পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মৌলভিত্তির কোম্পানিতে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়ে থাকলেও এ ক্ষেত্রে আগ্রহ খুব একটা বেশি নেই- এটা স্পষ্ট। তবে যারা লভ্যাংশের ইতিহাস দেখে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করেন, তাদের বেশির ভাগই বেশ ভালো মুনাফা করতে পেরেছেন।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অন্তত ১১টি ব্যাংকের গত ছয় বছরের লভ্যাংশ হিসাব করে দেখা গেছে, যারা ২০১৬ সাল থেকে শেয়ার ধরে রেখেছেন, তারা বেশ মুনাফায় আছেন।
বছর বছর বোনাস শেয়ার যোগ হতে থাকা আর তিন বছর ধরে নগদ লভ্যাংশে ব্যাংকগুলো জোর দেয়ায় এখন ব্যাংকগুলো যে হারে নগদ লভ্যাংশ দিয়ে থাকে, বিনিয়োগের তুলনায় প্রকৃত লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড ইল্ড আরও বেশি হচ্ছে।
ব্যাংকে আমানতের সুদহার ক্রমেই কমতে থাকা আর সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমিয়ে আনা হয়েছে। আবার মুনাফার হার তুলনামূলক বেশি হলেও এখন সঞ্চয়পত্রে ঢালাও বিনিয়োগের সুযোগ নেই। এদিক থেকেও ব্যাংকে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীরা তুলনামূলক বেশি লাভবান হচ্ছেন।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘মৌলভিত্তির শেয়ারে বিনিয়োগ সব সময়ই লাভজনক। বেশ কিছু ব্যাংক রয়েছে, যেগুলোয় বিনিয়োগ অত্যন্ত লাভজনক। মার্কেন্টাইল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক- এ রকম আরও অনেক ব্যাংক রয়েছে, যেগুলোর ইল্ড রেটই ১২ থেকে ১৪ শতাংশের ওপরে। তাহলে এই ধরনের শেয়ারগুলো যারা ধরে রাখবেন, তারা অবশ্যই লাভবান হবেন।’
ভালো মুনাফার সুযোগ থাকার পরও ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগ তুলনামূলক কম বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই অধ্যাপক। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীরা লেখাপড়া করতে চায় না, জানতে চায় না। কোম্পানি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই, জানতেও চায় না। অথচ শেয়ার কিনে বসে থাকে।
‘অথচ ভালো শেয়ারে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করতে চায় না। বাংলাদেশে এক-দুই বছরের বেশি সময় ধরে শেয়ার ধরে রাখার মতো বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৫ শতাংশ। বাকি ৯৫ শতাংশই কেনাবেচার দল। অথচ যারা ২০১৬ সাল থেকে শেয়ার ধরে রেখেছে তারা লাভ করেছে। আবার যারা করেনি তাদের কিন্তু অভিযোগের শেষ নেই। এসব কারণেই মার্কেট আনস্ট্যাবল থাকে।’
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, দীর্ঘ মেয়াদের ব্যাংকে বিনিয়োগ অনেক বেশি লাভজনক। লং টার্মে শেয়ার ধরে রাখলে দেখা যায় ১৫ শতাংশের বেশি মুনাফা হচ্ছে, যা সঞ্চয়পত্র বা এফডিআরের দ্বিগুণ। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করেন না বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী।’
অল্প সময়ে মুনাফা লাভের প্রবণতা ও দ্বৈত করহার নীতিই দীর্ঘ মেয়াদের বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করছে বলে মনে করেন ছায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীরা দ্রুত সময়ে ক্যাপিটাল গেইন করতে চায়। এ জন্য তারা লম্বা সময় শেয়ার ধরে রেখে ডিভিডেন্ড গ্রহণের ব্যাপারে অতটা আগ্রহী নয়। একটা শেয়ার ১০ টাকা দিয়ে কিনে ১১ টাকায় বিক্রি করলেই তো ১০ শতাংশ মুনাফা হয়ে গেল। এভাবে দুটি শেয়ারে হলেই ২০ শতাংশ মুনাফা হয়ে যায়। তাহলে কেন এক বছর অপেক্ষা করে ডিভিডেন্ডের ওপর ১৫ শতাংশ কর দিয়ে ওই ডিভিডেন্ড নেবে?’
ব্রোকারেজ হাউস এক্সপো ট্রেডার্সের সিইও শহিদুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংকে বিনিয়োগে সবাই আগ্রহী হন না। প্রথমত, অনেকেই চান দ্রুত ক্যাপিটাল গেইন করতে। দ্বিতীয়ত, অনেকেই ইসলামিক মূল্যবোধ থেকে ব্যাংকের শেয়ারের বিনিয়োগ করতে চান না। ইসলাম ধর্মে সুদের কারবার হারাম বলা হয়েছে। যার কারণে অনেক বিনিয়োগকারীই মনে করেন, ব্যাংক মানেই সুদের কারবার। এ জন্য তারা ব্যাংকের শেয়ার কেনেন না বা এ থেকে মুনাফা গ্রহণে আগ্রহী হন না।’
প্রিমিয়ার ব্যাংক
এই ব্যাংকটির বিনিয়োগকারীরা এই সময়ে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন। ২০১৬ সালে যখন ব্যাংকটির শেয়ারদর ৯ টাকা ৯০ পয়সার মতো ছিল, তখন বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ হিসেবে পেয়েছেন শেয়ারপ্রতি ১ টাকা আর ২ শতাংশ বোনাস শেয়ার।
পরের দুই বছর ১৫ শতাংশ ও সাড়ে ১৫ শতাংশ করে বোনাস শেয়ার পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ২০১৯ সালে শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা নগদের পাশাপাশি আরও ৫ শতাংশ বোনাস, ২০২০ সালে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদের পাশাপাশি সাড়ে ৭ শতাংশ বোনাস ও এবার আরও সাড়ে ১২ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার পেয়েছেন।
এই হিসাবে কেউ ২০১৭ সালের শুরুতে এক হাজার শেয়ার কিনে থাকলে তার শেয়ারসংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৮২টি।
তখন এই শেয়ার কিনতে তার যদি ৯ হাজার ৯০০ বা ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ হয়ে থাকে, তাহলে বর্তমান ১৩ টাকা ৫০ পয়সা দরে এই পরিমাণ শেয়ারের দাম হয় ২২ হাজার ৭০৭ টাকা। অর্থাৎ মুনাফা ১২ হাজার ৮০৭ টাকা।
