পুরনো গাড়ি আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস্ ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স এসোসিয়েশন-বারভিডা’র সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন হাবিব উল্লাহ ডন। মহাসচিব হয়েছেন বিদায়ী কমিটির মহাসচিব মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম।
জটিলতার পর প্রশাসকের অধীনে গত শনিবার সংগঠনটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে হাবিব উল্লাহ ডনের নেতৃত্বে সম্মিলিত গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদ এবং হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা পরিষদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
নির্বাচনে কার্যকরী পরিষদের ২৫ সদস্যের মধ্যে সম্মিলিত গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদ থেকে ১৯ জন এবং স্বাধীনতা পরিষদের ৬ জন নির্বাচিত হন।
সোমবার রাতে কার্যকরী পরিষদের নির্বাচিত ২৫ জন সদস্যদের মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হয়েছেন সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ ডন। বিদায়ী কমিটির মহাসচিব মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম একই পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনর্নিরবাচিত হয়েছেন।
জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পদে আবু হোসেন ভূইয়া রানু, আসলাম সেরনিয়াবাত এবং জাফর আহমেদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আসলাম সেরনিয়াবাত নির্বাচিত হন।
সহসভাপতি-৩ পদে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী সাইফুল ইসলাম সম্রাটকে কে পরাজিত করে নির্বাচিত হন।
কার্যনির্বাহী কমিটির অন্য পদগুলোতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি।
নতুন কমিটি ২০২২-২৪ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করবে।
নতুন সভাপতি ডন এর আগে ২০০৯ থেকে ২০১১, ২০১৩ থেকে ২০১৫ এবং ২০১৭ থেকে ২০১৯ মেয়াদে বারভিডার সভাপতি ছিলেন। তিনি এ এম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও এবং অটো মিউজিয়াম লিমিটেডের কর্ণধার।
ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
নিয়ম অনুযায়ী, গত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বারভিডায় নতুন নির্বাচিত কার্যকরী কমিটি আসার কথা থাকলেও আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও ভোটার তালিকায় জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সেখানে প্রশাসক বসিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়।
এরই ধারবাহিকতায় বারভিডা নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সেলিম হোসেন নির্বাচন সম্পন্ন করে ফল ঘোষণা করেন। বারভিডার প্রশাসক প্রশাসক ছাদেক আহমদ এবং নির্বাচন বোর্ডের সদস্য তানিয়া ইসলাম ও আমিনুল ইসলাম এসময় উপস্থিত ছিলেন।
কমিটির অন্য সমস্যরা
সহসভাপতি-২ নির্বাচিত হয়েছেন রিয়াজ রহমান। এছাড়া বেলাল উদ্দিন চৌধুরী যুগ্ম মহসচিব, মোহাম্মদ আনিছুর রহমান কোষাধ্যক্ষ, সাইফুল আলম যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ, হাবিবুর রহমান খান সাংগঠনিক সম্পাদক, জসিম উদ্দিন প্রচার সম্পাদক, আব্দুল আউয়াল, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন সম্পাদক এবং জুবায়ের রহমান সাংস্কৃতিক সম্পাদক হয়েছেন।
কার্যনির্বাহী সদস্যরা হলেন- কাউছার হামিদ, মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, মোহা. সাইফুল ইসলাম সম্রাট, জিয়াউল ইসলাম জিয়া, জাফর আহমেদ, এ বি. সিদ্দিক (আবু), আবু হোসেন ভূইয়া রানু, মো. রায়হান আজাদ (টিটো), মাহবুবুল হক চৌধুরী বাবর, মো. নাজমুল আলম চৌধুরী, মো. গোলাম রব্বানি (শান্ত), মো. লাবু মিয়া ও পুনম শারমিন ঝিলমিল।
আরও পড়ুন:বিদেশে পাচার করা অর্থ-সম্পদ ফেরত আনার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত সুযোগ-সুবিধায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনে অর্থবিল বিল-২০২২ পাস হয়েছে। পরিবর্তনের মধ্যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ আনার ক্ষেত্রে বাজেটে প্রস্তাবিত সুযোগ বাতিল করা হয়েছে।
বুধবার জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর এসব সংশোধনী আনেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে আনা সংশোধনীগুলোর মধ্যে রয়েছে- ৭ শতাংশ কর দিয়ে শুধু পাচার করা নগদ টাকা দেশে আনা যাবে। যারা সরকারের দেয়া এই সুযোগ নেবেন না, তাদেরকে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। জরিমানার পরিমাণ হবে নির্ধারিত করের সমপরিমাণ।
আর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ আনার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বাজেটে যে সুযোগ রাখা হয়েছিল তা বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে কম হারে করপোরেট কর সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও সংশোধন আনা হয়েছে।
