× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অর্থ-বাণিজ্য
Food security or safe food?
google_news print-icon

খাদ্য নিরাপত্তা না নিরাপদ খাদ্য

খাদ্য-নিরাপত্তা-না-নিরাপদ-খাদ্য
বিশ্বে এখন প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ ক্ষুধায় কাতর। এটি যেমন একটি বাস্তবতা, তেমনি আরেকটি বাস্তবতা বলছে, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৬০ কোটি মানুষ দূষিত খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়। যার থেকে মারা যায় ৪ লাখ ৪২ হাজার মানুষ।

চালভর্তি একটি ভ্যান আসছিল রাজধানীর বাবুবাজার থেকে। পথিমধ্যে গুলিস্তান ফ্লাইওভারসংলগ্ন ঢাকা ট্রেড সেন্টারের সামনে প্রচণ্ড জ্যামে আটকা পড়ে ভ্যানটি। বৃষ্টি আর ভ্যাপসা গরমের মধ্যে অন্যান্য যানবাহনের মতো রিকশাওয়ালারাও যার যার সুবিধামতো একটু আগ-পাশ করতে বেশ বেপরোয়া। হঠাৎ অসাবধানতাবশত ঘা ঘেঁষে থাকা একটি রিকশার তিন কোণা হুকটি বেঁকে গিয়ে আঘাত হানে চালের বস্তায়। আর অমনি বস্তা থেকে দরদর করে পড়তে থাকে চাল।

বৃষ্টিস্নাত রাস্তাটি কাদা ও ড্রেনের উপচে পড়া ময়লা-আবর্জনা মিলেমিশে একাকার। রিকশাওয়ালা আর ভ্যানওয়ালার বাগবিতণ্ডা তখনও চলছিল। কিন্তু সেটিও থেমে যায় পঞ্চাশোর্ধ এক মহিলার কাণ্ডে। তাকে দেখা গেল বৃষ্টি উপেক্ষা করে দৌড়ে এসে সেই কাদা ও ড্রেনের উপচে পড়া ময়লা-আবর্জনা থেকে গভীর মনোযোগ দিয়ে চালগুলো কেঁচে তুলে শাড়ির আচলে গুঁজতে।

প্রত্যক্ষদর্শী এক ভদ্রলোক ওই মহিলাকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘আরে কী করছেন। এগুলো তো খেতে পারবেন না। খাওয়ার জন্য এই চাল অনিরাপদ হয়ে গেছে।’

মহিলার এক কথায় জবাব ‘আগে পেটটা বাঁচুক, তারপর দেখমু নিরাপদ না অনিরাপদ।’

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারগুলোতে প্রায় প্রতিদিন দেখা মেলে একই রকম চিত্র। সেখানে বিক্রেতার বিক্রয়-অযোগ্য মাছ ও পচে যাওয়া পেঁয়াজ থেকে শুরু করে সবজি, ফল কিংবা অন্যান্য উচ্ছিষ্ট খাদ্যপণ্যও অনেককে সংগ্রহ করতে দেখা যায়।

টেকসই জীবন ও সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প নেই। অনিরাপদ খাদ্য শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকিরই কারণ না, দেহে রোগের বাসা বাঁধারও অন্যতম কারণ। এ কারণে নিরাপদ খাদ্যের সংজ্ঞায় স্বাস্থ্যবিজ্ঞান পচাবাসি, পরিত্যক্ত কিংবা উচ্ছিষ্ট খাদ্যের কোনোটিকেই নিরাপদ স্বীকৃতি দেয় না।

খাদ্য নিরাপত্তা না নিরাপদ খাদ্য

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৬০ কোটি মানুষ দূষিত খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়। যার থেকে মারা যায় ৪ লাখ ৪২ হাজার মানুষ। এ ছাড়া ৫ বছরের চেয়ে কম বয়সী শিশুদের ৪৩ শতাংশই অনিরাপদ খাবারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়, যার থেকে প্রতি বছর মৃত্যুবরণ করে ১ লাখ ২৫ হাজার শিশু।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বে এখন প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ খাদ্যের অভাবে দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত।

