জেট ফুয়েলের দাম এক লাফে লিটারপ্রতি বেড়েছে ১৯ টাকা, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। ফলে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলোকে এখন জেট ফুয়েল কিনতে হচ্ছে প্রতি লিটার ১৩০ টাকায়।
পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষ থেকে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ৭ জুলাই জেট ফুয়েলের নতুন দাম নির্ধারণের পর তা কার্যকর হয়েছে ৯ জুলাই থেকে।
করোনার অভিঘাত থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টার মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আবারও মন্দাভাব তৈরি হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। এর প্রভাব পড়েছে প্রায় প্রতিটি খাতে। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম। মুদ্রাস্ফীতিতে নাকাল হচ্ছে বিশ্বের শক্তিধর অর্থনীতির দেশগুলোও।
পদ্মা অয়েল জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য ফুয়েলের দাম ১ দশমিক ০৯ ডলার থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১ দশমিক ২২ ডলার। অব্যাহতভাবে জেট ফুয়েলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আকাশ পথে ভ্রমণের খরচ আরও বাড়বে বলে মনে করছে এয়ারলাইনসগুলো।
গত বছর থেকে ক্রমাগত বাড়ছিল এই জ্বালানির দাম। সবশেষ এ বছরের ১০ জুন জেট ফুয়েলের দাম ৫ টাকা বেড়ে প্রতি লিটার হয়েছিল ১১১ টাকা। তার আগে ১৭ মে বাড়ানো হয় এই জ্বালানির দাম। তখন ৬ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১০৬ টাকা প্রতি লিটার।
জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল বলছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জেট ফুয়েলের দাম ছিল ৫৫ টাকা, মার্চে তা বেড়ে হয় ৬০ টাকা। এপ্রিলে তা ছিল ৬১ টাকা।
মে মাসে এক টাকা কমে দাম। এরপর আবার দাম বাড়ে। জুনে তা হয় ৬৩ টাকা, জুলাইয়ে ৬৬, আগস্টে ৬৭, অক্টোবরে ৭০ ও নভেম্বরে ৭৭ টাকায় পৌঁছে দাম। এরপর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ২ টাকা করে কমলেও ফেব্রুয়ারি ও মার্চে ৭ টাকা করে বেড়ে হয় ৮৭ টাকা। এপ্রিল মাসে বাড়ানো হয় ১৩ টাকা, দাম হয় প্রতি লিটার ১০০ টাকা।
অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়দের জন্য দারুন খবর নিয়ে এল একটি পর্যটন সংস্থা। বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত শহর দেখার পাশাপাশি লড়াইরত যোদ্ধাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। যদিও দেশটির নাম শুনলে হয়ত অনেকেই সরে আসবেন পরিকল্পনা থেকে।
কথা হচ্ছে ইউক্রেন নিয়ে। দেশটিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের ছয় মাস চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনে অভিযান জোরদার করেছে পুতিন বাহিনী। মৃত্যু ও ধ্বংসের ঢেউ উড়িয়ে ইউক্রেনে পর্যটকদের আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ভিজিট ইউক্রেন নামের প্রতিষ্ঠানটি।
গত মাসে প্রতিষ্ঠানটি এই ট্যুর প্ল্যান চালু করে। বলা হচ্ছে, ইউক্রেনীয় সেনারা যেসব দখল শত্রুমুক্ত করেছে, সেসব শহরের অবস্থা সরাসরি দেখার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে প্ল্যানে। ট্যুর কোম্পানির ওয়েবসাইটে লেখা রয়েছে, ‘এখনই অদম্য ইউক্রেনে ভ্রমণ শুরু করুন।’
ইউক্রেন ভ্রমণে আন্তর্জাতিক সতর্কতা সত্ত্বেও সংস্থাটি বলছে, এ পর্যন্ত ১৫০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। তাদের ওয়েবসাইটে বলা হচ্ছে, ইউক্রেনে নিরাপদ ভ্রমণের তথ্য সরবরাহ করে প্রতি মাসে ১৫ লাখ হিট পাচ্ছে তারা। যা রুশ অভিযানের আগের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ট্যুরের জন্য সাইন আপ করা যে কেউ বোমায় ধ্বংসাবশেষ, বিধ্বস্ত ভবন, ক্যাথেড্রাল এবং স্টেডিয়ামগুলোর মধ্য দিয়ে হাঁটার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি পুড়ে যাওয়া সামরিক হার্ডওয়্যার এবং বিমান হামলার সাইরেনগুলোতে স্বচক্ষে দেখে আসতে পারবেন পর্যটকরা।
