অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের বৈঠকের পর দিন উত্থান হলেও এরপর টানা দুই দিন দরপতন হলো পুঁজিবাজারে। বাজার নিয়ে অনিশ্চয়তায় লেনদেনও নেমে এসেছে পাঁচ শ কোটির ঘরে।
সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবস বুধবার দর হারিয়েছে আড়াই শ টি কোম্পানি, যার মধ্যে দর পতনের সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়েছে বেশ কিছু কোম্পানি।
চলতি সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার ১১৫ পয়েন্ট পতনের পর দিন ১১৮ পয়েন্ট উত্থানে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে চাপ কাটবে ভেবেছিলেন যারা, তারা আবার হয়েছেন আশাহত।
মঙ্গলবার ৫০ পয়েন্ট দরপতন আস্থায় যতটা চিড় ধরিয়েছিল পর দিন আরও ২৩ পয়েন্টের পতন আরও আস্থাহীনতা তৈরি করতে পারে।
অবশ্য লেনদেন শুরুর সোয়া এক ঘণ্টায় সূচক ৭১ পয়েন্ট পড়ে গিয়েছিল। পরে বেলা দেড়টার দিকে এর পুরোটাই পুনরুদ্ধার হয়। কিন্তু শেষ ঘণ্টায় আবার পতন হয়।
দিন শেষে কমেছে ২৫০টি কোম্পানির শেয়ার দর, বেড়েছে ৭৬টির আর অপরিবর্তিত থাকে ৪৯টির দর।
লেনদেন হয়েছে ৫১২ কোটি ৭৬ লাখ ২৬ হাজার টাকা, যা ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসের লেনদেনের পর সর্বনিম্ন।
অবশ্য গত এক যুগের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি থাকে কম, তখন লেনদেনও সেভাবে হয় না।
এবার ঈদের ছুটি শেষে ৫ মে কর্মদিবস থাকলেও পরের দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সেদিন লেনদেন ছিল কম। হাতবদল হয় ৪৬৮ কোটি ৭০ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।
তবে দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি শেষে রোববারই লেনদেন ৯৭২ কোটি টাকা ছাড়ায়। এর পরের তিন কর্মদিবসে লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়।
১২ মে থেকে বাজারে আবার লেনদেন ও সূচক কমতে থাকে।
ঈদের অবসর শেষে টানা আট কর্মদিবসে ৫৫৫ পয়েন্ট সূচকের পতনের পর রোববার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে।
বৈঠকে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দেন মন্ত্রী। সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে ব্যাংকগুলো আইসিবির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ করবে, সেটাকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমার (এক্সপোজার লিমিট) বাইরে রাখা হবে।
এ ছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া ১৫৩ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তহবিলের আকারও বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করা হবে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেশও দেন মন্ত্রী।
এই বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ১১৮ পয়েন্টের উত্থান হলেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে শঙ্কা রয়ে গিয়েছিল, সেটির প্রমাণ পাওয়া যায় লেনদেনেই। বাজারে সক্রিয় না হয়ে আরও অপেক্ষার নীতি নেয়ায় লেনদেন কমে যায় অনেকটাই।
এই ১১৮ পয়েন্টের মধ্যে ৭৩ পয়েন্ট হারিয়ে গেল দুই দিনে।
পুঁজিবাজারের লেনদেন নিয়ে মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের বাজারে এখন সমস্যা হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিক। দাবি আদায়ের বাজার হয়ে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার। বাজার খারাপের কোনো টেকনিক্যাল ইস্যু নেই। অভ্যন্তরীণ চাওয়া-পাওয়ার জেরেই বাজার এমন।
‘বাজার খারাপের ব্যাপারে বলা হচ্ছে যে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে তাই পড়ছে, তাহলে যেদিন ১১৮ পয়েন্ট বাড়ল সেদিন কীভাবে অর্থনীতি ভালো হয়ে গেল? আবার পরের দিন যখন ৭০ পয়েন্ট পড়ল তখন কি একদিনই অর্থনীতি খারাপ হয়ে গেল?
‘মূল ব্যাপারটা হচ্ছে, বাজারকে স্বাভাবিক নিয়মে চলতে দেয়া হচ্ছে না। যখন ইচ্ছা হচ্ছে তখন কেনা হচ্ছে, যখন ইচ্ছা হল না তখন কিনছে না, এ রকম পদ্ধতিতে বাজার চলছে।’
তিনি বলেন, 'শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জ রাইজিংয়ের মধ্যে আছে। পাকিস্তানের অর্থনীতি বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ অবস্থানে। তারপরও তাদের স্টক মার্কেট হাই। এমনকি ভারতেও তাই। কিন্তু বাংলাদেশের এই অবস্থা!’
মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, 'মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো সেল প্রেসার বাড়িয়েছে। একদমই বাই করছে না। কারণ তারা নিচে নামিয়ে কিনতে চায়।'
'এর আগে যখন বাজারের সূচক ৫ হাজারের নিচে নেমে যায় তখন মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো আট হাজার কোটি টাকার মতো লাভ করেছে, সেটা পত্রপত্রিকায় আমরা দেখেছি। মার্কেট পড়লে আবার তারা কিনবে।'
আরও পড়ুন:বন্ধ হওয়ার পাঁচ বছর পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উদ্যোগে আবার বাজারে ফিরছে এমারেল্ড অয়েলের ধানের কুঁড়ার তেল ‘স্পন্দন’।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে স্পন্দন রাইস ব্র্যান অয়েলের নতুন করে মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জাপানি বিনিয়োগে পরিচালিত মিনোরি বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শেরপুরের কারখানাটিতে উৎপাদন শুরু হয়। গত ছয় মাসে ৪৫ কোটি টাকার তেল বাজারজাত করা হয়েছে। এরই মধ্যে কোম্পানিটি না লাভ-না লোকসানে চলে এসেছে।
এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মিনোরি বাংলাদেশের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ‘এমারেল্ড অয়েলের দুটি প্রোডাকশন ইউনিট আছে। এর একটির ধানের কুঁড়া ক্র্যাশ করার ক্ষমতা ১৮০ টন, অপরটির ক্ষমতা ১৫০ টন।
‘ইউনিট দুটির দৈনিক মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৩৩০ টন। গ্যাসের অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে শুধু ১৮০ টনের ইউনিটটি সচল আছে। এই ইউনিটে ধানের কুঁড়া ক্র্যাশ করে ৩৫ টনের মতো অপরিশোধিত তেল পাওয়া যায়। এখান থেকে দৈনিক পরিশোধিত তেল পাওয়া যায় প্রায় ২৬ টন। এ সক্ষমতা নিয়ে আমরা প্রতিদিন প্রায় ২৬ টন তেল বাজারজাত করতে পারব।’
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার তিন বছরের মাথায় ২০১৬ সালে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে মিনোরি বাংলাদেশ কোম্পানিটির ৭ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার কিনে মালিকানায় আসে।
উৎপাদন শুরুর মাত্র ছয় মাসের মধ্যে ব্রেক ইভেনে (আয় ও ব্যয় সমান) পর্যায়ে চলে এসেছেন তারা। তবে গ্যাসসংকটে পুরো উৎপাদনক্ষমতা কাজে লাগাতে পারছেন না। সেটি করা গেলে শিগগিরই শেয়ারধারীদের ভালো লভ্যাংশ দিতে পারবেন।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি যেসব বন্ধ কোম্পানিতে প্রাণ ফেরানোর চেষ্টা করছে তার মধ্যে এমারেল্ড তৃতীয়, যেগুলো উৎপাদনে চলে এসেছে। এর আগে আলহাজ টেক্সটাইল ও রিংসাইন টেক্সটাইল উৎপাদন শুরু করে।
সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলও উৎপাদন শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর ফ্যামিলে টেক্স বন্ধ-এমন খবরে বোর্ড পুনর্গঠন করা হলেও নতুন বোর্ড গিয়ে দেখেছে উৎপাদন আসলে চলছে। আর যার তত্ত্বাবধায়কে উৎপাদন চলছে, তাকে দিয়েই কোম্পানিতে প্রাণ ফেরানোর পক্ষে তারা।
এমারেল্ডের আয়োজনে বিনিয়োগকারীদের মুনাফার আশ্বাস দেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মিনোরি বাংলাদেশের পরিচালক আফজাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিনিয়োগের মূল উদ্দেশ্য হলো এটিকে একটি লাভজনক কোম্পানিতে পরিণত করা এবং বছরের এবং বছরের শেষে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রদান করা।’
দেশের ভোজ্যতেলের সংকট নিরসনে স্পন্দন ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন এমারেল্ড এমডি। সেই সঙ্গে উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার কথাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘আমাদের দুটি বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রথমটি হলো গ্যাসের সংকট। দ্বিতীয়টি ব্যাংক ঋণ পুনঃতফসিল। কোম্পানিটি যখন বন্ধ হয়ে যায়, তখন তিতাস গ্যাসের বকেয়া ছিল ৩২ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ২০২১ সালে তিতাস গ্যাস লাইন চার্জসহ এক কোটি ৬৩ লাখ টাকা বকেয়া বিলের একটি স্টেটমেন্ট দেয়। এ টাকার পুরোটাই শোধ করা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএসইসি কমিশনার রুমানা ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বর্তমান কমিশনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় একটি বন্ধ কোম্পানি পুনরায় চালু হয়েছে। ইতোমধ্যে এটি ভালো করছে, এবং কোম্পানির যে লক্ষ্য সেটি অর্জনের মধ্যে দিয়ে বিনিয়োগকারীদের ভালো লভ্যাংশ দিতে পারবে বলে বিশ্বাস করি।’
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, ‘কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কমিশন থেকে আমাদের বলা হলো, কিছু করার জন্য। মিনোরির মামুন মিয়া এলেন। তখন আমরা বললাম, লেটস স্টার্ট।
‘এমডি বলে গেছেন, লভ্যাংশ দেবেন। আমরা আশা করি হবে। এই কোম্পানির কিছুই ছিল না। ২০২২ জানুয়ারি প্রডাকশন শুরু করে ৪৫ কোটি টাকার মতো তেল বাজারজাত করেছে। আমি মনে করি, বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর নিয়ে আসবে। স্পন্দন পুঁজিবাজারের স্পন্দন ফিরিয়ে আনবে বলে বিশ্বাস করি।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এমারেল্ড দেশের বাজারের পাশাপাশি দেশের বাইরেও তেল পাঠাবে। সেই বিষয়টি উল্লেখ করে বিএসইসি কর্মকর্তা বলেন, ‘রপ্তানি করলে আনকনভেনশনাল খাত থেকে কারেন্সি আসবে। যোগ্য ডিরেক্টর আছেন। শেয়ার হোল্ডার ডিরেক্টররাও পরিশ্রম করছেন। কোম্পানি সফল হবে এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’
ল্যাবএইড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল খাদ্য তত্ত্ববিদ নুসরাত জাহান দীপা, ল্যাবএইড হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিয়াক বিভাগের লোকমান হোসেন, এমারেল্ড অয়েলের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম ও মিনোরি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মিয়া মামুনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এমারেল্ড অয়েল ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হয় এবং ২০১১ সালে স্পন্দন-ব্র্যান্ডেড রাইস ব্র্যান অয়েল উৎপাদন শুরু করে। ২০১৪ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করে।
২০১৬ সালে এমারেল্ড অয়েল ১৮ কোটি ২০ লাখ টাকা লাভ করে এবং শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয়। ওই বছরই কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