বাংলাদেশেও অনিরাপদ খাদ্যের ঝুঁকি প্রবল। তবে কখনও কখনও নিরাপদ খাদ্যের চেয়ে খাদ্য প্রাপ্তিই বড় হয়ে দেখা দেয়। করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের দামামায় বাংলাদেশে তেল, চাল, ডাল, চিনি, পেঁয়াজ, মাংস, দুধ, ডিমসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যে সরবরাহ ঘাটতি এবং দামের উত্তাপে সেটি আঁচ করা যায়। পরিত্যক্ত চাল কুড়িয়ে পেট বাঁচানোর চেষ্টাই তার বহিঃপ্রকাশ।

এই যখন পরিস্থিতি, তখন ৭ জুন মঙ্গলবার ‘সেইফার ফুড বেটার হেলথ’ শিরোনামের জাতিসংঘ নির্ধারিত প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস।’

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সচিব আব্দুন নাসের খান নিউজবাংলাকে জানান, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা বিশ্বব্যাপী আয়োজিত এই নিরাপদ খাদ্য দিবসটি দেশেও পালন করতে যাচ্ছি। এ দিন বিষয়ের ওপর রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া দিবস উদযাপনে প্রতিটি বিভাগীয় ও জেলা শহরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, আগামী কয়েক মাসে বিশ্বজুড়ে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে উচ্চমূল্যের কারণে দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির চরম অবনতি হবে। এই সংঘাত কমপক্ষে ১ কোটি মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে, যা তৈরি করতে পারে দুর্ভিক্ষ।

এবার ‘বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবসটি’ বিশ্বজুড়ে এমন একসময়ে পালিত হচ্ছে যখন গোটা বিশ্বই খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে। ফলে নিরাপদ খাদ্যের চেয়ে এই মুহূর্তে সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি করোনার নেতিবাচক প্রভাব সামলে ওঠার আগেই ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের’ মতো বিশ্ব পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলেছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এই যুদ্ধে ইউক্রেনের বন্দরগুলো দিয়ে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী খাদ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। সংঘাতের আগে এসব বন্দর দিয়ে বিপুল পরিমাণ ভুট্টা, গম, সূর্যমুখীর তেল ছাড়াও বিভিন্ন খাদ্যশস্য রপ্তানি হয়েছে। এখন সেটি না হওয়ায় বিশ্বব্যাপী এসব নিত্যপণ্যের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং এর বিকল্প পণ্যগুলোর দামও বেড়ে গেছে। একইভাবে জ্বালানি সরবরাহ না হওয়ায় তার প্রভাবও পড়েছে দামে। ফলে বিশ্বব্যাপী তৈরি করছে আশঙ্কাজনক মূল্যস্ফীতি।

অন্যদিকে খাদ্যসংকটের আশঙ্কায় ইন্দোনেশিয়াও পাম তেল রপ্তানি বন্ধ করে দেয়, যদিও পরে তারা তুলে নেয়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক বাজারজাতকরণ নিয়ে রক্ষণশীল অবস্থান নেয় বিভিন্ন দেশ। নিজেদের নিরাপত্তার চিন্তা করে ভারত গম রপ্তানি বন্ধ রেখেছে, এর পাশাপাশি তারা চিনি রপ্তানিও সীমিত করেছে। ব্রাজিলও বন্ধ রেখেছে চিনি রপ্তানি। বিশ্বে শীর্ষ গম উৎপাদনকারী দেশ চীনে এ বছর উৎপাদন ভালো হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশেও চাল-গমের দাম বেড়ে গেছে।

জাতিসংঘের তথ্য মতে, খাদ্যের সরবরাহ কমে যাওয়ায় এই বছর বিশ্বে খাদ্যের দাম ৩০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

আমরাও মনে করি আগে পেটটা বাঁচুক, তারপর দেখা যাবে নিরাপদ খাচ্ছি না অনিরাপদ খাচ্ছি। কিন্তু এটাও ভুলে গেলে চলবে না, আমরা এখন সেই অবস্থায় নেই। পেটটা বাঁচানোর মতো অবস্থা অনেক আগেই তৈরি হয়ে গেছে।

মুক্তবাজার অর্থনীতির কারণে এর চাপ থেকে বাদ পড়েনি বাংলাদেশও। কুড়িয়ে নেয়া সেই চালের ভরা মৌসুমেও দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা। সবচেয়ে বড় কথা এর সরবরাহে তৈরি হয়েছে কৃত্রিম ঘাটতি। ভোজ্যতেলেও তাই ঘটেছে। ভারতের গম রপ্তানি বন্ধের খবরে আটা-ময়দার দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশ। তাতে বেকারি পণ্যের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশ। একই হুজগে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। চিনির দামেও আগুন। লবণ, দুধ, কলা, রুটি, পরোটা ছাড়াও মাছ-মাংস, ডিম ও শাক-সবজিসহ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে লাগামহীন। অথচ মানুষের আয় সেই আগের জায়গায়ই স্থির রয়েছে। সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়া অবস্থা সবার। কী খাবে মানুষ?

