আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ উঠার পর সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
রোববার লংকাবাংলা কর্তৃপক্ষ ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সরকারের পাওনা সুদসহ ১৩ কোটি ৭১ লাখ পরিশোধ করে।
ঢাকা উত্তর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার তাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী লংকাবাংলার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত দাবিনামা জারি কর হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পাপ্র্য সমুদয় ভ্যাট পরিশোধ করেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।’
এ বিষয়ে লংকা বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা শাহরিয়ারকে ফোন দেয়া দিলে তিনি রিসিভ করেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা দেয়া হলে জনসংযোগ বিভাগের মো. রাজিউদ্দিন জানান, এমডি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য দেবেন না।
লংকাবাংলা বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে-এ খবর নিউজবাংলায় প্রকাশিত হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। সরকারি রাজস্ব পরিশোধের জন্য ভ্যাট অফিস থেকে তাদের উপর চাপ আসে।
এ ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ভ্যাট অফিসে যোগাযোগ করে টাকা পরিশোধ করে দেয়।
রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউর সফুরা টাওয়ারের লেভেল-১১তে কার্যালয় থাকা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ উঠোর পর তা উদ্ঘাটনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের –এনবিআর-ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
বিষয়টি নিরীক্ষার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়। তারপর লংকাবাংলার কাছ থেকে ভ্যাটসংক্রান্ত দলিলপত্র, দাখিলপত্র, বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন চাওয়া হয়।
লংকাবাংলার দেয়া তথ্যেই বেরিয়ে আসে ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি।
ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুর রউফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের বিরুদ্ধে বিভিন্ন খাতে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করা হয়। ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর সময়ে প্রযোজনীয় কাগজপত্র ও ডকুমেন্ট জব্দ করে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তদন্ত চালানো হয়। এতে ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে।
‘এ বিষয়ে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকা উত্তর কমিশনারেটে পাঠানো হয়েছে।’
কী আছে ভ্যাট গোয়েন্দাদের প্রতিবেদনে
ভ্যাট গোয়েন্দাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত লংকাবাংলার ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ ১১ কোটি ৩৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪২ টাকা। অপরিশোধিত ভ্যাট বা মূসকের ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ ৯ কোটি ২৬ লাখ ৮২ হাজার ৫৬৪ টাকা। সুদসহ অপরিশোধিত ভ্যাট ২০ কোটি ৬০ লাখ ৪১ হাজার ৬০৬ টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ বছরে নন ব্যাংকিং সেবা প্রদান, গ্রহণে মাসিক দাখিলপত্র, ট্রেজারি চালানে পরিশোধিত ভ্যাট, উৎসে ভ্যাট, স্থান-স্থাপনার ভ্যাট যাচাই করে এই ফাঁকির পরিমাণ উদ্ঘাটন করে তদন্ত কমিটি।
অফিস ও স্থাপনা ভাড়ায় ফাঁকি
লংকাবাংলা ফাইন্যান্স অফিস ও স্থাপনা ভাড়ার ক্ষেত্রে সরকারকে ৩৩ লাখ ৩৫ হাজার ৩০৭ টাকা ফাঁকি দিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০১১ সালের একটি স্ট্যাটিউরি রিগুলেটরি অর্ডার (এসআরও) অনুযায়ী, এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে ৯ শতাংশ হারে মূসক দেয়ার নির্দেশ দেয়। পরবর্তী সময়ে ২০১৬ সালে আরও একটি এসআরওর মাধ্যমে মূসকের হার বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়।
লংকাবাংলার মূসক ফাঁকির বিষয়টি যেহেতু ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত, তাই দুটি এসআরও এখানে কার্যকর হবে।
