× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অর্থ-বাণিজ্য
Food inflation is at an all time high
google_news print-icon

খাদ্য মূল্যস্ফীতি এক যুগের সর্বোচ্চ

খাদ্য-মূল্যস্ফীতি-এক-যুগের-সর্বোচ্চ
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) রোববার মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, মে মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি বা মাসভিত্তিক) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। এপ্রিলে যা ছিল ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ।

আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদে মূল্যস্ফীতির সর্বোচ্চ হার পাওয়া গেল গত মে মাসে।

সরকারি হিসাবেই মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের ঘর ছাড়িয়ে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশে উঠেছে। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বেশি। ৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) রোববার মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, মে মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি বা মাসভিত্তিক) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ।

খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। এপ্রিলে যা ছিল ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর মূল্যস্ফীতি কখনই এতটা বেশি হয়নি। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এই হার ১০ শতাংশের আশপাশে হয়ে গিয়েছিল। তবে সেটি কমে আসে পরে।

খাদ্য মূল্যস্ফীতি এক মাসে বাড়লেও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। মে মাসে এই হার হয়েছে ৬ দশমিক ০৮ শতাংশ। এপ্রিলে যা ছিল ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

গত কয়েক মাসের মতো গ্রামে শহরের চেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি হয়েছে। মে মাসে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। শহরে হয়েছে ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে সার্বিক গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ। ওই বছরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ।

২০১২-১৩ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৭ দশমিক ৭০ শতাংশে নেমে আসে। ওই বছরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয় ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

এর পর থেকে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক নিম্নমুখীই ছিল।

৩০ জুন শেষ হওয়া বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে টানা ছয় মাস বাড়ার পর জানুয়ারিতে কমেছিল এই সূচক। ফেব্রুয়ারি থেকে তা আবার চড়ছে।

সরকারি সংস্থা বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গত মে মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ।

এর অর্থ হলো, ২০২১ সালের মে মাসে যে পণ্য বা সেবার জন্য ১০০ টাকা খরচ করতে হতো, ২০২২ সালের মে মাসে সেই পণ্য বা সেবার জন্য ১০৭ টাকা ৪২ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।

এই মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর অর্থ হলো, ২০২১ সালের মে মাসে খাদ্যপণ্য বা খাবারের জন্য ১০০ টাকা খরচ করতে হতো, চলতি বছরের মে মাসে সেই খাবারের জন্য ১০৮ টাকা ৩০ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।

মে মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, গত কয়েক মাসের মতো মে মাসে শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি মূল্যস্ফীতি হয়েছে; এই মাসে গ্রামে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর শহরে হয়েছে ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

অর্থাৎ শহরের চেয়ে গ্রাম এলাকায় পণ্যমূল্য ও অন্যান্য সেবার দাম বেড়েছে বেশি।

বেশ কিছুদিন ধরেই সরকার বা বিবিএসের দেয়া হিসাবের চেয়ে মূল্যস্ফীতির হার বাস্তবে অনেক বেশি বলে বলে আসছেন অর্থনীতিবিদরা।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) বলছে, দেশে মূল্যস্ফীতির প্রকৃত হার বিবিএসের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি।

গত ৩ মার্চ ‘মূল্যস্ফীতি: সরকারি পরিসংখ্যান বনাম প্রান্তিক মানুষের বাস্তবতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সানেম। তাতে মার্চ মাসের বিবিএসের ৬ দশমিক ২২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে বলা হয়, শহর এলাকায় সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার এখন ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর গ্রামে এই হার ১২ দশমিক ১০ শতাংশ।

প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, ‘পণ্যমূল্য নিয়ে সরকারি সংস্থা বিবিএস যে তথ্য দিচ্ছে, তা বাস্তবের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এ ক্ষেত্রে যদি সঠিক তথ্য তুলে আনা না হয়, তবে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া টেকসই হবে না।’

নানা তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিবিএস পুরোনো ভিত্তি বছর ধরে মূল্যস্ফীতির হিসাব করছে, যা বর্তমান সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য না।’

সেলিম রায়হান বলেন, ‘নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ খুবই চাপে আছে। ভাত না খেয়ে অন্য কিছু খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করছে অনেক মানুষ।’

