করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে ওলোটপালট করে দিচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে শঙ্কা-উৎকণ্ঠা। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে বিশ্ব।
চলমান যুদ্ধের কারণে খাদ্য, জ্বালানি ও সারের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস। আইএমএফও একই সুরে কথা বলছে। তীব্র খাদ্য সংকটের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ।
বাংলাদেশেও নানা ক্ষেত্রে যুদ্ধের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। জ্বালানি তেল, খাদ্য পণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং জাহাজ ভাড়া বাড়ার কারণে আমদানি খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। যার ফলে বাজারে ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে; অস্থির হয়ে উঠেছে মুদ্রাবাজার। বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার ছেড়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। চড়ছে মূল্যস্ফীতির পারদ।
সাধারণ মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক রয়েছে। বাজারে গিয়ে পণ্য কিনতে বেশি খরচ হওয়ায় সরকারের প্রতি ক্ষোভও ঝাড়ছেন অনেকে।
তবে বাংলাদেশকে নিয়ে খুব একটা আশঙ্কায় নেই সরকারের মন্ত্রী, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা। তারা বলেছেন, যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় সংকট বাড়ছে ঠিকই, তবে সরকারও ব্যয় সংকোচনের জন্য তড়িৎগতিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এ জন্য আমদানি ব্যয় কমে আসবে। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভের উপর আর চাপ পড়বে।
সবচেয়ে বড় স্বস্তির জায়গা হচ্ছে, সরকারি গুদামগুলোতে এখনও ১২ লাখ টনের মতো খাদ্য মজুত আছে। বেসরকারি পর্যায়েও প্রচুর খাদ্য মজুত আছে। বোরো ধানের ভরা মৌসুম চলছে। দেশের কিছু এলাকায় বন্যার পরও বাম্পার ফলনের আভাস দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের গতিও এখন বেশ ভালো। সব মিলিয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে খুব একটা বিচলিত হওয়ার মতো কিছু দেখছেন না তারা।
তবে সরকারকে সব সময় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, ‘বিশ্ব পরিস্থিতি সব সময় ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। দেশের মানুষকে স্বস্তি দিতে নতুন বাজেটে ভর্তুকির পরিমাণ আরও বাড়ানোর প্রয়োজন হলে সেটা করতে হবে।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নিউজবাংলা কথা বলেছে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, বিরুপাক্ষ পাল ও মঞ্জুর হোসেন এবং ব্যবসায়ী নেতা আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজের সঙ্গে।
তারা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি দিয়ে মহামারি করোনাসহ অতীতে বড় বড় সংকট সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করা হয়েছে। এবারও তেমনটাই ঘটবে। কয়েক দিন পর স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হবে। এর মধ্য দিয়ে নতুন সাহস-উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দেবে সবার মধ্যে। অর্থনীতিতে যোগ হবে গতি।
দেশের অর্থনীতির বর্তমান হালচাল
অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও শক্ত ভিক্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। প্রধান সূচকগুলো এখনও ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।
আমদানির বাড়ার পরও অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ৪২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলারে অবস্থান করছে। এই রিজার্ভ দিয়ে ৬ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর রিজার্ভ থাকলেই যথেষ্ট।
শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে ধস নামার প্রধান কারণ ছিল রিজার্ভ; দেশটির রিজার্ভ ২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছিল। পাকিস্তানের রিজার্ভও কমে ১৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। গত বছরের আগস্টে দেশটির রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ম ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল, যা ছিল গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশের অর্থনীতির আরেকটি সূচক রপ্তানি আয়েও সুবাতাস বইছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১০ মাসের (জুলাই-এপ্রিল) তথ্য প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। তাতে দেখা যায়, এই ১০ মাসে ৪৩ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এই অংক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ।