লোকসান এবং কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা না করার কারণে কোম্পানিটির শেয়ার ২০১৮ সাল থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরির অধীনে লেনদেন হচ্ছে।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজারে নতুন দুটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অনুমোদন দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- বিএসইসি। এর একটি মেয়াদি ও আরেকটি বে-মেয়াদি।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৮২৯তম কমিশন বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
অনুমোদন করা ‘আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ড’ নামের মেয়াদি এই ফান্ডের প্রাথমিক আকার ১০০ কোটি টাকা।
এ ছাড়া বে-মেয়াদী বা ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড আনছে এজ এএমসি লিমিটেড। যার আকার হবে ২৫ কোটি টাকা।
গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ড
আলোচিত ফান্ডটির উদ্যোক্তা ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) ও আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড (আইসিবি-এএমসিএল)।
ফান্ডটিতে সিএমএসএফ ৫০ কোটি এবং আইসিবি এএমসিএল ২০ কোটি টাকার যোগান দিয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়াত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশ (আইসিবি) প্রাইভেট প্লেসমেন্টে ৫ কোটি টাকার ইউনিট কিনেছে। বাকি ২৫ কোটি টাকার ইউনিট সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য রাখা হয়েছে।
ফান্ডটির সম্পদ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। এর ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। আর কাস্টোডিয়ানের দায়িত্বে থাকবে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড।
এজ আল-আমিন শরীয়াহ কনজ্যুমার ফান্ড
বে-মেয়াদী বা ওপেন এন্ড ‘এজ আল-আমিন শরীয়াহ কনজ্যুমার ফান্ড’ নামের ফান্ডটির প্রসপেক্টাস অনুমোদন করেছে বিএসইসি।
আলোচিত ফান্ডটির প্রাথমিক আকার হচ্ছে ২৫ কোটি টাকা। এতে উদ্যোক্তা এজ এএমসি লিমিটেড ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা দিয়েছে, যা ফান্ডের মোট আকারের (২৫ কোটি) ১০ শতাংশ। বাকি ২২ কোটি ৫০ লাখ টাকা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হবে। এই ফান্ডের প্রতি ইউনিটের মূল্য হবে ১০ টাকা।
ফান্ডটির সম্পদ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে এর উদ্যোক্তা এজ এএমসি লিমিটেড। ট্রাস্টি থাকছে সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। এই ফান্ডেরও কাস্টোডিয়ানের দায়িত্বে থাকবে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড।
আরও পড়ুন:আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পাশের আগে আগে পুঁজিবাজারে লেনদেন বাড়ছে। সেই সঙ্গে টানা দুই দিন বাড়ল সাধারণ সূচকও।
চলতি সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার ২৬ পয়েন্ট দরপতনের পাশাপাশি লেনদেন নেমে আসে ছয় শ কোটি টাকার নিচে। সেদিন পর্যন্ত টানা ছয় কর্মদিবস লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমে যায়। তবে সোমবার বিকেলে হঠাৎ করে যে ক্রয় চাপ দেখা দেয়, পর দিনও তা অব্যাহত থাকে।
মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে লেনদেন ছাড়ায় ৮১৮ কোটি ৮২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা আগের দিন যা ছিল ৭০০ কোটি ৭৬ লাখ ২৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ দুই দিনেই লেনদেন বেড়েছে দুই শ কোটি টাকার বেশি।
দিন শেষে ১৯৯টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির পর ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্সে যোগ হয়েছে ২২ পয়েন্ট, আগের দিন বেড়েছিল ১৯ পয়েন্ট।
গত তিন সপ্তাহ ধরেই দুর্বল কোম্পানির দর বৃদ্ধির যে প্রবণতা দেখা গেছে, সেখান থেকে অবশ্য বের হতে পারেনি পুঁজিবাজার। সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে পাঁচটিই লোকসানি, যেগুলোর লভ্যাংশের ইতিহাস কোনোভাবেই আশাপ্রদ নয়।
পুঁজিবাজারে গত সেপ্টেম্বর থেকে মন্দার মধ্যে গত ৯ জুন বাজেট প্রস্তাবের আগে আগে বাজারে শেয়ারদর ও সূচক এবং লেনদেন বাড়তে থাকে। গত সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া সংশোধন, এরপর ইউক্রেনে রুশ হামলা, শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মনস্তাত্ত্বিক চাপ কাটিয়ে উঠার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে ১৯ বছর পর বদলির খবর আসে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুঁজিবাজার নিয়ে রক্ষণশীল নানা সিদ্ধান্তের পেছনে তার ভূমিকা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
তবে আগামী অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ না রাখার ঘটনায় ছড়ায় হতাশা। কমপক্ষে ১০ শতাংশ শেয়ার ছেড়েছে, এমন কোম্পানির করপোরেট কর ২ শতাংশ কমানো ছাড়া পুঁজিবাজার নিয়ে আর কোনো কথাই বলেননি অর্থমন্ত্রী। আবার এই সুবিধা ব্যাংক, বিমা, আর্থিক খাত, টেলিযোগাযোগ ও তামাক কোম্পানি পাবে না।
বাজেট পেশের পর টানা দরপতনের মধ্যেও ১৬ জুন পর্যন্ত লেনদেন বাড়ছিল। সেদিন একমাস পর লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়।
কিন্তু দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটির পর পরের কর্মদিবস ১৯ জুন থেকে লেনদেনে ক্রমাগত ভাটা পড়তে থাকে। এর মথ্যে গত রোববার তা নেমে আসে ৫৯৪ কোটি ৩৭ লাখ ৯০ হাজারে। গত ২৬ মের পর এত কম লেনদেন কখনও হয়নি।
পর দিনই লেনদেনের গতি ছিল কম। তবে বেলা দুইটা থেকে হঠাৎ দেখা দেয় ক্রয়চাপ। শেষ আধা ঘণ্টায় দুই শ কোটি টাকার মতো শেয়ার হাতবদল হয়।
পরদিন দিনভর বাজার ছিল ইতিবাচক। প্রথম ১৮ মিনিটেই সূচক বাড়ে ৩০ পয়েন্ট। এরপর উঠানামা করতে করতে লেনদেন এগিয়ে যায়। লেনদেন শেষ হওয়ার একেবারে আগ মুহূর্তেও তা আগের দিনের চেয় ৩১ পয়েন্ট বেশি ছিল। তবে শেষ মুহূর্তের সমন্বয়ে সেখান থেকে কিছুটা কমে শেষ হয় লেনদেন।
মঙ্গলবারের লেনদেন নিয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিদের চিফ অপারেটিং অফিসার মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, 'জুনের এই সময়টাতে আমরা লক্ষ্য করে দেখেছি যে, অনেক ফান্ড ইনজেক্ট হয়। জুন ক্লোজিংকে টার্গেট করে বিনিয়োগকারীরা কিছু কোম্পানি বিনিয়োগের জন্য বেছে নেন। ফলে প্রতি বছরই কিছু ফান্ড ইনভেস্ট হয় পুঁজিবাজারে, যার কারণে লেনদেন বাড়ছে। তবে এই বছর তুলনামূলক ফান্ডের ইনজেকশন কম।'
