সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় রাজধানীর বাজারে এর দামে প্রভাব পড়েছে। আগের চেয়ে বেশ কম দামে কেনা যাচ্ছে ইলিশ মাছ। এ ছাড়া সবজির দামও মোটামুটি স্থিতিশীল। দাম বাড়েনি মাংসের, নির্ধারিত দরেই বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি কারওয়ান বাজার ও মগবাজার ঘুরে শুক্রবার এমন চিত্র দেখা গেছে।
কারওয়ান বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকা দরে, যা কয়েক দিন আগেও ছিল ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা। আর মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। দাম কমায় ইলিশের বাজারে গিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। তাদের মনে বইছে খুশির হাওয়া।
বাজারে অধিকাংশ সবজির দামই স্থিতিশীল আছে। তবে বেশ বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। দেশের বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে কাঁচা মরিচের দামে প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
করলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৪০ টাকা। এ ছাড়া পেঁপে ২০ টাকা, ঢ্যাঁঢ়শ ২৫ টাকা, কাঁকরোল ৩০ টাকা, বেগুন ৩৫ টাকা এবং পটোল ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লেবু প্রতি ডজন ৩০ টাকা এবং কাঁচাকলা প্রতি হালি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, ‘কাঁচা মরিচের ঝাল বেড়েছে।’ আর বিক্রেতারা বলছেন, জোগান স্বাভাবিক না থাকায় দাম বেড়েছে।
যে কাঁচামরিচ চার দিন আগেও ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে, তা এখন ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও দাম উঠেছে ২০০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা সোলায়মান নিউজবাংলাকে বলেন, বাজারে কাঁচামরিচ নাই, দাম তো বাড়বোই। হঠাৎ কেন দাম বাড়ল- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বৃষ্টির লাইগা কাঁচা মরিচের ক্ষেত নষ্ট হইছে আর বন্যা তো আছেই।
একই ধরনের যুক্তি দিলেন মগবাজারের সবজি বিক্রেতা তাহের মিয়া তিনি বলেন, সিলেটে বন্যার কারণে এই অবস্থা হইছে ভাই, লগে তো বৃষ্টি আছেই।
বাজার করতে আসা আসিফ মাহমুদ বলেন, সবজি দাম ঠিক আছে কিন্তু কাঁচা মরিচের দাম অস্বাভাবিক, যা সাধ্যের বাইরে।
একই সুরে কথা বললেন মাসুম আলী। তিনি বলেন, ‘সবজি ঠিক আছে তবে কাঁচা মরিচের ঝাল একটু বেশিই।
জোগান স্বাভাবিক থাকায় প্রায় সব মাছের দামই স্থিতিশীল। তবে সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ার কমেছে রুপালি এ মাছের দাম। সাগরে মাছ ধরার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা গত শনিবার মধ্যরাতে উঠে গেছে। ওই দিনই সাগরে ছুটে গেছেন হাজার হাজার জেলে।
বাগদা চিংড়ি ৫৫০ থেকে ৬০০ ও গলদা ৬৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে আইড়, চিতল, বেলে মাছ আকারভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। আর প্রতি কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, তবে জ্যান্ত রুই কিনতে আরও ৫০ টাকা বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে।
সবজি ও মাছের মতো স্থিতিশীল আছে মাংসের বাজারও। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ৩০০ টাকায়। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা কেজিতে।
এ ছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ টাকা কেজিতে।
কারওয়ান বাজারের কিবরিয়া স্টোরের স্বত্বাধিকারী তালেব মিয়া বলেন, কারওয়ান বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা দরে। ২ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৩৭০ টাকা।
আর ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯১০ টাকা। আর ৫ লিটারের রাইস বেন অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।
অন্যদিকে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে ১৬৬ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি লিটার খোলা পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫২ টাকায়।
বাজারে ভোক্তা অধিকারের অভিযান
শুক্রবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় তারা দুই দোকানিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এসময় এক দোকানিকে মূল্য তালিকা না থাকায় ১০ হাজার আর ওজনে কারচুপি করায় এক মাছ বিক্রেতাকে ১০ হাজার টাকা।
অভিযানের নেতৃত্বদানকারী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক মাগফুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, বাজারের অবস্থা স্থিতিশীল, পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল।
তিনি আরও বলেন, অভিযানে দুই দোকানিকে দুই দোকানিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মূল্য তালিকা না থাকায় একজনকে ১০ হাজার আর ওজনে কারচুপি করায় এক মাছ বিক্রেতাকে ১০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন:দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা; তা বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে সীমিত কর্মবিরতি পালনের পর আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন চা শ্রমিকরা। সে দাবি পূরণ না হওয়ায় সারা দেশের চা বাগানগুলোতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন।
