মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলার কথা মাথায় রেখে আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের কারণে পুঁজিবাজারের প্রতি কম মনোযোগ দেয়া হয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান।
গত ৯ জুন বাজেট পেশের পর প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দেয়ার দুই সপ্তাহ পর মঙ্গলবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট-বিআইসিএমের এক সেমিনারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সেমিনারের বিষয় ছিল, ‘বাজেট ২০২২-২৩: ইমপ্লিকেশনস ফর দ্য ক্যাপিটাল মার্কেট।’
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাজেটের পরে সংবাদ সম্মেলনে আমরা জানিয়েছি, এ বছরের বাজেটে পুঁজিবাজারের ওপরে সরকার মনোযোগ কম দিয়েছে। এ রকমেরই একটা ধারণা দাঁড়ায়।’
পরক্ষণেই বাজেটে পুঁজিবাজারকে কম গুরুত্ব দেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘এ বছরের মূল্যস্ফীতি আমদানিজনিত। যেসব দেশ গত ১০ বছরেও মূল্যস্ফীতি দেখে নাই, তারা মূল্যস্ফীতির চরম পর্যায়ে চলে গেছে। এগুলো আমাদের বাজেটপ্রণেতারা চিন্তা করেছেন। কীভাবে আমাদের স্বাস্থ্য খাত পুনরুদ্ধার করা যাবে, আমাদের কর্মসংস্থানের অবস্থা কী হবে, আমাদের সাবসিডির অবস্থা কী হবে- এসব বিষয় বাজেট প্রণয়নে গুরুত্ব পেয়েছে।
‘আমাদের জ্বালানি খাতে ব্যাপক ভর্তুকি দিতে হয়। আমি জ্বালানি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলাম, তাই জানি। কৃষি খাতে, সার-বীজ এগুলোর দাম সহনীয় রাখতে ভর্তুকি যায়, বিদ্যুৎ খাতেও দিতে হয়। এরপরেই আমাদের সোশ্যাল সেফটি নেট প্রকল্প, যেগুলোর সাইজ প্রতি বছরই বাড়ে। এই জায়গাগুলোতে গুরুত্ব দিতে গিয়ে আমরা যে প্রত্যাশা করেছিলাম তার প্রতিফলন দেখতে পাইনি।’
পুঁজিবাজারের বিকাশে সরকারের ভূমিকাও স্মরণ করেন ডিএসই চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্যাপিটাল মার্কেটের অনেক সমালোচনা রয়েছে। সমালোচনা থাকলেও পুঁজিবাজার আজকে যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, সেটি সরকারের নীতিসহায়তার সাহায্যেই আসতে পেরেছে।’
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইসিএম নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মাহমুদা আক্তার।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধে বিআইসিএমের রিসার্চ ফেলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সুবর্ণ বড়ুয়া বলেন, ‘পুঁজিবাজারকে নিরুৎসাহিত করার মতো কোনো বিষয় বাজেটে নেই। পুঁজিবাজারের জন্য সরকারের প্রণোদনাও কম। এখানে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।’
পুঁজিবাজারে লিস্টেড কোম্পানিগুলোর জন্য প্রস্তাবিত ২০ শতাংশ করহার শর্তহীন হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি। বলেন, ‘পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারীদের জন্য আর্থিক উদ্দীপনা থাকা উচিত, যাতে পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য তারা আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করে।’
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করহার আড়াই শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশ করার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে যেসব কোম্পানি তার মোট শেয়ারের কমপক্ষে ১০ শতাংশ বাজারে ছেড়েছে, তারাই এর সুফল পাবে।
আবার ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইল কোম্পানি, তামাক কোম্পানির করহার আগের মতোই সাড়ে ৩৭ থেকে ৪০ শতাংশ থাকবে।
পেনশন ফান্ডকে পেশাদার ফান্ড ম্যানেজারের মাধ্যমে বিনিয়োগ করাসহ আরও কিছু পরামর্শ দেন সুবর্ণ বড়ুয়া।
তার সঙ্গে যৌথভাবে মূল প্রবন্ধ তৈরি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সজীব হোসেন।
আলোচক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সিরডাপের রিসার্চ ডিরেক্টর হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বাজেটে সরকার সঠিকভাবে বৈশ্বিক যে ফ্যাক্টরগুলো রয়েছে সেগুলোকে প্রাধান্য দিয়েছে। পরিস্থিতির বিবেচনায় সেক্টরগুলোকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারের ক্ষেত্রে আমার বক্তব্য হলো, পুঁজিবাজারে যেখানে ডিমান্ড চুপসে গেছে, সেখানে সাপ্লাই বাড়ানো উচিত নয়। বাজেটের যে বিষয়গুলো এসেছে, তা পুঁজিবাজারের জন্য পজিটিভ। কালো টাকা পুঁজিবাজারে আসার সুযোগ দেয়া এমন কোনো বিষয় নয়, যা পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করবে। অর্থনীতিতে বাইরের যে ঢেউ এসেছে সেটা সামলে নিতে হবে। বিএসইসির সাপ্লাই পলিসির দিকটিও ভাবা উচিত।’
