বাজার প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জে টিকে থাকতে প্রচলিত ধারার অনেক ব্যাংক শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে যাচ্ছে। কিছু ব্যাংক পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংকিং শুরু করেছে। কেউ কেউ আলাদা শাখা ও উইন্ডো খুলে ইসলামি ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে।
এ তালিকায় যুক্ত হচ্ছে বেসরকারি ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড (এনসিসি)। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনও মিলেছে। খুব শিগগিরই ইসলামি ব্যাংকিং উইন্ডো খুলে গ্রাহকদের সেবা দিতে পারবে ব্যাংকটি।
এনসিসি ব্যাংকের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদ।
তিনি বলেন, ‘এ বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমরা ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করব। এ জন্য আমাদের একটি নির্ধারিত শাখা থাকবে। তবে গ্রাহক সব শাখায় এ সেবা নিতে পারবেন।’
বর্ষপূ্র্তি উপলক্ষে ব্যাংকটি নতুন তিনটি সেবা চালু করেছে জানিয়ে এমডি বলেন, “প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকা বেগবান করছেন, তাদের কথা চিন্তা করেই আমরা ‘এনসিসি ব্যাংক এনআরবি গৃহ ঋণ এবং এনসিসি বৈদেশিক কর্মসংস্থান ঋণ’ নামে দুটি সেবা চালু করেছি। এ ছাড়া ‘মাইক্রো এটিএম’ নামে আমাদের গ্রাহকরা বিভিন্ন আউটলেটে পস মেশিন থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।“
২০২১ সালে এনসিসি ব্যাংক ৭০০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে জানিয়ে এমডি মামদুদুর রশীদ বলেন, ‘দেশব্যাপী ১২৫টি পূর্ণাঙ্গ শাখা এবং ছয়টি উপশাখার মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাহকসেবা পৌঁছে দিচ্ছে। আগামী দিনে দেশের শীর্ষ পাঁচটি ব্যাংকের মধ্যে এনসিসি ব্যাংককে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
শেয়ারবাজারে এনসিসি ব্যাংকের অবস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এনসিসি ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এনসিসি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড দেশের পুঁজিবাজারে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে টেকসই পুঁজিবাজার গঠনে ভূমিকা রাখছে।
‘আমরা শুধু মুনাফায় বিশ্বাসী না। সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বিগত বছরগুলোতে আমরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে সিএসআর কার্যক্রম আরও বেশি সম্প্রসারিত করেছি। সারা দেশে অসহায় ও দুস্থ মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু ও করোনা মোকাবিলায় বিনা মূল্যে চিকিৎসা সরঞ্জাম বিতরণ করেছি।’
ব্যাংকের খেলাপি ও মন্দ ঋণের আকার কমিয়ে আনার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে দাবি করে মামদুদুর রশীদ বলেন, ‘আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমেও ব্যাংকের পাওনা পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।’
রেমিট্যান্স সম্পর্কে ব্যাংকের এমডি বলেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা নিরাপদ, দ্রুততম ও সহজতম উপায়ে দেশে বসবাসরত আত্মীয়-স্বজনের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এনসিসি ব্যাংক নিজস্ব ১২৫টি শাখা এবং ছয়টি উপশাখার পাশাপাশি টিএমএসএসের ৯০০টি শাখা, কর্মসংস্থান ব্যাংকের ২৫৬ শাখা, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের ২৫০টি শাখা, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ৮৯টি শাখা এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৩৮৩টি শাখা তথা মোট ১ হাজার ৮৭৮টি শাখার মাধ্যমে রেমিট্যান্সের অর্থ প্রদান করছি।’
ব্যাংকের এমডি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ মোতাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন বেতনকাঠামো পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। বেতনের চারটি গ্রেড কমিয়ে একটি করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের ক্যারিয়ার উন্নতির জন্য অফিসার পর্যায়ে তিনটি পদ কমিয়ে দুটি করেছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চলতি বছরের মার্চ শেষে এনসিসি ব্যাংকের আমানত ১৯ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা। ঋণ দিয়েছে ১৯ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। বিনিয়োগ ৪ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা। ব্যাংকটির মন্দ ঋণের হার ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার নাইমুল কবির, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আশেক রহমান, মাহবুব আলম, রাহাত উল্লা খান, জাকির আনাম ছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক পয়েন্ট অব সেল (পস) মেশিনে কার্ড ব্যবহার করে পণ্য ক্রয় করার সুযোগ প্রদানের লক্ষ্যে প্রাণ- আরএফএল গ্রপের সাথে সমঝোতা স্মারক সই করেছে।