একই কথা বলেছেন গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। গত ১৬ মে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘বর্তমান আর্থসামাজিক পরিস্থিতি, জাতীয় বাজেট ও অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের প্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বিবিএসের মূল্যস্ফীতির হিসাব বাস্তবসম্মত ও বিজ্ঞানসম্মত নয়। বাজারের যে অবস্থা তাতে মূল্যস্ফীতি এখন ১২ শতাংশ হওয়া অসম্ভব কিছু নয়।’

তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ে সরকারের হিসাবের সঙ্গে বাস্তবতার বিস্তর ফারাক। বিবিএস ২০০৫–২০০৬ সালের ভোক্তাদের মাথায় রেখে মূল্যস্ফীতি ঠিক করে। ১৭ বছর পরে সেই মানুষদের পরিবর্তনকে তারা ধরছে না। গ্রামে মূল্যস্ফীতি শহরের চেয়ে বেশি।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের মূল্যস্ফীতির তথ্য নিয়ে প্রশ্ন আছে। আর প্রশ্ন থাকাটাই স্বাভাবিক। কেননা, বাজারের পণ্যমূল্যের সঙ্গে বিবিএসের তথ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায় না।’

‘তারপরও বিবিএসের তথ্যকে মেনে নিয়ে যদি বলি, তাহলেও বলতে হয় একটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছি আমরা। কয়েক মাস ধরেই কিন্তু মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এতে অবশ্য বৈশ্বিক বাজারেরও একটা প্রভাব আছে। বিশ্ববাজারে সব জিনিসের দামই বেশ বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। তার প্রভাব আমাদের এখানেও পড়বে।

‘তাই আমার বিবেচনায় মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখাই এখন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে আমি মনে করি।’

বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, দেড় বছর পর গত বছরের ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের ‘ঘর’ অতিক্রম করে ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশে ওঠে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে তা কমে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশে নেমে আসে।

২০২০ সালের জুনে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। এর পর থেকে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের নিচেই অবস্থান করছিল।

চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, শাকসবজি থেকে শুরু করে মাছ-মুরগিসহ সব ধরনের প্রয়োজনীয় খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

১২ মাসের গড় হিসাবে মে মাস শেষে (২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের মে) মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ, যা নির্ধারিত লক্ষ্যের চেয়ে বেশ খানিকটা ওপরে।

বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরেছে সরকার। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে এই লক্ষ্য ধরা ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু অর্থবছর শেষ হয় ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি নিয়ে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত ৯ জুন জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন তাতে গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরেছেন।

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করার পর থেকেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। তার প্রভাব পড়েছে ছোট-বড় সব দেশে। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা পূর্বাভাস দিচ্ছে, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে।

গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছুঁইছুঁই

শহরের চেয়ে গ্রামে খাবারের দাম বেশি। মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছুঁইছুঁই করছে; ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশে উঠেছে।

বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, মে মাসে বাংলাদেশে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে, তার মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

আগের মাস এপ্রিলে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ সার্বিক মূল্যস্ফীতির মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, মে মাসে মার্চের চেয়ে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে।

মে মাসে গত কয়েক মাসের মতো শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি হয়েছে; এই মাসে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে প্রায় ৮ শতাংশ, ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এপ্রিলে ছিল ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

মে মাসে শহরাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এপ্রিলে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, মে মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গ্রামে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ।

আগের মাস এপ্রিলে গ্রামে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।

মে মাসে শহর এলাকায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক শুন্য ৮ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আগের মাস এপ্রিলে শহর এলাকায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।

শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি কেন–এ প্রশ্নের উত্তরে অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার কাছেও অবাক লাগে, এটা কেন হচ্ছে। তবে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের কারণে এখন অনেক পণ্যই দ্রুত গ্রাম থেকে শহরে চলে আসে। সে ক্ষেত্রে গ্রামে পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সে কারণে দাম বেড়ে যেতে পারে।’

‘তবে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, গ্রাম হোক আর শহরই হোক, বাজারের বাস্তব প্রতিফলন বিবিএসের তথ্যে প্রতিফলিত হচ্ছে না। সে কারণেই বিবিএসের তথ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এ ক্ষেত্রে বিবিএসের তথ্য সংগ্রহে যদি কোনো সমস্যা থাকে, সেটা দূর করা প্রয়োজন।’