বাংলাদেশ ব্যাংক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করে এমন অভিযোগ ঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক টার্গেট করে শেয়ার মার্কেট ডাউন করা পলিসি দিচ্ছে তা কিন্তু নয়। বাংলাদেশ ব্যাংককে পলিসি নিতে হয় সামগ্রিক অর্থনীতির কথা বিবেচনা করে।’
চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, স্নেহাশিস মাহমুদ অ্যান্ড কোং-এর পার্টনার স্নেহাশিস বড়ুয়া, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি জিয়াউর রহমানও সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন:সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন। প্রথম ঘণ্টায় বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার দিনের শুরুতেই বড় পতনের মুখে পড়েছে।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বাড়ে ১০ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ২ পয়েন্ট এবং ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয় ৯০ কোটি টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বাড়ে ২০২টির এবং কমে ৭২টির। অপরিবর্তিত ছিল ৭৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে সূচক কমেছে চট্টগ্রাম পুঁজিবাজারের। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএসইএক্স সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছিল ২৮টির। দাম কমেছিল ২৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল সাতটি কোম্পানির শেয়ারদর।
প্রথম ঘণ্টায় সিএসইতে মোট লেনদেন হয় ৭৯ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে বড় উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও বজায় আছে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রভাব।
আজ লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার পুঁজিবাজারে বেড়েছে তিনটি সূচকই। এর পাশাপাশি দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির।
লেনদেন শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ২৬ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ৭ পয়েন্ট এবং ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয় ১৭৬ কোটি টাকা।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৫৩টির, কমেছে ৬৩টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রাম পুঁজিবাজারের লেনদেন। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএসইএক্স সূচক বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৯, কমেছে ২১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় সিএসইতে মোট লেনদেন হয় ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার।
আরও পড়ুন:ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শুরু হয়েছে পতন দিয়ে।
লেনদেনের শুরুর ঘণ্টাতেই পয়েন্ট কমে তিনটি সূচকের।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সোমবার লেনদেন শুরুর পর থেকেই সূচক কমতে থাকে।
প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৬ পয়েন্ট। আর বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএসই-৩০ কমেছে ২ পয়েন্ট।
পতনের ধারা অব্যাহত ছিল শরিয়াহভিত্তিক শেয়ারের সূচকে। ডিএসইএসের সূচক কমে দশমিক ১৩ পয়েন্ট।
শুরুর ঘণ্টায় বাজারে লেনদেন হয় প্রায় ৮০ কোটি টাকার। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে দাম কমে ১৫৪টি এবং বাড়ে ১২২টি শেয়ারের। দাম অপরিবর্তিত ছিল ৮০টি শেয়ারের।
দামের দিক থেকে ভালো অবস্থানে ছিল অটোমোবাইল, পেপার মিলস, ফেব্রিকস ও প্রকৌশল কোম্পানির শেয়ারের দাম। দিনের শুরুতে শীর্ষ ২০ ব্যাংক খাতের শেয়ারের সংখ্যা তিনটি।
এদিকে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজার সূচক হারিয়েছে ৩৮ পয়েন্ট। দুই দিনের পতনে বর্তমানে প্রধান সূচক কমে নেমেছে ৫ হাজার ১৫৫ পয়েন্টে।
পতনের ধারা অব্যাহত আছে চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় নিম্নমুখী ছিল প্রধান সূচক।