জুলাই-এপ্রিল সময়ে প্রবাসীরা ১৭ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন দেশে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। তবে গত তিন মাস ধরে রেমিট্যান্সপ্রবাহে উল্লম্ফন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত মার্চ মাসে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল; এপ্রিল মাসে এসেছে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। চলতি মে মাসে ২৭ দিনে এসেছে ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। মাস শেষে মে মাসেও রেমিট্যান্স ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
তবে আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এই অর্থবছরের ৯ মাসের (জুলাই-মার্চ) আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, এই ৯ মাসে ৬৬ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি।
মহামারি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় দেশের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা নতুন উদ্যোমে উৎপাদন কর্মকাণ্ডে ঝাপিয়ে পড়েন। নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ নেন। দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতু, মেট্টোরেল, বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেলসহ কয়েকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে বিনিয়োগের একটি আবহ তৈরি হয়েছে দেশে। এর ফলে শিল্পের কাঁচামাল থেকে শুরু করে মধ্যবর্তী পণ্য, মূলধনি যন্ত্রপাতিসহ (ক্যাপিটাল মেশিনারি) শিল্প খাতের জন্য প্রয়োজনীয় অন্য সরঞ্জাম বা যন্ত্রপাতি আমদানি অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে।
একইসঙ্গে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের জিনিসের দাম বেড়েছে। বেড়েছে জাহাজ ভাড়া। এ সব কারণেই আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়েছে।
তবে আমদানি ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যংক ইতিামধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে অতি প্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানিতে এলসি মার্জিন ৭৫ শতাংশ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকারদের বিদেশ সফর বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। আমদানিনির্ভর সব প্রকল্পের কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। বিলাসবহুল প্রায় ২০০ পণ্যের আমদানির উপর অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
আমদানি বাড়ায় বাজারে ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে। ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে; কমছে টাকার মান। এটা এখন দেশের অর্থনীতির জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। বাজার স্বাভাবিক রাখতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেই চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সব মিলিয়ে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১১ মাসে (২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে ২৬ মে পর্যন্ত) ৫৬০ কোটি (৫.৬০ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর বিপরীতে বাজার থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা) তুলে নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এত ডলার বাজারে ছাড়া হয়নি। এরপরও বাজারের অস্থিরতা কাটছে না। বেড়েই চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের দর। দুর্বল হচ্ছে টাকা।
গত এক সপ্তাহ ধরে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৭ টাকা ৯০ পয়সায় বিক্রি হলেও ব্যাংকগুলো এর চেয়ে ৬ থেকে ৮ টাকা বেশি দরে নগদ ডলার বিক্রি করছে। খোলাবাজারে বাড়তে বাড়তে ডলারের দর ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়ে ১০৪ টাকায় উঠেছিল। গত কয়েক দিন অবশ্য ৯৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৪০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে।