যেসব কোম্পানি বছরে ৩৬ লাখার টাকার বেশি ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করবে তারা কম হারে করপোরেট কর পরিশোধের সুবিধা পাবে। প্রস্তাবিত বাজেটে এই সীমা ছিল বছরে ১২ লাখ টাকা।
এছাড়া সব সেবার ক্ষেত্রে ই-টিআইএন (করদাতা শরাক্তকরণ নম্বর) যুক্ত করে রিটার্ন দাখিলের যে বাধ্যবাধকতা ছিল তাতেও ছাড় দেয়া হয়েছে। কেবল ব্যক্তি-শ্রেণির করদাতাদের জন্য রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বিস্তারিত আসছে…
আরও পড়ুন:ঈদ-উল-আজহাকে সামনে রেখে দেশের সব পশুর হাটে জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন ব্যবহারসহ বিনা খরচে নোট যাচাইয়ের সেবা দেবে ব্যাংক।
বুধবার এ সংক্রান্ত্র নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সী ম্যানেজমেন্ট বিভাগ।
সকল তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদিত হাটগুলোতে জালনোট সনাক্তকারি মেশিনের সহায়তায় অভিজ্ঞ ক্যাশ কর্মকর্তাদের দিয়ে নোট যাচাই সেবা দিতে হবে।
হাট শুরুর দিন থেকে ঈদের পূর্ব রাত পর্যন্ত বিরতিহীনভবে পশু ব্যবসায়ীদের এ সেবা দিতে হবে। এজন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়া যাবে না।
এসব হাটে সেবা দেয়ার লক্ষ্যে মনোনীত কর্মকর্তাদের নাম, পদবি ও মোবাইল নম্বরসহ ব্যাংকের সমন্বয়ক হিসেবে মনোনীত একজন উপযুক্ত কর্মকর্তার নাম, পদবি ও মোবাইল নম্বর আগামী ৪ জুলাইয়ের মধ্যে ইমেইলে পাঠাতে হবে। ব্যাংকের সমন্বয়কারী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট হাটে দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তাদের কার্যক্রম মনিটরিং করবেন।
ঢাকার বাইরে যেসব জেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিস রয়েছে সেখানে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার অনুমোদিত পশুর হাটগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট অফিসের নেতৃত্বে অনুরূপ ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য আঞ্চলিক কার্যালয় বা প্রধান শাখাগুলোকে নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিস নেই এমন জেলাগুলোর সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও খানা বা উপজেলার অনুমোদিত পশুর হাটে বিভিন্ন ব্যাংকের দায়িত্ব বণ্টনের জন্য সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের চেস্ট শাখাগুলোকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
সোনালী ব্যাংকের চেস্ট শাখা কর্তৃক বণ্টিত দায়িত্ব অনুযায়ী অন্যান্য ব্যাংক জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শাখাগুলোও যাতে পশুর হাটগুলোতে নোট যাচাই সংক্রান্ত সেবা প্রদান করে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।
হাটে স্থাপিত বুথে নোট কাউন্টিং মেশিনের সাহায্যে নগদ অর্থ গণনার সুবিধা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
বুথ স্থাপন কার্যক্রমের সুবিধার্থে ও সহযোগিতার জন্য (প্রয়োজনে) সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ, জেলা মিউনিসিপালিটি কর্তৃপক্ষ এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বা সংশ্লিষ্ট পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা এবং সার্বিক নিরাপত্তার জন্য (প্রয়োজনে) সংশ্লিষ্ট পুলিশ, র্যাব ও আনসার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
বুথে নোট যাচাইকালে কোনো জাল নোট ধরা পড়লে জাল নোট পলিসির নির্দেশনা মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বুথে ব্যাংকের নাম ও সাথে “জাল নোট সনাক্তকরণ বুথ” উল্লেখ করে ব্যানার বা নোটিশ দিতে হবে।
ইতোপূর্বে সরবরাহকৃত ব্যাংক নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত ভিডিও চিত্রটি ব্যাংকের শাখাগুলোতে ঈদের আগ পর্যন্ত গ্রাহকদের জন্য স্থাপিত টিভি মনিটরগুলোতে পুরো ব্যাংকিং সময়ে দেখাতে হবে।
দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারীদেরকে দায়িত্বপালনের জন্য ব্যাংকের প্রযোজ্য বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।
পবিত্র ঈদুল আজহা সমাপ্তির পর পরবর্তী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে এসব নির্দেশনার পালন সংক্রান্ত্র প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সী ম্যানেজমেন্ট বিভাগ প্রেরণ করতে হবে।
জাল নোট শনাক্তকরণ বুথে নোট যাচাই সংক্রান্ত সেবা প্রদান কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদেরকে অবশ্যই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক সুনিশ্চিত করতে হবে।
বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ায় তিন দিনের মাথায় আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেপালকে ১০৩ কোটি (১.০৩ বিলিয়ন) ডলার ঋণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৯ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা।