দুর্বল কোম্পানিগুলোর ধারাবাহিক দর বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, 'বাজারে মৌলভিত্তির শেয়ারগুলোর মুভমেন্ট কম হচ্ছে, যার কারণে দুর্বল কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দর বাড়ছে। মৌলভিত্তির শেয়ার যে সব বিনিয়োগকারী ধরে রেখেছেন, তাদের হয়তো প্রত্যাশা পূরণ হয়নি, আরও অপেক্ষা করতে চাচ্ছেন।'
বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজেট ভাবনা খুব একটা আছে বলেও মনে করেন না মাহবুব উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই পুঁজিবাজারের জন্য ভালো কিছু থাকে না। ফলে এ নিয়ে বিনিয়োগকারীরা খুব বেশি ভাবছেন বলে মনে হয় না।’
দরপতনের শীর্ষে আবার লোকসানি কোম্পানি
গত তিন সপ্তাহ ধরে লোকসানি কোম্পানির দর বৃদ্ধির যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, তার আরও একটি নমুনা দেখা গেল এদিন।
সবচেয়ে বেশি ৯.৯৪ শতাংশ দর বেড়েছে নতুন তালিকাভুক্ত মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের। লেনেদেন শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই দর বেড়েছে সর্বোচ্চ পরিমাণ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯.৮৭ শতাংশ দর বেড়েছে ২০১০ সালের পর থেকে কখনও লভ্যাংশ দিতে না পারা ইমাম বাটন।
লোকসানি খান ব্রাদার্সের দর ৯.৭৫ শতাংশ, বন্ধ থাকা কোম্পানি অ্যাপোলো ইস্পাত ৭.৯৫ শতাংশ, ইস্টার্ন ক্যাবলের দর ৬.০৭ শতাংশ এবং অলিম্পিক অ্যাকসেসোরিজের দর বেড়েছে ৫.৩৫ শতাংশ।
এর বাইরে ইয়ানিক পলিমারের দর ৯.৭৬ শতাংশ, দেশবন্ধু পলিমারের ৬.০১ শতাংশ, অ্যামবি ফার্মার দর ৫.৯৫ শতাংশ এবং রূপালী লাইফের দর বেড়েছে ৪.৯৮ শতাংশ।
খাতওয়ারি হিসাব করলে সবচেয়ে ভালো দিন গেছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৭টির, কমেছে চারটির আর দুটির দর ছিল অপরিবর্তিত।
ভালো দিন গেছে প্রকৌশল খাতেও। এই খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৩০টির। কমেছে ৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩টির দর।
ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২৩টির, কমেছে সাতটির আর অপরিবর্তিত থাকে একটির দর।
বস্ত্র খাতে দর বেড়েছে ৩২টি কোম্পানির, কমেছে ১৫টির, অপরিবর্তিত থাকে ১২টির।
ব্যাংক, আর্থিক ও খাদ্য খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। আগের দিন সাধারণ বিমা খাত চাঙা থাকলেও এদিন এই খাতে দেখা গেছে নিম্নমুখি প্রবণতা।
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি থেকে দর পতনের সর্বোচ্চ সীমায়
এই তালিকার শীর্ষে ছিল আর্থিক খাতের আইপিডিসি, যার দর কমেছে সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ৫৫ টাকা। কমার সুযোগ ছিল ১ টাকা ১০ পয়সা। কমেছে ততটাই।
কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ, সাভার রিফ্রাকটরিজ, এস আলম কোল্ডরোল স্টিল, নিউলাইন ক্লথিং, প্রগ্রেসিভ লাইফ, জনতা ইন্স্যুরেন্স, সিএপিএমআইবিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ফরচুন সুজ, ডেফোডিল কম্পিউটারস এবং গ্লোবাল হেভি ক্যামিকেলসের দরও কমেছে এক দিন যতটা কমা সম্ভব ততটাই।
এই ১০টির মধ্যে দুটি কয়েকটি কোম্পানি আগের দিন সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধির তালিকায় ছিল। এর মধ্যে সিএপিএমআইবিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর ৬.৮৯ সাভার রিফ্রাকটরিজের দর আগের দিন ৬.১৯ শতাংশ বেড়েছিল।
অন্যদিকে লোকসানি গ্লোবাল হেভি ক্যামিকেলসের দর গত কয়েক দিন ধরেই বাড়ছিল। গত ২১ জুন শেয়ারদর ছিল ৩১ টাকা ১০ পয়সা। তিন কর্মদিবসে বেড়ে ৩৭ টাকা ৭০ পয়সা হয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন:টানা পাঁচ কর্মদিবস লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমার পর একই প্রবণতা ছিল সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার। লেনদেন শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা বাকি থাকতে কোনো রকমে টেনেটুনে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়ায় লেনদেন। কিন্তু পরের আধা ঘণ্টায় পাল্টে যায় পুরো চিত্র।
শেষ আধা ঘণ্টায় ২০০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেনের পাশাপাশি দিনভর সূচকের টানাটানির মধ্যে ১ ঘণ্টা টানা বাড়ল সূচক।
বেলা দেড়টার সময়ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক আগের দিনের চেয়ে ৩ পয়েন্ট কম ছিল এবং তা ক্রমেই নিচে নামছিল। কিন্তু সেখান থেকে শেষ ১ ঘণ্টায় সূচক বাড়ে ২২ পয়েন্ট। আর আগের দিনের চেয়ে ১৯ পয়েন্ট যোগ করে শেষ হয় লেনদেন।
বস্ত্র, সাধারণ বিমা, প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ারধারীরা হাসিমুখে শেষ করেছেন লেনদেন। শেষ পর্যন্ত যে ২৩১টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে, তার মধ্যে একটি বড় অংশই এই তিন খাতের।
বস্ত্র খাতে ৫৯টি কোম্পানির মধ্যে বাড়ে ৪৭টির দর, অপরিবর্তিত থাকে সাতটির দর, কমে পাঁচটির।
সাধারণ বিমা খাতের ৪১টি কোম্পানির মধ্যে বাড়ে ৩৮টির দর, কমে দুটির আর একটির দর থাকে অপরিবর্তিত।
ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৩১টি কোম্পানির মধ্যে বাড়ে ১৯টির দর। অপরিবর্তিত থাকে চারটির দর আর দর হারায় আটটি কোম্পানি।
বেশ কয়েক দিন চাপে থাকার পর ব্যাংক খাতেও কিছুটা হাঁফ ছেড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এই খাতে তিনটি কোম্পানির দর হারানোর বিপরীতে বাড়ে ১৭টি। তবে দর বৃদ্ধির হার খুবই কম।
আর্থিক খাতে পাঁচটির দর হারানোর বিপরীতে বেড়েছে ১১টির দর। এ ছাড়া প্রধান বাকি সব খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা।
এদিন প্রবণতা বলতে আবার দুর্বল ও স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে অনেকটাই। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে টানা ছয় বছর লোকসান দেয়ার পর চলতি বছর সামান্য মুনাফা দেখানো অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির পাঁচটিই হয় লোকসানি, ৯ টানা লোকসানের মধ্যে সামান্য মুনাফার মুখ দেখা কোম্পানি, যেগুলোর লভ্যাংশের ইতিহাস বেশ হতাশাজনক।
দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ৭০০ কোটি ৭৬ লাখ ২৭ হাজার টাকার শেয়ার, যা আগের দিনের চেয়ে ১০৬ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা বেশি।
