যে সরকার অর্থনীতিতে কম ব্যয় করে, কম আয় করে, সে সরকারই উত্তম। এমনটিই ভাবা হতো ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগেও। পরে দিন যত এগিয়েছে, সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনার সেই ধারণা ততটাই বদলেছে। এখনকার প্রবণতা হচ্ছে- যে সরকার বেশি আয়-ব্যয় করে, সেই সরকারই উন্নয়নবান্ধব।
এ কারণে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ এখন ঘাটতি বাজেট করে থাকে, যেখানে সরকার আয়ের চেয়ে ব্যয় অনেক বেশি করে। তবে তার পরিমাণ সীমাহীন নয়। এর একটা মাত্রা থাকা উচিত। উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রেক্ষাপটে তা জিডিপির ৫ শতাংশের বেশি নয়।
জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বিশাল ব্যয়ের বাজেট ঘোষণা করেছেন, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৫ দশমিক ২ শতাংশ।
আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের বিরাট ঘাটতি, যার পরিমাণ অনুদান ছাড়া ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা এবং অনুদানসহ ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। বাজেটের আকার অনুযায়ী এটি যথাক্রমে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) শতকরা ৫ দশমিক ৫ ও ৫ দশমিক ৪ ভাগ, যা ঘাটতি বাজেটের সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। তবে এই ঘাটতির পরিমাণ ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ছিল জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ।
বিগত বছরগুলোয় বাংলাদেশের ঘাটতি বাজেট ৫ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে করোনার কারণে গত দুই (২০২০-২১ ও ২০২১-২২) অর্থবছরে সেটি ৬ দশমিক ২ শতাংশের সীমাও ছাড়িয়ে যায়। সেটিকেও অর্থনীতিবিদরা সময়ের বাস্তবতা বলে মনে করেছেন।
এবার সেই অভিঘাত কিছুটা কমে এলেও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধাবস্থার কারণে বিশ্বে নতুন করে শুরু হয়েছে অর্থনৈতিক অস্থিরতা। তার প্রভাবও পড়েছে বাংলাদেশে। ফলে দেশের মানুষের খাদ্যনিরাপত্তার ঝুঁকি এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি থেকে সুরক্ষা দেয়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ উৎপাদন, কর্মসংস্থান ও আয়বর্ধক উদ্দীপক কর্মসূচি নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই ঘাটতি বাজেটের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়েছে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যের বিভিন্ন অংশের আলোচনায়।
অর্থমন্ত্রী আশা করছেন, প্রস্তাবিত বাজেটের ঘাটতি মেটাতে চ্যালেঞ্জ থাকলেও বাস্তবায়ন পর্যায়ে তিনি তা সমন্বয় করতে সক্ষম হবেন।
যদি সরকারের ব্যয়ের চেয়ে আয় কম হয়, তাহলে তাকে ঘাটতি বাজেট বলে। সরকারি ব্যয় ও আয় সমান থাকলে সেটি সুষম বাজেট এবং ব্যয়ের চেয়ে আয় বেশি হলে তাকে উদ্বৃত্ত বাজেট বলে। অর্থনীতিবিদরা এই ঘাটতি বাজেটকে ‘সময়ের বাস্তবতা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
এ কারণে বাজেট প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও ঘাটতি বাজেটের পক্ষে জোরালো যুক্তিতর্ক খোঁজেন। এ-বিষয়ক আলোচনায় নিউজবাংলার কাছে একাধিক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, উদ্বৃত্ত বাজেট দেয়ার পর্যায়ে দেশ পৌঁছেনি। আবার সুষম বাজেট দিয়ে বর্তমান বিশ্বে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই জনগণের জীবনযাত্রার মান ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করতে হলে অর্থাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে হলে ঘাটতি বাজেটই শ্রেয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষেত্রে সেটি আরও বেশি প্রযোজ্য।
ঘাটতি বাজেটের মাধ্যমে দেশের রাজস্ব নীতির লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়িত হয়। বাণিজ্য চক্রের উত্থান-পতনের সঙ্গে সঙ্গে এ বাজেট প্রণয়ন করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা যায়। এ ছাড়া মূলধন গঠনের জন্য এ বাজেটের কোনো বিকল্প নেই। তা ছাড়া বিশ্বব্যাপী এখন মূল্যস্ফীতির ঝুঁকিতে আছে। ঘাটতি বাজেটে দেশের অব্যবহৃত সম্পদ ব্যবহৃত হয় এবং উৎপাদন ও নিয়োগ বৃদ্ধি পায়, যা মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার সেই সম্ভাবনাকে একটা স্তর পর্যন্ত প্রশমিত রাখতে পারে।
বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এবার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের বাজেট বাস্তবায়ন করতে আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। ফলে ঘাটতি বাজেট (অনুদানসহ) হবে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির অঙ্ক দাঁড়াবে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এ বছর বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার আশা করা হচ্ছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান পরিশোধ করতে হয় না। এ জন্য এটি সরকারের আয় মনে করা হয়।