এই অর্থের ৭৫ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার পাবে বাংলাদেশ। আর নেপাল পাবে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
আঞ্চলিক করিডোর বরাবর পরিবহন খরচ এবং ট্রানজিট সময় কমিয়ে বাংলাদেশ ও নেপালের আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়াতে এই অর্থ ব্যয় হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক সদরদপ্তরে সংস্থাটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই ঋণ অনুমোদন করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাণিজ্যের কিছু মূল বাধা দূর করতে পূর্ব-দক্ষিণ এশিয়ায় এক্সিলারেটিং ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রেড কানেক্টিভিটি প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশ ৭৫ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার পাবে।
এই অর্থ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সঙ্গে বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা স্থলবন্দরকে সংযুক্ত করে ৪৩ কিলোমিটার দুই লেনের সিলেট-চরকাই-শেওলা সড়কটিকে জলবায়ু-সহনশীল চার লেনের সড়কে উন্নীত করা হবে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, এতে ভ্রমণের সময় কমবে ৩০ ভাগ। প্রকল্পটি বেনাপোল, ভোমরা এবং বুড়িমারী স্থলবন্দরে ডিজিটাল সিস্টেম, অবকাঠামো এবং আরও সুবিন্যস্ত হবে বলেও আশা করছে বিশ্বব্যাংক।
তারা বলছে এই প্রকল্প চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের আধুনিকীকরণে সহায়তা করবে, এই কাস্টমস হাউসের মাধ্যমে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি ঘোষণার ৯০ শতাংশ পরিচালিত হয়ে থাকে।
সবুজ ও জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক নির্মাণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি নির্বাচিত সড়ক করিডোর উন্নত করা এবং মূল স্থলবন্দর ও কাস্টম অবকাঠামো উন্নত করাও এই কর্মসূচির লক্ষ্য।
এটি স্থলবেষ্টিত নেপাল ও ভুটানকে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রবেশদ্বার দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত করতে সহায়তা করবে।
বিশ্বব্যাংক দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শ্যাফার বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বে মোট আঞ্চলিক বাণিজ্যে দক্ষিণ এশিয়ার অবদান মাত্র ৫ শতাংশ, যেখানে পূর্ব এশিয়ায় এটি ৫০ শতাংশ। এই বাণিজ্য বাড়ানোর প্রচুর সম্ভাবনা আছে; আর সেটি করতেই এই প্রকল্প।’
তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়া উল্লেখযোগ্যভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পারে এবং আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সংযোগ বৃদ্ধি করে লাখ লাখ মানুষের জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারে।’
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, ‘২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের মধ্যে বাণিজ্য ছয় গুণ বেড়েছে।
‘প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশকে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও পরিবহনের উন্নতিতে সাহায্য করবে। অনুমান করা হচ্ছে, বাংলাদেশের আঞ্চলিক বাণিজ্য ৯৩ শতাংশ বাড়তে পারে।’
নেপাল পাবে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার
বিশ্বব্যাংকের এই প্রকল্পের আওতায় নেপালকে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ দেয়া হবে।
প্রকল্পের অধীনে নেপাল ভ্রমণের সময় কমাতে এবং ভারতের পশ্চিম সমুদ্রবন্দরগুলোতে সুবিধা বাড়াতে সড়ক অবকাঠামো উন্নত করতে এই অর্থ ব্যয় হবে।
এই অর্থে পূর্ব-পশ্চিম হাইওয়ে বরাবর ৬৯ কিলোমিটার দ্বি-লেনের বুটওয়াল-গোরুসিংহে-চনাউতা সড়ককে একটি জলবায়ু সহনশীল চার লেনের হাইওয়েতে উন্নীত করা হবে। এতে ভ্রমণের সময় ৩০ শতাংশ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও নেপালের প্রস্তুতি এবং পরে মোটরযান চুক্তি বাস্তবায়ন এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। দ্বিতীয় পর্বে ভুটানকেও এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশে সড়কপথে যাতায়াত অনেক সহজ হয়ে গেছে, সময়ও কমেছে অনেক। এই সেতুর সুবিধা পাবে নেপালও।
আরও পড়ুন:বিশ্বব্যাংককে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এবং বিশ্ববাসীকে অবাক করে দিয়ে নিজস্ব অর্থে নির্মাণ করা হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। ইতিহাসে স্থান করে নেয়া বাংলাদেশের অহংকারের এই সেতু নির্মাণে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
বিশাল অঙ্কের এই অর্থ দেশের অভ্যন্তর বা ভেতর থেকে জোগান দেয়া হয়েছে। কোথা থেকে, কীভাবে এলো এই টাকা? কীভাবে খরচ হলো?
অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে ১ শতাংশ সুদে সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগকে ঋণ দেয়া হয়েছে এই অর্থ। সেতু কর্তৃপক্ষ ১৪৭ কিস্তিতে সুদসহ এই অর্থ পরিশোধ করবে।’
সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, ১৭ বছরে উঠে আসতে পারে পদ্মা সেতুর এই ব্যয়।
পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকার যে ব্যয় হয়েছে, তা পাঁচটি প্যাকেজে হয়েছে। প্যাকেজ পাঁচটি হচ্ছে: সেতু নির্মাণ, নদীশাসন, জাজিরা অংশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ, মাওয়া অংশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং দুই পাশের সার্ভিস এরিয়া। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর টাকা সেতু কর্তৃপক্ষকে ১ শতাংশ হার সুদে সরকারকে (অর্থ মন্ত্রণালয়) ফেরত দিতে হবে। ফিজিবিলিটি স্টাডিতে বলা হয়েছে, ২৪ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে টাকাটা (নির্মাণ ব্যয়) উঠে আসবে। এখন মনে হচ্ছে ১৬ থেকে ১৭ বছরের মধ্যেই টাকাটা উঠে আসবে, কারণ মোংলা পোর্ট এত শক্তিশালী হবে, পায়রা বন্দর হবে, এত শিল্পায়ন হবে, সেগুলো কিন্তু ফিজিবিলিটি স্টাডিতে আসেনি।
‘সেতুর টোল থেকে যে আয় হবে, তা দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঋণ পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।’
পাঁচটি প্যাকেজে কোথায়, কী খরচ
পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকার যে ব্যয় হয়েছে, তা পাঁচটি প্যাকেজে হয়েছে। প্যাকেজ পাঁচটি হচ্ছে: সেতু নির্মাণ, নদীশাসন, জাজিরা অংশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ, মাওয়া অংশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং দুই পাশের সার্ভিস এরিয়া।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান অধ্যাপক শামীম–উজ–জামান বসুনিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূল সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ১২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। নদীশাসনের পেছনে খরচ ৮ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, দুই দিকে সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার জন্য ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা এবং জমি অধিগ্রহণ বাবদ ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আর ভ্যাট, ট্যাক্স, বিলসহ অন্যান্য খরচ ৩ হাজার কোটি টাকা দিতে হয়েছে।’
বিদেশি মুদ্রা সরবরাহ করেছে অগ্রণী ব্যাংক
পদ্মা সেতু নির্মাণে বিদেশি কেনাকাটায় যে খরচ হয়েছে, তার সবই রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক সরবরাহ করেছে। একক ব্যাংক হিসেবে তারা এই প্রকল্পে বৈদেশিক মুদ্রার জোগান দিয়েছে।
এ জন্য গর্বিত অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহম্মদ শামস-উল ইসলাম।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক। মাথা উঁচু করে রাখার মতো বিষয়। জাতির পিতা বলেছিলেন, কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। তারই যোগ্য উত্তরসূরি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাহসিকতার ফলে এই সেতু বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।’
পদ্মা সেতু নির্মাণে বিদেশি কেনাকাটায় যে খরচ হয়েছে, তার সবই রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক সরবরাহ করেছে। একক ব্যাংক হিসেবে তারা এই প্রকল্পে বৈদেশিক মুদ্রার জোগান দিয়েছে। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
‘বিশ্বব্যাংককে “না” করে দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। সে অবস্থায় সেতুর ফরেন কারেন্সি (বিদেশি মুদ্রা) আসবে কোথা থেকে, সে বিষয়ে তখন আলোচনা চলছিল। অগ্রণী ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমরা বলেছিলাম, আমরা সব ডলার সরবরাহ করব। পুরো প্রকল্পে ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার লাগবে। এখন পর্যন্ত আমরা ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করেছি। একক ব্যাংক হিসেবে শুরু থেকে আমরা সব ফরেন কারেন্সি সরবরাহ করেছি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তখনকার গভর্নর ড. আতিউর রহমানের ভূমিকাকেও ধন্যবাদ দিয়েছেন অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মোহম্মদ শামস-উল ইসলাম।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে ফরেন কারেন্সি সরবরাহের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের নীতি সহায়তা দিয়েছে। আমরা যখন প্রস্তাবে রাজি হয়েছি, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকও আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। তবে অগ্রণী ব্যাংক একাই এই অর্থ নিশ্চিত করতে পারায় দেশের রিজার্ভে কোনো প্রভাব পড়েনি।’