সংগঠনের ডাকে সাড়া দিয়ে মজুরি বাড়ানোর দাবিতে শনিবার সকাল থেকে একযোগে ধর্মঘট পালন করছেন দেশের ২৩১টি চা বাগানের চা শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গত ৩ আগস্ট আমরা মালিকদের কাছে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির জন্য ১ সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম; কিন্তু তারা তা কর্ণপাত করেননি। এর প্রতিবাদে আমরা গত চার দিন ধরে সারা দেশের সব চা বাগানে দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করে যাচ্ছি। তারপরও মালিকপক্ষ আমাদের দাবি মেনে না নেয়ায় আমরা ধর্মঘটের মত কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি।
‘প্রতিনিয়ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে চলেছে। অথচ বাংলাদেশের চা শ্রমিকরা ১২০ টাকা মজুরিতে কাজ করছেন। দুই বছর পর পর শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদ নেতৃবৃন্দের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়। গত চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। এরপর ১৯ মাস কেটে গেলেও মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে নতুন চুক্তি করেননি।’
নিপেন পাল জানান, নতুন চুক্তি না হওয়ার কারণে শ্রমিকদের বেতনও বাড়ছে না। জুনে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ চা সংসদ নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন শ্রমিক নেতারা। পরে চা সংসদ নেতারা মজুরি ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা করার প্রস্তাব দেন। তবে তা সন্তুষজনক না হওয়ায় তা প্রত্যাখান করেন শ্রমিক নেতারা।
এরপর এক মাস পেরোলেও মালিকপক্ষ আর কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এতে গত মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত টানা চার দিন প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ধর্মঘট পালন করেন শ্রমিকরা। এতেও মালিক পক্ষের সাড়া না পেয়ে শনিবার সকাল থেকে পূর্ণদিবস কর্মসূচি পালন শুরু করেন চা শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের স্বার্থে দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে সংগঠনের এই নেতা বলেন, ‘আমরা কোনো অশান্তি চাই না। আমরা আমাদের অধিকার চাই। সব কিছুর দাম বাড়ার কারণে আমাদের শ্রমিকরা আর ঠিকে থাকতে পারছেন না। তাই যত দ্রুত সম্ভব শ্রমিকদের মজুরি ৩০০ টাকা করে তাদেরকে কাজে ফিরিয়ে নিতে মালিকপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
সংগঠনটির অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে দেশের ২৩১টি চা বাগানের প্রায় দেড় লাখ চা শ্রমিক ধর্মঘট পালন করছেন।’
বিভিন্ন জেলার ধর্মঘটের চিত্র
হবিগঞ্জ
জেলার ২৪টি বাগানে শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন শুরু করেন শ্রমিকরা। পরে দুপুর ১২টার দিকে চুনারুঘাটে ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়কের চান্দপুর এলাকায় অবরোধে বসেন তারা। সড়কে অন্তত পাঁচ হাজার শ্রমিক অবস্থান নিয়েছেন। বিভিন্ন বাগান থেকে আসছেন আরও শ্রমিক। দুপুর পৌনে ২টার দিকেও অবরোধ চলছিল।
চান্দপুর বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সাধন সাওতাল বলেন, ‘বাংলাদেশে চা শ্রমিকদের একটা বিশাল অংশ রয়েছে। এ দেশের ভোটার হয়েও তারা অবহেলিত। মৌলিক অধিকারও তাদের ভাগ্যে জুটে না। এ ছাড়া রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ১২০ টাকা মজুরি পায়। এভাবে আর আমরা চলতে পারছি না। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।’
মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের ভাড়াউড়া চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, চা শ্রমিকরা বাগানের নাট মন্দিরের সামনে জড়ো হয়েছেন। এ সময় কাজ বন্ধ রেখে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি পংকজ কন্দ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ৩০০ টাকা মজুরির দাবিটি খুবই যৌক্তিক। বর্তমান বাজারমূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে যাতে চা বাগানের মালিকপক্ষ আমাদের মজুরি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করে।’
সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, ‘চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা আজ থেকে সর্বাত্নক ধর্মঘট পালন করছি। আগামী দুই দিন বাগানের সাপ্তাহিক ছুটি ও শোক দিবসের কারণে আন্দোলন স্থগিত থাকবে। আমরা আজ বৈঠকে বসে পরবর্তী করনীয় ঠিক করব।’
তবে শ্রমিকদের আন্দোলনে যাওয়া উচিত হয়নি বলে মনে করছেন চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদের সিলেট বিভাগীয় চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী।
তিনি বলেন, ‘উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায় আন্দোলনে যাওয়া শ্রমিকদের উচিত হয়নি। এটি শ্রম আইনেরও পরিপন্থী, চায়ের এই ভরা মৌসুমে কাজ বন্ধ থাকলে মালিক-শ্রমিক উভয়েরই ক্ষতি হবে। আমরা আশা করব, শ্রমিকরা দ্রুত কাজে ফিরবেন।’
সিলেট
সিলেট ভ্যালির আন্দোলনরত শ্রমিকরা সকাল থেকে লাক্কাতুরা এলাকায় বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় আধাঘণ্টা পর পুলিশ গিয়ে সড়ক শ্রমিকদের সরিয়ে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক করে।
এরপর চা শ্রমিকরা মিছিল সিলেট নগরে চলে আসেন। নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় এসে অবস্থান নেন তারা।
নগরের বিমানবন্দর সড়কের লাক্তাতুরা চা বাগানের সামনে বিক্ষোভকালে আলাপ হয় রবি গোয়ালার সঙ্গে। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এখন এক কেজি চালের দাম ৭০, পেট্রলের লিটার ১৩০ টাকা। অথচ আমরা সারা দিন খেটে মাত্র ১২০ টাকা পাই। এই বাজারে ১২০ টাকা দিয়ে সংসার চলবে কী করে?’
