আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদে মূল্যস্ফীতির সর্বোচ্চ হার পাওয়া গেল গত মে মাসে।
সরকারি হিসাবেই মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের ঘর ছাড়িয়ে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশে উঠেছে। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বেশি। ৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) রোববার মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, মে মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি বা মাসভিত্তিক) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ।
খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। এপ্রিলে যা ছিল ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর মূল্যস্ফীতি কখনই এতটা বেশি হয়নি। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এই হার ১০ শতাংশের আশপাশে হয়ে গিয়েছিল। তবে সেটি কমে আসে পরে।
খাদ্য মূল্যস্ফীতি এক মাসে বাড়লেও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। মে মাসে এই হার হয়েছে ৬ দশমিক ০৮ শতাংশ। এপ্রিলে যা ছিল ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
গত কয়েক মাসের মতো গ্রামে শহরের চেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি হয়েছে। মে মাসে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। শহরে হয়েছে ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে সার্বিক গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ। ওই বছরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ।
২০১২-১৩ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৭ দশমিক ৭০ শতাংশে নেমে আসে। ওই বছরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয় ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
এর পর থেকে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক নিম্নমুখীই ছিল।
৩০ জুন শেষ হওয়া বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে টানা ছয় মাস বাড়ার পর জানুয়ারিতে কমেছিল এই সূচক। ফেব্রুয়ারি থেকে তা আবার চড়ছে।
সরকারি সংস্থা বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গত মে মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ।
এর অর্থ হলো, ২০২১ সালের মে মাসে যে পণ্য বা সেবার জন্য ১০০ টাকা খরচ করতে হতো, ২০২২ সালের মে মাসে সেই পণ্য বা সেবার জন্য ১০৭ টাকা ৪২ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।
এই মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর অর্থ হলো, ২০২১ সালের মে মাসে খাদ্যপণ্য বা খাবারের জন্য ১০০ টাকা খরচ করতে হতো, চলতি বছরের মে মাসে সেই খাবারের জন্য ১০৮ টাকা ৩০ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।
মে মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, গত কয়েক মাসের মতো মে মাসে শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি মূল্যস্ফীতি হয়েছে; এই মাসে গ্রামে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর শহরে হয়েছে ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
অর্থাৎ শহরের চেয়ে গ্রাম এলাকায় পণ্যমূল্য ও অন্যান্য সেবার দাম বেড়েছে বেশি।
বেশ কিছুদিন ধরেই সরকার বা বিবিএসের দেয়া হিসাবের চেয়ে মূল্যস্ফীতির হার বাস্তবে অনেক বেশি বলে বলে আসছেন অর্থনীতিবিদরা।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) বলছে, দেশে মূল্যস্ফীতির প্রকৃত হার বিবিএসের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি।
গত ৩ মার্চ ‘মূল্যস্ফীতি: সরকারি পরিসংখ্যান বনাম প্রান্তিক মানুষের বাস্তবতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সানেম। তাতে মার্চ মাসের বিবিএসের ৬ দশমিক ২২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে বলা হয়, শহর এলাকায় সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার এখন ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর গ্রামে এই হার ১২ দশমিক ১০ শতাংশ।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, ‘পণ্যমূল্য নিয়ে সরকারি সংস্থা বিবিএস যে তথ্য দিচ্ছে, তা বাস্তবের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এ ক্ষেত্রে যদি সঠিক তথ্য তুলে আনা না হয়, তবে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া টেকসই হবে না।’
