প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাড়ছে। যার উপর ভর করে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ উপরের দিকে উঠছে।
চলতি মে মাসের ২৬ দিনেই ১৬৫ কোটি ৫০ লাখ (১.৬৫ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৯ টাকা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১৪ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।
মাসের বাকি ৫ দিনে এই হারে রেমিট্যান্স এলে গত এপ্রিল মাসের মতো মে মাসেও অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ২ বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলারে গিয়ে পৌঁছবে। আর এর মধ্য দিয়ে রেমিট্যান্সপ্রবাহ গত অর্থবছরের মতো উল্লম্ফনের ধারায় ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিত সুস্পষ্ট হবে মনে করছেন ব্যাংকাররা। অর্থমন্ত্রণালয়ও তেমনটিই পূর্বাভাস দিয়েছে।
নতুন অর্থবছরে বাড়বে ১৬ শতাংশ
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরজুড়ে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধিতে থাকা প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে নতুন অর্থবছরে ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে।
আগামী ৩০ জুন চলতি ২০২১-২২ অর্থবছর শেষ হবে। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে ২০২২-২৩ নতুন অর্থবছর।
ওই অর্থবছরে রেমিট্যান্স বাড়ার কারণ হিসেবে মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘করোনা-পরবর্তী সময়ে দেশ থেকে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ শ্রমিক নতুন করে বিদেশে যাওয়ায় তাদের কাছ থেকে বাড়তি এই পরিমাণ রেমিট্যান্স পাওয়া যাবে।’
করোনা মহামারির মধ্যেও সবাইকে অবাক করে দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০) চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই এক বছর বা অর্থবছরে এতো বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসেনি। কিন্তু চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই অর্থনীতির এই সূচকে ভাটার টান লক্ষ্য করা যায়। প্রতি মাসেই কমতে থাকে; তবে গত তিন মাস ধরে সুবাতাস বইছে।
মার্চ মাসে ১৮৬ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এপ্রিল মাসে পাঠান ২০১ কোটি ডলার। একক মাসের হিসাবে যা ছিল ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তথ্য বলছে, চলতি মে মাসেও সেই ধারা অব্যাহত আছে। মাস শেষে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসবে।
গত ৩ মে দেশে রোজার ঈদ উদযাপিত হয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। প্রতি বছরই দুই ঈদকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সারতে পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি অর্থ পাঠান প্রবাসীরা। ৯ অথবা ১০ জুলাই দেশে কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে। সেই উৎসবকে কেন্দ্র করেও দেশে বেশি রেমিট্যান্স আসবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা।
অতীতে দেখা গেছে, দুই ঈদের পরের এক-দুই মাস রেমিট্যান্স কিছুটা কম আসে। কিন্তু এবার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে।
টানা পাঁচ মাস কমার পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বেড়েছিল অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে ফের হোঁচট খায়। ওই মাসে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। মার্চ মাসে এসেছিল ১৮৬ কোটি ডলার।
সবশেষ এপ্রিল মাসে এসেছে ২০০ কোটি ৯৫ লাখ ডলার; যা গত বছরের এপ্রিল মাসের প্রায় সমান। ২০২১ সালের এপ্রিলে এসেছিল ২০৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার।
ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে এসেছিল যথাক্রমে ১৬৩ কোটি ৬ লাখ ও ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিন হওয়ায় ওই মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছিল বলে জানায় ব্যাংকগুলো।
তবে মার্চ মাসে এই সূচকে ফের গতি ফেরে; ওই মাসে ফেব্রুয়ারি মাসের চেয়ে ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসে।
ডলারের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রণোদনা বেড়েছে। ডলারের দামও বেশি। ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে এপ্রিল মাসে পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি বেশি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। সামনে কোরবানির ঈদ আছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনীতি চাঙা হওয়ায় ওই দেশগুলো থেকে বেশি রেমিট্যান্স আসবে। সবকিছু মিলিয়ে আগামী দিনগুলোয় রেমিট্যান্সের এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরেক দফা কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার এক ধাক্কাতেই ১ টাকা ১০ পয়সা কমিয়ে আন্তব্যাংক লেনদেনে ৮৯ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। গত কয়েক দিন আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৭ টাকা ৯০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে। সোমবার থেকে নতুন দরে কেনাবেচা হবে ডলার।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর রেমিট্যান্স প্রবাহেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ওই বছরের এপ্রিলে মাত্র ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। এর পর থেকে অবশ্য মহামারির মধ্যেও ২০২০-২১ অর্থবছরের পুরোটা সময়ে (২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন) রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন দেখা যায়।
ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা।
কিন্তু চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটার টান দেখা যায়। প্রথম মাস জুলাইয়ে আসে ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার। আগস্টে আসে ১৮১ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে আসে ১৭২ কোটি ৬২ লাখ ডলার। অক্টোবরে আসে ১৬৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। নভেম্বরে আসে আরও কম, ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার।
দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন দেশে থাকা সোয়া কোটি বাংলাদেশির পাঠানো অর্থ। দেশের জিডিপিতে সব মিলিয়ে রেমিট্যান্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে নতুন বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে প্রণোদনা আড়াই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ৯ জুন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট জাতীয় সংসদে প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ মুস্তফা কামাল। সেই প্রস্তাবে প্রণোদনা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘নতুন বাজেটে রেমিট্যান্স বাড়ানোর দিকে জোর দেয়া হবে। তার অংশ হিসাবে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে প্রণোদনা বাড়ানোর ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। আমরা এবার এই প্রণোদনা আড়াই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে তিন শতাংশ করব।’
২০১৯-২০ অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে রেমিট্যান্সে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। ২০২১ সাল পর্যন্ত ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়া হয়। ওই সময় পর্যন্ত প্রবাসীরা ১০০ টাকা দেশে পাঠালে ২ টাকা প্রণোদনা পেতেন।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রণোদনা বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়। প্রবাসীরা এখন ১০০ টাকা দেশে পাঠালে আড়াই টাকা প্রণোদনা পাচ্ছেন।
নতুন বাজেটে প্রণোদনা বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করা হলে আগামী ১ জুলাই থেকে ১০০ টাকা দেশে পাঠালে ৩ টাকা প্রণোদনা পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, মে মাসের ২৯ দিনে যে রেমিট্যান্স এসেছে, তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৪ কোটি ২৩ লাখ ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২ কোটি ২৮ লাখ ডলার। ৪২টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৩৮ কোটি ১৯ লাখ ডলার। আর পাঁচটি বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার।
তবে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের দশ মাসের (জুলাই-এপ্রিল) হিসাবে এখনও নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে রেমিট্যান্স। এই দশ মাসে ১ হাজার ৭৩০ কোটি ৭৭ লাখ (১৭.৩০ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে পাঠিয়েছিলেন ২ হাজার ৬৬ কোটি ৫৮ লাখ ডলার (২০.৬৬ বিলিয়ন) ডলার।
এ হিসাবে জুলাই-এপ্রিল সময়ে রেমিট্যান্স কমেছে ১৬ দশমিক ২৪ শতাংশ।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আরও বাড়বে
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক মঞ্জুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনা মহামারির মধ্যে হুন্ডি বন্ধ থাকায় প্রবাসীরা সব টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠিয়েছিলেন। সে কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল।’
‘জানুয়ারি থেকে প্রণোদনা বাড়ানোয় রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা বেড়েছে। বরাবরের মতো রোজার ঈদের আগের মাস এপ্রিলে বেড়েছে। ঈদের পরে রেমিট্যান্স বাড়া একটি ভালো লক্ষণ। জুলাইয়ে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আরও বাড়বে। প্রণোদনা ৩ শতাংশ করলে তারও একটা প্রভাব পড়বে। সবমিলিয়ে আগামী দিনগুলোতে রেমিট্যান্স ভালোই আসবে বলে মনে হচ্ছে।
সরকারের প্রণোদনার পাশাপাশি প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করতে ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত প্রণোদনা দেয়ার জন্য নতুন বাজেটে আহ্বান জানানো হবে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এ এ মান্নান।
এর ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নভেম্বরে কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবলকে কেন্দ্র করে কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনীতি চাঙা হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণেও ফুরফুরে মেজাজে আছে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনীতি। আমাদের বিপুলসংখ্যক প্রবাসী এসব দেশে কাজ করেন। গত এক বছরে কয়েক লাখ লোক নতুন করে সেখানে গেছেন। সব মিলিয়ে আগামী দিনগুলোতে আমাদের রেমিট্যান্স আরও বাড়বে বলে আমি মনে করি।’
