আমদানির পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছাড় না হওয়ায় বিভিন্ন মডেলের ১১৫টি গাড়ি নিলামে তুলছে মোংলা কাস্টমস হাউস।
আগামি ৭ আগস্ট এই নিলাম হবে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস হাউসের নিলাম শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আবু বাসার সিদ্দিকী। তিনি জানান, এবারই প্রথম অনলাইন থেকে নিলামে বিড করা যাবে।
তিনি রোববার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগ্রহীরা ১ ও ২ আগস্ট মোংলা বন্দরে গিয়ে নিলামে তোলা গাড়ি দেখার সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে আছে হায়েস, টয়োটা, নোয়া, নিশান, এলিয়ন, প্রাডোসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৫৫টি গাড়ি ও ১০টি আমদানি করা অন্যান্য পণ্য।’
৫ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে ৭ আগস্ট বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই নিলামের বিডিং চলবে।
আবু বাসার জানান, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ বিডারদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর সর্বোচ্চ দরদাতাকে গাড়ি বুঝিয়ে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘এবারের নিলামে প্রথমবারের মতো অনলাইন থেকে অংশ নেয়া যাবে। বাংলাদেশ কাস্টমসের অনলাইন নিলামের ওয়েবসাইটে গিয়ে মোংলা কাস্টমস হাউসের সেকশনে ক্লিক করলে নিলামের তালিকা পাওয়া যাবে। সেখানে রেজিস্ট্রেশন করে গ্রাহকরা অনলাইন নিলামে অংশ নিতে পারবেন।’
তবে এই নিলাম নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বাংলাদেশ রিকনডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) মোংলা বন্দর স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান আহসানুর রহমান আরজু।
তিনি বলেন, ‘একদিকে বৈশ্বিক মন্দা চলছে, সরকারি সংস্থা ও ব্যাংকগুলো গাড়ি কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোও এখন গাড়ি কিনছে না। তার মধ্যে আমাদের আরেকটা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে কাস্টমস নিলাম প্রক্রিয়া।
‘আমরা এই সময়ে নিলাম না তুলতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করেছি। তবে তারা আমাদের কথা রাখেনি।’
মোংলা বন্দর দিয়ে প্রথম গাড়ি আমদানি শুরু হয় ২০০৯ সালের ৩ জুন। প্রথম চালানে এ বন্দর দিয়ে ২৫৫টি রিকনডিশন্ড (ব্যবহৃত) গাড়ি আমদানি করে হক-বে অটোমোবাইল কোম্পানি।
মোংলা বন্দরের উপসচিব (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) মো. মাকরুজ্জামান বলেন, ‘বিদায়ী অর্থবছরে (২০২১-২২) দেশের সমুদ্রবন্দর দিয়ে মোট ৩৪ হাজার ৭৮৩টি গাড়ি আমদানি করা হয়েছিল। তার মধ্যে মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি করা হয়েছিল ২০ হাজার ৮০৮টি, যা মোট আমদানি করা গাড়ির শতকরা ৬০ ভাগ।’
মোংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান বলেন, ‘মোংলা কাস্টমসের মোট রাজস্ব আয়ের শতকরা ৫২ শতাংশ আসে আমদানি করা গাড়ির শুল্ক থেকে। দীর্ঘদিন আমদানি করা গাড়ি বন্দরে পড়ে থাকলে অন্যান্য পণ্য রাখায় সমস্যা তৈরি হয়।
‘নিলামপ্রক্রিয়া চালু রাখলে গাড়ি বা অন্যান্য পণ্য রাখতে ব্যবসায়ীদের সুবিধাও হবে। অন্যদিকে সঠিক সময় সরকারের রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন:আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম কঠোরভাবে তদারকি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
ঢাকা থেকে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের বাসভবনে গিয়ে শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম শক্তভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। ভোক্তা অধিকারের যথেষ্ট পরিমাণ লোকের অভাব রয়েছে। এরপরও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা শক্ত অবস্থানে রয়েছি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দেয়া দাম ঠিক করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আমাদের বিশাল বাজার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গোলের কিছুটা ঘাটতি থাকতে পারে। সেটি কাভার করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তবে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুবিধা নিচ্ছেন।
‘মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সবসময় ব্যবসায়ীদের যে চাপে রাখা যায়, তা কিন্তু নয়। আমরা বাজার নিয়ন্ত্রণে এক কোটি পরিবারকে সাশ্রয়ী মূল্যে খাবার দিচ্ছি।’
পণ্যের দাম নির্ধারণ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যখন যে পণ্যের মজুত কমে যায়, তখন সেই পণ্যের দাম নির্ধারণ করে সরকার। সেটা দেশি বা বিদেশি পণ্য হতে পারে। তিন পণ্যের বেঁধে দেয়া দাম কার্যকর হবে।
‘এখন থেকে খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম হবে সর্বোচ্চ ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৩৬ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা। কোনো কারণ ছাড়াই বাজারে অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যও রয়েছে। এখন ন্যায্য দাম কার্যকর হবে।’
এদিকে দুর্গাপূজায় ভারতে ইলিশ রপ্তানির প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো সারা বছর ইলিশ রপ্তানি করি না। দুর্গাপূজার সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাঙালিদের জন্য শুভেচ্ছা হিসেবে সামান্য কিছু পাঠানো হয়।’
