ডলারের উল্লম্ফনে বড় ধরনের সংকটে পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে প্রয়োজনীয় ডলার পাচ্ছে না ব্যাংকগুলো; বাধ্য হয়ে ব্যাংক রেটের চেয়ে সাত-আট টাকা বেশি দিয়ে ডলার সংগ্রহ করতে হচ্ছে। সব হিসাব-নিকাশ ওলটপালট হয়ে গেছে। ডলার বাজারের এই অস্থিরতা অর্থনীতিতেও ছড়িয়ে পড়েছে।
বাধ্য হয়ে সরকার আমদানি ব্যয়ের লাগাম টানতে ব্যয় সংকোচনের পথ বেছে নিয়েছে। অতি প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের কর্তাদেরও বিদেশ সফর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কম গুরুত্বপূর্ণ আমদানিনির্ভর প্রকল্পের বাস্তবায়ন আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। বিলাস পণ্য আমদানিতে ৭৫ শতাংশ এলসি মার্জিন রাখতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাজারের অস্থিরতা কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিদিন বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ থেকে বাজারে ডলার ছাড়ছে । তারপরও বাজার স্বাভাবিক হচ্ছে না। বেড়েই চলেছে দাম। সোমবার ডলারের বিপরীতে টাকার মানে বড় দরপতন হয়েছে। এক দিনেই ইউএস ডলারের বিপরীতে ৮০ পয়সা দর হারিয়েছে টাকা। দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনোই এক দিনে টাকার এতটা দরপতন হয়নি।
আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে সোমবার ১ ডলারের জন্য ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা খরচ করতে হয়েছে; গত সপ্তাহের শেষ দিনে যা ছিল ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা।
ঈদের ছুটির আগে ২৭ এপ্রিল ডলারের বিপরীতে টাকার মান ২৫ পয়সা কমিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তার আগে প্রতি ডলারের জন্য ৮৬ টাকা ২০ পয়সা লাগত। এরপর ১০ এপ্রিল আরও ২৫ পয়সা কমিয়ে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রোববার সরকারি ছুটির কারণে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজার বন্ধ ছিল। সোমবার ডলারের বিপরীতে টাকার মান এক লাফে আরও ৮০ পয়সা কমিয়ে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।
টাকার মূল্য পতনে রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ইতিবাচক প্রভাব পড়লেও আমদানি পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমানো ছাড়া অন্য বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই। পাশের দেশ ভারতসহ পৃথিবীর সব দেশই তাদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন করছে। এখন আমরা যদি না করি, তাহলে প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে পড়ব।
‘এ কথা ঠিক, আমদানি পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। কিন্তু একই সঙ্গে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় আমদানি কিছুটা নিরুৎসাহিত হবে। অন্যদিকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়বে। সে সুবাদে রিজার্ভ বাড়বে।’
ব্যাংকেও ডলারের দর ৮ টাকা বেশি
আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে মঙ্গলবার ৮৭ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার বিক্রি হলেও ব্যাংকগুলো তার চেয়ে ৭/৮ টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি করেছে। ব্যাংকগুলোর ওয়েবসাইটে দেখা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক মঙ্গলবার ৯২ টাকা দরে ডলার বিক্রি করেছে। জনতা ব্যাংক করেছে ৯৪ টাকায়। অগ্রণী ব্যাংক বিক্রি করেছে ৯২ টাকা ৫০ পয়সা দরে। আর বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংক বিক্রি করেছে ৯৬ টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি হয়। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে একই জায়গায় ‘স্থির’ ছিল ডলারের দর। এর পর থেকেই শক্তিশালী হতে থাকে ডলার; দুর্বল হচ্ছে টাকা।
হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, এই ৯ মাসে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বিপরীতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের দর বেড়েছে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ।
মহামারি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় আমদানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বাজারে ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা। আমদানির লাগাম টেনে ধরা ছাড়া ডলারের বাজার স্বাভাবিক হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তারা।
এদিকে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেও দামে লাগাম পরানো যাচ্ছে না। মুদ্রাবাজার স্বাভাবিক রাখতে ডলার বিক্রি করেই চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সব মিলিয়ে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের মঙ্গলবার পর্যন্ত সাড়ে ১০ মাসে (২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে ১৭ মে পর্যন্ত) ৫২৫ কোটি (৫.২৫ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপরও বাজারের অস্থিরতা কাটছে না। বেড়েই চলেছে ডলারের দর।
খোলা বাজারের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো হাত নেই। তবে ব্যাংকগুলো বেশি দামে ডলার বিক্রি করলে বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করে থাকে। কেননা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আন্তব্যাংক দরে ডলার কিনে সেই ডলার বিক্রি করে থাকে ব্যাংকগুলো।
এর আগে দেখা গেছে, ব্যাংকগুলোর বিক্রি করা ডলারের দর আর আন্তব্যাংক রেটের মধ্যে বেশি ব্যবধান হলে বাংলাদেশ ব্যাংক সেই পার্থক্যের একটা সীমা নির্ধারণ করে দিত; সেটা এক থেকে দুই টাকার মধ্যে থাকত। কিন্তু কয়েক মাস ধরে ব্যাংকগুলো আন্তব্যাংক রেটের চেয়ে অনেক বেশি দামে ডলার বিক্রি করলেও এখন পর্যন্ত কোনো হস্তক্ষেপ করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সে কারণে দিন যত যাচ্ছে, ইচ্ছামতো ডলারের দাম বাড়িয়ে চলেছে ব্যাংকগুলো; কমছে টাকার মান। এ পরিস্থিতিতে আমদানি খরচ বেড়ে যাচ্ছে; বাড়ছে পণ্যের দাম। তবে রপ্তানিকারক ও প্রবাসীরা লাভবান হচ্ছেন।
করোনা মহামারির কারণে গত ২০২০-২১ অর্থবছর জুড়ে আমদানি বেশ কমে গিয়েছিল। তখন প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে উল্লম্ফন দেখা যায়। সে কারণে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যায়। সে পরিস্থিতিতে ডলারের দর ধরে রাখতে গত অর্থবছরে রেকর্ড প্রায় ৮ বিলিয়ন (৮০০ কোটি) ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়েও ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার কেনা হয়।
কিন্তু আগস্ট মাস থেকে দেখা যায় উল্টো চিত্র। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে আমদানি। রপ্তানি বাড়লেও কমতে থাকে রেমিট্যান্স। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও কমতে থাকে। বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়; বাড়তে থাকে দাম। বাজার স্থিতিশীল রাখতে আগস্ট থেকে ডলার বিক্রি শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলবারও ৩০ কোটি ডলারের মতো বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আমদানি না কমলে অস্থিরতা কাটবে না
অর্থনীতির গবেষক বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষক মঞ্জুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, চাহিদা বাড়ায় রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে ঠিক কাজটিই করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেয়।
বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ হস্তক্ষেপকে সময়োপযোগী একটা পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেন এই অর্থনীতিবিদ।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন ,‘আমদানি বাড়ায় বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। স্বাভাবিক নিয়মেই বেড়েছে দর। কিন্তু এখন আমদানির লাগাম টেনে ধরতে হবে; যে করেই হোক আমদানি কমাতে হবে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটা ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অতি প্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানিতে এলসি মার্জিন ৭৫ শতাংশ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। আমি মনে করি, এটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে পণ্য আমদানির আড়ালে বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে।’
অর্থনীতির আরেক বিশ্লেষক গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সত্যিই ডলারের বাজারে চরম অস্থিরতা চলছে। এটা কোথায় গিয়ে শেষ হবে বোঝা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করেও বাজার স্বাভাবিক রাখতে পারছে না। আমার মনে হয়, এভাবে হস্তক্ষেপ করে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যাবে না।
‘আমি আগেই বলেছিলাম, বাজারকে বাজারের মতো চলতে দিতে হবে; বাজারকে তার গতিতেই যেতে দিতে হবে। কিন্তু সেটা না করে বাজারে হস্তক্ষেপ করে ডলারের দাম ধরে রাখা হয়েছিল। অল্প অল্প করে দাম বাড়ানো হচ্ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ হস্তক্ষেপ ঠিক ছিল না বলে আমি মনে করি।
‘আমি বলেছিলাম, বাজারকে বাজারের মতো চলতে দিলে ডলারের দাম যদি ৮৭/৮৮ টাকাতেও উঠে যায়, যাক। তারপর বাজার তার নিজের নিয়মেই স্বাভাবিক হয়ে আসবে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সেই ৮৭/৮৮ টাকাতেই ডলারের দাম উঠাচ্ছে। কিন্তু বাজারটাকে অস্থির করার পর।’
আহসান মনসুর বলেন, ‘ডলারের সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ব্যাপক তফাৎ। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় আমদানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।। কিন্তু রেমিট্যান্স না বেড়ে উল্টো কমেছে। রপ্তানি বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু তা চাহিদার চেয়ে অনেক কম।
‘এখন কথা হচ্ছে, কতদিন এই অস্থিরতা চলবে। আমার পরামর্শ হচ্ছে, অনেক হয়েছে আর নয়। যে করেই হোক আমদানি কমাতেই হবে। এ ছাড়া এখন আর অন্য কোনো পথ খোলা নেই। আর যদি এটা করা না যায়, তাহলে রিজার্ভের ওপর চাপ আরও বাড়বে। কয়েক মাস আগেও রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এখন ৪২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।’
রিজার্ভের স্বস্তি আর নেই
আমদানি বাড়ায় বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন (৪ হাজার ২০০ কোটি) ডলারের নিচে নেমে এসেছে। আকুর (এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন) রেকর্ড ২২৪ কোটি (২ দশমিক ২৪ বিলিয়ন) ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর গত সপ্তাহে রিজার্ভ ৪১ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।
মঙ্গলবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪১ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ- প্রতি মাসে ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে দেশে। এ হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
গত বছরের ২৪ আগস্ট এই রিজার্ভ অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। তখন ওই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় ১০ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যেত। তখন অবশ্য প্রতি মাসে ৪ থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হতো।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দু'মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৬৪ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছেন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি।
রেমিট্যান্সের ১০ মাসের তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই সময়কালে (জুলাই-এপ্রিল) ১৭ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এটা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম।
তবে রপ্তানি বাণিজ্যে বেশ উল্লম্ফন ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। এই ১০ মাসে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৪৩ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে দেশ, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি।
সবাই ছুটছে ডলারের পেছনে
দেশে অদ্ভুত এক গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, ডলারের দর আরও বাড়বে। এই গুজবে প্রভাবিত হয়ে অনেকেই এখন ডলারের পেছনে ছুটছেন। অনেকে ব্যাংকে জমানো টাকা দিয়ে ডলার কিনছেন। অনেকে পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রি করে সেই অর্থ ডলারে বিনিয়োগ করছেন। কেউ কেউ আবার ব্যাংকের ডিপিএস বা সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়েও কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজার থেকে ডলার কিনছেন। ব্যাপক চাহিদার কারণে মঙ্গলবার খোলাবাজারে ডলারের দর এক লাফে ১০৪ টাকায় উঠেছে। দু'দিনের ব্যবধানে এই বাজারে ডলারের দর বেড়েছে ১০ টাকার বেশি।
রাজধানীর মতিঝিলের দিলকুশা ডলারের কার্ব মার্কেট হিসেবে পরিচিত। এই এলাকায় হাঁটতে থাকলেই ‘ডলার লাগবে নাকি’ বলে আস্তে আস্তে জিজ্ঞাসা করতে শোনা যায় অনেককে। এরাই কার্ব মার্কেটের ডলার ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। অবৈধ হলেও যুগ যুগ ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন তারা ডলার কেনাবেচা।
মঙ্গলবার দিলকুশায় গিয়ে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। অনেকে টাকা দিয়ে ডলার কিনতে চাইলেও মুদ্রা ব্যবসায়ীরা বলছেন ডলার নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ডলার ব্যবসায়ী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ করে কী হয়েছে জানি না! ডলারের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। সবাই ডলার চাচ্ছে। গত সপ্তাহেও ৯৩-৯৪ টাকায় ডলার বিক্রি করেছি। আজ সেটা ১০৪ টাকায় উঠেছে। তাও পাওয়া যাচ্ছে না।
‘আমরা বিভিন্ন উৎস থেকে ডলার কিনে ১০/১৫ পয়সা লাভে বিক্রি করি। কিন্তু আজ কোনো ডলার কিনতেও পারিনি, বিক্রিও করিনি। কেউ আর ডলার বিক্রি করতে আসছে না; সবাই কিনতে আসছে। এমন অবস্থা আগে কখনো দেখিনি।’
ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে দেশের অর্থনীতি বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা আবার ওলটপালট করে দিচ্ছে। যুদ্ধের কারণে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও বেশ চাপের মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে ডলারের অস্থিরতায় বেসামাল হয়ে পড়েছে অর্থনীতি।’
উষ্মা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ব্যাংক রেট ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। ব্যাংকগুলো বিক্রি করছে ৯৪/৯৬ টাকায়। কার্ব মার্কেটে ১০৪ টাকা। এটা কীভাবে সম্ভব। কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী করছে?