আর এই ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে এই ছয় বছরে নগদ লভ্যাংশ এসেছে ৫ হাজার ৩৬৬ টাকা। ১০ শতাংশ কর টাকার পর হাতে এসেছে ৪ হাজার ৮২৯ টাকা। অর্থাৎ ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ছয় বছরে মুনাফা সব মিলিয়ে ১৭ হাজার ৬৩৬ টাকা।
ট্রাস্ট ব্যাংক
এ ব্যাংকটি ২০১৬ সালে যখন নগদ ১৫ শতাংশ ও বোনাস ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে, সে সময় ডিভিডেন্ড ইল্ড ছিল ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। এই হিসাবে শেয়ারদর সে সময় ছিল ২৩ টাকা ৮০ পয়সা।
এক হাজার শেয়ারে ২৩ হাজার ৮০০ টাকা বিনিয়োগ করে থাকলে বিনিয়োগকারীর এই ছয় বছরে মোট নগদ লভ্যাংশ হয় ৭ হাজার ৩২২ টাকা, যা কর বাদ দিয়ে হয় ৬ হাজার ৫৯০ টাকা।
২০১৬, ২০১৮, ২০২০ এবং ২০২১ সালে ১০ শতাংশ করে এবং ২০১৯ সালে ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার যুক্ত হওয়ায় সেই এক হাজার শেয়ার এখন হয়েছে ১ হাজার ৫৩৭টি। বর্তমান দর ৩৪ টাকা ৮০ পয়সা হিসাবে এর মোট বাজারমূল্য ৫৩ হাজার ৪৯৮ টাকা।
এখানে বিনিয়োগকারীর মুনাফা মোট ২৯ হাজার ৬৯৪ টাকা। আর নগদ লভ্যাংশ মিলিয়ে মোট আয় ৩৬ হাজার ২৮৮ টাকা।
যমুনা ব্যাংক
এ ব্যাংকটি গত কয়েক বছরে সবচেয়ে বেশি হারে নগদ লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। এর মধ্যে ২০১৬-এর ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ২০১৭ সালের শুরুর দিকে যখন শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ৫ পয়সা হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়, তখন ডিভিডেন্ড ইল্ড ছিল ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। এই হিসাবে ওই সময় শেয়ারদর ছিল ১৫ টাকা ৬০ পয়সা। অর্থাৎ এক হাজার শেয়ারে সে সময় বিনিয়োগ ছিল ১৫ হাজার ৬০০ টাকা।
এবং ব্যাংকটি এই ছয় বছরে কেবল ২০১৭ সালে ২২ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছিল। বাকি প্রতি বছরই দেয় নগদ লভ্যাংশ।
এর মধ্যে ২০১৮ সালে ২০ শতাংশ, ২০১৯ সালে ১৫ শতাংশ এবং ২০২০ ও চলতি বছর সাড়ে ১৭ শতাংশ করে লভ্যাংশ ঘোষণা হয়েছে।
অর্থাৎ চলতি বছরেরটা যোগ হলে ছয় বছরে নগদে লভ্যাংশ হবে ১০ হাজার ৫৯০ টাকা। ১০ শতাংশ কর কাটলে হাতে থাকবে ৯ হাজার ৫৩১ টাকা।
এক হাজার শেয়ার বেড়ে এখন হয়েছে ১ হাজার ২২০ টাকা। বর্তমান দর ২১ টাকা ৯০ পয়সা হিসাবে এই শেয়ারের দর ২৬ হাজার ৭১৮ টাকা। অর্থাৎ ১৫ হাজার ৬০০ টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে মোট আয় ২০ হাজার ৬৪৯ টাকা।
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক
এ ব্যাংকটি ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণার বছরে ডিভিডেন্ড ইল্ড ছিল ১২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অর্থাৎ তখন শেয়ারদর ছিল ১৫ টাকা ৯০ পয়সা। এই হিসাবে এক হাজার শেয়ারের দর ১৫ হাজার ৯০০ টাকা।
এই বিনিয়োগের বিপরীতে ছয় বছর মিলিয়ে নগদ লভ্যাংশ হয় ৯ হাজার ৬৮০ টাকা, যা ১০ শতাংশ কর বাদে হয় ৮ হাজার ৭১২ টাকা। আর সেই এক হাজার শেয়ার দুই বছরে বোনাস যোগ হয়ে হয়েছে ১ হাজার ৭১টি।
বর্তমান দর ২৬ টাকা ১০ পয়সা হিসাবে এই শেয়ারের বাজারদর ২৭ হাজার ৯৫৩ টাকা, যা বিনিয়োগের চেয়ে ১২ হাজার ৫৩ টাকা বেশি। এর সঙ্গে নগদ লভ্যাংশ মিলিয়ে মোট আয় ২০ হাজার ৭৬৫ টাকা।
ডাচ্-বাংলা
২০১৬ সালে ব্যাংকটি যখন ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে, সে বছর বিনিয়োগকারীর ডিভিডেন্ড ইল্ড ছিল ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অর্থাৎ সে সময় শেয়ারদর ছিল ১১৭ টাকা।
সে সময় যদি কেউ ১ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে, তার তখন খরচ হয় ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা।
এ ব্যাংকটির বিনিয়োগকারীরা নগদের চেয়ে বোনাস শেয়ারের কারণে লাভবান হয়েছেন বেশি। ব্যাংকটি ২০১৮ সালে ১৫০ শতাংশ, পরের বছর ১০ শতাংশ, এর পরের বছর ১৫ শতাংশ এবং গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য আরও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে।
সব মিলিয়ে সেই এক হাজার শেয়ার এখন দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৭৮টি। বর্তমান দর ৬৪ টাকা ৪০ পয়সা হিসাবে মোট দাম ২ লাখ ২৩ হাজার ৯৮৩ টাকা।
পাশাপাশি নগদ লভ্যাংশ পাওয়া গেছে ১৭ হাজার ৩৭ টাকা। ১০ শতাংশ কর কাটার পর আসে ১৫ হাজার ৩৩৩ টাকা।
সব মিলিয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে মুনাফা হয় ১ লাখ ২২ হাজার ৩১৬ টাকা।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক
এ ব্যাংকটি ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য পরের বছরের শুরুতে যখন ১০ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করে, তখন বিনিয়োগকারীর নগদ লভ্যাংশের ইল্ড ছিল ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। অর্থাৎ তখন শেয়ারদর ছিল ১৫ টাকার মতো।
এক হাজার শেয়ার কিনলে সে বছর বিনিয়োগ করতে হয়েছে ১৫ হাজার টাকা।
এই এক হাজার শেয়ারে চলতি বছরের ঘোষণাসহ ছয় বছরে মোট নগদ লভ্যাংশ হয় ৩ হাজার ৯৬৮ টাকা। ১০ শতাংশ কর কাটলে তা হয় ৩ হাজার ৫৭১ টাকা।
আর ২০১৬ সালে ৫ শতাংশ, পরের দুই বছর ১০ শতাংশ করে, এরপর ২০১৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি আরও ৫ শতাংশ করে বোনাস যোগ হওয়ার পর শেয়ারসংখ্যা এবার দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৭০টি।
বর্তমান দর ১৯ টাকা ৮০ পয়সা হিসাবে এই শেয়ারের মোট বাজারমূল্য ২৯ হাজার ১০৬ টাকা। অর্থাৎ বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফা ১৪ হাজার ১০৬ টাকা, যা নগদ লভ্যাংশ যোগ হয়ে হয় ১৭ হাজার ৬৭৭ টাকা।