এই চুক্তির ফলে ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকরা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সকল আউটলেটে পস মেশিনে কার্ড ব্যবহার করে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে গত বুধবার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার উপস্থিতিতে উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ফিন্যান্স ডাইরেক্টর উজমা চেীধুরী নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন বলে ইসলামী ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এ সময় ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী ও ওমর ফারুক খান, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল ফায়েজ মুহাম্মদ কামালউদ্দীন, মাকসুদুর রহমান ও মাহমুদুর রহমান, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান ভুঁইয়া ও মিফতাহ উদ্দীন এবং প্রান-আরএফএল গ্রপের ডেপুটি ম্যানেজার মাহফুজুর রহমান ও ফারজানা ফেরদৌস রহমান উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যাশা করা হয়েছিল, রোজার ঈদের মতো কোরবানির ঈদের আগের মাস জুনেও বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসবে। কিন্তু তেমনটা লক্ষ করা যাচ্ছে না।
এই মাসের ২৩ দিনের তথ্য রোববার প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ মাস জুনের ১ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত ১২৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ হিসাবে প্রতিদিন রেমিট্যান্স এসেছে ৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। মাসের বাকি সাত দিনে এই হারে রেমিট্যান্স এলে দাঁড়াবে ১৬৭ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, যা হবে গত তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।
গত ফেব্রুয়ারিতে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল ২০২১-২২ অর্থবছরের ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। মার্চে আসে ১৮৬ কোটি ডলার।
গত ৩ মে মাসে দেশে রোজার ঈদ উদযাপিত হয়। ঈদ সামনে রেখে এপ্রিলে ২০১ কোটি (২.০১ বিলিয়ন) ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, একক মাসের হিসাবে যা ছিল ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
ঈদের পরের মাসেও মোটামুটি ভালোই এসেছিল। মে মাসে ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ (১.৮৮ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন তারা।
প্রতি বছরই দুই ঈদ সামনে রেখে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সারতে পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি অর্থ দেশে পাঠান প্রবাসীরা। কিন্তু দুই ঈদের পরের এক-দুই মাস রেমিট্যান্স বেশ কম আসে। কিন্তু রোজার ঈদের পর মে মাসে তেমনটি হয়নি।
৯ অথবা ১০ জুলাই দেশে কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে। সেই উৎসবকে কেন্দ্র করে জুন মাসে এপ্রিলের মতো ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসবে বলে আশা করা হচ্ছিল। ১৬ দিনের (১ থেকে ১৬ জুন) তথ্যে তেমন আভাসও পাওয়া যাচ্ছিল; ৯৬ কোটি ৪২ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। কিন্তু পরের সপ্তাহে অর্থাৎ ১৭ থেকে ২৩ জুন এসেছে ৩২ কোটি ৬ লাখ ডলার। এই সাত দিনে গড়ে ৪ কোটি ৫৮ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
জুনে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসতে হলে মাসের বাকি সাত দিনে (২৪ থেকে ৩০ জুন) প্রতিদিন ১০ কোটি ডলারের বেশি আসতে হবে; সেটা কখনই আসেনি দেশে।
২০২০-২১ অর্থবছরে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অর্থবছর বা বছরে আসা সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স। তার আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এসেছিল ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে আসে ১৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এসেছিল ১৪ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরের ১১ মাস ২৩ দিনে (২০২১ সালের ১ জুলাই-থেকে ২০২২ সালের ২৩ জুন) মোট ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ শতাংশের মতো কম।
বিদায়ী অর্থবছরে আগের বছরের চেয়ে রেমিট্যান্স কমার কারণ জানতে চাইলে অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্সে হঠাৎ যে উল্লম্ফন হয়েছিল, তার একটি ভিন্ন পেক্ষাপট ছিল। ওই বছরের পুরোটা সময় কোভিডের কারণে গোটা পৃথিবী বন্ধই ছিল বলা চলে। সে কারণে হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোও বন্ধ ছিল। প্রবাসীরা সব টাকা পাঠিয়েছিলেন ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে। সে কারণেই রেমিট্যান্স বেড়েছিল।’