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্যসচিব ড. নাজমানারা খানম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরাও মনে করি আগে পেটটা বাঁচুক, তারপর দেখা যাবে নিরাপদ খাচ্ছি না অনিরাপদ খাচ্ছি। কিন্তু এটাও ভুলে গেলে চলবে না, আমরা এখন সেই অবস্থায় নেই। পেটটা বাঁচানোর মতো অবস্থা অনেক আগেই তৈরি হয়ে গেছে। এ কথা সত্যি, কিছু জিনিসের দাম বেড়েছে। কিন্তু বাড়তি দামেও মানুষ খেতে পারছে।’

খাদ্যসচিব বলেন, ‘আপনার যখন পেট ভরবে, তখন আপনি চেষ্টা করবেন অন্যান্য চাহিদা কীভাবে মেটে। নিরাপদ খাদ্যের প্রসঙ্গটিও ঠিক তাই। আমরা উন্নত দেশের কাতারে শামিল হওয়ার পথে। সেই ক্ষেত্রে আমরা নিরাপদ খাদ্য আর খাদ্যের নিরাপত্তা দুটোকেই সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে এগোচ্ছি। কেননা খাদ্য যদি নিরাপদ না হয়, তাহলে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন করেও তেমন লাভ হবে না। তখন অনেক ধরনের অসুখ-বিসুখের পেছনে টাকা-পয়সা ঢালতে হবে। হাসপাতাল, চিকিৎসক, নার্স বাড়াতে হবে। আমরা যদি ওষুধ কেনার চেয়ে নিরাপদ খাবার কেনার পেছনে ব্যয় করতে পারি, তাহলেই কিন্তু খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়ে যায়। ফলে আমরা দুটোতেই নজর রাখছি।

বিশ্বে মোট গম উৎপাদনের ৩০ শতাংশ হয় ইউক্রেন ও রাশিয়ায়। আর ভুট্টার ২০ শতাংশ উৎপাদিত হয় এই দুই দেশে। যুদ্ধের কারণে এরই মধ্যে এই দুই দেশ থেকে গম ও ভুট্টাসহ অধিকাংশ খাদ্যপণ্যের রপ্তানি বন্ধ হয়ে গোটা বিশ্বকে খাদ্যসংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, আগামী কয়েক মাসে বিশ্বজুড়ে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে উচ্চমূল্যের কারণে দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির চরম অবনতি হবে। এই সংঘাত কমপক্ষে ১ কোটি মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে, যা তৈরি করতে পারে দুর্ভিক্ষ। সহসাই যুদ্ধ বন্ধ না হলে সেই দুর্ভিক্ষ চলতে পারে কয়েক বছর।

বিষয়টি নিয়ে ভাবছে অর্থ মন্ত্রণালয়ও। বাজেট প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক যে খাদ্যসংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে, এবার বাজেটে সাত পদক্ষেপের মাধ্যমে সেই ঝুঁকি মোকাবেলার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। যদি যুদ্ধ পরিস্থিতি বছরব্যাপী দীর্ঘ না হয় তাহলে এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশকে সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক হবে, যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যপণ্যের দাম কমাতেও ভূমিকা রাখবে। ফলে দেশে মানুষের খাদ্য পাওয়ার নিশ্চয়তাও নিশ্চিত করবে।

