আবার দরপতনের মধ্য দিয়ে সপ্তাহ শুরু হলো পুঁজিবাজারে। টানা তিনটি সপ্তাহে এই প্রবণতা দেখা গেল।
এদিন এমন কোনো খাত ছিল না, যেটি দরপতনের মধ্য দিয়ে যায়নি। এর মধ্যে গত দুই সপ্তাহের মতোই দুর্বল বা স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ারে উল্লম্ফন দেখা যায়।
সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে কোনোটিই মৌলভিত্তির কোম্পানি নয়। এর মধ্যে ৬টিই লোকসানি কোম্পানি, যেগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ কেবল গত বছর নয়, এক যুগেও লভ্যাংশ দিতে পারেনি।
কেবল সবচেয়ে বেশি ১০টি নয়, সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে-এমন ২০টি কোম্পানির ক্ষেত্রেও দেখা গেছে একই চিত্র।
কেবল সূচকের পতন নয়, টানা ষষ্ঠ দিন কমল লেনদেন। সেটি নেমে এলো ছয় শ কোটির নিচে। গত ২৬ মের পর ২০ কর্মদিবসে কখনও এত কম লেনদেন হয়নি।
৯৪টি শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৩০টির দর। ৫৭টির দর ছিল অপরিবর্তিত।
চলতি অর্থবছরের শেষ মাসে জুনকে ঘিরে সমন্বয়, আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সংযোজন বিয়োজন করে পাস, মুদ্রানীতিসহ নানা বিষয় বিনিয়োগকারীদের হিসাবনিকাশে। এ কারণে এই মুহূর্তে শেয়ার না কিনে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন তারা। যে কারণে লেনদেন নেমে এসেছে তলানিতে।
দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ৫৯৪ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার টাকার শেয়ার। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন ছিল ৬৮৩ কোটি ৭৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।
গত ১৬ জুন লেনদেন এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর পুঁজিবাজারে আশার সঞ্চার হলেও এর পরদিন থেকে প্রতিদিনই লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমেছে।
দরপতনের আগের বহুদিনের মতোই শেয়ারদর ও সূচক বেড়েই শুরু হয় দিনের লেনদেন। তবে সেটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে প্রথম ১৬ মিনিটে সূচক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে থাকলেও এরপর থেকে কেবলই কমেছে। লেনদেনের গতি শুরু থেকেই ছিল মন্থর। শেষ পর্যন্ত বহাল থাকে তা।
শেষ পর্যন্ত সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৬ পয়েন্ট কমে শেষ হয় লেনদেন। বেলা শেষে সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩০১ পয়েন্ট, যা গত ২৬ মের পর সর্বনিম্ন।
সেদিন সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২৩৭ পয়েন্ট। সেদিনের পর থেকে বাজার কিছুদিন ছিল চাঙা।
এক্সপো ট্রেডার্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা-সিইও শহিদুল হোসেন বলেন, ‘বাজেট নিয়ে এখনও নানা আলোচনা চলছে। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের পক্ষ থেকে এখনও অনেক দাবি তোলা হচ্ছে। যার কারণে বাজেটে কী হবে তা নিয়ে একটি অস্থিরতা রয়েছে বিনিয়োগকারীদের মনে। তারা হয়তো বাজেটে কী হয় তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের নিজেদের গুটিয়ে নেয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে, কোম্পানির আর্থিক বছর শেষের বিষয়টি। জুলাইয়ে শুরু হবে নতুন বছর। কোম্পানিগুলো তার আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। এটার ওপর নির্ভর করে অনেক বিনিয়োগকারী সিদ্ধান্ত নেবেন যে, পরবর্তীতে কী করবেন।’
দুর্বল কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়ে মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন বলেন, ‘কেন এসব শেয়ারের দাম বাড়ে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। নিশ্চয় এটা কোনো স্বাভাবিক কারণে বাড়ছে না। কেন বাড়ছে সেটা সবাই জানে, তারপরও মানুষ সেসব শেয়ারই কেনেন।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষে যেসব কোম্পানি
সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়েছে গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেডের দর। এ নিয়ে টানা চার কর্মদিবস শেয়ারের দর বাড়ল কোম্পানিটির। বৃহস্পতিবার ৩৪ টাকা ৩০ পয়সায় বেচাকেন হয়েছিল, সেটি আজকে দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা ৭০ পয়সায়।
লোকসানের কারণে ২০২১ সালে লভ্যাংশ দেয়নি। চলতি অর্থবছরের তিন প্রান্তিক পর্যন্তও কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়েছে পুঁজিবাজারে নতুন তালিকাভু্ক্ত কোম্পানি মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের। বৃহস্পতিবার দিনের সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ার হাতবদল হয় ৩০ টাকা ৯০ পয়সায়। সেটি আজ লেনদেন হয়েছে ৩৩ টাকা ৯০ পয়সায়।
এ নিয়ে টানা ১৩ কর্মদিবস দিনের সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত বাড়ল মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর। গত ৮ জুন ১০ টাকায় লেনদেন শুরু করে কোম্পানিটি।
