সব শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট গণনাপদ্ধতি পাল্টানোর প্রত্যাশা- দুইয়ে মিলে পুঁজিবাজারে তৈরি হয়েছে নতুন আশাবাদ। আরও একটু লাফ দিয়েছে মূল্য সূচক। লেনদেনের গতিও বেড়েছে।
সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবস বুধবার ৫০ পয়েন্ট মিলিয়ে চার দিনে সূচক বাড়ল ৩১৯ পয়েন্ট। আর লেনদেন তলানি থেকে উঠে এক হাজার দুই শ কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই হয়েছে।
বুধবার দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ১৯৫ কোটি ৪১ লাখ ৩৭ হাজার টাকার শেয়ার। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন।
এর আগে গত ১০ মে ১ হাজার ২৫৮ কোটি ৫৮ হাজার টাকা এবং তার আগের দিন এক হাজার ২০৮ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়।
রোববার থেকে ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের দিন থেকেই পুঁজিবাজার তলানি থেকে উঠে আসার চেষ্টা করে। বৃহস্পতিবার ১৩ মাস পর সূচক প্রথমবারের মতো ছয় হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যাওয়ার পর যে আতঙ্ক তৈরি হয়, সেটির আপাত অবসান হয়েছে।
টানা তিন কর্মদিবস সূচক বাড়ার পর মঙ্গলবার রাতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক চিঠি বিনিয়োগকারীদেরকে উৎফুল্ল করে।
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বাজারমূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে করা যায় কি না, এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে ইতিবাচক সায় দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।
তবে এ ক্ষেত্রে একটি কৌশলী পরামর্শ দিয়েছে বিভাগটি। তারা এমন একটি কৌশল করতে চাইছে যাতে এক্সপোজার লিমিটের বর্তমান সংজ্ঞাও ঠিক থাকে আবার কোনো শেয়ারের ক্রয়মূল্যেই তা নির্ধারণ করা যায়।
এক্সপোজার লিমিট বাজার মূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে নির্ধারণের বিষয়ে মত জানতে চেয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে ১৮ জুলাই চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দুই সপ্তাহ পর চিঠির জবাব দেয়া হয়েছে।
পাল্টা চিঠিতে বলা হয়, ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর ২৬ ক ধারায় ব্যাংক কোম্পানি কর্তৃক অন্য কোনো কোম্পানির শেয়ার ধারণের হিসাবায়নে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক ক্রয়মূল্যকেই বাজার মূল্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।’
ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক তার মূলধনের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমা গণনা করা হয় ক্রয়মূল্য অথবা বাজারমূল্যের মধ্যে যেটি বেশি, সেটি ধরে। এই পদ্ধতিকে ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে দেখা হয়।
কোনো ব্যাংক তার বিনিয়োগসীমার মধ্যে শেয়ার কিনলে সেটির দর বেড়ে গিয়ে সীমা অতিক্রম করে গেলেই তা বিক্রি করে দিতে হয়। এতে বাজারে বিক্রির চাপ তৈরি হয়। আর ব্যাংক যেহেতু বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে তাই বিক্রির চাপটাও বেশি থাকে।
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীর প্রাধান্য বেশি। ব্যাংকের বিক্রয় চাপ তারা সামাল দিতে পারে না।
গত ৩০ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বিএসইসির এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে বৈঠক শেষে জানানো হয়, ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির শুরুতে আরেক দফা বৈঠক হবে। এরপর দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে। কিন্তু সেই বৈঠক আর হয়নি।
এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসে। ফজলে কবির অবসরে যাওয়ার পর গভর্নর হয়ে আসেন আবদুর রউফ তালুকদার।
তিনি পদে আসার আগেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে ১৯ বছর পর বদলি করা হয়, যাকে পুঁজিবাজার নিয়ে রক্ষণশীল নীতির জন্য দায়ী করা হয়।
এর মধ্যে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার হিসাব গণনার পদ্ধতির বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠি পুঁজিবাজার নিয়ে সংস্থাটির নীতি পরিবর্তনের আভাস হিসেবে দেখা হচ্ছিল।
তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কেউ সরাসরি কোনো বক্তব্য দিচ্ছিল না। যদিও গত রোববার বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম এক অনুষ্ঠানে নিশ্চিত করেন যে, এক্সপোজার লিমিট ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনও আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবে এক্সপোজার লিমিটের গণনাপদ্ধতি পরিবর্তন এখন সময়ের ব্যাপার আর আনুষ্ঠানিকতার ব্যাপাক মাত্র-এটি নিশ্চিত।
এই অবস্থায় সকালে লেনদেন শুরু হতে না হতেই শেয়ারদর দল বেঁধে বাড়তে থাকে। আধা ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স ১০৩ পয়েন্টে বেড়ে যাওয়ার পর রোববারের স্মৃতি ফিরে আসে। সেদিন ফ্লোর প্রাইস কার্যকর হয় এবং প্রথম দিন সূচক বাড়ে ১৫৩ পয়েন্ট।
তবে কিছুক্ষণ পর দেখা যায় বিক্রয় চাপ। গত বৃহস্পতিবার বা তার আগে যারা শেয়ার কিনেছেন, এই কয়দিনে তারা বেশ ভালো মুনাফা পেয়েছেন। তাই শেয়ার বিক্রি করে অনেকেই মুনাফা তুলে নেন।
এই বিক্রয় চাপে পরে সূচক সেখান থেকে কিছুটা কমে।
দিন শেষে যতগুলো শেয়ারের দর বেড়েছে, কমেছে তার চেয়ে বেশি। ১৫২টি কোম্পানির শেয়ার দরে অর্থ যোগ হয়েছে। বিপরীতে হারিয়েছে ১৬২টি। অপরিবর্তিত থাকে ৬৮টির দর।
লেনদেনের উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে বহু মাস পর ব্যাংকের শেয়ারের দর বৃদ্ধি। এই খাতের ৩৩টি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছে কেবল একটি কোম্পানির শেয়ার। দর ধরে রাখে ৭টি। আর বেড়েছে ২৫টির দর।