২০১২ সালে অগ্রণী ব্যাংকে পদ্মা সেতুর জন্য এফসি (ফরেন অ্যাকাউন্ট) হিসাব খোলা হয়। ডলার সরবরাহ শুরু হয় ২০১৩ সাল থেকে। এখন পর্যন্ত মোট ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করেছে ব্যাংকটি। আরও অন্তত ১ বিলিয়ন ডলার এই প্রকল্পে জোগান দিতে হবে। সেই বৈদেশিক মুদ্রাও রাষ্ট্রায়ত্ত এই বাণিজ্যিক ব্যাংক সরবরাহ করবে বলে জানান শামস-উল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, বিশেষ করে ব্যাংকের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ জায়েদ বখত দক্ষতার সঙ্গে আমাদের সহায়তা করেছেন। তার সঠিক নেতৃত্বের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।’
আরও পড়ুন:দেশে উৎপাদিত ও সংযোজিত মোটরসাইকেলের গতি আরও বাড়াতে চায় সরকার। বর্তমানে সর্বনিম্ন ৮০ সিসি থেকে সর্বোচ্চ ১৬০ সিসি ক্ষমতাসম্পন্ন ফোর স্ট্রোক ও টু স্ট্রোক মোটরসাইকেল স্থানীয়ভাবে বাজারজাত হচ্ছে। সরকার চায় এগুলোকে ২৫০ সিসির ওপরে নিয়ে যেতে।
মোটরসাইকেল উৎপাদনে এখন পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ১০ কোম্পানি বিনিয়োগ করেছে। এদের সম্মিলিত বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। এখানে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ২০ হাজার লোকের।
কোম্পানিগুলো যার যার সক্ষমতা অনুযায়ী ইতোমধ্যে দেশে মোটরসাইকেলের একটা স্থায়ী বাজার তৈরি করেছে। এখন চেষ্টা সেই বাজার অংশীদারত্বকে আরও বড় করার। এ জন্য ক্রেতা টানতে মোটরসাইকেলে যুক্ত করা হচ্ছে নিত্যনতুন প্রযুক্তি। নতুন ডিজাইন করা হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে ইঞ্জিনের শক্তি। এ উদ্যোক্তাদের নীতি-সহায়তা দিয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিতে চায় সরকার। এবারের বাজেটে সেই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
দেশে এখন প্রতি ৫৪ জনে একজন মোটরসাইকেল ব্যবহার করছেন। পাঁচ বছর আগে এ সংখ্যা ছিল প্রতি ১৬১ জনে মাত্র একজন। ছবি: নিউজবাংলা
ফোর স্ট্রোক ইঞ্জিন চারটি ধাপে জ্বালানিকে ব্যবহার উপযোগী করে। এটি একই সঙ্গে যেমন জ্বালানি-সাশ্রয়ী, তেমনি মাইলেজ বেশি, শব্দ কম এবং তুলনামূলক পরিবেশবান্ধব। অন্যদিকে টু স্ট্রোক ইঞ্জিন দুই ধাপে জ্বালানিকে ব্যবহার উপযোগী করে। তবে এ জ্বালানির একটি বড় অংশ অব্যবহৃত থাকে। ফলে এর জ্বালানিও বেশি লাগে এবং এটি কালো ধোঁয়া উৎপন্ন করে।
সরকারের পরিকল্পনা হলো আগামীতে দেশে তৈরি সব ধরনের মোটরসাইকেল হবে আরও বেশি গতিসম্পন্ন। তাই কারখানায় ফোর স্ট্রোক বা টু স্ট্রোক ইঞ্জিন মোটরসাইকেলের উৎপাদন বা সংযোজন পর্যায়েই দুই চাকার এই বাহনটির গতি ২৫০ সিসির ওপরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ খাতে বিনিয়োগ করা কোম্পানিগুলোকে সুরক্ষা দেয়ার অংশ হিসেবে উচ্চগতির মোটরসাইকেল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে।
বাজেটে কী পেল মোটরসাইকেল খাত
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে বলেছেন, দেশে ২৫০ সিসির ঊর্ধ্বের ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেল প্রস্তুত করার কারখানা গড়ে উঠেছে। অন্যদিকে ২৫০ সিসি পর্যন্ত মোটারসাইকেল আমদানিতে ফোর স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ এবং টু স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ২৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপিত আছে।
অর্থমন্ত্রী ২৫০ সিসির ঊর্ধ্বের ইঞ্জিন ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেল আমদানিতে ফোর স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ এবং টু স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ২৫০ শতাংশ বহাল রাখার প্রস্তাব করেছেন বাজেটে।
খাতসংশ্লিষ্টরা এই বাজেট পদক্ষেপের পর্যালোচনা করতে গিয়ে বলেছেন, মোটরসাইকেল ইস্যুতে অর্থমন্ত্রী বাজেটে যে রাজস্ব পদক্ষেপ নিয়েছেন, তার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো স্থানীয় মোটরসাইকেল শিল্পের সক্ষমতা বাড়ানো ও উৎপাদিত কিংবা সংযোজিত মোটরসাইকেলের গতিকে উন্নত দেশের মতো করা, যাতে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করেও উন্নত দেশে রপ্তানির সুযোগ তৈরি হয়। একই সঙ্গে আমদানিনির্ভর বিদেশি মোটরসাইকেলের প্রতি ঝোঁক কমিয়ে ক্রেতাকে দেশে তৈরি মোটরসাইকেল কিনতে উৎসাহিত করাও উদ্দেশ্য।
এ ক্ষেত্রে আরেকটি উদ্দেশ্য হলো বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্দার প্রেক্ষাপটে এই মুহূর্তে মোটরসাইকেলের মতো বিলাসপণ্যের আমদানি ঠেকাতে ক্রেতাকে নিরুৎসাহিত করা, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার অহেতুক অপচয় রোধ করতে ভূমিকা রাখবে।
বাড়ছে মোটরসাইকেলের ব্যবহার
দেশে মোটরসাইকেলের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে স্থানীয় উৎপাদনও। পরিসংখ্যান বলছে, দেশে এখন প্রতি ৫৪ জনে একজন মোটরসাইকেল ব্যবহার করছে। পাঁচ বছর আগে এ সংখ্যা ছিল প্রতি ১৬১ জনে মাত্র একজন। অর্থাৎ ব্যবহারকারী বেড়েছে প্রায় তিন গুণ (২ দশমিক ৯৮ গুণ)। এখন দেশে সর্বনিম্ন ৭৭ হাজার টাকা থেকে আড়াই লাখ টাকার মধ্যে প্রায় সব ব্র্যান্ডের যেকোনো মডেলের মোটরসাইকেল মিলছে।
চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) হিসাব অনুযায়ী, সারা দেশে নিবন্ধিত মোটরসাইকেলের সংখ্যা ২৯ লাখ ৯১ হাজার।
বিআরটিএর তথ্য বলছে, সম্প্রতি দেশে ভাড়ায় চালিত অ্যাপভিত্তিক মোটরসাইকেল বৃদ্ধির কারণে এর ক্রয়-বিক্রয় এবং নিবন্ধনের হারও ঊর্ধ্বমুখী। নিবন্ধিত প্রায় ৩০ লাখ মোটরসাইকেলের মধ্যে ২৫ শতাংশই চলাচল করছে ঢাকায়।
মোটরসাইকেলের বাজার
বাংলাদেশ মোটরসাইকেল অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএএমএ) তথ্যমতে, ২০১৭ সালে প্রতিদিন এক হাজারের বেশি মোটরসাইকেল বিক্রি হতো। ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫২৩টিতে। ২০১৭ সালে মোটরসাইকেলের বাজার ছিল ৪ হাজার কোটি টাকার। সেটি ২০১৯ সালে বেড়ে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।
সংগঠনটির তথ্যমতে, ২০১৪ সালে দেশে সবকটি ব্র্যান্ড মিলে মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছিল ১ লাখ ৮৫ হাজার ইউনিট। ২০১৮ সালে সেই বিক্রি বেড়ে হয় ৪ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ ইউনিট, যা ২০১৯ সালে এসে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ ইউনিটে।
দেশে উৎপাদিত ও সংযোজিত মোটরসাইকেল বর্তমানে সর্বনিম্ন ৮০ সিসি ও সর্বোচ্চ ১৬০ সিসি ক্ষমতাসম্পন্ন ফোর স্ট্রোক ও টু স্ট্রোক। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মোটরসাইকেলকে ২৫০ সিসির ওপরে নিয়ে যেতে চায় সরকার। ছবি: সংগৃহীত
এর মধ্যে বাজার অংশীদারত্বের হিসাব অনুযায়ী ভারতীয় ব্র্যান্ড বাজাজের একক অংশীদারত্ব ছিল ৫৩ শতাংশ এবং টিভিএসের ১২ শতাংশ। এ ছাড়া ভারতীয় ও জাপানি ব্র্যান্ড হিরো হোন্ডার ১৫ শতাংশ এবং দেশীয় ব্র্যান্ড রানারের ৮ শতাংশ। বাকি ১২ শতাংশের বাজার ছিল দেশীয় ও বিদেশি অন্য ব্র্যান্ডগুলোর। তবে বাজার অংশীদারত্বে ক্রমেই প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ইয়ামাহা, সুজুকি ও মাহেন্দ্রাও।
আগামীর সম্ভাবনা যেখানে
খাতসংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের দাবি, সরকারের নীতি-সহায়তার কারণেই মোটরসাইকেল শিল্পে এই বিপ্লব ঘটেছে। তবে উন্নতির এখনও অনেক বাকি। মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে প্রতি চারজনে একজন মোটরসাকেল ব্যবহারকারী। ভারতে সেটি প্রতি ২০ জনে একজন। সেদিক থেকে বাংলাদেশ জনবহুল হয়েও মোটরসাইকেল ব্যবহারে অনেক পিছিয়ে। আর এটাই হলো দেশের মোটরসাইকেলের বাজারের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার জায়গা। যার ওপর দাঁড়িয়ে আজ দেশে বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
সরকারের দায়িত্বশীল মহল থেকে দাবি করা হচ্ছে, আগামীর বাংলাদেশে মোটরসাইকেল শিল্পের সম্ভাবনা বিরাট।
এ প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন নিউজবাংলাকে বলেন, সরকারের নীতি-সহায়তার কারণেই মোটরসাইকেল শিল্পে বিপ্লব ঘটেছে। দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা এগিয়ে এসেছেন। খাতটির উন্নয়নে ভবিষ্যতেও প্রয়োজনীয় নীতিসহায়তা অব্যাহত রাখা হবে। তিনি জানান, স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি এ শিল্প খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোরও উদ্যোগ রয়েছে।
লক্ষ্য প্রতি বছর ১০ লাখ ইউনিট উৎপাদন
শিল্প মন্ত্রণালয়ের দাবি, চাহিদার ৬০ শতাংশ মোটরসাইকেল দেশেই উৎপাদন হয়। বাকি ৪০ শতাংশ এখনও আমদানি হয়। তবে সরকারের মোটরসাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতি ২০১৭ অনুযায়ী, প্রতি বছর ৪ দশমিক ৪ শতাংশ হারে মোটরসাইকেল উৎপাদন প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এভাবে ২০২৭ সালের মধ্যে সরকার স্থানীয়ভাবে মোটরসাইকেলের উৎপাদন বছরে ১০ লাখ ইউনিটে নিয়ে যেতে চায়। এর পাশাপাশি ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
মোটরসাইকেলে বাজার মাত করছে যারা
বর্তমানে ভারতের বাজাজ, টিভিএস ও হিরো, জাপানের হোন্ডা, সুজুকি ও ইয়ামাহার মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিদেশি মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বাংলাদেশে যৌথ উদ্যোগে কারখানা স্থাপন করেছে। কোনো ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেছে বাংলাদেশি কোম্পানি, কারিগরি সহায়তা দিয়েছে ব্র্যান্ডের মূল প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের একক বিনিয়োগের মাধ্যমে রানার, গ্রামীণ মোটরস, লিফান, রোডমাস্টারের মতো স্থানীয় ব্র্যান্ডও ইতোমধ্যে সুপরিচিত হয়ে গেছে।
