মন্দা পুঁজিবাজারে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে দুর্বল কোম্পানির দর। টানা পঞ্চম দিন এই প্রবণতা দেখা গেল পুঁজিবাজারে।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে তিনটিই লোকসানি। একটি কোম্পানি এক বছরের বেশি সময় ধরে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়নি। সবশেষ যখন লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, সেই লভ্যাংশ বিতরণ না করায় কোম্পানির পরিচালকদের জরিমানা করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের রবি থেকে প্রতি দিনই একই চিত্র দেখা গেছে। প্রতি দিনই সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে সিংহভাগই লোকসানি বা দুর্বল কোম্পানির আধিক্য দেখা গেছে।
গত ৯ জুন বাজেট ঘোষণার পরের কর্মদিবস ১২ জুন থেকেই টানা দরপতনের ধারায় পুঁজিবাজার। এর মধ্যে দুই সপ্তাহেই শেষ দুই কর্মদিবসে সূচক কিছুটা বাড়তে দেখা গেছে। বাকি তিন দিন করে ছয় দিন পতন হয়েছে সূচকের।
এই নিয়ে বাজেট পেশের দুই সপ্তাহে পুঁজিবাজারে সূচক পড়ল ১৬২ পয়েন্ট।
চলতি সপ্তাহে টানা পাঁচ দিন লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমেছে। সপ্তাহের শেষ দিন হাতবদল হয়েছে ৬৮৩ কোটি ৭৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকার শেয়ার, যা আগের দিন ছিল ৬৯৪ কোটি ৩৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা। সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার হাতবদল হয়েছিল ৮৯৫ কোটি ৭৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
অথচ আগের সপ্তাহে সূচক বাড়ুক আর কমুক, প্রতি দিনই লেনদেন আগের দিনকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ১৬ জুন লেনদেন এক হাজার ৪৬ কোটি ৬৩ লাখ ২২ হাজার টাকা হয়ে যায়।
আগের সপ্তাহের মতোই প্রথম দিন সূচকের পতনের পর শেষ দুই দিন কিছুটা বাড়তে দেখা যায়। আগের সপ্তাহে প্রথম দিন ১১৮ পয়েন্ট কমার পর শেষ দুই দিনে বেড়েছিল ৬৪ পয়েন্ট।
আর চলতি সপ্তাহে প্রথম তিন দিন ১১৩ পয়েন্ট কমার পর বুধবার ৬ পয়েন্ট এবং পরদিন বাড়ল ৯ পয়েন্ট।
এদিন লেনদেন শুরুর ৩৮ মিনিটের মধ্যে সূচক ৫০ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে দেখা যায়। এরপর থেকে পতনে সূচক স্থির থাকেনি।
টানা তিন কর্মদিবস পরে বুধবার ১৯৩টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়ে লেনদেন হতে দেখা গিয়েছিল। তবে আজ সূচকে পয়েন্ট যোগ হলেও কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির দর। ১৬২টি কোম্পানির দর কমে লেনদেন হয়েছে। বিপরীতে বেড়েছে ১৪৫টির ও অপরিবর্তিত দামে কেনাবেচা হয়েছে ৭৪ কোম্পানির শেয়ার।
লেনদেনের বিষয়ে ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের-ডিবিএ সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ‘জুনে বিভিন্ন কোম্পানির হিসাব-বছর শেষ হবে। আর কয়েক দিন পরই ঈদ। এসব কারণে বিনিয়োগকারীরা নিজেদের কিছুটা গুটিয়ে নিয়েছেন। প্রতি বছরই এমনটা দেখা গেছে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই থেকে পুঁজিবাজার ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তখন কোম্পানির আর্থিক সংগতি বুঝে বিনিয়োগে যাবেন সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা।’
দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এসএমইতেও দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু কোম্পানির দাম হুহু করে বাড়ছে। আর এই দর বেড়ে যাওয়া দেখে মানুষ ঢুকছে। এগুলো কেন বাড়ছে, প্রশ্ন রয়েছে। এগুলো স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তো বাড়ে না।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষে যেসব কোম্পানি
সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ দর বেড়েছে পুঁজিবাজারে নতুন তালিকাভু্ক্ত কোম্পানি মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের। আগের দিন দর ছিল ২৮ টাকা ১০ পয়সা। সেটি বেড়ে হয়েছে ৩০ টাকা ৯০ পয়সা।
এ নিয়ে টানা ১২ কর্মদিবস দিনের সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত বাড়ল মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর। গত ৮ জুন ১০ টাকায় লেনদেন শুরু করে কোম্পানিটি।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেড়েছে গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেডের দর। এ নিয়ে টানা তিন কর্মদিবস শেয়ারের দর বাড়ল। মঙ্গলবার ৩১ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল প্রতিটি শেয়ার। আজকে সেটি হাতবদল হয়েছে ৩৪ টাকা ৩০ পয়সায়।
২০১৬ সাল থেকে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়ে এলেও লোকসানের কারণে ২০২১ সালে লভ্যাংশ দেয়নি। চলতি অর্থবছরের তিন প্রান্তিক পর্যন্তও কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে।
