টানা ৯ কর্মদিবস ৩১৪ পয়েন্ট পতনের পরে দুই কর্মদিবসে সূচক প্রায় ৬০ পয়েন্ট উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে। সেই সঙ্গে ১৩ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনে পুঁজিবাজারে চাপ কাটার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের পর শুরু হওয়া পতন থেকে পুঁজিবাজার আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এর মধ্যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট এবং প্রতিবেশী দেশ শ্রীরঙ্কার পরিস্থিতি আরও বেশি আতঙ্কিত করে তোলে বিনিয়োগকারীদের।
করোনাভাইরাস মহামারির পরে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমা, ডলারের বিপরীতে টাকার মান হ্রাস এবং পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ তুলে নেয়ার খবর স্থিতিশীল হতে দেয়নি পুঁজিবাজারকে।
আগের সপ্তাহের শেষ তিন কর্মদিবস পতনের পরে গত সপ্তাহের পুরোটাজুড়ে পুঁজিবাজারের পতন ডেকে আনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে অঞ্চলভিত্তিক এক ঘণ্টা এবং তাতেও কুলাতে না পারলে দুই ঘণ্টার লোডশেডিং দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন সরকারপ্রধান।
সরকারের এই সাশ্রয়ী নীতি বিনিয়োগকারীদের আরও ভাবিয়ে তোলে। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতি কি আরও খারাপ দিকে যাচ্ছে- এমন শঙ্কায় সেল প্রেসার বাড়িয়ে দেন তারা। এতে করে গত সপ্তাহের ৫ কর্মদিবসেই পতন হয় পুঁজিবাজারে।
এর মধ্যে সোমবার ও মঙ্গলবার ধস নামে, সাড়ে তিন শতাধিক কোম্পানির দর পতন দেখা দেয়। ক্রেতা সংকটে ধুঁকতে থাকে পুঁজিবাজার।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার পতন রোধ না হলেও সেই অবস্থার কিছুটা উন্নতি দেখা যায়। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে আবারও ফিরে আসে বড় ধস।
এরই মধ্যে রোববার থেকে স্টক ডিলারদের বিনিয়োগের ওপর নজরদারির সিদ্ধান্ত নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। পুঁজিবাজারে ব্যাপক সেল প্রেসার বাড়িয়ে তারা অন্য কোথাও বিনিয়োগ করছে কি-না তা খতিয়ে দেখার কথা জানায় সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
এই সিদ্ধান্তের পরের দিন সোমবার শুধু ৩০ পয়েন্ট উত্থানই নয়, তিন শ’র বেশি কোম্পানির দর পতনের ঘটনার থেকে বেরিয়ে দর বৃদ্ধি দেখা যায়। যেটি মঙ্গলবারেও অব্যাহত রইল।
এ দিন প্রায় সমান সংখ্যক কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও দরপতন হয়েছে। তবে বড় মূলধনি কোম্পানিগুলের দরবৃদ্ধি সূচকে ৩০ পয়েন্ট যোগ করেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স অবস্থান করছে ৬ হাজার ১১২ পয়েন্টে।
১৭৭টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৭২টি কোম্পানির শেয়ারদর। আর আগের দামেই লেনদেন হয়েছে ৩৩টি কোম্পানির শেয়ার।
পুঁজিবাজারের চাপ কাটার ইঙ্গিত দিচ্ছে লেনদেন বৃদ্ধির বিষয়টিও। আগের দিনের চেয়ে ১৯৮ কোটি ৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা বেড়ে লেনদেন হয়েছে ৮৩৮ কোটি ৫ লাখ ১৭ হাজার টাকা। যা গত ১৩ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আগে এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল ৫ জুলাই। ওই দিন হাতবদল হয়েছিল ৯৬০ কোটি ৭৯ লাখ ৬১ হাজার টাকা।
পুঁজিবাজারের লেনদেনের বিষয়ে মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুঁজিবাজারে চলমান আতঙ্ক পুরোপুরি কেটেছে বলা যাবে না। দীর্ঘ দিন পতনের কারণে শেয়ারগুলোর দর কমে গেছে। যার কারণে বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অনেকেই কিছুটা শেয়ার ক্রয়ে ফিরেছেন। এ জন্যই বাজার কিছুটা ভালো গেছে।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পেয়েছে সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের। দিনের সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ দর বেড়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সামান্য পরিমাণে আয় বেড়েছে কোম্পানির। ২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পরে ২০০৯ সাল থেকে বোনাস লভ্যাংশ দিতে শুরু করে কোম্পানি। আর ২০১৪ সাল থেকে নগদ ও বোনাস মিলিয়ে লভ্যাংশ পাচ্ছেন এর বিনিয়োগকারীরা।
৭ জুন থেকে শেয়ারটির দর কমছে। ওই দিন ৬৫ টাকায় লেনদেন হওয়া শেয়ারটি দুই কর্মদিবস বেড়ে মঙ্গলবার প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫১ টাকা ৭০ পয়সায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর বেড়েছে কাট্টালি টেক্সটাইলের। গত দুই বছর ধরে কোম্পানির আয় ব্যাপক হারে কমেছে।