প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী খরচ ও ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে পরিশোধিত মূসকের পার্থক্যে ফাঁকি বের হয়ে আসে।
২০১৩ সালে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ৩ কোটি ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৯৬ টাকার সেবা বিক্রি করেছে। এর মধ্যে ২ কোটি ৮৫ লাখ ৭৪ হাজার ৩৩ টাকার ওপর মূসক প্রযোজ্য। এর বিপরীতে ২৫ লাখ ৭১ হাজার ৬৬২ টাকা মূসক দিতে হতো, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি মূসক দিয়েছে ২৪ লাখ ৭৩ হাজার ৮০৬ টাকার। ওই বছর ফাঁকির পরিমাণ ছিল ৯৭ হাজার ৮৫৬ টাকা।
এভাবে প্রতি বছরই প্রতিষ্ঠানটি মূসক ফাঁকি দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ফাঁকি দিয়েছে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে। ওই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির ১১ কোটি ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৩৬৯ টাকার সেবা বিক্রির বিপরীতে ৯ কোটি ৭৯ লাখ ৪২ হাজার ৯২৯ টাকার ওপর মূসক প্রযোজ্য ছিল।
সে বছরের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৯১ হাজার ৪৩৯ টাকার মূসক দিতে হতো, তবে ১০ লাখ ৪৬ হাজার ২৯০ টাকা ফাঁকি দিয়ে তারা পরিশোধ করেছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৪৫ হাজার ১৪৯ টাকা।
ভ্যাট আইন, ১৯৯১-এর ৫৫ ধারা অনুযায়ী, এই টাকা অনতিবিলম্বে আদায়ের বিধান রয়েছে।
উৎসে ভ্যাট ফাঁকি
প্রতিষ্ঠানটি ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত লিগ্যাল অ্যান্ড প্রফেশনাল ফি, কোর্ট স্ট্যাম্প, টেলিকমিউনিকেশন, কুরিয়ার, বিজ্ঞাপন, প্রিন্টিং, স্টেশনারি, বোর্ড মিটিং, বার্ষিক অডিট ফি, প্রভিডেন্ড ফান্ড অডিট ফিসহ প্রায় ৪০ ধরনের ব্যয়ের বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে ৮ কোটি ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৭২ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। আইন অনুযায়ী লিমিটেড কোম্পানির ব্যয় বা কেনাকাটার ওপর উৎসে ভ্যাট প্রযোজ্য।
এ ধরনের উৎসে ভ্যাট ও আয়কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সরকার এই ধরনের আয় নিশ্চিত করতে পারে না বলে তা উৎসে থেকে কর্তন করে নেয়। লংকাবাংলা সে সুযোগটিই নিয়েছে।
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি ৩১ লাখ ৪৮ হাজার ৭১৮ টাকা, ২০১৪ সালে ১ কোটি ৬১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৭১ টাকা, ২০১৫ সালে ২ কোটি ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬২ টাকা, ২০১৬ সালে ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার ৮৭৪ টাকা এবং ২০১৭ সালে ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭১ টাকার উৎসে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
নন-ব্যাংকিং সেবায় ফাঁকি
ব্রোকারেজ হাউসের আয়ের বিপরীতে মূসক দিতে হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন নন-ব্যাংকিং সেবার বিপরীতেও সরকারকে কর দিতে হয়।
২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কমিশন, এক্সচেঞ্জ ও ব্রোকারেজ হাউসের আয়, ক্রেডিট কার্ডের কমিশন, লিজ ফাইন্যান্স, টার্ম লোন, শর্ট টাম লোন, ফ্যাক্টরিং ফাইন্যান্স, অটো লোন, হোম লোন, পারসোনাল লোন, ক্রেডিট কার্ড, এসএমই ফাইন্যান্স, মেম্বারশিপ ফি অফ ক্রেডিট কার্ডসহ প্রায় ১৭ থেকে ১৮ ধরনের নন-ব্যাংকিং সেবার বিপরীতে ২১ কোটি ৩৯ লাখ ১৬ হাজার ১৭৬ টাকা মূসক দেয়ার কথা লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি দিয়েছে ১৮ কোটি ৪৬ লাখ ২৫ হাজার ৫১৪ টাকা। কোম্পানিটি বাকি ২ কোটি ৯২ লাখ ৯০ হাজার ৬৬২ টাকা সরকারকে পরিশোধ করেনি।
এ ধরনের অপরাধের জন্য মূসক আইন-১৯৯১-এর ৬ ধারা এবং মূসক বিধিমালা, ১৯৯১-এর ২৩ বিধি লঙ্ঘন হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে অপরিশোধিত মূসক আদায়সহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে এনবিআর।
