বাংলাদেশের অর্থনীতির সূচকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে এখন বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ নিয়ে। বিশেষ করে গত ১২ জুলাই এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসার পর থেকে সেই আলোচনার আগুনে ঘি পড়েছে। অনেকেই প্রশ্ন করছেন, তাহলে কি বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কা হতে চলেছে?
কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ওলট-পালট হয়ে যাওয়া এই পৃথিবীতে শুধু বাংলাদেশ নয়, সব দেশের রিজার্ভই এখন কমছে। বিশ্বে সর্বোচ্চ পরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকে চীনে। সেই চীনের রিজার্ভ গত সাত মাসে ২০০ বিলিয়ন ডলার কমে ৩ হাজার ২৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩ হাজার ৫০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। দ্বিতীয় স্থানে জাপানের রিজার্ভ ১০০ বিলিয়ন ডলার কমে ১ হাজার ৪০০ বিলিয়ন থেকে ১ হাজার ৩০০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। তৃতীয় স্থানের সুইজারল্যান্ডের রিজার্ভ ৯৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৮৪০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
আর পাশের দেশ ভারতের রিজার্ভ নেমে এসেছে ৫৭২ বিলিয়ন ডলারে। যা গত ২০ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। গত ১৫ জুলাই শেষ হওয়া সপ্তাহে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে ৫৭২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেও ভারতের রিজার্ভ ৬০০ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করছিল।
অর্থনীতির অন্যান্য সূচকগুলোর মতো রিজার্ভ নিয়ে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের আর কোনো তুলনাই চলে না। বাংলাদেশের রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারে নামার পরও পাকিস্তানের চেয়ে আড়াই গুণের বেশি। পাকিস্তানের রিজার্ভ ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।
অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সঙ্কটে থাকা শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ ২ বিলিয়ন ডলারেরও কম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের তথ্য ঘেঁটে এ সব তথ্য পাওয়া গেছে।
আর্থিক বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা, আমদানি ব্যয় মেটানো, স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন রোধ, মুদ্রানীতি জোরদারকরণ, বাজারে আস্থা ধরে রাখাসহ বাজেট বাস্তবায়ন, বৃহৎ প্রকল্পে অর্থের জোগান, বৈদেশিক দায় পরিশোধ নিশ্চিত করতে সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সম্পদের মজুত হিসেবে ফরেন এক্সচেঞ্জ বা বৈদেশিক মুদ্রা মজুত রাখে। অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, যেকোনো দেশেরই নিজস্ব মুদ্রার বাইরে বিদেশি মুদ্রায় তা রাখা উচিত। নিয়মটি সারা বিশ্ব মেনে চলে।
সাধারণত বৈদেশিক মুদ্রার মজুত হিসেবে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ মার্কিন ডলারকে বেছে নেয়। তবে দেশভেদে মার্কিন ডলার, ব্রিটিশ পাউন্ড, ইউরোপের একক মুদ্রা ইউরো, চীনা ইউয়ান ও জাপানি ইয়েনে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত রাখা হয়। অবশ্য বিদেশি মুদ্রার পাশাপাশি ব্যাংক নোট, বন্ড, আমানত, ট্রেজারি বিল ও অন্যান্য সরকারি সিকিউরিটিজের মাধ্যমেও বৈদেশিক মুদ্রা মজুত রাখা যেতে পারে।
বিদেশি মুদ্রা মজুতে গত বছরের জুলাই মাসে রাশিয়াকে পেছনে ফেলে চতুর্থ স্থানে উঠে আসে ভারত। প্রথমবারের মতো দেশটির রিজার্ভ ৬০০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করার মধ্য দিয়ে রাশিয়াকে টপকায় ভারত।
তবে, ভারতের রিজার্ভ কমার পর দুই দেশের রিজার্ভ এখন কাছাকাছি। জুলাইয়ের প্রথম দিকে রাশিয়ার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৫৮০ বিলিয়ন ডলারের মতো।
ষষ্ঠ থেকে দশম স্থানে থাকা দেশগুলোর মজুতের পরিমাণ হচ্ছে যথাক্রমে তাইওয়ান, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব ও সিঙ্গাপুর ডলার।
তাইওয়ানের রিজার্ভের পরিমাণ এখন ৫৪ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৫৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
এভাবে বিশ্ব অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থায় ছোট-বড় সব দেশের রিজার্ভই এখন কমছে।
বিদেশী মুদ্রার মজুতে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পেছনেই রয়েছে বাংলাদেশ। তবে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে ৪০তম।
গত সপ্তাহের শেষ দিন বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ৩৯ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার।
গত বছরের আগস্টে এই রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বাজারে ডলারের সংকট দেখা দেওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধারাবাহিকভাবে বাজারে ডলার বিক্রি করায় রিজার্ভ কমে ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।