‘আমার পরিচিত অনেকেই পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে ডলার কিনে এই কয় দিনে ‘লালে লাল’ হয়ে গেছেন। ডলারের দাম নাকি আরও বাড়বে। তাই যাদের যা কিছু আছে তা দিয়ে এখন ডলার কিনতে ছুঁটছে।’
ইটিবিএল সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিজওয়ান রাহমান ডলারের বাজারকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দেন। এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘আর দেরি না করে ডলারের ভিন্ন ভিন্ন দাম বন্ধ করতে হবে। বাজারকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। তাহলে বাজার এমনিতেই ঠিক হয়ে আসবে।’
শেয়ার বিক্রি করে বিনিয়োগকারীরা ডলার কিনছে কিনা- এ প্রশ্নের উত্তরে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গুজব আছে, অনেকেই নাকি ডলারের দিকে ছুটছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, সবাই ডলার কিনতে গেলে এত ডলার পাবে কোথায়?
‘পুঁজিবাজারে পতন শুরু হলেই অনেক গুজব ছড়ানো হয়, এর-ওর সঙ্গে মেলানো হয়। এখন বাজারের অবস্থা খারাপ, তাই নানা গুজব ঘুরছে চারদিকে। তবে কিছু লোক বেশি লাভের আশায় ডলার কিনছে এটা ঠিক।’
আরও পড়ুন:বাজারে নতুন আসা স্মার্টফোন ‘অপো এ৫ প্রো’ রেকর্ড গড়া পারফরম্যান্স করেছে বলে জানিয়েছে বৈশ্বিক প্রযুক্তি কোম্পানি অপো।
কোম্পানিটি শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আগের জেনারেশনের ডিভাইসের তুলনায় নতুন স্মার্টফোনটি ৪৫০ শতাংশ বেশি বিক্রয় প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা বাংলাদেশের বাজারে অপোর ধারাবাহিক সফলতার নির্দেশক। তাৎপর্যপূর্ণ এ প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের বাজারে অপোর ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি এবং ব্রান্ডটির প্রতি গ্রাহকদের গভীর আস্থা ও আনুগত্যের প্রতিফলন।
অপো প্রতিনিয়ত স্মার্টফোন প্রযুক্তির অভিনব উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোম্পানিটির ‘অপো এ৫ প্রো’ ডিভাইসের ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। ফোনটি নিত্যদিনের বৈচিত্র্যময় চাহিদা পূরণে ভোক্তাদের আধুনিক ও উন্নত সব ফিচার ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে।
কোম্পানির কর্মকর্তা ও গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া
বিজ্ঞপ্তিতে অপো এ৫ প্রোর বিক্রয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা ও একাধিক গ্রাহকের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেছে অপো।
ডিভাইসটির প্রথম দিনের বিক্রয়ের বিষয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অপো বাংলাদেশ অথরাইজ এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেমন ইয়াং বলেন, ‘এ সফলতা অপোর প্রতি বাংলাদেশি গ্রাহকদের আস্থা ও আগ্রহের বিষয়টিই সফলভাবে চিত্রিত করছে। তাদের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো অভিনব পণ্য উদ্ভাবন ও সেবা প্রদানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
একটি বেসরকারি প্রকৌশল কোম্পানিতে চাকরিরত তারেক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ অপোর নতুন ডিভাইস নিয়ে তার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, ‘অপো এ৫ প্রোর ওয়াটারপ্রুফ, ডাস্টপ্রুফ এবং শকপ্রুফ ফিচার আমার সবচেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
‘আমি এ রকম একটি টেকসই ও সহনশীল স্মার্টফোনের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করছিলাম এবং আমার অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। স্মার্টফোনটি কিনতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত।’
আরেক গ্রাহক শারমিন আক্তার বলেন, “ঈদের আগে আমি একটি মোবাইল কেনার কথা ভাবছিলাম। এ ক্ষেত্রে স্মার্টফোনের দারুণ ডিজাইন ও উন্নত ফিচারগুলো আমার অগ্রাধিকারে ছিল।
“আমার মতে, বাজারের একই ঘরনার ফোনগুলোর মধ্যে এ বিষয়গুলোতে ‘অপো এ৫ প্রো’ই সেরা। ফোনটি পছন্দ করতে পেরে মনে হচ্ছে আমি সঠিক মোবাইলটিই বেছে নিয়েছি।”
নতুন ডিভাইসের ফিচার