লংকাবাংলার বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির ২০১৩ সালের কমিশন, এক্সচেঞ্জ ও ব্রোকারেজ হাউসের আয়, ক্রেডিট কার্ডের কমিশন, লিজ ফাইন্যান্স, টার্ম লোন, শর্ট টাম লোন, ফ্যাক্টরিং ফাইন্যান্স, অটো লোন, হোম লোন, পারসোনাল লোন, ক্রেডিট কার্ড, এসএমই ফাইন্যান্স, মেম্বারশিপ ফি অব ক্রেডিট কার্ডসহ প্রায় ১৭ থেকে ১৮ ধরনের নন-ব্যাংকিং সেবার ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট এক কোটি ৫২ লাখ ২৮ হাজার ১০৬ টাকা। এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটি ২০ লাখ ৩৬ হাজার ২৯৯ টাকা পরিশোধ করেনি।
একইভাবে ২০১৪ সালে ১৭ থেকে ১৮টি সেবার বিপরীতে ২১ লাখ ৩৮ হাজার ৭২১ টাকা, ২০১৫ সালে ৪৪ লাখ ২৫ হাজার ৭৭৫ টাকা, ২০১৬ সালে ৭১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৫৮ টাকা ও ২০১৭ সালে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩২ হাজার ১০৭ টাকার ভ্যাট পরিশোধ করেনি।
পাঁচ বছরে প্রতিষ্ঠানটি ১৭টি নন-ব্যাংকিং সেবার ওপর প্রযোজ্য দুই কোটি ৯২ লাখ ৯০ হাজার ৬৬২ টাকার ভ্যাট পরিশোধ না করে ফাঁকি দিয়েছে।
নন-স্থাপনা ভাড়ার বিপরীতে ভ্যাট ফাঁকি
ভ্যাট গোয়েন্দাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালের এনবিআরের আদেশ অনুযায়ী স্থান-স্থাপনা ভাড়ার বিপরীতে ভ্যাট ৯ শতাংশ, ২০১৬ সালের আদেশ অনুযায়ী ১৫ শতাংশ।
লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থান-স্থাপনা ভাড়ার বিপরীতে ৩৩ লাখ ৩৫ হাজার ৩০৭ টাকার ভ্যাট পরিশোধ করেনি। এর মধ্যে ২০১৩ সালে ৯৭ হাজার ৮৫৬ টাকা, ২০১৪ সালে দুই লাখ ৫১ হাজার ৬৮৯ টাকা, ২০১৫ সালে ৯ লাখ ৭ হাজার ৭০৬ টাকা, ২০১৬ সালে ১০ লাখ ৩১ হাজার ৭৬৮ টাকা, ২০১৭ সালে ১০ লাখ ৪৬ হাজার ২৯০ টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানের নন-ব্যাংকিং সেবার আয়ের বিপরীতে মোট ভ্যাট ২ কোটি ৯২ লাখ ৯০ হাজার ৬৬২ টাকা, প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ের বিপরীতে উৎসে ভ্যাট ৮ কোটি ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৭২ টাকা ও স্থাপনা ভাড়ার বিপরীতে ভ্যাট ৩৩ লাখ ৩৫ হাজার ৩০৭ টাকাসহ পাঁচ বছরে মোট ১১ কোটি ৩৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪২ টাকার ভ্যাট পরিশোধ করেনি।
ভ্যাট আইন অনুযায়ী পরিহার করা ভ্যাটের ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ ৯ কোটি ২৬ লাখ ৮২ হাজার ৫৬৩ টাকা। সুদসহ পরিহার করা মোট ভ্যাট ২০ কোটি ৬০ লাখ ৪১ হাজার ৬০৬ টাকা।
এ ভ্যাট পরিশোধে ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা ভ্যাট উত্তর কমিশনারেট থেকে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর দাবিনামাসংবলিত কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়।
নোটিশে প্রতিষ্ঠানকে ১৫ দিনের সময় দেয়া হয়। লিখিত জবাব ও শুনানিতে অংশগ্রহণ না করলে দাবিনামা চূড়ান্ত হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাজা শাহরিয়ারের ব্যক্তিগত মোবাইলে সম্প্রতি ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। রোববার কল করেও তার ফোন রিসিভ হয়নি। খুদেবার্তা পাঠালেও তিনি জবাব দেননি।
প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে রোববার যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেননি।
আরও পড়ুন:ডলারের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বিগত তিন অর্থবছর ধরে রিজার্ভ থেকে বিপুল পরিমাণ ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ভিন্ন পথে হাঁটছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ছয় দফায় মোট ৬৮ কোটি ডলারের বেশি কিনে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সবশেষ মঙ্গলবার ৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে কেনা হয়েছে ৪৭.৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, বাজারে বর্তমানে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণেই রিজার্ভ থেকে বিক্রি না করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকেই ডলার কিনছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভবিষ্যতেও এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
