চালের দাম ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে এবং সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিকে গত সোমবার চাল মজুতকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর থেকে সারা দেশে অভিযানে নামেন কর্মকর্তারা।
নিউজবাংলার জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তধ্য অনুযায়ী বুধবার দিনভর ১২ জেলার বিভিন্ন আড়ত, মিল ও দোকানে অভিযান চালায় প্রশাসন। এ সময় অবৈধভাবে চালের মজুত করাসহ নানা অনিয়মের দায়ে নানা অংকের জরিমানা করা হয়। বন্ধ করে দেয়া হয়ে কিছু প্রতিষ্ঠান।
চালের অবৈধ মজুতের তথ্য জানতে বুধবার কন্ট্রোল রুম চালুর ঘোষণা দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। তিনটি ফোন নম্বরের মাধ্যমে যে কেউ চালের অবাধ মজুত সম্পর্কে জানাতে পারবেন। তথ্য জানাতে +৮৮০২২২৩৩৮০২১১৩, ০১৭৯০৪৯৯৯৪২ এবং ০১৭১৩০০৩৫০৬ নম্বরে ফোন করে তথ্য দিতে অনুরোধ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
বগুড়া
অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে লেবেল লাগিয়ে চাল মজুত ও বিক্রির দায়ে বগুড়ার শেরপুরের শিনু এগ্রো লিমিটেড নামে এক প্রতিষ্ঠানকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হকের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, এদিন বগুড়ার সব উপজেলায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ চাল মজুত করা ও লাইসেন্স না থাকার দায়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে ১১ লাখ ৫২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শেরপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবরিনা শারমিন জানান, উপজেলার জোয়ানপুর এলাকায় শিনু এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজে অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ২৪৬ টন চাল ও ২ হাজার ১৪৬ টন ধানের মজুত পাওয়া যায়। তবে চালগুলো এসিআই ফুডস লিমিটেডের লেবেলযুক্ত এবং নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের বস্তায় পাওয়া যায়। এসিআই ফুডস লিমিটেডের শেরপুরে মিলের ও ধান-চাল মজুতের কোনো লাইসেন্স নেই।
সাবরিনা আরও জানান, এসব চাল গত মার্চ মাস থেকে মজুত অবস্থায় আছে বলে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার এনামুল হক স্বীকার করেছেন। এই অপরাধে শিনু এগ্রো লিমিটেডকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এর আগে গৌর গৌরাঙ্গ ভাণ্ডার নামে উপজেলার আরও এক প্রতিষ্ঠানে ২০০ টন চালের অবৈধ মজুত পাওয়া যায় বলে জানান সাবরিনা। তাদের ১০০ টন পর্যন্ত চাল মজুতের অনুমোদন আছে।
চট্টগ্রাম
চাল মজুত করে দাম বাড়ানোর দায়ে নগরীর ৪ আড়তদারকে ৩৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সিলগালা করা হয়েছে একটি আড়তকে।
নগরীর পাহাড়তলি বাজারে বুধবার সন্ধ্যায় এই অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চালের দাম বাড়িয়ে ও অতিরিক্ত চাল মজুত করে বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে চাল মজুদ করার লাইসেন্সে উল্লেখিত পরিমাণের বাইরে চাল মজুত করছিল। তাদের অর্থদণ্ড করে মুচলেকা নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানকে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী সিলগালা করা হয়েছে।’
রংপুর
অবৈধভাবে ১ হাজার টন ধান মজুত ও অনুমোদন ছাড়া ব্যবসা পরিচালনা করার দায়ে নর্দান এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেড নামে একটি অটো রাইস মিল বন্ধ করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। মিল মালিককে ২ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
রংপুর সদর উপজেলার উত্তম বানিপাড়া এলাকায় বুধবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে এই পদক্ষেপ নেন সহকারী কমিশনার আমিনুল ইসলাম।
রংপুর সদর খাদ্য কর্মকর্তা আরিফ হোসেন জানান, মিল মালিক ইসতিয়াক আহমেদ জানিয়েছে যে তারা আর মিলটি চালাবেন না।
এদিন দুপুরে মাহিগঞ্জ এলাকায় চালের আড়তে অভিযান চালিয়ে বিক্রয় রসিদ না দেয়া এবং স্পষ্ট মূল্য তালিকা না রাখার দায়ে ৩টি প্রতিষ্ঠানে ২৩ হাজার টাকা জরিমানা করে জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর।
বরিশাল
মূল্য তালিকা না থাকায় এবং বেশি দামে চাল বিক্রি করার দায়ে নগরীর ৪ ব্যবসায়ীকে ৫৯ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