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘অপো এ৫ প্রো’ বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন, যেটি আইপি৬৬, আইপি৬৮ এবং আইপি৬৯ রেটিং অর্জন করেছে। ডিভাইসটি পানি, ধুলা ও যেকোনো ধরনের শক থেকে সুরক্ষিত। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মোবাইলটির অনন্য স্থায়িত্ব।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, মোবাইলটিতে সংযুক্ত আছে মিলিটারি গ্রেডের ইমপ্যাক্ট রেজিস্ট্যান্স প্রযুক্তি। পাশাপাশি ডিভাইসের মাদারবোর্ড থার্মাল কনডাকটিভিটি বৃদ্ধি করে এবং আগের জেনারেশনের স্মার্টফোনের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি সক্ষমতা প্রদান করে। মোবাইলটি এক হাজার বেন্ডিং টেস্টও উতরে গেছে। অর্থাৎ প্রতিদিনের যেকোনো পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে এটি ব্যবহার উপযোগী।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, স্মার্টফোনটি নান্দনিক ফটোগ্রাফির জন্য অনন্য। এতে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা এআই সংবলিত উন্নত ফিচার। ডিভাইসটিতে এআই ইরেজার ২.০ ব্যবহার করে সহজেই ছবিতে থেকে অপ্রয়োজনীয় বস্তু মুছে ফেলা যায়। এআই রিফ্লেকশন রিমুভার ব্যবহার করে অযাচিত রিফ্লেকশন সরিয়ে দেওয়া যায়।
এ ছাড়া এআই আনব্লার ফিচার ব্লারি বা অস্পষ্ট ছবিকে আরও স্পষ্ট করে তুলতে সাহায্য করে।
দাম
অপো জানায়, দেশজুড়ে রিটেইল স্টোর এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে স্মার্টফোনটি ২৩ হাজার ৯৯০ টাকায় ৮জিবি+২৫৬ জিবি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে।
বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে অপোর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান থেকে চালবোঝাই আরও দুটি জাহাজ।
এক দিনের ব্যবধানে দুটি জাহাজ বন্দরে পৌঁছায়।
এবার এসেছে ৪৮ হাজার ৭৫০ টন আতপ ও সিদ্ধ চাল। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে আসে ২৬ হাজার ২৫০ টন এবং ভারত থেকে আসে ২২ হাজার ৫০০ টন চাল।
চট্টগ্রাম বন্দরের সাইলো জেটি ও কাফকো-সংলগ্ন জেটিতে এই দুই জাহাজ নোঙর করে বলে শনিবার দুপুরে নিশ্চিত করেন খাদ্য অধিদপ্তরের চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক জ্ঞানপ্রিয় বিদূর্শী চাকমা।
পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজটি শুক্রবার চট্টগ্রাম সাইলো জেটিতে বার্থিং করেছে জানিয়ে তিনি জানান, জাহাজ এমভি মারিয়ম গত ১১ মার্চ ২৬ হাজার ২৫০ টন আতপ চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে প্রবেশ করে।
অন্যদিকে ১২ মার্চ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে প্রবেশ করে ভারতের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি তানাইস ড্রিম। জাহাজটি শুক্রবার কাফকো সংলগ্ন জেটিতে বার্থ করে।
এ জাহাজ থেকে ২২ হাজার ৫০০ টন বাসমতি নয় এমন সিদ্ধ চাল আনা হয়েছে।
পাকিস্তানের জাহাজ এমভি মারিয়মে আসা চালের নমুনা সংগ্রহ শেষে ভৌত বিশ্লেষণ সম্পন্ন হয়েছে মন্তব্য করে জ্ঞানপ্রিয় বিদূর্শী চাকমা জানান, এ চালের খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অন্যদিকে ভারত থেকে আসা জাহাজ এমভি তানাইস ড্রিমের চালগুলোর নমুনা সংগ্রহ করা শেষ হয়েছে।
এর আগে বুধবার ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা ৩৮ হাজার ৮৮০ টন চাল বাংলাদেশে এসে পৌঁছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় ভিয়েতনাম থেকে ১৭ হাজার ৮০০ টন আতপ চাল এবং আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় ভারত থেকে ২১ হাজার ৮০ টন সিদ্ধ চাল কেনা হয়েছে।
গত ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে আরও ৬ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানি করা হয়।
আরও পড়ুন:জনপ্রিয় বৈশ্বিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘অপো’ পবিত্র রমজান মাসে গ্রাহকদের জন্য বিশেষ ‘ঈদ মেগা গিফট ক্যাম্পেইন’ ঘোষণা করেছে।
১৩ মার্চ থেকে শুরু হয়ে সারা দেশে অপোর আউটলেটগুলোতে বিশেষ এ ক্যাম্পেইন চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত।
ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ক্রেতারা তাদের চাহিদা উপযোগী দারুণ সব ডিল ও অফার উপভোগ করতে পারবেন।
এ বছর অপো ভোক্তাদের জন্য ‘মেগা’ লটারি অফার ঘোষণা করেছে। এতে অংশ নিয়ে ক্রেতারা ১ লাখ টাকা সমমূল্যের গৃহস্থালি উপকরণ (হোম অ্যাপ্লায়েন্স), অপো প্যাড, অপো ওয়াচ অথবা ‘বাই ১, গেট ওয়ান ১’, ডিল উপভোগ করতে পারবেন।
এ ছাড়াও অপো সব ক্রেতার জন্যই বিশেষ ও নিশ্চিত উপহারের ঘোষণা দিয়েছে, যাতে করে সবাই এ আনন্দের ভাগিদার হতে পারেন। নির্দিষ্ট কিছু মডেলের স্মার্টেফোন কিনেও গ্রাহকরা উপহারের ভাগিদার হতে পারবেন। যেমন- ‘রেনো১২এফ’-এর সঙ্গে বিশেষ হুডি, ‘রেনো১৩এফ’-এর সঙ্গে বিশেষ ব্যাগ এবং নতুন বাজারে আসা ‘এ৫ প্রো’র সঙ্গে ‘অপো সুপার শিল্ড কার্ড’ পাবেন তারা।