গত ১৬ জুন লেনদেন ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর পুঁজিবাজারে আশার সঞ্চার হলেও এর পরদিন থেকে প্রতিদিনই লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমেছে।
দিনভর দেখা গেছে উত্থান-পতন। প্রথম ৪৮ মিনিটেই আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১০ পয়েন্ট সূচক হ্রাস পায়। পরবর্তী ২ ঘণ্টায় হারানো দর ফিরে পেতে থাকে শেয়ারগুলো। দুপুর ১২টা ৫ মিনিট পর্যন্ত সময়ে সূচকে যোগ হয় ৩১ পয়েন্ট। তবে সেটা স্থায়ী হয়নি। আবারও দরপতনে সূচক থেকে বেলা দেড়টার মধ্যে ৩ পয়েন্ট হারিয়ে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রয় চাপে কিছুটা উত্থানে শেষ হয়েছে লেনদেন।
ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা-সিইও সুমন দাস বলেন, ‘ভলিউমটা অনেক কম হয়ে যাচ্ছে, লেনদেন ৮০০ কোটির নিচে ঘোরাফেরা করছে। প্রফিট গেইন, অ্যাডজাস্টমেন্ট এবং মানি মার্কেট অনেক কঠিন হয়ে যাওয়ার কারণে এমনটা ঘটছে।’
দুর্বল কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিষয়ে মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন বলেন, ‘চাহিদা বাড়লে অনেক সময় দুর্বল কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে। তবে ধারাবাহিক এমন দর বৃদ্ধি অবশ্যই সন্দেহজনক। এগুলোর পেছনে অনৈতিক কিছু ঘটা অস্বাভাবিক নয়। আর এমন দাম বাড়ার কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও এটার পেছনে দৌড়ান।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষে আবার দুর্বল কোম্পানি
সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়েছে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের। ২০১৫ সালে ৪ শতাংশ নগদ ও ৬ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশের পর আর লভ্যাংশের মুখ দেখেননি বিনিয়োগকারীরা। টানা ছয় বছর লোকসান দেয়ার পর চলতি বছর সামান্য মুনাফা দেখিয়েছে কোম্পানিটি।
গত ২১ জুন থেকে ধারাবাহিক দর বাড়ছে শেয়ারের। ওই দিন ২২ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হওয়া শেয়ার আজ সর্বশেষ হাতবদল হয়েছে ২৫ টাকা ৫০ পয়সায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে পুঁজিবাজারে নতুন তালিকাভু্ক্ত কোম্পানি মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের। এ নিয়ে টানা ১৪ কর্মদিবস দিনের সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত বাড়ল মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর। গত ৮ জুন ১০ টাকায় লেনদেন শুরু করে কোম্পানিটি।
রোববার ৩৩ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হওয়ার পরদিন ক্লোজিং প্রাইস দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা ২০ পয়সা।
এর পরেই ৭ দশমিক ৮০ শতাংশ দর বেড়েছে লোকসানি সোনারগাঁও টেক্সটাইলসের। গত পাঁচ বছরে লোকসানে থাকলেও ২০১৯ সালে ৩ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়। আর চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে কিছুটা আয় দেখিয়েছে কোম্পানি।
আর্থিক সঙ্গতি ভালো না হলেও সাত মাস ধরে দর বাড়ছে সোনারগাঁও টেক্সটাইলসের। গত বছরের ২২ নভেম্বর ১৬ টাকা ৭০ পয়সায় শেয়ার লেনদেনের পর কিছুটা ওঠনামা করলেও ধারাবাহিক বেড়েছে দাম।
রোববার ৪১ টাকা বেচাকেনা হওয়া শেয়ার আজকে হাতবদল হয়েছে ৪৪ টাকা ২০ পয়সায়।
প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। এ নিয়ে টানা চার কর্মদিবস ফান্ডটির ইউনিট দর বাড়ল। ১৭ টাকা ১০ পয়াস থেকে হাতবদল হয়েছে ১৮ টাকা ৪০ পয়সায়। ২০০৯ সালে তালিকাভুক্ত হলেও ২০১৪ সাল থেকে ধারাবাহিক লভ্যাংশ দিয়ে আসছে কোম্পানিটি।
দর বৃদ্ধির তালিকায় পরের স্থানেই রয়েছে আরেক মিউচ্যুয়াল ফান্ড সিএমপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড। ২০১৯ ও ২০২১ সালে মুনাফা হওয়া বিনিয়োগকারীরা যথাক্রমে ৮ শতাংশ ও ১৩ শতাংশ লভ্যাংশ পেয়েছেন। তবে মাঝে ২০২০ সালে শেয়ারপ্রতি ৪৮ পয়সা লোকসানের কারণে ওই বছর কোনো লভ্যাংশ দেয়া হয়নি।
আগের দিনের মতো আজকেও দর বৃদ্ধির তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে সাভার রিফ্যাক্টরিজ। রোববার ২৩৪ টাকায় হাতবদল হওয়া শেয়ারের দর ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়ে লেনদেন হয়েছে ২৪৭ টাকায়।
১ কোটি ৩৯ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনোদিন লভ্যাংশ দিতে পারেনি। তারপরেও অজানা কারণে শেয়ারটির দাম অনেক বেশি।
দর বৃদ্ধির তালিকার সপ্তম স্থানে থাকা রহিমা ফুডের দর ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়ে ২৭৩ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে।
গত ৫ বছরের মধ্যে তিন বছরই লোকসান দিয়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানির মালিকানা পরিবর্তনের পাশাপাশি ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কোম্পানি জানায়, ট্রায়াল প্রোডাকশন শেষে কোম্পানি ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে নারকেল তেল উৎপাদন ও বিপণন করবে। সঙ্গে সয়াবিন ও মাস্টার্ড অয়েল বোতলজাত ও বিপণনের কথা বলা হয়।
এরপর ৩১ মে ডিএসইর নিউজে আবার বলা হয়, ৩১ মে ট্রায়াল প্রোডাকশনের পরে কাজু বাদাম প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্যাকিং এব দেশে-বিদেশে বিপণনের জন্য বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে কোম্পানি।
এ ছাড়া প্রাইম টেক্সটাইল, জুট স্পিনার্স ও মালেক স্পিনিং মিলসের দর ৫ শতাংশের বেশি বেড়ে যথাক্রমে ৩২ টাকা ৬০ পয়সা, ১৪৪ টাকা ৫০ পয়সা এবং ৩০ টাকা ২০ পয়সায় হাতবদল হয়েছে।
দর পতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে ফরচুন সুজ লিমিটেড। শেয়ারটির দর ১ টাকা ৯০ পয়সা বা ২ শতাংশ কমেছে। সর্বশেষ ৯৩ টাকা ৩০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। এদিন ৪৩৯ বারে কোম্পানিটির ২ লাখ ৭৯ হাজার ৬৯৪টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যার বাজার মূল্য ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
এমারেল্ড অয়েল লুজার তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ৯০ পয়সা বা ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে সর্বশেষ ৪৪ টাকা ৬০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা পেপার প্রসেসিং লুজারের দর ৩ টাকা ৫০ পয়সা বা ১.৯৮ শতাংশ কমেছে। শেয়ারের ক্লোজিং প্রাইস দাঁড়িয়েছে ১৭৩ টাকা ৫০ পয়সা।
