চলতি সপ্তাহের পাঁচ দিন ও আগের সপ্তাহের তিন দিন মিলিয়ে টানা আট কর্মদিবস পতন অব্যাহত রয়েছে পুঁজিবাজারে।
জ্বালানি সাশ্রয়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংসহ সরকারের গৃহীত অন্যান্য সিদ্ধান্তের বিষয় জানানোর পর সোম ও মঙ্গলবার যে ধস নামে তা থেকে বুধবার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও পতন রোধ হয়নি। শেষ কর্মদিবসেও সেটি অব্যাহত রয়েছে।
দিনের শুরু থেকেই পতনমুখী বাজার দুপুর ১টার পর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ১২ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষ হয়েছে।
এ নিয়ে আট কর্মদিবসে সূচক পড়ল ২৪০ পয়েন্ট। এর মধ্যে চলতি সপ্তাহেই সূচক কমেছে ১৯৭ পয়েন্ট।
গতকালই সূচক চলতি বছরের তো বটে, গত এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হয়েছিল, সেটি আরও কমে আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১২৬ পয়েন্টে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কার মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের সাশ্রয়ী নীতি ঘোষণা পুঁজিবাজারে পতন আরও বাড়িয়েছে।
গত সোমবার প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে এবং এতেও সামাল দিতে না পারলে দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং, সপ্তাহে এক দিন পেট্রল পাম্প বন্ধ, রাত ৮টার পর দোকান বন্ধের ঘোষণা আসে।
সেদিন থেকেই শুরু হয় আতঙ্ক। ৮৭ পয়েন্ট পতন হয় সূচকের। মঙ্গলবার আতঙ্ক এতটাই জেঁকে বসে যে ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন আতঙ্কে আগের কর্মদিবসে লেনদেন যে পর্যায়ে নেমে গিয়েছিল, অনেকটা সেখানে নেমে আসে। কোনো রকমে ৩০০ কোটির ঘর অতিক্রম করে।
সেদিনও সূচক ৮৭ পয়েন্ট কমে গিয়ে শেষ বেলায় এসে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। তবে এ পর্যন্ত ৬৩ পয়েন্টের পতন স্বস্তি দিতে পারেনি বিনিয়োগকারীদের।
এদিকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার হিসাব বাজারমূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে করার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বছরের পর বছর ধরে এটি বিএসইসির চাওয়া ছিল। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ ক্ষেত্রে কোনো উদ্যোগ নিতে রাজি হয়নি।
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এই চিঠি পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা। কিন্তু আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা এতেও কোনো সাড়া দেয়নি।
তবে আগের দুই দিনের তলানি থেকে লেনদেনের উঠে আসাটা একটি ইতিবাচক প্রবণতা হিসেবে দেখা যায়। বুধবারের পর আজ বৃহস্পতিবারেও লেনদেন ৬০০ কোটির ঘর অতিক্রম করল।
দিনভর হাতবদল হয়েছে ৬৭৬ কোটি ৯৩ লাখ ৪১ হাজার টাকার, যা আগের দিনের চেয়ে ১১ কোটি ৩৫ লাখ ১৬ হাজার টাকা বেশি।
সোম ও মঙ্গলবার প্রায় সাড়ে ৩০০টি করে কোম্পানির শেয়ারদর হারাতে দেখা যায়। তবে বুধ ও বৃহস্পতিবার কিছু বেশিসংখ্যক শেয়ারের দর বাড়তে দেখা গেল। তবে দর বৃদ্ধির তুলনায় পতনের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।
বৃহস্পতিবার ১১৫টি শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২১৯টির দাম। আর আগের দামেই লেনদেন হয়েছে ৪৭টি কোম্পানির শেয়ার।
লেনদেনের বিষয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের চিফ অপারেটিং অফিসার মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। যার কারণে পুঁজিবাজারে যে ফান্ড ইনজেক্ট হবে তার সুযোগ নেই। বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে যাওয়ায় কোম্পানির উৎপাদন কমে যাবে।
‘মুনাফায় প্রভাব পড়বে। এসব চিন্তা করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উৎসাহিত হচ্ছে না। এখন সবাই চাইবে হাতে টাকা রাখতে। ফলে বিনিয়োগ না হওয়ায় পুঁজিবাজারে এমন পতন দেখা যাচ্ছে।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পেয়েছে এস আলমের স্টিলসের শেয়ারের। কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩ টাকা বা ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ বেড়েছে।