নগরীর ফরিয়াপট্টির চালের আড়তে বুধবার দুপুরে এই অভিযান চালিয়েছেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক শাহ শোয়াইব মিয়া।
তিনি জানান, মূল্য তালিকা না ঝুলিয়ে অতিরিক্ত দামে চাল বিক্রি করে আসছিল ফরিয়াপট্টির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার সেখানে অভিযান চালানো হয়। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে মহাদেব ভাণ্ডারকে ৩৫ হাজার টাকা, গৌর নিতাই ভাণ্ডারকে ২০ হাজার এবং দুই খুচরা চালের দোকানিকে ৩ হাজার ও ১ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
একই দিন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমাপ্তি রায় ও কামরুন্নাহার তামন্নার নেতৃত্বে দুইটি দল নগরীর বাজার রোড, ফরিয়া পট্টি, সাগরদী বাজারসহ নগরীর কিছু চালের আড়তে অভিযান চালায়। অবৈধভাবে চাল মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি, অধিক মুনাফায় চাল বিক্রি এবং মূল্য তালিকা সংরক্ষণ না করায় ৩টি চালের আড়তকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সিলেট
জেলার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কালিঘাটে বুধবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে ৫ প্রতিষ্ঠানকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
নিউজবাংলাকে অধিদপ্তরের সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘অভিযানকালে অতিরিক্ত মূল্যে চাল বিক্রি, মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, মূল্য তালিকায় প্রদর্শিত মূল্য ও প্রকৃত বিক্রয় মূল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকা এবং পাকা রশিদ সংরক্ষণ না করার দায়ে কালিঘাটের ৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।’
কুষ্টিয়া
দেশের অন্যতম বড় চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরে চালকলে বুধবার দুপুরে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ্বাস ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরীর নেতৃত্বে এই অভিযানে যায়।
এ সময় অতিরিক্ত মজুত বা মুনাফা করার প্রমাণ পাওয়া যায়নি- বলে জানান খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী। তবে ভূয়া নামে চাল ব্র্যান্ডিং করায় নিউ বনফুল ও নিউ ফোরস্টার মিলকে ৫০ হাজার টাকা করে মোট ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
ফরিদপুর
নিম্নমানের চাল বিক্রি করে ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা এবং বেশি দামে চাল বিক্রির দায়ে ফরিদপুর শহরের দুই ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দ করা হয় নিম্নমানের ৪০ বস্তা (২৫ কেজি করে) চাল।
শহরের চক বাজার এলাকায় বুধবার দুপুরে এই অভিযান চালায় জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, খাদ্যদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও কৃষি বিপণনের কর্মকর্তারা।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সোহেল শেখ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হঠাৎ করে জেলায় চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে বলে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অভিযান চালানো হয়।
এ সময় মেসার্স সোহেল খাদ্য ভাণ্ডারের একটি গুদাম বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি ৪০ বস্তা চাল জব্দ করা হয়। গুদামমালিক আয়নাল হককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সমপরিমাণ জরিমানা করা হয় বাজারের মেসার্স জয় গোবিন্দ সাহা খাদ্য ভাণ্ডারকেও।
হবিগঞ্জ
কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে মজুত করা ও অনুমোদনহীনভাবে ব্যবসা পরিচালনার দায়ে দুই প্রতিষ্ঠানকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে একটি প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ ও অন্যটিকে লাইসেন্স করতে এক দিন সময় দেয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
জেলায় প্রশাসন ও জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের দিনভর অভিযানে দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ামিন হোসেনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত শহরের আনন্দ বাজারের চালের দোকানগুলোতে সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই অভিযান চালায়।
এ সময় প্লাস্টিকের বস্তায় চাল রাখার দায়ে আবুল খায়ের এন্টারপ্রাইজকে ১০ হাজার টাকা এবং এক মাসের বেশি চাল মজুত করে রাখায় শামীম এন্টারপ্রাইজকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ামিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাটোর
সিংড়া উপজেলার শ্রী নিরেন্দ্রনাথ মানীর তিনটি গুদামে প্রায় ১ হাজার টন ধানের অবৈধ মজুত পেয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গুদামমালিককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
উপজেলার কলম বাজারে দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সিংড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল ইমরান এই জরিমানা করেন।
শেরপুর
জেলা খাদ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন বুধবার বিকেলে শহরের নয়ানীবাজার এলাকায় চালের পাইকারি গুদামে অভিযান চালায়। খাদ্য বিভাগের লাইসেন্স না থাকায় এ সময় বৃষ্টি চাল ভান্ডারকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সানাউল মোর্শেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
ঠাকুরগাঁও
জেলা শহরে অভিযান চালিয়ে অতিরিক্ত দামে চাল বিক্রি ও নিয়ম না মানার দায়ে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।
কালিবাড়ি বাজারের বুধবার দুপুরে অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন এবং জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্মকর্তা শেখ সাদী জানান, চালের মূল্য তালিকা দেখাতে না পারা, রশিদ সংরক্ষণ না করা ও অধিক মূল্যে চাল বিক্রির দায়ে কালিবাড়ি বাজারের তানভীর চাউল ঘর ও সাইফুল ট্রেডার্সকে ৫ হাজার করে জরিমানা করা হয়েছে। সদরের শীবগঞ্জে কাশেম হাসকিং মিলকে গুনতে হয়েছে ২০ হাজার টাকা জরিমানা।
দিনাজপুর
অভিযানে চালের সবচেয়ে অবৈধ মজুত পাওয়া যায় দিনাজপুরে। সদরের স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের গুদাম থেকে ৫ হাজার ১২৪ টন আতপ চাল জব্দ করে প্রশাসন। এ ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে মিলের ইনচার্জকে।
উপজেলার ১ নম্বর চেহেলগাজী ইউনিয়নের গোপালগঞ্জ বাজারে কোম্পানিটির ছয়টি গুদামে মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাত আড়াইটা পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়। তবে বুধবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মর্তুজা আল মঈদ।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় আমরা স্কায়ারের মিলে অভিযান পরিচালনা করি। এ সময় মিলের ছয়টি গুদামে ৫ হাজার ১২৪ টন আতপ চাল পাওয়া যায়। তবে মিলের অনুমোদন রয়েছে মাত্র ৩১২ টন। সে হিসাবে মিলে বেশি মজুত ছিল চার হাজার টনের বেশি চাল।’
আরও পড়ুন:শেরপুরের সমতল অঞ্চলে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে কফির চাষ। এতে মিলছে ভালো ফল।
কৃষি বিভাগ জানায়, চাষের পরিধি বাড়লে আগ্রহী কৃষকদের বিপণনসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।
প্রথমবারের মতো কফি চাষ করা কৃষি উদ্যোক্তা কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসাইন তুলিপ জানান, ২০২১ সালে বান্দরবানে চাকরির সুবাদে কফি চাষের অভিজ্ঞতা নেন তিনি। এরপর শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় ২৫০টি কফির চারা নিয়ে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেন। সফলতা দেখে ২০২২ সালে রোপণ করেন ১ হাজার কফি চারা। এখন তার তিন বিঘা জমিতে রয়েছে ৮০০টি কফি গাছ।
কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসাইন তুলিপ আরও বলেন, ‘আমার খামারে ৬০০থেকে ৭০০ গাছ রয়েছে, যেগুলো থেকে ফল সংগ্রহ করে আমি বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছি। পাশাপাশি আমার এ খামারে এখনও ২০ হাজারের মতো চারা আছে।
‘এ ছাড়া শেরপুরের পাঁচ উপজেলা ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি জেলার কৃষকদের মাঝে ৫০ হাজার কফি চারা বিনা মূল্যে বিতরণ করেছি।’
কফি চারা রোপণের ২ বছর পর ফল দিতে শুরু করে এবং এটি টিকে থাকে ৩০ বছর পর্যন্ত।
ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে ফল সংগ্রহের পর পালপিং, রোদে শুকিয়ে পার্চমেন্ট করে বাদামের মতো অংশ বের করে এবং রোস্টিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হয় রোস্টেড কফি বিন।
একটি পরিপক্ব গাছ থেকে বছরে পাঁচ থেকে ছয় কেজি ফল পাওয়া যায়, যা থেকে ১ কেজি রোস্টেড বিন তৈরি হয়। এর বাজার মূল্য প্রায় দুই হাজার টাকা।
বাড়ির পতিত জমি বা ছায়াযুক্ত স্থানে কফি গাছ রোপণ করা যায়। বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার কফি আমদানি করা হয়।