জানতে চাইলে এ বিষয়ে কৃষিসচিব মো সায়েদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ‘খাদ্য নিরাপত্তারই একটি অংশ হলো নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা। এর জন্য আমরা খাদ্যপণ্যের নিরাপদ উৎপাদনেও জোর দিচ্ছি। গ্লোবাল ফুড প্রোডাকশনে যে গুড প্র্যাকটিসগুলো রয়েছে, তার আলোকে আমরা নীতিমালা করেছি। একই সঙ্গে তার বাস্তবায়নে অ্যাকশন প্লান নিয়ে কাজ করছি। এতে সার ও কীটনাশক ব্যবহার বিজ্ঞানভিত্তিক করা হচ্ছে। পাশাপাশি ফসল উৎপাদনে আইবিএম ব্যবহার বহুগুণ বেড়েছে, যা নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ বাড়াতে সহায়ক হচ্ছে।’

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন ধান এবং দানাজাতীয় ফসল মিলে সাড়ে ৪ কোটি টন খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

কৃষিসচিব আরও বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমরা ধান, গম ও ভুট্টা ছাড়াও সব ধরনের দানাদার ফসল শাক-সবজি ও ফলমূলসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যেরও উৎপাদন বাড়াতে জোর দিয়েছি। সব ফসলেই আমরা প্রতি বছর প্রবৃদ্ধির ধারাতে রয়েছি। ফলে করোনার মধ্যেও আমাদের খাদ্যের উৎপাদন সুরক্ষিত অব্যাহত ছিল। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে খাদ্য উৎপাদনে সরকার বাজেটের মাধ্যমে প্রতিবছর আমাদের নীতি সহায়তা দিয়ে থাকে। আগামী বছরও বাজেটের মাধ্যমে আমরা কৃষককে উৎসাহিত করতে সার, বীজ, সেচ, বিদ্যুৎ, কীটনাশক, মাড়াই যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি দেব। সেটি আগের চেয়ে আরও বাড়বে। কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সহায়তা দেব। এসব পদক্ষেপে খাদ্য উৎপাদনও বাড়বে এবং আমাদের খাদ্য নিরাপত্তাও নিশ্চিত করবে।’

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন ধান এবং দানাজাতীয় ফসল মিলে সাড়ে ৪ কোটি টন খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার সেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি খাদ্য উৎপাদন আশা করছে তারা।

খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি থেকে দেশকে সুরক্ষা দিতে সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপ প্রসঙ্গে খাদ্যসচিব ড. নাজমানারা খানম জানান, ‘করোনা এবং যুদ্ধ অবস্থা মিলে বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে হয়তো আমরা কিছুটা খারাপ পরিস্থিতিতে আছি, তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো অতটা প্রবল নয়। বাংলাদেশের যে প্রেক্ষাপট, তাতে সার্বিক উৎপাদন পরিস্থিতি ও অন্যান্য বিবেচনায় খাদ্যঝুঁকিতে পড়ার কোনো আশঙ্কাই নেই। তা ছাড়া আমাদের মানুষ কর্মঠ। কৃষকরা সচেতন। কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথা পুরো সরকার অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং অত্যাবশ্যকীয় ঘাটতি পণ্যের আমদানির মাধ্যমে সরবরাহ বাড়ানোর কাজ সার্বক্ষণিক করে যাচ্ছে, যা ঝুঁকির বিপরীতে নিরাপত্তা দেয়াল বলেও ভুল হবে না।’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান নিউজবাংলাকে জানান, ‘ভোক্তার নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করা যেমন জরুরি, চাহিদা অনুযায়ী সেই খাদ্য সঠিক দামে পাওয়াও ভোক্তা অধিকারের মধ্যে পড়ে। তাই যেখানে ভোক্তার স্বার্থ জড়িত, আমরা সেই স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর সরবরাহ নিরাপদ করতে সবার সঙ্গেই সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করছি।’

আরও পড়ুন:
গরু নিয়ে প্রাণিসম্পদ অফিস ঘেরাও
অর্থনৈতিক মন্দা সামলাতে দেশে-দেশে সংকোচন নীতি
দেশ ধ্বংস করাই বিএনপির কাজ: খাদ্যমন্ত্রী
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল আশীর্বাদ: খাদ্যমন্ত্রী
সামনে নির্বাচন, চালের দাম বাড়তে দেবে না সরকার: খাদ্যমন্ত্রী

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অর্থ-বাণিজ্য
Live to appeal hearing next Sunday in the August 28 grenade attack case

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল আগামী রোববার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আজ জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য আপিলটি ছিলো। কিন্তু এই মামলায় হাইকোর্টের অথর জাজ বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান আজ আপিল বিভাগের বেঞ্চে ছিলেন।