ডলারের সংকট কাটাতে এবার প্রবাসী আয় সংগ্রহের ক্ষেত্রে এক দর বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংকে কত দামে রপ্তানি বিল নগদায়ন হবে ও আমদানিকারকদের কাছে বিক্রি করবে, তা-ও নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। ব্যাংকগুলো প্রতিদিন বাজার বিবেচনা করে এই দাম নির্ধারণ করবে। এই এক দাম সব ব্যাংক মেনে চলবে। বাংলাদেশ ব্যাংক তা পর্যালোচনা করবে। তবে কোনো ক্ষেত্রেই প্রতি ডলারের দাম ৯০ টাকার বেশি হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত বৃহস্পতিবার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) সঙ্গে সভায় বসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরামর্শে ব্যাংকগুলো এই সিদ্ধান্ত নেয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন গভর্নর ফজলে কবির।
অর্থনীতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক মূল্যস্ফীতি বাড়ছেই। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, এপ্রিল মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসভিত্তিক) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। যা গত দেড় বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
মহামারির মধ্যেও গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। চলতি অর্থবছরেও সেই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে। এই অর্থবছরের ১০ মাসে অর্থাৎ জুলাই-এপ্রিল সময়ে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ১৫ শতাংশের মতো।
তবে আমদানি বাড়ায় বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ক্যারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স) বড় ধরনের ঘাটতির মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। অর্থবছরের ৯ মাসে অর্থাৎ জুলাই-মার্চ সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক শুন্য সাত বিলিয়ন ডলার।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে যাই বলুক না কেন বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এ অবস্থায় যুদ্ধের প্রভাব যতোই পড়ুক না কেনো, আমাদের খুব একটা সমস্যা হবে না।’
তিনি বলেন, এই যে আমাদের অর্থনীতি আভো অবস্থায় আছে, এতে অবদান রেখেছে তিনটি খাত- কৃষি, শিল্প ও রেমিট্যান্স। করোনা অতিমারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রপ্তানি আয়ে ৩৬ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। রেমিট্যান্স কমলেও কয়েক মাস ধরে বাড়ছে। রোজার ঈদের আগে এপ্রিল মাসে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। সামনে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখেও রেমিট্যান্স বাড়বে।
‘আমদানি বাড়ার পরও আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করছে। এই রিজার্ভ দিয়ে ছয় মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। এরপরও যারা বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করেন, তারা বিজ্ঞানসম্মত কথা বলছেন না।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতি বাড়ছে।
‘বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমরা এখন মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখাটাকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। নতুন বাজেটে এই বিষয়টিকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে অসহায় গরিব মানুষকে সহায়তার পাশাপাশি কৃষির উৎপাদন বাড়াতে সার, সেচ, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা হবে।’
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম
দেশের অর্থনীতির সূচকগুলো বিশ্লেষণ করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্ত ভিত্তির উপর আছে এখনও। মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ আছে। ডলারের বাজারে অস্থিরতা আছে ঠিক। কিন্তু অন্য সূচকগুলোর দিকে তাকালে স্বস্তির নিঃশ্বাসই ফেলতে হয়। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, ব্যাপক আমদানির পরও রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করছে। রপ্তানি আয়ে ধারাবাহিকভাবে বেশকিছু দিন ধরে ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলেই মনে হচ্ছে।’
‘রেমিট্যান্সে কিছুটা ধীরগতি দেখা দিলেও কয়েক মাস ধরে আবার বাড়ছে। সামনে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখেও বেশি বেশি রেমিট্যান্স দেশে পাঠাবেন প্রবাসীরা। সরকার যে সব পদক্ষেপ নিয়েছে, তাতে আমদানি ব্যয় কমে আসবে। এরফলে রিজার্ভ আর কমবে না বলে মনে হচ্ছে।’
‘তাই যারা শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশকে তুলনা করছেন তারা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কথা না বলে মনগড়া কথা বলছেন। অযথা ভয়-আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য বলছেন।’