‘আমার বিবেচনায় বাংলাদেশে রেমিট্যান্সের পরিমাণ আসলে ১৬ থেকে ১৮ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরে এর চেয়ে বেশি যে রেমিট্যান্স এসেছিল সেটা আসলে হুন্ডি বন্ধ থাকার কারণেই এসেছিল। কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় এবং কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম বেশি থাকায় এখন আগের মতো অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা।
‘এর পরও বিদায়ী অর্থবছরের সাত দিন বাকি থাকতেই সাড়ে ২০ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্সকে আমি খুবই ইতিবাচক মনে করছি।’
টানা পাঁচ মাস কমার পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বেড়েছিল অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে ফের হোঁচট খায়। ওই মাসে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। মার্চে এসেছিল ১৮৬ কোটি ডলার।
ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে এসেছিল যথাক্রমে ১৬৩ কোটি ৬ লাখ ও ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিন হওয়ায় ওই মাসে রেমিট্যান্সপ্রবাহ কমেছিল বলে জানায় ব্যাংকগুলো।
তবে মার্চে এই সূচকে ফের গতি ফেরে; ১৮৮ কোটি ডলার পাঠান প্রবাসীরা। ওই মাসে ফেব্রুয়ারির চেয়ে ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, জুন মাসের ২৩ দিনে যে রেমিট্যান্স এসেছে, তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২০ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২ কোটি ২০ লাখ ডলার। ৪২টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০৪ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। আর পাঁচটি বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬২ লাখ ৯০ হাজার ডলার।
আরও পড়ুন:বেসরকারি এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক লিমিটেড (এক্সিম) ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরে শেয়ারহোল্ডাদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
রোববার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এই অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার।
সভায় ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরের আর্থিক বিররণী অনুমোদন দেয়া হয় বলে ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, মো. নুরুল আমিন ফারুক, অঞ্জন কুমার সাহা ও মেজর (অব.) খন্দকার নুরুল আফসার, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফিরোজ হোসেন, মো. হুমায়ুন কবির ও শাহ মো. আব্দুল বারি, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদা খানম এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মো. মনিরুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছর দেশে এএমএল অ্যান্ড সিএফটি পরিপালনের দুই দশক পূর্তি হচ্ছে। পাশাপাশি বছরটি মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর গৌরবোজ্জ্বল দুই দশক পূর্তি উদযাপিত হচ্ছে।
এর অংশ হিসেবে পদ্মা ব্যাংকের কর্মী ও গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে রোববার পদ্মা ব্যাংকের মিরপুর ট্রেনিং ইনিস্টিউটে এএমএল অ্যান্ড সিএফটি সচেতনতা সপ্তাহের উদ্বোধন করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক রিয়াজ খান।
ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সপ্তাহব্যাপী গ্রাহকদের এএমএল অ্যান্ড সিএফটি বিষয়ক বিশেষ বার্তা, ব্যাংকের ৫৯ শাখায় এএমএল অ্যান্ড সিএফটি সচেতনতা বিষয়ক ভিডিও প্রদর্শন, মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা, পদ্মা ব্যাংকের বিভিন্ন লোকেশনে ব্যানার ও ড্যাঙ্গলারের মাধ্যমে সচেতনতা বিষয়ক বার্তা প্রদর্শন করা হবে।
এ ছাড়া শাখা ও প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগগুলোতে সপ্তাহব্যাপী ব্যাংকের সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম ও এএমএল অ্যান্ড সিএফটি ডিভিশনের কর্মকর্তাদের পরিদর্শন ও অবস্থানসহ আরও নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ অ্যান্টি-মানিলন্ডারিং কমপ্লায়েন্স অফিসার জাবেদ আমিন, মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান এসইভিপি এম আহসান উল্লাহ খান, এসইভিপি ও আরএমডি অ্যান্ড ল হেড ফিরোজ আলম, এসইভিপি ও হেড অব করপোরেট লায়াবিলিটি মার্কেটিং সাব্বির মোহাম্মদ সায়েম, ডেপুটি চিফ অ্যান্টি-মানিলন্ডারিং কমপ্লায়েন্স অফিসার ও ভিপি রাশেদুল করিম-সহ বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ব্যাংকের ঢাকার শাখাগুলোর ব্যামেলকোরা স্বশরীরে ও বাইরের শাখার ব্যামেলকো ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
আরও পড়ুন:মাস্টারকার্ড ব্রান্ডের ডুয়্যাল কারেন্সি প্রিপেইড কার্ড চালু করেছে ইসলামী ব্যাংক।