অপো বাংলাদেশ, অথরাইজ এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেমন ইয়াং বলেন, “আমাদের গ্রাহকদের সেরা সেবা দিতে অর্থাৎ কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স বৃদ্ধিতে অপো প্রতিনিয়ত অভিনবভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির স্মার্টফোন উপভোগের মাধ্যমে এই ঈদে তারা অসাধারণ সব পুরস্কার জিতে নিতে পারবেন। ‘এ৫ প্রো’র উন্মোচন এবং মেগা গিফট ক্যাম্পেইনের এই ঘোষণা ভোক্তাদের রমজান উদযাপনে বাড়তি মাত্রা যোগ করবে। অপোভক্তদের সঙ্গে এই বিশেষ উপলক্ষ যুক্ত করতে পেরে আমরা আনন্দিত।”
একটি অনলাইন লটারির মাধ্যমে মেগা গিফট লটারির বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে এবং তা অপো এ৩এক্স, এ৬০, রেনো সিরিজ এবং নতুন লঞ্চ হওয়া অপো এ৫ প্রোসহ বিভিন্ন ডিভাইসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এ ক্যাম্পেইন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ক্রেতাদের নিকটস্থ অপো আউটলেট পরিদর্শনের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
আকর্ষণীয় ঈদ অফার ও অন্যান্য তথ্য পাওয়া যাবে অপো বাংলাদেশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/OPPOBangladesh এবং ওয়েবসাইটে website https://www.oppo.com/bd/।
আরও পড়ুন:বিয়েসহ অন্যান্য বেশ কিছু অনুষ্ঠানের জন্য অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইন থাকলেও তার প্রয়োগ না হওয়ায় প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
অন্যদিকে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ সাধারণ মানুষের অনেকেই আইনটি সম্পর্কে জানেন না।
১৯৮৪ সালের অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, দেশের যেকোনো সেন্টারে বিয়ে, জন্মদিন, আকিকা বা অন্য কোনো অনুষ্ঠান করতে হলে অনুমতি নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে অতিথি ১০০ বা তার কম হলে সরকারকে কোনো ধরনের রাজস্ব দিতে হয় না। এর বেশি হলেই জনপ্রতি ২৫ টাকা হারে রাজস্ব দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু প্রয়োগের অভাবে কেউই মানছে না এই আইন।
শুধু তাই নয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতিও নিতে দেখা যায় না।
জানতে চাইলে ফেনী পৌরসভার প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মোহাম্মদ আবুজর গিফরী নিজেই তেমন কিছু জানেন না বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘রাজস্ব দেওয়া তো দূরের কথা, গত ১৫ বছরে কেউ অনুমতির জন্যই আসেনি। এ রকম আইন জেলা প্রশাসকের অফিসে থাকতে পারে। আমাদের আছে কি না, খোঁজ নিয়ে বলতে হবে।’
ফেনীতে গত বছর ৯ হাজার ৮৫৩টি বিয়ে হয়। প্রতিটি বিয়ে অনুষ্ঠানে গড়ে তিন শতাধিক অতিথি অংশ নেন বলে জেলা শহরের বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার সংশ্লিষ্টরা জানান।
পারিবারিক, সামাজিক, অভিজাত রেস্তোরাঁ ও জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক কমিউনিটি সেন্টারে বিয়েসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এ ছাড়াও শতাধিক অতিথি নিয়ে ঘরোয়া ও কমিউনিটি সেন্টার বা কনভেনশন হলে আয়োজন হয়ে থাকে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক অনেক অনুষ্ঠান।
ফেনী সদর কমিউনিটি সেন্টার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাঈদ খান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত সরকারকে ভ্যাট দিয়ে থাকি। তবে অতিথির সংখ্যা ও করের বিষয়টি অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষ দেখবে।’
সম্প্রতি স্মৃতি কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, দুই পাশে দুটি বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে। প্রতিটি অনুষ্ঠানে পাঁচ শতাধিক অতিথির আপ্যায়ন চলছে।
অনুষ্ঠানের সমন্বয়কারী কনের বাবার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) কাছে অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ১০০ অতিথির বেশি হলে জনপ্রতি ২৫ টাকা করে রাজস্ব দেওয়ার বিধান রয়েছে জানালে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান।
ফেনী গ্র্যান্ড সুলতান কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সাল বলেন, ‘প্রতিনিয়ত নানা রকম অনুষ্ঠান হলেও কাউকে রাজস্ব দিতে ও নিতে দেখিনি।’
ফেনী জেলার কোথাও অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োগ নেই। আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় সরকার প্রতি বছর বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে। তা ছাড়া আইনটি সম্পর্কে জনসচেতনতার অভাবে আপ্যায়নে অতিথির সংখ্যাও বাড়ছে প্রতিযোগিতামূলকভাবে।