বাংলাদেশে অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়ছে ঠিক। কিন্তু সেটা মন্দা ডেকে আনতে কিনা-সেটা বলার সময় এখনও আসেনি। আর যদি মন্দা দেখাও দেয়, তার প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে ঠিক। কিন্তু খুব বেশি সংকটের মধ্যে আমরা পড়ব না।’
‘কেননা, মন্দার জন্য প্রধানত খাদ্য সংকটকে দায়ি করা হচ্ছে। বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যে খাদ্য মজুত আছে, চলতি বোরো মৌসুমে যে ধান উৎপাদন হচ্ছে-তা দিয়ে দুই-তিন বছর অনায়াসে চলে যাবে। এরমধ্যে যুদ্ধও স্থিমিত হয়ে আসবে আশা করি। তাই খুব বেশি ভয় পাওয়ার কোনো কারণ আমি দেখছি না।’
বিরূপাক্ষ পাল
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক অ্যাট কোর্টল্যান্ডের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার যে আশঙ্কা করছেন, আমি যুক্তরাষ্ট্রে বসে তেমনটি কিন্তু দেখছি না। যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বেশ বেশি ঠিক। কিন্তু এখানে অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের কাজ বেড়েছে, বেতন বেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন চাকরি বা কাজের জন্য যে লোক প্রয়োজন, সেই লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাহলে এখানে মন্দা আসবে কি করে। আর বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর বা বড় অর্থনীতির দেশে যদি মন্দার ছোঁয়া না লাগে, তাহলে বিশ্বজুড়ে মন্দার আশঙ্কা করা অমূলক মনে হয় আমার কাছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, মন্দার বিষয়টি সামনে আনার রাজনৈতিক একটি কারণ আছে। সব দেশ বা রাষ্ট্র প্রধানদের সতর্ক করার জন্য এটা প্রচার করা হচ্ছে।’
‘তবে যুদ্ধের কারণে, বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্য থেকে অনেক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় রাশিয়া বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেইসঙ্গে ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়া থেকে গ্যাস ও তেল না পাওয়ায় তারাও সংকটে পড়বে। ইতোমধ্যে সে সংকট দেখা দিয়েছে। এখন সব কিছুই নির্ভর করছে, যুদ্ধ কতোদিন চলবে সেটা উপর।’
যুদ্ধের প্রভাব বাংলাদেশে কেমন পড়বে- এ প্রশ্নের উত্তরে বিরূপাক্ষ পাল বলেন, ‘আমার বিবেচনায় বেশি আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। প্রভাবতো কিছুটা পড়বেই। ইউরোপ বাংলাদেশের পোশাকের একটি বড় বাজার। সেখানে সংকট দেখা দিলে, ওই বাজারে হয়তো পোশাক রপ্তানি কম হবে। কিন্তু আমি আগেই বলেছি, যুত্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ভালো অবস্থায় আছে, সে কারণে এখানকার বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি কমবে না; উল্টো বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।’
ইপিবির তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১০ মাসে আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে ৫২ দশমিক ২১ শতাংশ।
‘বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি। সেই শক্তি দিয়ে যে কোনো সমস্যা-সংকট মোকাবিলা করতে পারে। অতীতে বহুবার সেটা প্রমাণ করেছেন তারা। আর সেটা করেই পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভারতকে পেছনে ফেলে এই জায়গায় এসেছেন তারা। অন্য কিছু যদি নাও পায়, শুধু ভাত খেয়েই তারা অর্থনীতির চাকা সচল রাখবেন।’
মঞ্জুর হোসেন
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক মঞ্জুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমিও ভয়ের তেমন কিছু দেখছি না। রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে উপরে থাকা অবস্থায় আমি উদ্বেগের কোনো কারণ দেখি না। খাদ্য আমদানি করে চলতে হবে-এমন অবস্থা তো আমাদের নয়। বেশি সমস্যা হলে গম হয়তো আমরা পাবো না, সেক্ষেত্রে তিন বেলাই ভাত খাবে মানুষ। দাম হয়তো একটু বাড়বে, কিন্তু খাদ্য পাওয়ার তো নিশ্চয়তা আছে। প্রচুর খাদ্য আছে আমাদের।’
‘আমি মনে করি, সরকারকে এখন মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখার বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ভর্তুর্কির পরিমাণ যদি বেড়ে যায় সেটাও করতে হবে। মানুষকে স্বস্তি দিতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্ঠণী খাতে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে। উপকারভোগীর সংখ্যা ও বিভন্ন ভাতার পরিমাণ বাড়াতে হবে। নতুন বাজেটে এ সব বিষয়ে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।’