এই ঘাটতি মেটাতে অর্থমন্ত্রী ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। বিদেশ থেকে ঋণ গ্রহণ করা হবে ৯৫ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা। অন্যান্য খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৫ হাজার ১ কোটি টাকা।
বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা ব্যয়ের বাজেটে আয়-ব্যয়ের মধ্যে ঘাটতি রাখা হয় অনুদানসহ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬ দশমিক ১ শতাংশ, যা টাকার অঙ্কে ছিল মোট ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে অনুদান ব্যতীত এই ঘাটতি রাখা হয় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬ দশমিক ২ শতাংশ, যা টাকার অঙ্কে ছিল মোট ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে মোট ব্যয়ের আকার কাটছাঁট করে ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকায়। এতে করে শেষ পর্যন্ত বাজেট বাস্তবায়নে ঘাটতির আকারও কমে আসে। অনুদানসহ নতুন ঘাটতি দাঁড়ায় ২ লাখ ১ হাজার ৩০৮ কোটি টাকা, যা জিডিপির শতকরা হিসাবে এর ৫ দশমিক ১ শতাংশ এবং অনুদান ছাড়া ২ লাখ ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা জিডিপির শতকরা হিসাবে এর ৫ দশমিক ১ শতাংশ।
২০২০-২১ অর্থবছরে ৪ লাখ ৬০ হাজার ১৬০ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ ছিল অনুদানসহ ১ লাখ ২৯ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা বা জিডিপির শতকরা হিসাবে ৪ দশমিক ২ ভাগ। অনুদান ছাড়া ঘাটতি প্রাক্বলন করা হয় ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির শতকরা হিসাবে ৪ দশমিক ৩ ভাগ।
এ প্রসঙ্গে সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘাটতি বেশি হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ দেখছি না আমি। এখন আমাদের বেশি বেশি খরচ করতে হবে। তবে বৈশ্বিক অস্থির পরিস্থিতিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সুরক্ষিত রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় যতটা সম্ভব বিদেশি ঋণ কম নিয়ে বিদেশি অনুদান আনার চেষ্টা বেশি করতে হবে। একই সঙ্গে বাজেটের টাকা সঠিকভাবে ব্যয় করতে হবে সামাজিক সুরক্ষামূলক বিভিন্ন খাতে। বাড়তি বিনিয়োগ করতে হবে উৎপাদন বৃদ্ধি, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং জরুরি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অবকাঠামো খাতে। এর ফলে মানুষের সক্ষমতা বাড়বে এবং নতুন নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
একইভাবে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আরেক অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলি খান মনে করেন, ‘ঘাটতি বাজেট শুধু দায় সৃষ্টি করে না, ঘাটতি দিয়ে যদি সক্ষমতা বাড়ানো যায় এবং অবকাঠামো খাতে ব্যয় করা হয়, তা হলে আয়ও সৃষ্টি করতে পারে।’
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফল পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় গরিব মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার কথা চিন্তা করলে বাজেট ঘাটতি বড় বিষয় নয়। এই শ্রেণির মানুষের জন্য প্রত্যক্ষ অর্থসহায়তা ও খাদ্যসহায়তার ব্যবস্থা রাখা দরকার। তাদের সুরক্ষা প্রতিষেধক হলো টিসিবির কার্যক্রম বিস্তৃত করা, খাদ্যমূল্য কমানো, এক কোটি পরিবারকে সহায়তা দেওয়া।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মুঈদ রহমান বলেন, ‘আমাদের মতো অর্থনীতির জন্য ঘাটতি বাজেটই কার্যকর ও উপযুক্ত। এ ঘাটতির কারণে অব্যবহৃত সম্পদ ব্যবহারের ওপর চাপ থাকে এবং অর্থনীতিতে উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়।’
আরও পড়ুন:বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে জনগণকে মিতব্যয়ী হতে, সঞ্চয় বাড়াতে, দেশীয় পণ্য ব্যবহার করতে এবং দেশেই চিকিৎসা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়া, বিলাসী পণ্য পরিহারের অনুরোধও করেছেন তিনি।
বুধবার রাতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারপ্রধান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেককে তার নিজ নিজ জায়গা থেকে যতটুকু সম্ভব কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে, ব্যক্তিগত সঞ্চয় করতে হবে। প্রত্যেকের নিজস্ব সঞ্চয় বাড়ানো এবং প্রত্যেককে মিতব্যয়ী হতে হবে।
‘দেশীয় পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে। কথায় কথায় দৌড়ায়ে বিদেশে যেয়ে চিকিৎসা নেয়া যাবে না। দেশেও ভালো চিকিৎসা হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুৎ ঢালাও ব্যবহার করবেন না, অপচয় যেন না হয় সকলেই কিছু কৃচ্ছ্রসাধন করে কিছুটা সঞ্চয় করে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন। আমদানি করা বিলাসী পণ্য পরিহার করে সবাইকে দেশীয় পণ্য ব্যবহারের দিকে নজর দিতে হবে।’
করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর ইউক্রেনে রুশ হামলার পর দেশে দেশে দেখা দেয়া সংকটের বিষয়টিও উঠে আসে সরকারপ্রধানের বর্ণনায়। এই সময়েও বাংলাদেশের অর্থনীতি চাপ সামলে এগিয়ে চলছে বলে মনে করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একে তো করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাব, তার ওপর মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে এসেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এসব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে।
‘শত বাধা ও চাপের মুখে পড়লেও আমরা দৃঢ়ভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। অনেক প্রতিকূল অবস্থায় এগোতে হচ্ছে। উন্নত দেশগুলো যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতিশীলতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি।
‘এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা চাই। আমাদের দেশে, বিদেশে, বাইরে সব জায়গায় তো একটা বাধা পেতে হয়। সেটা অতিক্রম করে আমরা অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করছি। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব। এ জন্য জনগণের সর্বাত্মক সহযোগিতা চাই। জনগণের সর্বাত্মক সহযোগিতা পেলে এই বাজেট সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব।’
গত ৯ জুন আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। দুই সপ্তাহের বেশি আলোচনা পর্যালোচনার জন্য কিছু পরিবর্তন করে বুধবারের মধ্যে বাজেট পাস করে।
সরকারপ্রধান উল্লেখ করেন, ‘দেশের মানুষ তার প্রত্যেকের জায়গা থেকে সরকারকে সহযোগিতা করতে পারে। যেমন ব্যক্তিগত পর্যায়ে সঞ্চয় বাড়ানোর মাধ্যমে জাতীয় সঞ্চয় বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে যে কেউ। সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় তথা অপচয় কমিয়ে এবং আমদানিকৃত বিলাস পণ্য পরিহার করে শুধু প্রয়োজনীয় জিনিস কেনায় মনোযোগী হলে দেশ উপকৃত হবে।’
স্থানীয় শিল্পের বিকাশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। তার সরকারকে ব্যবসাবান্ধব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘করপোরেট কর হার আরও কমিয়ে কর হার ২ দশমিক ৫০ ভাগ হারে হ্রাস করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশি-বিদেশি বাধা অতিক্রম করে আমরা অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করছি। তার কারণ, আমাদের দেশের মানুষের আলাদা শক্তি আছে। তারা বুঝতে পারে, অনুধাবন করতে পারে। তখনই তাদের শক্তি বোঝা যায়। পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে সেটা প্রযোজ্য।
‘জাতির পিতার ডাকে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল এ দেশের মানুষ। স্বাধীনতার জন্য জীবন বিলিয়ে দিয়েছিল। আমাদের মানুষকে নিয়েই এগোতে হবে।’
আরও পড়ুন:বিদেশে পাচার করা অর্থ-সম্পদ ফেরত আনার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত সুযোগ-সুবিধায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনে অর্থবিল বিল-২০২২ পাস হয়েছে। পরিবর্তনের মধ্যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ আনার ক্ষেত্রে বাজেটে প্রস্তাবিত সুযোগ বাতিল করা হয়েছে।
বুধবার জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর এসব সংশোধনী আনেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে আনা সংশোধনীগুলোর মধ্যে রয়েছে- ৭ শতাংশ কর দিয়ে শুধু পাচার করা নগদ টাকা দেশে আনা যাবে। যারা সরকারের দেয়া এই সুযোগ নেবেন না, তাদেরকে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। জরিমানার পরিমাণ হবে নির্ধারিত করের সমপরিমাণ।
আর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ আনার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বাজেটে যে সুযোগ রাখা হয়েছিল তা বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে কম হারে করপোরেট কর সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও সংশোধন আনা হয়েছে।
যেসব কোম্পানি বছরে ৩৬ লাখার টাকার বেশি ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করবে তারা কম হারে করপোরেট কর পরিশোধের সুবিধা পাবে। প্রস্তাবিত বাজেটে এই সীমা ছিল বছরে ১২ লাখ টাকা।
এছাড়া সব সেবার ক্ষেত্রে ই-টিআইএন (করদাতা শরাক্তকরণ নম্বর) যুক্ত করে রিটার্ন দাখিলের যে বাধ্যবাধকতা ছিল তাতেও ছাড় দেয়া হয়েছে। কেবল ব্যক্তি-শ্রেণির করদাতাদের জন্য রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বিস্তারিত আসছে…
আরও পড়ুন:মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার বিবেচনায় বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের অবস্থান হবে এশিয়ায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। জিডিপি প্রবৃদ্ধির এই অবস্থান আগামী অর্থবছরও অটুট থাকবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