এক যুগেও লোকসানের কারণে লভ্যাংশ দিতে না পারা মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের দর বেড়েছে দিনের তৃতীয় সর্বোচ্চ। ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়ে হাতবদল হয়েছে ২৯ টাকা ১০ পয়সায়।
কোম্পানির শেয়ারে প্রাতিষ্ঠানিক, বিদেশি বা সরকারি বিনিয়োগ নেই। অর্ধেক শেয়ার উদ্যোক্তা পরিচালক ও বাকি অর্ধেক সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
তালিকার চতুর্থ স্থানে থাকা প্রাইম টেক্সটাইল স্পিনিং মিলসের দর বেড়েছে ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ। বৃহস্পতিবার শেয়ারের ক্লোজিং প্রাইস ছিল ২৮ টাকা ৩০ পয়সা, সেটি রোববার দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকা ৯০ পয়সায়।
২২ মে থেকে কোম্পানির শেয়ারদর ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ওই দিন ২৪ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল প্রতিটি শেয়ার। কোম্পানির শেয়ারের দাম মাঝে মধ্যেই ওঠানামা করে যদিও গত দুই বছরে এর লভ্যাংশ প্রদানের ইতিহাস খুব বেশি ভালো নয়। ২০২০ সালে ১ শতাংশ ও ২০২১ সালে মাত্র ২ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে।
এর পরেই ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ দর কমেছে ফু-ওয়াং ফুডসের। ২৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে ২৫ টাকা ৫০ পয়সায়। কোম্পানির লভ্যাংশের পরিমাণ খুবই নগণ্য।
ষষ্ঠ স্থানে থাকা সাভার রিফ্যাক্টরিজ লিমিটেডের দর বেড়েছে ৮ দশমিক ১৮ শতাংশ। আগের দিন ২১৬ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হওয়া শেয়ারটি আজ লেনদেন হয়েছে ২৩৪ টাকায়।
১ কোটি ৩৯ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনোদিন লভ্যাংশ দিতে পারেনি। তারপরেও শেয়ারটির শেয়ারদর প্রায়ই লাফায়।
আরেক লোকসানি মেঘনা পেটের দর ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৫ টাকা ৫০ পয়সায়। বিনিয়োগকারীদের কোনোদিনই লভ্যাংশ দিতে পারেনি ২০০১ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি।
শেয়ারটির দর প্রায়ই ওঠানামা করে। ২৫ মে থেকে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে দর। ওই ২২ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল।
এ ছাড়া মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস, আরামিট সিমেন্ট এবং বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোডসের দর ৬ শতাংশের মতো কমে যথাক্রমে ৩০ টাকা, ৩৩ টাকা ৩০ পয়সা এবং ২৩ টাকায় হাতবদল হয়েছে।
দর পতনের শীর্ষ ১০
দরপতনের শীর্ষে রয়েছে ফাস ফাইন্যান্স লিমিটেড। আজ শেয়ারটির দর ১০ পয়সা বা ২ শতাংশ কমেছে। ৭১ বারে কোম্পানিটির ২ লাখ ৩৬ হাজার ১৪৭টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যার বাজার মূল্য ১১ লাখ টাকা। কোম্পানিটির সর্বশেষ দর দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৯০ পয়সা।
বিকন ফার্মাসিটিক্যালস তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। দর ৫ টাকা ৩০ পয়সা বা ২ শতাংশ কমেছে। শেয়ারটি সর্বশেষ ২৬০ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়।
তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা পেপার প্রসেসিংয়ের দর ৩ টাকা ৬০ পয়সা বা ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমেছে। শেয়ারটি সর্বশেষ ১৭৭ টাকা লেনদেন হয়।
তালিকার শীর্ষ দশের অন্য কোম্পানি হলো- সোনালী পেপার, এইচ আর টেক্সটাইল, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, তমিজ উদ্দিন টেক্সটাইল, বিডি মনোস্পুল পেপার, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।
সূচক কমাল যারা
সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ৫ পয়েন্ট কমেছে বেক্সিমকো লিমিটেডের কারণে। কোম্পানিটির দর কমেছে ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৯ পয়েন্ট কমিয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
ম্যারিকোর দর ১ দশমিক ৮১ শতাংশ দর কমার কারণে সূচক কমেছে ৩ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট।
এ ছাড়া লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, বিকন ফার্মা, তিতাস গ্যাস, রবি, পূবালী ব্যাংক, বেক্সিমকো গ্রিণ সুকুক ও পাওয়ার গ্রিডের দরপতনে সূচক কিছুটা কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি কমিয়েছে ২৬ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ২ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে গ্রামীণফোন। এদিন কোম্পানিটির শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ দর বেড়েছে।
ওয়ালটন হাইটেকের দর শূন্য দশমিক ৭১ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট।
স্কয়ার ফার্মা সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ৭১ পয়েন্ট।
এ ছাড়া ব্র্যাক ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ব্যাংক এশিয়া, লুব রেফ বাংলাদেশ লিমিটেড, সিটি ব্যাংক, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল এবং ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য