ধারাবাহিক দরপতনের মধ্যে প্রতিটি শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়ার পর পুঁজিবাজারে বড় উত্থান হলো। করোনার সময় ফ্লোর প্রাইসে বিপুলসংখ্যক শেয়ার লেনদেন না হলেও এবার সেটিও দেখা গেছে কম। আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সের ১৫৩ পয়েন্ট উত্থান সূচককে ছয় হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে ৬ হাজার ১৩৩ পয়েন্টে নিয়ে গেছে। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবার সেটি গত ১৩ মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে নামার পর তৈরি হয় আতঙ্ক।
সেদিনই ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের ঘোষণা দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। ২০২০ সালে দেশে করোনা সংক্রমণের পর ধসের মধ্যে ১৯ মার্চও ফ্লোর প্রাইস দেয়ার ঘোষণা আসে। এতে বাজারের ধস থামে।
রোববার ফ্লোরের প্রথম দিন তিন শতাধিক কোম্পানির শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেড়ে যায়। এর প্রভাবে লেনদেন শুরুই হয় ৬ হাজার ১৬ পয়েন্ট দিয়ে যা আগের দিনের তুলনায় ছিল ৩৬ পয়েন্ট বেশি।
লেনদেনের অর্ধেক সময় সেখান থেকে সূচক আরও ৪০ পয়েন্টের মতো বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সূচক সব মিলিয়ে যখন ৭০ পয়েন্ট বেশি, সে সময় থেকে শুরু হয় ঊর্ধ্বমুখী টান। লেনদেন শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগ পর্যন্ত সূচক ১৬৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে শেষ মুহূর্তের সমন্বয়ে সেখান থেকে ১০ পয়েন্ট কমে শেষ হয় লেনদেন।
চলতি বছর এক দিনে সূচক সবচেয়ে বেশি ১৫৫ পয়েন্ট বেড়েছিল গত ৯ মার্চ। ১০০ পয়েন্ট যোগ হয়েছে আরও দুই দিন। এর মধ্যে ২৯ মে ১৩১ পয়েন্ট ও ২৩ মে ১১৮ পয়েন্ট সূচকে যোগ হতে দেখা যায়। এ ছাড়া ১৩ মার্চ বাড়ে ৯৭ পয়েন্ট।
বেলা শেষে বেড়েছে ৩৬২টি কোম্পানির দর। বিপরীতে কমেছে ৭টির আর ১১টি আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে। হাতবদল হয়েছে মোট ৫৬৭ কোটি ৯৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকার শেয়ার। আগের কর্মদিবসে লেনদেন ছিল ৪৪১ কোটি ৭৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা।
ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের দিন লেনদেন বেড়েছে ১২৬ কোটি ১৮ লাখ ১২ হাজার, যা শতকরা হিসাবে ২৮.৫৬ শতাংশ।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে দর সংশোধনে যাওয়ার পর পুঁজিবাজার আর ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। এর মধ্যে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলার পর থেকে শুরু হয় নতুন এক সংকট।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক মন্দা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমা, ডলারের বিপরীতে টাকার মান হ্রাস, জ্বালানি-বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে পড়তেই থাকে পুঁজিবাজার।
১৩ মাস পর মূল্যসূচক প্রথমবারের মতো নেমে যায় ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে। এর মধ্যে গত সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসসহ টানা ৯ কর্মদিবসে সূচক পড়ে ৩১৪ পয়েন্ট।
এরপর দুই দিনে ৫৯ পয়েন্ট সূচকে যোগ হলেও পরের দিনেই তার চেয়ে ১৫ পয়েন্ট বেশি পড়ে যায়। শেষ কর্মদিবসে বৃহস্পতিবারেও ৫৭ পয়েন্ট কমে সূচক ৬ হাজারের মনস্তাত্ত্বিক স্তরের নিচে অবস্থান করে।
রোববারের লেনদেনের বিষয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের চিফ অপারেটিং অফিসার মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, “পলিসি সাপোর্টের কারণেই (ফ্লোর প্রাইস কার্যকর) মূলত আজকের উত্থানটা হয়েছে। তবে দুপুর একটার পর থেকে ‘নো বাই’ অবস্থান থেকে সরে আসতে দেখা যায়। প্রথমে মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং পরে সব ইনস্ট্রুমেন্টেই বাই প্রেসারটা এসেছে।”