রিজার্ভ বাড়ছে
রোববার দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৪০০ কোটি (৪২.৪০ বিলিয়ন) ডলারের কিছু বেশি।
আমদানি ব্যয় বাড়ায় গত ৯ মে আকুর (এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন) রেকর্ড ২২৪ কোটি (২ দশমিক ২৪ বিলিয়ন) ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪১ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। এরপর সপ্তাহ খানেক রিজার্ভ ৪২ বিলিয়নন ডলারের নিচে অবস্থান করে।
রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ায় গত সপ্তাহে রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। গত কয় দিন তা আরও বেড়ে রোববার দিন শেষে ৪২ দশমিক ৪০বিলিয়ন ডলারে উঠেছে।
জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ- প্রতি মাসে ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে দেশে। এ হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
গত বছরের ২৪ আগস্ট এই রিজার্ভ অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। তখন ওই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় ১০ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যেত। তখন অবশ্য প্রতি মাসে ৪ থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হতো।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দু'মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৬৪ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছেন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি।
তবে রপ্তানি বাণিজ্যে বেশ উল্লম্ফন ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। এই ১০ মাসে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৪৩ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে দেশ, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোগে ১৫ আগস্ট সোমবার জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ব্যাংকের পরিচালক জয়নাল আবেদীন এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ সময় ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী, ওমর ফারুক খান ও জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক নাইয়ার আজম, সিদ্দিকুর রহমান, মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার, আবুল ফয়েজ মুহাম্মাদ কামালউদ্দিন ও মুহাম্মদ শাব্বির, চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, ক্যামেলকো তাহের আহমেদ চৌধুরী ও আইবিটিআরএর প্রিন্সিপাল এস এম রবিউল হাসানসহ ব্যাংকের নির্বাহী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন বলে ব্যাংকটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ব্র্যাক ব্যাংক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে।
সোমবার এ উপলক্ষে ব্যাংকটির উদ্যোগে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে এক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে সারা দেশের কর্মকর্তারা মহান এই রাষ্ট্রনায়কের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর এফ হোসেন তার বক্তব্যে জনগণের মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধুর আজীবন আন্দোলনের কথা এবং দেশ ও দেশবাসীর প্রতি ভালোবাসা কথা তুলে ধরেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার আহ্বান এবং যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার ভিশনের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘একজন স্বপ্নদর্শী নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন ও দীক্ষা কাল ও প্রজন্মকে ছাড়িয়ে যাবে।’
এছাড়া মঙ্গলবার ব্র্যাক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় জাতীয় শোক দিবস উপল একটি শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
জাতীয় শোক দিবস পালনের অংশ হিসাবে ব্র্যাক ব্যাংক আগস্ট মাস জুড়ে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। যার মধ্যে আছে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম, দু:স্থদের মাঝে খাবার বিতরণ, প্রধান কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা এবং শাখাগুলোতে শোক ব্যানার লাগানো।
মঙ্গলবার প্রতিটি শাখায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
বিদেশি মুদ্রায় স্বল্প মেয়াদে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আগের চেয়ে কম সুদে ঋণ নিতে পারবেন রপ্তানি খাতের উদ্যোক্তারা।
মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ।
সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারের প্রবণতা বিবেচনা করে বার্ষিক সব খরচের সীমা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদেশি মুদ্রায় বিনিয়োগে সুদ হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমানোর কথা জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, লাইবর রেটের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ হারে বার্ষিক সুদে ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়া যাবে। আগে এই সুদ হার ছিল সাড়ে ৩ শতাংশ।