পাশাপাশি এসব কোম্পানির মাধ্যমে এ শিল্পের যন্ত্রাংশ তৈরিতে রানার ইন্ডাস্ট্রিজ, নিটল মেশিনারিজ, কিউভিসিসহ বিভিন্ন সহযোগী শিল্পও গড়ে উঠেছে। বাজারজাতকারী এসব প্রতিষ্ঠান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বৈশ্বিক সর্বশেষ প্রযুক্তির সমন্বয়ে ক্রেতার রুচি অনুযায়ী সামনে আনছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেলের নতুন নতুন মডেল, যা বাজারে আসামাত্র লুফে নিচ্ছেন ক্রেতারা।
যেভাবে দেখছে উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানগুলো
দেশে ভারতের হিরো ও জাপানোর হোন্ডা ব্র্যান্ডের পরিবেশক ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নিটল-নিলয় গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ নিউজবাংলাকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মোটরসাইকেলের প্রতি মানুষের আকর্ষণ, চাহিদা ও ক্রয়ক্ষমতা সমান্তরাল বাড়ছে। এখন এটি মোটেও বিলাসপণ্য নয়। বরং দ্রুত সময়ে সবার গন্তব্যে পৌঁছানোর নিরাপদ ও অত্যাবশ্যকীয় বাহন।’
তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের মূল বার্তা হচ্ছে: সরকার স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে চায়। সক্ষমতা বাড়াতে চায়। এ ক্ষেত্রে ২৫০ সিসি পর্যন্ত সুরক্ষা শুল্ক বা সম্পূরক শুল্কের উদ্দেশ্য হলো স্থানীয় কোম্পানিগুলোও যাতে সেই সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। আবার এ পদক্ষেপ নেয়ার আরেকটি সময়োপযোগী উদ্দেশ্য হলো, সারা বিশ্ব এখন অর্থনৈতিকভাবে খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমদানি যতটা সংকুচিত করা যাবে, বৈশ্বিক ঝুঁকি তত কম থাকবে। ফলে রিজার্ভও সুরক্ষিত থাকবে। এখানে পদক্ষেপ একটি, কিন্তু কাজ হয়েছে দুটি।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অটোমোবাইল অ্যাসেম্বলার অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ও দেশীয় ব্র্যান্ড ‘রানার’-এর উদ্যোক্তা হাফিজুর রহমান খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২৪ অনুযায়ী সুস্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে, উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় কারখানায় কম্পোনেন্ট কাজে ব্যবহার ছাড়া দেশে ১৬৫ সিসির ঊর্ধ্বে কোনো মোটরসাইকেল আমদানি করা যাবে না। তবে শুধু পুলিশ বাহিনীর কাজে ব্যবহার প্রয়োজনে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণসাপেক্ষে আমদানি করার সুযোগ রাখা হলেও বাকিদের জন্য তা পুরোপুরি নিষিদ্ধ।
‘প্রস্তাবিত বাজেটে ২৫০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল আমদানিতে ২৫০ সিসি ক্ষমতাসম্পন্ন ফোর স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ ও টু স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ২৫০ শতাংশ পর্যন্ত সম্পূরক শুল্কারোপের হ্রাস-বৃদ্ধির বিষয়টি সেই অর্থে কিছু যায় আসে না। কারণ দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার বিষয়টি আমদানিনীতির মাধ্যমেই সুস্পষ্ট করা হয়েছে। রাজস্ব পদক্ষেপের আওতায় কম শুল্কেই উদ্যোক্তারা শিল্পের প্রয়োজনে আনার সুযোগ রাখা হয়েছে। এখানে আমদানিকারকদের সঙ্গে দেশীয় শিল্পের কোনো সম্পর্ক নেই।
‘তবে এটা ঠিক, এখন পর্যন্ত দেশে মোটরসাইকেল শিল্পের যে অগ্রগতি সেটি সরকারের নীতি-সহায়তার ওপর ভর করেই হয়েছে। সামনে সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল হবে যদি কম্পোনেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং বাংলাদেশে আরও বেশি হয়। এর জন্য স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদনের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। যত বেশি উৎপাদন স্থানীয়ভাবে করতে পারব, তত বেশি যন্ত্রাংশ স্থানীয় মার্কেট থেকেই কেনা সম্ভব হবে। তখন প্রতিযোগিতার বাজারে দামও কমে আসবে, যা আমাদের মোটরসাইকেলের বাজারে টিকে থাকার সক্ষমতা বাড়াবে।’
দেশে ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসিআই মোটরসের অ্যাসিস্ট্যান্ট মার্কেটিং ম্যানেজার ও ইয়ামাহা মোটরসাইকেল বাংলাদেশের হেড অফ মার্কেটিং হুসেইন মোহাম্মদ অপশন বলেন, ‘দেশে এখন ৮০, ১১০, ১২৫, ১৩৫, ১৫০, ১৫৫ ও ১৬০ সিসির গতিবেগসম্পন্ন মোটরসাইকেল বাজারজাত হচ্ছে। এই মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ হয় দীর্ঘমেয়াদি। অথচ কোনো নতুন মডেল কিংবা ভিন্ন ভিন্ন সিসির মোটরসাইকেল উৎপাদনে ভিন্ন ভিন্ন প্ল্যান্টের প্রয়োজন হয়। সে ক্ষেত্রে যে বিনিয়োগ করতে হয়, তা খুবই ব্যয়বহুল।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোম্পানিগুলোর সেই ব্যয়বহুল বিনিয়োগ সক্ষমতা এখন নেই। তবে সবাই চায় তাদের সক্ষমতাকে আরও ছাড়িয়ে যেতে। নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে। সেই চেষ্টাও হয়তো অনেকে করছে। তবে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষা দেয়ার যে চেষ্টা হয়েছে, তা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। এখনই তার সুফল পাওয়া যাবে না, তবে ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত হচ্ছে।’
সামনে যত চ্যালেঞ্জ