রবির মতো একই প্রশ্ন মালনীছড়া চা বাগানের শ্রমিক রতন বাউরিরও। তিনি বলেন, ‘১২০ টাকা দিয়ে এখন চাল-ডালও কেনা যায় না। মাছ-মাংস তো আমরা খেতেই পারি না। আজকাল সবজিও কিনতে পারছি না। আর সংসারের বাকি খরচ তো রইলোই।’
আক্ষেপ করে বলেন, ‘দেশে সবকিছুর দাম বাড়ছে। কিন্তু আমাদের মজুরি বাড়ছে না। আমরা কি মানুষ না?’
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আমরা গত ৮ আগস্ট থেকে আন্দোলন করে আসছি। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের দাবি দাওয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার চা বাগানগুলোর মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের নিয়ে সমঝোতা বৈঠক করে বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর। কিন্তু মালিকপক্ষের কেউ বৈঠকে আসেননি। এতে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। ফলে শনিবার সকাল ৬টা থেকে দেশের সবগুলো চা বাগানের শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে এই চা শ্রমিক নেতা বলেন, ‘১২০ টাকা মজুরি দিয়ে কী হয়? মালিকপক্ষ বলে, তারা শ্রমিকদের রেশন দেয়। কী রেশন দেয়? শুধু আটা দেয়। আমাদের এগ্রিমেন্টে বলা আছে যে, ছয় মাস চাল, ছয় মাস আটা দেবেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতিও রাখেন না। মাত্র ১২০ টাকা দিয়ে খাবার, চিকিৎসা, বাচ্চাদের লেখাপড়া কীভাবে সম্ভব?
৩০০ টাকা মজুরি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে বলেও জানান রাজু গোয়ালা।
এ বিষয়ে চা বাগান মালিকপক্ষের বক্তব্য জানতে বাংলাদেশীয় চা সংসদের চেয়ারম্যান শাহ আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
শ্রম দপ্তরের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কাজ বন্ধ করে শ্রমিকেরা আন্দোলনে গেলে মালিক ও শ্রমিক দুই পক্ষেরই ক্ষতি হবে। আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে একটা সমঝোতা বৈঠক করেছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ২৮ আগস্ট তাদের সঙ্গে বসতে সময় চেয়েছেন। আপাতত আন্দোলন স্থগিত রাখতে বলেছেন। কিন্তু চা-শ্রমিক ইউনিয়ন সেটা মানেনি।’
এভাবে ভরা মৌসুমে হুট করে ধর্মঘট ডাকা আইনের পরপন্থী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন:করোনা মহামারি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কড়াকড়িতে বিদেশ থেকে মদ আমদানি অনেকটাই কমে গেছে। বিকল্প হিসেবে বেড়েছে স্থানীয় মদের চাহিদা। সে সুবাদে উৎপাদন ও বিক্রিতে রেকর্ড করেছে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় মদ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোম্পানি।
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড ৮৩ বছরেরও বেশি পুরোনো প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই প্রথমবারের মতো বিভিন্ন ইউনিট থেকে প্রতিষ্ঠানটির মোট বিক্রি ৪০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
এ বছর শুধু ডিস্টিলারি ইউনিট বা মদ বিক্রি থেকেই কেরু অ্যান্ড কোম্পানির আয় হয়েছে ৩৬৭ কোটি টাকা। লাভ হয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি, যা কোম্পানিটির আয়ে এযাবৎকালের রেকর্ড। গত বছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ১০ লাখ প্রুফ লিটার বেশি মদ বিক্রি করেছে কেরু।
কোম্পানিটির দেয়া তথ্যমতে, সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে শুধু ডিস্টিলারি ইউনিট বা মদ বিক্রি হয়েছে ৩৬৭ কোটি টাকার। এটা কেরুর ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এই প্রথম ডিস্টিলারি ইউনিট থেকে ১০০ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে কেরু। গত বছর এই ইউনিট থেকে লাভ ছিল প্রায় ৯০ কোটি টাকা।