দর পতনের শীর্ষ দশের অন্য কোম্পানি হলো- বিডি মনোস্পুল পেপার, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, ফাইন ফুডস, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্কস ও সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ৩ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ওয়ালটন হাইটেক। দর কোম্পানিটির শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ দর বেড়েছে।
বেক্সিমকো সুকুক বন্ডের দর ৫ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৩১ পয়েন্ট।
ব্র্যাক ব্যাংক সূচকে যোগ করেছে ২ দশমিক ০৫ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ২ দশমিক ০৬ শতাংশ।
এ ছাড়া রেনাটা, ইউনাইটেড পাওয়ার, পূবালী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ইউনিক হোটেল, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস ও লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ৭ পয়েন্ট সূচক কমেছে গ্রামীণফোনের কারণে। কোম্পানিটির দর কমেছে শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট কমিয়েছে বার্জার পেইন্টস। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ।
বিকন ফার্মার দর ১ দশমিক ১৫ শতাংশ দর কমার কারণে সূচক কমেছে ১ দশমিক ১৮ পয়েন্ট।
এ ছাড়া রবি, আইসিবি, আইপিডিসি, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল ব্যাংক ও ফরচুন সুজের দরপতনে সূচক কিছুটা কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি কমিয়েছে ১৪ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:ইসলামী ফাইন্যান্স উইং খোলার অনুমোদন পেয়েছে ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড-এসএফআইএল।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের পরিচালক জুলকার নায়েন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
এসএফআইএলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লেখা চিঠিতে বলা হয়, “এসএফআইএলর আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে 'ইসলামী ফাইন্যান্স উইং' খোলার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হলো।”
স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্সের এমডি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইরতেজা আহমেদ খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রাহকরা এখন ইসলামী ধারার লেনদেন বেশি পছন্দ করছে। মুসলিমপ্রধান দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের অনেক মানুষ সুদের সঙ্গে যুক্ত হতে চান না, ইসলামী লেনদেনে আস্থা পান তারা। এজন্য আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকে ইসলামী ফাইন্যান্স উইং খোলার আবেদন করি।’
তিনি জানান, তাদের ৯৮ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার প্রাতিষ্ঠানিক। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ কানাডা ও আমেরিকার সরাসরি বিনিয়োগ (এফডিআই) রয়েছে। আর বাকি ২ শতাংশ ব্যক্তিকেন্দ্রিক। ফলে সুশাসন ও ব্যবস্থাপনা পরিধি নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হয়। এটা আমাদের শক্তি। আমানতকারীদের আস্থা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটা একটা ভালো উদাহরণ।
দেশে আর্থিক খাতের বয়স বিবেচনায় এসএফআইএল নবীন। ‘স্বচ্ছতার বন্ধন’– এই স্লোগান সামনে রেখে করোনার মধ্যে যাত্রা শুরু করে এসএফআইএল। তবে এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি তার পরিচালন দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং গ্রাহকসেবার ক্ষেত্রে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আমানত সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রেও মিলেছে কাঙিক্ষত সাফল্য।
অতি সতর্কভাবে ঋণ বিতরণ করায় প্রতিষ্ঠার দেড় বছর পরেও প্রতিষ্ঠানটির বিতরণকৃত ঋণের এক টাকাও খেলাপি হয়নি।
অনুমোদন পেতে যেসব কাজ করতে হবে
ইসলামী ফাইন্যান্স উইং খোলার জন্য এসএফআইএলকে কিছু কার্যক্রম নিতে হবে বলে চিঠিতে বলা হয়।
এগুলো হলো:
>> এসএফআইএলকে নিবন্ধিত সংঘ-স্মারক সংশোধনপূর্বক ইসলামী শরীয়াহভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনাকে কোম্পানির অন্যতম ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য হিসেবে সংযুক্ত করতে হবে;
>>কোম্পানির সংঘ-বিধি সংশোধন করে একটি স্বতন্ত্র শরীয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটি গঠন করতে হবে;
>> ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ে একটি পৃথক ইসলামী অর্থায়ন বিভাগ গঠন করতে হবে;
>>কী কী আমানত, ঋণ, লিজ, বিনিয়োগ, ফাইন্যান্সিং সুবিধা প্রদান করা হবে তা সংবলিত প্রোডাক্ট পলিসি গাইডলাইন প্রণয়ন;
>>বিদ্যমান তহবিল থেকে প্রস্তাবিত ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসার পৃথক তহবিল গঠন;
>> শরীয়াহ ভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটি অপারেশনাল ম্যানুয়াল প্রণয়ন;
>>আমানত ও বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফার হার নির্ধারণ বা হিসাবায়নের নীতিমালা প্রণয়ন;
>>ইসলামী শরীয়ারভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসার জন্য পৃথক হিসাবরক্ষণ নীতি ও পদ্ধতি গ্রহণপূর্বক পৃথক আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত;
>> বাংলাদেশ ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং নীতিমালার আলোকে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে;
>> ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনার জন্য পূর্ণাঙ্গভাবে প্রস্তুতি করা হয়েছে মর্মে স্বতন্ত্র শরীয়াহ সুপারভাইজরি কমিটি কর্তৃক প্রত্যয়নপত্র দাখিল;
এবং
>>নীতিগত অনুমোদন পা্ওয়ার ছয় মাসের মধ্যে এসব নির্দেশনা পরিপালনপূর্বক 'ইসলামী ফাইন্যান্স উইং’ এর মাধ্যমে ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের চূড়ান্ত অনুমোদন নিতে হবে।
আরও পড়ুন:দেশের পুঁজিবাজারে এক্সচেঞ্জ ট্রেডিং ফান্ড-ইটিএফ প্রডাক্ট চালুর লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডন গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের সঙ্গে বৈঠক করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
রোববার প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা-সিইও মরিস পটের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
