বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশংসাপত্র পেয়েছে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অফ বাংলাদেশ লিমিটেড বা এক্সিম ব্যাংক।
কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহে গঠিত পাঁচ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের ঋণ বিতরণে শতভাগ সাফল্য অর্জন করায় এ প্রশংসাপত্র দেয়া হয় ব্যাংকটিকে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়ার হাতে প্রশংসাপত্র তুলে দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
রোববার ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা এবং খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহের উদ্দেশ্যে পাঁচ কোটি টাকার প্রণোদনামূলক বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করা হয়। এক্সিম ব্যাংক এ তহবিলের আওতায় ১০১ দশমিক ১৯ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর একেএম সাজেদুর রহমান খান, নির্বাহী পরিচালক আওলাদ হোসেন চৌধুরী, কৃষি ঋণ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আবদুল হাকিম উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব থেকে ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা দেয়ার সীমা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে বিকাশ, রকেটের মতো মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাংক হিসেবে দৈনিক যত খুশি ততবারে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পাঠাতে পারবেন গ্রাহকরা। আগে এ সীমা ছিল ৩০ হাজার টাকা। তবে আগের মতো মাসে সর্বোচ্চ লেনদেন তিন লাখ টাকা রাখার সুযোগ অপরিবর্তিত আছে।
মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ।
নির্দেশনাটি সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সব মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রোভাইডারের কাছে পাঠানো হয়।
নতুন এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
আগের অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে বলে সার্কুলারে বলা হয়েছে।
আগে এক নির্দেশনায় বলা হয়, মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকেরা এজেন্ট পয়েন্টের মাধ্যমে দৈনিক ৩০ হাজার টাকা ও মাসে ২ লাখ টাকা জমা করতে পারবেন। আর ব্যাংকের হিসাব বা কার্ড থেকে দিনে ৫০ হাজার টাকা ও মাসে ৩ লাখ টাকা জমা করা যাবে।
গ্রাহকেরা দৈনিক ২৫ হাজার টাকা ও প্রতি মাসে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
এমএফএসের গ্রাহকেরা একে অপরকে অর্থাৎ ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে (পিটুপি) দৈনিক ২৫ হাজার টাকা ও প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা পাঠাতে পারবেন। আগে প্রতি মাসে এমএফএসের একজন গ্রাহক অন্য গ্রাহককে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা পাঠাতে পারতেন।
আরও পড়ুন:এমপ্লয়ি ব্যাংকিং সুবিধার পরিধি বাড়াতে সিটি ব্যাংক ও ইফাদ গ্রুপের মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে।
সম্প্রতি তেজগাঁওয়ের ইফাদ টাওয়ারে সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মারুফ ও ইফাদ গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন আহমেদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তি সই করেন।
সোমবার সিটি ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এই চুক্তির আওতায় ইফাদ গ্রুপের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সিটিজেম প্রায়োরিটি ব্যাংকিংয়ের সুবিধাগুলোও পাবেন।
অনুষ্ঠানে সিটি ব্যাংকের হেড অব রিটেল ব্যাংকিং অরূপ হায়দার, হেড অব কমার্শিয়াল ব্যাংকিং মোহাম্মদ মাহমুদ গণি, হেড অব সিটিজেম ফারিয়া হক, হেড অব এমপ্লয়ি ব্যাংকিং হাসান উদ্দিন আহমেদসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
‘আমি ৪২ বছর যে ঘোড়ায় চড়ে আসছি সেই ঘোড়াটাকে একটু রেস্ট দেব। আমি রেস্ট নেব। তারপর আবার সেই আমি ঘোড়ায় চড়ে সূর্যাস্তের দিকে চলে যাব৷’
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর হিসেবে শেষ কর্মদিবসে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এভাবে অনুভূতি ব্যক্ত করেন ফজলে কবির।
অনুষ্ঠানে সম্মাননীয় অতিথি ছিলেন গভর্নরের সহধর্মিণী সাবেক সচিব মাহমুদা শারমীন বেনু।
বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ ও ডেপুটি গর্ভনররা।
বিদায়ী গভর্নর বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ৬ বছর ৩ মাস দায়িত্ব পালন করেছি। এখানে সবার কাজ খুব উন্নতমানের। তাদের মধ্যে অনেক অতিমেধাবী আছেন। এটা অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ে আমি পাইনি। সবাই কাজ নিবেদিতভাবে করেন। সবাই কাজ খুব উপভোগ করেই করেন। সবার ভালোবাসা আমি পেয়েছি৷
‘আমার এখন বিশ্রাম দরকার। বিশ্রামে তো এখনো আছি। কিন্তু টেনশনমুক্ত বিশ্রাম দরকার।’
২০১৬ সালে চার বছরের জন্য গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক অর্থসচিব ফজলে কবির। ছয় বছরের বেশি সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করলেন তিনি।
দেশের অর্থনীতি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে তার বিশেষ অবদান রয়েছে। ফজলে কবিরের মেয়াদে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছাড়ায়।
অর্থনীতির অন্য সূচকগুলোও দীর্ঘদিন ধরে ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। করোনা মহামারি এবং যুদ্ধের মধ্যেও অর্থনীতিকে সঠিক পথে রাখতে বিচক্ষণতার জন্য প্রশংসিত হয়েছেন ফজলে কবির।
অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদারকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১২ জুলাই তিনি যোগদান করবেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বুথ খোলা হয়েছে।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন শনিবার এ বুথের উদ্বোধন করেন বলে ব্যাংকটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এ সময় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান ভুঁইয়া ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলামসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ডলারের বিপরীতে টাকার মান ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদায়ী গভর্নর ফজলে কবির।
গভর্নরের শেষ কর্মদিবসে রোববার সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাসে ফজলে কবির তৃতীয় গভর্নর যাকে এভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিদায় জানানো হলো। ১১তম গর্ভনর হিসেবে ৬ বছর ৩ মাস দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি ছিলেন গভর্নরের সহধর্মিনী সাবেক সচিব মাহমুদা শারমীন বেনু।
বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ ও
ডেপুটি গর্ভনররা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিদায়ী গভর্নর বলেন, ‘দেখতে দেখতে ৬ বছর ৩ মাস পার হয়ে গেল। আমার মনে হয় এই সেদিন মধ্যরাতে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ফোনে বললেন- সো ইউ আর দি গভর্নর।’
তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আর ডলারের রেট ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ রেখে যাচ্ছি। ব্যাংকের কর্মকর্তারা এটা ঠিক রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’
ফজলে কবির বলেন, ‘ঋণের সুদ হার ৯ শতাংশ করার পর সবাই সমালোচনা করে বলেছিল, এটা সম্ভব না। এরপর মুদ্রানীতিতে এখন নীতি সুদহার বাড়ানো হলেও অনেকে একই কথা বলছেন। তারা বলছেন, ঋণের একক সুদ হার তুলে না নিলে নীতি সুদ বাড়িয়েও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
‘আমি মনে করি এটা কার্যকর সিদ্ধান্ত, যা প্রধান অর্থনীতিবিদ, ডেপুটি গভর্নররা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করবেন বলে আশা করছি।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে ফজলে কবিবের কর্মজীবনের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
গভর্নরের সহধর্মিণী মাহমুদা শারমীন বেনু বলেন, ‘আমার পেশাগত জীবনে কারও বিদায়ে এমন অনেকবার বক্তব্য রেখেছি। কিন্তু আজ সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখাটা ব্যতিক্রম। যে কোনো বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য আবেগময়।’
ব্যক্তিজীবনে ফজলে কবির কেমন- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তিনি বাইরে যেমন ভেতরেও তেমন। এক ও অভিন্ন। তিনি ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে একজন মানবিক মানুষ। অফিসকে তিনি কখনো পরিবারের মধ্যে নিয়ে আসেননি। পরিবারে তিনি আমাদের কর্তা। বাসার সবার বিষয়ে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
‘আমি কবিতা লিখি। সেটার প্রথম পাঠকও তিনি। আমার লেখার কোনো সংশোধন থাকলে তিনি সেটা বলেন।’
গভর্নরকে নিয়ে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পর খুব ক্রান্তিলগ্নে তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। রিজার্ভ চুরির ঘটনা ফজলে কবির আগে খতিয়ে দেখেছেন। মূল ঘটনা সবার সামনে এনেছেন।
‘ফজলে কবির তার সময়ে অনেক নীতিমালা জারি করেছেন। এ কারণে অর্থনীতি গতিশীল রয়েছে।
‘করোনার সময়ে তিনি দক্ষতার সঙ্গে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করেছেন। করোনায় ব্যাংকাররা মারা গেলে ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। পরিবারকে টাকা দেয়ার জন্য বার বার তাগাদা করেছেন। ফলে করোনায় মারা যাওয়া ১৮৯ জন ব্যাংকারের প্রত্যেকের পরিবার ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছে।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘গভর্নর ফজলে কবির মানবিক মানুষ। সমস্যা সমাধানে সবসময়ই সোচ্চার ছিলেন। ব্যাংকারদের ন্যূনতম বেতন কাঠামো করেছেন। এজন্য আমরা সবাই কৃতজ্ঞ।’
২০১৬ সালে চার বছরের জন্য গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক অর্থসচিব ফজলে কবির। সে হিসাবে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ১৯ মার্চ।
তবে মেয়াদ শেষের ৩৪ দিন আগে অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি গভর্নর হিসেবে তার মেয়াদ ৩ মাস ১৩ দিনের জন্য বাড়িয়ে দেয় সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ৬৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি গভর্নর থাকবেন।
ফজলে কবিরের ৬৫ বছর বয়স পূর্ণ হয় ২০২০ সালের ৩ জুলাই। তার আগেই মে মাসে তার দায়িত্বের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়।
অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদারকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১২ জুলাই তিনি যোগদান করবেন।
আরও পড়ুন:ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) হয়েছেন আহমেদ শাহীন।
উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) এবং কর্পোরেট ব্যাংকিং প্রধান থেকে পদোন্নতি পেয়ে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন বলে রোববার ব্যাংকটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
দেশের ব্যাংকিং খাতে দীর্ঘ ২৭ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করার অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ আহমেদ শাহীন আইএফআইসি ব্যাংকের মাধ্যমে তার ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু করেন। তিনি সেখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৫ সালে ট্রেড সার্ভিসেস প্রধান হিসেবে ইস্টার্ন ব্যাংকে যোগ দেন এবং পরবর্তীতে সফলভাবে আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও কর্পোরেট রিলেশনশিপ ইউনিট, স্ট্রাকচার্ড ফাইন্যান্স ও রিলেশনশিপ ইউনিটের নেতৃত্ব দেন।