ভিজিট ইউক্রেনের প্রতিষ্ঠাতা আন্তন তারানেঙ্কো বলেন, ‘অনেকের কাছে এমন ছুটি ভয়ংকর মনে হতে পারে। তবে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন এটা “ডার্ক ট্যুরিজম” নয়, যেখানে কেবল মৃত্যু, বিপর্যয়ের মতো দৃশ্যগুলো দেখানো হয়।
তারানেঙ্কো আরও বলেন, ‘এই সফরগুলো ইউক্রেনের জন্য তার নাগরিকদের ভালোবাসার মনোভাব তুলে ধরার পাশাপাশি বহির্বিশ্বকে এটা দেখানোর সুযোগ রয়েছে যে যুদ্ধের মধ্যেও জীবন থেমে থাকে না।
‘ইউক্রেনে যা ঘটছে তার মধ্যেও কীভাবে লোকেরা মানিয়ে নিচ্ছে, একে অপরকে সাহায্য করছে সেসব দেখার সুযোগ থাকছে। বোমা হামলায় বিধ্বস্ত দোকান ফের চালুর পর সেখানে বসে বন্ধুদের নিয়ে ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো চেখে দেখতে পাবেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে ইউক্রেনে ‘লেভেল ফোর সতর্কতা জারি করেছে। সেই সঙ্গে অবিলম্বে আমেরিকান নাগরিকদের ইউক্রেন ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন। কিয়েভে বাইডেন প্রশাসন দূতাবাসে কার্যক্রম স্থগিতের পর সাফ জানিয়ে দিয়েছে পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত কোনো কনস্যুলার সহায়তা দেয়া হবে না।
অন্যান্য দেশও একই ধরনের সতর্কতা জারি করেছে। যুক্তরাজ্যের ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস বলছে, শহর ও অঞ্চলে হামলার কারণে “জীবনের জন্য প্রকৃত ঝুঁকি” রয়েছে।
তবুও তারানেঙ্কো আশায় বুক বাঁধছেন। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি আমাদের ধ্বংস হওয়া শহর এবং সাহসী লোকদের যুদ্ধ দেখতে চান, তবে দয়া করে এখনই আসুন। তবে আপনাদের সর্তক থাকতে হবে। কারণ ইউক্রেন এখনও শতভাগ নিরাপদ না।’
যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটির ধ্বংসপ্রাপ্ত পর্যটন শিল্পকে রক্ষা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও, ইউক্রেন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এ ট্যুরের অনুমোদন দেয়নি।
ইউক্রেনের স্টেট এজেন্সি ফর ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্টের চেয়ারপার্সন মারিয়ানা ওলেস্কিভ বলেন, ‘এখন পরিদর্শনের উপযুক্ত সময় নয়। তবে আমরা জয়ী হওয়ার পর মানুষকে ইউক্রেন দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানাব।’
আরও পড়ুন:লুঙ্গি পরেছিলেন বলে কক্সবাজার বেড়াতে যাওয়া জাহিদ হাসান নামে এক পর্যটককে পাঁচতারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসে ঢুকতে দেয়া হয়নি। পরে ট্যুরিস্ট পুলিশ গিয়ে বিষয়টি মিটমাট করে দেয় এবং হোটেল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে।
কলাতলীর ওই হোটেলে শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
অভিযোগকারী জাহিদ হাসান জানান, স্ত্রী, মেয়ে, মেয়ের জামাই ও নাতিকে নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে গেছেন। প্যাকেজ ট্যুরে হোটেল ওশান প্যারাডাইসে রুম নেয়া ছিল।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি তাদের গেস্ট। বাঙালি জাতির জাতীয় পোশাক লুঙ্গি। সেটি পরনে থাকায় হোটেল ওশান প্যারাডাইস কর্তৃপক্ষ আমাকে ঢুকতে বাধা দেয়।