দেশে বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ সফল হলে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে এ ফসল।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর শেরপুরের উপপরিচালক সাখাওয়াত হোসাইন বাসসকে বলেন, কফি চাষের উপযোগী মাটি ও আবহাওয়া এখানে রয়েছে। সে অনুযায়ী কৃষকদের কফি চাষের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শেরপুরের শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকার সমতল ভূমিতেও কফি চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
কফি চাষে আগ্রহী কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন জেলা কৃষি বিভাগের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:নড়াইল সদর উপজেলায় প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন।
উপজেলার গোপালপুর গ্রামের দীপক বিশ্বাস এ সার উৎপাদন করে এখন স্বাবলম্বী।
যেভাবে তৈরি
প্রথমে সংরক্ষণের জন্য টিনের চালায় রাখা হয় গোবর। তারপর সেই গোবর হালকা শুকিয়ে রিং বা হাউসে কয়েক দিন রাখার পরই তাতে কেঁচো দিয়ে ৩৫ থেকে ৪০ দিন রাখার পর উৎপাদিত হয় ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার।
দীপক বিশ্বাস ব্যক্তিগত চাষাবাদের প্রয়োজনে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে শুরু করেন ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন। বাড়ির আঙিনায় পরিত্যক্ত জায়গায় ছোট পরিসরে শুরু করলেও বর্তমানে চাহিদা থাকায় উৎপাদন করছেন বাণিজ্যিকভাবে।
বাড়িতে প্যাকেটজাত করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন তিনি। রাসায়নিক সার বর্জন করে তার উৎপাদিত এ জৈব সার শীতকালীন সবজি চাষে ব্যবহার করছেন চাষিরা। ফলে বিষমুক্ত হচ্ছে সবজি।
দীপক বিশ্বাস বলেন, ‘কৃষি অফিসের পরামর্শে আমি কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করি। প্রথম পর্যায়ে কৃষি অফিস আমাকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে। গোবর দিয়ে এ সার উৎপাদনে আমার তেমন কোনো খরচ নেই।
‘এ সার দিয়ে আমি আমার নিজের বাগানের চাহিদা পূরণ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছি। গ্রামের অধিকাংশ লোক এখান থেকে সার নিয়ে শীতকালীন সবজি উৎপাদন করছেন।’
কৃষক পলাশ শেখ বলেন, ‘আমি ২৬ শতক জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করেছি। এখানে কোনো রাসায়নিক সার দেয়া হয়নি।
‘অল্প টাকায় দীপকের বাড়ি থেকে জৈব সার কিনে এনে ব্যবহার করছি। সবজির ফলনও ভালো হয়েছে।’
সিংগিয়া গ্রামের হাসিবুর ইসলাম বলেন, ‘ফুলকপি, বাঁধাকপি ও বস্তা পদ্ধতিতে আমি শিম চাষ করেছি। সব ধরনের ফসলে আমি এ কেঁচো সার দিয়েছি। আশা করছি ভালো ফলন হবে।’
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, ‘সবজি চাষে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব সারের প্রাধান্য দিলে উৎপাদিত সবজি হবে বিষমুক্ত। অপরদিকে মাটির গুণাবলী বাড়বে।
‘তার এই সার উৎপাদন দেখে স্থানীয় অনেকেই এগিয়ে আসবে এবং তার মতো স্বাবলম্বী হবে।’
আরও পড়ুন:বন্য খেজুর থেকে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ভিনেগার উৎপাদনের দাবি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান মজুমদার ও তার গবেষক দল।
বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার তৈরি বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের জন্য একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন এ অধ্যাপক।
গবেষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনে প্রক্রিয়াকরণের জন্য গাজন প্রক্রিয়াটি পরিবেশবান্ধব। স্থানীয় কৃষিসম্পদ কাজে লাগিয়ে এবং অপচয় কমিয়ে এ পদ্ধতি খাদ্য উৎপাদনের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতেও সহায়ক হতে পারে। গবেষণাটি বাংলাদেশের বৃহত্তর টেকসই উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।’
উৎপাদিত ভিনেগারটির দেশের বাজারে প্রভাব সম্পর্কে অধ্যাপক আনিছুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে এই গবেষণার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ভিনেগার উৎপাদন কেবল খাদ্য ও পানীয় হিসেবে ব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি প্যাকেজিং, কসমেটিক ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পেও ব্যবহৃত হতে পারে।
‘বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের কাছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পুষ্টিকর ভিনেগারের চাহিদা বাড়ছে, যা বাজারে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে।’
বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছরে খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য স্থানীয় কৃষি সম্পদের টেকসই ব্যবহারের ওপর বাড়তি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক আনিছুর বলেন, ‘বাংলাদেশে বন্য খেজুর ইদানীং ব্যাপকভাবে পাওয়া যাচ্ছে। এটি বেশ সস্তা ও স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য।
‘এই খেজুর গাছ সাধারণত গ্রামীণ এলাকায় এবং রাস্তার পাশের জমিতে পাওয়া যায়, তবে নানা পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ হওয়ার পরও এই বন্য খেজুর দেশের প্রেক্ষাপটে অনেকটাই অব্যবহৃত একটি সম্পদ।’
গবেষণা পদ্ধতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আনিছুর বলেন, ‘বন্য খেজুরের রস ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়া মাধ্যমে ভিনেগারে পরিণত করা হয়েছে। এ গবেষণায় এক ধরনের ইস্ট ব্যবহার করে ওই রসে অ্যালকোহল তৈরি করা হয় এবং পরে অ্যাসিটোব্যাক্টর প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া দিয়ে অ্যালকোহলকে অ্যাসিটিক অ্যাসিডে রূপান্তর করা হয়।’
গবেষক আরও বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে যে, রসের ঘনত্ব যত বেশি হয়, তত বেশি অ্যালকোহল ও অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি পায়। বেশি ঘনত্বের রসটি সবচেয়ে ভালো পুষ্টিগুণ, অ্যাসিডিটি ও ম্যাক্রো মিনারেলস (পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম) সমৃদ্ধ হয়। তাই এটি স্বাস্থ্য সচেতন ভোক্তাদের জন্য একটি আকর্ষণীয় পণ্যও বটে।’
গবেষণাটি বিশ্ববিখ্যাত প্রকাশনা এলসভিয়ারের নামী সাময়িকী অ্যাপ্লায়েড ফুড রিসার্চে সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে।
ভিনেগার তৈরির এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও মাঠ পর্যায়ে সফলতা সম্পর্কে এ অধ্যাপক বলেন, ‘এই গবেষণা স্থানীয় কৃষকদের জন্য একটি নতুন আয় সৃষ্টির পথ খুলতে পারে। একদিকে খেজুর থেকে তৈরি ভিনেগারের উচ্চমান এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের স্থানীয় কৃষিপণ্যের চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে।’
অধ্যাপক আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে বাকৃবি, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) আরও ছয় জন গবেষক এই প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। বাকৃবি থেকে গবেষক দলে রয়েছেন ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলিম, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. পলি কর্মকার এবং ওই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্নকারী শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা ও আ ন ম ইফতেখার আলম।
এ ছাড়া সিকৃবির খাদ্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ফাহাদ জুবায়ের এবং ডুয়েটের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক লোপা আনসারী গবেষক দলে যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নিজেদের মধ্যে পলিটিকাল ইস্যু থাকতে পারে, কিন্তু নদীর পানির হিস্যা নীতি ছিল। ভারতের কোনো যুক্তিই নেই আমাদের পানি না দেয়ার। এটা নিয়ে ভারতকে চাপ দিতে হবে।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘উজানে যৌথ নদীর পানি প্রত্যাহার: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয়’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি, বাংলাদেশ।
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভারতে যখন পানির চাপ থাকে তখন আমাদের এদিকে স্লুইস গেটগুলো খুলে দেয়। আবার ওখানে যখন পানির স্বল্পতা থাকে তখন গেটগুলো বন্ধ করে দেয়।
‘তারা ইচ্ছেমতো এটা করছে। আর সেজন্য আমরা পানি পাচ্ছি না। এতে করে আমাদের চাষাবাদে সমস্যা হচ্ছে। দিন দিন মরুভূমির মতো হয়ে হচ্ছে। গ্রাউন্ড ওয়াটার লেভেল নেমে যাচ্ছে। আমরা আর কত সহ্য করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে কাজগুলো করছি সেগুলো অনেক চ্যালেঞ্জিং। এগুলোতে জনগণের সাপোর্ট প্রয়োজন। শুধু ফারাক্কা নয়; অভিন্ন আরও যে ৫৪টি নদী আছে, সেগুলো থেকে যাতে ন্যায্য হিস্যা অনুযায়ী বাংলাদেশ পানি পায় সেজন্য আমরা কাজ করব।’
আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কের আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান, আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমাদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।
আরও পড়ুন:বিনা মূল্যে বাংলাদেশকে ৩০ হাজার টন পটাশ সার দেবে রাশিয়া।
দেশটির উরাচেম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী দিমিত্রি কনিয়েভ স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, উরাচেম গ্রুপ বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আওতায় বন্ধুত্ব ও গভীর আন্তরিকতার নিদর্শন হিসেবে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে বাংলাদেশকে এ সার দেবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ঢাকায় রুশ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত একেতেরিনা সেমেনোভা বুধবার এ সংক্রান্ত একটি চিঠি কৃষি উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করেন।
ওই চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাশিয়ার পিজেএসসি ইউরালকালি বিশ্বের মধ্যে অন্যতম পটাশ সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ২০১৩ সাল থেকে পিজেএসসি ইউরালকালি জিটুজি ভিত্তিতে জেএসসি বৈদেশিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে এক মিলিয়ন টনেরও বেশি এমওপি সার সরবরাহ করে।
আরও পড়ুন:নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কৃষিপণ্য কম খরচে ঢাকায় পরিবহনের লক্ষ্যে চালু করা বিশেষ ট্রেন স্থগিত করা হয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক সুজিত কুমার বিশ্বাস জানান, শুক্রবার রাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করে।
গত ২৬ অক্টোবর থেকে কৃষিপণ্য নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
ট্রেনটির প্রতি শনিবার কৃষিপণ্য পরিবহন করার কথা ছিল। ঢাকার তেজগাঁও স্টেশনে পৌঁছানোর আগে নাচোল ও আমনুরা জংশনসহ ১৩টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি করার কথা ছিল।
প্রথম দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর স্টেশন থেকে কোনো ধরনের কৃষিপণ্য ছাড়াই ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় বিশেষ ট্রেনটি।
বিশেষ ট্রেন চালুর পর চাষিদের কাছ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি জানিয়ে সুজিত বলেন, ‘তারা ট্রেনে করে কৃষিপণ্য পরিবহনে আগ্রহী নয়। কর্তৃপক্ষ এটি স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে।’
আরও পড়ুন:ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ডিম সহজলভ্যতার দিক থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ডিম প্রাপ্যতার কোনো বৈষম্য থাকবে না। সব শ্রেণি-বর্ণ নির্বিশেষে যাদের ডিম বেশি দরকার, তাদের জন্য তা সরবরাহ করতে হবে।
তিনি জানান, ডিমের মূল্য কমাতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (কেআইবি) শুক্রবার দুপুরে বিশ্ব ডিম দিবস-২০২৪ আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ডিমের উৎপাদন বাড়াতে গ্রামের নারীদের হাঁস-মুরগি পালনে উৎসাহিত করতে আহ্বান জানিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, ‘আগে গ্রামীণ নারীরা হাঁস-মুরগি পালন করতেন। গ্রামেই পাইকারদের কাছে বিক্রি করতেন। এতে তারা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারতেন। ‘সেই অবস্থা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। এ জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বছরের আশ্বিন-কার্তিক মাসে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় ডিমের চাহিদা বাড়ে। ডিম সাধারণ খামারি থেকে কয়েক দফা হাত বদল হয়ে ভোক্তার কাছে যায়। এ কারণেই ডিমের দাম বেড়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘এ জন্য উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সরাসরি কীভাবে ডিম পৌঁছানো যায়, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। এ ছাড়া রমজানে ডিমের ব্যবহার কমে যায়।
‘তাই মজুত নয়, চাহিদার আলোকে আমাদের কোল্ডস্টোরেজ করার চিন্তা করতে হবে। বন্যার কারণে দেশের অনেক খামার নষ্ট হয়েছে। এসব খামার উৎপাদনে যেতে কিছুটা সময় লাগছে। সব মিলিয়ে সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে।’
সিন্ডিকেটের কারণে ডিমের মূল্য বাড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছে সরকার। বাজারে নিয়মিত অভিযান চলছে। পাইকারিতে কিছুটা দাম কমেছে। দ্রুতই দাম নাগালে আসবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য