‘আর আমরা তো এখন ফুরফুরে মেজাজে আছি। নিজস্ব অর্থে বহুল প্রতিক্ষিত পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে ২৫ জুন। এই সেতু চালুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে সাহস-শক্তি-প্রাণসঞ্চার হবে, তা দিয়ে যে কোনো সংকট মোকাবিলঅ করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ
বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি তৈরি পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ পদক্ষেপ ও দিকনির্দেশনায় করোনা মহামারি সাহসের সঙ্গে আমরা মোকাবিলা করেছি। আশা করছি, যুদ্ধের প্রভাবও তেমন একটা পড়তে দেবেন না তিনি। আমদানি ব্যয় কমাতে ইতোমধ্যে যে সব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে বলে আমি মনে করি।’
‘আমাদের একটাই অনুরোধ থাকবে, এই মুহূর্তে যেনো গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো না হয়। তাহলে সরকারের সঙ্গে হাতমিলিয়ে আমরা সম্মিলিতভাবে আমরা যে কোনো পরিস্তিতি মোকাবিলা করতে পারব।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে একটি চুক্তি এবং আটটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার চার দিনের চীন সফরের তৃতীয় দিন শুক্রবার দুই দেশের মধ্যে এ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও স্মারকগুলো স্বাক্ষর হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে রয়েছে দুই দেশের কালজয়ী সাহিত্য ও শিল্পকর্মের অনুবাদ ও সৃজন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও খবর আদান-প্রদান, গণমাধ্যম, ক্রীড়া এবং স্বাস্থ্য খাতে বিনিময় সহযোগিতা। এর পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় চীন সফরে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ বিষয়ে সহযোগিতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়েছে।
এগুলো হলো বিনিয়োগ আলোচনা শুরু করা, চীনের বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু, মোংলা বন্দরের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ, একটি রোবট ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ এবং একটি কার্ডিয়াক সার্জারি গাড়ি অনুদান।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের উত্থাপিত বিষয়গুলো চীন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং।
স্থানীয় সময় শুক্রবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট এ কথা জানান।
ড. ইউনূসের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্টের বৈঠককে অত্যন্ত সফল উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ইউএনবিকে বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি বিষয় উত্থাপন করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশকে দেওয়া চীনা ঋণের সুদের হার কমানো ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় দেশটির সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়টি ছিল।’
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে আলোচনা অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ, গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ হয়েছে।’
প্রেস সচিব বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার এটি ছিল প্রথম দ্বিপক্ষীয় বিদেশ সফর। এখন পর্যন্ত এটি একটি বড় সফলতা।’
প্রেসিডেন্ট শির বক্তব্যের বরাতে শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও কারখানা স্থাপনে চীন তার দেশের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করবে।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট শি ফুজিয়ান প্রদেশের গভর্নর থাকাকালীন দুইবার বাংলাদেশ সফর করেছেন এবং ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে তিনি পড়াশোনা করেছেন। সে কথাও উল্লেখ করেছেন চীনের রাষ্ট্রপ্রধান।
প্রেসিডেন্ট শির উদ্বৃতি দিয়ে শফিকুল আলম বলেন, তিনি বাংলাদেশি আম ও কাঁঠাল খেয়েছেন। এগুলো সুস্বাদু। আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশ আগামী মৌসুমে এ দুটি ফল চীনে প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি করবে।
চীনা প্রেসিডেন্ট ও প্রধান উপদেষ্টা চীনের পিপলস গ্রেট হলে করা বৈঠকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
