জ্বালানি সাশ্রয়ে লোডশেডিং করা ও দেশবাসীকে মিতব্যয়ী হতে সরকারের আহ্বানের পর দুই কর্মদিবসে পুঁজিবাজারে বড় পতনের যে চিত্র দেখা গিয়েছিল, তৃতীয় দিনে এসে তা কিছুটা থেমেছে। তবে সূচকের পতন ঠেকানো যায়নি।
সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবস বুধবার সকালে সূচক কিছুটা বাড়লেও বেলা শেষ হয় ১৪ পয়েন্টের পতনের মধ্য দিয়ে। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহের চার দিন তো বটেই, আগের সপ্তাহের টান তিন কর্মদিবস মিলিয়ে সাত দিন সূচক পড়ল।
এই সাত কর্মদিবসে সূচক পড়ল মোট ২২৮ পয়েন্ট। এর মধ্যে চলতি সপ্তাহের চার দিনে পড়ল ১৮৫ পয়েন্ট।
সূচকের অবস্থান ৬ হাজার ১৩৮ পয়েন্ট কেবল চলতি বছরের সর্বনিম্ন এমন নয়, গত এক বছরে পুঁজিবাজার এতটা নিচে নামেনি।
২০২১ সালের ৩০ জুন সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৪২ পয়েন্ট। তবে সে সময় বাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। টাকা এক যুগের মন্দাভাব কাটিয়ে পুঁজিবাজার এগিয়ে যাচ্ছিল আর বিনিয়োগকারীরা ছিল ফুরফুরে মেজাজে।
ছন্দপতন শুরু হয় সেপ্টেম্বরে সূচক ৭ হাজার ৩০০ পয়েন্ট ছাড়িয়ে যাওয়ার পর। প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে মতভিন্নতা, এরপর আরও নানা ইস্যুর পর বর্তমানে চলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কার মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের সাশ্রয়ী নীতি ঘোষণার বিষয়।
গত সোমবার প্রতি দিন এক ঘণ্টা করে এবং এতেও সামাল দিতে না পারলে দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং, সপ্তাহে একদিন পেট্রল পাম্প বন্ধ, রাত আটটার পর দোকান বন্ধের ঘোষণা আসে। সেদিন দেখা দেয় আতঙ্ক। এক দিনেই সূচক কমে যায় ৮৭ পয়েন্ট।
মঙ্গলবার আতঙ্ক এতটাই জেঁকে বসে যে ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন আতঙ্কে আগের কর্মদিবসে লেনদেন যে পর্যায়ে নেমে গিয়েছিল, অনেকটা সেখানে নেমে আসে। কোনো রকমে তিন শ কোটির ঘর অতিক্রম করে।
সেদিনই সূচক ৮৭ পয়েন্ট কমে গিয়ে শেষ বেলায় এসে কিছুটা ঘুরে দাাঁড়ায়। তবে বেলাশেষে ৬৩ পয়েন্টের পতন বিনিয়োগকারীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ বড় করে।
তবে এর মধ্যে বিনিয়োগকারীদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত একটি বিষয়ের ফয়সালা হওয়ার আশা তৈরি হয়েছে। পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার হিসাব বাজার মূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে করার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বছরের পর বছর ধরে এটি বিএসইসির চাওয়া ছিল। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ ক্ষেত্রে কোনো উদ্যোগ নিতে রাজি হয়নি।
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এই চিঠি পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা। কিন্তু আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা এতেও কোনো সাড়া দেয়নি।
তবে আগের দিনের তলানি থেকে লেনদেনের উঠে আসাটা একটি ইতিবাচর প্রবণতা হিসেবে দেখা যায়। দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৬৬৫ কোটি ৫৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা, যা আগের দিনের দ্বিগুণেরও বেশি।
প্রথম ২৭ মিনিটে আগের দিনের তুলনায় ৩৫ পয়েন্ট সূচক বেড়ে লেনদেন হতে দেখা যায়। এর পরেই ক্রেতা সংকটে দর হারায় শেয়ারগুলো। সূচক আগের দিনের চেয়ে আরও নিচে নেমে যায়। তবে শেষে দুই ঘণ্টায় কিছুটা দর ফিরে পায় শেয়ারগুলো।
গত দুই দিনের তুলনায় আজ কিছু বেশি সংখ্যক শেয়ারের দর বেড়েছে। তারপরও দর বৃদ্ধির তুলনায় পতনের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।
১১০টি শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২১৮টির দাম। আর আগের দামেই লেনদেন হয়েছে ৫৩টি কোম্পানির শেয়ার।
আগের দুই কর্মদিবসেই দর হারিয়েছিল প্রায় সাড়ে তিন শটি করে কোম্পানির শেয়ার।
আবারও বিপুল সংখ্যক কোম্পানির শেয়ারদর দিনের দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ বা কাছাকাছি নেমে হাতবদল হতে দেখা গেছে। তবে বহু কোম্পানির ক্রেতা ছিল না আগের কয়েকদিনের মতোই।