নানা তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিবিএস পুরোনো ভিত্তি বছর ধরে মূল্যস্ফীতির হিসাব করছে, যা বর্তমান সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য না।’
সেলিম রায়হান বলেন, ‘নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ খুবই চাপে আছে। ভাত না খেয়ে অন্য কিছু খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করছে অনেক মানুষ।’
একই কথা বলেছেন গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। গত ১৬ মে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘বর্তমান আর্থসামাজিক পরিস্থিতি, জাতীয় বাজেট ও অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের প্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বিবিএসের মূল্যস্ফীতির হিসাব বাস্তবসম্মত ও বিজ্ঞানসম্মত নয়। বাজারের যে অবস্থা তাতে মূল্যস্ফীতি এখন ১২ শতাংশ হওয়া অসম্ভব কিছু নয়।’
তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ে সরকারের হিসাবের সঙ্গে বাস্তবতার বিস্তর ফারাক। বিবিএস ২০০৫–২০০৬ সালের ভোক্তাদের মাথায় রেখে মূল্যস্ফীতি ঠিক করে। ১৭ বছর পরে সেই মানুষদের পরিবর্তনকে তারা ধরছে না। গ্রামে মূল্যস্ফীতি শহরের চেয়ে বেশি।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের মূল্যস্ফীতির তথ্য নিয়ে প্রশ্ন আছে। আর প্রশ্ন থাকাটাই স্বাভাবিক। কেননা, বাজারের পণ্যমূল্যের সঙ্গে বিবিএসের তথ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায় না।’
‘তারপরও বিবিএসের তথ্যকে মেনে নিয়ে যদি বলি, তাহলেও বলতে হয় একটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছি আমরা। কয়েক মাস ধরেই কিন্তু মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এতে অবশ্য বৈশ্বিক বাজারেরও একটা প্রভাব আছে। বিশ্ববাজারে সব জিনিসের দামই বেশ বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। তার প্রভাব আমাদের এখানেও পড়বে।
‘তাই আমার বিবেচনায় মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখাই এখন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে আমি মনে করি।’
বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, দেড় বছর পর গত বছরের ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের ‘ঘর’ অতিক্রম করে ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশে ওঠে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে তা কমে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশে নেমে আসে।
২০২০ সালের জুনে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। এর পর থেকে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের নিচেই অবস্থান করছিল।
চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, শাকসবজি থেকে শুরু করে মাছ-মুরগিসহ সব ধরনের প্রয়োজনীয় খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
১২ মাসের গড় হিসাবে মে মাস শেষে (২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের মে) মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ, যা নির্ধারিত লক্ষ্যের চেয়ে বেশ খানিকটা ওপরে।
বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরেছে সরকার। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে এই লক্ষ্য ধরা ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু অর্থবছর শেষ হয় ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি নিয়ে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত ৯ জুন জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন তাতে গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরেছেন।
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করার পর থেকেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। তার প্রভাব পড়েছে ছোট-বড় সব দেশে। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা পূর্বাভাস দিচ্ছে, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে।
গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছুঁইছুঁই
শহরের চেয়ে গ্রামে খাবারের দাম বেশি। মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছুঁইছুঁই করছে; ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশে উঠেছে।
বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, মে মাসে বাংলাদেশে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে, তার মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
আগের মাস এপ্রিলে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ সার্বিক মূল্যস্ফীতির মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, মে মাসে মার্চের চেয়ে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে।
মে মাসে গত কয়েক মাসের মতো শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি হয়েছে; এই মাসে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে প্রায় ৮ শতাংশ, ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এপ্রিলে ছিল ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
মে মাসে শহরাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এপ্রিলে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, মে মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গ্রামে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ।
আগের মাস এপ্রিলে গ্রামে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।
মে মাসে শহর এলাকায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক শুন্য ৮ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আগের মাস এপ্রিলে শহর এলাকায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি কেন–এ প্রশ্নের উত্তরে অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার কাছেও অবাক লাগে, এটা কেন হচ্ছে। তবে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের কারণে এখন অনেক পণ্যই দ্রুত গ্রাম থেকে শহরে চলে আসে। সে ক্ষেত্রে গ্রামে পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সে কারণে দাম বেড়ে যেতে পারে।’
‘তবে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, গ্রাম হোক আর শহরই হোক, বাজারের বাস্তব প্রতিফলন বিবিএসের তথ্যে প্রতিফলিত হচ্ছে না। সে কারণেই বিবিএসের তথ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এ ক্ষেত্রে বিবিএসের তথ্য সংগ্রহে যদি কোনো সমস্যা থাকে, সেটা দূর করা প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন:রমজানের মধ্যে শসার বাজার চড়া দাম থাকলেও বর্তমানে শসাচাষিরা দাম পাওয়া নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছেন।
এমন দুঃসময়ে শসাচাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের অন্যতম রিটেইল চেইন সুপারশপ ‘স্বপ্ন’।
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়, ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার শসাচাষিরা। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে চার টাকায়। ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না চাষিরা।
এমন সময় সেই শসাচাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্যটি কেনে ‘স্বপ্ন’ কর্তৃপক্ষ। সেই শসা এখন খোলাবাজারের চেয়ে কম দামে স্বপ্ন আউটলেটে পাওয়া যাচ্ছে।
খোলা বাজারে বৃহস্পতিবার ৪০ টাকা কেজিতে শসা বিক্রি করতে দেখা গেলেও স্বপ্ন আউটলেটে তা ১২ টাকা কেজিতে গ্রাহকরা কিনতে পেরেছেন। এরই মধ্যে দিনাজপুরের খানসামার ওই এলাকা থেকে দুই টন এবং ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট এলাকা থেকে ছয় টন শসা কিনেছে স্বপ্ন প্রতিনিধি।
বর্তমানে তাদের উৎপাদিত শসা পৌঁছে গেছে স্বপ্নর আউটলেটে। স্টক থাকা অবধি এ অফার গ্রাহকরা পাবেন।
স্বপ্নর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, ‘আমরা শসাচাষিদের দুর্ভোগের কথা জানতে পেরেছি নিউজের মাধ্যমে। আমরা দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কিছু এলাকার কৃষকের দুর্ভোগের কথা জানার পর তাদের কাছ থেকে শসা কিনেছি ন্যায্য মূল্যে।
‘অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরও কৃষকদের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান থাকবে। মধ্যস্বত্বভোগীদের লাভবান না করে কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি সেতুবন্ধের চেষ্টা করে আসছে স্বপ্ন। এ চেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে।’