আরও পড়ুন:
নিত্যপণ্যের আমদানি কর প্রত্যাহার করবে সরকার
দীর্ঘ লাইনে দীর্ঘশ্বাস
নিত্যপণ্যের দাম ও সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস
‘সরকারের পক্ষে সব বাজার মনিটরিং সম্ভব নয়’
চালের দামে লাগাম টানবে কে

মন্তব্য

আরও পড়ুন

ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা

বেনাপোলে আটকে গেল তৈরি পোশাকবোঝাই ৩৬ ট্রাক

স্থলবন্দর দিয়ে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞায় ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বেনাপোলে আটকে গেল তৈরি পোশাকবোঝাই ৩৬ ট্রাক

ভারত সরকারের আমদানি নিষেধাজ্ঞার পর যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে তৈরি পোশাকের ৩৬টি ট্রাক আটকা পড়েছে। পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষের ‘গেইট পাস’ অনুমতি না পাওয়ায় পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো ভারতে যেতে পারেনি বলে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান।

ভারত সরকারের আমদানি নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে জানতে চাইলে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, ‘এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি আমরা পাইনি। পত্র-পত্রিকায় দেখেছি। বেনাপোল বন্দর দিয়ে শনিবার পর্যন্ত সব পণ্য রপ্তানি হয়েছে।’

‘তবে রোববার সকাল থেকে অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হলেও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাক জাতীয় কোনো পণ্য রপ্তানি হয়নি। বিভিন্নভাবে জানতে পেরেছি ৩০ থেকে ৩৫ ট্রাক পণ্য এখানে আটকে আছে।’

বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাকসহ প্রায় সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত সরকার।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের এক মাসের মাথায় ভারতের এই পাল্টা নিষেধাজ্ঞা এল, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করার কথা বলেছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

গত বছর (২০২৩-২৪ অর্থবছর) বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায় ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। এদিকে বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকটি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। যেসব পণ্যের এলসি/টিটি এরই মধ্যে হয়ে গেছে সেসব পণ্য যাতে আমদানি করা যায় তার জন্য কাস্টমসে আলোচনা চলছে।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৭ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি করে, গত অর্থবছরে তা প্রায় অপরিবর্তিত ছিল। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি করেছে ১৭ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে রপ্তানি হয়েছে ১১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকার পণ্য। যেসব দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে, তার মধ্যে ভারত একটি, যেখানে প্রতিবছর প্রায় ৭০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। এর মধ্যে ৯৩ শতাংশের মত পোশাক পণ্য স্থলপথেই রপ্তানি হয়। ফলে ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা এ খাতের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দেখা দেবে বলে ব্যবসায়ীদের শঙ্কা।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান আরও বলেন, ‘স্থলপথে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে কার্যত ভারতের সঙ্গে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে। আমদানিকারকরা বেনাপোল ও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে থাকে কলকাতায়। সেটা বন্ধ হয়ে গেল। নৌপথে পণ্য পরিবহন করা এসব রপ্তানিকারকদের পক্ষে সম্ভব না। এতে খরচের পাশাপাশি সময়ের কারণে সেটা তারা পারবেন না।’

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ভারত সরকার স্থলবন্দর দিয়ে গার্মেন্টস সামগ্রী আমদানি নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। স্থলপথে এসব পণ্য রপ্তানিতে খরচ অনেক কম হতো কিন্তু সমুদ্র ও বিমান পথে পণ্য রপ্তানিতে খরচ অনেক বেশি হবে।’

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, বছরে ১০ থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেশিরভাগ আমদানিকারকেরা বেনাপোল বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী। এ পথে রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পাট, পাটের তৈরি পণ্য, গার্মেন্টস, তৈরি পোশাক, কেমিকেল, বসুন্ধারা টিসু, মেলামাইন, মাছ উল্লেখ্যযোগ্য।

ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন

স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যসহ সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে দাবি করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

এ বাস্তবতা তুলে ধরে বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এমন মন্তব্য করেন।

