আমদানি ব্যয়ের বড় একটি অংশ খরচ হয় মূলধনি যন্ত্রপাতি বা ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আনতে। এই ব্যয়ের আড়ালে দেশ থেকে অর্থপাচার হচ্ছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও খতিয়ে দেখা হয় না কখনও।
অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা মনে করেন, আমদানি ব্যয়ের পুরোটাই যথাযথ নয়। অনেক ভুয়া আমদানিও আছে। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার হচ্ছে। তারা মনে করেন, এটি বন্ধ করতে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি ঠিকমতো হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) সবশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার বা ৪ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। গড়ে প্রতি বছর পাচার হচ্ছে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিদায়ি অর্থবছরে (২০২১-২২) মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ব্যয় হয় ৫৪৬ কোটি ৩২ লাখ ডলার, বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী যা প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি। ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানির জন্য আগের কোনো বছরই এত ডলারের এলসি খোলেননি বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা। এর আগের অর্থবছরে ব্যয় হয়েছিল ৩৮২ কোটি ডলার।
যেকোনো দেশে শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে কয়েকটি ধাপ আছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপ হচ্ছে শিল্প-কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে যন্ত্রপাতি স্থাপন করা। উদ্যোক্তারা যাতে শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত হন, সে জন্য মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ন্যূনতম শুল্কহার আরোপ করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্কহার ১ শতাংশ।
রাজস্ব বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কম বা শূন্য শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানিতে আন্ডার এবং ওভার ইনভয়েসিং বেশি হয়। এসব পণ্যে আমদানির ছদ্মাবরণে অর্থপাচার হচ্ছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উচিত এ ক্ষেত্রে নিয়মিত তদারকি করা।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মূলধনি যন্ত্রপাতির পাশাপাশি শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের আমদানিও রের্কড ৫৮ শতাংশ বেড়েছে গেল অর্থবছরে।
২০২১-২২ অর্থবছরে কাঁচামাল আমদানিতে ব্যয় হয় ২ হাজার ২২৫ কোটি ডলার। এর মধ্যে বেশি কাঁচামাল এসেছে তৈরি পোশাক শিল্পে। আগের অর্থবছরে এ খাতে ব্যয় ছিল ১ হাজার ৪০৭ কোটি ডলার। কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কহার ৫ শতাংশ।
করোনা-পরবর্তী অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও বেসরকারি খাতে দেশে নতুন বিনিয়োগ হয়নি। এই সময়ে ব্যবসা সম্প্রসারণ বা পুনর্বিনিয়োগ করেছেন উদ্যোক্তারা। বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইও লক্ষণীয় নয়।
এ বিষয়ে নিউজবাংলা কথা বলেছে স্থানীয় শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। তারা বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে স্থানীয় পর্যায়ে নতুন শিল্প হয়নি, যা হয়েছে চলমান ব্যবসার সম্প্রসারণ এবং শিল্প ইউনিটের পুনর্গঠন।
দেশে যখন মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি বাড়ে, স্বভাবতই বলা যায়, শিল্পায়নের গতি বাড়ছে। কিন্তু পরিসংখ্যানের সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই।
এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, লাখ লাখ কোটি টাকার মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি হচ্ছে। বিনিয়াগ কোথায়?