এ প্রসঙ্গে স্বপ্নর হেড অফ পার্চেজ সাজ্জাদুল হক বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যমে শসাচাষিদের সংকটের খবর দেখার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, কৃষকদের পাশে আমরা দাঁড়াব। দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে এরই মধ্যে ৮ টন শসা আমরা কিনেছি।
“দুঃসময়ে কষ্টে থাকা অনেক কৃষকদের পাশে ‘স্বপ্ন’ এর আগেও দাঁড়িয়েছে। সামনেও পাশে থাকবে।”
দিনাজপুরের খানসামা এলাকার কৃষক সাকিব হোসেন বলেন, ‘প্রায় এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করেছিলাম এবার। শসার বীজ, সারসহ নানা কাজে লাখ টাকা খরচ হয় আমার, কিন্তু ১০ রমজান অবধি কিছু শসা বিক্রি করার পর বাজারে শসার দাম কমে যায়। প্রতি কেজি ১০ টাকা, এরপর পাঁচ টাকা এবং সবশেষে আরও কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। অনেক শসা নষ্ট হয়ে যায়। অনেক লোকসান হচ্ছিল।’
তিনি আরও বলেন, “আমার এলাকার এক সাংবাদিক নিউজ করার পর এসিআই কোম্পানির ‘স্বপ্ন’ থেকে যোগাযোগ করে আমার অনেকগুলো শসা কিনে নিয়েছেন উনারা। এতে করে লোকসানের অনেক ঘাটতি পূরণ হয়েছে আমার। তাদের অশেষ ধন্যবাদ।”
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে রেকর্ড ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের সাড়ে তিন মাসে অষ্টমবারের মতো স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হলো।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৃহস্পতিবার বৈঠক করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। নতুন নির্ধারিত এই দাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী- ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৬৫৬ টাকা বেড়ে ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৩৮৮ টাকা কমে ৭৮ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সবশেষ দশ দিন আগে ৮ এপ্রিল বাজুস ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করে। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দেশের স্বর্ণের বাজারে উচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হলো।
অবশ্য স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের আরও বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সেসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৯ হাজার ১১৯ টাকা।
এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
খোলা সয়াবিন তেলের দাম কমার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘…১৪৯ টাকা যেটা খোলাবাজারে ছিল, সেটাকে দুই টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা সর্বোচ্চ খোলাবাজারে সয়াবিন তেল বিক্রি হবে।
‘আর আমাদের সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার, বোতল যেটা, পেট বোতলে যেটা, যেটার মধ্যে সিল করা থাকে, সেইটা আমাদের নির্ধারিত ছিল ১৬৩ টাকা। সেইখান থেকে বৃদ্ধি করে ১৬৭ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
খোলা সয়াবিন তেলের পাঁচ লিটারের বোতলের দামের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আর খোলাবাজারে সয়াবিন তেল পাঁচ লিটারের বোতল ৮০০ টাকা ছিল। সেটাকে ৮১৮ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
পাম অয়েলের দাম নিয়ে টিটু বলেন, ‘সুপার পাম অয়েল তেল প্রতি লিটার, এটা আগে নির্ধারণ করা ছিল না। এবার আমরা নির্ধারণ করে দিচ্ছি। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৩৫ টাকা লিটার।
‘তো এই চারটা পণ্যের দাম, এইটা কিন্তু আমরা নির্ধারণ করলাম না। আমাদের যারা অ্যাসোসিয়েশনের, তাদের রিকমেন্ডেশনে এবং আমাদের ট্যারিফ কমিশনের অনুমোদনক্রমে উনারা উনাদের অ্যাসোসিয়েশন থেকে চিঠি দিয়ে আগামীকাল থেকে এই মূল্য উনাদের মিল গেট থেকে উনারা কার্যকরী করবে।’
আরও পড়ুন:ভোজ্যতেলের ওপর শুল্ক অব্যাহতির সময়সীমা শেষ হয়েছে সোমবার (১৫ এপ্রিল)। এ অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিভিওআরভিএমএফএ) সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