জাতীয় সংসদে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট আলোচনার উপর সমাপনী বক্তব্যে বুধবার তিনি এমন তথ্য দেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের গত ১৩ বছরের অনন্য অর্জনসমূহ রূপকথার গল্পগাঁথাকেও হার মানায়। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সময়ে জিডিপিতে ১৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল প্রথম। যেখানে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চায়নার প্রবৃদ্ধি ছিল ১৭৭ শতাংশ।’
এ সময় অর্থমন্ত্রী সংসদকে জানান, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের হিসাবে বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছর এবং আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছর বাংলাদেশের জিডিপিতে প্রবৃদ্ধির হার হবে এশিয়ায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
করোনা মহামারি ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও দেশের অর্থনীতির এই ক্রমোন্নতিতে নেতৃত্বের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন।
বাজেটের সমাপনী বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী পদ্মা সেতুর প্রসঙ্গও টানেন। আ হ ম মুস্তফা কামাল দাবি করেন, পদ্মা সেতুর হাত ধরে তিনি আমাদের বিশ্ব মানচিত্রে এক ঐতিহাসিক উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:প্রস্তাবিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন, পরিবেশ ও সক্ষমতা তৈরিসহ ওয়াশ খাতে বরাদ্দ বাড়াতে সুপারিশ করেছেন পরিবেশবাদীরা। ওয়াশ খাতে বরাদ্দ না বাড়ালে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কাজ ধীরগতিতে হবে বলে মনে করছেন তারা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা এ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজেট বরাদ্দ কম হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে। যদিও ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে আঞ্চলিক বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে।
বাজেটে হাওর এবং পার্বত্য এলাকায় বরাদ্দ কিছুটা বেড়েছে, তবে চর এবং উপকূলীয় এলাকায় বরাদ্দ বাড়েনি। প্রস্তাবিত বাজেটে এ বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। ওয়াশ খাতের আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বরাদ্দ বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।
নিরাপদ পানি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা ওয়াটার এইড বাংলাদেশ, পিপিআরসি, ইউনিসেফ বাংলাদেশ, ফানসা-বিডি, এফএসএন নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ওয়াটার ইনটিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন), স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল, অ্যান্ড ওয়াটার পভার্টি, এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম এবং ওয়াশ অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এতে উপস্থিত ছিলেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ওয়াটার এইডের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর হোসেন ইশরাত আদিবসহ ওয়াশ নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাজেট ২০২২-২৩ : শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি।
সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
প্রবন্ধে কোভিড-পরবর্তী বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অগ্রসর হওয়ার লক্ষ্যে জাতীয় বাজেটে শিক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বলা হয়, এ ক্ষেত্রে উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে বরাদ্দ অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাহবুবুল মোকাদ্দেম আকাশ ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার শিক্ষার মাধ্যমে একটি কল্যাণকর ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার গুণগত পরিবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’
সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য তিনি শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়কে উদ্ভাবনের প্রাণকেন্দ্র। উচ্চশিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষক ও গবেষকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:মোবাইল ফোনের ওপর আগামী অর্থবছরের বাজেটে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার যে প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বা এফআইসিসিআই।
বাংলাদেশের ব্যবসা ও বিদেশি বিনিয়োগের ওপর বাজেটের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মলনের আয়োজন করে সংগঠনটি। সেখানেই এমন উদ্বেগের কথা জানান এফআইসিসিআই প্রেসিডেন্ট।
গত ৯ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন।
বাজেট নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ফরেন এফআইসিসিআই প্রেসিডেন্ট ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সিইও নাসের এজাজ বিজয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এফআইসিসিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক টি আই এম নূরুল কবীর।
