এক সপ্তাহ পরে আবারও বড় পতন দেখল দেশের পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহের সোম ও মঙ্গলবারের মতো সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে লেনদেনে এই পতন হয়েছে।
এ নিয়ে টানা ৯ কর্মদিবসে ৩১৪ পয়েন্ট হ্রাসের মধ্য দিয়ে সূচক চলতি বছরের তো বটেই, প্রায় ১৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন স্থানে নেমে গেল।
রোববার লেনদেনের শুরু থেকেই নিম্নমুখী প্রবণতা ছিল পুঁজিবাজারে। ব্যাপক দরপতনের কারণে ৭৪ পয়েন্ট হারিয়ে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স অবস্থান করছে ৬ হাজার ৫২ পয়েন্টে।
সূচকের অবস্থান এর চেয়ে নিচে ছিল গত বছরের ২৯ জুন। ওই দিন ডিএসইএক্স ৬ হাজার ৪২ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা যায়।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কার মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের সাশ্রয়ী নীতি ঘোষণা ভালোভাবে নেয়নি বিনিয়োগকারীরা। জ্বালানি সাশ্রয়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংসহ সরকারের গৃহীত অন্যান্য সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানানোর পরে সপ্তাহজুড়ে পতন দেখা দেয়।
গত সোমবার থেকে প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে এবং এতেও সামাল দিতে না পারলে দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং, সপ্তাহে এক দিন পেট্রল পাম্প বন্ধ, রাত ৮টার পর দোকান বন্ধের ঘোষণা আসে।
এরপর জেঁকে বসা আতঙ্ক থেকে বের হতে পারেনি পুঁজিবাজার। যদিও একটি ইতিবাচক খবর ছিল। তা হলো- পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা ক্রয়মূল্যে নির্ধারণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিল ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ করা হোক। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক এটি বাজারমূল্যে নির্ধারণের নীতিতে অনড় ছিল। নতুন গভর্নর দায়িত্বে আসার পরে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এই বিষয়টিও খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারেনি পুঁজিবাজারে। সোম ও মঙ্গলবার বড় ধসের পরে পতন রোধ না হলেও সেই অবস্থা থেকে বুধ ও বৃহস্পতিবার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার।
গত সোমবার ও মঙ্গলবারের মতোই তিন শতাধিক কোম্পানির শেয়ারের দর পতন হয়েছে রোববার। এর বেশির ভাগেরই দর কমেছে দিনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ ও এর আশপাশে। সেই সঙ্গে ক্রেতা ছিল না বিপুলসংখ্যক শেয়ারের।
সোমবার ও মঙ্গলবার সাড়ে ৩০০ করে কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়। এর পরের দুই কর্মদিবসে পতন রোধ না হলেও দরপতনের হার কমে আসে।
আজ ৩১৮টি কোম্পানির শেয়ারের দর কমার বিপরীতে বেড়েছে ৪২টির। আর আগের দরেই লেনদেন হয়েছে ২২টি কোম্পানির শেয়ারের।
ঢালাও দরপতনের কারণে কোনো খাতেই দর বৃদ্ধি দেখা যায়নি। প্রধান খাতগুলোর মধ্যে বস্ত্র খাতে ২৩ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ৩৬ শতাংশ কোম্পানির দর বৃদ্ধি দেখা গেছে।
এর বাইরে আর কোনো খাতে উল্লেখযোগ্য দর বৃদ্ধি ঘটেনি। বিপরীতে ট্যানারি, পেপার ও মুদ্রণ, সিরামিক, সেবা ও আবাসন এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শতভাগ দরপতন হয়েছে।
এদিকে সূচকের সঙ্গে আগের কর্মদিবসের চেয়ে লেনদেন কমেছে ২০৫ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা। দিনভর হাতবদল হয়েছে ৪৭০ কোটি ৯৭ লাখ ৭১ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৬৭৬ কোটি ৯৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা।
লেনদেনের বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ, গ্যাস সাশ্রয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত এবং ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া বিনিয়োগকারীদের উদ্বিগ্ন করেছে। বিশ্বের সব দেশেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। তবে বাংলাদেশে এর আগে এমন সিদ্ধান্ত নিতে দেখেনি মানুষ। যার কারণে আতঙ্কেই পুঁজিবাজার পড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন কমে শেয়ারের দাম একটা পর্যায়ে এসেছে। আমার মনে হয় যেসব বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিশ্চুপ ছিল তারা অ্যাক্টিভিটি শুরু করবে। বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। বিনিয়োগকারীদের প্যানিকড হয়ে সেল না করে ধৈর্য ধারণ করা উচিত।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পেয়েছে মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের। ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়ে শেয়ারের সবশেষ দর দাঁড়িয়েছে ৪৩ টাকা ৬০ পয়সা।
২০০১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীদের কোনো বছরেই লভ্যাংশ দিতে পারেনি।
তবে অজানা কারণেই দর বাড়ছে শেয়ারের। গত ২৫ মে ১৭ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হওয়ার পরে ক্রমাগত বেড়ে বর্তমান দরে অবস্থান করছে।
কোম্পানির অর্ধেক শেয়ার পরিচালকদের কাছে এবং বাকি অর্ধেক সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
এর পরেই দর বেড়েছে ফাস ফাইন্যান্সের। বৃহস্পতিবার সর্বশেষ ৫ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হওয়া শেয়ারটি ক্লোজিং দর রোববার দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা ৬০ পয়সায়। অর্থাৎ দর ৫০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়েছে।