বৈঠকে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, মিজানুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ উদ্দেশ্যে গঠিত এক ধরনের কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিম বা সমন্বিত বিনিয়োগ তহবিলকে বলা হচ্ছে ইটিএফ। এ ধরনের তহবিল থেকে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ার বা নির্দিষ্ট সূচক অন্তর্ভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা হয়।
মিউচুয়াল ফান্ডের মতো এ তহবিল ব্যবস্থাপনারও দায়িত্বে থাকে সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান। ওই সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান তহবিলের অর্থ আইন অনুযায়ী নির্ধারিত শেয়ারে বিনিয়োগ করে। ইটিএফ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে তহবিলটির ইউনিট কেনাবেচার সুযোগ পাবেন।
এটি মেয়াদি বা বেমেয়াদি উভয় ধরনেরই হতে পারে। তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে এ ধরনের তহবিলে। কোথাও কোথাও এটির বিনিয়োগকে নির্দিষ্ট সূচক বা ইনডেক্সভিত্তিক করা হয়।
বৈঠকে মরিস পট বাংলাদেশে ইটিএফ চালুকরণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা প্রদান, নলেজ ট্রান্সফার বা জ্ঞান স্থানান্তরে প্রশিক্ষণ এবং ইটিএফে বিনিয়োগের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বিএসইসি জানায়, ইটিএফ চালুর ক্ষেত্রে বাজার সৃষ্টিকারী বা মার্কেট মেকার প্রয়োজন হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বনামধন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাজার সৃষ্টিকারী সনদপ্রাপ্তির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যা সভায় আলোচনা হয়েছে। বাজার সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা প্রদানের বিষয়েও মরিস পট আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বিনিয়োগকারীরা যেন সর্বোচ্চ মুনাফা পান, সে জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে ইটিএফ গঠনের ক্ষেত্রে পরিচালন ব্যয় আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখার বিষয়ে সভায় গুরুত্বারোপ করা হয়।
বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বৈঠকে বলেন, ‘ইটিএফে বিনিয়োগ তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ইটিএফ খুবই জনপ্রিয় একটি বিনিয়োগ পণ্য হিসেবে বিনিয়োগকারীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করবে।’
বিএসইসি চেয়ারম্যান মনে করেন, নতুন এ বিনিয়োগ পণ্যটি এলে তা বাজারের স্থিতিশীলতা, বৈচিত্র্য সৃষ্টি ও তারল্যপ্রবাহ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, ‘ইটিএফ গঠন ও বাজার সৃষ্টিকারী সনদ প্রদানে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে কমিশনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতাসহ ফাস্ট ট্র্যাক সেবা প্রদান করা হবে বলে।’
আরও পড়ুন:আবার দরপতনের মধ্য দিয়ে সপ্তাহ শুরু হলো পুঁজিবাজারে। টানা তিনটি সপ্তাহে এই প্রবণতা দেখা গেল।
এদিন এমন কোনো খাত ছিল না, যেটি দরপতনের মধ্য দিয়ে যায়নি। এর মধ্যে গত দুই সপ্তাহের মতোই দুর্বল বা স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ারে উল্লম্ফন দেখা যায়।
সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে কোনোটিই মৌলভিত্তির কোম্পানি নয়। এর মধ্যে ৬টিই লোকসানি কোম্পানি, যেগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ কেবল গত বছর নয়, এক যুগেও লভ্যাংশ দিতে পারেনি।
কেবল সবচেয়ে বেশি ১০টি নয়, সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে-এমন ২০টি কোম্পানির ক্ষেত্রেও দেখা গেছে একই চিত্র।
কেবল সূচকের পতন নয়, টানা ষষ্ঠ দিন কমল লেনদেন। সেটি নেমে এলো ছয় শ কোটির নিচে। গত ২৬ মের পর ২০ কর্মদিবসে কখনও এত কম লেনদেন হয়নি।
৯৪টি শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৩০টির দর। ৫৭টির দর ছিল অপরিবর্তিত।
চলতি অর্থবছরের শেষ মাসে জুনকে ঘিরে সমন্বয়, আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সংযোজন বিয়োজন করে পাস, মুদ্রানীতিসহ নানা বিষয় বিনিয়োগকারীদের হিসাবনিকাশে। এ কারণে এই মুহূর্তে শেয়ার না কিনে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন তারা। যে কারণে লেনদেন নেমে এসেছে তলানিতে।
দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ৫৯৪ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার টাকার শেয়ার। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন ছিল ৬৮৩ কোটি ৭৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।
গত ১৬ জুন লেনদেন এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর পুঁজিবাজারে আশার সঞ্চার হলেও এর পরদিন থেকে প্রতিদিনই লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমেছে।
দরপতনের আগের বহুদিনের মতোই শেয়ারদর ও সূচক বেড়েই শুরু হয় দিনের লেনদেন। তবে সেটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে প্রথম ১৬ মিনিটে সূচক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে থাকলেও এরপর থেকে কেবলই কমেছে। লেনদেনের গতি শুরু থেকেই ছিল মন্থর। শেষ পর্যন্ত বহাল থাকে তা।
শেষ পর্যন্ত সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৬ পয়েন্ট কমে শেষ হয় লেনদেন। বেলা শেষে সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩০১ পয়েন্ট, যা গত ২৬ মের পর সর্বনিম্ন।
সেদিন সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২৩৭ পয়েন্ট। সেদিনের পর থেকে বাজার কিছুদিন ছিল চাঙা।
এক্সপো ট্রেডার্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা-সিইও শহিদুল হোসেন বলেন, ‘বাজেট নিয়ে এখনও নানা আলোচনা চলছে। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের পক্ষ থেকে এখনও অনেক দাবি তোলা হচ্ছে। যার কারণে বাজেটে কী হবে তা নিয়ে একটি অস্থিরতা রয়েছে বিনিয়োগকারীদের মনে। তারা হয়তো বাজেটে কী হয় তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের নিজেদের গুটিয়ে নেয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে, কোম্পানির আর্থিক বছর শেষের বিষয়টি। জুলাইয়ে শুরু হবে নতুন বছর। কোম্পানিগুলো তার আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। এটার ওপর নির্ভর করে অনেক বিনিয়োগকারী সিদ্ধান্ত নেবেন যে, পরবর্তীতে কী করবেন।’
