এক, দুই করে টানা ৯ দিন পতন তো বটেই, বেশ কয়েক দিন ধস নামার পর সোমবার আলো ঝলমলে দিন দেখলেন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। লম্বা সময় পরে দরপতনের বিপরীতে দরবৃদ্ধির সংখ্যাই বেশি দেখা গেছে। বেড়েছে লেনদেনও।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের খবর টালমাটাল পুঁজিবাজারকে স্থির হতে দেয়নি। এর মধ্যে গত সপ্তাহে ঘোষিত সরকারের সাশ্রয়ী নীতি আরও বেশি পতনের দিকে ঠেলে দেয় পুঁজিবাজারকে।
ওই সপ্তাহের পাঁচ কর্মদিবস, তার আগের সপ্তাহের তিন দিন এবং চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন মিলিয়ে ৯ কর্মদিবসে সূচক পড়ে ৩১৪ পয়েন্ট।
এর মধ্যে গত সোম ও মঙ্গলবার ব্যাপক ধস নামে। লেনদেন নেমে যায় ৩০০ কোটির ঘরে। পরের দুই কর্মদিবসে পতন রোধ না হলেও ধস থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে দেখা যায়।
বড় ধরনের সংশোধনের পর নতুন সপ্তাহে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে, এমন প্রত্যাশা করা হচ্ছিল, তবে রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে আবারও ধস নামে। ৭৪ পয়েন্ট হ্রাসের মধ্য দিয়ে সূচক ১৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে যায়।
পুঁজিবাজারে পতন অব্যাহত থাকার কারণ হিসেবে বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয় থাকার ব্যাপারটিকে দায়ী করে আসছিলেন বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টরা।
বিষয়টি আমলে নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। পুঁজিবাজারের অস্থিরতা রোধে মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্টক ডিলার অ্যাকাউন্টের বিনিয়োগের ওপর নজরদারির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এসব অ্যাকাউন্টের টাকা কোথায়, কী পরিমাণ বিনিয়োগ করা আছে, তা রোববার থেকে পর্যবেক্ষণের কথা জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোর ডিলার অ্যাকাউন্টের টাকাগুলো আমাদের খোঁজ নিতে হচ্ছে যে, এরা কোথায় বিনিয়োগ করে বসে আছে।’
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক সময় দেখি তারা মাঝে মাঝে ইনঅ্যাক্টিভ (নিষ্ক্রিয়) থাকে। এ জন্য দেখছি যে, তারা ক্যাপিটাল মার্কেট না অন্য মার্কেটে বিনিয়োগ করছে। এটাই আমরা একটু ওয়াচ করব।’
এই সিদ্ধান্তের পরে সোমবার বাজারে ক্রয় প্রবণতা দেখা গেছে, তবে লেনদেনের শুরুটাও হয়েছিল পতনের ধারাতেই। এক ঘণ্টার মধ্যেই সূচক আরও কমে ৬ হাজারের নিচে চলে যায়। বেলা ১০টা ৫০ মিনিটে সূচকের অবস্থান সর্বনিম্ন হয়। আগের দিনের চেয়ে ৬৮ পয়েন্ট কমে সূচক দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯৮৪ পয়েন্টে।
পরে দরবৃদ্ধিতে আতঙ্কের মেঘ কাটতে শুরু করে। দুপুর ১২টা ১৯ মিনিটে আগের দিনের চেয়ে ৮ পয়েন্ট বেড়ে আবার কিছুটা পড়তে দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত লেনদেন শেষ হয় ৩০ পয়েন্ট বেড়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স স্থির হয় ৬ হাজার ৮২ পয়েন্টে।
দরবৃদ্ধির বাতাস লাগে লেনদেনেও। বৃহস্পতিবার লেনদেন হয় ৬৭৬ কোটি ৯৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা। রোববার ২০৫ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা কমে লেনদেন দাঁড়ায় ৪৭০ কোটি ৯৭ লাখ ৭১ হাজার টাকায়।
এর বিপরীতে সোমবার দিনভর হাতবদল হয় ৬৩৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১৬৮ কোটি ৯৮ লাখ ২৩ হাজার টাকা বেশি।
গত সপ্তাহের সোম ও মঙ্গলবারের মতোই চলতি সপ্তাহের প্রথম দিনে তিন শর বেশি কোম্পানির দরপতন হয়েছিল। এর বেশিরভাগেরই দরপতন হয় দিনের সর্বোচ্চ সীমায়। ক্রেতা ছিল না বিপুলসংখ্যক শেয়ারের।
এ চিত্র বদলে দীর্ঘদিন পর সোমবার দরপতনের তুলনায় বেশি হয়েছে দরবৃদ্ধি পাওয়া শেয়ারের সংখ্যা।
১৩১টি কোম্পানির শেয়ারের দরপতনের বিপরীতে বেড়েছে ১৯৬টির দাম। এ ছাড়া আগের দরেই লেনদেন হয় ৫৩টি কোম্পানির শেয়ার।
আগের দিন ঢালাও দরপতনের কারণে কোনো খাতেই দরবৃদ্ধি দেখা যায়নি। শতভাগ দরপতন হয়েছিল বেশ কয়েকটি খাতে, যেটি আজ ঘটতে দেখা যায়নি।
দরবৃদ্ধি দেখা গেছে প্রধান খাতগুলোর কয়েকটিতে। এর মধ্যে বস্ত্র খাতে ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, বিবিধে ৫০ শতাংশ, প্রকৌশলে ৬৯ দশমিক ০৫ শতাংশ, ওষুধ ও রসায়নে ৭০ দশমিক ৯৭ শতাংশ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে।
লেনদেনের বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুরু থেকেই বলছি, আতঙ্কের কারণে বাজার পড়ছে। বড় বিনিয়োগকারীরাও নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছিলেন।