লেনদেনের বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজারে এখনও আতঙ্ক রয়েছে। তবে কয়েকদিন কমে শেয়ারের দাম একটা পর্যায়ে এসেছে, যার কারণে যেসব বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিশ্চুপ ছিল তারা কিছুটা ইন্টারেস্ট শো করছে। তাদের অ্যাক্টিভিটি বেড়েছে, যার কারণে ট্রানজেকশন বেড়েছে।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিআইএফসির শেয়ারদরে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা থামছে না। এই কোম্পানিটি দর বৃদ্ধির শীর্ষে অবস্থান করছে। আজ শেয়ারটির দর আজ বেড়েছে ৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আগের দুই দিনও বেড়েছিল ৮ শতাংশের বেশি করে।
ধারাবাহিক লোকসানে থাকা কোম্পানিটিকে ২০১৭ সালে শেয়ার প্রতি ৬৯ টাকা ৫৫ পয়সা লোকসান গুনতে হয়েছিল। এর পর আর কোনো তথ্য নেই ডিএসইর ওয়েবসাইটে।
দ্বিতীয়স্থানে ছিল এইচ আর টেক্সটাইল। ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে ১০৬ টাকা ২০ পয়সার দর দাঁড়িয়েছে ১১৫ টাকা ১০ পয়সা।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর বেড়েছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের। ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেড়ে প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫১ টাকাক ৯০ পয়সায়।
দর বৃদ্ধির তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন। ৭ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়ে ৯৮ টাকা ৪০ পয়সা থেকে সর্বশেষ শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১০৫ টাকা ৫০ পয়সায়।
পঞ্চম স্থানে থাকা প্রাইম টেক্সটাইলের দর বেড়েছে ৬ দশমিক ০১ শতাংশ বা ২ টাকা ২০ পয়সা। গত ২২ মে কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ২৪ টাকা ২০ পয়সা। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে আজ সর্বশেষ ৩৮ টাকা ৮০ পয়সাতে লেনদেন হয়েছে।
তালিকার সপ্তম স্থানে থাকা কেডিএস অ্যাক্সেসরিজের দর বেড়েছে ৫ দশমিক ০৫ শতাংশ। আগের দিন বেড়েছিল ৪ দশমিক ০১ শতাংশ।
২২ মে থেকে কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ছে। ওই দিন শেয়ারের দাম ছিল ৫০ টাকা ৯০ পয়সা। সেখান থেকে বেড়ে এখন দর ৭০ টাকা ৭০ পয়সা।
দর বৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে উৎপাদনে না থাকা সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি ও ক্রাউন সিমেন্ট।
দর পতনের শীর্ষ ১০
আইপিডিসি ফাইন্যান্সের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। আগের কার্যদিবসে শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৬০ টাকা। ২ শতাংশ কমে দর দাঁড়িয়েছে ৫৮ টাকা ৮০ টাকায়।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস। ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ দর কমে এক হাজার ৯৯৭ টাকা ৬০ পয়সা থেকে নেমে এসেছে এক হাজার ৯৫৭ টাকা ৭০ পয়সায়।
প্রায় একই হারে দর কমেছে রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, লিবরা ইনফিউশন, বিডি ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স এবং সিভিও পেট্রোকেমিক্যালসের, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, শাইনপুকুর সিরামিক ও প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের।
সূচক কমাল যারা
সবচেয়ে বেশি ৪ দশমিক ২৩ পয়েন্ট সূচক কমেছে রবির কারণে। কোম্পানিটির দর কমেছে এক দশমিক ৮৮ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমিয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে ১ দশমিক ৮২ শতাংশ।
ইউনাইটেড পাওয়ারের দর ১ দশমিক ২৯ শতাংশ দর কমার কারণে সূচক কমেছে ২ দশমিক ০৩ পয়েন্ট।
এ ছাড়া বার্জার পেইন্টস, তিতাস গ্যাস, ওয়ালটন হাইটেক, পাওয়ার গ্রিড, সামিট পাওয়ার, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও আইপিডিস ফাইন্যান্সের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ১৫ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট।
সূচকে পয়েন্ট যোগ করল যারা
সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৮২ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি। কোম্পানিটির দর ৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ দর বেড়েছে।
ম্যারিকোর দর ১ দশমিক ০৭ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ১৫ পয়েন্ট।
আইসিবি সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ৮৭ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ।
এ ছাড়া আইএফআইসি ব্যাংক, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বেক্সিমকো ফার্মা, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ক্রাউন সিমেন্ট, এম এল ডায়িং ও এনসিসি ব্যাংক সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৭ দশমিক ৮০ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য