বিভিওআরভিএমএফএ’র নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম মোল্লার পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কাঁচামাল আমদানি ও ভোজ্যপণ্য উৎপাদনে কর অব্যাহতির মেয়াদ ১৫ এপ্রিল শেষ হচ্ছে বিধায় পরদিন ১৬ এপ্রিল থেকে ভ্যাট অব্যাহতির আগের নির্ধারিত মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৭৩ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৮৪৫ টাকা ও এক লিটার পাম তেল ১৩২ টাকায় বিক্রি করা হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ফেব্রুয়ারিতে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত (অপরিশোধিত) সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে।
এদিকে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করা যেতে পারে, তবে সময় লাগবে।
‘ভোজ্যতেলের নতুন চালান আমদানির ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতরের আগের দিন বুধবার দেশের অন্য অনেক এলাকার মতো গরুর মাংসের চাহিদা বেড়েছে মেহেরপুরে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলার তিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাংস ব্যবসায়ীরা মহিষ, গরু ও ছাগল জবাই করতে ব্যস্ত সময় পার করেন।
মাংসের চাহিদা বাড়ায় জেলায় বিক্রেতারা বাড়তি দামে মাংস বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা, তবে বিক্রেতাদের ভাষ্য, তারা বেশি দামে গরু কেনায় মাংসের দামও বেশি নিতে হয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিপ্রতি ছাগলের মাংস বিক্রি হয় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায়। গরুর মাংস বিক্রি হয় ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা কেজিতে। আর মহিষের মাংস বিক্রি হতে দেখা যায় ৮০০ থেকে ৮২০ টাকা কেজি দরে।
মাংস কিনতে আসা মন্টু মিয়া বলেন, ‘ঈদের দিন মাংসের দোকানে অনেক ভিড় থাকে। তাই আমরা এক দিন আগেই মাংস কিনে রাখি, তবে মাংসের দাম অন্য সময়ের চেয়ে এখন অনেক বেশি। তারপরও কিনতে হবে, ঈদ বলে কথা।’
দিনমজুর জালাল উদ্দিন বলেন, ‘আগামীকাল ঈদের দিন। পরিবারের সকলকে নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করব। এ বছর ছেলে-মেয়েদের পোশাক কিনতে গিয়ে সব টাকা শেষ হইয়ি গিছে। আজ সেমাই সুজির সাথে মাংস কিনলেই চলবে।
‘বাজারে এসে দেখি প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকা করে, কিন্তু মাংসের যে দাম! বাধ্য হয়ে অল্প করে গরুর মাংস কিনব। তা ছাড়া ব্রয়লার মুরগি কিনব।’
স্কুলশিক্ষক শাহনেওয়াজ বলেন, ‘আমাদের সাতজনের পরিবার। তার মধ্যে দুজনের গরুর মাংস খাওয়া নিষেধ। তাই ছাগলের মাংসও কেনা লাগবে। বাজারে এসে দেখি প্রতি কেজি ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ টাকা করে।
‘মাংস বিক্রেতারা জানে ঈদের ছুটি হওয়ায় ভোক্তা-অধিকার কিংবা মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সম্ভাবনা কম। তাই ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাংস বিক্রেতা মনিরুল বলেন, ‘আমরা ঈদ উপলক্ষে যতগুলো গাছান (জ্যান্ত) গরু কিনেছি, সব ৭২০ টাকা করে কেনা পড়েছে। তাহলে আমাদের পরিশ্রমের দামসহ হিসাব করে বিক্রি করলে ৮০০ টাকা করে বেচা উচিত, কিন্তু তা তো আর পারছি না।’
আরেক মাংস ব্যবসায়ী মঈন উদ্দিন বলেন, ‘ঈদের দুই দিন আগ থেকে শুরু করে ঈদের দিন পর্যন্ত আমার চারটা মহিষ ও ১০টা গরু লাগবে বিক্রির জন্য। সে হিসেবে আমরা এক সপ্তাহ আগ থেকে গরু, মহিষ কেনা শুরু করেছি। হঠাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে গাছান গরু আমাদের ৭২০ টাকা করে কেজি পড়তা পড়ছে।
‘তাই আমরা ৫০ টাকা লাভ হিসেবে মাংস বিক্রি করছি। আমরা ৫০ টাকা বেশি দামে মাংস বেচলেই নিউজ হয়। অথচ আমরা যে ৮০ টাকা করে বেশি দামে গরু কিনলাম, তা আর নিউজ হয় না।
বামন্দী পশুহাট ইজারাদার সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সপ্তাহে দুই দিন পশু হাট বসে। সোম ও শুক্রবার। গত দুই হাটে প্রচুর গরু আমদানি হয়েছে। বিক্রি হয়েছে অনেক বেশি, তবে গত দুই হাট ছাগল ও গরু বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। কারণ ঢাকাসহ বাইরের অনেক বেপারি হাটে আসায় গরুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে।’
আরও পড়ুন:ঈদ উৎসবে দীর্ঘ ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে সালামিতে নতুন টাকা দেন অনেকে। এ কারণে বিশেষ দিনটির আগে চাহিদা বাড়ে ঝকঝকে টাকার।