বিশেষজ্ঞদের সন্দেহ, মূলধনি যন্ত্রপাতির আড়ালে দেশে থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থপাচার হচ্ছে। কারা এসব পণ্য আমদানি করছে, পণ্য আনার পর কোথায় ব্যহার করা হচ্ছে– এসব বিষয় খতিয়ে দেখার সময় এসেছে।
যোগাযোগ করা হলে দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মোজাম্মেল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অর্থ পাচার একটি বড় অপরাধ। দুদক নানা ধরনের তদন্ত করছে। অর্থ পাচারের অভিযোগে তদন্ত হচ্ছে কিনা আমার জানা নেই।’
এ অভিযোগে দুদক তদন্ত করতে পারে কিনা– এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে যদি কোনো টাকা লন্ডারিং হয়, সেটি আমরা খতিয়ে দেখতে পারি, অন্যথায় নয়। আমি মনে করি, এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজ্যান্স ইউনিটের খতিয়ে দেখা উচিত।’
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা-পরবর্তী তৈরি পোশাক, স্পিনিং, পশ্চাৎ-সংযোগ শিল্প, টেক্সটাইল ও ওষুধ শিল্পে ইউনিট সম্প্রসারণে বিনিয়োগ হয়েছে। নতুন কোনো খাতে বিনিয়োগ হয়নি।
বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘করোনার পর দুই বছর ক্যাপিটাল মেশিনারিজ তেমন আসেনি। সে জন্য বিদায়ী বছরে বেশি আমদানি হয়েছে। সরকারি বড় বড় প্রকল্প, যেমন রূপপুর তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। ফলে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের ব্যবহার বেড়েছে।’
করোনার-পরবর্তী বেসরকারি খাতে নতুন বিনিয়োগ হয়নি– এ কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘করোনার সময় ব্যবসায়ীরা থমকে গিয়েছিলেন। করোনা নিয়ন্ত্রণে এলে যখন সবাই প্রস্তুত হচ্ছিল, তখন শুরু হলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এখন বিনিয়োগ হচ্ছে চলামান ইউনিটের পুনর্গঠনে। কিন্তু নতুন করে কেউ বিনিয়োগের চিন্তা করছে না। কারণ, অর্থনীতি এখনও স্থিতিশীল নয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্যাপিটাল মেশিনারিজের নামে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ওভার ইনভয়েসিং হচ্ছে। এ কথা অস্বীকার করছি না। এটি বন্ধ করতে হলে কঠোরভাবে মনিটর করা উচিত। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।’
গ্লোবাল ফিনান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) বলেছে, দুটি প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হয়েছে। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির মূল্য বেশি দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং) এবং রপ্তানিতে মূল্য কম দেখানো (আন্ডার ইনভয়েসিং)। অর্থ পাচারে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যের ১৮ শতাংশই কোনো না কোনোভাবে পাচার হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণত যেসব পণ্যে কম শুল্ক থাকে, ওই পণ্য আমদানির আড়ালে বিদেশে অর্থ পাচার হয়। আমদানির আড়ালে অর্থ পাচারের বিষয়টি দীর্ঘদিন থেকে বলে আসছি। সম্প্রতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টেও বিষয়টি চলে এসেছে। ফলে সরকারের অবশ্যই তদন্ত করা উচিত।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ক্যাপিটাল মেশিনারজি আমদানি বাড়লে তার প্রতিফলন ঘটবে শিল্পোৎপাদনে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। কারা আমদানি করছেন, কত দামে আনা হচ্ছে, পরিমান কত– এ সব বিষয় খতিয়ে দেখা যেতে পারে। কাস্টমস এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, পাঁচভাবে দেশ থেকে টাকা পাচার হচ্ছে। এর মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমেই পাচার হচ্ছে বেশি। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে মূল্য বেশি দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং) এবং রপ্তানিতে মূল্য কম দেখানো (আন্ডার ইনভয়েসিং) হয়।
অর্থাৎ কাস্টমসকে ভুল তথ্য দিয়ে অথবা কাস্টমসকে ম্যানেজ করে আমদানি-রপ্তানির প্রকৃত দাম গোপন করা হয়। এ ক্ষেত্রে যে সব পণ্যে শুল্ক নেই বা কম, সে ধরনের পণ্যের মাধ্যমে টাকা পাচার করা সহজ হয়।
আন্তর্জাতিক বাজারে মেশিনের ইউনিটের মূল্যবৃদ্ধি ও স্থানীয় টাকার মান ক্রমাগত কমার কারণে মূলত. মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি ব্যয় বেড়েছে বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘মুলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ওভার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ কম। এগুলো মানসম্মত পণ্য। কাচাঁমাল আমদানিতে সুযোগ আছে। বিশেষ করে ফেব্রিকসে ভুল দাম দেখানোর সুযোগ থাকে। খাদ্যপণ্যেও এ সুযোগ আছে।’