তিনি বলেন, ‘সারা বছর আমাদের যে পরিমাণ ইলিশ হয়, তার থেকে মাত্র দুই শতাংশ ভারতে দেয়ার চেষ্টা করি। মাছ রপ্তানির কোনো চিন্তা নেই।
‘এটাকে রপ্তানি বলা যাবে না। শুভেচ্ছা টোকেন হিসেবে দেয়া হয়। বছরে ছয় লাখ টন ইলিশ ধরা হয়। সেখান থেকে ৪-৫ হাজার টনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, যা আমাদের দুই দিনের উৎপাদনও নয়।’
আরও পড়ুন:আলু, ডিম ও দেশি পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
নির্ধারিত দামে বিক্রি না করলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের দাম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী তিন কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
সে অনুযায়ী দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আলু কেজিতে ভোক্তা পর্যায়ে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা ও কোল্ড স্টোরেজ থেকে ২৬ থেকে ২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। অন্যদিকে প্রতি পিস ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২ টাকা নির্ধারণ করে মন্ত্রণালয়।
এরপরও দাম নিয়ন্ত্রণে না এলে নীতিগতভাবে ডিম আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠান আমদানির আবেদন করেছে।
এ ছাড়া বোতল ও প্যাকেটজাত সয়াবিন তেল ১৬৯ টাকা, খোলা তেল ১৪৯ টাকা, পামতেল ১২৪ টাকা, খোলা চিনি ১২০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার ও স্থানীয় পর্যায়ে ডিসি ও ইউএনও বাজার মনিটরিং করবেন। নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি নিলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্ত্রী জানান, ভারতে ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। গড়ে ৫ হাজার টন ইলিশ পাঠানো হতে পারে।
আরও পড়ুন:বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে পাঁচ টাকা কমানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার মন্ত্রী বলেন, ‘চিনি, তেল আমদানি করতে হয়। সেটা নানা হিসাব করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। সয়াবিন তেলের দাম পাঁচ টাকা ও পাম তেলের দাম চার টাকা কমে যাবে আজ থেকে।’
নতুন দর নির্ধারণের ফলে বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল কিনতে খরচ হবে ১৬৯ টাকা, যা এতদিন ছিল ১৭৪ টাকা।
মন্ত্রী জানান, খোলা সয়াবিন এক লিটার বিক্রি হবে ১৪৯ টাকায়, যা এতদিন ছিল ১৫৪ টাকা। পাম তেল লিটারে চার টাকা কমে বিক্রি হবে ১২৪ টাকায়।
তিনি আরও জানান, খোলা চিনি প্রতি কেজি ১২০ ও প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হবে।
বাংলাদেশ ২০৩৭ সালের মধ্যে ২০তম জিডিপির দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে বুধবার ‘কমনওয়েলথ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ট্রেড ফোরাম ২০২৩’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ও কমনওয়েলথ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রিন ইনভেস্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বের বর্ধনশীল পাঁচটি অর্থনীতির একটি। জিডিপিতে আমরা বিশ্বের ৩৫তম। ২০৩৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২০তম জিডিপির দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে আমরা আশা রাখি।’
এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সমর্থন এবং অধিকতর টেকসই বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা আক্ষেপ করে বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে সুচিন্তিত ও পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে। বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে, কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতার আসার পর সব উন্নয়নের কাজ থমকে যায়। বিএনপি-জামায়াতের পাঁচ বছর এবং সামরিক সরকারের পরবর্তী বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণ মন্দার কবলে পড়েছিল।
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর আমরা দেশকে সুপরিকল্পিতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাই। আমরা স্বল্প, মধ্যম এবং দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে দেশ গঠনের কাজে মনোনিবেশ করি। গণতান্ত্রিক পরিবেশ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সরকারের ধারাবাহিকতা এবং পরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মসূচি দ্রুত বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে।
‘গত প্রায় ১৫ বছরে দারিদ্র্যের হার ৪১ দশমিক ৫ থেকে ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৫৯ বছরে থেকে ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে। এই সময়ে আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২ হাজার ৭৬৫ মার্কিন ডলার। আমরা স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি।’
জিডিপি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৬ সালে জিডিপির পরিমাণ ছিল ৬০ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে তা পৌনে আট গুণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারে। শুধু জিডিপি বৃদ্ধিই নয়, বাংলাদেশে গত দেড় যুগে দৃশ্যমান বহুমাত্রিক অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
‘বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়ার পরও আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। চাল, সবজি, ফল, মাছ, মাংস এবং ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশেগুলোর একটি।’
