দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার হয়ে যাওয়ার বিষয়টি সরকারও স্বীকার করেছে। জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার উত্থাপন করা ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পাচার করা অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনতে এমন পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, এমন সিদ্ধান্ত অনৈতিক। এমন সুযোগ দিয়ে টাকা পাচারকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।
বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়, বিদেশে থাকা যে কোনো সম্পদের ওপর কর পরিশোধ করা হলে এনবিআরসহ অন্য কোনো সংস্থা এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন তুলবে না। স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, অস্থাবর সম্পত্তি ১০ শতাংশ এবং নগদ টাকা আনতে চাইলে ৭ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করা যাবে।
এনবিআর বলেছে, এসব শর্ত মেনে কেউ পাচার করা টাকা দেশে ফেরত আনলে পাচারকারীর আয়ের উৎস সম্পর্কে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, দুর্নীতি দমন কমিশন, এমনকি সরকারি অন্য কোনো গোয়েন্দা সংস্থা কিছু জিজ্ঞাসা করবে না। চলতি বছরের জুলাই থেকে আগামী ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এ সুযোগ দেয়া হবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে বাজেট বক্তব্যে অর্থ পাচারকারীদের এমন সুযোগ দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করার পর এমন সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
তারা বলেন, এবারের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার বিদ্যমান সুযোগ রহিত করা হলেও পাচার করা অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ভিন্ন উপায়ে কালো টাকা নতুন করে সাদা করার সুযোগ দিয়েছে সরকার।
পাচার করা অর্থ বৈধ করার সুযোগ দিয়ে প্রকারান্তরে অর্থ পাচারকারীদের পুরস্কৃত করল সরকার। এই সুবিধা দেয়ার ফলে দায়মুক্তিতে উৎসাহিত হবে অর্থ পাচারকারীরা। এ ধরনের দায়মুক্তিতে দুর্নীতি ও টাকা পাচার উৎসাহিত হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যবসায়ীরা পাচার করা টাকা ফেরত আনতে চান না। কারণ তারা নিজেদের প্রয়োজনেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টাকা এবং বাড়ি-গাড়ির মতো স্থাবর সম্পদ রাখেন।
ব্যবসায়ীরা মনে করেন, যে অর্থ পাচার হয়ে গেছে তা দেশে আনা মানেই এক ধরনের জটিলতায় পড়া। এ কারণে সুযোগ দিলেও অর্থ ফেরত আনবেন না তারা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড.এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের উদ্যোগ নেয়ার পরিবর্তে কে কোন সূত্রে বিদেশে টাকা পাচার করেছে তা চিহ্নিতকরণে উদ্যোগ নেয়া দরকার। এক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনসহ অন্যান্য আইন জোরালোভাবে বাস্তবায়ন করা দরকার।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই সুযোগ দেয়ার অর্থ হচ্ছে বাংলাদেশে বসে অর্থ চুরি করে সেই অর্থ চুরি করে বিদেশে নিয়ে যাওয়া। এখন সেই চুরির টাকা সোনার চামচ দিয়ে দেশে ফেরত আনার সুযোগ দেয়া হলো।
‘সরকার যদি প্রকৃত অর্থেই এ সুযোগ দেয় তাহলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বন্ধ করে দেয়া দরকার। পাচারের দায়ে অভিযুক্ত পি কে হালদারকেও সব মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে ফুলের মালা পরিয়ে দেশে নিয়ে আসা উচিত।’
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম মনে করেন, ‘এ ধরনের উদ্যোগ বৈষম্যমূলক। কারণ এই সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে সরকার পাচারকারীদের পুরস্কৃত করেছে। একইসঙ্গে নিয়মিত করদাতাদের নিরুৎসাহিত করেছে।’
অর্থ পাচারকারীদের দণ্ড মাফ করে দেয়ার উদ্যোগ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘এটি আইন ও দেশের সংবিধান পরিপন্থী।’