নিয়ম অনুযায়ী হাইকোর্টে রায় দানকারী বিচারপতি একই মামলা আপিল বেঞ্চে শুনানি গ্রহণ করতে পারেন না।

এজন্য আগামী রোববার পুনর্গঠিত বেঞ্চে আপিলটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে। আদালত বিষয়টিতে আজ নট টুডে আদেশ দিয়েছেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার।

তবে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে।

দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন।

আলোচিত ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজি’র সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ।

বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সে রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামীরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।

এছাড়া, বিচারিক আদালতের রায়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআই-এর মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপি’র সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডি’র সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ ও সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এই মামলার আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

বিচারিক আদালতে এই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলছিল।

তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামীকে খালাস দিয়ে রায় দেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

মন্তব্য

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প প্রতীকী ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

ভূমিকম্পটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে অনুভূত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

এ ভূমিকম্পে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:
জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
চীনে ভূমিকম্পে নিহত ৫৩, আহত ৬২
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
বছরের শুরুতেই ভূমিকম্পে কাঁপল সিলেট

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
The United States will pay and 1 million for the Rohingya

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: বাসস
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত বৃহত্তম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সাহায্য কমে যাওয়ার ফলে সংকট আরও গভীর হওয়ার উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন (সাত কোটি ৩০ লাখ) ডলার নতুন আর্থিক সহায়তা দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে।

‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

সিনহুয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অংশ হিসেবে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট এবং ফেডারেল ব্যয় ব্যাপকভাবে হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু অংশ ভেঙে ফেলার বিস্তৃত প্রচেষ্টার মধ্যেই এ অনুদান দেওয়া হলো।

জাতিসংঘের দুটি সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তহবিলের ঘাটতি গত আট বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।

রোহিঙ্গারা আশঙ্কা করছেন, তহবিল হ্রাসের ফলে ক্ষুধা পরিস্থিতির অবনতি হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা এবং জ্বালানি হ্রাস পাবে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বড় সহায়তা প্রদানকারী দেশ ছিল। প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে আসছে দেশটি। কিন্তু জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর সাম্প্রতিক তহবিল স্থগিত করার ফলে কমপক্ষে পাঁচটি হাসপাতাল তাদের সেবা কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।

ট্রাম্প ও বিলিয়নেয়ার মিত্র ইলন মাস্ক প্রধান মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এর অবশিষ্টাংশগুলোকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করেছেন। শত শত কর্মী এবং ঠিকাদারকে বরখাস্ত করেছেন এবং কোটি কোটি ডলারের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন, যার ওপর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নির্ভরশীল।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং এ ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তিসঙ্গত প্রশাসনিক খরচ মওকুফ করেছিলেন।

ওয়াশিংটন টাইমস জানায়, এ মাসের শুরুতে ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার তত্ত্বাবধানকারী ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যায়ক্রমে সাহায্য বন্ধের প্রস্তাব করেছিলেন।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে।

কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন শিবিরের বাসিন্দারা এখন জনপ্রতি মাসিক ১২ ডলার করে খাদ্য বরাদ্দ পাবেন, যা আগের ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কম।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডব্লিউএফপি একটি চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানিয়েছে, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।’

তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১৩ ডলার করে পাবে, যা কক্সবাজারের তুলনায় এক ডলার বেশি।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমানোর পরিকল্পনা ডব্লিউএফপি পূর্বে জানানোর পর এ পরিবর্তন এসেছে।

গত ৫ মার্চ বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশন ডব্লিউএফপি থেকে একটি চিঠি পায়, যেখানে বলা হয়, তহবিল সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করা হবে।

চিঠিতে শরণার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।

তার সফরের সময় তাকে ছয় ডলারে রোহিঙ্গারা কী খাবার পাবে তার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করা হয়েছিল। সে সময় অপর্যাপ্ত পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন:
ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৯ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
ঋণের সুদহার কমাতে ইতিবাচক সাড়া চীনের, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার আশ্বাস
২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ
রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: উদ্ধার ২৫, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা যুক্তরাজ্য ও জার্মানির

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
The government is working to implement the demands of the workers Home Ministry