এনসিসি ব্যাংক
এ ব্যাংকটি ২০১৬ সালের জন্য লভ্যাংশ দেয় শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৬০ পয়সা বা ১৬ শতাংশ। ডিএসইর তথ্য বলছে, বিনিয়োগকারীর ডিভিডেন্ড ইল্ড বা শেয়ারদরের বিপরীতে আয়ের অনুপাত ছিল ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ। এই হিসাবে লভ্যাংশ নেয়ার সময় শেয়ারদর ছিল ১২ টাকা ৬০ পয়সা। অর্থাৎ এক হাজার শেয়ারের বিপরীতে বিনিয়োগ ছিল ১২ হাজার ৬০০ টাকা।
পরের বছর লভ্যাংশ দেয়া হয় ১৩ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৩০ পয়সা। ২০১৮ সালে শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা নগদের পাশাপাশি বোনাস শেয়ার দেয়া হয় ৫ শতাংশ।
২০১৯ সালে নগদ ১৫ শতাংশের পাশাপাশি ২ শতাংশ বোনাস, ২০২০ সালে নগদ সাড়ে ৭ শতাংশের পাশাপাশি সমপরিমাণ বোনাস শেয়ার দেয়া হয়েছে। এবারও নগদ ১২ শতাংশের পাশাপাশি বোনাস ঘোষণা করা হয়েছে ৪ শতাংশ।
এই হিসাবে সেই এক হাজার শেয়ার এখন দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯৭টি। বর্তমান দর ১৪ টাকা ৮০ পয়সা হিসাবে এই শেয়ারের মূল্য দাঁড়ায় ১৭ হাজার ৭১৫ টাকা। অর্থাৎ লাভ ৫ হাজার ১৫ টাকা।
এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা নগদ লভ্যাংশ পেয়েছেন ৭ হাজার ২১৭ টাকা। কর কাটার পর তা হবে ৬ হাজার ৪৯৫ টাকা।
অর্থাৎ এই এক হাজার শেয়ারে ১২ হাজার ৬০০ টাকা বিনিয়োগ করে ছয় বছরে বিনিয়োগকারীর লাভ ১১ হাজার ৫১০ টাকা।
মার্কেন্টাইল ব্যাংক
২০১৬ সালে ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদের ১৫ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়। ডিএসইর হিসাব অনুযায়ী ওই বছর ডিভিডেন্ড ইল্ড ছিল ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ শেয়ারদর ছিল ১৫ টাকার সামান্য বেশি।
এক হাজার শেয়ারে যদি ১৫ হাজার ১০০ টাকা বিনিয়োগ করে কেউ শেয়ার ধরে রাখেন, তাহলে তিনি এখন বেশ লাভে আছেন।
২০১৭ সালে ১৭ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস, ২০১৮ সালে ১৫ শতাংশ বোনাস, ২০১৯ সালে ১১ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস, ২০২০ সালে ১০ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস এবং এবার সাড়ে ১২ শতাংশ নগদের পাশাপাশি বোনাস ঘোষণা করা হয়েছে আরও ৫ শতাংশ।
এভাবে ২০১৭ সালের শুরুতে কেউ এক হাজার শেয়ার কিনে রাখলে এবার তা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৪৬৭টি। বর্তমান শেয়ারদর ১৪ টাকা ৬০ পয়সা। এই হিসাবে এই শেয়ারের মোট দাম ২১ হাজার ৪১৮ টাকা। বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফা ৬ হাজার ৩১৮ টাকা।
অন্যদিকে এই ছয় বছরে নগদে যোগ হয়েছে ৭ হাজার ৭৫৭ টাকা। কর-পরবর্তী মোট মুনাফা ৬ হাজার ৯৮১ টাকা। অর্থাৎ ১৫ হাজার ১০০ টাকা বিনিয়োগ করে সর্বমোট আয় ১৩ হাজার ২৯৯ টাকা।
ইস্টার্ন ব্যাংক
এ ব্যাংকটি ২০১৬ সালের জন্য শেয়ারপ্রতি ২০ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস মিলিয়ে লভ্যাংশ ঘোষণার পর বিনিয়োগকারীর নগদ লভ্যাংশের ইল্ড দাঁড়ায় ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ। এই হিসাবে তখন শেয়ারদর ছিল ২৮ টাকা ৭০ পয়সা। সে সময় এক হাজার শেয়ারের দর দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৭০০ টাকা।
এই টাকা বিনিয়োগ করে ছয় বছরে এবার মিলিয়ে নগদ লভ্যাংশ হয় ১১ হাজার ৬৫০ টাকা, কর বাদ দিয়ে যা দাঁড়ায় ১০ হাজার ৪৮৫ টাকা।
২০১৬ সালে ৫ শতাংশ, ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ, ২০২০ সালে আবার সাড়ে ১৭ শতাংশ এবং গত বছরের জন্য সাড়ে ১২ শতাংশ মিলে এখন শেয়ারসংখ্যা ১ হাজার ৫২৬টি। বর্তমান দর ৩৩ টাকা ৬০ পয়সা হিসাবে এই পরিমাণ শেয়ারের বাজারদর ৫১ হাজার ২৭৩ টাকা। অর্থাৎ শেয়ারদর বৃদ্ধি ও নগদ লভ্যাংশ মিলিয়ে ২৮ হাজার ৭০০ টাকা বিনিয়োগে বিনিয়োগকারীর মোট আয় ২৪ হাজার ৫৩ টাকা।
উত্তরা ব্যাংক
এ ব্যাংকটি ২০১৬ সালে যখন নগদ ২০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে, সে সময় ডিভিডেন্ড ইল্ড ছিল ৮ দশমিক ১০ শতাংশ। এই হিসাবে শেয়ারদর সে সময় ছিল ২৪ টাকা ৭০ পয়সা।
ব্যাংকটি পরের দুই বছরও ২০ শতাংশ করে নগদ, দ্বিতীয় বছর এর সঙ্গে ২ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়। ২০১৯ সালে ৭ শতাংশ নগদ ও ২৩ শতাংশ বোনাস, ২০২০ সালে সাড়ে ১২ শতাংশ করে নগদ ও বোনাস এবং গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১৪ শতাংশ করে নগদ ও বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে, যার রেকর্ড ডেট এরই মধ্যে পার হয়েছে।
এই হিসাবে এক হাজার শেয়ারের বিপরীতে এ ছয় বছরে ব্যাংকটির নগদ লভ্যাংশ হয় মোট ১০ হাজার ২৫৮ টাকা। ১০ শতাংশ কর কাটলে মোট আয় ৯ হাজার ২৩২ টাকা।
আর সেই এক হাজার শেয়ার এখন দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬০৯টি। বর্তমান দর ২৩ টাকা ৪০ পয়সা হিসাবে এই শেয়ারের বাজারদর দাঁড়ায় ৩৭ হাজার ৬৫০ টাকা। অর্থাৎ বিনিয়োগের পর শেয়ারে মুনাফা ১২ হাজার ৯৫০ টাকা, আর নগদ লভ্যাংশ মিলিয়ে আয় ২২ হাজার ১৮২ টাকা।
আরও পড়ুন:গত বছরের জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন আনিকা মেহেরুন্নেসা শাহি। তার ইচ্ছা ছিল এলাকায় বিচারক হয়ে ফেরার; ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার প্রতি উৎসাহ দেওয়ার। সে ইচ্ছা অপূর্ণ রেখে সোমবার লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এ ছাত্রী।
রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের একটি ছাত্রীনিবাস থেকে রবিবার রাতে ঝুলন্ত অবস্থায় আনিকাকে উদ্ধার করে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
আনিকার বাড়ি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামে। সেখানে সোমবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, তার শতবর্ষী দাদা আলহাজ সোলাইমান আলী মণ্ডল হতভম্ব হয়ে এদিক-সেদিক দেখছেন। কান্না থামছিল না ফুফু আক্তার বানুর।
আনিকার এমন মৃত্যুতে বিস্মিত পরিবারের সদস্য ছাড়াও প্রতিবেশীরা চেয়েছেন ঘটনার রহস্য উদঘাটন।
পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেনের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন আনিকা মেহেরুন্নেসা শাহি। ২৪ বছরের এ তরুণী ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। তিনি ২০২০-২১ সেশনে ভর্তি হন ঢাবির দুর্যোগ বিজ্ঞান ও স্থিতিস্থাপকতা বিভাগে।
এ বিভাগের পড়াশোনা শেষ করে আইনের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে বিচারক হতে চেয়েছিলেন আনিকা।
গত বছর কোটা সংস্কার আন্দোলনে নওগাঁয় সম্মুখসারিতে ছিলেন আনিকা। পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলায় মাইক হাতে অন্য সহপাঠীদের সঙ্গে সড়কে দাঁড়ান তিনি।
সুষ্ঠু তদন্ত দাবি
পরিবারসহ এলাকাবাসীর দাবি, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আনিকার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হোক।
বকুল নামের একজন মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি গিয়ে দেখি আনিকার মরদেহ ফ্যানের সাথে ঝুলছিল, কিন্তু অর্ধেক মেঝেতে লেগে ছিল। আমার জানা মতে একটা ছেলের সাথে তার সম্পর্ক ছিল।
‘আমরা ঢাকায় আছি। তার বাবা পাগল হয়ে গেছে। তবে আমরা যখন যাই, তখন দেখি লক ভাঙা ছিল। মনে হয় তাকে কেউ নামানোর চেষ্টা করেছিল।’
বুটেক্স ছাত্র আটক
আনিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) এক ছাত্রকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
বাহিনীর ধারণা, প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন ঢাবির এ ছাত্রী। তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সেটি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় অনিয়ম করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিইসি) বীজ ও সারের ডিলারশিপ নিয়েছেন সরকারি কলেজের প্রভাষক ও কৃষি কর্মকর্তা। তাদের স্বজনদেরও একই সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন তারা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা-২০০৯ অনুসারে, একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়ে অন্য কোথাও থেকে কোনো ধরনের সুযোগ- সুবিধা নেওয়ার বিধান নেই। একই সঙ্গে একজন ব্যক্তি একের অধিক ডিলারশিপ নিতে পারবেন না।
অন্যদিকে আচরণ বিধিমালার ১৭ (১) নম্বর ধারায় বলা হয়, ‘এই আইনের অন্য বিধান অনুসারে, কোনো সরকারি কর্মচারী সরকারের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যবসায় জড়াতে পারবেন না অথবা দায়িত্বের বাইরে অন্য কোনো কাজ কিংবা চাকরি নিতে পারবেন না।’
অনিয়মে যুক্তদের ভাষ্য
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ী নওগাঁতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ফজলে রাব্বি। তিনি তার স্ত্রী সম্পা বেগমের নামে বিএডিসির বীজের লাইসেন্স বাগিয়ে নিয়ে কৌশলে ডিলারশিপ বিক্রি করে খাচ্ছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনই নওগাঁ শহরে বসবাস করলেও তারা পোরশা উপজেলায় ‘সাইফ ট্রেডার্স’ নামের ঠিকানা ব্যবহার করে লাইসেন্স নিয়ে রেখেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সম্পা বেগম তার নামে লাইসেন্স স্বীকার করে বলেন, ‘আমি নওগাঁ বসবাস করলেও পোরশায় আমার দোকান রয়েছে। ওখানে একটি ছেলে আছে। সে দোকান চালায়।’
দোকানের ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী রাব্বি নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে চাকরি করেন। তিনি সব বলতে পারবেন।’
সাইফ ট্রেডার্স নামের কোনো দোকান পোরশা বাজারে পাওয়া যায়নি। দোকানের সঠিক ঠিকানা কোথায় জানতে চাইলে সম্পা কোনো সদুত্তর না দিয়ে কথা না শোনার ভান করে ফোনের সংযোগ কেটে দেন। এরপর একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফজলে রাব্বির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই লাইসেন্সটা আমার স্ত্রী সম্পার নামে করা আছে।’
নিয়মিত বীজ তোলেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ভাই অফিসে আসেন, চা খেয়ে যান। আপনাদের অনেক সাংবাদিক আসে; চা খেয়ে যায়।
‘সবার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক। আপনি অফিসে আসেন, চা খেয়ে যান।’
ওই বক্তব্যের পর সংযোগটি কেটে দেন তিনি।
এদিকে জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার মেসার্স জিমান ট্রডার্স নামে নিয়ামতপুর সরকারি কলেজের প্রভাষক ফারুক হোসেন নিয়ে রেখেছেন বিএডিসির সার লাইসেন্সের ডিলারশিপ। প্রোপাইটারে জায়গায় রয়েছে তার নিজের নাম।
তার ছেলে জিমানের নামে নিয়ামতপুর বাজারে রয়েছে দোকান। নিয়মিত বিএডিসির সার ও বীজ তুলে বিক্রি করেন তিনি।
এ বিষয়ে নিয়ামতপুর সরকারি কলেজের প্রভাষক ফারুক হোসেন বলেন, ‘লাইসেন্সটা অনেক আগে করা ছিল। তখন আমার কলেজ সরকারি হয়নি। ২০১৮ সালে আমার কলেজ সরকারি হয়েছে।’
‘তাহলে দীর্ঘ সাত বছর ধরে সরকারি ডাবল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছেন। এটার সুযোগ রয়েছে কী?’