‘আমাকে ১ ঘণ্টার বেশি সময় দাঁড় করিয়ে রাখে অভ্যর্থনা ডেস্কের আল আমিন হৃদয় ও সিকিউরিটি কাউসার আহমেদ আবছার। আমি ট্যুরিস্ট পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছি। তারা আসার পর আমি হোটেলে উঠতে পেরেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হোটেলের অভ্যর্থনা ডেস্কের আল আমিন হৃদয় নিউজবাংলার কাছে দাবি করেন, তিনি কোনো খারাপ আচরণ করেননি।
তিনি জানান, কর্তৃপক্ষেরই নির্দেশ যে লুঙ্গি পরা পর্যটক বা তাদের অতিথিদের ঢুকতে দেয়া হবে না।
হোটেলের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) কাজী আনিসুজ্জামান বলেন, ‘লুঙ্গি পরে হাঁটাহাঁটি করায় একটু সতর্ক করেছিলাম। এর চেয়ে বেশি কিছু হয়নি।’
পর্যটকদের লুঙ্গি পরার বিষয়ে কোনো বিধিনিষেধ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি।
এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ‘এ রকম একটি অভিযোগ শোনার পর পরই ঘটনাস্থলে গিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলি। ভুক্তভোগী পর্যটকের অভিযোগ শোনার পর সতর্ক করা হয় কর্তৃপক্ষকে। পরবর্তী সময়ে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চিন্তায় আছেন ইউরোপের ওয়াইন প্রস্তুতকারকরা। সাম্প্রতিক সময়ে অসহনীয় গরমের পাশাপাশি দাবালন আঘাত হেনেছে মহাদেশটিতে। এই অবস্থায় চলতি বছর চাহিদা অনুযায়ী ওয়াইন প্রস্তুত সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চলতি মাসে পর্তুগাল ও স্পেনের তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছেছে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন বলছে, এসব কারণে এ বছর ওয়াইন প্রস্তুত ২৫ শতাংশ কম হতে পারে।
প্রতিবেদন বলছে, তীব্র গরম বা দাবানলে ইউরোপের কোনো আঙুর বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আগুন না পৌঁছাতে পারলেও কয়েক কিলোমিটার অঞ্চল ছেয়ে যায় ধোঁয়ায়। এতে নষ্ট হতে পারে ফসল। আর তা না হলে এসব বাগানের আঙুর থেকে ওয়াইন প্রস্তুত করা হলে স্বাদে প্রভাব ফেলবে। মানে ওয়াইনে মিলবে ছাইয়ের গন্ধ।
ঝুঁকি আছে আরও। তীব্র তাপ ফুলকে ফল হতে বাধা দিতে পারে। শুধু তা-ই নয়, আঙুরকে ঝলসে দেয়ার পাশাপাশি সেগুলোকে ডিহাইড্রেট করে ফেলতে পারে এ আবহাওয়া।
পর্তুগালের শীর্ষ ওয়াইন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান পর্তুগিজ ওয়াইন মেকারস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, খরা এবং খুব উচ্চ তাপমাত্রার কারণে এ বছর ‘উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হ্রাস’ হতে পারে।
নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানী অ্যাঞ্জেল হু বলেন, ‘ইউরোপ অনেক দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে। আঙুর বাগানগুলো সাধারণত মহাদেশটির শীতপ্রধান অঞ্চলে অবস্থিত। ফ্রান্স ও জার্মানির আঙিুর বাগানগুলোতে দারুণ প্রভাব ফেলছে বর্তমানের বৈরী আবহাওয়া।’
বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগের মধ্যে ইউরোপের গম এবং ভুট্টার ফসলও তীব্র গরমে হুমকিতে পড়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ গম রপ্তানিকারক দেশ ফ্রান্স। তারা আগেই জানিয়েছিল, এ বছর গম উৎপাদন পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম হতে পারে।
আগামী ৪ আগস্ট থেকে ভারতের কলকাতায় দিনে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি এয়ারলাইনস ইউএস বাংলা। যাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ইউএস বাংলার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রতিদিন সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে কলকাতার উদ্দেশে ফ্লাইট ছেড়ে যায় এবং কলকাতা থেকে সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকার উদ্দেশে উড্ডয়ন করে এবং দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সেইসঙ্গে আগামী ৪ আগস্ট থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা থেকে কলকাতার উদ্দেশে ফ্লাইট উড্ডয়ন করবে এবং কলকাতা থেকে ঢাকার উদ্দেশে সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে ছেড়ে ঢাকায় রাত ৯টায় অবতরণ করবে।