ইবিএল কর্পোরেট ব্যাংকিং ঢাকার আঞ্চকিল প্রধান হিসেবেও আহমেদ শাহীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ইস্টার্ন ব্যাংকে পুনরায় যোগদানের আগে তিনি স্বল্প সময়ের জন্য (১ এপ্রিল ২০১৫ থেকে ৩১ জুলাই ২০১৬) প্রাইম ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ বিজনেস অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন:প্রবাসীদের পাঠানো প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে নিম্নমুখী ধারায় শেষ হলো ২০২১-২২ অর্থবছর। সদ্য সমাপ্ত এই অর্থবছরে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৬ লাখ (২১.০৩ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা আগের বছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কম।
২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি (২৪.৭৮ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ১৮৩ কোটি ৭৩ লাখ (১.৮৩ বিলিয়ন) ডলার দেশে এসেছে। যা গত বছরের জুনের চেয়ে ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ কম। আর আগের মাস এপ্রিলের চেয়ে কম ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
গত এপ্রিলে ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। ২০২১ সালের জুনে এসেছিল ১৯৪ কোটি ৮ লাখ ডলার।
খোলা বাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে বেশি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। সে কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্সপ্রবাহ কমেছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
যদিও সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে রেমিট্যান্সে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছিল, ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে রেমিট্যান্স আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সেই সাথে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৫২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।
কিন্তু পুরো অর্থবছরের প্রবাসী আয় কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে রিজার্ভের পরিমাণ।
করোনাভাইরাস সৃষ্ট দুর্যোগের মধ্যেও ২০২০-২১ অর্থবছরে অর্থনীতির প্রতিটি সূচক বিধ্বস্ত হলেও চাঙা ছিল দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ।
কিন্তু সদ্যবিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধির ধারা নিম্নমুখী হয়।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্সে হঠাৎ যে উল্লম্ফন হয়েছিল, তার একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপট ছিল। ওই বছরের পুরোটা সময় কোভিডের কারণে পুরো বিশ্ব কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোও বন্ধ ছিল। প্রবাসীরা সব টাকা পাঠিয়েছিলেন ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে। সে কারণেই রেমিট্যান্স বেড়েছিল। আর কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় এবং কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম বেশি থাকায় এখন আগের মতো অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। তাই বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম এসেছে। এর ফলে সামগ্রিকভাবে রেমিট্যান্স কম এসেছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার রেমিট্যান্সপ্রবাহের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে ১৮৭ কোটি ডলার, আগস্টে ১৮১ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ১৭২ কোটি, অক্টোবর ১৬৪ কোটি, নভেম্বর ১৫৩ কোটি, ডিসেম্বরে ১৬৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠান প্রবাসীরা।
চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৭০ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৪৯ কোটি ডলার, মার্চে আসে ১৮৬ কোটি ডলার।
এপ্রিলে ২০১ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, একক মাসের হিসাবে যা ছিল বিদায়ী অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি। মে মাসে ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার দেশে এসেছে।
আর অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ১৮৩ কোটি ৭৩ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বিদায়ী অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪০ কোটি ২৭ লাখ ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৭২ লাখ ডলার, বেসরকারি ৪১ ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৬৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার, আর বিদেশি ৯ ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৯ কোটি ৪১ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই মধ্যে রেমিট্যান্সে সরকারি প্রণোদনার হার ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়েছে। দেশে বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স পাঠানোর শর্তও শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগে ৫ লাখ টাকার বেশি রেমিট্যান্স পাঠালে তার বিপরীতে প্রণোদনা পেতে হলে আয়ের উৎস দেখিয়ে নথিপত্র ব্যাংকে জমা দিতে হতো। সম্প্রতি সে শর্তও শিথিল করা হয়েছে। তার পরও দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ না বেড়ে উল্টো কমেছে।
রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে গত অর্থবছরজুড়েই বেড়েছিল দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত বছরের আগস্টে রিজার্ভের পরিমাণ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
কিন্তু আমদানি ব্যয়ে অস্বাভাবিক উল্লম্ফনের পাশাপাশি রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় রিজার্ভ কমতে শুরু করেছে।
রোববার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। এই সপ্তাহেই এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে।
তখন রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য