উল্লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই একাধিক জায়গা হতে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এটা আমার অন্যায় হয়েছে। আমি তিন মাস আগে ডিসি অফিসে লাইসেন্স বাতিলের আবেদন জানিয়েছি।’
এদিকে ধারাবাহিকভাবে গত মাসেও সরকারি গুদাম থেকে সার তুলেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লাইসেন্সটা আমার ছেলের নামে হস্তান্তর করা হবে। তার প্রক্রিয়া চলছে।’
অপরদিকে ধামইরহাট উপজেলার ধামইরহাট সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক তৌহিদুল ইসলাম তার নিজ নামে নিয়ে রেখেছেন বিসিআইসির সার ডিলারশিপ। সরকারি গুদাম থেকে নিয়মিত সার তুলে উপজেলার আমাইতাড়া বাজারে বিক্রি করছেন তিনি।
এ বিষষে জানতে ধামইরহাট সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক তৌহিদুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘আসলে ওটা অনেক আগে করা হয়েছিল। পরে আমার কলেজ সরকারীকরণ হয়।
‘সরকারি একাধিক জায়গা হতে সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি বেআইনি হয়েছে। আমি লাইসেন্সটা ট্রান্সফার করে দেব।’
‘আপনি তো এখনও নিয়মিত সার তোলেন।’ এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘আসলে এখন ইরি-বোরো মৌসুম চলছে তো। তাই একটু তুলতেছি।’
যা বলছেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা
ডিলারশিপের বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সরকারি চাকরি করে বিএডিসি কিংবা বিসিআইসির ডিলারশিপ লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারা এটা করতে পারে না।’
‘আপনার অধিদপ্তরে এমন অনেকে রয়েছে। তাহলে তাদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?’
এমন প্রশ্নে প্রোগ্রামের ব্যস্ততার কথা বলে ফোন লাইন কেটে দেন এ কর্মকর্তা।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল বলেন, ‘ইউএনও, কৃষি অফিস যাচাই-বাছাই করে জেলা কমিটিকে প্রস্তাব পাঠাই। তারপর অনুমোদন দেওয়া হয়।
‘সরকারি চাকরি করে বিএডিসি কিংবা বিসিআইসির ডিলারশিপ লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পূর্ব অনুমতিও নিতে পারত এ ক্ষেত্রে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়িতে ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে।
অজ্ঞাত মুখোশধারীরা গত রবিবার রাতের বেলায় জমিদার বাড়ির পুরোহিতকে ধরে নিয়ে জঙ্গলে বেঁধে রাখে। টাকা-পয়সা এবং জমিদারেরও খোঁজ করে তারা।
এমন পরিস্থিতিতে ডাকাত আতঙ্কে রয়েছেন বাড়ির লোকজন।
মুখোশধারীরা ঘণ্টা তিনেক ধরে বাড়িটির বিভিন্ন কক্ষ ও আশপাশে তল্লাশি চালানোর কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এসেছে এ প্রতিবেদকের হাতে।
এতে দেখা যায়, রবিবার রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে জমিদার বাড়ির পুরোহিত বাদল ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রী নেলী চক্রবর্তী ঘর থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রথমে দুজন মুখোশধারী ধরে জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে গাছের সঙ্গে পুরোহিতকে বেঁধে ফেলে।
জমিদার বাড়ির পুরোহিত বাদল ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাতে ঘুমানোর আগে স্ত্রীকে নিয়ে বের হয়েছিলাম। এর মধ্যেই দুজন মুখোশধারী আমাদেরকে ধরে বাড়ির পাশে জঙ্গলে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। এ সময় মুখোশধারীরা জমিদার কোন ঘরে জানতে চায়। সিন্দুকের খোঁজও চায় তারা।
‘বাড়ির তিন তলায় ওঠার চেষ্টাও করে। ঘণ্টা তিনেক ধরে বাড়িটির বিভিন্ন কক্ষ ও আশেপাশে তল্লাশি চালায়।’
বাড়ির কেয়ারটেকার স্বপন সাহা বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত জমিদার বাড়িতে চাকরি করছি। দেশের বিভিন্ন জায়গার লোকজন এখানে ঘুরতে আসেন। পুরো বাড়ি তাদের ঘুরে দেখানোর পাশাপাশি বিভিন্নভাবে তাদের সহযোগিতা করি।
‘কিন্তু অতীতে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। এই ঘটনার পর থেকে বাড়ির লোকজন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।’
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়িটিতে জমিদারের একমাত্র শেষ বংশধর মানবেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী চৌধুরী বসবাস করছেন। নিঃসন্তান ব্যক্তিটির স্ত্রী কিছুদিন আগে লোকান্তরিত হন। বাড়িটিতে বর্তমানে তিনি ছাড়া কয়েকজন কর্মচারী ও পুরোহিত অবস্থান করছেন।
গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে বাড়িটিতে অজ্ঞাত কয়েকজন মুখোশধারী হানা দেয়। বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে চারজনকে দেখা যায়।
বাড়ির মালিক মানবেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী চৌধুরী বলেন, ‘মুখোশধারীরা হয়তো ধনদৌলত নিতে কিংবা আটকে রেখে টাকা-পয়সা দাবি করতে চেয়েছিল। তবে বাড়ির লোকজন সজাগ হয়ে যাওয়ার মুখোশধারীরা সেটা করতে পারেনি।’
জানতে চাইলে হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন:বিনা নোটিশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ, বগুড়ার আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এবং পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী বিভাগ’ সব পেট্রল পাম্প বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করছে।
এ ধর্মঘটে বুধবার সকাল ৮টা থেকে নওগাঁর সব পেট্রল পাম্প বন্ধ রয়েছে, যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন চালকরা।
কী বলছেন ভুক্তভোগীরা
যানবাহন না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী লোকজনও। তাদের একজন বেসরকারি সিম কোম্পানির কর্মী আল-আমিন।
তিনি বলেন, ‘বাসা থেকে সকাল সাড়ে আটটায় মোটরসাইকেল নিয়ে অফিসে যাওয়ার পথে তেল শেষ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে আধা কিলোমিটার ঠেলে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় পেট্রল পাম্পে নিয়ে আসি।
‘পাম্প বন্ধ থাকায় আবার ঠেলে নিয়ে চলে যেতে হয়। হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত ঠিক নয়। আমাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’
আবদুল মান্নান নামের এক বাইকচালক বলেন, ‘আমি জানতাম না পেট্রল পাম্প মালিকদের ধর্মঘট চলছে। পেট্রল পাম্পে এসে দেখি পাম্প বন্ধ। তেল দেওয়া হচ্ছে না।
‘এখন তেল ছাড়া আমরা কীভাবে চলি? আগে জানানো হলে তাও সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যেত।’
নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে অবস্থিত মেসার্স সাকিব ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘অনেকেই অফিসগামী মোটরসাইকেল আরোহী ও জ্বালানিচালিত বিভিন্ন যানবাহনগুলো পাম্পে এসে বন্ধ থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যানবাহন চালকদের। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চান যানবাহন চালকরাও।
‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এবং পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী বিভাগ’ সকল পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তাই আমাদেরও বন্ধ রাখতে হয়েছে।’
প্রেক্ষাপট
পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহীর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সওজ বগুড়া। ওই সময় সান্তাহারের হামিম ফিলিং স্টেশন ও আনিকা ফিলিং স্টেশনে তেলের মিটার উচ্ছেদ করা হয়।
তারা জানান, পূর্বঘোষণা, নোটিশ বা আনুষ্ঠানিক চিঠি না দিয়ে এ উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এবং পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী বিভাগ’ সব পেট্রল পাম্প বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াতের জন্য বিপুলসংখ্যক মানুষ ট্রেন ব্যবহার করেন। হঠাৎ করে রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার সুযোগে বাসের ওপর বাড়তি যাত্রীর চাপ বেড়েছে। ফলে অস্বাভাবিকভাবে বাসের টিকিটের মূল্য বেড়ে গেছে।
খুলনা থেকে নওগাঁ যাওয়ার জন্য সকালে রেলওয়ে স্টেশনে এসেছিলেন কয়েকজন শ্রমিক।
তারা জানান, খুলনা থেকে নওগাঁ যেতে তারা সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে কোনো টিকিট পাননি। বাসে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। তাতে ভাড়া গুনতে হবে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এ পথে নিয়মিত ভাড়া ৫০০ টাকার বেশি নয়।
শ্রমিকদের একজন সান্তনু বলেন, ‘সকাল থেকে আমরা কয়েকজন এখানে এসে বসে আছি। কয়েকজন গিয়ে বাসের খোঁজ নিয়েছে; কোনো ব্যবস্থা হয়নি।
‘অতিরিক্ত ভাড়ায় আমরা যেতে পারছি না। বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখি ট্রেন চালু হয় কি না। না হলে সন্ধ্যার দিকে বাসে করে রওনা দেব।’
সান্তনুর মতো অনেক দূরপাল্লার যাত্রীকে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। তবে স্বল্প দূরত্বের যাত্রীরা বাসে করে গন্তব্যে চলে যাচ্ছেন।
খুলনা থেকে উত্তরবঙ্গে দৈনিক একাধিক ট্রেন যাতায়াত করে। এর মধ্যে কপোতাক্ষ ও সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস খুলনা থেকে রাজশাহী, রূপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেস খুলনা থেকে চিলাহাটি, মহানন্দা এক্সপ্রেস খুলনা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রকেট এক্সপ্রেস খুলনা থেকে পার্বতীপুর, নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস খুলনা থেকে গোয়ালন্দ ঘাট, বেনাপোল ও মোংলা কমিউটার খুলনা থেকে বেনাপোল যাতায়াত করে।
এ ছাড়া সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেস খুলনা থেকে ঢাকাতে যাতায়াত করে। মঙ্গলবার সকাল থেকে এর মধ্যে কোনো ট্রেন স্টেশন ছেড়ে যায়নি। ফলে হাজার হাজার হাজার যাত্রী স্টেশনে এসে ফিরেছেন।
রেলওয়ের রানিং স্টাফরা মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন। ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে এ সুবিধা সীমিত করা হয়।
ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত বুধবার রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন ২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি পূরণের আলটিমেটাম দেয়। দাবি পূরণ না হওয়ায় সোমবার মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন তারা।
খুলনা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘সোমবার রাত ১২টা থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ। আজ কোনো ট্রেন চলেনি। টিকিট বুকিং দেওয়া যাত্রীদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
এ সমস্যার সমাধান কবে হবে, তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুন:দীর্ঘদিনেও টেকসই সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে নব্বইয়ের দশকে নির্মিত ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনটি।
এমন পরিস্থিতিতে চরম ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে বিচারক, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী ও আদালতে কর্মরতদের।
সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থদের অবহিত করে গণপূর্ত বিভাগের ঝালকাঠি অফিস ২০১৯ সালে চিঠি চালাচালি করলেও বিষয়টি এখনও ফাইলবন্দি।
ভবনটি দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই সংস্কার অথবা পুনর্নির্মাণের দাবি আদালত সংশ্লিষ্ট আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের।
ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগ ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর জরাজীর্ণ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে ৫ নভেম্বর বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বরাবর পরিদর্শন প্রতিবেদন পাঠান।
ভবন পরিদর্শনকালে তিনজন উপসহকারী প্রকৌশলী, গণপূর্তের ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলী এবং ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ উপস্থিত ছিলেন। ওই প্রতিবেদনের একটি কপি সংগ্রহ করেছে নিউজবাংলা।
কী ছিল পরিদর্শন কপিতে
ঝালকাঠি গণপূর্তের উপসহকারী প্রকৌশলী অনিরুদ্ধ মন্ডল, মো. বদরুজ্জামান, মো. ইমরান বিন কালাম এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ আল-মাসুম স্বাক্ষরিত ওই পরিদর্শন কপিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ভবনটির দুই তলায় করিডোরের বেশ কিছু স্থানে ছাদের কনক্রিট স্প্যানিং হয়ে খসে পড়ছে। এ ছাড়াও নলছিটি কোর্ট রুমের পরিদর্শনকারীদের বসার ওপরের ছাদের অংশ খসে পড়েছে। এ সমস্ত স্থানে মরিচা পড়ে রড উন্মুক্ত হয়ে আছে। দ্বিতীয় তলা এবং নিচ তলার করিডোরের বেশ কিছু বিম ও কলামে ফাটল লক্ষ করা গেছে।
‘ভবনটির নিচ তলায় হাজতখানার ছাদের বেশ কিছু অংশসহ করিডোরের বিভিন্ন অংশে ছাদের কনক্রিট স্প্যানিং হয়ে খসে পড়েছে। এসব স্থানেও মরিচা পড়ে রড বের হয়ে আছে। নিচ তলার বিভিন্ন কলাম এবং বিমের ফাটল লক্ষ করা গেছে। কিছু স্থানে কলাম ফেটে রড বের হয়ে গেছে।’
পরিদর্শন প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ‘ভবনটির দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত ১৯৮৯-৯০ সালে নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীকালে ২০০৪-০৫ সালে তৃতীয় তলার উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ভবনের বিভিন্ন স্থানে বিম কলামে ফাটল থাকায় এবং ছাদের কনক্রিট খসে পড়ায় বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