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সে লক্ষ্য অর্জনের পর আমরা কাজ করছি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের। স্মার্ট সরকার, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ গড়ে তোলার মাধ্যমে এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা হবে।
‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি জ্ঞানভিত্তিক উন্নত স্মার্ট দেশে এবং ২১০০ সালের মধ্যে টেকসই বদ্বীপে পরিণত হওয়ার। সে লক্ষ্যে আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য প্রায় সব খাতই উন্মুক্ত, তবে এর মধ্যে কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুত, চিকিৎসা উপকরণ, গাড়ি ও জাহাজ নির্মাণ, তথ্য প্রযুক্তিসহ অনেক খাতে অধিক বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
‘এসব খাতে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি ব্যবসা হতে উদ্ভূত লাভ/ডিভিডেন্ড নিজ দেশে ফেরত নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া সহজতর করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের কাছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিডা অনলাইনভিত্তিক ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করেছে। এর মাধ্যমে ২৬টি সংস্থার ৭৮টি সেবা একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে দেয়া হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিনিয়োগের পূর্ব শর্ত হচ্ছে অবকাঠামো উন্নয়ন। এ জন্য আমরা সমগ্র দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ১০৯টি হাইটেক এবং সফটওয়্যার প্রযুক্তি পার্ক এবং আইটি প্রশিক্ষণ এবং ইনকিউবিউশন সেন্টার স্থাপন করছি, যেখানে বৈদেশিক বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। আমাদের সড়ক, রেল এবং আকাশপথে যোগাযোগ উন্নত হচ্ছে।
‘দেশের প্রায় সব মহাসড়ক চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করা হয়েছে বা হচ্ছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলা সরাসরি রাজধানী ঢাকা এবং দেশের অন্য অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। পদ্মা সেতু দিয়ে শিগগিরই ঢাকার সঙ্গে খুলনার রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে শুধু বাংলাদেশেই না, দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল চালু হবে শিগগিরই। চট্টগ্রাম থেকে পর্যটন শহর কক্সবাজারে রেললাইন নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় গত বছর মেট্রোরেলের একাংশ এবং কয়েক দিন আগে দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ উদ্বোধন করা হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এসব অবকাঠামোর পুরো অংশ চালু হলে ঢাকায় গণপরিবহন ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।
‘দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছেন। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার ২২৭ মেগাওয়াট। জ্বালানি ব্যবস্থাপনার জন্য ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। ভাসমান টার্মিনাল থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কমনওয়েলথ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ট্রেড ফোরামের চেয়ারম্যান লর্ড মারল্যান্ড এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
আরও পড়ুন:ডাবের দাম নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার তদারকি করবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ডাব কেনাবেচায় রাখতে হবে পাকা রসিদ। কোনভাবে নায্যমূল্যের বেশি দাম নিলে ব্যবসায়ীদের জরিমানাসহ কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
সোমবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার ভোক্তা অধিদপ্তরের সভাকক্ষে যৌক্তিকমূল্যে ডাব কেনাবেচা সংক্রান্ত সচেতনতামূলক সভায় ডাবের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। খবর বাসসের
সভায় সভাপতিত্ব করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, ডেঙ্গু সংক্রমণের সুযোগ নিয়ে হঠাৎ করেই ডাবের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। অসহায় রোগীদের জিম্মি করে ডাব ব্যবসায়ীদের অনৈতিক এ অতিমুনাফা কোনো যুক্তিতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
মহাপরিচালক বলেন, গত ২৪ আগস্ট গভীর রাতে কারওয়ান বাজার আড়তে অভিযান চালিয়ে পাইকারি পর্যায়ে ডাবের সর্বোচ্চ মূল্য প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে পাওয়া গেছে। অর্থাৎ সবচেয়ে ভালো মানের ডাব খুচরায় সর্বোচ্চ ১০০ টাকার বেশি হতে পারে না, যা বাজারে দ্বিগুণ পর্যন্ত দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
তিনি আরও বলেন, ডাব কেনাবেচায় কোনো রকম পাকা ভাউচার কিংবা ক্রয়-বিক্রয় রসিদ রাখা হয় না। এ সুযোগে ডাবের আড়ত, পাইকারি ও খুচরা প্রতিটি স্তরে মূল্যবৃদ্ধির এক মহোৎসব চলছে। আমরা এরই মধ্যে সারাদেশে ডাব নিয়ে কাজ শুরু করেছি। এর প্রভাব বাজারে পড়েছে। ডাবের মূল্য কমতে শুরু করেছে।
শফিকুজ্জামান বলেন,‘আমি সবাইকে বলছি যতক্ষণে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১০০ টাকার মধ্যে না আসবে আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মনিটরিং জোরদার রাখবো।’
তিনি বলেন, মঙ্গলবার থেকে ডাব ব্যবসায়ীদের অবশ্যই পাকা রসিদ সংগ্রহে রাখতে হবে। তা না হলে অভিযানের মাধ্যমে জরিমানাসহ কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