লাইবর রেট হচ্ছে- ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাংক অন্য কোনো ব্যাংককে যে সুদে ঋণ দেয় তার ৩ মাসের হার। বর্তমানে তা এসওএফআর নামে পরিচিত।
নির্দেশনায় বলা হয়, বিদেশি মুদ্রায় বিনিয়োগে সংশ্লিষ্ট দেশের মুদ্রার সুদ হারের সঙ্গে বার্ষিক সুদ সবোর্চ্চ ৩ শতাংশ যোগ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।
এছাড়া ডলারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে লাইবর রেট যতদিন কার্যকর রয়েছে ততদিন তা অনুসরণ করা যাবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের মুদ্রার সুদ হারকে ‘বেঞ্চমার্ক রেট’ হিসেবে ধরা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্বল্প মেয়াদে ট্রেড ফাইন্যান্সের বেলায় ডলারের ক্ষেত্রে লাইবর রেট (ইংল্যান্ডের আন্তঃব্যাংকের ৩ মাসের গড় সুদ হার) অনুসরণ করা যাবে।
এখন বেঞ্চমার্ক রেফারেন্স রেট ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রায় স্বল্পমেয়াদি আমদানি-রপ্তানির সময় অর্থায়নে এই রেটের সঙ্গে ৩ শতাংশ সুদ পাবে।
আরও পড়ুন:পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলা ডলারের তেজ আরও কমেছে। খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে মঙ্গলাবার প্রতি ডলারের জন্য ১১৩ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১১৩ টাকা ৩০ পয়সা নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা; কিনেছেন ১১২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১১২ টাকা ৬০ পয়সায়।
সোমবার ছিল জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটির দিন। তার আগের দিন রোববার প্রতি ডলারের জন্য ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা নিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা; কিনেছিলেন ১১৪ টাকায়।
বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়ায় দর কমছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যাংকগুলো আগের দামেই নগদ ডলার বিক্রি করছে।
খোলাবাজারে গত সপ্তাহে ডলারের দর এক লাফে ১২০ টাকায় উঠেছিল। বৃহস্পতিবার তা এক টাকা কমে বিক্রি হয় ১১৯ টাকায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী রোববার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজারে ডলারের সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। ক্রেতার সংখ্যাও কম। তাই দাম নিম্নমূখী।’
তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহে দর ১২০ টাকায় ওঠার পর সরকারের বিভিন্ন সংস্থার তৎপরতা বেড়ে যায়। সে কারণে ভয়ে কেউ ডলার কিনতে আসছেন না। কিছু লেনদেন হচ্ছে খুবই গোপনে।’
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক রোববার ১০৪ টাকা দরে নগদ ডলার বিক্রি করেছে। জনতা ব্যাংক থেকে কিনতে লেগেছে ১০৪ টাকা ২৫ পয়সা। বেসরকারি সিটি ব্যাংক প্রতি ডলারের জন্য নিয়েছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। ইস্টার্ন ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০৭ টাকায়। এসআইবিএল নিয়েছে ১০৫ টাকা।
গত সপ্তাহের মতো ৯৫ টাকায় মঙ্গলবার ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটাকে আন্তব্যাংক বা ইন্টারব্যাংক রেট বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে এই রেট গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে কার্যত অচল।
ব্যাংকগুলো এখনও এই দরের চেয়ে ৯ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি করছে। আবার প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স সংগ্রহ করছে ১০৪-১০৫ টাকা দিয়ে। আমদানি ঋণপত্র খুলতে নিচ্ছে ১০৪-১০৫ টাকা।
বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বিপরীতে আমেরিকান মুদ্রা ডলারের দৌড় থামাতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের দেড় মাসে (১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট) প্রায় ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এরপরেও বাজারে ডলারের সংকট কাটছে না।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম আশার কথা শুনিয়ে বলেছেন, শিগগিরই ডলারের সংকট কেটে যাবে। বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে। ইতোমধ্যে কার্ব মার্কেটে বেশ খানিকটা কমেছে।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কারণেই বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। সেই চাহিদা পূরণের জন্যই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাজারে ডলার ছাড়া হচ্ছে। আসলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম প্রধান কাজ এটি। যখন বাজারে ডলারের ঘাটতি দেখা দেবে তখন ডলার বিক্রি করা হবে। আবার যখন সরবরাহ বেশি হবে তখন কেনা হবে।
‘ডলার বিক্রির ক্ষেত্রে রিজার্ভ পরিস্থিতিও সব সময় বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে। ঢালাও বিক্রি করলে রিজার্ভ কমে আসবে। সেক্ষেত্রে অন্য সমস্যা হবে। সে কারণেই ভেবেচিন্তে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি বিক্রি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দুই বছরের বেশি সময় ধরে করোনা মহামারির ধাক্কা কাটতে না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাণ্ডবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সব দেশের মতো আমাদেরও আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। সে কারণে রিজার্ভের ওপরও চাপ পড়েছে।
