পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেয়া বেশ কিছু পদক্ষেপে অনেকটা ইতিবাচক অবস্থায় ফিরেছিল লেনদেন। শেষ দুই কর্মদিবসে লেনেদেন ও সূচকের উত্থানে সেই আভাস পাওয়া যাচ্ছিল।
কিন্তু আগের দুই কর্মদিবসে যতটুকু বেড়েছিল, তার চেয়ে আরও ১৫ পয়েন্ট বেশি সূচক পড়ল বুধবারেই। ফলে টানা ৯ কর্মদিবসের পর পুঁজিবাজারে যে উত্থানের ইঙ্গিত দিয়েছিল সেটি দুই দিনের বেশি স্থায়ী হলো না।
৭৪ পয়েন্ট হ্রাসের মধ্য দিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স অবস্থান করছে ৬ হাজার ৩৮ পয়েন্টে। গত বছরের ২১ জুনের পর এটি সূচকের সর্বনিম্ন অবস্থান। ওই দিন ডিএসইএক্স ছিল ৬ হাজার ৪২ পয়েন্টে।
দুই দিন পর ফিরে এলো ব্যাপক দরপতনের স্মৃতিও। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববারে ৩১৮টি কোম্পানির দর পতন হয়েছিল, ক্রেতা ছিল না বিপুলসংখ্যক শেয়ারের।
বুধবার দরপতনের তালিকায় যোগ হয়েছে আরও ২০টি কোম্পানি। এদিন ৩৩৮টি কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। যার বেশির ভাগেরই দিনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ ও এর আশপাশে।
বিপরীতে বেড়েছে মাত্র ১৭টি কোম্পানির শেয়ারদর। আর আগের দামেই লেনদেন হয়েছে ২৫টি কোম্পানির শেয়ার।
লেনদেনের এই প্রভাবে প্রধান খাতগুলোর কয়েকটি এবং ছোট খাতের বেশির ভাগেই শতভাগ দরপতন হয়েছে। এগুলো হলো- ওষুধ ও রসায়ন, জ্বালানি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, আইটি, জীবন বিমা, সিরামিকস, ট্যানারি, কাগজ ও মুদ্রণ, সেবা ও আবাসন, ভ্রমণ ও অবকাশ এবং পাট খাত।
উল্লেখ করার মতো দর বৃদ্ধি হয়েছে বস্ত্র, বিমা এবং মিউচুয়াল ফান্ডের। বস্ত্র খাতে ১১, বিমা খাতে ৭ ও মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ১১ শতাংশের বেশি কোম্পানির দর বৃদ্ধি দেখা গেছে।
অবশ্য এর চেয়ে কিছুটা বেশি দরপতন দেখা গিয়েছিল গত সপ্তাহের সোম ও মঙ্গলবার। ওই দুই দিন সাড়ে তিন শর মতো করে কোম্পানির দর হারাতে দেখা যায়। ওই দুই কর্মদিবসে বড় ধস তো বটেই, ওই সপ্তাহের পুরোটাই পতনে দেখেছেন বিনিয়োগকারীরা।
তার আগের সপ্তাহের শেষ তিন কর্মদিবসেও ধারাবাহিক পতন হয় পুঁজিবাজারে।
পুঁজিবাজারের পতন যেন কাটছেই না ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই। ওই সময় আগুন লাগা পুঁজিবাজারে ঘি ঢালে প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট। এ ছাড়া বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় মূল্যস্ফীতি, কোভিড-পরবর্তী সময়ে দেশের আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া, ডলারের বিপরীতে টাকা মান কমে যাওয়া ইত্যাদি কারণে উঠে দাঁড়াতে পারেনি পুঁজিবাজার।
গত সপ্তাহের আগের তিন কর্মদিবস পতনের পর নতুন সপ্তাহে ভালো দিন কাটবে বলে প্রত্যাশা করেছিলেন অনেকেই। তবে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারের এলাকাভেদে ১ ঘণ্টা বা প্রয়োজন বিশেষে ২ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে পারেননি বিনিয়োগকারীরা।
দেশের অর্থনীতি আরও বেশি মন্দার দিকে ধাবিত হচ্ছে ধরে আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। যার কারণে দেখা গেছে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা। ব্যাপক বিক্রির চাপে ধস নামে পুঁজিবাজারে।
সেটি অব্যাহত থাকে চলতি সপ্তাহের রোববারেও। এদিকে অনাকাঙ্ক্ষিত বিক্রির চাপ রোধে ডিলার অ্যাকাউন্টগুলোর ওপর নজরদারির সিদ্ধান্ত রোববার থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
এই ঘোষণার পরের দুই দিন, অর্থাৎ সোম ও মঙ্গলবার যথাক্রমে ৩০ ও ২৯ পয়েন্ট করে মোট ৫৯ পয়েন্ট সূচক বাড়ে। লেনদেন বেড়ে ১৩ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়।
তবে দুই কর্মদিবস পরই সূচকের সঙ্গে কমল লেনদেনও। দিনভর হাতবদল হয়েছে ৭৭৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৮ হাজার টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৫৯ কোটি ৬১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা কম। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৮৩৮ কোটি ৫ লাখ ১৭ হাজার টাকা।
লেনদেনের বিষয়ে মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্মতা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক এখনও কাটেনি। এ ছাড়া গত দুই দিন যারা শেয়ার কিনেছিলেন তারা হয়তো কিছুটা লাভ পেয়েই শেয়ার ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ তারা আস্থা রাখতে পারেননি। এ জন্য ব্যাপক সেল প্রেসারের কারণে ট্রানজেকশন মোটামুটি হলেও ব্যাপক দর পতন হয়েছে।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পেয়েছে ফনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ দর বেড়ে প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১ টাকা ৫০ পয়সায়।