২০০৮ সালে তালিকাভুক্ত হওয়ার পরে বিনিয়োগকারীদের কখনোই নগদ লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানি। ২০১৯ ও ২০২০ সালে শেয়ার প্রতি বড় লোকসান দিয়েছে কোম্পানি।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর বেড়েছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের। গত দুই বছর বড় লোকসানে থাকা কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। সর্বশেষ শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৫ টাকা ৬০ পয়সায়।
এ ছাড়া দর বৃদ্ধির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ফার্স্ট ফাইন্যান্স লিমিটেড, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, সাফকো স্পিনিং, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, মেট্রো স্পিনিং এবং প্রোগ্রেসিভ ইন্স্যুরেন্স।
দর পতনের শীর্ষ ১০
৫ দশমিক ১৮ শতাংশ দর কমে তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে লিবরা ইনফিউশনস লিমিটেড।
কোম্পানির পর্ষদ ২০২০ সালের জন্য বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। কোম্পানির করপোরেট ঘোষণা অনুযায়ী রোববার দরপতন বা বৃদ্ধির সীমা ছিল।
ফলে লভ্যাংশ পরবর্তী দর সংশোধনে ওই পরিমাণ দর কমেছে।
বৃহস্পতিবার ৯৫১ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হওয়া শেয়ারটির ক্লোজিং প্রাইস দাঁড়িয়েছে ৯০২ টাকা ৫০ পয়সায়।
এর পরেই সর্বোচ্চ সীমা দুই শতাংশ করে দর কমে তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স এবং বার্জার পেইন্টস।
প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স ৬০ টাকা থেকে কমে ৫৮ টাকা ৮০ পয়সা এবং বার্জার পেইন্টস এক হাজার ৭৩৫ টাকা থেকে কমে সর্বশেষ এক হাজার ৭০০ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।
এ ছাড়া ২ শতাংশ ও এর আপেপাশে দর হারিয়েছে শীর্ষ দশের সবকটি কোম্পানি। তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে সমরিটা, রিং শাইন, এবি ব্যাংক, বঙ্গজ লিমিটেড, কনফিডেন্স সিমেন্ট, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল এব ফরচুন সুজ।
সূচক কমাল যারা
সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ১৪ পয়েন্ট সূচক কমেছে রবির কারণে। এ দিন কোম্পানিটির দর কমেছে এক দশমিক ৮৯ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৩০ পয়েন্ট কমিয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
স্কয়ার ফার্মার দর শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৩ দশমিক ০৪ পয়েন্ট।
এ ছাড়া ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বার্জার পেইন্টস, আইসিবি, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, ইউনাইটেড পাওয়ার, ওয়ালটন হাইটেক ও বেক্সিমকো ফার্মার দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২৮ দশমিক ৪১ পয়েন্ট।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে গ্রামীণফোন। কোম্পানিটির দর শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ দর বেড়েছে।
ট্রাস্ট ব্যাংকের দর ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬৯ পয়েন্ট।
ডাচ্ বাংলা ব্যাংক সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ৩৪ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ।
এ ছাড়া ক্রাউন সিমেন্ট, মাটিন স্পিনিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, মেট্রো স্পিনিং, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ফারইস্ট ফাইন্যান্স এবং প্রাইম ফাইন্যান্স সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৪ দশমিক ০১ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রবিবার লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসই শরীয়াহ্ সূচক ৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১২০১ ও ২১৫৬ পয়েন্টে রয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে লেনদেন হয়েছে ১১১ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
রবিবার এ সময়ে লেনদেন হওয়া কম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২০৩টির, কমেছে ৭৪টির এবং অপরির্বতিত রয়েছে ৯৩টি কম্পানির শেয়ার।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কম্পানি হলো-খান ব্রাদার্স, শাইনপুকুর সিরামিক, সালাম স্টিল, রবি, ডোমেনেজ, আইপিডিসি, লাভেলো আইসক্রিম, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ও ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
এর আগে আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ৫ মিনিটে ডিএসইএক্স সূচক বাড়ে ৮ পয়েন্ট।
সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সূচক আগের অবস্থান থেকে আরো ১২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়। লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর অর্থাৎ সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৫১ পয়েন্টে অবস্থান করে।
অপরদিকে লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৫ হাজার ৫৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।
এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এসময়ের ২০টি কম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ৮টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২টি কম্পানি শেয়ারের দর।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
মন্তব্য