দর বৃদ্ধির পরের স্থানে রয়েছে থাকা সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ ধারাবাহিক লোকসান থেকে কিছুটা বের হতে পারলেও কোম্পানিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ২০১৯ সালে শেয়ার প্রতি ১ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করেও তা বিতরণ করেনি কোম্পানিটি। এখন সব কোম্পানি সরাসরি ব্যাংক হিসাবে লভ্যাংশ পাঠালেও সুহৃদ কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট পাঠানোর কথা জানায়। কিন্তু সেই ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট বিনিয়োগকারীদের হিসাবে কখনও যায়নি। ২০২০ সালের জন্য এখনও লভ্যাংশ ঘোষণা বা কোনো হিসাবও প্রকাশ করা হয়নি।
কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৮.৫৭ শতাংশ। এই দর বাড়া শুরু হয়েছে ২৫ মে থেকে। ওই দিন ১৮ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল, সেটি হয়েছে ২২ টাকা ৮০ পয়সায়।
সমরিতা হসপিটালের দর ৬.৮৬ শতাংশ বেড়েছে। চলতি মাসের শুরুতেই ৭৮ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হওয়া শেয়ারের দাম কমে মঙ্গলবার ৬৯ টাকা ২০ পয়সায় ঠেকে। সেখান থেকে পর পর দুই দিন বেড়ে লেনদেন হয়েছে ৭৪ টাকা ৭০ পয়সায়।
তিতাস গ্যাসের দর বেড়েছে ৬ দশমিক ০৯ শতাংশ। আগের দিন ৩৯ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হওয়া শেয়ার আজ হাতবদল হয়েছে ৪১ টাকা ৮০ পয়সায়।
টানা দুই দিন দর বাড়ল মুনাফায় থাকা ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি-ডেসকোর। আগের দিন ৩৬ টাকায় লেনদেন হয়েছিল, সেটি আজ হাতবদল হয়েছে ৩৮ টাকা ১০ পয়সায়।
৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ দর বেড়েছে লোকসানি ও স্বল্প মূলধনি শ্যামপুর সুগার মিলসের। ৫ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কখনোই লভ্যাংশ দিতে পারেনি। তাই লেনদেন করছে জেড ক্যাটাগিরতে।
পর পর দুই দিন দর বেড়ে লেনদেন হতে দেখা গেল। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৭৭ টাকা ১০ পয়সায়। সেই দর এখন দাঁড়িয়েছে ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায়।
এ ছাড়া ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ দর বেড়ে ৫১ টাকা ২০ পয়সা, যদিও কেবল দুটি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
লোকসানি অ্যারামিট সিমেন্টের দরও বেড়েছে ৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। ১০ টাকার শেয়ারে তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত ৭ টাকা ৬২ পয়সা লোকসান দেয়া কোম্পানিটির শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ৩১ টাকা ৪০ পয়সা।
স্বল্প মূলধনি বহুজাতিক কোম্পানি ও বার্জার পেইন্টসের দর ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৭৮৭ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।
দর পতনের শীর্ষ ১০
শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি কমেছে এপেক্স ট্যানারির। বুধবার শেয়ার দর ছিল ১৫০ টাকা ১০ পয়সা। আজ ৩ টাকা বা ১.৯৯ শতাংশ দর কমে লেনদেন হয়েছে ১৪৭ টাকা ১০ পয়সায়।
দর পতনের শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে আলহাজ্ব টেক্সটাইল ও হাক্কানি পাল্পের দর কমেছে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
১ দশমিক ৯৭ শতাংশ দর কমেছে ড্যাফোডিল কম্পিউটার ও প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্সুরেন্সের।
ইমাম বাটনের ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ, বঙ্গজ লিমিটেডের ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ, এইচ আর টেক্সটাইলের ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ দর কমেছে।
এ ছাড়াও সোনালী পেপার ও ইসলামি ইন্সুরেন্সের দর ১ দশমিক ৯১ শতাংশ করে কমেছে।
সূচক বাড়িয়েছে যারা
সবচেয়ে বেশি ৩ দশমিক ৬ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বার্জার পেইন্টস। এদিন কোম্পানিটির ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ দর বেড়েছে।
তিতাস গ্যাসের দর বেড়েছে ৬ দশমিক ০৯ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট। ডেসকো সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ৮২ পয়েন্ট।
এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পাওয়ার গ্রিড, রেনাটা, ব্র্যাক ব্যাংক, রেকিট বেনকিজার ও ট্রাস্ট ব্যাংক সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১০ দশমিক ২ পয়েন্ট।
সূচক কমাল যারা
কোনো কোম্পানিই এককভাবে ১ পয়েন্ট সূচক কমাতে পারেনি। সবচেয়ে বেশি শূন্য দশমিক ৯৩ পয়েন্ট কমেছে বিকন ফার্মার কারণে। কোম্পানিটির দর কমেছে ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৮ পয়েন্ট কমিয়েছে ওয়ালটন। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ।
বেক্সিমকো ফার্মার দর শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ দর কমার কারণে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৫৭ পয়েন্ট।
এ ছাড়া বেক্সিমকো সুকুক বন্ড, আইসিবি, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, যমুনা অয়েল, সোনালী পেপার ও সাইফ পাওয়ারের দরপতনে সূচক কিছুটা কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি কমিয়েছে ৪ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য