‘আমরা নিশ্চয় এই অবস্থানগুলোকে তুলে ধরবো এবং সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবো। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা এই পদক্ষেপে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভৌগলিকভাবে সংযুক্ত দুটি দেশ আমরা। এটা বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার একটা প্রক্রিয়া। উভয়পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে এটার একটা উপযুক্ত সিদ্ধান্ত আনতে পারবো। আমাদের আরও কিছু বন্দর এখনও খোলা আছে,’ বলেন শেখ বশিরউদ্দীন।

তিনি জানান, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। স্থানীয় স্থলবন্দরে বিশেষ করে আখাউড়া ও ডাউকি সীমান্তভিত্তিক কিছু সিদ্ধান্তের কথা শুনেছি। আনুষ্ঠানিকভাবে জানার পর সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। এখন বিষয়টি বিশ্লেষণ করবো।’

তবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যকে স্বাভাবিক বাণিজ্য প্রবাহ বলে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা যেটা আমাদের থেকে নেয়, সেটা সুলভ মূল্যের কারণেই নেয়। আমরাও একই কারণে তাদের পণ্য কিনি। সুতরাং এখানে স্বাভাবিক বাণিজ্য প্রবাহের বিষয়গুলো আমরা তুলে ধরবো।’

‘আমরা আমাদের বৈচিত্রকরণ ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি ঘটাবো,’ যোগ করেন শেখ বশিরউদ্দীন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে খুব বেশি যে আসবাব যায়, তা না। পোশাকপণ্য যায়, আমরা প্রতিযোগিতা সক্ষমতার মাধ্যমেই এগুলো পাঠিয়ে থাকি। দুপক্ষের জন্যই লাভজনক বিধায় এগুলো যায়। আশা করি, উভয় দেশের ভোক্তা ও উৎপাদনের স্বার্থে এটা চলমান থাকবে।’

এর আগে ট্রান্সশিফমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ায় কী ধরনের প্রবাহ পড়েছে, জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা দাবি করেন, ‘ট্রান্সশিফমেন্টের কোনো প্রভাব আমাদের ওপর নেই। নিজস্ব সক্ষমতা ব্যবহার করে নিজস্বভাবেই এই সমস্যা সমাধান করেছি।’

সূত্র: বিডিনিউজ, ইউএনবি

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
From now on the dollar will be market based Governor

এখন থেকে ডলারের দাম হবে বাজারভিত্তিক: গভর্নর

জুনের মধ্যে আইএমএফের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়
এখন থেকে ডলারের দাম হবে বাজারভিত্তিক: গভর্নর

বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে উল্লেখ করে ডলার-টাকার বিনিময় হার এখন থেকে বাজারনির্ভরভাবে নির্ধারণের সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।

এ সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে বাংলাদেশ আগামী জুন মাসের মধ্যে ১৩৩ কোটি ডলারের ঋণ কিস্তি পাবে বলেও জানান তিনি।

ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করা নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের দর-কষাকষি চলছিল। মূলত সে কারণে আইএমএফ ঋণের কিস্তি ছাড় করছিল না। এর মধ্যে গতকাল জানা যায়, বাংলাদেশ ডলারের বিনিময় আরও নমনীয় করতে রাজি হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলমান ৪৭০ কোটি ডলারে ঋণের দুটি কিস্তি একসঙ্গে ছাড় করতে রাজি হয়েছে আইএমএফ।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, গত ৯ মাসে রিজার্ভ থেকে কোনো ডলার বিক্রি করা হয়নি, তবুও বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে এবং তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না। এ অবস্থায় বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে ব্যাংকারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, বাজারভিত্তিক করায় হঠাৎ করে ডলারের রেট অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। দীর্ঘদিন ধরে ডলারের রেট ১২২ টাকার আশপাশে রয়েছে এবং তা সেখানেই থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ডলারের রেট দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা-সরবরাহ অনুযায়ী নির্ধারিত হবে, বাইরের দেশের নির্দেশে নয়। বর্তমানে বাজারে ডলারের সরবরাহও পর্যাপ্ত রয়েছে।

তবে, তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দুবাইভিত্তিক কিছু সিন্ডিকেট বাজারে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করতে পারে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্ক থাকবে এবং সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে। কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, ড. মো. হাবিবুর রহমান, কবির আহমেদ, উপদেষ্টা আহসান উল্লাহ এবং নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।