বৈঠকে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা পরস্পরকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেন। পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ডেঙ্গুর সুযোগ নিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা ডাবে অতিরিক্ত লাভ করছে। আর খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ডাবের দাম বাড়াচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
তবে ভোক্তা অধিদপ্তর থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, খুচরা কিংবা পাইকারি উভয় পর্যায়ে কোথাও অতিরিক্ত লাভে ডাব বিক্রির অভিযোগ পেলে তাকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
আরও পড়ুন:অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম স্বাভাবিক রাখতে ও রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পর পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। সেই অস্থিরতা কাটতে না কাটতেই আবারও ভারত সরকারে শুল্কায়ন মূল্য বৃদ্ধির খবরে হিলি স্থলবন্দরে বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম।
হিলির বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ একদিন আগেও বন্দরে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হলেও আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। আর নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৫৪ টাকা বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে। শুল্কায়ন মূল্য বৃদ্ধি না করতেই পেঁয়াজের দাম বাড়ায় হতাশ বন্দরের কমিশন ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতারা।
শনিবার সপ্তাহের শুরুর দিন ভারত থেকে ৩৭ ট্রাকে ১ হাজার ৯৩ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। আমদানিকৃত এসব পেঁয়াজে ৪০ শতাংশ শুল্কে ভারত রপ্তানি করলেও শুল্কায়ন মূল্য যোগ না হতে বাংলাদেশি আমদানিকারকদের সিন্ডিকেটে দাম বাড়ানো হয়েছে।
সাধারণ ক্রেতা আসলাম আলী বলেন, ‘রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা হলো কিন্তু হঠাৎ করে আজকে ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। হঠাৎ করে দাম বাড়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি। দাম কম হলে আমরা বন্দর থেকে বেশি পরিমাণ পেঁয়াজ কিনতে পারি।’
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাবার কারণে সেখান থেকে বেশি দামে কিনে আমদানি করতে হচ্ছে। যার কারণে হিলির বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। তবে আমদানি বাড়লে দাম আবারও কমে আসতে পারে।’
সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হচ্ছে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বন্দরে সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।’
হিলি পানামা পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাব মল্লিক বলেন, ‘হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। যেহেতু পেঁয়াজ কাঁচা পণ্য তাই বন্দর থেকে আমদানিকারকরা যাতে দ্রুত নিয়ে বাজারজাত করতে পারে সেজন্য তাদেরকে সবধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। পেঁয়াজ লোড-আনলোডের জন্য আলাদা করে শ্রমিক রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:স্বর্ণের দাম কিছুটা নেমে এসে আরও বড় লাফ দিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে। কমানোর পর এক সপ্তাহ না যেতেই পুনরায় স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস)।
নতুন নির্ধারিত দাম অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) এক ভরি স্বর্ণ কিনতে গুনতে হবে এক লাখ এক হাজার ২৪৪ টাকা। সে হিসাবে ভরিতে দাম বেড়েছে ২ হাজার ২২২ টাকা। দেশের ইতিহাসে স্বর্ণের দাম এতোটা উচ্চতায় আর কখনোই ওঠেনি। এর আগে সর্বোচ্চ দাম ছিল এক লাখ ৭৭৭ টাকা ভরি।
২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম দুই হাজার ২১৬ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে এই ক্যাটাগরির স্বর্ণের নতুন মূল্য দাঁড়িয়েছে এক লাখ এক হাজার ২৪৪ টাকা ভরি।
বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানানো হয়।
এর আগে ১৭ আগস্ট স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাজুস। তারও আগে ২০ জুলাই ঘোষণা দিয়ে ২১ জুলাই থেকে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ায় বাজুস। সে সময় সবচেয়ে ভালো মানের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৭৭৮ টাকা। এতদিন দেশের বাজারে এটিই ছিল স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম।
বাজুসের সবশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাজুস স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে। শুক্রবার থেকে তা কার্যকর হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম হবে এক লাখ এক হাজার ২৪৪ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৬ হাজার ৬৩৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৮২ হাজার ৮১৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ৬৯ হাজার ৫১ টাকা।
তবে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। বর্তমানে ২২ ক্যারেটের রুপার ভরি ১ হাজার ৭১৫ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ হাজার ৬৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ৫০ টাকা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য