এদিকে প্রতি বছরের মতো এবারও চিনি ইউনিটে বড় ধরনের লোকসান হয়েছে কেরুতে। এর পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে চিনি ইউনিটে লোকসান সমন্বয়ের পরও কোম্পানির নিট মুনাফা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা ছিল ১৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে কেরুর মদ বিক্রি অন্য বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। আর আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদিত মদের চাহিদা বেড়েছে ৩০ শতাংশ। সে হিসাবে প্রায় ১০ লাখ প্রুফ লিটার বেশি মদ বিক্রি করেছে কেরু।
প্রতি মাসে গড়ে ১২ থেকে ১৩ হাজার কেস কেরুর উৎপাদিত মদ বিক্রি হয়ে থাকে। উৎপাদনও সে অনুযায়ী করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি ১৭৫ মিলিলিটার, ৩৭৫ মিলিলিটার ও ৭৫০ মিলিলিটারের বোতলে মদ বাজারজাত করে থাকে।
একটি কেসে ৭৫০ মিলিলিটারের ১২টি, ৩৭৫ মিলিলিটারের ২৪টি ও ১৭৫ মিলিলিটারের ৪৮টি মদের বোতল থাকে। কেরুতে রয়েছে মদের ৯টি ব্র্যান্ড। এগুলো হচ্ছে- ইয়েলো লেবেল মল্টেড হুইস্কি, গোল্ড রিবন জিন, ফাইন ব্র্যান্ডি, চেরি ব্র্যান্ডি, ইম্পেরিয়াল হুইস্কি, অরেঞ্জ কুরাকাও, জারিনা ভদকা, রোসা রাম ও ওল্ড রাম।
কেরু সূত্র জানায়, দেশে বিদেশি মদের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করায় কেরুর মদের চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ। গত বছর শুল্ক ফাঁকি রোধে মদ আমদানিতে নজরদারি বাড়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে বিদেশি মদের সংকট দেখা দেয় দেশের অনুমোদিত বারগুলোতে। তারপর থেকে ক্রমেই বৃদ্ধি পায় দেশে উৎপাদিত মদের চাহিদা।
চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন বাড়ায় কেরু। বিক্রিও বেড়ে যায়। একই সঙ্গে বাড়তে থাকে কেরুর মুনাফা।
কেরুতে বর্তমানে ৯টি ভিন্ন ব্র্যান্ডের আওতায় আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য ১০ লাখ ৮০ হাজার প্রুফ লিটার মদ, ২৬ লাখ লিটার দেশি স্পিরিট ও ৮ লাখ লিটার ডিনেচার্ড স্পিরিট উৎপাদন করা হয়। মদের পাশাপাশি ভিনেগার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সার, চিনি এবং গুড় উৎপাদন করে থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত এ কোম্পানি।
কেরুর ডিস্টিলারি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ফিদাহ হাসান বাদশা বলেন, ‘বর্তমানে কেরুতে চিনি, ডিস্টিলারি, ফার্মাসিউটিক্যালস, বাণিজ্যিক খামার, আকন্দবাড়িয়া খামার (পরীক্ষামূলক) ও জৈব সার- এই ছয়টি ইউনিট রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ডিস্টিলারি ও জৈব সার ইউনিট লাভজনক।
‘আখের রসের গুড় থেকে অ্যালকোহল ও বিভিন্ন ধরনের স্পিরিট তৈরি করে থাকে কোম্পানিটি, যা চিনি উৎপাদনের উপজাত। চিনি উৎপাদনের জন্য আখের রস আহরণের পর তিনটি উপজাত পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে গুড়, ব্যাগাস ও প্রেস মাড। মদ বা অ্যালকোহল উৎপাদনের প্রধান উপাদান হলো গুড়। গুড়ের সঙ্গে ইস্ট প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি করা হয় অ্যালকোহল।’
দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন জানান, ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নের লক্ষ্যে ১০২ কোটি ২১ লাখ টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে সরকার। প্রকল্পটি শেষ হলে উৎপাদন প্রক্রিয়া পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় করা হবে। উৎপাদন সক্ষমতাও বেড়ে দ্বিগুণ হবে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় তিনটি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে কেরুর। এ ছাড়া পাবনার রূপপুর, কক্সবাজার ও পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ১টি করে বিক্রয় কেন্দ্র এবং রাজশাহী ও রামুতে ১টি করে ওয়্যারহাউস নির্মাণের মাধ্যমে বাজার সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বর্তমানে সারা দেশে কেরুর ১৩টি ওয়্যারহাউস ও ৩টি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ইতোমধ্যে দুটি নতুন বিক্রয়কেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে। বিক্রয়কেন্দ্রগুলো পরিচালনার জন্য পর্যটন করপোরেশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরেরও কথা রয়েছে।