‘তবে সুখের খবর হচ্ছে, আমদানি কমতে শুরু করেছে। রপ্তানির পাশাপাশি রেমিট্যান্সও বাড়ছে। শিগগিরই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’
খোলাবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকির কারণে অনেক ব্যবসায়ী ডলার কেনাবেচা করতে ভয় পাচ্ছেন।
খোলাবাজারে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে এর আগেও রাজধানীর বিভিন্ন মানি চেঞ্জারে অভিযান চালায় বাংলাদেশ ব্যাংক। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে এ পরিদর্শন কার্যক্রম চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পাশাপাশি অবৈধভাবে ডলার মজুতকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
ডলার কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণ করা হয়েছে। এরপরও বাজার স্বাভাবিক হচ্ছে না।
আরও পড়ুন:করোনাভাইরাসের কারণে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে নানামুখী সুবিধা দিয়েছে সরকার। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণ পরিশোধেও বিভিন্ন ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরেও বেড়েছে খেলাপি ঋণ।
খেলাপি ঋণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ এসব ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে নয়টি ব্যাংক।
নয় ব্যাংকের তালিকায় চারটি সরকারি ও বেসরকারি পাঁচটি ব্যাংক রয়েছে।
চলতি জুন শেষে এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ১৮ হাজার ৯৩১ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ঘাটতির তালিকায় রয়েছে সরকারি অগ্রণী, বেসিক, জনতা, রূপালী। বেসরকারি বাংলাদেশ কমার্স, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট, ন্যাশনাল, সাউথইস্ট ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের নাম।
তবে কিছু কিছু ব্যাংক প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত প্রভিশন সংরক্ষণ করায় পুরো ব্যাংকিং খাতের ঘাটতি ১৩ হাজার ১২০ কোটি টাকা।
সরকারি চার ব্যাংক
রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ১১ হাজার ১৭ কোটি টাকা।
সবচেয়ে বেশি ঘাটতি বেসিক ব্যাংকে ৪ হাজার ৪৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
এর পরেই অগ্রণী ব্যাংকের ঘাটতি ২ হাজার ৯৭৩ কোটি ২২ লাখ টাকা।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে রূপালীর ঘাটতি ২ হাজার ৯৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা৷ জনতা ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৬৪০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
তবে রাষ্ট্রমালিকানাধীন দুই ব্যাংক অতিরিক্ত প্রভিশন রাখতে পেরেছে। এর মধ্যে সর্ববৃহৎ সোনালী ব্যাংকের প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি অতিরিক্ত রয়েছে ৩৮০ কোটি ২৭ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত ১৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
বেসরকারি ব্যাংক
বেসরকারি পাঁচ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৭ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা।
এর মধ্যে শুধু ন্যাশনাল ব্যাংকেরই ঘাটতি ৭ হাজার ১১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
এ ছাড়া মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১৩৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা এবং সাউথইস্ট ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে ১০২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
মোট ঋণ
চলতি জুন শেষে ব্যাংক খাতের মোট ঋণ ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
তিন মাস আগে মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে ৩ মাসে খেলাপি বেড়েছে ১১ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা।
নিয়ম অনুযায়ী, সব ধরনের ব্যাংক যেসব ঋণ দেয় তার গুণমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রভিশন হিসেবে জমা রাখতে হয়। কোনো ঋণ শেষ পর্যন্ত মন্দ ঋণে পরিণত হলে তাতে যেন ব্যাংক আর্থিকভাবে ঝুঁকিতে না পড়ে, সেজন্য এ প্রভিশন সংরক্ষণের নিয়ম রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রায়ত্ত তিন বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকে নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
এরমধ্যে সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যাংক সোনালী ব্যাংকে এমডি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (বিএইচবিএফসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম।
সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মুরশেদুল কবীরকে অগ্রণী ব্যাংকের এমডি ও সিইও করা হয়েছে। আর রূপালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে তিন বছরের জন্য ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।