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ‘প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্টের কারণে সূচকটা বেশি বেড়েছে। তবে শেয়ারদর কমলে কেনার অপেক্ষায় যারা ছিল, তারাও দেখছে যে এর চেয়ে বেশি দাম কমবে না। তাই কিনতে শুরু করেছে।’
ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজের সিইও সুমন দাস বলেন, ‘মার্কেটকে এভাবে ব্যারিয়ার দিয়ে ঠেকানো আমরা চাইনি। আজকে তো অ্যাডজাস্টমেন্টের কারণে সূচক বেড়েছে বেশি পরিমাণে। আগামীকাল থেকে হয়ত আসল অবস্থাটা বোঝা যাবে।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষে বিমা খাত
দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষ দশের আটটিই বিমা খাতের কোম্পানি। এর মধ্যে প্রথম সাতটির দর বেড়েছে ১১ শতাংশের বেশি। লভ্যাংশজনিত রেকর্ড ডেটের কারণে দর বৃদ্ধি বা কমার ক্ষেত্রে কোনো সীমা না থাকায় কোম্পানিগুলোর ওই পরিমাণ দর বেড়েছে। এ ছাড়াও তিনটির দর বেড়েছে সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ করে।
সবচেয়ে বেশি ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ দর বেড়েছে ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের। এর পরেই ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ দর বেড়ে লেনদেন হয়েছে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের।
১১ শতাংশের বেশি বেড়েছে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ইনফিউশন ও ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের দরও।
১০ শতাংশ হারে বেড়েছে তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স ও অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের দর।
দর হারানো ৭ কোম্পানি
লোকসানি দুলামিয়া কটনের দর ১ দশমিক ৯২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৭১ টাকা ৩০ পয়সায়।
এরপরেই দর কমেছে ফার্স্ট ফাইন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ কমেছে দর।
এরপরেই কমেছে ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের দর। ৮০ পয়সা বা ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ কমে সর্বশেষ ৫০ টাকা ৫০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
ভ্যানগার্ডএএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালান্সড ফান্ড লুজার তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছে। শেয়ারটির দর ১ দশমিক ৩২ শতাংশ কমে সর্বশেষ ৭ টাকা ৫০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
পতনের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে যথাক্রমে এইচ আর টেক্সটাইল, ফরচুন সুজ এবং সিটি ব্যাংক।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ১৬ দশমিক ১৬ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে গ্রামীণফোন। কোম্পানিটির দর ৩ দশমিক ০১ শতাংশ দর বেড়েছে।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দর ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৯ দশমিক ৯২ পয়েন্ট।
রবি সূচকে যোগ করেছে ৭ দশমিক ২৯ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
ওয়ালটন হাইটেক, আইসিবি, ইউনাইটেড পাওয়ার, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, স্কয়ার ফার্মা, বেক্সিমকো এবং অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৬১ দশমিক ২৯ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি শূন্য দশমিক ১৭ পয়েন্ট সূচক কমেছে সিটি ব্যাংকের কারণে। এ দিন কোম্পানিটির দর কমেছে শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ১৪ পয়েন্ট কমিয়েছে ফরচুন সুজ। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ।
এইচ আর টেক্সটাইলের দর ১ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট।
এ ছাড়া ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ভ্যানগার্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড, পিএফ মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং দুলামিয়া কটনের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই সাত কোম্পানি সূচক কমিয়েছে শূন্য দশমিক ৪৬ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য