এই রুটটিতে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ইউএস বাংলা ব্যবহার করছে বোয়িং সেভেন থ্রি সেভেন উড়োজাহাজ।
খুব শিগগরিই চট্টগ্রাম থেকে কলকাতা ও ঢাকা থেকে দিল্লি রুটেও ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
হাওর ঘুরতে এসে শোকের জলে ভাসতে হলো মাদারীপুরের রাশেদুজ্জামান আকাশকে। ২৫ বছর বয়সী টগবগে এই যুবক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছিলেন তিনি অবারিত জলরাশির সৌন্দর্য উপভোগে।
গত ২২ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওরের কুর্শা এলাকায় গোসল করতে নেমে মৃত্যু হয় তার।
আকাশের সঙ্গে ছিলেন দুই বন্ধু, যাদের মধ্যে তুহিন মিয়ার বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলায় এবং হাসিব শিকদারের পটুয়াখালীতে। তারা সাঁতার জানতেন না। হাওরের স্রোতের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর মতো দক্ষতাও ছিল না, ছিল না সেখানে পানির গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ধারণাও।
পানিতে নামার পরই ভেসে যেতে থাকেন তিনজন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে। ডাঙায় মারা যান আকাশ আর আশঙ্কাজনক অবস্থায় জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় হাসিব ও তুহিনকে। পরে তারা প্রাণে বাঁচেন।
বর্ষায় হাওরে পানি আসার পর এমন মৃত্যুর সংবাদ প্রায়ই আসছে। চলতি বছরের মতো এতগুলো ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি। আর এই বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে স্থানীয় প্রশাসনকেও। কর্মকর্তারা ভাবছেন, যে মৃত্যুগুলো হয়েছে, তার সিংহভাগই অসচেতনতার কারণে। বেশির ভাগ মানুষই মারা গেছে গোসল করতে পানিতে ঝাঁপ দেয়ার পর।
পানিতে ডুবে মৃত্যুর সঙ্গে যোগ হয়েছে গতির নেশা। হাওরের নতুন আকর্ষণ অলওয়েদার সড়কে এসে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন। সঙ্গে আছে মাছ ধরতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনা।
ফায়ার সার্ভিসের কিশোরগঞ্জ কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবুজর গিফারী জানান, তাদের তথ্য মতে চলতি বর্ষায় এখন পর্যন্ত ইটনা, অষ্টগ্রাম, মিঠামইন এবং নিকলী হাওরে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তাদের পরিসংখ্যানের বাইরে আরও মৃত্যু থাকতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় হাওরে ঘুরতে গিয়ে কোনো পর্যটক বা শিশু মারা গেলে তাদের মরদেহ সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে গেলে সেই হিসাবটা আমাদের কাছে পৌঁছে না। আমাদের কাছে কেবল নিখোঁজের সংবাদগুলো আসে, যেগুলো উদ্ধার প্রয়োজন।’
কয়েকটি মৃত্যুর উদাহরণ
গত ১৮ জুলাই মিঠামইন হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন পল্লী বিদ্যুতের মিঠামইন জোনাল অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হোসাইন হিমেল। পরদিন দুপুরে ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম অলওয়েদার সড়কের ৪ নম্বর বক্স কালভার্টের নিচ থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