দুর্বল কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়ে মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন বলেন, ‘কেন এসব শেয়ারের দাম বাড়ে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। নিশ্চয় এটা কোনো স্বাভাবিক কারণে বাড়ছে না। কেন বাড়ছে সেটা সবাই জানে, তারপরও মানুষ সেসব শেয়ারই কেনেন।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষে যেসব কোম্পানি
সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়েছে গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেডের দর। এ নিয়ে টানা চার কর্মদিবস শেয়ারের দর বাড়ল কোম্পানিটির। বৃহস্পতিবার ৩৪ টাকা ৩০ পয়সায় বেচাকেন হয়েছিল, সেটি আজকে দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা ৭০ পয়সায়।
লোকসানের কারণে ২০২১ সালে লভ্যাংশ দেয়নি। চলতি অর্থবছরের তিন প্রান্তিক পর্যন্তও কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়েছে পুঁজিবাজারে নতুন তালিকাভু্ক্ত কোম্পানি মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের। বৃহস্পতিবার দিনের সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ার হাতবদল হয় ৩০ টাকা ৯০ পয়সায়। সেটি আজ লেনদেন হয়েছে ৩৩ টাকা ৯০ পয়সায়।
এ নিয়ে টানা ১৩ কর্মদিবস দিনের সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত বাড়ল মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর। গত ৮ জুন ১০ টাকায় লেনদেন শুরু করে কোম্পানিটি।
এক যুগেও লোকসানের কারণে লভ্যাংশ দিতে না পারা মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের দর বেড়েছে দিনের তৃতীয় সর্বোচ্চ। ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়ে হাতবদল হয়েছে ২৯ টাকা ১০ পয়সায়।
কোম্পানির শেয়ারে প্রাতিষ্ঠানিক, বিদেশি বা সরকারি বিনিয়োগ নেই। অর্ধেক শেয়ার উদ্যোক্তা পরিচালক ও বাকি অর্ধেক সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
তালিকার চতুর্থ স্থানে থাকা প্রাইম টেক্সটাইল স্পিনিং মিলসের দর বেড়েছে ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ। বৃহস্পতিবার শেয়ারের ক্লোজিং প্রাইস ছিল ২৮ টাকা ৩০ পয়সা, সেটি রোববার দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকা ৯০ পয়সায়।
২২ মে থেকে কোম্পানির শেয়ারদর ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ওই দিন ২৪ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল প্রতিটি শেয়ার। কোম্পানির শেয়ারের দাম মাঝে মধ্যেই ওঠানামা করে যদিও গত দুই বছরে এর লভ্যাংশ প্রদানের ইতিহাস খুব বেশি ভালো নয়। ২০২০ সালে ১ শতাংশ ও ২০২১ সালে মাত্র ২ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে।
এর পরেই ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ দর কমেছে ফু-ওয়াং ফুডসের। ২৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে ২৫ টাকা ৫০ পয়সায়। কোম্পানির লভ্যাংশের পরিমাণ খুবই নগণ্য।
ষষ্ঠ স্থানে থাকা সাভার রিফ্যাক্টরিজ লিমিটেডের দর বেড়েছে ৮ দশমিক ১৮ শতাংশ। আগের দিন ২১৬ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হওয়া শেয়ারটি আজ লেনদেন হয়েছে ২৩৪ টাকায়।
১ কোটি ৩৯ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনোদিন লভ্যাংশ দিতে পারেনি। তারপরেও শেয়ারটির শেয়ারদর প্রায়ই লাফায়।
আরেক লোকসানি মেঘনা পেটের দর ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৫ টাকা ৫০ পয়সায়। বিনিয়োগকারীদের কোনোদিনই লভ্যাংশ দিতে পারেনি ২০০১ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি।
শেয়ারটির দর প্রায়ই ওঠানামা করে। ২৫ মে থেকে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে দর। ওই ২২ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল।
এ ছাড়া মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস, আরামিট সিমেন্ট এবং বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোডসের দর ৬ শতাংশের মতো কমে যথাক্রমে ৩০ টাকা, ৩৩ টাকা ৩০ পয়সা এবং ২৩ টাকায় হাতবদল হয়েছে।
দর পতনের শীর্ষ ১০
দরপতনের শীর্ষে রয়েছে ফাস ফাইন্যান্স লিমিটেড। আজ শেয়ারটির দর ১০ পয়সা বা ২ শতাংশ কমেছে। ৭১ বারে কোম্পানিটির ২ লাখ ৩৬ হাজার ১৪৭টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যার বাজার মূল্য ১১ লাখ টাকা। কোম্পানিটির সর্বশেষ দর দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৯০ পয়সা।
বিকন ফার্মাসিটিক্যালস তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। দর ৫ টাকা ৩০ পয়সা বা ২ শতাংশ কমেছে। শেয়ারটি সর্বশেষ ২৬০ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়।
তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা পেপার প্রসেসিংয়ের দর ৩ টাকা ৬০ পয়সা বা ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমেছে। শেয়ারটি সর্বশেষ ১৭৭ টাকা লেনদেন হয়।
তালিকার শীর্ষ দশের অন্য কোম্পানি হলো- সোনালী পেপার, এইচ আর টেক্সটাইল, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, তমিজ উদ্দিন টেক্সটাইল, বিডি মনোস্পুল পেপার, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।
সূচক কমাল যারা
সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ৫ পয়েন্ট কমেছে বেক্সিমকো লিমিটেডের কারণে। কোম্পানিটির দর কমেছে ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৯ পয়েন্ট কমিয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
ম্যারিকোর দর ১ দশমিক ৮১ শতাংশ দর কমার কারণে সূচক কমেছে ৩ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট।
এ ছাড়া লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, বিকন ফার্মা, তিতাস গ্যাস, রবি, পূবালী ব্যাংক, বেক্সিমকো গ্রিণ সুকুক ও পাওয়ার গ্রিডের দরপতনে সূচক কিছুটা কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি কমিয়েছে ২৬ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ২ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে গ্রামীণফোন। এদিন কোম্পানিটির শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ দর বেড়েছে।
ওয়ালটন হাইটেকের দর শূন্য দশমিক ৭১ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট।
স্কয়ার ফার্মা সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ৭১ পয়েন্ট।
এ ছাড়া ব্র্যাক ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ব্যাংক এশিয়া, লুব রেফ বাংলাদেশ লিমিটেড, সিটি ব্যাংক, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল এবং ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য