এদিকে গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি বছরের জুনের মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির জন্য নির্ধারিত ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার একত্রে ছাড় করবে।

বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে সকল বিষয় সতর্কতার সাথে পর্যালোচনা করে উভয়পক্ষ রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, মুদ্রা বিনিময় হারসহ অন্যান্য সংস্কার কাঠামো বিষয়ে সম্মত হয়েছে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনা এবং বিনিময় হার ব্যবস্থায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বিষয়ে অধিকতর পর্যালোচনার লক্ষ্যে চতুর্থ রিভিউ সম্পন্ন হওয়ার পর উভয় রিভিউয়ের জন্য নির্ধারিত কিস্তির অর্থ একত্রে ছাড় করা হবে বলে বিগত তৃতীয় রিভিউয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত চতুর্থ রিভিউয়ের সময় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত ব্যাংক-ফান্ড সভায় এবিষয়ে আলোচনা চলমান ছিল।

এ ছাড়া বিশ্ব ব্যাংক, এডিবি, এআইআইবি, জাপান এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আরও প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা জুন মাসের মধ্যে পাবে বলে বাংলাদেশ প্রত্যাশা করছে। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে এ অর্থ পাওয়া গেলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে। ফলে মুদ্রার বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয় যে, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা গ্রহণের ক্ষেত্রে যেসকল সংস্কার কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে তা সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব বিবেচনায় পরিকল্পিত এবং জাতীয় স্বার্থে গৃহীত। এ সকল সংস্কার কর্মসূচির ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগীদের কার্যক্রম শুধুমাত্র কারিগরি সহায়তা প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

মন্তব্য

রমজানে ফল আমদানিতে শুল্ক কমাল সরকার

রমজানে ফল আমদানিতে শুল্ক কমাল সরকার দোকানে সাজিয়ে রাখা ফল। ফাইল ছবি
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, রমজানে দ্রব্যমূল্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বৃহত্তর জনস্বার্থে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পবিত্র রমজান মাসে দাম সহনীয় রাখতে টাটকা ফলের ওপর আমদানি শুল্ক কমিয়েছে সরকার।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত ১৬ মার্চ জারি করা দুটি প্রজ্ঞাপনে আমদানি পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে এবং ৫ শতাংশ অগ্রিম কর সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ১০ মার্চ পৃথক প্রজ্ঞাপনে ফল আমদানির ওপর অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়। ফলে মোট শুল্ক কমানো হয়েছে ১৫ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, রমজানে দ্রব্যমূল্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বৃহত্তর জনস্বার্থে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এনবিআরের দাবি, বৃহত্তর জনস্বার্থে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত কয়েক মাসে ভোজ্যতেল, চিনি, আলু, ডিম, পেঁয়াজ, চাল, খেজুর, কীটনাশকসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক, নিয়ন্ত্রণ শুল্ক, ভ্যাট, অগ্রিম আয়কর ও অগ্রিম করের উল্লেখযোগ্য অংশ অব্যাহতি দিয়েছে।

আরও পড়ুন:
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ব্যবস্থা: উপদেষ্টা
‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিশেষ নজর রয়েছে’
দুই টাকায় ইফতার
বিনামূল্যে ইফতারি খাওয়াচ্ছেন সনাতন ধর্মের সুজন প্রসাদ
ফরিদপুরে ৫০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস, ১০০ টাকায় তরমুজ বিক্রি  

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Benapole ports do not have the effect of importing huge rice in the market

বেনাপোল বন্দর দিয়ে বিপুল চাল আমদানির প্রভাব নেই দামে

বেনাপোল বন্দর দিয়ে বিপুল চাল আমদানির প্রভাব নেই দামে ট্রাক থেকে খালাস করা হচ্ছে চাল। ছবি: ইউএনবি
দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত ৯২টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান শুল্কমুক্ত কোটায় এসব চাল আমদানি করে।

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত ৪ মাসে ভারত থেকে ১৮ হাজার ৮০০ টন চাল আমদানি করা হলেও দেশের বাজারে দামে প্রভাব পড়ছে না।

দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত ৯২টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান শুল্কমুক্ত কোটায় এসব চাল আমদানি করে।

