শেষ সময়ের চমকে টানা চতুর্থ দিন সূচক বেড়ে পুঁজিবাজার স্বস্তি দিল বিনিয়োগকারীদের। অথচ লেনদেন এক পর্যায়ে সূচকের পতনের আভাস দিয়ে চলছিল লেনদেন।
গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত চার দিনে সূচক বাড়ল ২০৫ পয়েন্ট।
এমনিতেই সংশোধনে থাকা পুঁজিবাজার ইউক্রেন যুদ্ধ, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক বিপর্যয়, ডলারের দাম বৃদ্ধি আর নানা গুজবে টালমাটাল পুঁজিবাজারে এই উত্থান বিনিয়োগকারীদেরকে মনে চিড় ধরা আস্থায় কিছুটা হলেও মলম দিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
একক খাত হিসেবে টানা দ্বিতীয় দিন সূচকে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট যোগ করেছে ব্যাংক খাত। আর শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বিমা খাতে।
গত সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া বাজার সংশোধন এবং পরে ইউক্রেনে রুশ হামলার দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিমার শেয়ারধারীরা। এই কয়েক মাসে এই খাতের বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে ৫০ শতাংশেরও বেশি।
এই খাতটি নিয়ে হতাশার মধ্যেই হঠাৎ করেই দল বেঁধে বাড়ে প্রায় সব শেয়ারের দর। বিমার মধ্যে আবার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সাধারণ বিমার দর। এই খাতের ৩৯টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৩৮টির। কমেছে কেবল একটির, যে কোম্পানিটির শেয়ারদর গত কয়েক মাসে কমেনি।
আরও একটি কোম্পানির শেয়ারদর সবচেয়ে দরপতন হওয়া কোম্পানির তালিকায় শীর্ষে দেখালেও প্রকৃতপক্ষে লভ্যাংশ সংক্রান্ত ঘোষণার পর দর সমন্বয় হয়েছে। এই হিসাব করে দেখা যায়, কোম্পানিটির দর আসলে বেড়েছে।
আগের দিন দল বেঁধে চাঙা হওয়া ব্যাংক খাতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির দর। যদিও দর বৃদ্ধি ও হ্রাসের মধ্যে টাকার অঙ্কে পার্থক্য খুবই কম।
এর মধ্যে একটি কোম্পানির দর লভ্যাংশ সংক্রান্ত ঘোষণার কারণে সমন্বয় হয়েছে। এটির দর ২০ পয়সা কমতে দেখা গেলেও প্রকৃতপক্ষ দর বেড়েছে।
সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর বেলা সোয়া ১২টা পর্যন্ত ২০ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে থাকলেও বেলা দুইটার সময় আগের দিনের চেয়ে সূচক কমে যায় ২০ পয়েন্ট। অর্থাৎ দিনের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে পৌনে দুই ঘণ্টায় সূচক হারায় ৪০ পয়েন্ট।
টানা দিন দিন বাড়ার পর অস্থির পুঁজিবাজারে বিক্রয়চাপ দেখা দেয়ায় আরও পতন হয় কি না, এ নিয়ে জিজ্ঞাসার মধ্যে হঠাৎ দেখা দেয় ইউটার্ন। পৌনে এক ঘণ্টায় যতটা পড়েছিল, শেষ আধা ঘণ্টায় প্রায় ততটাই উঠে যায় সূচক।
লেনদেন শেষের আগের মিনিটে আগের দিনের চেয়ে সূচক বেড়ে যায় ১৬ পয়েন্ট। তবে শেষ সময়ের সমন্বয়ে শেষ পর্যন্ত বাড়ে ৪ পয়েন্ট।
শেষ সময়ের ক্রয়চাপের পরও লেনদেনে দেখা গেছে ভাটা। গত মার্চে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা দুই শতাংশ নির্ধারণের পর লেনদেনে ভাটার যে চিত্র দেখা গিয়েছিল, সেটিও ফিরে এসেছে। দুই শতাংশ বা কাছাকাছি দর কমার পর বহু কোম্পানির শেয়ারে ক্রেতা উধাও হয়ে গেছে। এ কারণে ভাটা দেখা গেছে লেনদেনে।