ডলার কেনা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ (এফএক্স) নিলাম কমিটির মাধ্যমে, মাল্টিপল প্রাইস অকশন পদ্ধতিতে। এক ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা পর্যন্ত।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পাঁচ দফায় ডলার কেনে। ১৩ জুলাই ১৮ ব্যাংক থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কেনা হয়। এরপর ১৫ জুলাই একই দরে ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ২৩ জুলাই ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে এক কোটি ডলার কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া ৭ আগস্ট ১২১ টাকা ৩৫ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার, ১০ আগস্ট ১১ ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে মোট ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার কেনা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ডলারের দাম হঠাৎ করে অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া বা অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়া- দুটোই অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। বর্তমানে দেশে খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে এবং বিদেশি দায় পরিশোধও সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফলে নিকট ভবিষ্যতে ডলারের তীব্র চাহিদা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তাদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই ডলার ক্রয় রিজার্ভকে আরও শক্তিশালী করবে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এলে বিনিয়োগ বাড়বে, ফলে ডলারের চাহিদাও বাড়তে পারে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেছেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে অভিজ্ঞ বিচারকদের নিয়োগের মাধ্যমে একটি ‘কমার্শিয়াল কোর্ট’ স্থাপন করা এবং আইনি প্রক্রিয়ার সংস্কার একান্ত অপরিহার্য।
তিনি বলেন, বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রিতায় বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়াও দেশে সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি, বিনিয়োগ ও মেধাস্বত্ত্ববিষয়ক বিরোধ ক্রমাগত বাড়ার বিষয়টি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থার আলোকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে গতি আনতে একটি আলাদা কমার্শিয়াল কোর্ট স্থাপন এবং আইনি প্রক্রিয়ার সংস্কার একান্ত অপরিহার্য।
মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘ব্যবসায় বিরোধ নিষ্পত্তি ও চুক্তি প্রয়োগ কার্যক্রমের অগ্রগতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধি দলের প্রধান মাইকেল মিলার এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) ও ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আবদুর রহিম খান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, জনবহুল এদেশে আদালতে মামলার সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে এবং বিচারিক কার্যক্রমের দীর্ঘসূত্রিতার বিষয়টিকে আরো অসহনীয় করে তুলেছে। যার ফলে স্থানীয় বিনিয়োগের পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে আরবিট্রেশন আইন করা হলেও, বাণিজ্যের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা যায়নি। বাণিজ্য বিষয়ক বিরোধসমূহ যদি প্রথাগত আদলতের বাইরে গিয়ে মেটানো যায়, তাহলে একদিকে যেমন আদলতের উপর চাপ কমবে, সেই সঙ্গে বাণিজ্যের পরিবেশেরও উন্নয়ন হবে।
তিনি আরও বলেন, কমার্শিয়াল কোর্ট স্থাপনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে এটার খসড়া চূড়ান্ত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি বাণিজ্যবিষয়ক আদালতসমূহে বিশেষজ্ঞ বিচারকদের নিয়োগ দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় সংষ্কারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বাংলাদেশ নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় সংস্কারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইইউ নিবিড়ভাবে কাজ করছে। এ ধরনের সংস্কার দেশের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহিম খান বলেন, বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে শুধু যে এফডিআই আকর্ষন ব্যাহত হচ্ছে তা নয়। বরং বিষয়টি আমাদের রপ্তানি সম্প্রসারণেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং সার্বিকভাবে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বাংলাদেশ ক্রমাগত আস্থা হারাচ্ছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার। তিনি বলেন, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিকট ব্যবসায়িক চুক্তির প্রয়োগের বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক, যেখানে আমরা বেশ পিছিয়ে রয়েছি।
অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মহাপরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. আরিফুল হক, ইউএনডিপি বাংলাদেশ-এর উপ আবাসিক প্রতিনিধি সোনালী দা রত্নে, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টার (বিয়াক)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কে এ এম মাজেদুর রহমান, সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রাজাহ অ্যান্ড থান-এর কো-হেড ভিকনা রাজা, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের স্পেশাল অফিসার বিচারপতি তারেক মোয়াজ্জেম হোসেন এবং ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড এসোসিয়েটস-এর পার্টনার ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন অংশগ্রহণ করেন।
মুক্ত আলোনায় ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তিতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে সরকারের আন্ত:মন্ত্রণালয় সমন্বয়ের বেশ অভাব রয়েছে এবং এ অবস্থার উন্নয়ন না হলে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। বাণিজ্যিক বিরোধগুলো সমাধানে আদালতে না গিয়ে, আরবিট্রেশন সেন্টারের মাধ্যমে নিষ্পত্তিতে বেশি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
ডিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট খাতের স্টেকহোল্ডাররা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ভোক্তা পর্যায়ে ১২ কেজির এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) সিলিন্ডারের দাম কমানো হয়েছে ৩ টাকা। নতুন মূল্য অনুযায়ী, চলতি সেপ্টেম্বর মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৭০ টাকা, যা গত মাসে ছিল ১ হাজার ২৭৩ টাকা।
মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন দর ঘোষণা করেন। নতুন দাম গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্যকর হয়েছে ।
এছাড়া, গাড়িতে ব্যবহৃত অটোগ্যাসের দামও লিটারে ১৩ পয়সা কমিয়ে ৫৮ টাকা ১৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিইআরসির ঘোষণায় বলা হয়, বেসরকারি খাতে ভ্যাটসহ প্রতি কেজি এলপিজির নতুন দাম ১০৫ টাকা ৮৭ পয়সা। সেখান থেকে বিভিন্ন ওজনের সিলিন্ডারের মূল্য নির্ধারিত হবে।
তবে সরকারি কোম্পানির সরবরাহকৃত সাড়ে ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৮২৫ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। সৌদি আরামকোর প্রপেন ও বিউটেনের আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতি মাসে এ দাম নির্ধারণ করে আসছে বিইআরসি। ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে এই মূল্য নির্ধারণ কার্যক্রম চালু রয়েছে।
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে টমেটো আমদানি শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রামের বড় বাজারের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের নাসিক রাজ্য থেকে এসব টমেটো আমদানি করছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ বিভাগের উপসহকারী কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ভারত থেকে টমেটো বোঝাই একটি ট্রাক হিলি বন্দরে প্রবেশের মধ্য দিয়ে টমেটো আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিন ২৮ টন টমেটো আমদানি করা হয়েছে। প্রতিকেজি টমেটো আমদানি করতে শুল্কসহ খরচ গুণতে হচ্ছে ৬১ টাকা।
আমদানিকারক এনামুল হক বলেন, দেশের বাজারে চাহিদা থাকায় ভারতের নাসিক রাজ্য থেকে এসব টমেটো আমদানি করা হচ্ছে। বন্দরে প্রতি কেজি টমেটো ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা থাকলে আরও বেশি পরিমাণ টমেটো আমদানি করা হবে।