মুদ্রাবাজার স্বাভাবিক রাখতে ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই রিজার্ভ থেকে এক অর্থবছরে এত ডলার বিক্রি করা হয়নি।
সেই ধারাবাহিকতায় ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের ২১ দিনে (১ থেকে ২১ জুলাই) প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে।
বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে ছয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
শুধু বাংলাদেশ নয়, ডলারের বিপরীতে রুপির পতন ঠেকাতে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও বাজারে ডলার ছাড়ছে। আর এর জেরেই রিজার্ভ এতটা কমেছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক মঞ্জুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অযথাই ভয় পাচ্ছে দেশের মানুষ। অনেকে আবার ইচ্ছে করে, আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। আমি মনে করি বর্তমানের বাংলাদেশে যে রিজার্ভ আছে তা যথেষ্ট ভালো; সন্তোষজনক। এই রিজার্ভ দিয়ে ছয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামার আগ পর্যন্ত বিচলিত হওয়ার কিছু নেই।
‘আর আমার বিশ্বাস, সেটা এই দেশে কখনই হবে না। সরকার ব্যয় সংকোচনের জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদেক্ষেপে আমদানি ব্যয় কমতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ অনেক পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। আমার বিশ্বাস, এ সব কিছুর ইতিবাচক ফল খুব শিগিগিরই পাওয়া যাবে। সংকট কেটে যাবে।
মাত্র ১২ কোটি ডলার থেকে শুরু
স্বাধীনতার পর প্রায় এক দশক বাংলাদেশের রিজার্ভের কোনো তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নেই।
প্রথম যে তথ্য পাওয়া যায়, ১৯৮১-৮২ অর্থবছরের, তখন রিজার্ভ ছিল মাত্র ১২ কোটি ১০লাখ ডলার।
পাঁচবছর পর ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছর শেষে সেই রিজার্ভ বেড়ে হয় ৭১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ১৯৯১-৯২ অর্থবছরশেষে রিজার্ভ ১০০ কোটি (১ বিলিয়ন) ডলারের ‘ঘর’ অতিক্রম করে ১ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারে উঠে।
১৯৯২-৯৩ অর্থবছর শেষেই রিজার্ভ ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে ২ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। ৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছর শেষে।
১৯৯৫-৯৬ অর্থবছর শেষে তা কমে ২ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে তা আরও কমে ১ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।
এরপর ১৯৯৭-৯৮ থেকে ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছর পর্যন্ত রিজার্ভ দেড় থেকে দুই বিলিয়ন ডলারের মধ্যে উঠানামা করে।
২০০০-০১ অর্থবছরে রিজার্ভ কমে ১ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি নেমে আসে। ওই অর্থবছর শেষে রিজার্ভ ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার থাকলেও অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে তা ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে নেমে গিয়েছিল।
এরপর অবশ্য কখনই রিজার্ভ ১ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি আসেনি। ২০০১-০২ অর্থবছর শেষে রিজার্ভ বেড়ে হয় ১ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার।
২০০৫-০৬ অর্থবছর শেষে রিজার্ভ ৫ বিলিয়ন ডলার অত্রিক্রম করে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে।
এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। বেড়েই চলেছে অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক।
২০১৪ সালের ১০ এপ্রিল রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে। পরের বছর ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ২০১৬ সালের জুনে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে ২৪ জুন সেই রিজার্ভ আরও বেড়ে ৩৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে।
৪০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছাড়ায় ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর।
এভাবে বাড়তে বাড়তেই গত বছরের আগস্টে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছিল।
আরও পড়ুন:
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে অর্থবছরের শেষ দিন আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের সব ব্যাংকের শাখাগুলোতে ব্যাংকিং লেনদেন চলবে।
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৩০ জুন সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯২২ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেন, গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বেশি রাজস্ব আদায় হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।
সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে নারী কেলেং্কারীসহ দুর্নীতি, অর্থপাচার, শেয়ার কারসাজি ও যৌন হয়রানিসহ একাধিক অভিযোগ এনেছেন ব্যাংকের এক গ্রাহক
গতকাল বুধবার (২৫ জুন) দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এসব অভিযোগ তুলে লিখিত আবেদন জমা দেন শিমুল সর্দার নামে এক গ্রাহক। একই অভিযোগে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং আর্থিক খাত বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার কাছেও চিঠি পাঠিয়েছেন।
দুদকে দেওয়া ১০ পাতার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আলমগীর কবির দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ— তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নামে-বেনামে ঋণ দিয়েছেন, চলতি ঋণের সুদ মওকুফ করেছেন এবং অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে একক সিদ্ধান্তে ঋণ অনুমোদন করেছেন। এসব কর্মকাণ্ডের ফলে বর্তমানে সাউথইস্ট ব্যাংকের হাজার কোটি টাকার আমানত ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবির ব্যাংকটির অর্থ সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনায় একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করেছিলেন। ব্যাংকের প্রতিটি বড় সিদ্ধান্ত—যেমন নতুন শাখা খোলা, ইন্টেরিয়র ডিজাইন, বুথ বসানো, সফটওয়্যার কেনা ইত্যাদিতে তার একক নিয়ন্ত্রণ ছিল। এসব কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশই ছিল তার আত্মীয়স্বজন বা ঘনিষ্ঠজনদের মালিকানাধীন।
সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির গুরুতর অভিযোগও তুলেছেন অভিযোগকারী। অভিযোগে বলা হয়, আলমগীর কবির একাধিক নারী কর্মকর্তাকে নিজের অফিসে ডেকে নিয়ে তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানি করেছেন। এসব ঘটনার কিছু প্রমাণ ইতোমধ্যে ভুক্তভোগীদের কাছে রয়েছে এবং তারা আইনগত পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন। এছাড়া তিনি নিজের পছন্দের কিছু নারীকে ব্যাংকের অধীনস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘গ্রিন স্কুল’ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড’-এ চাকরি দিয়েছেন বলেও অভিযোগে জানান।
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, শেয়ার কারসাজির অভিযোগে আলমগীর কবিরকে ইতোমধ্যে ১২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তার নেতৃত্বে সাউথইস্ট ব্যাংকের ২৩২ কোটি টাকা বে লিজিংয়ে বিনিয়োগ করা হয়, যা বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-৪-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড বর্তমানে আর্থিকভাবে এতটাই দুর্বল যে, প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংকের পাওনা ফেরত দিতে পারছে না।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বে লিজিংয়ের পুঞ্জীভূত লোকসান দাঁড়ায় ১৭২ কোটি টাকায়। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান চেয়ারম্যান সুরাইয়া বেগম—যিনি আলমগীর কবিরের স্ত্রী—তাঁর মাধ্যমে ব্যাংকটির সঙ্গে বে লিজিংয়ের লেনদেন ‘ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে লেনদেন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এতে করে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ২৭ (১-খ) ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, আলমগীর কবির ব্যাংকের ফাউন্ডেশন ও শিক্ষা বিভাগের তহবিল থেকেও অর্থ তুলে এনে বে লিজিংয়ে সরবরাহ করেছেন। ব্যাংকের মেয়াদি আমানত ও কলমানির অর্থ আটকে আছে ওই প্রতিষ্ঠানটিতে। বারবার চিঠি পাঠিয়েও কোনো অর্থ ফেরত পায়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। শুধু মূলধন নয়, প্রতিষ্ঠানটি সুদও পরিশোধ করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এর ২৯ তম বার্ষিক সাধারন সভা ২৪ জুন ২০২৫ইং তারিখে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ২০২৪ইং সালের নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়। পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জনাব মোস্তফা কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীর পরিচালক মিসেস বিউটি আক্তার, ব্যারিষ্টার হাসান রাজিব প্রধান, জনাব মনজুর মো: সাইফুল আজম এফসিএমএ, মিসেস তাহমিনা বিনতে মোস্তফা, জনাব তায়েফ বিন ইউসুফ, মিসেস তানজিমা বিনতে মোস্তফা, জনাব ওয়াশিকুর রহমান, জনাব তানভীর আহমেদ মোস্তফা , মিসেস সামিরা রহমান, মিসেস তাসনিম বিনতে মোস্তফা, জনাব মোঃ বেলায়েত হোসেন ভূইয়া, জনাব মোহাম্মদ সাইদ আহমেদ রাজা এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানা উল্লাহ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা শেখ বিল্লাল হোসেন এফসিএ, কোম্পানীর অডিটর এ.কে.এম. আমিনুল হক এফসিএ, সিনিয়র পার্টনার মেসার্স এ.হক এন্ড কোং চাটার্ড একাউন্টেন্টস এবং আবদুর রহিম মিয়া, এফসিএ, পার্টনার মেসার্স ইসলাম জাহিদ এন্ড কোং, চাটার্ড একাউন্টেন্টস, মোঃ ফিরোজুল ইসলাম সিনিয়র এক্সিঃ ভাইস প্রেসিডেন্ট (অর্থ ও হিসাব) ও কোম্পানী সচিব মো: মাসুদ রানা এবং কোম্পানীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ারহোল্ডার সভায় সংযুক্ত ছিলেন।