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো। ফাইল ছবি
বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার আন্তরিক ও একমত বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক দাবির নামে গার্মেন্টস শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি, অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ, নৈরাজ্য ও সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং তা কখনোই মেনে নেয়া হবে না।

‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সরকার তা কঠোরভাবে প্রতিহত করবে। গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানায় সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখা এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সরকার এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ উভয়ের সহযোগিতা কামনা করছে।’

আরও পড়ুন:
গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, ছুটির পর চালু বিভিন্ন কারখানা
বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস, রেলের অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
ঐতিহ্য ও আভিজাত্যে মোড়া লা রিভের ঈদ কালেকশন
টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ধর্মঘট টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিকদের

মন্তব্য

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: ইউএনবি
তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ মোকাবিলায় কার্যকর আঞ্চলিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের বায়ুদূষণের ৩০-৩৫ শতাংশ আসে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে। তাই এ সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক আলোচনার গণ্ডি পেরিয়ে বাস্তব পদক্ষেপ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জরুরি।

তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

কলম্বিয়ার কার্টাগেনায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর দ্বিতীয় বৈশ্বিক সম্মেলনের বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া সাইড ইভেন্টে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশের বায়ুদূষণ সমস্যা, বিশেষ করে ঢাকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন।

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের বহুমাত্রিক বায়ুদূষণ সমস্যা মোকাবিলায় বায়ুমান নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা ডব্লিউএইচওর অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ আইনি বিধিমালায় দূষণকারী খাতগুলোর জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ২০২৪ সালে চূড়ান্ত হওয়া জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পিছিয়ে ছিল, তবে এখন তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো মানুষের দূষণজনিত ঝুঁকি কমানো ও পরিষ্কার বায়ুর দিন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

পরিবেশ উপদেষ্টা আরও জানান, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে শিগগিরই বাস্তবায়ন শুরু হবে। এ প্রকল্প নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করা, আইন প্রয়োগ জোরদার করা, শিল্প কারখানায় দূষণ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং গণপরিবহন খাত আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে।

তিনি ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোকে ইটভাটামুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনার কথা জানান, যেখানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকবে।

এ ছাড়া ২০২৫ সালের মে থেকে পুরনো বাস ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে, যা পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ ধুলাবালি দূষণ রোধে ঢাকা শহরের খোলা সড়কগুলোতে সবুজায়নের উদ্যোগ এবং রাস্তা পরিস্কারে আরও শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান।

উপদেষ্টা জানান, অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানের ফলে এরই মধ্যে বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এ অগ্রগতি ধরে রাখতে কঠোর নজরদারি ও খাতগুলোর আধুনিকায়ন জরুরি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ মানুষ বায়ুদূষণের কারণে মারা যায় এবং ঢাকার মতো দূষিত শহরগুলোতে মানুষের গড় আয়ু ৫-৭ বছর কমে যাচ্ছে। এই সংকট আমাদের সবার জন্য, আমাদের শিশু, বাবা-মা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি। নিষ্ক্রিয়তার মূল্য অনেক বেশি। আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী। কারণ আমি বিশ্বাস করি, এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রযুক্তি ও বিকল্প ব্যবস্থা আমাদের হাতে রয়েছে, শুধু প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়ন দরকার।

‘বায়ুদূষণ শুধুই পরিবেশগত ইস্যু নয়, এটি মানবিক সংকট।’

সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি, পরিবেশ ও জ্বালানি খাতের নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, গবেষক, স্থানীয় প্রশাসন, পরিবহন ও শিল্প খাতের বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

তারা দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ রোধে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

আরও পড়ুন:
‘অস্বাস্থ্যকর বাতাস’ নিয়ে বিশ্বে পঞ্চম দূষিত শহর ঢাকা
বায়ুদূষণে বিশ্বে প্রতিদিন ২ হাজার শিশুর মৃত্যু: প্রতিবেদন
ছুটির দিনে বাতাসের নিম্ন মানে সপ্তম ঢাকা
সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ঢাকার বাতাস
ছুটির দিনে মানে উন্নতি, তবু ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Holy Lilatul Kadar today

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ প্রতীকী ছবি
মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর বৃহস্পতিবার। এর অর্থ ‘অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত’ বা ‘পবিত্র রজনী’।