চলতি অর্থবছরে ১৭ নভেম্বর থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত এসব চাল আমদানি করা হয়। তবে ভারত থেকে চাল আমদানি অব্যাহত থাকলেও দেশের বাজারে দামে প্রভাব পড়ছে না।

গত ১৩ মার্চ বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৩৫০ টন চাল আমদানি করা হয়। এ নিয়ে গত চার মাসে ১৮ হাজার ৮০০ টন চাল আমদানি হয় এ বন্দর দিয়ে।

গত ৬ মার্চ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আরিফুল ইসলামের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বেসরকারিভাবে নন বাসমতি সেদ্ধ চাল ও আতপ চাল আমদানির জন্য বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে এলসি খোলার সময়সীমা আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হলো।’

দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল ও ক্রেতা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সরকার দেশের শীর্ষ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাইরের দেশ থেকে চাল আমদানির অনুমতি দেয়। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে বাইরের দেশ থেকে চাল আমদানির এই সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, আটটি চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গত বছরে ১৭ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৩ মার্চ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৮০০ টন চাল আমদানি করেছে। সারা দেশে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ৯২ প্রতিষ্ঠানকে। দুই লাখ ৭৩ হাজার টন সেদ্ধ এবং এক লাখ ১৯ হাজার টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তাদের।

অনেক প্রতিষ্ঠান এ সময়ের মধ্যে আমদানি করতে পারেনি। তারপরও সরকার ২৫ দিন সময় নির্ধারণ করে দেয় আমদানি করা চাল বাজারজাত করার জন্য। আশানুরূপ চাল আমদানি না হওয়ায় পরে তা প্রথম দফায় ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ায় সরকার। তারপরও আমদানি ধীরগতির কারণে আবারও সময় বাড়ায় সরকার।

এভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল আমদানি না হওয়ায় চতুর্থবারের মতো আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে সরকার। এ সময়ের মধ্যে সব চাল আমদানি হলে বাজারে চালের দাম কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে চাল আমদানি অব্যাহত থাকলেও বাজারে দামের ওপর প্রভাব পড়ছে না। রোজার শুরু থেকেই সব ধরনের চালের দাম কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। অব্যাহতভাবে চালের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ।

ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, চালের দাম কমানোর জন্য সরকারের নানামুখী উদ্যোগের পরও মিলছে না সুফল। ভারত থেকে চাল আমদানি হলেও দেশীয় চালের দামের ওপর তার প্রভাব পড়ছে না।

তারা বলছেন, রোজার শুরুতেই সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। পণ্যটির অস্বাভাবিক এ মূল্যবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। রোজায় সবজিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র কিনতে পারলেও চাল কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

চাল ব্যবসায়ী দীন মোহাম্মদ বলেন, ‘রোজার শুরুতেই চালের দাম কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। রোজার আগের ৬৪ টাকা কেজি দরের ২৮ জাতের চাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৬৯ টাকায়, ৭২ টাকার মিনিকেট ৭৬ টাকায়, ৫২ টাকার মোটা চাল ৫৬ টাকায়, ৮৪ টাকার বাসমতি চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৮ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে।

‘আমদানি করা ভারতীয় একটি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে। তবে বাজারে ক্রেতাদের মধ্যে ভারতীয় চালের চাহিদা কম।’

তিনি বলেন, ‌‘রোজার মধ্যে চালের দাম কমার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। ভারতীয় চাল আমদানি অব্যাহত থাকলেও বাজারে দামের ওপর কোনো প্রভাব পড়ছে না। তবে সামনে নতুন চাল বাজারে উঠলে সরবরাহ বাড়লে দাম কমতে পারে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) শামিম হোসেন জানান, ভারত থেকে আমদানি করা চালের ট্রাক স্থলবন্দরে ঢুকলেই দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা তা দ্রুত ছাড় করার ব্যবস্থা নেন, যাতে আমদানি করা চাল দেশের বাজারে দ্রুত সরবরাহ করা যায়।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জানান, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে বেনাপোল স্থলবন্দরের গুরুত্ব অনেক বেশি। বেনাপোল থেকে কলকাতার দূরত্ব কম হওয়ায় আমদানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের সময় স্বল্পতা ও আর্থিক সাশ্রয় ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাড়ায়। পণ্য পরিবহনে যাতায়াত ব্যবস্থা রয়েছে উন্নত।