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন বলেন, গতকাল মঙ্গলবার হিলি বন্দর দিয়ে এক ট্রাকে ২৮ টন টমেটো আমদানি হয়েছে। আমদানিকৃত এসব টমেটো ৫০০ ডলারে শুল্কায়ণ করা হচ্ছে। যেহেতু টমেটো কাঁচাপণ্য তাই দ্রুত ছাড় করণে আমদানিকারককে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধের তথ্যমতে, গত ২০২২ সালের ৬ আগস্ট সবশেষ এই বন্দর দিয়ে টমেটো আমদানি করা হয়েছিল।
বিশ্ব অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয়স্থল খুঁজতে থাকায় মঙ্গলবার প্রতি আউন্স সোনার দাম রেকর্ড সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫০০ ডলারের উপরে পৌঁছেছে।
এশিয়ায় প্রাথমিক লেনদেনের সময় মূল্যবান ধাতুটি প্রতি আউন্স ৩,৫০১ দশমিক ৫৯ ডলারে পৌঁছেছে, যা এপ্রিলে এর আগের রেকর্ড ৩,৫০০ দশমিক ১০ ডলারকে ছাড়িয়ে গেছে।
হংকং থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বিনিয়োগকারীরা দুর্বল মার্কিন ডলার ও ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদের হার কমানোর সম্ভাবনার কথা বিবেচনায় নেওয়ায় সোনার দামের এই দরপতন ঘটেছে।
মার্কিন মুদ্রাস্ফীতির একটি মূল্য সূচক দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিট রেকর্ড সর্বোচ্চ থেকে পিছিয়ে এসেছে। একই সময়ে, ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
শ্রম দিবসের জন্য সোমবার ওয়াল স্ট্রিট বন্ধ ছিল, তখন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় ডলার মিশ্র লেনদেন করেছে।
বন্ধকী জালিয়াতির অভিযোগে ফেডের গভর্নরকে তিরস্কার করার পর ট্রাম্প গত মাসে বলেছিলেন, ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর লিসা কুক পদত্যাগ না করলে, তিনি তাকে বরখাস্ত করবেন।
মার্কিন আপিল আদালত ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনেক শুল্ক, যা বিশ্ব বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে সেগুলো অবৈধ বলে রায় দেওয়ার পরও এই রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছে।
তবে আদালত আপাতত এই ব্যবস্থাগুলো বহাল রাখার অনুমতি দেওয়ায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট সুপ্রিম কোর্টে লড়াই করার জন্য সময় পেয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে কমিউনিটি ব্যাংকের স্টার্টআপ রিফাইন্যান্স স্কিমের অধীনে অংশীদারত্বমূলক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বুধবার (২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স সেন্টারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার এবং নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখার উপস্থিতিতে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে এসএমইএসপিডি বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এবং কমিউনিটি ব্যাংকের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) কিমিয়া সাআদত পারস্পরিক অংশীদারত্বমূলক এ চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন। এ সময় অনুষ্ঠানে- বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক হাফিয়া তাজরিয়ান, যুগ্ম পরিচালক মো. নুরুল কাওসার সাঈফ এবং কমিউনিটি ব্যাংকের হেড অব কর্পোরেট ব্যাংকিং ও হেড অব বিজনেস (ব্রাঞ্চ) ড. মোঃ আরিফুল ইসলাম, হেড অব এসএমই অ্যান্ড এগ্রিকালচার শরিফ হাসান মামুনসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের উর্ব্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই-আগস্টে দেশের রপ্তানি আয় ১০.৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে মোট ৮ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) আজ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-আগস্ট) রপ্তানি আয় ছিল ৭ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার।
তবে, সামগ্রিক এই ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির পরও ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
২০২৫ সালের আগস্ট মাসে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪ সালের আগস্টে অর্জিত ৪ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে সামান্য কম।
স্বাভাবিকভাবেই তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে এই খাত থেকে আয় হয়েছে ৭ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মন্তব্য