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিদেশি মদের সরবরাহ কমে আসার কারণে দেশীয় ব্র্যান্ড কেরু অ্যান্ড কোম্পানির মদের চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সারা দেশে ১৩টি ওয়্যারহাউস ও তিনটি বিক্রয়কেন্দ্র থেকে ইতোমধ্যে আমরা বাড়তি চাহিদা পেয়েছি। এর মধ্যে ঢাকা ও শ্রীমঙ্গল ওয়্যারহাউসের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
‘গত বছরের তুলনায় এবার কেরুর মদ বিক্রি ৩০ শতাংশ বেড়েছে। বাড়তি চাহিদা পূরণে কোম্পানির বিদ্যমান ক্যাপাসিটির ব্যবহার বেড়েছে। এখনও একটি বড় অংশ অব্যবহৃত রয়েছে। এরপরও চাহিদা বাড়লে তা পূরণে মদ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।’
এদিকে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর দর্শনা চিনিকলে আখ মাড়াই কার্যক্রম উদ্বোধনকালে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নে দ্বিতীয় একটি ইউনিট নির্মাণের কথা জানান শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। কারণ এখানে উৎপাদিত মদের পাশাপাশি ভিনেগার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জৈব দ্রাবকের মতো অন্যান্য পণ্যেরও চাহিদা রয়েছে।
দেশে অ্যালকোহলের চাহিদা মেটাতে বিয়ার তৈরির লক্ষ্যে দ্বিতীয় ইউনিটটি স্থাপন করা হবে বলে কেরুর একটি সূত্রে জানা গেছে। বিদেশি বেশকিছু প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে এ বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে।
আরও পড়ুন:হবিগঞ্জে ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে। শুক্রবার খুচরা বাজারগুলোতে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় করতে দেখা গেছে। সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়।
দুয়েকদিন আগেও এখানকার বাজারে এ দুই প্রকারের মুরগি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা এবং ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হতো।
মুরগির দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিদ্যুৎ সংকটের কারণে খামারিরা ব্রয়লার মুরগি পালন কমিয়ে দিচ্ছেন। বাজারে মুরগি কম থাকায় দাম বেড়েছে।
হবিগঞ্জ শহরের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা দোকানগুলোতে মুরগি কম। সেখানে উচ্চ দামে মুরগি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। আর পাইকারিতে ব্রয়লার প্রতি কেজি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা ও সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩৫ থেকে ২৪০ টাকায়।
শায়েস্তাগঞ্জের ব্যবসায়ি শফিক আহমেদ বলেন, ‘সকালে ২০০ টাকা করে বিক্রি করছি। এখন কেউ কেউ ২১০ করে বিক্রি করছে। আগামীকাল আরও বাড়বে। মুরগির সরবরাহ নাই। তাই দুইদিন পর থেকে হয়ত বাজারে মুরগি পাওয়া নাও যেতে পারে।’
শহরের খোয়াই মুখ এলাকায় মুরগি কিনতে এসে সবুজ মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গরু, খাসির মাংস তো অনেক আগেই খাওয়া ছেড়ে দিছি। ভরসা ছিল পোল্ট্রি মুরগির ওপর। এখন এটার কেজিও ১৯০/২০০ টাকা হয়ে গেছে। আমরা সাধারণ মানুষরা কীভাবে কিনব বলেন।’
মুরগি কিনতে এসে খালি হাতেই ফিরে গেছেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং কর্মকর্তা রকিবুল হাসান। ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, ‘এক টাকা বেতন বাড়ে না, কিন্তু সব জিনিসের দাম প্রায় দ্বিগুণ বাড়ছে। এ অবস্থায় আমরা কীভাবে বাঁচব, তার জবাব কী সরকারের কাছে আছে?