‘কয়েক দিন পড়ার কারণে বাজার একটা জায়গায় দাঁড়িয়েছে। এখন বড় বিনিয়োগকারীরা অ্যাক্টিভিটি শুরু করবেন। আজ সেটার কিছুটা হয়েছে, যার জন্য বাজার কিছুটা ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে।’
দর বৃদ্ধিতে শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পেয়েছে জাহিন স্পিনিংয়ের। ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ দর বেড়ে ১২ টাকা ২০ পয়সা থেকে প্রতি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩ টাকা ৪০ পয়সায়।
২০২০ সাল থেকে লোকসানে রয়েছে কোম্পানিটি। যদিও ২০২১ সালে আগের বছরের তুলনায় লোকসানের পরিমাণ কমেছে। তবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকে বিনিয়োগকারীদের কোনো দিনই নগদ লভ্যাংশ দেয়নি জাহিন স্পিনিং।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর বেড়েছে মাটিন স্পিনিংয়ের। ১৯ জুলাই থেকে ধারাবাহিকভাবে দর বাড়ছে কোম্পানির শেয়ারের। ওই দিন ৬৮ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হলেও সোমবার ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়ে ৭৯ টাকা ৩০ পয়সায় শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে।
দর বৃদ্ধির তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে মন্নু ফেব্রিক্স। লোকসান কাটিয়ে উঠতে শুরু করলেও বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেয়ার ইতিহাস ভালো নয় কোম্পানিটির। তারপরও এ দিন কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ হয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৪ টাকা ৯০ পয়সায়।
এ ছাড়া দর বৃদ্ধির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে কেডিএস অ্যাক্সেসরিজ, সাফকো স্পিনিং, দুলামিয়া কটন, মেট্রো স্পিনিং, আর্গন ডেনিমস এবং অ্যাপোলো ইস্পাত।
দর পতনের শীর্ষ ১০
সোমবার পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বেশি ২ শতাংশ দর কমেছে স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকসের। মুনাফায় থেকে বিনিয়োগকারীদের ভালো লভ্যাংশ দিলেও কোম্পানির শেয়ারের দর কমছে গত ৭ জুন থেকে।
ওই দিন ৫৮ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল প্রতিটি শেয়ার। এরপর দর ওঠানামার মধ্য দিয়ে শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৪৯ টাকায়। আগের দুই কর্মদিবস অবশ্য দর বেড়েছিল কোম্পানিটির।
একই সমান দর কমেছে পরের অবস্থানে থাকা প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। ২০১৫ সালে ৫ শতাংশ ছাড়া বিনিয়োগকারীদের কোনো বছর নগদ লভ্যাংশ দিয়ে পারেনি কোম্পানি।
আগের কর্মদিবস দর বাড়ার পরে ২ শতাংশ বা ১ টাকা ৬০ পয়সা কমে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৮ টাকা ৪০ পয়সায়।
দর হারানোর তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে নিউ লাইন ক্লোথিংস লিমিটেড। এক দিন বাড়ার পর দুই কর্মদিবস দর কমল শেয়ারটির। সোমবার ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে শেয়ারটির দাম দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ৪০ পয়সায়।
তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স, ইমাম বাটন, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন ক্যাবলস ও শ্যামপুর সুগার মিলস।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ২৫ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বিকন ফার্মা। কোম্পানিটির দর ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ দর বেড়েছে।
ওয়ালটন হাইটেকের দর শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৮২ পয়েন্ট।
বেক্সিমকো লিমিটেড সূচকে যোগ করেছে ২ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
এ ছাড়া বার্জার পেইন্টস, বেক্সিমকো ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক, আরএকে সিরামিকস, পূবালী ব্যাংক, মাটিন স্পিনিং এবং বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২২ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট।
সূচক কমাল যারা
সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট সূচক কমেছে রবির কারণে। এ দিন কোম্পানিটির দর কমেছে এক দশমিক ৯২ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ দশমিক ০১ পয়েন্ট কমিয়েছে গ্রামীণফোন। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ।
আইসিবির দর ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট।
এ ছাড়া সামিট পাওয়ার, আইপিডিসি, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইবিএল, আল আরাফাহ ব্যাংক, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও ফরচুন সুজের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ১৪ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য