আরও পড়ুন:
চোরাচালান প্রতিরোধে জব্দ সোনার ২৫ শতাংশ পুরস্কার হিসেবে সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সদস্যদের দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস)।
সমিতির পক্ষ থেকে অসাধু জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের প্রতিও দেয়া হয়েছে হুঁশিয়ারি বার্তা।
বাজুসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হলমার্ক ছাড়া কোনো অলংকার বিক্রি করা যাবে না। কোনো জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের হলমার্ককৃত অলংকার নিম্নমানের পাওয়া গেলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে অবহিত করা হবে।
শনিবার বাজুস আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান পাচার প্রতিরোধ ও আইন প্রয়োগ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এনামুল হক খান দোলন সমিতির প্রস্তাব ও অবস্থান ব্যক্ত করেন।
সারা দেশে জুয়েলারি শিল্পের বাজারে অস্থিরতা, চলমান সংকট ও সমস্যা, দেশি-বিদেশি চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, অর্থ পাচার ও চোরাচালান বন্ধ এবং কাস্টমস আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জোরালো অভিযানের দাবিতে রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওই সময় সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবের যৌক্তিকতা তুলে ধরে এনামুল হক খান বলেন, ‘বাজুসের প্রাথমিক ধারণা, প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত, ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে প্রতিদিন জল, স্থল ও আকাশপথে কমপক্ষে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে, যা ৩৬৫ দিন বা এক বছর শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা।
দেশের চলমান ডলার সংকটে এই ৭৩ হাজার কোটি টাকার অর্থ পাচার ও চোরাচালান বন্ধে তিনি সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।
এনামুলের ভাষ্য, দেশে অবৈধভাবে আসা সোনার সিকিভাগও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নজরে আসছে না। ফলে নিরাপদে দেশে আসছে চোরাচালান হওয়া বিপুল পরিমাণ সোনার চালান। আবার একইভাবে পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশ যে সোনা চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, এটা এখন আর কথার কথা নয়। এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য।
তিনি মনে করেন, এই পরিস্থিতি উত্তরণে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিয়মিত কড়া নজরদারি জরুরি। পাশাপাশি বাজুসকে সম্পৃক্ত করে আইন প্রয়োগকারী সব দপ্তরের সমন্বয়ে সোনা চোরাচালানবিরোধী সেল গঠন এবং চোরাচালান আইন সংশোধনও সময়ের দাবি।
এনামুল হক খান প্রস্তাব করেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর অভিযানে উদ্ধার হওয়া সোনার মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশ সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে দিলে প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও জোরদার হবে।
ব্যাগেজ রুলের সুবিধার আওতায় সোনা ও সোনার ভার আনতে গিয়ে দেশের ডলারের ওপর কেমন প্রভাব পড়ছে, তার সমীক্ষা করার তাগিদ দেন তিনি। তার মতে, সমীক্ষায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় কমবে।
আরও পড়ুন:লন্ডনভিত্তিক পত্রিকা ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত সংবাদে চীনা ঋণ নিয়ে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের অবস্থান যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি উল্লেখ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এমনটা উল্লেখ করে শুক্রবার ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে।
৯ আগস্ট অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামালের সাক্ষাৎকার নেয় ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সাক্ষাৎকারে মুস্তফা কামাল বলেছেন যে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) ব্যাপারে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী সতর্ক মনোভাব দেখিয়েছেন। তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, চীনের বিআরআই ঋণ নেয়ার আগে অন্তত দুবার ভাবা উচিত।’