‘এমতাবস্থায়, উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত ডিজাইন বিভাগের মতামতসহ পরবর্তী প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রয়োজন।’
প্রতিটি কক্ষই ঝুঁকিপূর্ণ
সম্প্রতি জজ আদালত ভবনটি ঘুরে দেখা যায়, ভবনের ছাদের ওপর থেকে খসে খসে পড়ছে পলেস্তারা। ফাটল ধরেছে অনেক পিলারেও। ভারি বৃষ্টি এলেই ছাদ ও দেয়াল চুষে পানি পড়ে মেঝেতে। নষ্ট হয়ে যায় প্রয়োজনীয় নথিপত্র।
দীর্ঘদিনেও টেকসই সংস্কার না হওয়ায় তিন তলা ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বিচারকের এজলাস, খাসকামরা, পেশকার, সেরেস্তাদারের কক্ষ, নকল কক্ষ, হাজতখানাসহ প্রতিটি কক্ষই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যেই চলছে আদালতের কার্যক্রম। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
যা বলছেন আদালত সংশ্লিষ্টরা
আদালতের জরাজীর্ণ অবস্থার বিষয়ে কথা হয় আবদুর রহমান, তৈয়ব আলী, কামরুল ইসলাম, মুরাদ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বিচারপ্রার্থীর সঙ্গে।
তাদের একজন বলেন, ‘আদালত ভবনের ভিতরে প্রবেশের পর কার্যসম্পাদন করে বের হওয়া পর্যন্ত আমরা থাকি আতঙ্কে। প্রায় সময়ই ছাদের পলেস্তারা খসে নিচে পড়ে।
‘বর্ষায় তো বারান্দায় পানি জমে যায়। দেয়ালে পানি চুষে অনেক ফাইল নষ্ট হয়ে যায়।’
আইনজীবী মানিক আচার্য্য বলেন, ‘ভবনটি ধীরে ধীরে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তার সংস্কার করছে না কর্তৃপক্ষ। বিচারকরা যদি ভালো পরিবেশে বিচারকার্য পরিচালনা করতে না পারে, তাহলে বিচারকার্যে মনোনিবেশও করতে পারেন না।
‘ঝালকাঠির বিচারপ্রার্থী, আইনজীবীসহ সকলেই আমরা এ ভোগান্তিতে রয়েছি। বিভিন্ন সময়ে উচ্চপদস্থদের বিষয়টি অবগত করলেও এখনও কোনো ভূমিকা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’
আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট ফয়সাল বলেন, ‘ড্যামেজড ভবনে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিচারিক কার্যক্রম। ইতোপূর্বে জরাজীর্ণ আদালত ভবনের ছাদের ও দেয়ালের আস্তর খসে অনেকের ওপর পড়েছে।
‘আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা এবং নতুন ভবন নির্মাণ অথবা টেকসই সংস্কারের জন্য গণপূর্তের চিঠি চালাচালি হলেও দীর্ঘদিনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়ার খবর পাইনি। জনস্বার্থে দ্রুত নতুন আদালত ভবন নির্মাণ জরুরি।’
আইনজীবী আক্কাস সিকদার বলেন, ‘বর্তমানে এ আদালতে ১৬ হাজার দেওয়ানি মামলা এবং দেড় হাজার ফৌজদারি মামলা চলমান। ইতোপূর্বে জরাজীর্ণ আদালত ভবনের ছাদের ও দেয়ালের আস্তর খসে অনেকের ওপর পড়েছে।
‘আদালত ভবনের নিচ তলায় হাজতখানার পশ্চিম দিকে মসজিদের সামনে একাধিকবার ধসে পড়েছে ছাদের অংশ। এখন এই ভবন অস্থায়ী সংস্কার না করে এটি ভেঙে এখানে নতুন ভবন করা উচিত।’
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘নব্বই দশকে দোতলা জজ আদালত ভবনটি নির্মাণের পর ২০০৬ সালে এর ওপর আরও এক তলা বর্ধিত করে তৃতীয় তলায় উন্নীত করা হয়। বর্তমানে নিচ তলার অনেক পিলারে ফাটল ধরেছে। ভবনটি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আদালতের স্টাফ, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা রয়েছেন আতঙ্কে।
‘হাজতখানা সরিয়ে পার্শ্ববর্তী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে নেওয়া হয়েছে। ভবনে আগতদের নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। দ্রুত এটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।’
জরাজীর্ণ ভবনের বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগ ঝালকাঠির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আলম ও বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী আমানুল্লাহ সরকার একই ধরনের বক্তব্য দেন।
তাদের একজন বলেন, ‘ভবন পরিদর্শনের রিপোর্ট ২০১৯ সালে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন ভবনের জন্য সম্ভাব্য বাজেট তৈরি করা হয়েছে, যা বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে আছে।
‘সেখান থেকে অর্ডার হলেই গণপূর্ত বিভাগ টেন্ডার প্রক্রিয়াসহ অন্যান্য কার্যসম্পাদন করবে।’
ক্যাপশন: ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবন। ছবি: নিউজবাংলা
ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের ভেতরের জরাজীর্ণ অংশ। ছবি: নিউজবাংলা
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শুকানপুকুরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আওয়ামী লীগের পলাতক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমানকে কৌশলে পুনর্বাসনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এরশাদ আলীসহ স্থানীয় একাধিক রাজনীতিক ও কিছু ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট এ ইউপি চেয়ারম্যান পরিষদ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
জনসেবা অব্যাহত রাখতে নিয়ম অনুসারে ইউপি সদস্য সুমন রানাকে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ করে বাকি প্যানেল গঠন করা হয়।
বর্তমানে ইউপিতে নাগরিক সেবা অব্যাহত থাকলেও প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কৌশলে অনাস্থা এনে এরশাদ আলীসহ অন্যরা পলাতক চেয়ারম্যানকে পুনর্বাসনের চেষ্টায় আছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
তাদের ভাষ্য, সম্প্রতি কৌশল জানাজানি হলে ইউনিয়নবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এমন বাস্তবতায় যেকোনো সময় ওই ইউনিয়নে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
পলাতক চেয়ারম্যানকে পুনর্বাসনের ‘কৌশল’
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রথমে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক বরাবর শুকানপুকুরী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ সুমন রানার বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তাব এনে একটি আবেদন জমা দেওয়া হয়। সেখানে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ সুমন রানার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ উল্লেখ করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন ৯ জন ইউপি সদস্য।
পরে সেই আবেদনের জের ধরে ১৩ জানুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডের পাতায় প্যানেল চেয়ারম্যান-২ মো. এরশাদ আলী স্বাক্ষরিত এক পাতার একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের রেজুলেশন ও অপর একটি পাতায় আটজন ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর সংবলিত পাতা সংযুক্ত করা হয়। এ পাতায় সভার স্থান দেখানো হয় ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে।