সোমবার পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছিল ৮৩৬ কোটি ৪০ লাখ ১৭ টাকা। সেটি প্রায় ২০০ কোটি টাকা কমে হয়েছে ৬৩৭ কোটি ৫৫ লাখ ৮ হাজার টাকা।
বেলা শেষে বেড়েছে ১৩৭ কোম্পানির দর, কমেছে ১৯৬টির, আর অপরিবর্তিত থাকে ৪৩টির দর।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান এক্সপো ট্রেডার্সের সিইও শহিদুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজার তিন দিন উত্থানের পরে আজকে সেল প্রেসার ছিল। কারণ, গত তিন দিনে কিনে যারা প্রফিট করতে পেরেছেন, তারা প্রফিট-টেকিং করেছেন। যার জন্য বাজার কিছুটা নিম্নমুখী ছিল।’
স্টক ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশন-ডিবিএর সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজার আসলে অনেক পড়ে গিয়েছিল। সরকারের দিক থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সে কারণে কয়েকদিন ধরে বাজার একটু ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে আতঙ্ক একটু হলেও আছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। যে কাজটি সবচেয়ে বেশি জরুরি, সেটি হলো আস্থা ফেরানো। বাজারে নানা গুজব এখনও আছে। সেদিকেও নজর রাখতে হবে।’
বিমায় দারুণ দিন
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে ৮টিই ছিল এই একটি খাতের। অন্য খাতগুলোর মধ্যে ছিল খাদ্য খাতের রহিমা ফুড, যে কোম্পানিটি আজ থেকে কাজু বাদাম বাজারজাত করা শুরু করেছে এবং বস্ত্র খাতের সোনারগাঁও টেক্সটাইল।
রহিমা ফুড কোম্পানিটি বেশ কয়েক বছর ধরে ছিল বন্ধ। সিটি গ্রুপের মালিকানায় যাওয়ার পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নারকেল তেল উৎপাদন শুরু করার কথা জানায় কোম্পানিটি। সেই সঙ্গে সয়াবিন ও সরিষার তেল বাজারজাত করা হবে বলে জানানো হয়।
এই ব্যবসায় নামার গুঞ্জনেই কোম্পানিটির শেয়ারদর গত কয়েক বছর ধরে বাড়ছিল। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার পর শেয়ারদর ৩৮৭ টাকা থেকে নামতে নামতে ২২০ টাকায় চলে আসে। তবে রোববার থেকে আবার টানা বাড়ছে এবং এবার কাজু বাদাম ব্যবসায় নামার খবরে আরেক দফা বাড়ল।
অন্যদিকে সোনারগাঁও টেক্সটাইল গত দুই বছর ধরে লোকসান দেয়ার পর এবার মুনাফায় ফিরেছে। গত বছর কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ১৩ টাকার বেশি লোকসান দিয়েছিল। চলতি বছর তৃতীয় প্রান্তিক শেষে মুনাফা হয়েছে শেয়ার প্রতি ২৪ পয়সা।
সবচেয়ে বেশি অবশ্য বেড়েছে সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের দর। যেটি তার সর্বোচ্চ অবস্থান ১২১ টাকা থেকে ৪৬ টাকা ৩০ পয়সায় নেমে এসেছিল। সেখান থেকে ৯.৯৩ শতাংশ বেড়ে বর্তমান দাম ৫০ টাকা ৯০ পয়সা।
এছাড়া ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের দর ৮.৩৭ শতাংশ, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের দর ৮.০২ শতাংশ, জনতা ইন্স্যুরেন্সের দর ৭.৮২ শতাংশ, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের দর ৭.৪৪ শতাংশ, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের দর ৬.৯৭ শতাংশ, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের দর ৬.৬৬ শতাংশ, এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৬.৫৭ শতাশং।