‘প্রায় এক মাস পর মুরগি কিনতে আসছিলাম, এসে দাম শুনেই আমি ফিরে যাচ্ছি। এভাবে আর বাঁচা যায় না।’
এই বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন বলেন, ‘বাজারে মুরগি নাই। আমি কয়েক কেজি মুরগি আনছি, দাও বেশি দামে। এখন বেশি দামে কিনলে তো বেশি দামে বিক্রিও করতে হবে। আমাদের তো কিছু করার নেই। আমি প্রতি কেজি মুরগি থেকে মাত্র ১০/১৫ টাকা লাভ করছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, ‘বর্তমান বাজারে মুরগির খাবারসহ বিভিন্ন জিনিসের দাম বাড়ছে। এ ছাড়া ঠিকমতো বিদ্যুৎ না থাকায় গরমের কারণে খামারে মুরগি মরে যায়। তাই অনেক খামারি এখন আর মুরগি পালন করছেন না। তাই এ অবস্থার তৈরি হয়েছে।’
আরও পড়ুন:গত শুক্রবার রাতে দেশে চার ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ৩৪ থেকে ৪৬ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। তার দুই-এক দিন পর থেকেই তার প্রভাব পড়ে রাজধানীর সবজিসহ অন্য কাঁচাবাজারে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার এক সপ্তাহ পর রাজধানীর প্রধান কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা গেছে কিছুটা ভিন্ন দৃশ্য। এমনকি ব্যবসায়ীদের বক্তব্যও ছিল বিপরীতমুখী।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় পাইকারিতে দাম বেড়েছে, কিন্তু যেভাবে খুচরা বাজারে দাম বাড়ানো হয়েছে সে আকারে নয়।
তাদের দাবি, তেলের নতুন দাম কার্যকরের পর ট্রাক ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় সবজির কেজিতে এক থেকে দেড় টাকা বেশি পড়ছে দাম। তাই খুচরাতেও আহামরি দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।
অন্যদিকে খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারিতে তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলেই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি বাজারের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা, এমনকি কিছু সবজিতে এর চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
এমনকি কারওয়ান বাজারেই পাইকারি ও খুচরা দোকানে কিছু সবজি ও কাঁচা পণ্যের দামের ফারাক দেড় থেকে দ্বিগুণ।
কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি চায়না আদা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। সেটি খুচরা বাজারে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা।
মিয়ানমারের আদা পাইকারিতে ৬০-৭০ টাকা হলেও খুচরায় বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেশিতে ১০০-১১০ টাকায়।
আর রসুন খুচরায় ১২০ টাকা কেজি। যেখানে পাইকারি বাজারে সেটি ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে।
পাইকারি বিক্রেতা জসিম উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তেলের দাম বৃদ্ধির পরে পরিবহন খরচ এবং মালের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু আমরা সেটা বাড়াইনি। আগের চেয়ে কেজিতে এক থেকে দেড় টাকা বেড়েছে, কিন্তু আমরা মাঝখানে কোনো দাম বাড়াইনি।’
একই কথা বলেন আরেক পাইকারি বিক্রেতা সাগর আহমেদ। তারও দাবি, পাইকারিতে তারা কোনো দাম বাড়াননি, যা বেড়েছে সেটা ট্রাক ভাড়া বেড়ে যাওয়ার কারণে।
তবে খুচরা বিক্রেতা আরিফুল ইসলামের দাবি, পাইকারিতে বেড়েছে বলেই খুচরায় বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘পাইকারিতে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। পাইকাররা অনেক পণ্য মজুত করে রাখে, দেশে কিছু ঘটলেই তারা দাম বাড়িয়ে দেয়।’
পাইকারি বিক্রেতা রাজন মিয়া জানান, শুক্রবার পাইকারিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪২ টাকায়। খুচরায় সেটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। এক সপ্তাহ আগেও খুচরায় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪২-৪৫ টাকায়।
খুচরা বাজারে আলু মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি। পাইকারিতে এই দাম ২০ থেকে ২৩ টাকা।
পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া ১৬ টাকায় বিক্রি হলেও খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা পর্যন্ত। পাইকারিতে পেঁপের কেজি ৭ থেকে ১০ টাকা। খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।
এ ছাড়া পাইকারিতে করলা ৩০-৩৫ টাকার বিপরীতে খুচরায় ৬০-৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ২৫-৩০ টাকার বিপরীতে ৪০-৫০ টাকা, ঝিঙা ২০-২৫ টাকার বিপরীতে ৩৫-৪০ টাকা, পটল ২০ টাকার বিপরীতে ৪০-৫০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকার বিপরীতে ৫০-৬০ টাকা, বরবটি ৩৫- ৪০ টাকার বিপরীতে ৫০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ২০-২৫ টাকার বিপরীতে ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
প্রতি কেজি টম্যাটোর দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় খুচরা বাজারে কমেছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, যা পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়।
পাইকারির তুলনায় ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শসা। পাইকারি ৪০ টাকার শসা খুচরায় ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়।