ফান্ডটি আয়ের অনুপাতে প্রতি বছরই লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। তবে ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সময়ে কোনো দিনই শেয়ারপ্রতি এক টাকা আয় করতে পারেনি কোম্পানিটি। আর গত তিন বছরে শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা ছাড়াতে পারেনি। ৮ জুন থেকে দর পড়তে থাকা শেয়ারটির দর পর পর তিন কর্মদিবস বাড়ল।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ১০ শতাংশ দর বেড়েছে এনভয় টেক্সটাইলের। ৪২ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৫ টাকা ২০ পয়সায়।
আগের বছরের তুলনায় ২০২১ সালে কোম্পানির আয় কমেছে প্রায় তিনগুণ। তবে ২০১৫ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবছরই বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়ে আসছে কোম্পানিটি।
দর বৃদ্ধির তৃতীয় স্থানে রয়েছে মাটিন স্পিনিং। ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮০ টাকা ২০ পয়সায়।
২০২১ সালে কোম্পানির আয় প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। আগের বছরের ২ টাকা ১৬ পয়সা শেয়ার প্রতি আয়ের বিপরীতে ২০২১ সালে দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৩১ পয়সায়।
এ ছাড়া দর বৃদ্ধির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড-১, স্কয়ার টেক্সটাইল, আলহাজ্ব টেক্সটাইল, কাট্টালি টেক্সটাইল, ইবিএল এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড, দুলামিয়া কটন এবং ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফাইন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান।
দর পতনের শীর্ষ ১০
দর পতনের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে লোকসানি উসমানিয়া কটন। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কোম্পানিটি প্রতি বছরই বড় অংকের লোকসান গুনছে।
দিনের সর্বোচ্চ সীমায় দর পতনের মধ্য দিয়ে প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৩ টাকা ৫০ পয়সায়। আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৭৫ টাকা।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা অলটেক্স টেক্সটাইলের দরও একই সমান কমেছে। প্রতিবছরেই লোকসান দেয়া কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০১৫ সালে ৪ শতাংশ নগদ ও ৬ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল, এরপর আর লভ্যাংশের মুখ দেখেননি বিনিয়োগকারীরা।
তৃতীয় স্থানে থাকা রিং শাইন টেক্সটাইলের দর ২ শতাংশ কমে প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা থেকে ৯ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।
এ ছাড়া ২ শতাংশ দর কমে বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৯ টাকা ২০ পয়সায়।
খুব বেশি না হলেও আয় অনুপাতে প্রতিবছরই লভ্যাংশ দিয়ে এ ক্যাটাগরিতে শেয়ার লেনদেন করছে কোম্পানি।
দর পতনের তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে মন্নু অ্যাগ্রো, কনফিডেন্স সিমেন্ট, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারি, লিবরা ইনফিউশনস ও রেনউইক যজ্ঞেশর।
সূচক কমাল যারা
সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট সূচক কমেছে ওয়ালটন হাইটেকের কারণে। এ দিন কোম্পানিটির দর কমেছে এক দশমিক ১২ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ পয়েন্ট কমিয়েছে রবি। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে এক দশমিক ৯৯ শতাংশ।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দর ১ দশমিক ০৩ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৪ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট।
এ ছাড়া বেক্সিমকো লিমিটেড, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, আইসিবি, বেক্সিমকো ফার্মা, বিকন ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ইউনাইটেড পাওয়ারের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২৯ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি শূন্য দশমিক ৬৯ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে এনভয় টেক্সটাইল। কোম্পানিটির দর ৬ দশমিক ১০ শতাংশ দর বেড়েছে।
স্কয়ার টেক্সটাইলের দর ২ দশমিক ৬২ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৭ পয়েন্ট।
মাটিন স্পিনিং সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ৩৬ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
এ ছাড়া আলহাজ্ব টেক্সটাইল, ফনিক্স ফাইন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড, কাট্টালি টেক্সটাইল, এইচআর টেক্সটাইল, রহিম টেক্সটাইল, ইবিএল-এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফাইন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২ দশমিক ০২ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য