তিনি আরও জানান, এ বন্দর থেকে পণ্য ছাড় করার পর অতি দ্রুত পৌঁছাতে পারে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের বাজারে।

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত চার মাসে ভারত থেকে ১৮ হাজার ৮০০ টন চাল আমদানি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চাল আমদানির জন্য সরকার আবারও এক মাস সময় বাড়িয়েছে।

আরও পড়ুন:
ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় নিহত ৬: বাসচালক গ্রেপ্তার
ভারত থেকে আমদানিকৃত চালের প্রথম চালান চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে বৃহস্পতিবার
আরাকান আর্মির স্বাক্ষরে আসা ১৯ টন চাল ফেরত যাচ্ছে
চাতলাপুর দিয়ে ২১ দিন পর ত্রিপুরায় গেল ৭০ টন মাছ
টেকনাফ স্থলবন্দরে মাছের বোট ভিড়েছে টানা নয়দিন পর

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
The price of fuel oil in March

মার্চে অপরিবর্তিত জ্বালানি তেলের দাম

মার্চে অপরিবর্তিত জ্বালানি তেলের দাম কনটেইনারে ভরা হচ্ছে জ্বালানি তেল। ফাইল ছবি
এক অফিস আদেশে বলা হয়, ‘মার্চ মাসের জন্য তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাচ্ছে সরকার। এ জন্য বিদ্যমান মূল্য কাঠামো অনুযায়ী ডিজেল ও কেরোসিন প্রতি লিটার ১০৫ টাকা, অকটেন ১২৬ টাকা এবং পেট্রল ১২২ টাকায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।’

দেশে জ্বালানি তেলের দাম মার্চে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

এক অফিস আদেশে শনিবার এমন তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ‘মার্চ মাসের জন্য তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাচ্ছে সরকার। এ জন্য বিদ্যমান মূল্য কাঠামো অনুযায়ী ডিজেল ও কেরোসিন প্রতি লিটার ১০৫ টাকা, অকটেন ১২৬ টাকা এবং পেট্রল ১২২ টাকায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।’

এর আগে গেল ৩১ জানুয়ারি পেট্রল, অকটেন, ডিজেল ও কেরোসিনের মতো জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা বাড়ানো হয়, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে যা কার্যকর করা হয়।

জানুয়ারিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে এক টাকা কমানো হয়েছিল। পেট্রল ও অকটেনের দাম অপরিবর্তিত ছিল।

গত বছরের মার্চ থেকে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ শুরু করেছে সরকার। সে হিসাবে প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন:
দাম সহনীয় রাখতে ভোজ্যতেলে কর ও ভ্যাট অব্যাহতি
‘কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্যে বেশি দামে জ্বালানি কিনতে হচ্ছে’
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বিশেষ বিধান আইন বাতিল
বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের চুক্তি পর্যালোচনায় তদন্তকারী সংস্থা নিয়োগের সুপারিশ
জ্বালানি খাতে তিন মাসে সাশ্রয় ৩৭০ কোটি টাকা: উপদেষ্টা

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Who does GM want top priority in controlling product prices?

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার চান জিএম কাদের

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার চান জিএম কাদের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। ফাইল ছবি
জিএম কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করি। আমরা মানুষের দুঃখ-কষ্টের কথা বলেই যাব।’

সবার আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।

তিনি বলেন, একদিকে মূল্যস্ফীতির কারণে নিত্যপণ্য ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে, অন্যদিকে শতাধিক পণ্য ও সেবায় নতুন করে ভ্যাট আরোপ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।

এক বিবৃতিতে সোমবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন বা সংস্কার নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। মানুষের জীবন ও জীবিকা নিয়ে চিন্তা করার যেন কেউ নেই। টিসিবির ট্রাকের সামনে লাইন দিনে দিনে বড় হচ্ছে।

‘এখন প্যান্ট-শার্ট পড়েও স্বল্প দামে চাল-ডাল কিনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অসংখ্য মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছে। চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম হওয়ায় অনেকেই ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে না পেরে একবুক কষ্ট নিয়ে খালি হাতে ঘরে ফিরছে।’

তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কাছে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিম কেনা দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিভাবকরা সন্তান ও পরিজনের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছেন না। সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পারছেন না; কিনতে পারছেন না জীবন রক্ষাকারী ঔষধ।

‘এমন বাস্তবতায় সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা।’

জিএম কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করি। আমরা মানুষের দুঃখ-কষ্টের কথা বলেই যাব।’

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে সরকার দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।

আরও পড়ুন:
ক্রেতা হিসেবে নিজেও চাপে আছি: খাদ্য উপদেষ্টা 
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও আমাদের ধ্বংসের ষড়যন্ত্র থামেনি: জি এম কাদের
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ব্যবস্থা: উপদেষ্টা
‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিশেষ নজর রয়েছে’
শাসন ব্যবস্থাই সরকারকে দানবে পরিণত করে: জিএম কাদের

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Türkiye wants to increase the trade with Bangladesh to two billion dollars

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য দুই বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চায় তুরস্ক

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য দুই বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চায় তুরস্ক সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকালে তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাতের সঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সাক্ষাৎ। ছবি: বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাত বলেন, বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে দুই বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ তুরস্ক থেকে আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি করে। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাত।

সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকালে এ সাক্ষাৎ হয়।

ওই সময় বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য দুই বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলারে উন্নীত করার বিষয়ে আগ্রহের কথা জানান তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী।

সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের আকার বৃদ্ধি, বাংলাদেশে তুরস্কের বিনিয়োগ সম্ভাবনা, হালাল ফুড সনদ প্রাপ্তি ও ইকোনমিক কমিশন গঠন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, তুরস্ক বাংলাদেশের জন্য ভাতৃপ্রতিম দেশ। বিভিন্ন খাতে দীর্ঘদিনের সহযোগিতার ইতিহাস রয়েছে বাংলাদেশ ও তুরস্কের। এর মধ্যে ব্যবসা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি অন্তর্ভুক্ত।

তিনি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণকে উৎসাহিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তুরস্ককে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ হালাল রপ্তানিকারক দেশ উল্লেখ করে বাংলাদেশের হালাল খাবারের বাজার সম্প্রসারণে তুরস্কের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হালাল সনদ প্রাপ্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে তুরস্কের হালাল অ্যাক্রিডিটেশন অথরিটি ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের মধ্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হালাল সনদ প্রাপ্তি সহজ করবে। হালাল খাবার রপ্তানি দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করবে।

বাংলাদেশে বর্তমানে চমৎকার বিনিয়োগ পরিবেশ রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ এখন অনেক সহজ করা হয়েছে। বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধাও দিচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ শিল্প, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, সেবা, নির্মাণশিল্প এবং তৈরি পোশাক খাতে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।

ওই সময় তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে তুরস্কের বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাত বলেন, বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে দুই বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ তুরস্ক থেকে আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি করে। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে।

তিনি জানান, বর্তমানে তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য মূলত টেক্সটাইল খাতকেন্দ্রিক। তুরস্ক বাংলাদেশে টেক্সটাইল খাতের বিভিন্ন যন্ত্র ও কেমিক্যাল রপ্তানি করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক তৈরি পোশাক আমদানি করে। তুরস্ক কেবল টেক্সটাইল খাতে সীমাবদ্ধ না থেকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বহুমুখীকরণ করতে চায়।

তিনি বাংলাদেশে রিনিউবল এনার্জি, গাড়ি নিমাণ শিল্প, ফার্মাসিটিক্যালস, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাত, লজিসটিক্স ও নির্মাণ শিল্প খাতে তুরস্কের বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

ওই সময় উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী মুস্তাফা তাজকু এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব ) মো. আবদুর রহিম খান।

আরও পড়ুন:
দি ইকোনমিস্টের ‘কান্ট্রি অফ দ্য ইয়ার’ বাংলাদেশ
একাত্তরের অমীমাংসিত সমস্যা মীমাংসা করুন: শাহবাজকে ড. ইউনূস
নির্বাচনি প্রস্তুতির অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপকে স্বাগত যুক্তরাষ্ট্রের
৬ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয় বাংলাদেশের
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বাইডেন

মন্তব্য

p
উপরে