অর্থ মন্ত্রণালয়ের দাবি, প্রকাশিত ‘চীন থেকে বেল্ট অ্যান্ড রোড ঋণ নিয়ে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীর সতর্কতা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে আ হ ম মুস্তফা কামালের অবস্থান যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের উল্লেখ করে বলা হয়, ‘শ্রীলঙ্কা গত মে মাসে ঋণখেলাপি হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ নিতে চাইছে। বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী স্পষ্টভাবেই বলেছেন, যেকোনো দেশের যেকোনো প্রকল্প অর্থায়ন পেতে পারে যদি যথাযথ সমীক্ষার পর বোঝা যায় যে প্রকল্পটি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার মতো।
‘সম্ভাবনাময় নয়, এমন কোনো প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ কখনোই কোনো সংস্থা থেকে ঋণ নেয়নি—অর্থমন্ত্রী এ বিষয়েই জোর দিয়ে কথা বলেছেন তার সাক্ষাৎকারে। চীন থেকে ঋণ নেয়ার বিষয়ে কোনো ধরনের সতর্কতা আরোপ করেননি তিনি।’
প্রতিবাদপত্রে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার যেখানে ৪১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার, সেখানে চীন থেকে নেয়া ঋণ ৪০০ কোটি ডলার। এ ছাড়া বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ২০২১ সালের হিসাবে ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার।’
প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়, ‘ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এক বছর আগের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪ হাজার ৫০০ কোটি থেকে কমে ৪ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে গেছে। অথচ ২০১৯ সালের জুনেই রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ২৭০ কোটি ডলার।
‘২০২১ সালের আগস্টে তা ৪৭ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ৮১০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড। রিজার্ভ এখন চার হাজার কোটি ডলার, যা দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আইএমএফ যে ঝুঁকিমুক্ত সীমার কথা বলে থাকে, বাংলাদেশের রিজার্ভ এর মধ্যেই আছে।’
বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে অভিনন্দনও জানানো হয়েছে প্রতিবাদপত্রে।
আরও পড়ুন:
মানিচেঞ্জার ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভরতা কমানো ও হুন্ডি প্রতিরোধে এবার সারা দেশে বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখায় নগদ বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার সেবা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বর্তমানে বৈদেশিক লেনদেনে নিয়োজিত অথরাইজড ডিলার ব্যাংকগুলোর (এডি) শাখা থেকেই কেবল নগদ ডলার কেনাবেচনার অনুমতি রয়েছে। তবে মানি চেঞ্জার ও খোলাবাজারে ডলারের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির কারণে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। চলতি সপ্তাহেই ব্যাংকগুলোতে এ ধরনের সেবা চালুর অনুমোদন দেয়া শুরু হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার শাখার সংখ্যা খুব কম। যেগুলো আছে সেগুলোর বেশির ভাগই রাজধানী ঢাকা ও কয়েকটি বিভাগীয় শহরে। ফলে নগদ ডলার কেনাবেচার জন্য মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের ওপরই বেশি নির্ভর করতে হয়।
এ ধরনের সেবা কোন এলাকার কোন শাখায় চালু করা হবে, সেই সম্ভাব্য তালিকা চেয়ে আগামী রোববার দেশের সব ব্যাংকের কাছে চিঠি দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রাথমিকভাবে শাখাগুলোতে একটি ডেস্কের মাধ্যমেই এ সেবা চালুর অনুমোদন দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, খোলাবাজার থেকে যে কেউ ডলার কিনতে পারেন। ব্যাংক থেকে কিনতে পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট করতে হয়। যে কারণে অনেকে এখন খোলাবাজার থেকে ডলার কিনে শেয়ারবাজারের মতো বিনিয়োগ করছেন, যা অবৈধ। এতে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
সবশেষ বুধবার খোলাবাজারে এক ডলার কিনতে ১২০ টাকা গুনতে হয়েছে৷ অথচ আন্তব্যাংকে ডলার রেট ৯৫ টাকা।
আন্তব্যাংকের সঙ্গে খোলাবাজারে ডলারের দামের পার্থক্য প্রায় ২৫ টাকা। আর ব্যাংকের চেয়ে খোলাবাজার রেট অনেক বেশি হওয়ায় হুন্ডিতে টাকা পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা।
এমন প্রেক্ষাপটে ডলার বাজারের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল এ পর্যন্ত এক শ’র বেশি মানি চেঞ্জার পরিদর্শন করেছে।