তারা দুই দেশের সম্পর্ককে জোরদার করা ও ঢাকা-বেইজিংয়ের পারস্পরিক ও কৌশলগত স্বার্থকে এক নতুন উচ্চতায় নেওয়ার উপায় নিয়েও আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের বাজারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সি৩২ ইলেকট্রিক বাইক এনেছে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড রিভো। অত্যাধুনিক ৭২ ভোল্ট ২৬ অ্যাম্পিয়ার সম্পূর্ণ গ্রাফিন ব্যাটারি পরিচালিত এই ইলেকট্রিক বাইকের উদ্বোধন ঘোষণা করেন রিভো বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ভেন নি।
ফিচার
সি৩২-এর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য শক্তিশালী ১৮০০ ওয়াট মোটর, যা ব্যতিক্রমী পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। বাইকটির ইকো মোডে গতি ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা এবং একবার চার্জে এটি ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে।
অন্যদিকে স্পোর্ট মোডে সর্বোচ্চ গতি ৬০ কিলোমিটার/ঘণ্টা এবং এক চার্জে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে।
সি৩২ ইলেকট্রিক বাইকে উন্নত ৭২ ভোল্ট ২৬ অ্যাম্পিয়ার গ্রাফিন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে, যা পাঁচ শতাধিক চার্জিং সাইকেল সাপোর্ট করে এবং প্রতিটি পূর্ণ চার্জে মাত্র ২.০৮ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করে।
ব্যাটারিটি সম্পূর্ণ চার্জ হতে ১০.৬ ঘণ্টা সময় নেয়, যা রাতে চার্জ দিয়ে দিনব্যাপী ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।
নিরাপত্তা এবং আরামকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে রিভো সি৩২। এতে রয়েছে সামনে ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনে ড্রাম ব্রেক সিস্টেম, যা সর্বোচ্চ স্টপিং পাওয়ার নিশ্চিত করে।
ফ্রন্ট ও রিয়ার হাইড্রোলিক সাসপেনশন থাকার ফলে রাইডাররা মসৃণ ও আরামদায়ক রাইড উপভোগ করতে পারেন। এমনকি অপ্রশস্ত বা অসমান রাস্তাতেও।
রাতে নিরাপদ যাত্রার জন্য সি৩২-এ রয়েছে পূর্ণ এলইডি লাইটিং সিস্টেম, যার মধ্যে এলইডি হেডলাইট, টেইললাইট এবং টার্ন সিগন্যাল অন্তর্ভুক্ত।
রিভো সি৩২ শুধু শক্তিশালী পারফরম্যান্সই দেয় না, এটি ডিজাইনেও বেশ কার্যকর। ১৪০ কেজি ওজনের মজবুত অথচ হালকা ফ্রেম এবং সামনে ও পিছনে ৯০/৮০-১২'' ভ্যাকুয়াম টায়ার যুক্ত বাইকটি দুর্দান্ত গ্রিপ এবং স্থিতিশীলতা প্রদান করে।
২০৫ এমএম পর্যন্ত গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স থাকায় এটি যেকোনো ধরনের রাস্তার জন্য উপযোগী। সিট বাকেটে ২৪ লিটার স্টোরেজ স্পেস রয়েছে, যা ব্যক্তিগত জিনিসপত্র বহনের জন্য আদর্শ।
ব্যবহারকারীবান্ধব ডিজাইন এবং আরামের সমন্বয়ে এটি শহরের যাতায়াতকারী এবং দূরপাল্লার রাইডারদের জন্য একটি পারফেক্ট পছন্দ।
এখন থেকে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯০০ টাকা মূল্যে বাংলাদেশের সব শোরুমে পাওয়া যাচ্ছে।
সি৩২ যাতায়াতকে সহজ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব করতে উন্নত প্রযুক্তি, শক্তিশালী পারফরম্যান্স নিশ্চিত করছে, যা প্রতিদিনের যাত্রীদের পাশাপাশি পরিবেশ সচেতন রাইডারদের জন্য আদর্শ হতে পারে।
আরও পড়ুন:আলু রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। এ স্থলবন্দর দিয়ে নতুন করে আরও ১০৫ টন আলু গিয়েছে নেপালে।
এ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার ৫৫৪ টন আলু নেপালে রপ্তানি করা হলো।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কোয়ারিনটিন ইন্সপেক্টর উজ্জল হোসেন জানান, বুধবার বিকেলে স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচটি ট্রাকে ১০৫ টন আলু নেপালে গেছে।
তিনি জানান, আলুগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এগুলো রপ্তানি করছে থিংকস টু সাপ্লাই ও ফাস্ট ডেলিভারি নামে দুটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে থিংকস টু সাপ্লাই ৪২ ও ফাস্ট ডেলিভারি ৬৩ টন রপ্তানি করে। এ ছাড়াও বন্দরটি দিয়ে হুসেন এন্টারপ্রাইজ, ক্রসেস এগ্রো, সুফলা মাল্টি প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং লোয়েড বন্ড লজিস্টিক নামের কয়েকটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানও নেপালে আলু রপ্তানি করছে।
উজ্জ্বল হোসেন বলেন, রপ্তানিকারকরা প্রয়োজনীয় নথিসহ অনলাইনে আবেদন করলে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের ল্যাবে পরীক্ষা করার পর ফাইটোসেনেটারি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়। রপ্তানিকৃত আলুগুলো স্টারিজ এবং লেডিও রোজেটা জাতের।
বাজারে নতুন আসা স্মার্টফোন ‘অপো এ৫ প্রো’ রেকর্ড গড়া পারফরম্যান্স করেছে বলে জানিয়েছে বৈশ্বিক প্রযুক্তি কোম্পানি অপো।