তবে সবচেয়ে ভালো দিন গেছে ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে। এখানে ভালো-মন্দ নির্বিশেষে দর বেড়েছে। ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া কোম্পানির দর বেড়েছে আরও বেশি।
সব মিলিয়ে ২২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৯টির, কমেছে দুটির, অপরিবর্তিত ছিল একটির দর।
ওষুধ ও রসায়ন খাতেও ভালো দিন পার করেছে বিনিয়োগকারীরা। এই খাতের ৬টি কোম্পানির দরপতন, চারটির দর অপরিবর্তিত থাকার দিন বেড়েছে ২১টির দর।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। অন্যদিকে বিমা, বস্ত্র, প্রকৌশল ও খাদ্যের মতো প্রধান খাতগুলোতে সিংহভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে।
লেনদেনের বিষয়ে প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজের সাবেক সিইও সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কারণে পুঁজিবাজারে উত্থান দেখা যাচ্ছে। ফ্লোর প্রাইসের কারণে যেমন আত্মবিশ্বাস বেড়েছে, তেমনিভাবে এক্সপোজার কস্ট প্রাইসে কাউন্ট করা হলে ব্যাংকের বিনিয়োগটাও বাড়বে এতে বাজার আরও ভালো হবে।’
তবে ফ্লোর প্রাইসের সঙ্গে দর পতনের সীমা ২ শতাংশ বহাল রাখার পক্ষে মত দেন সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস দিয়ে বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করা হয়েছে। এটা ভালো ব্যাপার। তবে এর সঙ্গে সার্কিট ব্রেকার ২ শতাংশ রাখা উচিত ছিল কমপক্ষে সাত হাজার ইনডেক্স পর্যন্ত। দেখা যাচ্ছে, শেয়ারের দর বাড়লেও কিন্তু ব্যাপক হারে কমে যাচ্ছে। কিন্তু যদি ২ শতাংশের বেশি কমতে না পারত, তাহলে মানসিকভাবে বিনিয়োগকারীরা আরও চাঙা থাকতেন।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান
এই তালিকার শীর্ষে সবচেয় বেশি দেখা গেছে ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে লোকসানি ফারইস্ট ফাইন্যান্সের। ১০ শতাংশ দর বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৬ টাকা ৬০ পয়সায়। এ নিয়ে টানা চার কর্মদিবস দর বাড়ল শেয়ারটির।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ দর বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির। লোকসানি কোম্পানিটির দর আগের দিনেও প্রায় সমান হারে বেড়েছিল।
চলতি বছরের ১৪ জুলাই থেকে কোম্পানির ঈর্ষণীয় দরবৃদ্ধি হয়েছে। ওই দিন ৬ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হওয়া শেয়ারটির দর বেড়ে আজ ক্লোজিং প্রাইস দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৪০ পয়সায়।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে আরেক লোকসানি ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেড। ২০২১ সালে শেয়ার প্রতি ৮ টাকা ৩ পয়সাসহ তিন বছর ধরে লোকসান গুনছে কোম্পানি।
৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ দর বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৮ টাকায়।
শীর্ষে দশে জায়গা করে নিয়েছে দুর্বল কোম্পানি আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, ঋণ কেলেঙ্কারিতে জর্জর ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানি, বস্ত্র খাতের তশরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ওরিয়ন ইনফিউশন, আর্থিক খাতের ফিনিক্স ফাইন্যান্স, বিবিধ খাতের ইনডেক্স অ্যাগ্রো ও ব্যাংক খাতের আইএফআইসি ব্যাংক।
দর পতনের শীর্ষ ১০
এই এই তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে পেপার প্রোসেসিং। টানা তিন কর্মদিবস উত্থানের পরে বুধবার দর কমল ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইস ছিল ১৮৫ টাকা ৬০ পয়সা। এখন দাঁড়িয়েছে ১৭৭ টাকা।
এর পরেই ৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ দর কমেছে এমারেল্ড অয়েলের দর। তৃতীয় স্থানে থাকা এনভয় টেক্সটাইলের দর কমেছে ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ।
এ ছাড়া তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে ফু-ওয়াং সিরামিকস, মনোস্পুল পেপার, অ্যাপেক্স স্পিনিং, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রিং শাইন টেক্সটাইল, জুট স্পিনার্স এবং শাইনপুকুর সিরামিকস।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ৩১ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানিটির দর ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ দর বেড়েছে।
ওয়ালটন হাইটেকের দর শূন্য দশমিক ৯৩ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট।
বার্জার পেইন্টস সূচকে যোগ করেছে ৪ দশমিক ১৫ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ।
এ ছাড়া বেক্সিমকো ফার্মা, রবি, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, আইএফআইসি ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, আইসিবি ও ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৮ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট সূচক কমেছে গ্রামীণফোনের দর পতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৬৩ পয়েন্ট কমিয়েছে তিতাস গ্যাস কোম্পানি। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ।
ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের দর ২ দশমিক ২৭ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৬৩ পয়েন্ট।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, এনভয় টেক্সটাইল, আরএকে সিরামিকস, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট এবং জেএমআই হসপিটালের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৫ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য