৩৫ বছর বয়সী হোসাইন হিমেল ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়ে বিয়ে করেন। ছুটি শেষে স্ত্রীকে নিয়ে কর্মস্থলে ফেরেন। পরদিন অফিসের পিয়ন রফিককে সঙ্গে করে ঝাঁকি জাল নিয়ে বের হন হাওরে মাছ ধরবেন বলে। জাল ফেলার সময় পা পিছলে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হন।
এর পাঁচ দিন আগে ১৩ জুলাই মিঠামইনে হাওরে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হন কিশোরগঞ্জ শহরের গাইটাল নামাপাড়া এলাকার বাসিন্দা তানজীব সারোয়ার হিমেল। ২৬ বছর বয়সী এই যুবক ছাড়াও সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসানপুর সেতুর কাছে গোসল করতে নামেন তার চাচাতো ভাই মো. নাজমুল ও ফুপা মো. বকুল।
পানিতে নামার পর ভেসে যান হিমেল। পরদিন সকালে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরিদল তার মরদেহ উদ্ধার করে।
১৫ জুন করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের বালিখলা ফেরিঘাটের পাশে চং নোয়াগাঁও এলাকায় নৌকা থেকে পড়ে নিখোঁজ হন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হাবিবুল্লাহ হাবির। পরদিন ভোরে তার মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
তার আগের দিন ইটনায় হাওরে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ হন বাবা-ছেলেসহ তিনজন। পরদিন সকালে উপজেলার বড়িবাড়ী ইউনিয়নের এন সহিলা গ্রামের সামনে থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এই তিনজন হলেন করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাইদ ইউনিয়নের হালগড়া গ্রামের ৬০ বছরের সিরাজ উদ্দিন ও তার ছেলে ৩৫ বছরের ওয়াসিম এবং তাড়াইল উপজেলার দামিহা এলাকার ২৫ বছরের মাসুদ মিয়া।
এত মৃত্যু কেন
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আবুজাফর গিফারী বলেন, ‘সাঁতার না জেনে অনেকেই পানিতে নেমে যান। আবার অনেকে হাওরে যাওয়ার পথে অথবা ফেরার পথে নৌকা থেকে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘হাওরে বেড়াতে গিয়ে লাইফ জ্যাকেট পরা থাকলে এবং স্রোতে গোসল করতে না নামলে এ ধরনের ঘটনা কমে আসত।’
ইটনা উপজেলার ছিলনী গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রওশন আলী রুশো নিউজবাংলাকে জানান, ‘এই মৃত্যুর কারণ অজ্ঞতা, অসাবধানতা আর সাঁতার না জানা।’
তিনি বলেন, ‘পাহাড়ের নদীগুলোতে গিয়ে কেউ যদি এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করে, তাহলে সেখানে থাকা পাথরের মাঝে পা আটকে যেতে পারে। কক্সবাজারে গিয়ে জোয়ার-ভাটা সম্পর্কে না জেনে পানিতে নামলেও মৃত্যু হতে পারে। তেমনি হাওরের স্বচ্ছ পানি দেখে সাঁতার না জেনে কেউ যদি ঝাঁপ দেয়, সে ক্ষেত্রে তার মৃত্যু হতে পারে।’
এসব মৃত্যু ঠেকাতে এ ক্ষেত্রে হাওরের বিভিন্ন জায়গায় সতর্কাতামূলক সাইনবোর্ড টানানোর পাশাপাশি প্রশাসনের নজরদারির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি হাওরে দ্রুতগামী জলযানসহ জরুরি সেবা চালুর পরামর্শও দিয়েছেন।
সাংবাদিক সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন বলেন, ‘হাওরে পর্যটনের ক্ষেত্রে সরকারি কোনো ব্যবস্থাপনা নেই। বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে যেসব ব্যবস্থাপনা রয়েছে, সেগুলোতে নিরাপত্তামূলক কোনো ব্যবস্থা নেই। এ অবস্থায় হাওর এলাকায় পর্যটকদের ঘোরাঘুরি, হাওরের পানিতে নামা, সাঁতার কাটা সবকিছু নিজ উদ্যোগেই করতে হয়। দূর থেকে যারা হাওর ভ্রমণে আসেন, হাওরের পানি প্রবাহ, স্রোত, কোন জায়গায় পানির পরিমাণ কতটুকু, সেসব বিষয় তারা অবগত নয়। এমনকি সাঁতার জানা থাকলেও তীব্র স্রোতে তারা টিকতে পারেন না। ফলে ঘটছে প্রাণহানি।’