এর মধ্যে ৪২টি প্রতিষ্ঠানকে ডলার কেনাবেচায় বিভিন্ন অনিয়মের কারণে শোকজ করা হয়। আর পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করেছে। লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করায় ৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া ডলারের দাম বৃদ্ধির পেছনে কারসাজির প্রমাণ পাওয়ায় ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আরও পড়ুন:জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর এবার দেশের অভ্যন্তরীণ পরিবহনে ব্যবহৃত লাইটার জাহাজের ভাড়া ১৫ থেকে ২২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) সভায় ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।
ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিউটিসি) অভ্যন্তরীণ পরিবহনে ব্যবহৃত লাইটার (ছোট আকারের) জাহাজগুলো পরিচালনা করে থাকে। এর আগে গেল নভেম্বরে লাইটার জাহাজের ভাড়া ১৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল।
প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশিদ বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর লাইটার জাহাজের ভাড়া সমন্বয় না করে উপায় ছিল না। তাই সভায় ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্ত গত শনিবার থেকে কার্যকর ধরে নেয়া হচ্ছে।’
তিনি জানান, নভেম্বরের পর লাইটার জাহাজের যা ভাড়া ছিল, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা, বরিশাল ও চাঁদপুরের জন্য তার ২২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এর বাইরের অন্যান্য গন্তেব্যের জন্য ১৫ শতাংশ হারে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে বহির্নোঙ্গর থেকে বন্দরের ভেতরের ভাড়া আগের মতই থাকছে।
সাধারণত বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির পর বড় জাহাজ বা মাদার ভেসেল থেকে বহির্নোঙ্গরে তা লাইটার জাহাজে লোড করা হয়। পরে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে এই লাইটার জাহাজেই পণ্য পৌঁছে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:দেশ থেকে টাকা পাচারের তথ্য সংগ্রহে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়ে থাকে। দেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট থেকে (বিএফআইইউ) সুইস ব্যাংকেও একাধিক বার চিঠি দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম এ কথা বলেছেন।
সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশের নাগরিকদের জমা করা অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত সুইস ব্যাংক বা কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য চায়নি- বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাতালি চুয়ার্ডের এমন মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মুখপাত্র বলেন, ‘সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের বিপরীতে আমার কিছু বলার অবকাশ নেই। আমি আমার মন্তব্য বলতে পারি। বিএফআইইউ একাধিকবার বিভিন্ন দেশের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য চেয়েছে। একাধিকবার তাদেরকে চিঠিও দেয়া হয়েছে। সেসব তথ্য রিপোর্ট আকারেও প্রকাশ করেছে বিএফআইইউ।’
সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের যেখানে যেখানে তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন হয়, তারা সব জায়গা থেকেই তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। বিএফআইইউ আন্তর্জাতিকভাবে এগমন্ড গ্রুপের সদস্য হওয়ায় এই গ্রুপের অন্য যে কোনো সদস্য দেশের কাছেই যে কোনো বিষয়ে তারা তথ্য চাইতে পারে।
‘ব্যাংকিং চ্যানেলে যদি আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে আমাদের দেশের অর্থ অন্য দেশে চলে যায়, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক সেটা নজরদারি করতে পারে। কোন ব্যাংকের মাধ্যমে গেছে সেটাও বাংলাদেশ ব্যাংক জানতে পারবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে। কিন্তু সেটা যদি অন্য কোনো মাধ্যমে যায় তাহলে বিএফআইইউ সেই তথ্য সংগ্রহ করবে।’
এর আগে বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে সুইস রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক বা এসএনবির ২০২২ সালের জুন মাসে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশিরা কত টাকা জমা রেখেছে ওই তথ্য প্রতিবছর সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক দিয়ে থাকে এবং ওই অর্থ অবৈধপথে আয় করা হয়েছে কিনা তা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।
‘গত বছরে বাংলাদেশিরা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করেছেন।’
নাতালি চুয়ার্ড বলেন, ‘তথ্য পেতে হলে কী করতে হবে সে সম্পর্কে আমরা সরকারকে জানিয়েছি। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো তথ্যের জন্য আমাদের কাছে অনুরোধ করা হয়নি। আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে এ ধরনের তথ্য আদান-প্রদান করা সম্ভব এবং সেটি তৈরি করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছি।’