এ পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতেই দাম কমেছে ৪১টি এবং বেড়েছে ২৭টি কোম্পানির শেয়ারের। প্রথম ঘণ্টায় লেনদেন হয়েছে ৪৭ কোটি টাকার শেয়ার ও বন্ডের।
আরও পড়ুন:দেশের পুঁজিবাজারে অস্থিরতার জন্য বড় খেলোয়াড় ও রেগুলেটরদের দায়ী করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘এজন্য বিনিয়োগকারীদের দায়ী করছি না। এর পেছনে প্লেয়ার ও রেগুলেটরের অনেক দোষ আছে। এ বিষয়টি প্রচার করা দরকার। আমরা এগুলো পরিবর্তন ও সংস্কারের চেষ্টা করছি।’
শনিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ব্যাংকিং অ্যালমানাক’-এর ষষ্ঠ সংস্করণের প্রকাশনা উৎসবে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আর্থিক খাতের সঠিক তথ্য তুলে ধরাই ব্যাংকিং অ্যালমানাকের মূল উদ্দেশ্য। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা বাংলাদেশের আর্থিক, সামাজিক ও অন্যান্য খাতের পরিসংখ্যান নিয়ে নানা ধরনের সন্দেহ প্রকাশ করে। এতে তথ্য-উপাত্তের গ্রহণযোগ্যতা ক্ষুণ্ন হয়। এছাড়া যেকোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা বা গবেষণার জন্য সঠিক তথ্য-উপাত্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস) বলা হয়েছে, তথ্য যা আছে তা-ই যেন প্রকাশ করা হয়। এখানে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই।
“আমাদের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের মতো পুঁজিবাজারের অবস্থাও একই রকমের। পুঁজিবাজারের শেয়ার প্রাইস কমে যাচ্ছে বলেই ‘চেয়ারম্যানকে রিমুভ কর’ বলে মিছিল হচ্ছে। আমি এ ব্যাপারে অনড়। বলেছি, থাকো।”
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আপনারা জেড ক্যাটাগরির শেয়ার কিনছেন, যার কোনো অস্তিত্ব নেই। অথচ এই শেয়ার মহা আনন্দে কিনছেন। এগুলোর ন্যূনতম কোনো মূল্য নেই, কয়েকদিন পরই এগুলো ওয়েস্ট পেপার হিসেবে ব্যবহার হবে। এজন্য একটু কষ্ট করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সঠিক তথ্য-উপাত্ত ছাড়া কোনো কিছু মূল্যায়ন হয় না। বিগত ১৫ বছরের তথ্য-বিভ্রাট নিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। মূল্যস্ফীতি, জিডিপি নিয়ে তথ্য বিভ্রাটের পেছনে অনিচ্ছাকৃত কিছুটা ভুল রয়েছে; আবার নীতিনির্ধারকরাও তথ্য লুকানোর চেষ্টা করেন। এ অবস্থা থেকে বের হতে হবে।’
তথ্য বিভ্রাটের বিষয়ে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা কোনো পাওয়ার দেখাতে আসিনি, একটি দায়িত্ব নিয়ে এসেছি। বিগত ১৫ বছরের তথ্য নিয়ে নানা বিভ্রাট রয়েছে। তথ্য লুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
‘আমরা এগুলো পরিবর্তন ও সংস্কারের চেষ্টা করছি। কারণ দাতা সংস্থাগুলো আমাদের কাছে নানা প্রশ্ন করে। তারা বোঝাতে চান, আগেই কম ছিল ইত্যাদি। এ নিয়ে আমরা তাদের বোঝাচ্ছি- আগের তথ্য লুকানো ছিল, আমরা সঠিকটা উপস্থাপন করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো করার চেষ্টা করছি, যাতে ব্যবসায়ীরা এক স্থান থেকে সব তথ্য পায়। তথ্যের জন্য ব্যবসায়ীদের ১০ জায়গায় দৌড়াতে হবে না। যদি আরও সুসংহতভাবে তথ্য ম্যানেজমেন্ট (ব্যবস্থাপনা) করতে না পারি তাহলে সামনে আরও সমস্যা তৈরি হবে। আমাদের এই মিথ্যা তথ্যের প্রয়োজন নেই। কারণ প্রিয় মিথ্যা যন্ত্রণাদায়ক।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকিং অ্যালমানাকের চেয়ারম্যান ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সিকদার, এবিবির সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, বইটির নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ জিয়া উদ্দিন আহমেদ, প্রকল্প পরিচালক আব্দার রহমান প্রমুখ।
২০১৬ সাল থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকের বার্ষিক তথ্য নিয়ে ‘ব্যাংকিং অ্যালমানাক’ নামের এ প্রকাশনা প্রকাশ করে আসছে সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘শিক্ষাবিচিত্রা’।
আরও পড়ুন:দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার কর্মদিবসের শুরুর প্রথম ঘণ্টায় সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে।
৪৫ হাজার ৩৫৫ লেনদেনের মাধ্যমে ৪ কোটি ৬৩ লাখ শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে।
এ সময়ে ২৬২ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে।