কোম্পানিটি শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আগের জেনারেশনের ডিভাইসের তুলনায় নতুন স্মার্টফোনটি ৪৫০ শতাংশ বেশি বিক্রয় প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা বাংলাদেশের বাজারে অপোর ধারাবাহিক সফলতার নির্দেশক। তাৎপর্যপূর্ণ এ প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের বাজারে অপোর ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি এবং ব্রান্ডটির প্রতি গ্রাহকদের গভীর আস্থা ও আনুগত্যের প্রতিফলন।
অপো প্রতিনিয়ত স্মার্টফোন প্রযুক্তির অভিনব উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোম্পানিটির ‘অপো এ৫ প্রো’ ডিভাইসের ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। ফোনটি নিত্যদিনের বৈচিত্র্যময় চাহিদা পূরণে ভোক্তাদের আধুনিক ও উন্নত সব ফিচার ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে।
কোম্পানির কর্মকর্তা ও গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া
বিজ্ঞপ্তিতে অপো এ৫ প্রোর বিক্রয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা ও একাধিক গ্রাহকের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেছে অপো।
ডিভাইসটির প্রথম দিনের বিক্রয়ের বিষয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অপো বাংলাদেশ অথরাইজ এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেমন ইয়াং বলেন, ‘এ সফলতা অপোর প্রতি বাংলাদেশি গ্রাহকদের আস্থা ও আগ্রহের বিষয়টিই সফলভাবে চিত্রিত করছে। তাদের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো অভিনব পণ্য উদ্ভাবন ও সেবা প্রদানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
একটি বেসরকারি প্রকৌশল কোম্পানিতে চাকরিরত তারেক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ অপোর নতুন ডিভাইস নিয়ে তার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, ‘অপো এ৫ প্রোর ওয়াটারপ্রুফ, ডাস্টপ্রুফ এবং শকপ্রুফ ফিচার আমার সবচেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
‘আমি এ রকম একটি টেকসই ও সহনশীল স্মার্টফোনের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করছিলাম এবং আমার অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। স্মার্টফোনটি কিনতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত।’
আরেক গ্রাহক শারমিন আক্তার বলেন, “ঈদের আগে আমি একটি মোবাইল কেনার কথা ভাবছিলাম। এ ক্ষেত্রে স্মার্টফোনের দারুণ ডিজাইন ও উন্নত ফিচারগুলো আমার অগ্রাধিকারে ছিল।
“আমার মতে, বাজারের একই ঘরনার ফোনগুলোর মধ্যে এ বিষয়গুলোতে ‘অপো এ৫ প্রো’ই সেরা। ফোনটি পছন্দ করতে পেরে মনে হচ্ছে আমি সঠিক মোবাইলটিই বেছে নিয়েছি।”
নতুন ডিভাইসের ফিচার
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘অপো এ৫ প্রো’ বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন, যেটি আইপি৬৬, আইপি৬৮ এবং আইপি৬৯ রেটিং অর্জন করেছে। ডিভাইসটি পানি, ধুলা ও যেকোনো ধরনের শক থেকে সুরক্ষিত। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মোবাইলটির অনন্য স্থায়িত্ব।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, মোবাইলটিতে সংযুক্ত আছে মিলিটারি গ্রেডের ইমপ্যাক্ট রেজিস্ট্যান্স প্রযুক্তি। পাশাপাশি ডিভাইসের মাদারবোর্ড থার্মাল কনডাকটিভিটি বৃদ্ধি করে এবং আগের জেনারেশনের স্মার্টফোনের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি সক্ষমতা প্রদান করে। মোবাইলটি এক হাজার বেন্ডিং টেস্টও উতরে গেছে। অর্থাৎ প্রতিদিনের যেকোনো পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে এটি ব্যবহার উপযোগী।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, স্মার্টফোনটি নান্দনিক ফটোগ্রাফির জন্য অনন্য। এতে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা এআই সংবলিত উন্নত ফিচার। ডিভাইসটিতে এআই ইরেজার ২.০ ব্যবহার করে সহজেই ছবিতে থেকে অপ্রয়োজনীয় বস্তু মুছে ফেলা যায়। এআই রিফ্লেকশন রিমুভার ব্যবহার করে অযাচিত রিফ্লেকশন সরিয়ে দেওয়া যায়।
এ ছাড়া এআই আনব্লার ফিচার ব্লারি বা অস্পষ্ট ছবিকে আরও স্পষ্ট করে তুলতে সাহায্য করে।
দাম
অপো জানায়, দেশজুড়ে রিটেইল স্টোর এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে স্মার্টফোনটি ২৩ হাজার ৯৯০ টাকায় ৮জিবি+২৫৬ জিবি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে।
বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে অপোর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান থেকে চালবোঝাই আরও দুটি জাহাজ।