বেসরকারি এই ব্যাংকটির ডিজিটাল ব্যাংকিং অ্যাপ ‘সেলফিন’ এ এখন থেকে পাওয়া যাবে মাস্টারকার্ড ব্রান্ডের ডুয়্যাল কারেন্সি সাপোর্টেড ভার্চুয়াল প্রিপেইড কার্ড।
এই কার্ডের মাধ্যমে টাকার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রাতেও দেশ-বিদেশের যেকোন ই-কমার্স সাইটে কেনাকাটা করা যাবে। তবে বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনের জন্য গ্রাহকের পাসপোর্টে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার এনডোর্সমেন্ট করতে হবে।
রাজধানীর একটি হোটেলে বুধবার ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এই কার্ডের উদ্বোধন করেন বলে ব্যাংকটির এক সংবাদ বিজ্ঞপিএত জানানো হয়েছে।
এ সময় মাস্টারকার্ড সাউথ এশিয়ার চিফ অপারেটিং অফিসার ভিকাস ভার্মা, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, ইসলামী ব্যাংকের চিফ রিস্ক অফিসার মোহাম্মদ আলী ও অলটারনেটিভ ব্যাংকিং উইংয়ের প্রধান আবুল ফায়েজ মুহাম্মাদ কামালউদ্দিনসহ দুই প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কার্ডটি দিয়ে এনপিএসবি/ইএফটি/আরটিজিএস নেটওয়ার্কে যুক্ত যেকোন ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ও মাস্টারকার্ড ব্রান্ডের কার্ডে ফান্ড ট্রান্সফার করা যাবে। মার্চেন্ট পেমেন্ট, বিল ও ফিস পেমেন্ট, ই-টিকেটিং ও মোবাইল রিচার্জ করা যাবে। আবার যেকোন ব্যাংকের মাস্টারকার্ড, ইসলামী ব্যাংকের যেকোন কার্ড, অ্যাকাউন্ট ও এমক্যাশ সার্ভিস থেকে এই কার্ডে টাকা আনা যাবে
ইসলামী ব্যাংকের শাখা/উপশাখা, এটিএম/সিআরএম, এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট ও এমক্যাশ পয়েন্ট থেকে ক্যাশ আউট বা নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে। এই কার্ডটি পাওয়ার জন্য ইসলামী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থাকার প্রয়োজন নেই। সেলফিন অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন থাকলেই এই কার্ড নেয়া যাবে।
আরও পড়ুন:সিস্টেম উন্নয়নের জন্য চার ঘণ্টা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের সব ধরনের লেনদেন বন্ধ থাকবে।
বৃহস্পতিবার রাত ১টা থেকে শুক্রবার ভোর ৫টা পর্যন্ত ব্যাংকটির এটিএম বুথ থেকে কোনো গ্রাহক টাকা তুলতে পারবেন না।
ব্যাংকটির ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত্র বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিস্টেম আপগ্রেশনের কারণে বৃহস্পতিবার রাত ১টা থেকে শুক্রবার ভোর ৫টা পর্যন্ত কার্ড সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
বিষয়টি গ্রাহকদের অবহিত করতে ক্ষুদে বার্তাও দিয়েছে ইউসিবি।
এতে বলা হয়েছে, কারিগরি কারণে ২৪ জুন রাত ১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত সকল ইউসিবি কার্ড সেবা স্থগিত থাকবে।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে ১০০ টাকা মূল্যমান স্মারক নোট ছাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রোববার থেকে নোটটি বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস এবং পরে অন্যান্য শাখা অফিসে পাওয়া যাবে।
ফোল্ডার ছাড়া শুধু খামসহ স্মারক নোটটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ এবং ফোল্ডার ও খামসহ স্মারক নোটটির মূল্য ২০০ টাকা।
স্মারক নোটটির জন্য পৃথকভাবে বাংলা ও ইংরেজি লিটারেচার সংবলিত ফোল্ডার প্রস্তুত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির স্বাক্ষরিত ১৪৬ মিলিমিটার গুণক ৬৩ মিলিমিটার পরিমাপের এ স্মারক নোটের সম্মুখভাগের বামপাশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি রয়েছে।
ব্যাকগ্রাউন্ডে পদ্মা সেতুর ছবি মুদ্রিত।
নোটের উপরিভাগে সামান্য ডানে নোটের শিরোনাম ‘জাতির গৌরবের প্রতীক পদ্মা সেতু’ লেখা রয়েছে।
নোটের ওপরে ডান কোণে স্মারক নোটের মূল্যমান ইংরেজিতে ১০০, নিচে ডান কোণে মূল্যমান বাংলায় ‘১০০’ এবং উপরিভাগে মাঝখানে ‘একশত টাকা’ লেখা রয়েছে।
নোটের পেছনভাগে পদ্মা সেতুর একটি ছবি দেয়া হয়েছে।
নোটের উপরিভাগে ডান দিকে নোটের শিরোনাম ইংরেজিতে ‘পদ্মা ব্রিজ দি সিম্বল অফ ন্যাশনাল প্রাইড ওয়ান হান্ড্রেড টাকা’ লেখা।
নোটের ওপরে বাম কোণে ও নিচের ডান কোণে মূল্যমান ইংরেজিতে ১০০ এবং নিচে বাম কোণে বাংলায় ‘১০০’ লেখা রয়েছে।
নোটের নিচে মাঝখানে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং এর বামপাশে ইংরেজিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ডানপাশে ইংরেজিতে ওয়ান হান্ড্রেড টাকা’ লেখা।
নোটটির সম্মুখভাগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির বামে মিলিমিটার চওড়া নিরাপত্তা সুতা এবং ডানদিকে জলছাপ এলাকায় ‘বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি’, ‘২০০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ মুদ্রিত।
নোটের উভয় পাতায় ভার্নিশের প্রলেপ দেয়া।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য