ওই সময় ডিএসইতে ৩৭৮টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে দাম বাড়ে ৩০৬টির, কমে ৩৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৮টি কোম্পানির শেয়ারমূল্য।
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইএক্সের প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৬৫ দশমিক ৭১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২৪৪ দশমিক ৫৮ পয়েন্টে, ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ২২ দশমিক ৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৭৫ দশমিক ২৫ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ স্পেশাল ব্লু চিপ ২৩ দশমিক ৫২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৩১ দশমিক ৮৪ পয়েন্টে দাঁড়ায়।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবারও সূচকের পতন হয়েছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, লেনদেন শুরুর প্রথম দুই ঘণ্টায় ৬৩ হাজার ৩২৬টি লেনদেনের মাধ্যমে ১৭৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কেনাবেচা হয়েছে, যা মঙ্গলবারের একই সময়ের তুলনায় ৪৭ কোটি টাকা কম।
গতকাল মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২২৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
আজ সকালে ৩৭৩টি কোম্পানি লেনদেন করেছে। এর মধ্যে ১৪০টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮০টির শেয়ার। এটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্র মনোভাবকেই তুলে ধরে।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২৮৩ দশমিক ০৭ পয়েন্টে স্থির হয়।
এদিকে ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক শূন্য দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৫৪ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে, তবে ডিএস৩০-এর ব্লু-চিপ শেয়ারগুলোর সূচক ১১ দশমিক ০৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৩১ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন:ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রেখেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বেঞ্চমার্ক সূচক উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘আগাম শেয়ার নিষ্পত্তি, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (আইসিবি) মাধ্যমে তারল্য সহায়তা এবং সম্ভাব্য মূলধন লাভের কর কমানোসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের কারণে বাজারে এই ইতিবাচক পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।’
বিনিয়োগকারীদেরও সচেতনভাবে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে দেখা যাচ্ছে। তারা হয় পূর্ববর্তী বিনিয়োগ থেকে মুনাফা সুরক্ষিত করেছে বা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উপার্জনের প্রতিবেদনসহ স্টকগুলোতে মূলধন পুনরায় বিনিয়োগ করেছে। এই নির্বাচনমূলক পদ্ধতি আশার সঞ্চার করায় তা সামগ্রিক বাজারের গতিতে অবদান রেখেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১৬ দশমিক ৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে পাঁচ হাজার ৩১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় বাজার লেনদেন ৪৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৬০৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা হয়েছে।
আগের পাঁচ সপ্তাহে ৬১৬ পয়েন্ট হারানোর পর টানা দুই সপ্তাহে ২০২ পয়েন্ট যোগ করেছে ডিএসইএক্স।
ডিএসইর খাতভিত্তিক সূচকগুলোকেও বেশ ভালো করতে দেখা গেছে। ৩০টি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস৩০ ইনডেক্স ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে লেনদেন শেষ করেছে। একইভাবে শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী ডিএসইএস সূচক ৪৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকায়।
বাজার কার্যকলাপের একটি প্রধান সূচক বাজার লেনদেন এই সপ্তাহে তিন হাজার ২৯ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের দু’হাজার ৮৩ কোটি টাকার লেনদেনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সে হিসাবে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৬০৬ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহের গড় ৪১৬ কোটি টাকার তুলনায় ৪৫ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য