১৯৮৪ সালের ৩০ আগস্ট অতিথি আইন চালু করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সে সময় এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১০০ জনের অধিক অতিথি আপ্যায়ন করতে হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার জেলা প্রশাসন বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বা সিটি, পৌর প্রশাসকের লিখিত অনুমোদন নিতে হবে। ১০০ জনের অতিরিক্ত প্রতি জনের জন্য ২৫ টাকা হারে আপ্যায়ন ফি জমা দিতে হবে।
এ আইন অমান্যকারীকে অতিরিক্ত প্রত্যেক অতিথির জন্য ১০০ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে।
আপ্যায়নকারী নির্ধারিত জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে পাবলিক ডিমান্ড রিকভারি অ্যাক্ট ১৯১৩-এর আওতায় সার্টিফিকেট মামলা করার বিধান রয়েছে।
এ ছাড়াও আইন অমান্যকারীর কাছে থেকে শাস্তিমূলক মাশুল আদায় এবং আইনের প্রয়োগের জন্য খাদ্য অধিদপ্তরের সব কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর নিযুক্ত ক্ষমতা সব গেজেটেড কর্মকর্তার মতো দেওয়া হয়।
এরপর ২০০২ সালের ৮ এপ্রিল এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিয়ে, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে ১৫০ জন পর্যন্ত অতিথি বিনা মাশুলে আপ্যায়ন করা যাবে। ১৫১ জন থেকে এক হাজার জন পর্যন্ত মাথাপিছু ২০ টাকা ও তদূর্ধ্ব ক্ষেত্রে মাথাপিছু ১০ টাকা হারে মাশুল ধার্য করা হয়েছে। এ আদেশ অমান্যকারীকে দ্বিগুণ হারে জরিমানা করা হবে বলে আইনে বলা হয়।
এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে উল্লিখিত বিভাগগুলোর প্রতিনিধির সমন্বয়ে কমিটি থাকবে। তবে ওরশ, ধর্মসভা, চেহলাম ও শ্রাদ্ধের ক্ষেত্রে এ আদেশ কার্যকর হবে না বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আইনটি থাকলেও তার কার্যকারিতা বা প্রয়োগ নেই। আমরা শিগগিরই আইনটি পড়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দুটি ইলেকট্রিক বাইক এনেছে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘রিভো।
‘এ১০’ এবং ‘এ১২’ নামের মডেলগুলো সাধারণ ক্রেতাদের দৈনন্দিন যাতায়াতে নতুন মাত্রা দেবে বলে মনে করে কোম্পানিটি।
রিভোর ভাষ্য, উভয় বাইকই দৃষ্টিনন্দন, টেকসই। সেই সঙ্গে এগুলোতে রয়েছে অসাধারণ ব্যাটারি পারফরম্যান্স।
রিভোর ‘এ১০’ মডেলের ন্যূনতম দাম ৭৯ হাজার ৯০০ টাকা। ‘এ১২’ মডেলের বাইক পাওয়া যাবে ৯৯ হাজার ৯০০ টাকায়। বাইক দুটি একবার চার্জে ৬৫ থেকে ৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারবে।
রাজধানীর মোহাম্মাদপুরে অবস্থিত শোরুমে শনিবার সন্ধ্যায় নতুন বাইক দুটি উন্মোচন করেন রিভো বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ‘ভেন নেইল’।
ওই সময় তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ রূপান্তরের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা চাই মানুষ আরও টেকসই ও সাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক যানবাহনের মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন যাতায়াত সহজতর করুক।
“‘এ১০’ এবং ‘এ১২’-এর উদ্বোধন আমাদের ক্রমাগত উদ্ভাবন ও উন্নতির প্রতিফলন। আমরা সবসময় আমাদের পণ্য উন্নত করছি, যেন গ্রাহকরা সর্বোচ্চ সুবিধা পান।”
রিভো জানায়, রিভো ‘এ১০’ তরুণদের জন্য আদর্শ, আধুনিক ডিজাইনের একটি বৈদ্যুতিক বাইক, যেটি সম্পূর্ণ গ্রাফিন ব্যাটারি এবং একবার চার্জে ৬৫-৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে। এই বাইকের সর্বোচ্চ গতি ৩৫ কিমি/ঘণ্টা, যা নিরাপদ ও আরামদায়ক যাতায়াত নিশ্চিত করে।
এ ছাড়া রিভোর ‘এ১২’ বাংলাদেশে চালু হওয়া ‘এ০১’ মডেলের একটি উন্নত সংস্করণ। পেশাদার ও করপোরেট ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি এ মডেলে রয়েছে ৬০ ভোল্ট/২৬ অ্যাম্পিয়ার আওয়ার সম্পূর্ণ গ্রাফিন ব্যাটারি এবং ১০০০ ওয়াট মোটর।
এ বাইকের সর্বোচ্চ গতি ৪৭ কিমি/ঘণ্টা। আর একবার চার্জে এটি চলতে পারবে ৭৫ থেকে ৮৫ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন:অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজধানী ঢাকায় এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের বাজারে এসেছে বৈশ্বিক প্রযুক্তি ব্র্যান্ড অপোর নতুন স্মার্টফোন ‘অপো এ৫ প্রো’।
‘প্রোডাক্ট অ্যাম্বাসেডর’ হিসেবে এ ডিভাইসের সঙ্গে রয়েছেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ।
অপোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘অপো এ৫ প্রো’ বাংলাদেশের প্রথম স্মার্টফোন যেটি আন্তর্জাতিকভাবে সার্টিফিকেশনের পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ‘টপ-রেটেড ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স এবং ড্রপ টেস্টে সফলতা দেখিয়েছে।