পাচারকারীদের সুবিধা দিলে দেশে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার আরও উৎসাহিত হবে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান।
অপ্রদর্শিত বা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকার দিয়ে এসেছে। তবে বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার ক্ষেত্রে এ ধরনের সুযোগ আগে কখনও দেয়া হয়নি।
বাজেটের আগে ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ পৃথিবীর অনেক দেশই পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে নানা সুবিধা দিয়েছে এবং পাচার বন্ধে কঠিন আইনও করেছে।
অর্থ পাচার প্রমাণ হলে জেল-জরিমানার মতো কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হয়। সেই অপরাধীদের কিছু সুবিধা দিয়ে দণ্ড মাফ করতে যাচ্ছে সরকার।
রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেন, দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হলেও আইনি জটিলতার কারণে তা ফেরত আনা যাচ্ছে না। কিছু সুবিধার বিনিময়ে পাচারকারীরা স্বপ্রণোদিত হয়ে ঘোষণা দিলে ওই টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় যোগ হবে। এতে সরকার ও পাচারকারী উভয়েই লাভবান হবে।
একশ্রেণির ব্যবসায়ী আমদানি পণ্যের দাম বেশি এবং রপ্তানি পণ্যের দাম কম দেখিয়ে অর্থ পাচার করেন। কর ফাঁকি এবং হুন্ডির মাধ্যমেও প্রতি বছর বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচার হয়ে থাকে।
দেশ থেকে অর্থ পাচারের ঘটনায় সরকারি ও বিরোধী দলের সাংসদরা জাতীয় সংসদের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে গত বছর সংসদে তোপের মুখে পড়েন অর্থমন্ত্রী। বিরোধী সাংসদদের কাছে অর্থ পাচারকারীদের নাম চেয়েছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ৫ বছরে এক হাজার ২৪টি পাচারের ঘটনার প্রমাণ পেয়েছে। বিএফআইইউর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৫৮টি, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১২১টি, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬৭৭টি, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫২টি ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১১৬টি অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটে।
সংস্থাটির প্রতিবেদনে পাচারকারীরা দেশের বাইরে কোথায় ফ্ল্যাট ও বাড়ি কিনেছেন কিংবা বিনিয়োগ করেছেন, সেগুলোর বিবরণও আছে।
এসব তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), এনবিআর, বাংলাদেশ পুলিশ, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠানো হলেও খুব কম ক্ষেত্রেই তদন্ত ও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার কথা বলা হলেও দেশ থেকে কত টাকা পাচার হয়েছে তার কোনো তথ্য সরকারের হাতে নেই।
ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে চার হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ সোয়া ৪ লাখ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) হিসেবে যোগ দিয়েছেন হাবিবুর রহমান।
এর আগে তিনি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ছিলেন বলে এসবিএসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এএনজেড গ্রিনলেজ ব্যাংকে যোগদানের মাধ্যমে তিনি ব্যাংকিং জীবন শুরু করেন। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২৭ বছরের ব্যাংকিং জীবন তার। সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এইচএসবিসি এবং কানাডার টরেন্টো ডমিনিয়ন ব্যাংকে চাকুরি করেন হাবিবুর রহমান।