আরও পড়ুন:পোশাক, জুতা, লাইফস্টাইল, ইলেকট্রনিক্সসহ নিত্যপণ্য সাদমার্ট, প্রিয়শপ, এয়ারব্রিঙ্গার, দ্য মল, জাদরু ডটকম, গিয়ারডিওসহ ২০টির বেশি অনলাইন সাইট থেকে কেনাকাটা করে বিকাশ পেমেন্টে ২০ শতাংশ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক পাচ্ছেন গ্রাহক।
নির্দিষ্ট অনলাইন মার্কেটপ্লেস ও ফেসবুকভিত্তিক শপ থেকে কেনাকাটা করলেও এ সুবিধা মিলবে।
৩১ আগস্ট পর্যন্ত গ্রাহক এই সুবিধা পাবেন।
গ্রাহক প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা এবং অফার চলাকালে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পেতে পারেন। বিকাশ অ্যাপ বা ইউএসএসডি কোড *২৪৭# ডায়াল করে বা পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে অফারটি পেতে পারেন গ্রাহক।
অফারের আওতাভুক্ত সব মার্চেন্টের তালিকা ও বিস্তারিত তথ্য https://www.bkash.com/online-shops - এই লিংকে পাওয়া যাবে।
ফেসবুকভিত্তিক শপ থেকে পোশাক, ইলেকট্রনিক্স, লাইফস্টাইল, খাদ্যসহ নানা পণ্য কিনে বিকাশ পেমেন্টে মিলছে ১০ শতাংশ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২০০ টাকা ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক।
২৫ আগস্ট পর্যন্ত নির্দিষ্ট ফেসবুক শপ থেকে বিকাশ পেমেন্টে কেনাকাটা করে এই ক্যাশব্যাক পাবেন গ্রাহক। একজন গ্রাহক প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা এবং অফার চলাকালে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পেতে পারেন।
অফারের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে এই লিংকে - https://www.bkash.com/facebook-shops।
বিকাশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও অফারগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত সব তথ্য পাবেন গ্রাহকরা।
ব্যবসা শুরু করতে নিয়ম-নীতিমালা আরও সহজ করতে চায় ব্যবসায়ীদের সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)।
এ জন্য ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু এবং নবায়নের সময় এক বছরের পরিবর্তে পাঁচ বছর করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার মতিঝিলের চেম্বার ভবনে ব্যবসা সহজীকরণ শিরোনামে আলোচনা সভায় এ দাবি জানান মেট্রো চেম্বার নেতারা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।
এমসিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম সভায় সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য রাখেন চেম্বারের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কামরান টি রহমান, সহ-সভাপতি হাবিবুল্লা এন করিম। এ সময় এমসিসিসিআইয় পরিচালনা পর্ষদের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মেট্রো চেম্বার বলেছে, ব্যবসার খরচ কমানোর অন্যতম ভিত্তি হচ্ছে কিভাবে কম সময়ে ব্যবসা শুরু করা যায়। এ প্রক্রিয়ায় কিছু উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে ব্যবসা শুরু করতে বিভিন্ন সরকারি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স নিতে হয়।
এমসিসিআইয়ের নেতারা বলেন, প্রায় সবক্ষেত্রে এখন এক বছরের জন্য নতুন লাইসেন্স ইস্যু বা নবায়নের অনুমতি দেয়া হয়, যা পেতে অনেক সময় লাগে। এতে সময় মতো ব্যবসা শুরু করতে পারেন না উদ্যোক্তারা।
এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্স ইস্যু এবং নবায়ন প্রতিবছরের জন্য না করে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় বাড়ালে ব্যবসায় আরও উন্নতি হবে বলে মত দেন এমসিসিআই সভাপতি।
তৈরি পোশক রপ্তানিকারক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে এ খাতের রপ্তানি আয় ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশ রাখছি। ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন এবং ইস্যুর সময় ৫ বছর বাড়ালে আমরা উপকৃত হবো।’
মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমরা সময় বাড়াতে রাজি। তবে অন্যান্য সরকারি দপ্তর ও সংস্থা এ ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। তা হলে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। বর্তমানে ট্রেড লাইসেন্সের জন্য উচ্চ হারে কর এবং এবং অগ্রিম আয় কর আদায় করা হয়। এটি কমানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।’
ব্যবসায়ীরা যেনো নির্বিঘ্নে লাইসেন্স পান সে জন্য তার সংস্থা থেকে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র তাপস।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য