ঈদ ছুটির পরে এক দিনের কর্মদিবস শেষে আরও দুই দিনের সাপ্তাহিক বন্ধ বিবেচনায় টানা নয় দিনের অবসর কাটিয়ে রাজধানী কর্মব্যস্ত হয়ে উঠার প্রথম কর্মদিবসে ভালোই দিন গেল।
লেনদেন হলো ২১ কর্মদিবসের সর্বোচ্চ। গত ৩১ মার্চ হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেনের পর এই প্রথম হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি যেতে পারল না।
দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি, এরপর মে দিবসের ছুটির সঙ্গে ঈদের ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে লেনদেন হলেও সেদিন প্রাণ ছিল না সেভাবে। এবারই প্রথম নয়, গত দুটি বছর বাদ দিলে তার আগে এক যুগ ধরেই দেখা গেছে, ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে লেনদেনে গতি থাকে না।
বৃহস্পতিবার ৪৬৮ কোটি ৭০ লাখ ৬৬ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছিল কেবল। বেশিরভাগ শেয়ার দর হারানোর দিন সূচক কমে ১২ পয়েন্ট। এরপর দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি শেষে রোববার লেনদেন হয়েছে এর দ্বিগুণের বেশি।
যে চার শুভ ইঙ্গিত
এদিন হাতবদল হয়েছে ৯৭২ কোটি ৫৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, যা গত ৩১ মার্চের পর সর্বোচ্চ। সেদিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১১৬ কোটি ৯৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।
রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে লেনদেন ক্রমাগত কমতে কমতে এক পর্যায়ে চার শ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছিল। এরপর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ করে। তখন থেকে লেনদেন বাড়তে থাকে।
বিএসইসির এই আদেশ আসার পর কিছু বিনিয়োগকারী অবশ্য আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। কারণ, এর আগে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারদর ২ শতাংশ কমে ক্রেতাশূন্য হয়ে যাচ্ছিল।
দ্বিতীয় যে দিকটি দেখা গেছে, সেটি হলো সূচকের বৃদ্ধি।
দিনভর উঠানামা করে শেষ বেলায় ক্রয়চাপে সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৬ পয়েন্ট।
এদিন লেনদেন শুরুই হয় সূচক বেড়ে। তবে বেলা ১০টা ২১ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে কমে গিয়েছিল। এরপর থেকে শুরু হয় ক্রয়চাপ।
এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সূচক আরও ২৭ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে থাকে। বেলা ১ টা ১০ মিনিটের দিকে সেখান থেকে আবার নেমে আসে অনেকটাই। শেষ ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটে আবার ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতা দেখা দেয়।
দুই শতাধিক কোম্পানির দর বাড়াও বিনিয়োগকারীদের স্বস্তির একটি কারণ। এদিন বেড়েছে ২১৬টি শেয়ারের দর, কমেছে ১১২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫২টির দর।
দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ থাকার সময় এক দিনে তিন শ বা কাছাকাছি সংখ্যক কোম্পানির দর পতনের চিত্র দেখা গিয়েছিল।
এদিন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, প্রকৌশল, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, বস্ত্র এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের বিনিয়োগকারীরা ছিলেন ফুরফুরে মেজাজে।
তবে ঈদের আগে আগে ভালো সময় যাওয়া ব্যাংক, বিমা খাতে বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে।
বাজার স্বাভাবিক চিত্রে ফেরার চতুর্থ যে ইঙ্গিতটি পাওয়া গেছে, সেটি হলো এদিন আটটি কোম্পানির দিনের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে লেনদেন করেছে। রোজায় এই বিষয়টি দেখা যায়নি বললেই চলে।
এই গোটা মাসে কোনো দিন কেবল একটি বা কোনো দিন দুটির দর সার্কিট ব্রেকার ছুঁতে দেখা গেছে। আবার কোনোদিন কোনো কোম্পানির দরই সার্কিট ব্রেকার ছুঁতে পারেনি।
অন্যদিকে দর পতনের সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে লেনদেন হয়েছে কেবল একটির। এই কোম্পানিটির দর আবার গত তিন মাসে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে তিন গুণ হয়ে গিয়েছিল।
অথচ রোজায় এক দিনে ২০০টি কোম্পানির দরও দিনের সর্বোচ্চ সীমায় লেনদেন হয়েছে।
ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজার ভালোর দিকে। আজকে সূচক ইতিবাচক ছিল, ট্রেডও ভালো হয়েছে। তবে আরও চার দিন যদি ভালো যায়, তবে মানুষের আস্থা ফিরবে, বিনিয়োগ বাড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন অন্য দিকে সুযোগ কম থাকে, তখন স্বাভাবিকভাবেই ইনভেস্টমেন্ট বাড়ে। মানি মার্কেট তো অনেক কঠিন, এজন্য মানুষের বিনিয়োগের জায়গা কমে গেলে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ে এবং ভালোর দিকে।’
সূচক বাড়ল যেসব কোম্পানির কারণে
সূচকে সবচেয়ে বেশি ৩.০২ পয়েন্ট যোগ করেছে ওয়ালটন। কোম্পানিটির দর ০.৫৩ শতাংশ বেড়েছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২.৩৯ পয়েন্ট যোগ করেছে গ্রামীণফোন। বড় মূলধনি বহুজাতিক এই কোম্পানিটির দর বেড়েছে ০.৩৪ শতাংশ।