গত ১১ মে থেকে কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধি শুরু হয়। ওই দিন ২৪ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হওয়া শেয়ারটি ১৫ জুনে গিয়ে ঠেকে ৩৬ টাকা ৬০ পয়সায়। এরপর কিছুটা ওঠানামার মধ্যে দিয়ে আজ সর্বশেষ দর দাঁড়িয়েছে ৩৩ টাকা ৩০ পয়সায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ দর বেড়েছে প্রাইম টেক্সটাইল মিলসের। ৪১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে সর্বশেষ ৪২ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে প্রতিটি শেয়ার।
২০২০ সালে শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ৬২ পয়সা লোকসান দেয়া কোম্পানিটি পরের বছর মুনাফায় ফিরেছে। ৬২ পয়সা শেয়ার প্রতি আয়ের বিপরীতে লভ্যাংশ দিয়েছে ২০ পয়সা। আগের বছর লোকসান হলেও ১০ পয়সা করে লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানি।
দর বৃদ্ধির তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিআইএফসি। কোম্পানির শেয়ারদরে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা থামছে না। আজ শেয়ারটির দর আজ বেড়েছে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ।
ধারাবাহিক লোকসানে থাকা কোম্পানিটিকে ২০১৭ সালে শেয়ার প্রতি ৬৯ টাকা ৫৫ পয়সা লোকসান গুনতে হয়েছিল। এর পর আর কোনো তথ্য নেই ডিএসইর ওয়েবসাইটে।
এ ছাড়া দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে নিউ লাইন ক্লোথিংস, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ইয়াকিন পলিমার, সাভার রিফ্যাক্টরিজ, এইচআর টেক্সটাইল, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক ও কেডিএস অ্যাক্সেসরিজ।
দর পতনের শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি দর কমেছে এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্সের। সর্বোচ্চ সীমা অর্থাৎ ২ শতাংশ দর কমে শেয়ারটি সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৪৪ টাকা ১০ পয়সায়।
বিনিয়োগকারীদের নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদানের মাধ্যমে এ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করলেও গত ৭ জুন থেকে কোম্পানির শেয়ারদর কমছেই।
দর কমার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস। ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ দর কমে এক হাজার ৯৫৭ টাকা ৭০ পয়সা থেকে এক হাজার ৯১৮ টাকা ৬০ পয়সায় শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কোম্পানিটি ভালো মুনাফায় থাকলেও গত চার কর্মদিবস এর দর কমে লেনদেন হলো।
একই সমান দর কমে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স। দুই কর্মদিবস দর কমে আজ শেয়ারটি সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১৮১ টাকা ৬০ পয়সায়।
তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ইস্টার্ন ক্যাবলস, পেপার প্রসেসিং, শ্যামপুর সুগার মিল, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, জেনেক্স ইনফোসিস ও ইমাম বাটন।
সূচক কমাল যারা
সবচেয়ে বেশি ১২ দশমিক ৬১ পয়েন্ট সূচক কমেছে বেক্সিমকো লিমিটেডের কারণে। কোম্পানিটির দর কমেছে এক দশমিক ৯৩ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট কমিয়েছে তিতাস গ্যাস। এদিন কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
পাওয়ার গ্রিডের দর ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ দর কমার কারণে সূচক কমেছে ৪ দশমিক ০১ পয়েন্ট।
এ ছাড়া স্কয়ার ফার্মা, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, বিকন ফার্মা, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আইএফআইসি, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও আরএকে সিরামিকসের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৪০ দশমিক ০৯ পয়েন্ট।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ১৬ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে রবি। কোম্পানিটির দর ১ দশমিক ৬০ শতাংশ দর বেড়েছে।
লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের দর ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট।
গ্রামীণফোন সূচকে যোগ করেছে ৯ দশমিক ২৯ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ।
এ ছাড়া ওয়ালটন হাইটেক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ব্র্যাক ব্যাংক, বার্জার পেইন্টস, সোনালী পেপার, বেক্সিমকো সুকুক ও ট্রাস্ট ব্যাংক সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৭৩ দশমিক ৯০ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য