আরও দুটি কোম্পানির দর ৬ শতাংশের বেশি, ৯টির দর ৫ শতাংশের বেশি, ১২টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ১২টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ২৭টির দর বেড়েছে ২ শতাংশের বেশি।
এসব কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগই ছিল বিমা খাতের।
সূচক বাড়াল যারা
কেবল ১০টি কোম্পানিই সূচকে যোগ করেছে ২০.৯১ পয়েন্ট। এই ১০টি কোম্পানির মধ্যে ব্যাংক খাতেরই আছে পাঁচটি, যেগুলো যোগ করেছে ৯.০৭ পয়েন্ট। আগের দিনও ব্যাংকের শেয়ারে ভর করে বেড়েছিল সূচক।
এসব কোম্পানির মধ্যে সবেচেয়ে বেশি ৩.৭৩ পয়েন্ট যোগ করেছে বেক্সিমকো ফার্মা। কোম্পানিটির দর ১.৬৬ শতাংশ বেড়েছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩.২৩ পয়েন্ট যোগ করেছে ইউনাইটেড পাওয়ার। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ০.৭৩ শতাংশ।
ব্যাংকের মধ্যে এনবিএলের দর ২.৭৪ শতাংশ এবং ইসলামী ব্যাংকের দর ১.২৫ শতাংশ বাড়ার কারণেও ২ পয়েন্ট করে, আল আরাফাহ ব্যাংকের দর ২.৩১ শতাংশ বাড়ার কারণে ১.৯৮ পয়েন্ট, সাউথবাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের দর ৫.৯৮ শতাংশ বাড়ার কারণে ১.৭৭ পয়েন্ট এবং সিটি ব্যাংকের দর ১.৭১ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ১.৩২ পয়েন্ট।
এছাড়া বেক্সিমকো সুকুকের দর ২.৩৩ শতাংশ বাড়ার কারণে ১.৮৬ পয়েন্ট, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর দর ০.১৮ শতাংশ বাড়ার কারণে ১.৬৭ পয়েন্ট এবং পদ্মা অয়েলের দর ২.১৭ শতাংশ বাড়ার কারণে ১.৩৭ পয়েন্ট যোগ হয়েছে সূচকে।
অন্যদিকে সূচক সবচেয়ে বেশি ৬.১ পয়েন্ট টেনে নামিয়েছে ওয়ালটন। কোম্পানিটির শেয়ারদর ০.৬০ শতাংশ কমার কারণে এই পরিমাণ সূচক কমেছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪.৮৭ পয়েন্ট সূচক কমেছে রবির শেয়ারের ১.০১ শতাংশ দরপতনে। বেক্সিমকো লিমিটেডের ০.৮৮ শতাংশ দাম কমায় সূচক কমেছে ৩.২৬ পয়েন্ট।
এছাড়া বার্জার পেইন্টসের দরপতনে ২.৮ পয়েন্ট, আইসিবির দরপতনে ২.৭৫ পয়েন্ট, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের দরপতনে ২.৫২ পয়েন্ট, গ্রামীণ ফোনের দরপতনে ১.৬৭ পয়েন্ট, ব্র্যাক ব্যাংকের দরপনে ১.৩৯ পয়েন্ট, রেনাটার দরপতনে ১.২৩ পয়েন্ট ও আইপিডিসির ১.৮৭ শতাংশ দরপতনে সূচক কমেছে ১.১৫ পয়েন্ট।
সব মিলিয়ে ১০টি কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ২৭.৭৪ পয়েন্ট।
লেনদেনে ফের ২ শতাংশের বাধা
গত মার্চেও এই চিত্র দেখা দিয়েছিল। এই বাধা উঠিয়ে নেয়ার পর ২১ এপ্রিল থেকে লেনদেন বাড়তে থাকলেও ক্রমাগত দরপতনের কারণে আবার এক দিনে কোনো শেয়ারের দাম কমার সর্বোচ্চ হার ২ শতাংশ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে এই নীতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে সূচক বাড়ছে। তবে লেনদেনে দেখা দিয়েছে ভাটা।
এই সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত দাম কমার পর ৪০টিরও বেশি কোম্পানির শেয়ারে ক্রেতা শূন্য হয়ে যায়। দাম আরও পড়ে যায় কি না, এই বিষয়টি পর্যবেক্ষণের কারণেই এমনটি হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য