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোটরসাইকেল শিল্পের বর্তমানে চার চ্যালেঞ্জ আছে।
প্রথমত, মোটরসাইকেল শিল্পে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের ৭০ শতাংশ এখনও আমদানিনির্ভর। বাকি ৩০ শতাংশ স্থানীয় জোগান আসে। তাই মোটরসাইকেল শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ বা সহযোগী শিল্প কিংবা ভেন্ডরের উন্নয়ন প্রয়োজন, যারা কারখানার জন্য বিভিন্ন খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি করবে।
দ্বিতীয়ত, মোটরসাইকেলের নিবন্ধন ব্যয় হ্রাস।
তৃতীয়ত, সহজ শর্তে ক্রেতাকে মোটরসাইকেল কেনায় ঋণ প্রদান।
চতুর্থত, মোটরসাইকেল চালনার প্রশিক্ষণের জন্য সহায়তা প্রদান।
করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে দুই বছর তিন মাস বন্ধ থাকার পর কুমিল্লার বিবিরবাজার স্থল বন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপার শুরু হয়েছে।
সোমবার থেকে বাংলাদেশ-ভারতের যাত্রীদের পদচারণায় আবার মুখোর হয়ে উঠেছে এই বন্দর।
বিবিরবাজার স্থল বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) হারাধন চন্দ্র পাল জানান, করোনার কারণে ২০২০ সালের ১৪ মার্চ বিবিরবাজার বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের যাতায়াত বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
দুই বছর তিন মাস পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে সোমবার থেকে যাত্রীদের জন্য বন্দর খুলে দিতে বলা হয়।
তিনি জানান, গত দুই বছর সাধারণ মানুষের যাতায়াত বন্ধ থাকলেও এই বন্দরে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক ছিল। বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত সিমেন্ট রপ্তানি আর ভারত থেকে পেঁয়াজ, আদাসহ ৩৮ পণ্য আমদানি হচ্ছিল। তবে পরিমাণে কম ছিল।
বিবিরবাজার ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা আবদুল হামিদ জানান, সোম ও মঙ্গলবার ভারত থেকে ২৫ জন বাংলাদেশে আসেন। এই দুই দিনে বাংলাদেশ থেকে পাঁচ জন ভারতে গেছেন।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে বিবিরবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বন্দর খোলার তথ্য অনেকে জানেন না।
ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা আবদুল হামিদ জানান, কয়েকদিনের মধ্যে বন্দরে আগের মতো প্রাণচাঞ্চল্য ফিরবে।
বিকেলে ভারত যাওয়ার জন্য বন্দরে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সারছিলেন প্রদীপ দত্ত।
তিনি বলেন, ‘আগরতলায় আত্মীয় স্বজন আছে। বন্দর খুলে দেয়ায় স্বজনদের দেখতে যাচ্ছি। অনেক দিন পর যাচ্ছি। এখন সবার সঙ্গে দেখা হবে। খুব আনন্দ লাগছে।’
আরও পড়ুন:আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান বা পরিচালকদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগের সময় আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।
৩০ জুনের মধ্যে পদত্যাগ করার কথা বলা হলেও এখন তা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ মঙ্গলবার এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করেছে।
এর আগে, ১২মে তারিখে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বা পর্ষদ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত সহায়ক কমিটি যথা- নির্বাহী কমিটি, অডিট কমিটি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত ব্যক্তি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে গঠিত ও পরিচালিত প্রতিষ্ঠান বা ফাউন্ডেশনের পরিচালনা পর্ষদ বা গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান, পরিচালক বা সদস্য হতে পারবেন না।
কেউ এরকম থাকলে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। একইসঙ্গে পদ শূন্যের পরে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে জানাতে হবে।
এছাড়া কোনো ব্যক্তি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক, মনোনীত, প্রতিনিধি বা স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে ন্যূনতম এক বছর দায়িত্ব পালন করলে মেয়াদপূর্তি, অবসর বা অব্যাহতির পর আর ওই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত বা চুক্তিভিত্তিক পদে নিযুক্ত হতে পারবেন না।
এরকম কাউকে নিয়োগ দেয়া হলে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অব্যাহতি দিতে হবে। পদ শূন্যের পরে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে জানাতে হবে।
তবে এই সিদ্ধান্ত কিছুটা ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগের এ নির্দেশনা পরিপালনের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করা হয়। সার্বিক বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট পদ হতে পদত্যাগ বা অব্যাহতি গ্রহণের মাধ্যমে পদ শূন্য করার সময়সীমা ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়া, আগে জারি করা প্রজ্ঞাপনের অন্যান্য বিষয় অপরিবর্তিত থাকবে।
মন্তব্য