তৃতীয় অবস্থানে ছিল মবিল যমুনা, যার শেয়ারদর বেড়েছে ৪.৩৯ শতাংশ, যার কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ১.৯৯ পয়েন্ট।
এছাড়া প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের দর ৮.৯৫ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ১.৭৮ পয়েন্ট, ইফাদ অটোর দর ৭.৯৫ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ১.৬৩ পয়েন্ট, আর এ কে সিরামিকের দর ৫.৩৭ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ১.৫৮ পয়েন্ট, জিপিএইচ ইস্পাতের দর ৩.৮৯ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১.৫৫ পয়েন্ট, পাওয়ার গ্রিডের দর দর ২.১৬ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ১.৪৯ পয়েন্ট, সাইফ পাওয়ারটেকের দর ৬.৩৮ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ১.৩৪ পয়েন্ট, বেক্সিমকো ফার্মার দর ১.০৯ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১.২৯ পয়েন্ট।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানিই সূচকে যোগ করেছে ১৮.০৬ পয়েন্ট।
অন্যদিকে সিটি ব্যাংকের শেয়ারদরে লভ্যাংশ সংক্রান্ত কারণে সমন্বয়ের প্রভাবে সূচক ৬.৫২ শতাংশ কমেছে। কোম্পানিটি এবার ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, যার অর্ধেক নগদে, অর্ধেক বোনাসে।
রেকর্ড ডেট ৫ মে লেনদেন বন্ধ থাকার পর আজ দর সমন্বয় হয়েছে। রেকর্ড ডেটে দর ছিল ২৮ টাকা ১০ পয়সা, ৪ টাকা কমে নতুন দর দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ২০ পয়সা। দর কমেছে ১৩.৮৭ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩.৩৭ পয়েন্ট সূচক কমেছে রবির শেয়ারদর ১.২৫ শতাংশ কমায়। তৃতীয় সর্বোচ্চ ২.২৭ পয়েন্ট সূচক কমেছে বিকন ফার্মার দর ২.৩৪ শতাংশ কমায়।
এছাড়া স্কয়ার ফার্মার দর কমায় ১.৪৩ পয়েন্ট, ইউনিট হোটেলের দর কমায় ১.০৯ পয়েন্ট, বেক্সিমকো লিমিটেড ও রেনাটার দরপতনে ০.৮৪ পয়েন্ট, আইএফআইসি ব্যাংকের দরপতনে ০.৮২ পয়েন্ট এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি ও ইবিএলের দরপতনে ০.৭৭ পয়েন্ট করে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানির কারণে সূচক থেকে হারিয়েছে ১৮.৭৩ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে যারা
এই তালিকার শীর্ষ দশের প্রায় সবগুলোর দরই বেড়েছে এক দিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই।
এর মধ্যে শীর্ষে ছিল লোকসানি সরকারি চিনিকল জিলবাংলা সুগার, যার দর বেড়েছে ৯.৯৯ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ১৬৫ টাকা ১০ পয়সা। এক দিনে বাড়ার সুযোগ ছিল ১৬ টাকা ৫০ পয়সা। ততটাই বেড়ে শেষ লেনদেন হয়েছে ১৮১ টাকা ৬০ পয়সায়। তবে ক্লোজ হয়েছে ১০ পয়সা কমে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯.৯৮ শতাংশ বেড়েছে কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজের দর। ৫৫ টাকা ১০ পয়সা থেকে দাম বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা ১০ পয়সা।
তৃতীয় অবস্থানে ছিল লোকসানি আরেক সরকারি চিনিকল শ্যামপুর সুগার। ৭৯ টাকা ২০ পয়সা থেকে ৯.৯৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৭ টাকা ১০ পয়সা।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা শাইনপুকুর সিরামিকের দরও বেড়েছে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই। ৩১ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৪ টাকা ২০ পয়সা।
এছাড়া পেনিনসুলার দর ৯.৯৪ শতাংশ, এএফিসি এগ্রো বায়োটেকের দর ৯.৯১ শতাংশ, অ্যাকটিভ ফাইন ক্যামিকেলের দর ৯.৬১ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিংয়ের দর ৯.৩৬ শতাংশ, শাশা ডেনিমের দর ৯.১২ শতাংশ এবং প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের দর ৮.৯৪ শতাংশ বেড়েছে।
আরও একটি কোম্পানির দর ৮ শতাংশের বেশি, চারটির দর ৭ শতাংশের বেশি, পাঁচটির দর ৬ শতাংশের বেশি, ১০টির দর ৫ শতাংশের বেশি, ১৪টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ২৫টির দর বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি।
দরপতনের শীর্ষ তালিকায় যেসব কোম্পানি
এই তালিকার শীর্ষে সিটি ব্যাংককে দেখালেও প্রকৃতপক্ষে এর দর অতটা কমেনি। ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ সমন্বয়ের পর কোম্পানির দর কমেছে ১৩.৮৭ শতাংশ।
প্রকৃতপক্ষে সবচেয়ে বেশি ৪.৮৪ শতাংশ দর কমেছে ইমামবাটনের। এক দিনে দর পতনের সর্বোচ্চ সীচা ৫ শতাংশের কাছাকাছি আর কোনো কোম্পানি ছিল না।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৩.৯৮ শতাংশ, তৃতীয় অবস্থানে থাকা বিডি ওয়েল্ডিংয়ের দর কমেছে ৩.৪১ শতাংশ।
এছাড়া ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের দর ৩.২৭ শতাংশ, ইউনিক হোটেলের দর ৩.০৫ শতাংশ, জেমিনি সি ফুডের দর ৩.০২ শতাংশ, রেনউেইক যগেশ্বরের দর ২.৯১ শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের দর ২.৭৩ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দর ২.৫৬ শতাংশ, ক্রাইন সিমেন্টের দর ২.৫২ শতাংশ কমেছে।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য