এ স্মার্টফোনে আছে ‘আইপি৬৯’, ‘আইপি৬৮’ এবং ‘আইপি৬৬’ রেটিংস, যা পানি ও ধুলা থেকে মোবাইলকে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়। এ ছাড়া ডিভাইসটির ফাইবার গ্লাস লেদার ডিজাইন যেমন দেখতে দৃষ্টিনন্দন, তেমনই এটি যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশ, যেমন- পানি, উচ্চ-চাপ এবং ধুলাবালি থেকে স্মার্টফোনকে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়।
ফ্ল্যাগশিপ-লেভেল ওয়াটারপ্রুফিং এবং মিলিটারি গ্রেডের শক রেজিস্ট্যান্স
অপো জানায়, স্মার্টফোনের টেকসইতা বা স্থায়িত্বে ‘অপো এ৫ প্রো’ নতুন মানদণ্ড দাঁড় করিয়েছে। এ মোবাইলে আছে, ‘আইপি৬৯’, ‘আইপি৬৮’ এবং ‘আইপি৬৬’ এর তিন লেয়ারের নিরাপত্তা, যা ডিভাইসে পানি প্রবেশ, ধুলো জমা হওয়া এবং ‘হাই প্রেশার স্প্রে’র মতো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ফোনকে নিরাপত্তা দেয়।
অপোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘অপো এ৫ প্রো’র ওয়াটারপ্রুফিং সিস্টেমে আছে সিলিকন রিংস এবং অ্যাডহেসিভ ম্যাটেরিয়াল। এটি সাইড অপেনিং রুদ্ধ করে এবং এয়ার টাইট ব্যারিয়ার তৈরি করে। এ ছাড়া স্মার্টফোনের ডুয়েল-লেয়ার সিলিং সিস্টেম মোবাইলের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের সুরক্ষা দেয়। পাশাপাশি মাইক্রোপোরাস ‘পেট সল্যুশন’ পানি থেকে মাইক্রোফোনকে নিরাপদ রাখে।
‘অপো এ৫ প্রো’তে আরও রয়েছে মিলিটারি গ্রেডের শক রেজিস্ট্যান্স। এটি ১৪টি মিলিটারি-স্ট্যান্ডার্ড টেস্টে সফল হয়েছে অর্থ্যাৎ বৈরি পরিবেশেও স্মার্টফোনটি খাপ-খাইয়ে নিতে পারে।
এই ফোনে রয়েছে ডাবল-টেম্পার্ড গ্লাস, যা ১৬০ শতাংশ বেশি ড্রপ প্রটেকশন দিয়ে থাকে। এ ছাড়া অ্যালুমিনিয়াম অ্যালোয় ফ্রেম নিশ্চিত করে অধিকতর স্থায়িত্ব। একই সঙ্গে স্মার্টফোনের বাইনিক কুশনিং ক্যামেরা, মোটর এবং ব্যাটারিসহ অন্যান্য উপকরণের সুরক্ষা দেয়।
এআই প্রযুক্তি সংবলিত ফটোগ্রাফি এবং অধিকতর উন্নত প্রযুক্তির ক্যামেরা সিস্টেম
অপোর ভাষ্য, ‘এ৫ প্রো’ টেকসই ডিজাইনের পাশাপাশি ফটোগ্রাফির জন্য আদর্শ ডিভাইস। এতে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এআই ফিচারগুলো যা কিনা ছবির গুণগত মান বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। ডিভাইসের ‘এআই ইরেজার ২.০’ ছবি থেকে অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মুছে ফেলে, ‘এআই রিফ্লেকশন রিমুভার’ প্রতিফলন দূর করে এবং ‘এআই আনব্লার’ ফিচার অস্পষ্ট ছবিকে আরও স্পষ্ট করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি ‘এআই ক্লিয়ারিটি এনহেন্সার’ ছবির স্বচ্ছতা বাড়িয়ে দেয় এবং ‘এআই স্টুডিও’ ছবিকে সৃজনশীল করতে ব্যবহারকারীদের সাহায্য করে। এ ছাড়া ‘এআই স্মার্ট ইমেজ মেটিং ২.০’ অ্যালবামের ডিজিটাল কনটেন্টগুলো সিঙ্গেল ট্যাপে শেয়ার ও কাস্টমাইজ করার সুযোগ দেয়।
‘অপো এ৫ প্রো’তে আরও রয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেল সক্ষমতার আল্ট্রা ক্লিয়ার মূল ক্যামেরার পাশাপাশি ২ মেগাপিক্সেল পোর্ট্রেট ক্যামেরা ও ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। এসব সব ক্যামেরা গ্রাহকদের স্বচ্ছ, নিখুঁত, অকৃত্রিম ছবি তুলতে সাহায্য করে।
এ ছাড়া ডিভাইসটিতে ইন-বিল্ট ইমেজ অ্যালগরিদম ও পোর্ট্রেট মোড রয়েছে। ‘এআই পোট্রেট’ ডিটেইলড ও ব্যালেন্সড ছবি উপহার দেয়।
‘অপো এ৫ প্রো’ আন্ডারওয়াটার ফটোগাফিও সাপোর্ট করে। ফলে ফটোগ্রাফিপ্রেমীরা পানির নিচে প্রাণবন্ত ও স্পষ্ট ছবি তুলতে পারবেন।
‘আউটডোর মোড’
‘অপো এ৫ প্রো’ ঘরের বাইরে পেশাজীবীদের কথা ভেবে বিশেষভাবে ডিজাইন করা। ডিভাইসের ‘আউটডোর মোড’ দ্রুত নেটওয়ার্ক এক্সেসের জন্য নেটওয়ার্ক সেটিংস অপটিমাইজ করে এবং জরুরি কাজের অ্যাপগুলোর জন্য বাড়তি জায়গা বরাদ্দ করে এবং স্ক্রিন টাইমআউট বৃদ্ধি করে।
এ ছাড়া স্মার্টফোনটির ইন্টারফেস ওয়াটারপ্রুফ গ্লাভসসহ বিভিন্ন গ্লাভসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ফলে প্রতিকূল পরিবেশে নির্বিঘ্নে মোবাইলটি ব্যবহার করা যাবে।
ব্যাটারি সক্ষমতা
এ স্মার্টফোন রয়েছে ৪৫ ওয়াট সুপারভোগ স্মার্ট চার্জিং সমন্বয়ে ৫ হাজার ৮০০ এমএএইচ সক্ষমতার ব্যাটারি। ফলে ৭৬ মিনিটে ফোনটি পুরোপুরি চার্জ হয়। আগের মডেলের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি ব্যাটারি সক্ষমতা থাকায় এটি ৩৬ ঘণ্টা কল টাইম, ১৭ ঘণ্টা ইউটিউব প্লেব্যাক ও ২৮ ঘণ্টা অডিও প্লেব্যাক নিশ্চিত করে।
ডিভাইসটির মাধ্যমে একবার চার্জেই ৭ দশমিক ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত একটানা ‘মোবাইল লিজেন্ডস: ব্যাং ব্যাং’ গেমিং উপভোগ করা যায়। পাশাপাশি ‘চার বছরের বেশি টেকসই ব্যাটারি’ ফিচার সময়ের পরিক্রমায়ও ৮০ শতাংশের বেশি অরিজিনাল ব্যাটারি সক্ষমতা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