পরিবেশ রক্ষা মঞ্চের (পরম) কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি শরীফ আহম্মেদ সাদী এসব মৃত্যুকে দেখছেন প্রশাসনিক ব্যর্থতা হিসেবে। তিনি বলেন, ‘দেশের অন্যান্য পর্যটন এলাকাগুলোতে পর্যটকদের যেভাবে সচেতন করা হয় তার কোনো কিছুই কিশোরগঞ্জে নেই। হাওরের প্রবেশপথে বড় বড় বিলবোর্ডে ঝুঁকিগুলো উল্লেখ করা যেত, লাইফ জ্যাকেট বাধ্যতামূলক করা যায়, আবার উদ্ধারকর্মী নিয়োগও জরুরি। এসব করতে পারলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু কমে আসবে বলে আমরা মনে করি।’
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক শামীম আলম নিউজবাংলাকে বলেন, এই বিষয়গুলো তাদের চিন্তায় আছে। তিনি বলেন, ‘হাওরের বিভিন্ন প্রবেশপথে প্রচার-প্রচারণাসহ বিপজ্জনক স্থানগুলোতে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। হাওর ভ্রমণের জন্য যে নৌকাগুলো ব্যবহৃত হয়, সেগুলোতেও মোটিভেশনাল কার্যক্রম করা হবে, পর্যটকরা যাতে যত্রতত্র পানিতে না নামেন।’
হাওরে বাইক না আনার পরামর্শ
বেপরোয়া গতিতে বাইক চালিয়ে অলওয়েদার সড়কে কয়েকটি মৃত্যুর পর হাওর ভ্রমণে বাইক না আনতে বালিখলা ফেরিঘাটে মাইকিং করেছে থানা পুলিশ। কিন্তু এই ঘাট এড়িয়ে অন্য পথে নৌকায় করে বাইক নিয়ে হাওরে যাচ্ছেন তরুণরা।
জেলা প্রশাসক শামীম আলম জানান, অলওয়েদার সড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:নওগাঁর বদলগাছিতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার পর্যটনবান্ধব করতে বিস্তর পরিকল্পনা নিয়েছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
শুক্রবার দুপুরে পাহাড়পুর জাদুঘর মিলনায়তনে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারকে দর্শকবান্ধব করার লক্ষ্যে অংশীজনদের নিয়ে সভায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এ পরিকল্পনার কথা জানান।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর রাজশাহী ও রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয় বগুড়া এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার পর্যটনবান্ধব করতে নানাবিদ পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। পাহাড়পুর ঘিরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামোকে মজবুত করারও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। এই বিহার যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা হয়েছে। পর্যটকদের বিহার সম্পর্কে ধারণা দেয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। বিহার এলাকায় সুপেয় পানির অভাব ও উন্নত মানের হোটেল না থাকায় পর্যটকরা সমস্যায় পড়েন। এই সমস্যাও দ্রুত সমাধান করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য পাহাড়পুর এলাকায় ভালো যোগাযোগ ও আবাসিক ব্যবস্থাসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের উদ্যোগ নেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব রতন চন্দ্র পণ্ডিত।
বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য শহিদুজ্জামান সরকার ও ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব মিল্টন কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাঈনুল ইসলাম, বদলগাছির ইউএনও আল্পনা ইয়াসমিন, থানার ওসি আতিয়ার রহমান, পর্যটন পুলিশের পরিদর্শক সাজেদুর রহমান।
সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ পাহাড়পুরে নবনির্মিত দি হেরিটেজ ক্যাফে নামের একটি আধুনিক হোটেলের উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতু ভ্রমণে মানুষের আগ্রহের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্যাকেজ ট্যুর’ চালু করল পর্যটন করপোরেশন।