তিনি ঋণ ব্যবস্থাপনা ও ঝুঁকি বিষয়কসহ পেশাগত স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও কোর্স সম্পন্ন করেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অথনীতি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। বেলজিয়ামের ব্রাসেলস থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ওমেগা নামক প্রতিষ্ঠান থেকে সার্টিফাইড ক্রেডিট প্রফেসনালস ডিগ্রি অর্জন করেনিএই ব্যাংকার।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-টরন্টো রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু হচ্ছে ২৭ জুলাই। টরন্টো ফ্লাইটে ভ্রমণে ইচ্ছুকরা এখন থেকেই অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।
রোববার প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশ-বিদেশে অবস্থিত বিমানের যে কোনো সেলস্ সেন্টার, বিমান অনুমোদিত যে কোনো ট্রাভেল এজেন্সি, বিমানের বাণিজ্যিক ওয়েবসাইট www.biman-airlines.com ও কল সেন্টার ০১৯৯০৯৯৭৯৯৭ থেকে এ রুটের টিকিট কেনা এবং আনুষঙ্গিক সেবাগুলো গ্রহণ করা যাবে।
তবে কানাডা থেকে আপাতত ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট কেনা যাবে না। বিষয়টি এখনও অ্যাকটিভেশন পর্যায়ে রয়েছে।
বিমান বলছে, প্রাথমিকভাবে ঢাকা-টরন্টো রুটে সপ্তাহে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালিত হবে। ঢাকা থেকে প্রতি বুধবার ও রোববার বিমানের ফ্লাইট টরন্টোর উদ্দেশে যাত্রা করবে। একই দিন টরন্টো থেকে ফিরতি ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবে। রুটটিতে ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে বিমানের বহরে থাকা বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ।
ঢাকা থেকে যাওয়ার সময় ফ্লাইটটি তুরস্কের ইস্তানবুলে এক ঘণ্টার জন্য টেকনিক্যাল ল্যান্ডিং করবে। তবে ফিরতি ফ্লাইটটি সরাসরি ঢাকায় অবতরণ করবে বলে জানিয়েছে বিমান।
বাংলাদেশ থেকে ইকোনমি ক্লাসে ভ্রমণে একমুখী যাত্রার জন্য ভাড়া ঠিক করা হয়েছে সর্বনিম্ন ৯০ হাজার ৫১০ টাকা। আর রিটার্ন টিকিটের ভাড়া ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৭০ টাকা।
প্রিমিয়াম ইকোনমি ক্লাসের একমুখী ভাড়া ১ লাখ ২৭ হাজার ৩০০ টাকা আর রিটার্ন ভাড়া ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩৫৫ টাকা।
আর বিজনেস ক্লাসের ক্লাসে ভ্রমণে একমুখী ভাড়া শুরু হবে ১ লাখ ৬৪ হাজার ১০০ টাকা এবং রিটার্ন টিকিটের সর্বনিম্ন ভাড়া ঠিক করা হয়েছে ৩ লাখ ৪ হাজার ৩০২ টাকা।
টরন্টো থেকে যারা ঢাকায় আসবেন তাদের জন্য ইকোনমি ক্লাসে একমুখী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯০ কানাডিয়ান ডলার আর রিটার্ন টিকিটের দাম ১ হাজার ২৩৩ কানাডিয়ান ডলার।
প্রিমিয়াম ইকোনমি ক্লাসের ক্ষেত্রে একমুখী ভাড়া ১ হাজার ২৩০ কানাডিয়ান ডলার এবং রিটার্ন টিকিটের দাম ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৭৮ কানাডিয়ান ডলার। আর বিজনেস ক্লাসের ক্ষেত্রে একমুখী ভাড়া ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৬০ কানাডিয়ান ডলার এবং রিটার্ন টিকিটের দাম ধরা হয়েছে সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৭৮ কানাডিয়ান ডলার।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতু প্রকল্পের দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক, সার্ভিস এরিয়া, টোল প্লাজা, নদীশাসনসহ বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল দেশীয় প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড। স্বপ্নের এই সেতুর ৫টি প্রকল্পের ৩টিই করেছে বাংলাদেশের নির্মাণ শিল্পের পথিকৃৎ এই প্রতিষ্ঠানটি।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিরলসভাবে যুক্ত ছিল একমাত্র দেশীয় প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড। ঐতিহাসিক এই যাত্রায় জাতির স্বপ্ন বাস্তবায়নের গর্বিত অংশীদার প্রতিষ্ঠানটি। পুরো প্রকল্পে সেতুর গুনগত মান ঠিক রাখতে প্রায় এক কোটি আমেরিকান ডলার খরচ করে জার্মানি থেকে দুটি মেশিন নিয়ে আসার পাশাপাশি অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতেও আব্দুল মোনেম লিমিটেড বিনিয়োগ করেছে।’
আবদুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনউদ্দিন মোনেম বলেন, ‘পদ্মা সেতুর ৫টি প্রকল্পের ৩টিই করেছি আমরা। এই প্রকল্পে একনিষ্ঠভাবে কাজ করতে গিয়ে আমরা আমাদের সক্ষমতা সম্পর্কে আরও একবার নিশ্চিত হয়েছি। ভবিষ্যতে দেশের আরও যেকোনো বড় প্রকল্পে আরও দক্ষতার সাথে অবদান রাখতে পারব বলে বিশ্বাস করে।’
আমাদের ওপর আস্থা রাখার জন্য এবং জাতির স্বপ্ন বাস্তবায়নের ঐতিহাসিক মাইলফলক অর্জনের গর্বিত অংশীদার হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
দেশের জনপ্রিয় বিপণন ব্যক্তিত্ব জানে আলম রোমেল শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের বিপণন, ডিজিটাল বিজনেস ও গ্রাহক পরিষেবার প্রধান হিসেবে সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন।
তিনি শান্তার পুঁজিবাজার ব্যবসার অঙ্গসংস্থাসমূহ শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, শান্তা সিকিউরিটিজ এবং শান্তা ইকুইটির সামগ্রিক বিপণন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান বলেন, ‘এফএমসিজি, এয়ারলাইনস, ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন এবং ইলেকট্রনিকস ইন্ডাস্ট্রির মতো বৈচিত্র্যময় কর্মক্ষেত্র রোমেলের অভিজ্ঞতাকে পরিণত ও সমৃদ্ধ করেছে। আমরা আশাবাদী, তার ভিন্নধর্মী চিন্তাধারা, বিপণন নিয়ে ভিন্ন কিছু করার অদম্য ইচ্ছা আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করবে।’
শান্তা অ্যাসেটে যোগদানের আগে জানে আলম রোমেল ছয় বছর আইডিএলসি ফাইন্যান্সের চিফ মার্কেটিং অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ শেষ করার পর জানে আলম ২০০৫ সালে এমজিএইচ গ্রুপে তার কর্মজীবন শুরু করেন। পরে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস বাংলাদেশের বিক্রয় ও বিপণন প্রধান হিসেবে যোগ দেন।
কর্মজীবনের দীর্ঘ সময় তিনি আইডিএলসি ফাইন্যান্সের মার্কেটিং কমিউনিকেশনের প্রধান এবং র্যাংগস ইন্ডাস্ট্রিজের মার্কেটিং প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
শান্তা আসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হাসান বলেন, ‘জানে আলম রোমেলকে আমাদের মাঝে পেয়ে আমরা আনন্দিত। কাজের প্রতি তার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, কর্ম-উদ্দীপনা, বিক্রয় এবং বিপণনের বিস্তৃত অভিজ্ঞতা আমাদের আরও সমৃদ্ধ করবে বলে আশা রাখি।’
আরও পড়ুন:সিলেটের সবচেয়ে বড় বইয়ের মার্কেট রাজা ম্যানশন। গত ১৮ জুন এই মার্কেটে বন্যার পানি ঢুকে নিচের তলা পুরোপুরি ডুবে যায়। এতে কোটি টাকার বই নষ্ট হয়ে গেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
গত ১৫ জুন থেকে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। এর দুদিন পর থেকে ভয়ংকর রূপ নেয় বন্যা। ১৮ জুন সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় নগরের উঁচু এলাকাগুলোও। ওইদিন পানি ঢুকে পড়ে নগরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা জিন্দাবাজারের বেশির ভাগ শপিং মল ও দোকানপাটে।
পানি ঢোকে জিন্দাবাজার এলাকার রাজা ম্যানশনেও। মার্কেটের নিচতলার অর্ধশত বইয়ের দোকান, ছাপাখানা ও কম্পিউটারের দোকানে পানি ঢুকে পড়ে।
রাজা ম্যানশনের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ১৬ জুন বৃহস্পতিবার রাতে তারা জিন্দাবাজার এলাকা পানিশূন্য অবস্থায় দেখে ঘরে ফেরেন। পরের দিন শুক্রবার মার্কেট বন্ধ ছিল। আর ১৮ জুন শনিবার সকালে এসে দেখতে পান পানিতে তলিয়ে গেছে মার্কেট। পানি ঢুকে পড়েছে নিচতলার সব দোকানে। অনেক দোকানে কোমর সমান পানিও জমা হয়।
তারা আরও জানান, পানিতে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বই ব্যবসায়ীরা। বইয়ের দোকানের নিচের তাকগুলোয় থাকা সব বই ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন এগুলো ফেলে দিতে হচ্ছে।
শনিবার রাজা ম্যানশনে গিয়ে দেখা যায়, মার্কেট থেকে পানি নেমে গেছে। ভিজে নষ্ট হওয়া বই ভ্যানে করে সরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কিছু বই আবার রোদে শুকানোর চেষ্টা করছেন তারা।
