। বিশেষভাবে, যখন কোলের উপর রেখে ব্যবহার করতে হয় তা অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে তোলে। দীর্ঘ সময় এভাবে ল্যাপটপ ব্যবহার করলে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ত্বক পুড়ে যাওয়াসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও, ফ্যান অতিরিক্ত শব্দ করলে তা ব্যবহারকারীর মনোযোগেও বিঘ্ন ঘটায়। ল্যাপটপ ঠান্ডা রেখে নিঃশব্দে কার্যক্রম বজায় রাখার মাধ্যমে এসব ঝুঁকি কমিয়ে আনে আইস স্টর্ম ১.০-এর মতো অত্যাধুনিক কুলিং সিস্টেমগুলো।
তাই ল্যাপটপের কুলিং সিস্টেম শুধু ডিভাইসের পারফরম্যান্স ও জীবনকালের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং ব্যবহারকারীর স্বস্তি, সুস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্যও এটি জরুরি।
ইনফিনিক্সের ইনবুক সিরিজের এক্স২ এবং ওয়াই২ প্লাস ল্যাপটপ দেশজুড়ে রায়ানস, স্টারটেক ও দারাজের মতো অনুমোদিত রিটেইলারদের কাছে পাওয়া যাচ্ছে। ১৪ থেকে ২০ মার্চ রায়ানস-এর ব্র্যান্ড উইক চলাকালীন ইনফিনিক্স ল্যাপটপ কিনলেই ক্রেতারা পাবেন একটি পাওয়ার ব্যাংক, একটি মাউস প্যাড এবং ১০০০ টাকার শপিং ভাউচার।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য