প্রতি শুক্র ও শনিবার পরিচালিত হবে অর্ধদিবসের ট্যুরটি। প্যাকেজে ৯৯৯ টাকায় পদ্মা সেতুর দিন ও রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করে ঢাকায় ফিরতে পারবেন দর্শনার্থীরা। থাকবে দুটি স্ন্যাকসের ব্যবস্থাও।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে এই প্যাকেজের উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এমন প্যাকেজ করে ভ্রমণের আয়োজন করেছে।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আলী কদর জানান, এই প্যাকেজ ট্যুর বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের নিজস্ব এসি মাইক্রোবাসে আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবন থেকে শুরু হবে। এরপর শ্যামলী, আসাদগেট, সাইন্সল্যাব হয়ে বুয়েটের সামনে দিয়ে হানিফ ফ্লাইওভারে উঠবে। এরপর আনুমানিক বিকেল সাড়ে ৫টায় পদ্মা সেতু অতিক্রম করবে।
ঢাকা-পদ্মা সেতু-ভাঙা চত্বর-বঙ্গবন্ধু মান মন্দির-ঢাকা শীর্ষক অর্ধদিবসের এ পদ্মা সেতু ভ্রমণ প্রতি শুক্র ও শনিবার নিয়মিত পরিচালিত হবে।
প্যাকেজ ট্যুরটি বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন পরিচালিত ন্যাশনাল হোটেল এন্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইন্সটিটিউট প্রশিক্ষিত গাইড দ্বারা পরিচালিত হবে।
আলী কদর বলেন, ‘এই ভ্রমণের মাধ্যমে পর্যটকরা দিনের আলোতে যেমন পদ্মা সেতুর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে, তেমনি সন্ধ্যা ও রাতের আবহে পদ্মা সেতুর অপরূপ শোভাও উপভোগ করতে পারবেন।’
আগ্রহীরা বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ০১৯৪১৬৬৬৪৪৪, ০১৩০০৪৩৯৬১৭ ও ০২-৪১০২৪২১৮ নম্বরে যোগাযোগের মাধ্যমে বুকিং নিশ্চিত করতে পারবেন। এ ছাড়া অনলাইন ও অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা যাবে।
উদ্বোধনের সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্য পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘নিজের দেশের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি নতুন করে গৌরবের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখেছে।’
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ার ফলে দক্ষিণবঙ্গে পর্যটনের উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন হয়েছে। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে এবং দক্ষিণাঞ্চলে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। দেশি বিদেশি পর্যটকদের এ চাহিদার ভিত্তিতে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের এই প্যাকেজ ট্যুরের আয়োজন।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশি-বিদেশি পর্যটকগণ এখন স্বল্প সময়ে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত, সুন্দরবনসহ দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ভ্রমণ করতে পারছেন। পদ্মা সেতুর উভয় পার্শ্বে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন পর্যটন সুবিধা সৃষ্টি করা হবে।’
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘এ সেতু বিশ্বে বাঙালি জাতিকে বিশেষ অহংকার ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে এ সেতু নির্মিত হওয়ার ফলে দক্ষিণবঙ্গসহ সমগ্র দেশের অর্থনীতিতে গতি ও সমৃদ্ধির সৃষ্টি হবে। আমাদের জিডিপিতে অবদান রাখবে।’
উদ্বোধনী দিনেই পর্যটন করপোরেশনের দুইটি এসি মাইক্রোবাস পর্যটন ভবন থেকে পদ্মা সেতুর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আলী কদরের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহির মো. জাবের এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অংশীজন এতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য