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রতিবারের মতো এবারও রাজধানীতে জমে উঠেছে নতুন টাকার ব্যবসা, তবে অন্যবারের চেয়ে এবার নতুন টাকা কিনতে দাম বেশি দিতে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ক্রেতারা।
নতুন টাকার হাট যেখানে
রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে, গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের সামনে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শাঁখারীবাজার মোড়, বাংলাবাজার মোড়সহ বেশ কিছু এলাকায় নতুন নোটের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।
গুলিস্তান স্পোর্টস মার্কেটের সামনে সারি সারি ছোট টেবিল আর টুল নিয়ে মাথার ওপর ছাতা দিয়ে বসেছেন অর্ধশতাধিক বিক্রেতা। এসব দোকানে দুই টাকার নোট থেকে শুরু করে ৫০০ টাকার নতুন নোট বিক্রি হচ্ছে। তাদের ঘিরে রেখেছেন রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতারা।
কোন নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নতুন নোটের হাট বসলেও বিক্রয়মূল্য প্রায় একই। এসব দোকানে বান্ডেল আকারে সাজিয়ে রাখা হয় নতুন নোট।
প্রতিটি বান্ডেল হাজার টাকার সমান। সাধারণ সময়ে হাজার টাকা সমমূল্যের এসব বান্ডেল বিক্রি হয় ২০০ টাকা বেশি দরে, তবে ঈদের সময়ে তা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। নোটের চাহিদা অনুযায়ী দাম কম-বেশি হয়।
এ বছর ঈদে ১০ ও ২০ টাকার নতুন নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি বলে জানান বিক্রেতারা। এরপর ৫ ও ২ টাকার নোট বেশি বিক্রি হচ্ছে, তবে সচ্ছল ক্রেতারা বেশি পরিমাণে ৫০ ও ১০০ টাকার নোট কিনছেন।
টাকার বাজারে দুই টাকার নোট ৬০০ টাকার বান্ডেল বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। পাঁচ টাকার বান্ডেল বিক্রি হচ্ছে হাজারে ৩৫০ টাকা বেশিতে। আবার ১০ টাকার এক বান্ডেল নোট বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩০০ টাকায়।
২০ টাকার বান্ডেল বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২৫০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায়।
বিক্রেতা ও ক্রেতাদের ভাষ্য
৫০ টাকার নোট এক বান্ডেল নিতে হলে বাড়তি দিতে হচ্ছে ২০০ টাকা। এ ক্ষেত্রে ১০০ টাকার বান্ডেলের চাহিদা কম থাকায় সেটা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১৫০ কিংবা ২০০ টাকায়। চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকায় ১০ টাকার নোটের দামও বেশি।
গুলিস্তানে নতুন টাকার ব্যবসায়ী জামাল হোসেন জানান, ঈদ উপলক্ষে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা বিক্রি করছেন তিনি। নতুন নোটের মধ্যে ১০ টাকার নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এর পরপরই বেশি চলে ২০ টাকার নোট, তবে ৫০০ কিংবা এক হাজার টাকার নোট এখানে চলে না।
এ বাজারেই নতুন টাকার ব্যবসা করেন ফারুক মিয়া। তিনি জানান, ঈদ সামনে রেখে প্রতিবারের মতো এবারও ক্রেতাদের সমাগম অনেক বেশি। বরাবরের মতো এবারও ১০ টাকার নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, কিন্তু এবার টাকার দাম একটু বেশি হওয়ায় আগের মতো বেচাবিক্রি নেই।
রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় ঝুট কাপড়ের ব্যবসা করেন মুন্সীগঞ্জের বাসিন্দা মনির হোসেন। তিনিও গুলিস্তানে নতুন টাকা কিনতে আসেন। প্রতি বছরই ঈদে বাড়ি ফেরার সময় নতুন নোট কেনেন তিনি।
জানতে চাইলে মনির হোসেন বলেন, ‘বিগত বছরের তুলনায় প্রতি বান্ডেলে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেশি দাম রাখা হচ্ছে।’
নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলে-মেয়ে ও প্রতিবেশীদের জন্য নতুন টাকা সংগ্রহ করেছি। ১০, ২০ ও ৫০ টাকার বান্ডেল কিনেছি। ঈদ উপলক্ষে নতুন টাকার দাম কিছুটা বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইউছুব ওসমানের অভিযোগ, ‘এ বছর প্রতি বান্ডেলের দাম ২০ থেকে ৫০ টাকা বাড়তি নেয়া হচ্ছে। ভাগনে, ভাতিজি ও ছোট ভাইদের ঈদ সালামি দেব। সে কারণে পাঁচ হাজার টাকা কিনতে এসেছিলাম, কিন্তু গতবারের চেয়ে এবার দাম চড়া। কোনো দামাদামিরও সুযোগ নেই।’
নতুন টাকার কদর কেন