স্টোরেজ
‘অপো এ৫ প্রো’তে রয়েছে ৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ সক্ষমতা। অপোর র্যাম এক্সপ্যানশন ফিচারের সমন্বয়ে এ সেটআপ র্যামের দ্বিগুণ পারফরম্যান্স ও নির্বিঘ্ন মাল্টিটাস্কিং নিশ্চিত করে। এ ছাড়া অপোর ট্রিনিটি ইঞ্জিন ব্যবহার করা ‘কালারওএস ১৫ লাইট’ সিস্টেমের স্ট্যাবিলিটি বা দৃঢ়তায় ভূমিকা রাখে।
ডিভাইসটি অপোর ‘৪৮ মাসের ফ্লুয়েন্সি প্রটেকশন সার্টিফিকেশন’ পেয়েছে, যা কিনা ৪ বছর পরও ডিভাইসের স্মুথ পারফরম্যান্সের নিশ্চয়তা দেয়।
ডিসপ্লের ক্ষেত্রে ১ হাজার নিটের আল্ট্রা ব্রাইট ডিসপ্লে সরাসরি সূর্যের আলোতেও পরিস্কার ভিজ্যুয়াল পেতে সাহায্য করে এবং ডুয়েল স্টেরিও স্পিকার এবং আল্ট্রা ভলিউম মোড ৩০০ শতাংশের বেশি প্রাণবন্ত অডিও-ভিজ্যুয়াল এক্সপেরিয়েন্স নিশ্চিত করে।
প্রি-অর্ডার অফার ও মূল্য
‘অপো এ৫ প্রো’ (৮জিবি + ১২৮ জিবি) অলিভ গ্রিন ও মোকা ব্রাউন রঙে পাওয়া যাচ্ছে এবং এটির প্রি-অর্ডার মূল্য ২৩ হাজার ৯৯০ টাকা। যেসব ক্রেতা প্রি-অর্ডার করবেন তারা একটি পোর্টেবল মিনি স্পিকারের সঙ্গে অপো সুপার শিল্ড কার্ড পাবেন, যেটি কি না ২ বছরের অফিশিয়াল ওয়ারেন্টি এবং ১ বছরের লিকুইড এবং দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিবিষয়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
এ বিষয়ে অপো বাংলাদেশ অথরাইজড এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেমন ইয়াং বলেন, “আমরা গ্রাহকদের কাছে অলরাউন্ড ‘অপো এ৫ প্রো’ পৌঁছে দিতে পেরে আনন্দিত। এটি ব্যবহারকারীদের একই সঙ্গে স্থায়িত্ব ও প্রিমিয়াম ফিচার দেবে।
“আমি মনে করি ডিভাইসটি উন্নত প্রযুক্তি ও টেকসইতার সমন্বয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে পারফরম্যান্সের একটি নতুন মানদণ্ড দাঁড় করাতে সক্ষম।”
আরও পড়ুন:অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতেমা তনির মালিকাধীন শোরুম ‘সানভিস বাই তনি’ খুলে দেওয়ার নির্দেশনা সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার এ সংক্রান্ত রায় দেন।
সে রায়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
১. বাংলাদেশে প্রচলিত আইন সকলকে মেনে চলতে হবে। অনলাইনের মালিক ও ভোক্তাদের মধ্যে সম্পর্ক সঠিকভাবে বজায় রাখতে হবে।
২. অনলাইন ব্যবসার কার্যক্রমে আইন লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ সমান আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী হবে।
৩. প্রত্যেক নাগরিক আইনি ব্যবসা পরিচালনার অধিকার রাখে এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া তার ব্যবসা বন্ধ করা যাবে না।
৪. ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে সব অনলাইন ব্যবসায়ীদের নিবন্ধন করা ও তাদের যথাযথ অনুমোদন দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. নিশ্চিত করতে হবে যে কেউ যেন অনুমোদনহীনভাবে কোনো অনলাইন ব্যবসা পরিচালনা বা শুরু করতে না পারে। বিশেষ করে, কোনো পোশাক ব্যবসায়ী যেন বিদেশি আসল পণ্যের নকল তৈরি করে মূল পণ্য বলে বিক্রি করতে না পারে, তা কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে।
৬. আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে যে সকল অনলাইন ব্যবসার উদ্যোক্তা, প্রশাসক ও ভোক্তাদের ব্যক্তিগত তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্র দ্বারা যাচাই করা হয়।
৭. সংশ্লিষ্ট সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো, যেমন বিটিআরসির অনলাইন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে অনলাইন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংরক্ষণ করবে।
৮. সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের সতর্ক করতে হবে যেন তারা প্রতারণাপূর্ণ বা অবিশ্বস্ত অনলাইন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় না করে এবং নিবন্ধন বা অনুমোদনহীন অনলাইন দোকান বা সরবরাহকারীর কাছ থেকে পণ্য না কেনে।
৯. ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এ প্রয়োজনীয় বিধান সংযোজন করে প্রতারক অনলাইন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
গুলশানের ‘সানভি’স বাই তনি’ শোরুম বন্ধ করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। পরবর্তী সময়ে রোবাইয়াত ফাতেমা তনি হাইকোর্টে রিট করলে সে রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট গত ১০ জুন তনি’র বন্ধ শোরুম খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেন। অবশেষে সে রুলটি নিষ্পত্তি করে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয় হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য