তিন জনকেই ব্যাংক তিনটির শীর্ষ পদে তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ রোববার তিনটি আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করে এই নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
সোনালী ব্যাংকের এমডি আতাউর রহমান প্রধানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আফজাল করিম, শামস-উল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন মুরশেদুল কবির এবং ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। তারা গত ছয় বছর ধরে ব্যাংক তিনটির শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এই তিন জনের মেয়াদই চলতি মাসের শেষের দিকে শেষ হবে। রূপালী ব্যাংকের বর্তমান এমডি ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের মেয়াদ শেষ হবে ২৫ আগস্ট। অন্য দুজনের মেয়াদও এক দিন আগে পরে শেষ হবে। এই তিন জনের বয়সই ৬৫ বছর হতে আর অল্প কিছুদিন বাকি আছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘আগামী তিন বছরের জন্য চুক্তিতে তাদের নিয়োগ দেয়া হলো। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী তাদের নিয়োগের বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’
ব্যাংক তিনটির বর্তমান এমডি এর আগে কয়েক দফা পুনর্নিয়োগ পেয়েছেন। এর মধ্যে আতাউর রহমান প্রধান এক মেয়াদে রূপালী ব্যাংকের এমডির দায়িত্ব পালন করে সোনালী ব্যাংকের এমডি হন। উবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ সোনালী ব্যাংকে এমডি পদের মেয়াদ শেষ করে রূপালী ব্যাংকের এমডি হন। আর মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম অগ্রণী ব্যাংকেই পুনর্নিয়োগ পান একাধিকবার।
আরও পড়ুন:
দেশের অর্থনীতি নিয়ে নানা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বেড়েই চলেছে। জুলাই মাসের পর আগস্টেও বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের সূচক ঊর্ধ্বমুখী।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, আগস্ট মাসের ১১ দিনেই ৯২ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৯৫ টাকা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা।
এ হিসাবে প্রতিদিন এসেছে ৮ কোটি ৩৫ লাখ ডলার বা প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।
বাজারে ডলারের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ব্যাংকগুলো ১১০ টাকা দরেও রেমিট্যান্স সংগ্রহ করছে। সে হিসাব বিবেচনায় নিলে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ আরও বেশি।
মাসের বাকি ২০ দিনেও এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকার আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও সিরাজুল ইসলাম। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জুলাই মাসের মতো আগস্টেও ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসবে।’
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২০৯ কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার (২.১ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল গত ১৪ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আর গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে বেশি ১২ শতাংশ।
প্রতি ডলার ৯৫ টাকা হিসাবে টাকার অঙ্কে ওই অর্থের পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।
করোনা মহামারির পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ধাক্কায় ওলটপালট হয়ে যাওয়া অর্থনীতিতে গত ৫ আগস্ট জ্বালানি তেলের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধিতে যখন দেশজুড়ে ক্ষোভ-হতাশা এবং আগামী দিনগুলোতে কী হবে? এই প্রশ্ন সবার মধ্যে তখন স্বস্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের প্রবাহ। মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০২০-২১ অর্থবছরের কথা। ভরা করোনা মহামারির মধ্যেও ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০) চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।
‘মহামারির মধ্যে ওই সময় অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন প্রবাসীরা’- এই মন্তব্য করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় অর্থনীতিতে যে নতুন সংকট দেখা দিয়েছে, সেই সংকট কাটাতেও সবার আগে এগিয়ে এসেছেন প্রবাসীরা। আবার বেশি বেশি রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছেন।’
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্সের বিস্ময়কর উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে তৈরি হবে নতুন রেকর্ড। এতে অনেকটাই চাপমুক্ত হবে দেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, ১ জুলাই শুরু হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রায় ২১০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ হিসাবে প্রতিদিন ৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার করে পাঠিয়েছেন তারা; টাকার হিসাবে প্রতিদিন দেশে এসেছিল ৬৪০ কোটি টাকা।
এখন তার চেয়েও বেশি টাকা দেশে পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা।