ক্রেতারা জানান, ঈদ উপলক্ষে পরিবারের ছোট-বড় সবাই ও আত্মীয়স্বজনকে সালামি দেয়ার জন্য নতুন টাকা নিতে এসেছেন তারা। পুরাতন ১০০ টাকার নোটের পরিবর্তে যদি ১০ টাকার দুটি নতুন নোট দেয়া হয়, ওই ১০০ টাকার চেয়ে নতুন নোট পেয়ে হাজার গুণ বেশি খুশি হয়ে শিশুরা মুখে একটা চওড়া হাসি দেয়। শুধু শিশুরাই নয়, নতুন কড়কড়ে নোট পেতে বড়দেরও ভালো লাগে। এ ছাড়াও অনেকে সহকর্মী, অনেকে আবার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ঈদ উপহার হিসেবে দেয়ার জন্য নতুন টাকা সংগ্রহ করেন।
বিক্রেতারা বলছেন, সালামি দেয়ার কারণে ঈদ এলেই কদর বাড়ে টাকার নতুন নোটের। আবার অনেকে জাকাত, ফিতরা দিতেও নতুন টাকার ব্যবহার করে থাকেন। সারা বছর যে পরিমাণ নতুন টাকা বিক্রি হয়, তার অর্ধেকই বিক্রি হয় দুই ঈদে। এ জন্য তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গুলিস্তানে নতুন টাকা কিনতে আসা আবদুল আলিম জানান, তার বাড়ি রংপুর জেলায়। বাবা-মা ও স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে এরই মধ্যে শেষ করছেন কেনাকাটা। এখন তিনি গুলিস্তান এসেছেন কিছু নতুন নোট সংগ্রহ করার জন্য, যাতে এগুলো তিনি ঈদ বকশিস হিসেবে বাড়ির ছোটদের দিতে পারেন।
ব্যাংক ছেড়ে ফুটপাতে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট হয়। অফিস সময়ের পরে ঝামেলামুক্তভাবে নতুন টাকা নিতেই এখানে এসেছি। যদিও এখানেও ভিড় কম না, তবে ব্যাংকের তুলনায় সময় কম নষ্ট হয়।’ আবদুল আলিমের মতো যারা সময় বাঁচাতে চান, তারাই গুলিস্তানসহ রাজধানীর ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ টাকার দোকানে ভিড় জমান।
শরীয়তপুরের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর ব্যবসার কাজে ঢাকায় এসেছেন। কাজ শেষে নতুন নোট সংগ্রহ করতে এসেছেন গুলিস্তানে।
তিনি বলেন, ‘বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সবাইকে খুশি করতে হবে। বিশেষ করে ছোট ভাই-বোন বা আত্মীয়স্বজনকে ঈদের দিন নতুন টাকা সালামি দিতে হয়। ঈদের দিন তাদের খুশি করার জন্য তেমন বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না।
‘তাদের একটাই চাওয়া। সেটা হলো বোনাস। তাও যেই সেই টাকা দিলে নিবে না, তাদের দিতে হবে নতুন টাকা। নতুন টাকা হাতে পেলেই তারা মহা খুশি। এ জন্য এই নতুন টাকার কেনার জন্য এখানে এসেছি।’
৩০ বছরের বেশি সময় ধরে টাকার ব্যবসা করা ষাটোর্ধ্ব মোহাম্মদ জহিরুল মিয়া দোকান সাজিয়ে বসেছেন শাঁখারীবাজার মোড়ে। তিনি জানান, ঈদে সদরঘাট দিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময় অনেকেই নতুন টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। আবার পুরান ঢাকার আশপাশের লোকজনও নিচ্ছেন। নতুন টাকায় ঈদ সালামি তো অনেক দিনের রেওয়াজ।
গুলিস্তানের টাকার বাজারে বাবার অনুপস্থিতিতে দোকান সামলাচ্ছেন আরিফ হোসেন নামের এক যুবক। তিনি জানান, ঈদে এ ব্যবসা বেশ ভালো হয়, তবে এ বছর টাকার দাম কিছুটা বেশি। এ জন্য বিক্রি আগের তুলনায় কম।
ব্যাংকের নতুন টাকা খোলা বাজারে কীভাবে
ঈদের খুশিকে কয়েক গুণ বাড়িতে দিতে এবার ১০৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকার নতুন নোট বাজারে ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাজারে নতুন টাকা ছাড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ৩১ মার্চ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকের নির্ধারিত শাখা থেকে নতুন নোট সংগ্রহ করছেন গ্রাহকরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের ৮০টি শাখা থেকে ৫, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার এক বান্ডেল করে একজন গ্রাহক আঙুলের ছাপ দিয়ে একবারই মোট ১৮ হাজার ৫০০ টাকা বিনিময় করতে পারবেন, তবে গুলিস্তান বা অন্যান্য খোলা বাজারে কোনো কিছুই জমা না দিয়ে বাড়তি টাকা দিয়ে ক্রেতারা যেকোনো পরিমাণ নতুন টাকা কিনতে পারছেন।
সাধারণত বছরে দুই ঈদে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে প্রতিবার ২৫ থেকে ৩৩ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছাড়া হয়। এবার প্রতিটি শাখাকে দৈনিক কমপক্ষে ৯০ জনকে নতুন টাকা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ হিসাবে একটি শাখা দৈনিক কমপক্ষে ১৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকার নতুন নোট বিতরণ করবে। আর এক দিনে ৮০টি শাখার মাধ্যমে বিতরণ হবে ১৩ কোটি ৩২ লাখ টাকার নতুন নোট।