মেঘনা ব্যাংক পিএলসি’র ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার রাজধানীর মহাথালীতে অবস্থিত ম্যাডোনা টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের সম্মানিত চেয়ারপার্সন মিসেস উজমা চৌধুরী।
বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান জনাব তানভীর আহমেদ, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মো. আলী আক্তার রেজভী, এফসিএ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ মামুনুল হক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক জনাব রজব আলী, জনাব এম. নজরুল ইসলাম এবং জনাব হাবিবুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব কাজী আহ্সান খলিল এবং ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি সচিব জনাব সজিব কুমার সাহা, এফসিএ এবং ব্যাংকের সম্মানিত শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ।
সভায় ব্যাংক নিজেদের পরিষেবা বৃদ্ধি, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচারণা, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
সম্প্রতি সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. বরিশাল জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের নিয়ে লিড ব্যাংক হিসেবে ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এর নির্দেশনায় “স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স-২০২৫” আয়োজন করেছে।
উক্ত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ইমতিয়াজ আহমেদ মাসুম, নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), বাংলাদেশ ব্যাংক, বরিশাল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আবিদুর রহমান চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি., জনাব মোঃ আলী হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা, জনাব মোঃ হারুনুর রশিদ, জেলা শিক্ষা অফিসার, বরিশাল এবং সম্মানিত অতিথি জনাব মোঃ মাহাবুব-উল আলম, উপপরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা।
উক্ত কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে উক্ত কনফারেন্সে জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বরিশাল থেকে রাবিয়া কামাল (দশম শ্রেণী) এবং বরিশাল জেলা স্কুল, বরিশাল থেকে মোঃ হাসনাইন বিন কবির (দশম শ্রেণী) বক্তব্য রাখেন।
উক্ত কনফারেন্সে বরিশাল জেলার ৪৫ টি তফসিলী ব্যাংকের ৪৫ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে ১৮০ জন শিক্ষার্থী ও ৪৫ জন শিক্ষক এবং অতিথি সহ সর্বমোট ৩৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। কনফারেন্সে বক্তারা শৈশব থেকেই সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও দায়িত্বশীল অর্থ ব্যবস্থাপনার অভ্যাস গড়ে তোলা ও আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তির সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচিত করানোর লক্ষ্যে স্কুল ব্যাংকিং এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়াও স্কুল ব্যাংকিং এর উপর নির্মিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী, র্যালী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
১৬ জুন, ২০২৫ তারিখে ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের ৪০তম সভা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, গুলশান-১, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ। সভায় পর্ষদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর, স্বতন্ত্র পরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ, জনাব মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব মোঃ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সর্বজনাব শফিউদ্দিন আহমেদ এবং মোহাম্মদ ইকবাল কার্যপোলক্ষ্যে সভায় যোগদান করেন। সভায় ব্যাংকের ব্যবসা বাণিজ্য, আমানত ও রেমিট্যান্স সংগ্রহ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ আদায়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়।
জনতা ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান ১৫ জুন রোববার জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজ ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত ২৫ (পঁচিশ) দিন ব্যাপী ফাউন্ডেশন কোর্স ফর অফিসার্স (ব্যাচ ০৫/২০২৫) শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন করেন। উক্ত প্রশিক্ষণ কোর্সে জনতা ব্যাংকের ৫০ জন সিনিয়র অফিসার অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজের ডিজিএম-স্টাফ কলেজ ইনচার্জসহ অন্যান্য নির্বাহী ও অনুষদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য