এ সময় কথা হয় মার্কেটের শুভেচ্ছা লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী তানজিল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার দোকান মার্কেটের একেবারে সম্মুখে। তাই বন্যার পানি প্রথমে আমার দোকানেই ঢুকে পড়ে। পানিতে দোকানের প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার বই ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো আর ব্যবহারের উপযোগী নয়।’
তিনি বলেন, ‘রাজা ম্যানশনে বন্যার পানি ঢুকবে তা কখনও কল্পনাও করিনি। অথচ নিমিষেই পানিতে তলিয়ে গেল মার্কেটের পুরো নিচতলা। এখন ক্ষতি কীভাবে কাটিয়ে উঠবো তা বুঝতে পারছি না।’
প্যারাগন লাইব্রেরির বিক্রেতা আকাশ আহমদ বলেন, ‘আমাদের অন্তত ৭ লাখ টাকার বই নষ্ট হয়েছে। নষ্ট হওয়া বইগুলো পুরনো কাগজের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিতে হয়েছে। যেগুলো অল্প ভিজেছে সেগুলো শুকিয়ে ঠিক করা যায় কি না সে চেষ্টা করছি।’
জানা গেছে, বইয়ের পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে মার্কেটের নিচতলার ছাপাখানা ও কম্পিউটার ব্যবসায়ীদেরও।
প্যারাডাইস প্রেস নামের একটি ছাপাখানার কর্মকর্তা সুমন বক্স বলেন, ‘আমাদের প্রেস মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশে পানি ঢুকে গেছে। এগুলোর মেরামত কাজ চলছে। ফলে ছাপাখানা আপাতত বন্ধ আছে।’
রাজা ম্যানশন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তানভীর হোসেন রহিম বলেন, ‘বন্যার পানিতে মার্কেটের নিচতলার সব দোকান এবং প্রতিষ্ঠানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। কেবল বই ব্যবসায়ীদেরই ক্ষতি হয়েছে কোটি টাকার মতো।’
ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির কেন্দ্রীয় নেতাদের অভিহিত করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনার আগেও আমরা বড় ক্ষতির মুখে পড়েছিলাম। এবার বন্যার কারণে ক্ষতির মুখে পড়তে হলো। বন্যা আমাদের সব মূলধন নিয়ে চলে গেল।’
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কিছুটা কমে আসায় দেশেও ভোজ্যতেলের দাম দু-এক দিনের মধ্যে কমানোর সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে।
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দ্বাদশ মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে আলোচনার নানা দিক তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ।
ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে গেছে, সেই হিসেবে দেশেও দাম কমানো হবে।’
দাম কমলে কত কমানো হতে পারে- এমন প্রশ্নে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘আগামী দু-এক দিনের মধ্যে কিংবা চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে বৈঠক করা হবে।
‘সেখানে আন্তর্জাতিক দাম অনুযায়ী দেশে গত এক মাসের মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সেই দাম নির্ধারণ করা হবে। তবে ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খুব বেশি কমানো সম্ভব নাও হতে পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউ সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মধ্যে কর্পোরেট ডিজিটাল সার্ভিসেস প্রদান সংক্রান্ত একটি চুক্তি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এই চুক্তি হয় বলে টেলিটকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিআইজি (প্রশাসন) মীর রেজাউল আলম, উপপুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর ও প্রশাসন) টুটুল চক্রবর্তী এবং টেলিটকের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক (মার্কেটিং এন্ড ভ্যাস) তাহমিনা খাতুন, অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (ভ্যাস) আল-রাজ্জাকুজ্জামানসহ দুই প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য