গত বছরের জুলাই মাসে ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে মন্দা দেখা দেয়। পুরো অর্থবছরে ২ হাজার ১০৩ কোটি (২১.০৩ বিলিয়ন) ডলার এসেছিল; গড়ে প্রতিদিন ৫ কোটি ৭৬ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় উল্লম্ফন ঘটে ২০২০-২১ অর্থবছরে। সে সময় ২ হাজার ৪৭৮ কোটি (২৪.৭৮ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। ওই অর্থবছরে প্রতিদিন গড়ে ৬ কোটি ৭৯ ডলার প্রবাসী আয় হিসেবে দেশে এসেছিল।
এসব হিসাব থেকে দেখা যাচ্ছে, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্সে রয়েছে ঊর্ধ্বগতি। এই প্রবণতা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে এবং এই অর্থবছরে নতুন রেকর্ড তৈরি হবে বলে মনে করছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘গত অর্থবছরে সাড়ে ৭ লাখ লোক কাজের সন্ধানে বিভিন্ন দেশে গেছেন। তারা ইতোমধ্যে রেমিট্যান্স পাঠাতে শুরু করেছেন। সে কারণেই ঈদের পরও রেমিট্যান্স বাড়ছে। এই ইতিবাচক ধারা পুরো অর্থবছর জুড়েই অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশা করছি।’
সাধারণত দুই ঈদের আগে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাড়ে; ঈদের পর কমে যায়। তবে এবার কোরবানির ঈদের আগে যে গতিতে রেমিট্যান্স এসেছে, সেই ধারা ঈদের পরেও অব্যাহত আছে।
দেশে গত ১০ জুলাই কোরবানির ঈদ উদযাপিত হয়। ঈদের আগে রেমিট্যান্স প্রবাহে ঢল নামে। ঈদের ৯০ কোটি ৯৩ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। ঈদের পরে ২১ দিনে এসেছে ১১৮ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের কিছু বেশি।
ঈদের পরেও কেন রেমিট্যান্স বাড়ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত কয়েক মাসে ডলারের দর বেশ খানিকটা বেড়েছে। প্রণোদনার পরিমাণ দুই শতাংশ থেকে আড়াই শতাংশ করা হয়েছে। এসব কারণে প্রবাসীরা এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। সে কারণেই বাড়ছে রেমিট্যান্স।’
তিনি বলেন, ‘এই সময়ে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির খুবই দরকার ছিল। নানা পদক্ষেপের কারণে আমদানি ব্যয় কমতে শুরু করেছে। রপ্তানির পাশাপাশি রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে আশা করছি এখন মুদ্রাবাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।’
আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে রোববার প্রতি ডলার ৯৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ব্যাংকগুলো এই দরে ডলার কিনেছে। তবে ডলারের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ব্যাংকগুলো ১১০ টাকা পর্যন্ত দরে প্রবাসীদের কাছ থেকে ডলার সংগ্রহ করেছে।
সে হিসাবে কোনো প্রবাসী এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে ১ ডলার দেশে পাঠালে ১১০ টাকার সঙ্গে নগদ প্রণোদনার ২ টাকা ৫০ পয়সা যুক্ত হয়ে ১১২ টাকা ৫০ পয়সা পাচ্ছেন।
কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে ডলারের দর প্রায় একই। সে কারণেই প্রবাসীরা এখন অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে ঝুঁকি নিয়ে দেশে টাকা না পাঠিয়ে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাচ্ছেন বলে জানান ব্যাংকাররা।
রেমিট্যান্স বাড়ার আরেকটি কারণের কথা বলেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনীতি চাঙা হয়েছে। সেখানে কর্মরত আমাদের প্রবাসীরা বেশি আয় করছেন। দেশেও বেশি টাকা পাঠাতে পারছেন।
‘দেশে ডলারের সংকট চলছে। মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা চলছে। রিজার্ভ কমছে। এই মুহূর্তে রেমিট্যান্স বাড়া অর্থনীতির জন্য খুবই ভালো হবে।’
অর্থ মন্ত্রণালয়ও তেমন পূর্বাভাস দিয়েছে। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অর্থবছরজুড়ে (২০২১-২২) ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধিতে থাকা প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে নতুন অর্থবছরে ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে।
এই অর্থবছরে রেমিট্যান্স বাড়ার কারণ হিসেবে মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘করোনা-পরবর্তী সময়ে দেশ থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ শ্রমিক নতুন করে বিদেশে যাওয়ায় তাদের কাছ থেকে বাড়তি পরিমাণ রেমিট্যান্স পাওয়া যাবে।’
দেশের অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর হালচাল নিয়ে তৈরি করা পাক্ষিক প্রতিবেদনেও রেমিট্যান্স নিয়ে সুসংবাদের আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
১১ আগস্ট প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় বাড়াতে সরকার ইতোমধ্যে রেমিট্যান্সে নগদ প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ করেছে। করোনা মহামারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় সব প্রবাসী তাদের কর্মস্থলে ফিরেছেন। টাকার বিপরীতে ডলার বেশ খানিকটা শক্তিশালী হয়েছে।
‘এই বিষয়গুলো আগামী মাসগুলোতে রেমিট্যান্স বাড়াতে সাহায্য করবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৩০ জুন ২০২২-২৩ অর্থবছরের নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। এতে বলা হয়, রেমিট্যান্স ঊর্ধ্বমুখী হবে এবং চলতি অর্থবছরে গত বছরের চেয়ে ১৫ শতাংশ বেশি আসবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য