২০১৯ সাল থেকে নিয়মিত লভ্যাংশ দিলেও শেয়ারটির দর ওঠনামা করতে দেখা যায়। গত ফেব্রুয়ারিতেই ৪০ টাকার ওপরে লেনদেন হওয়া শেয়ারটির দর ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ কমে সর্বশেষ হাতবদল হয়েছে ২৪ টাকা ৫০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ দর বেড়েছে ফনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। ফান্ডটি আয়ের অনুপাতে প্রতি বছরই লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। তবে ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সময়ে কোনো দিনই শেয়ারপ্রতি এক টাকা আয় করতে পারেনি কোম্পানি।
৮ জুন থেকে দর পড়তে থাকা শেয়ারটির দর পর পর দুই কর্মদিবস বাড়ল। মঙ্গলবার শেয়ারটির ক্লোজিং প্রাইস দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ৮০ পয়সা।
এ ছাড়া দর বৃদ্ধির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এসইএমল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, ভ্যানগার্ড রূপালী ব্যাংক ব্যালান্স ফান্ড, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স এবং ফরচুন সুজ।
দর পতনের শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ২ শতাংশ দর কমেছে লোকসানি শ্যামপুর সুগার মিলসের।
প্রতি বছরই শেয়ারপ্রতি ১০০ টাকার বেশি লোকসান গুনতে হয় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠানটিকে। ফলে বিনিয়োগকারীদের কোনো দিনই লভ্যাংশ দিতে পারেনি।
কোম্পানির শেয়ার ২ টাকা দর কমে সবশেষ লেনদেন হয়েছে ৯৮ টাকায়। আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইস ছিল ১০০ টাকা।
এর পরেই দর কমেছে রেনউইক যজ্ঞেশরের। ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ দর কমে সর্বশেষ ৯৮০ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে প্রতিটি শেয়ার। আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইস ছিল এক হাজার ৭০ পয়সা।
রাষ্ট্রায়ত্ত্ব এই কোম্পানিও বড় অঙ্কের লোকসানে রয়েছে দুই বছর ধরে। যদিও তার আগের তিন বছর শেয়ার প্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত আয় করেছে। তবে ২০২০ ও ২০২১ সালে যথাক্রমে ৩২ টাকা ৩৫ পয়সা এবং ২৩ টাকা ৩২ পয়সা লোকসান গুনতে হয়েছে।
গত দুই বছর না দিলেও ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের নিয়মিত নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর কমেছে লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের। আগের বছর শেয়ার প্রতি ৭ টাকা ৩৭ পয়সা লোকসান দেয়ার পরে ২০২১ সালেই ৪০ পয়সা মুনাফায় ফিরেছে কোম্পানিটি। সেই সঙ্গে ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বিনিয়োগকারীদের।
মঙ্গলবার ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ দর কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৫৮ টাকা ৯০ পয়সায়।
এ ছাড়া দর পতনের তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে লোকসানি সাভার রিফ্যাক্টরিজ, নর্দার্ন জুট ম্যানুফ্যাকচারিং, এমএল ডায়িং, উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ন্যাশনাল টিউবস লিমিটেড এবং লুব-রেফ বাংলাদেশ লিমিটেড।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ৩ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানিটির দর ১ দশমিক ৭২ শতাংশ দর বেড়েছে।
ইউনাইটেড পাওয়ারের দর শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ০৯ পয়েন্ট।
ওয়ালটন হাইটেক লিমিটেড সূচকে যোগ করেছে ২ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ।
এ ছাড়া ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বেক্সিমকো ফার্মা, ওরিয়ন ফার্মা, ফরচুন সুজ, আইডিএলসি, আইসিবি এবং স্কয়ার টেক্সটাইল সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২০ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট।
সূচক কমাল যারা
সবচেয়ে বেশি ৪ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট সূচক কমেছে রবির কারণে। এ দিন কোম্পানিটির দর কমেছে এক দশমিক ৬৩ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ দশমিক ০৬ পয়েন্ট কমিয়েছে গ্রামীণফোন। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ।
তিতাস গ্যাসের দর ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ১ দশমিক ৩২ পয়েন্ট।
এ আরএকে সিরামিকস, জিপিএইচ ইস্পাত, পাওয়ার গ্রিড, সিঙ্গার বাংলাদেশ, ডোরিন পাওয়ার, শাহজিবাজার পাওয়ার এবং এসিআই লিমিটেডের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ১১ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য