গ্রাহকদের দাবি, চাহিদার তুলনায় ব্যাংকগুলোতে সরবরাহ করা টাকা ছিল কম। ব্যাংকগুলোতে নতুন টাকা না পাওয়া গেলেও বাড়তি দামে খোলাবাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রাহকদের চাহিদার তুলনায় টাকা দেয়া যায়নি। আরও বেশি টাকার চাহিদা ছিল। ব্যাংক থেকে টাকা না পেয়ে এখন গুলিস্তান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বসা দোকানিদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা দিয়ে নতুন নোট সংগ্রহ করছেন অনেকে।
বিপুল চাহিদার খোলা বাজারে এত টাকা আসে কীভাবে এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ সবাই। পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে বেশির ভাগ বিক্রেতা এড়িয়ে যান।
বেশ কয়েকজন বিক্রেতা জানান, নতুন টাকা সংগ্রহের জন্য ব্যাংকগুলোয় তাঁদের ঢুকতে দেয়া হয় না। ফলে ব্যাংক থেকে সরাসরি নতুন নোট কিনতে পারেন না তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে তারা নতুন নোট সংগ্রহ করেন। কয়েক হাত ঘুরে এ নোটগুলো বিক্রেতাদের হাতে আসে। এ কারণে নতুন নোটের দামও বেড়ে যায়।
কথার ফাঁকে গুলিস্তানের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর নামের এক টাকা ব্যবসায়ী নিউজবাংলাকে জানান, ব্যাংকের কর্মচারী ও বিভিন্ন ব্যাংকারদের মাধ্যমে ডিল করে টাকা সংগ্রহ করেন তারা। বেশ কয়েকজন এবার গতবারের চেয়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন। এ জন্য খোলা বাজারে ব্যবসায়ীদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
আরেক ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম বলেন, এ বছর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেরি করে টাকা এসেছে। সেখান থেকেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টাকা আসে। বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারী দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এবার শুরু থেকে বেচাকেনা তেমন হয়নি। আবার অনেকেই আছেন ব্যাংকারদের আত্মীয়স্বজন। তারা তাদের মাধ্যমে সংগ্রহ করেন।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম তিন হাজার ৪৯৯ টাকা বাড়িয়ে প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের বাজারে দাম বৃদ্ধির দ্রুততম গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের ইতিহাসে স্বর্ণের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৈশ্বিক এই প্রবণতার ধারাবাহিকতায় সোমবার বিকেল ৪টা থেকে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাজুস।
এর আগে শনিবার (৬ এপ্রিল) স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। সেদিন ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৫ হাজার ৮২৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর দু’দিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম ভরিতে ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হলো।
সবশেষ বৃদ্ধির পর ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এখন ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা বা প্রতি গ্রামের দাম ১০ হাজার ৮০ টাকা; ২১ ক্যারেট ১ লাখ ১২ হাজার ২০৮ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৬ হাজার ২২৮ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ হাজার ১৯০ টাকা।
স্বর্ণের দাম নির্ধারণে উল্লেখযোগ্য সমন্বয় দেখা গেলেও রুপার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। এর মধ্যে ২২ ক্যারেট রুপার ভরি ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬০০ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। সে অনুযায়ী, প্রতি আউন্স (৩১ দশমিক ১০৩ গ্রাম) স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩২৯ ডলার।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির জন্য মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নীতিগত সুদের হার কমানোর প্রত্যাশাকে দায়ী করা হয়েছে। আর সে কারণে স্বর্ণে বিনিয়োগের পরিমাণ দ্রুত বেড়েছে।
বৈশ্বিক আর্থিক বাজার এবং পণ্যের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক বাংলাদেশে স্বর্ণের মূল্য নির্ধারণের কৌশলকেও প্রভাবিত করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য