দুই দিন আগেও কাঁচা মরিচের কেজি ৩০০ স্পর্শ করেছিল। তবে শুক্রবার ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় কেজিতে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। পাইকারিতে মরিচের দাম ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি।
বিক্রেতা আশরাফুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারতীয় মরিচ আমদানি হওয়ার কারণে দাম কিছুটা কমেছে।’
বাজারে দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা, সেখান থেকে বেড়ে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মুরগি বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, ‘পাইকারিতে মুরগির দাম বাড়ার কারণে খুচরাতে বেড়েছে।’
দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
মুরগির সঙ্গে বেড়েছে ডিমের দাম। এক সপ্তাহ আগে ডিমের ডজন ছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। সেটা বেড়ে প্রতি ডজন বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। আর মুদি দোকানে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকা।
আরেক বিক্রেতা তারিক বলেন, ‘মুরগির দাম বেড়েছে, তাই ডিমেরও দাম বেড়েছে।’
পাইকারি বাজারে না বাড়লেও খুচরা বাজারে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মাছের দাম। এর মধ্যে রুই মাছ বিক্রি হয়েছে ৩১০ থেকে ৪৬০ টাকা পর্যন্ত।
তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি ১৬০ থেকে ১৯০ টাকা, শিং ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা, কই ২০০ থেকে আড়াই শ টাকা এবং পাবদা ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এক কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত। তার চেয়ে কিছুটা ছোট ইলিশের কেজি ছিল ৮০০ থেকে হাজার টাকার মধ্যে।
ক্রেতা নাজমুল হক বলেন, ‘তেলের দাম বাড়ায় আমরা ধরেই নিয়েছি যে সবকিছুর দাম বাড়বে। তাই দাম বাড়লেও আমরা সেটা গ্রাহ্য করছি না। তবে দাম বেড়ে যে গলায় ঠেকেছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।’
আরও পড়ুন:পোশাক, জুতা, লাইফস্টাইল, ইলেকট্রনিক্সসহ নিত্যপণ্য সাদমার্ট, প্রিয়শপ, এয়ারব্রিঙ্গার, দ্য মল, জাদরু ডটকম, গিয়ারডিওসহ ২০টির বেশি অনলাইন সাইট থেকে কেনাকাটা করে বিকাশ পেমেন্টে ২০ শতাংশ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক পাচ্ছেন গ্রাহক।
নির্দিষ্ট অনলাইন মার্কেটপ্লেস ও ফেসবুকভিত্তিক শপ থেকে কেনাকাটা করলেও এ সুবিধা মিলবে।
৩১ আগস্ট পর্যন্ত গ্রাহক এই সুবিধা পাবেন।
গ্রাহক প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা এবং অফার চলাকালে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পেতে পারেন। বিকাশ অ্যাপ বা ইউএসএসডি কোড *২৪৭# ডায়াল করে বা পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে অফারটি পেতে পারেন গ্রাহক।
অফারের আওতাভুক্ত সব মার্চেন্টের তালিকা ও বিস্তারিত তথ্য https://www.bkash.com/online-shops - এই লিংকে পাওয়া যাবে।
ফেসবুকভিত্তিক শপ থেকে পোশাক, ইলেকট্রনিক্স, লাইফস্টাইল, খাদ্যসহ নানা পণ্য কিনে বিকাশ পেমেন্টে মিলছে ১০ শতাংশ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২০০ টাকা ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক।
২৫ আগস্ট পর্যন্ত নির্দিষ্ট ফেসবুক শপ থেকে বিকাশ পেমেন্টে কেনাকাটা করে এই ক্যাশব্যাক পাবেন গ্রাহক। একজন গ্রাহক প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা এবং অফার চলাকালে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পেতে পারেন।
অফারের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে এই লিংকে - https://www.bkash.com/facebook-shops।
বিকাশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও অফারগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত সব তথ্য পাবেন গ্রাহকরা।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে দেশের শীর্ষ ধান ও চাল উৎপাদনকারী জেলা দিনাজপুরে। পাঁচ দিনের ব্যবধানে জেলার পাইকারি বাজারে ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। বাড়তি দামেও বাজারে গুটি স্বর্ণ চালের দেখা পাচ্ছে না ক্রেতা।
বাজারে ধানের সংকটের পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে পরিবহন ব্যয় বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
এদিকে বাজারে ধানের সরবরাহ কম। ধান পাওয়া যা যাচ্ছে তাও ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি বলে মিলমালিকরা জানিয়েছেন।
দিনাজপুরে চালের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিত শহরের বাহাদুর বাজার এনএ মার্কেট। এই মার্কেটের কয়েকজন পাইকারি দোকানদার জানান, গত শুক্রবার এই বাজারে ৫০ কেজির এক বস্তা মিনিকেট ৩ হাজার ২০০, আঠাশ ২ হাজার ৬৫০, উনত্রিশ ২ হাজার ৪৫০, সুমন স্বর্ণ ২ হাজার ৩৫০, গুটি স্বর্ণ ১ হাজার ৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
পাঁচ দিনের ব্যবধানে বুধবার এই বাজারে ৫০ কেজির এক বস্তা মিনিকেট ৩ হাজার ৪৫০ টাকা, আঠাশ ২ হাজার ৯০০, উনত্রিশ ২ হাজার ৬৫০, সুমন স্বর্ণ ২ হাজার ৬২০, গুটি স্বর্ণ ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি দাম বাড়া গুটি স্বর্ণ চাল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন।