ওই রেজুলেশনে বলা হয়, ‘অদ্যকার অত্র আলোচনায় শুকানপুকুরী ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমানের (পলাতক) মাধ্যমে ইউপির সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা ও সভায় বিস্তর আলোচনা করা হয়। এরপর সভার সভাপতি প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এরশাদ আলীর উপস্থিতিতে সদস্যদের জানান, প্যানেল চেয়ারম্যান-১ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছেন, যা জেলা প্রশাসকের বরাবরে অনাস্থার প্রস্তাব আনয়ন করি।
‘তাই ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানের (পলাতক) মাধ্যমে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা তথা জনসেবা অব্যাহত রাখা একান্ত জরুরি মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন।’
রেজুলুশনে উল্লেখ করা হয়, সর্বসম্মতিক্রমে পলাতক চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা তথা জনসেবা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়।
প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে দুই ইউপি সদস্যের ভাষ্য
কারণ জানতে এ প্রতিবেদক যোগাযোগ করেন অনাস্থা কাগজে স্বাক্ষর করা দুজন ইউপি সদস্যের সঙ্গে। তারা হলেন মো. আমজাদ ও ধর্ম নারায়ণ রায়।
ইউপি সদস্য আমজাদ বলেন, ‘৪ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে আমার বাড়ির সামনে স্থানীয় সাবেক দুজন সদস্য মোটরসাইকেল নিয়ে আসেন। তারা আমাকে কৌশলে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা তরিকুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি অন্যান্য ইউপি সদস্যরাসহ বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত। রাতের খাবারের বিশাল আয়োজনও করা হয়েছে। আমি কোন কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
‘পরে জানানো হলো, আমাকে বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে স্বাক্ষর করতে হবে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে, তা মিথ্যা। তিনি খুব ভালোভাবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। এসবই আলোচনা হচ্ছে। এরপর এক প্রকার জোর করেই আমাকে রাতের খাবার খাওয়ানো হলো এবং পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে স্বাক্ষর করতে হলো। কিন্তু আমি সিলমোহর দিইনি।’
ইউপি সদস্য ধর্ম নারায়ণ রায় বলেন, ‘একই তারিখে স্থানীয় বাসিন্দা তোষর এবং রফিকুল আমাকে একটা জায়গায় সমস্যার কথা বলে কৌশলে ইউনিয়ন বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি বিএনপির অন্যান্য রাজনীতিক নেতাসহ অন্যান্য ইউপি সদস্যরা রয়েছেন। আমাকে রাতের খাবারের জন্য বারবার বলা হচ্ছে। কিন্তু কী কারণে এত আদর-আপ্যায়ন, বুঝতে পারছিনা। জিজ্ঞাসা করলেও কোনো উত্তর পাই না।
‘সমাজ রক্ষার্থে সকলের সাথে রাতের খাবার খেলাম। এরপর আমাকে এক প্রকার চাপ দেওয়া হয় প্যানেল চেয়ারম্যান সুমন রানার বিরুদ্ধে অনাস্থা কাগজে স্বাক্ষর করতে। কিন্তু আমি তার সমর্থক। তিনি ভালো মানুষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাক্ষর দিতে প্রথমে রাজি না হলেও পরে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ স্বাক্ষর করেছে। আমি কেন করব না, এ কথা তোলে। অনেকক্ষণ তর্ক-বিতর্কের পর সই করে সেখান থেকে আসতে হয়েছে। পরে আমি লিখিত চিঠি দিয়ে বিষয়টি প্যানেল চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।’
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ভবেষ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘প্যানেল চেয়ারম্যান-১ সুমন রানার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনে অনাস্থা আনা হয়েছে, তা আমার কাছে ভিত্তিহীন মনে হয়েছে।’
সচিব আরও বলেন, ‘পরিষদে তিনি (সুমন রানা) সবার সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন এবং নাগরিক সেবা অব্যাহত রেখেছেন। তার বিরুদ্ধে আমাকেও কেউ কোনো দিন কোনো মৌখিক অভিযোগ দেননি।’
সভার বিষয়ে যা বললেন ইউপি সচিব ও সদস্য
ইউনিয়ন পরিষদ সচিব বলেন, ‘৪ জানুয়ারি, ৭ জানুয়ারি ও ১৩ জানুয়ারি কোনো সভা ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমসহ পরিষদের কোনো স্থানে অনুষ্ঠিত হয়নি। যেসব সভার কথা বলা হচ্ছে, তা গোপনে বা প্রকাশ্যে অন্য কোথাও হয়ে থাকতে পারে। তা আমার জানা নাই।’
ইউপি সদস্য ধর্ম নারায়ণ রায় বলেন, ‘১৩ তারিখ সকাল ১১টায় প্যানেল চেয়ারম্যান-২ সভা ডেকেছিল। আমি সময়মতো পরিষদে আসলেও সভা হয়নি।
‘আমি জানতে চাইলে তিনি গোপনে স্থানীয় দুলাল নামের এক লোকের বাসায় মিটিং হবে বলে জানান। কিন্তু আমি সেখানে যাইনি। পরিষদের কাজ শেষে বাড়ি চলে আসি।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যানের ভাষ্য
স্থানীয় বাসিন্দা জিলানি হোসেন বলেন, ‘যে চেয়ারম্যান জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি, তিনি জনগণের কথা ভাববেন না, এটাই স্বাভাবিক। তাই তিনি আমাদের দুর্ভোগে ফেলে আজও পর্যন্ত পলাতক রয়েছেন। আমরা নাগরিকসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা তার পুনর্বাসন চাই না।
‘পরিষদ তাকে ছাড়া বেশ ভালো চলছে। আমরা সুন্দর সেবা পাচ্ছি। শুনছি অনেকে পলাতক চেয়ারম্যানের টাকার কাছে বিক্রি হয়েছে। আমরা নতুন কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেব না।’
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এরশাদ আলী ইউনিয়ন পরিষদে সভা না করা এবং কোনো ব্যক্তির বাসায় বসে সভা করার বিষয়টি স্বীকার করেন।
তিনি জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে পরিষদে সভা করতে পারেননি।
তিনি কেন পলাতক ও বিতর্কিত চেয়ারম্যানকেই পুনর্বাসন করতে চান, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বর্তমান দায়িত্বরত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তোলেন।
অভিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান সুমন রানার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং পরিষদে নাগরিক সেবা অব্যাহত আছে কি না, তা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানান।
ইউনিয়ন বিএনপির নেতা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাড়িতে পরিষদের কোনো বৈঠক হয়নি; সিদ্ধান্তও হয়নি। আমার হাত ভেঙে যাওয়ায় আমি অসুস্থ। তাই রাজনীতিক নেতা ও পরিষদের সদস্যরা দেখতে এসেছিল। এর বেশি কিছু না।’
তবে চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, ‘আবেদনসহ অন্যান্য কাগজ আমি পেয়েছি। উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানি করা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
‘কোনো কৌশলগত বিষয় আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে। তবে নিয়ম-বহির্ভূত কাউকে পুনর্বাসন করার সুযোগ নেই।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য