আজ সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হবে কদরের রজনী।

যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সারা দেশে রাতটি পালন করা হবে।

মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

এ রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষণ করা হয়। নির্ধারণ করা হয় মানবজাতির ভাগ্য।

৬১০ সালে কদরের রাতেই মক্কার নূর পর্বতের হেরা গুহায় ধ্যানরত মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) কাছে সর্বপ্রথম সুরা আলাকের পাঁচ আয়াত নাজিল হয়। এরপর আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর বহনকৃত ওহির মাধ্যমে পরবর্তী ২৩ বছর ধরে মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা এবং ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট আয়াত আকারে বিভিন্ন সুরা নাজিল করা হয়।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে তুমি কি জানো? কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতারা ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।

‘শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা আল- কদর, আয়াত ১-৫)।’

হাদিসে বর্ণিত আছে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন এবং বলতেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ ১০ রাতে লাইলাতুল কদর সন্ধান করো (বুখারি ও মুসলিম)।’

মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় পবিত্র রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটিয়ে দেন। কামনা করেন মহান রবের অসীম রহমত, নাজাত, বরকত ও মাগফিরাত।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ রাত থেকে পরের দিন ভোররাত পর্যন্ত মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও আখেরি মোনাজাত করবেন তারা।

এই উপলক্ষে শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে রাতব্যাপী ওয়াজ মাহফিল, ধর্মীয় বয়ান ও আখেরি মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।

এ ছাড়া দেশের সব মসজিদেই তারাবির নামাজের পর থেকে ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন থাকবে।

পবিত্র লাইলাতুল কদর/শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিওগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।

এ ছাড়া সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হবে।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
The chief adviser to create a clear roadmap to build a prosperous Asia

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার চীনের হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে বৃহস্পতিবার বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

এশীয় দেশগুলোকে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও যৌথ সমৃদ্ধির জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চীনের হাইনানে বৃহস্পতিবার বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

আর্থিক সহযোগিতা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই একটি টেকসই অর্থায়ন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি) ও অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোর এ প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন নির্ভরযোগ্য তহবিল দরকার যা আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করবে।’

বাণিজ্য সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এশিয়া এখনও বিশ্বের অন্যতম কম সংযুক্ত অঞ্চল।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এ দুর্বল সংযুক্তি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের অবশ্যই বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য দ্রুত কাজ করতে হবে।’

খাদ্য ও কৃষি সহযোগিতা বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এশীয় দেশগুলোকে অবশ্যই সম্পদ-সাশ্রয়ী কৃষিকে উৎসাহিত এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে। টেকসই প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষি সমাধান ও জলবায়ুবান্ধব চাষাবাদের ক্ষেত্রে উদ্ভাবন বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‌এশিয়াকে অবশ্যই একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে, যা পুনর্গঠনমূলক, সমবণ্টনমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।

তিনি বলেন,‘আমাদের জ্ঞান, তথ্য ভাগ করে নিতে হবে এবং প্রযুক্তি ইনকিউবেশন ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করতে হবে। ডিজিটাল সমাধানে সহযোগিতা আমাদের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিশেষে বলব আমাদের সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে মেধা সম্পদ ও যুবশক্তিকে রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করতে হবে—একটি আত্মরক্ষা ও আত্মস্থায়ী সমাজ। আমাদের শূন্য-বর্জ্যের জীবনধারার ওপর ভিত্তি করে একটি পাল্টা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ভোগ সীমিত রাখতে হবে মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে।

‘আমাদের অর্থনীতিকে সামাজিক ব্যবসার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে হবে, যা ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক কাঠামো হিসেবে উদ্ভাসিত হবে, যেখানে উদ্ভাবন, লক্ষ্য ও দায়িত্ববোধ একীভূত থাকবে।’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বোয়াও ফোরাম ও অন্যান্য অনুরূপ উদ্যোগগুলোকে যুবসমাজ ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে হবে, যেন আগামী প্রজন্মের জন্য এশিয়াকে আরও উন্নত করা যায়।

আরও পড়ুন:
চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা প্রধান উপদেষ্টার
স্টারলিংকের ইন্টারনেট বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
দেশবিরোধী আন্দোলনে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা

মন্তব্য

p
উপরে