এফআইসিসিআই প্রেসিডেন্ট নাসের এজাজ বিজয় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা এই সময় যখন ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, তখন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, বিশেষ করে মোবাইল ফোনের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়ানো ঠিক হচ্ছে না।’
এর ফলে দেশে এই শিল্পের প্রসার বাধাগ্রস্ত হবে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, প্রস্তাবিত বাজেটে এমন একটি বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে একটি কোম্পানিকে ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের (ডব্লিউপিপিএফ) অবদানের ওপর কর দিতে হবে। এটি কোম্পানিটির আয়করের বোঝা ও কার্যকর করের হার বাড়িয়ে তুলবে।
বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবসায় প্রতিটি ব্র্যান্ডের জন্য ভোক্তা পর্যন্ত তিন-চারটি স্তরে ব্যবসা পরিচালনা করা হয়। এ ক্ষেত্রে যদি মোবাইল ফোন ব্যবসার প্রতিটি স্তরে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়, তবে প্রতিটি মোবাইল ফোনের খুচরা মূল্য প্রায় ১৫-২০ শতাংশ বেড়ে যাবে।
এ ক্ষেত্রে ভোক্তাপর্যায়ে অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হবে এবং মোবাইল ফোন দেশের সিংহভাগ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।
আরও পড়ুন:বাজেটে সিগারেট, বিড়ি এবং ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যে যে করের প্রস্তাব করা হয়েছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট নন তামাকবিরোধীরা। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত করের চেয়ে বেশি করারোপের পক্ষে তারা।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সেমিনার কক্ষে মঙ্গলবার বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয় আয়োজিত এক আলোচনায় সংসদ সদস্যসহ আলোচকরা এ অভিমত দেন।
তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠন, গবেষক এবং অ্যাক্টিভিস্টরা সম্মিলিতভাবে তামাকপণ্যে কার্যকর করারোপের যে প্রস্তাবনা দিয়েছিল তা বাজেটে একেবারেই প্রতিফলিত হয়নি বলে মনে করেন আলোচকরা।
আলোচনায় অংশ নেয়া সংসদ সদস্যদের মধ্য ছিলেন শিরীন আখতার, ফজলে হোসেন বাদশা, উম্মে ফাতেমা নাজমা, আফতাব উদ্দিন সরকার, উম্মে কুলসুম স্মৃতি, ডা. সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল, মো. হারুনুর রশীদ এবং মো. সাইফুজ্জামান।
আলোচনায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো এক ধাক্কায় অনেকখানি কর বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল। যাতে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর মধ্যে তামাক ব্যবহারের মাত্রা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনা যায়। কর আদায়ে সুবিধার জন্য সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাবনাও ছিল।
‘কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে শুল্কহার আগের মতোই রেখে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম অতি-সামান্য বাড়ানো হয়েছে। সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়নি। এতে তামাকপণ্যে কার্যকর করারোপের সম্ভাব্য সুফল থেকে দেশ বঞ্চিত হবে।’
আলোচকরা বলেন, ‘বাজেটে সিগারেটের ওপর যে কর ধার্য করা হয়েছে তাতে সিগারেটের বিক্রি না কমে উল্টো দেড় শতাংশ বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাজেটে সিগারেটের প্রস্তাবিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিগারেট ইতোমধ্যেই বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ফলে কর প্রস্তাব অপরিবর্তিত থাকলে সিগারেট কোম্পানির বিক্রি বৃদ্ধির পাশাপাশি কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগও বেড়ে যাবে।
‘সুপারিশ অনুযায়ী বিদ্যমান কর ব্যবস্থা সংস্কার করলে তামাকের ব্যবহার কমবে, জীবন বাঁচবে এবং রাজস্ব আয় বাড়বে। নিম্ন স্তরে সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধি তুলনামূলক স্বল্প আয়ের মানুষকে ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত করবে। উচ্চ স্তরে সিগারেটের দাম বাড়ানো হলে ধূমপায়ীদের পছন্দের সামর্থ্য সীমিত হবে। ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে এসব পণ্যের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করবে।’
সংসদ সদস্য শিরীন আখতার বলেন, ‘বাজেট অধিবেশন শুরুর আগেই অর্থমন্ত্রীর কাছে তামাকপণ্যে কার্যকর করারোপের প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন অন্তত ১০০ জন সংসদ সদস্য। এরপরও বাজেটে তা প্রতিফলিত না হওয়া লজ্জাজনক।’
ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘সংসদ সদস্যসহ অন্য সকল অংশীজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অচিরেই বাংলাদেশে তামাকপণ্যে কার্যকর করারোপ সম্ভব হবে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হলেও সেটি এখনও সংশোধনের সুযোগ আছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য