দক্ষিণ বালুয়াডাঙ্গার বাসিন্দা জরিনা বেগম বলেন, ‘চাল কিনতে বাজারে এসে জানতে পারলাম, ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। আমি তো টাকা হিসাব করে নিয়ে আসছি। এখন চাল কীভাবে কিনব। সমস্যা হবে শুধু আমার মতো গরিবের। এভাবে চালের দাম বাড়তে থাকলে আমাদের মরণ ছাড়া উপায় নাই।’
এনজিও কর্মী নাজমা বানু বলেন, ‘আমি গত জুনে ৫০ কেজির এক বস্তা চাল কিনেছিলাম ২৭০০ টাকায়। আজ চাল কিনতে আসছি। দোকানদাররা সেই চাল বস্তাপ্রতি ২০০ টাকা বেশি চাচ্ছে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে চলা খুব কঠিন হয়ে পড়তেছে। আমি একটি এনজিওতে চাকরি করি। চালের দাম বাড়লে তো আর আমার বেতন বাড়ে না। আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে।’
শহরের পাগলার মোড় এলাকার দিনমজুর রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমি দিনমজুর হিসেবে কাজ করি। দিনে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পাই, সেটা দিয়ে চাল ও শাকসবজি কিনতে শেষ হয়ে যায়। ছয়জনের পরিবারে দিনে তিন বেলা খেতে তিন কেজি চাল প্রয়োজন। চাল কিনতে প্রায় ২০০ টাকা খরচ হয়ে যায়। বাকি টাকা শাকসবজি কিনে শেষ হয়। মাসে এক দিনও ভালো তরকারি খেতে পারি না। এভাবে চালসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম বাড়লে ভবিষ্যতে মরা ছাড়া উপায় থাকবে না।’
এনএ মার্কেটের রণজিৎ চাল ঘরের স্বত্বাধিকারী রণজিৎ সাহা বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে মিলগেটে চালের দাম বেশি নেয়া হচ্ছে। কারণ হিসেবে মিল থেকে জানানো হচ্ছে, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ধান নেই। যেসব ধান পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি বেড়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে মিলের উৎপাদন কম হচ্ছে। উৎপাদন এবং মিল থেকে বাজারে চাল সরবরাহে পরিবহন খরচ বেড়েছে।’
পাইকারি চাল বিক্রেতা কৃষ্ণ চন্দ্র শীল বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এ কারণে অনেক ক্রেতার সঙ্গে ঝগড়াও লেগে যাচ্ছে। বাজারে দাম বাড়ার কারণে ক্রেতার অভাব দেখা গিয়েছে। ক্রেতা চালের দাম শুনেই চলে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ অটো, মেজর ও হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহসভাপতি ও পাটোয়ারী বিজনেস হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন বাজার পরিস্থিতি জানান নিউজবাংলাকে। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বিদ্যুতের লোডশেডিং বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ধান নেই। ধান বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। বিদ্যুতের কারণে ধান থেকে চালে রূপান্তর কম হচ্ছে। পাশাপাশি চাল পরিবহনের জন্য পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। এসব কারণে বাজারে চালের দাম বেড়েছে।’
আরও পড়ুন:জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা জনগণের সামনে তুলে ধরতে মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নির্দেশ দেয়া হয়। বৈঠকে গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন সরকারপ্রধান।
পরে সচিবালয়ে বৈঠকের বিস্তারিত সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও বিপিসির চেয়ারম্যান তো প্রেসে বিস্তারিত বলেছেনই। ওটাই জাস্ট মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে।’
বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশেও জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়ে কোনো নির্দেশ এসেছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো নিয়ে তো ওনারা বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেনই। এর মধ্যে আবার ব্যাখ্যা দেবেন। আজকে বলে দেয়া হয়েছে। কারণ এটা একটা টেকনিক্যাল বিষয়।
‘স্বল্প পরিসরে আমি ব্যাখ্যা দিলে অনেক প্রশ্ন আসবে, উত্তরও হয়তো দেয়া যাবে না। এ জন্য জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে বলে দেয়া হয়েছে। তাদের আবার ব্রিফিং করতে বলা হয়েছে।
‘এ জিনিসগুলোই আলোচনা হয়েছে। জ্বালানি মন্ত্রণালয় বা বিপিসিতে বলা হয়েছে, তারা যাতে ইমিডিয়েটলি জিনিসগুলো ক্লারিফাই করে। এগুলো ওনাদের ব্রিফিংয়ে সব ক্লিয়ার করবেন। আজকে মূলত তারা পুরো ক্যাবিনেটকে ব্রিফিং করেছেন। ক্যাবিনেট কোনো অপিনিয়ন (মতামত) দেয়নি।’
বৈশ্বিক পরিস্থিতির কথা জানিয়ে গত ৫ আগস্ট দেশে জ্বালানি তেলের দাম আরেক দফা বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী এক লিটার ডিজেল ও কেরোসিন কিনতে হবে ১১৪ টাকায়।
অন্যদিকে অকটেনের দাম লিটারে বাড়ানো হয় ৪৬ টাকা। এখন প্রতি লিটার অকটেন কিনতে ১৩৫ টাকা গুনতে হবে। এর বাইরে লিটারপ্রতি ৪৪ টাকা বাড়ানো হয় পেট্রলের দাম। এখন থেকে জ্বালানিটির প্রতি লিটার ১৩০ টাকা।
শতকরা হিসাবে ডিজেলের দাম বাড়ানো হয় ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ। আর অকটেন ও পেট্রলের দাম বৃদ্ধি করা হয় ৫১ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য