এক দিনের ব্যবধানে দুটি জাহাজ বন্দরে পৌঁছায়।
এবার এসেছে ৪৮ হাজার ৭৫০ টন আতপ ও সিদ্ধ চাল। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে আসে ২৬ হাজার ২৫০ টন এবং ভারত থেকে আসে ২২ হাজার ৫০০ টন চাল।
চট্টগ্রাম বন্দরের সাইলো জেটি ও কাফকো-সংলগ্ন জেটিতে এই দুই জাহাজ নোঙর করে বলে শনিবার দুপুরে নিশ্চিত করেন খাদ্য অধিদপ্তরের চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক জ্ঞানপ্রিয় বিদূর্শী চাকমা।
পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজটি শুক্রবার চট্টগ্রাম সাইলো জেটিতে বার্থিং করেছে জানিয়ে তিনি জানান, জাহাজ এমভি মারিয়ম গত ১১ মার্চ ২৬ হাজার ২৫০ টন আতপ চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে প্রবেশ করে।
অন্যদিকে ১২ মার্চ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে প্রবেশ করে ভারতের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি তানাইস ড্রিম। জাহাজটি শুক্রবার কাফকো সংলগ্ন জেটিতে বার্থ করে।
এ জাহাজ থেকে ২২ হাজার ৫০০ টন বাসমতি নয় এমন সিদ্ধ চাল আনা হয়েছে।
পাকিস্তানের জাহাজ এমভি মারিয়মে আসা চালের নমুনা সংগ্রহ শেষে ভৌত বিশ্লেষণ সম্পন্ন হয়েছে মন্তব্য করে জ্ঞানপ্রিয় বিদূর্শী চাকমা জানান, এ চালের খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অন্যদিকে ভারত থেকে আসা জাহাজ এমভি তানাইস ড্রিমের চালগুলোর নমুনা সংগ্রহ করা শেষ হয়েছে।
এর আগে বুধবার ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা ৩৮ হাজার ৮৮০ টন চাল বাংলাদেশে এসে পৌঁছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় ভিয়েতনাম থেকে ১৭ হাজার ৮০০ টন আতপ চাল এবং আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় ভারত থেকে ২১ হাজার ৮০ টন সিদ্ধ চাল কেনা হয়েছে।
গত ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে আরও ৬ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানি করা হয়।
আরও পড়ুন:জনপ্রিয় বৈশ্বিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘অপো’ পবিত্র রমজান মাসে গ্রাহকদের জন্য বিশেষ ‘ঈদ মেগা গিফট ক্যাম্পেইন’ ঘোষণা করেছে।
১৩ মার্চ থেকে শুরু হয়ে সারা দেশে অপোর আউটলেটগুলোতে বিশেষ এ ক্যাম্পেইন চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত।
ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ক্রেতারা তাদের চাহিদা উপযোগী দারুণ সব ডিল ও অফার উপভোগ করতে পারবেন।
এ বছর অপো ভোক্তাদের জন্য ‘মেগা’ লটারি অফার ঘোষণা করেছে। এতে অংশ নিয়ে ক্রেতারা ১ লাখ টাকা সমমূল্যের গৃহস্থালি উপকরণ (হোম অ্যাপ্লায়েন্স), অপো প্যাড, অপো ওয়াচ অথবা ‘বাই ১, গেট ওয়ান ১’, ডিল উপভোগ করতে পারবেন।
এ ছাড়াও অপো সব ক্রেতার জন্যই বিশেষ ও নিশ্চিত উপহারের ঘোষণা দিয়েছে, যাতে করে সবাই এ আনন্দের ভাগিদার হতে পারেন। নির্দিষ্ট কিছু মডেলের স্মার্টেফোন কিনেও গ্রাহকরা উপহারের ভাগিদার হতে পারবেন। যেমন- ‘রেনো১২এফ’-এর সঙ্গে বিশেষ হুডি, ‘রেনো১৩এফ’-এর সঙ্গে বিশেষ ব্যাগ এবং নতুন বাজারে আসা ‘এ৫ প্রো’র সঙ্গে ‘অপো সুপার শিল্ড কার্ড’ পাবেন তারা।
অপো বাংলাদেশ, অথরাইজ এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেমন ইয়াং বলেন, “আমাদের গ্রাহকদের সেরা সেবা দিতে অর্থাৎ কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স বৃদ্ধিতে অপো প্রতিনিয়ত অভিনবভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির স্মার্টফোন উপভোগের মাধ্যমে এই ঈদে তারা অসাধারণ সব পুরস্কার জিতে নিতে পারবেন। ‘এ৫ প্রো’র উন্মোচন এবং মেগা গিফট ক্যাম্পেইনের এই ঘোষণা ভোক্তাদের রমজান উদযাপনে বাড়তি মাত্রা যোগ করবে। অপোভক্তদের সঙ্গে এই বিশেষ উপলক্ষ যুক্ত করতে পেরে আমরা আনন্দিত।”
একটি অনলাইন লটারির মাধ্যমে মেগা গিফট লটারির বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে এবং তা অপো এ৩এক্স, এ৬০, রেনো সিরিজ এবং নতুন লঞ্চ হওয়া অপো এ৫ প্রোসহ বিভিন্ন ডিভাইসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এ ক্যাম্পেইন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ক্রেতাদের নিকটস্থ অপো আউটলেট পরিদর্শনের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
আকর্ষণীয় ঈদ অফার ও অন্যান্য তথ্য পাওয়া যাবে অপো বাংলাদেশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/OPPOBangladesh এবং ওয়েবসাইটে website https://www.oppo.com/bd/।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য