ঈদের ছুটির পর প্রথম কর্মদিবসে পুঁজিবাজারে লেনদেনের ভাটার যে প্রবণতা থাকে, তা দেখা গেল আবার।
চলতি সপ্তাহের পুরোটাই বন্ধ থাকার পর একটিমাত্র কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ব্রোকারেজ হাউসে বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। আর ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস গত বৃহস্পতিবারের তুলনায় লেনদেন নেমে এসেছে প্রায় অর্ধেকে।
১২ সূচক পতনের দিন হাতবদল হয়েছে ৪৬৮ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার। ঈদের আগের শেষ কর্মদিবস ২৮ এপ্রিল লেনদেন ছিল ৮৬৯ কোটি ৮১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা।
এবার ঈদের তিন দিনের ছুটির আগের দিন ছিল মে দিবসের বন্ধ। এর আগের দুই দিন ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। আবার ঈদের ছুটি শেষে একটিমাত্র কর্মদিবস শেষে আবার দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি পড়েছে।
গত দুটি বছর করোনার বিধিনিষেধে নগরীতে ঈদ করতে বাধ্য হওয়া নগরবাসী দীর্ঘ ছুটিতে এবার বাড়ি গিয়ে অবসর কাটাচ্ছেন। এ কারণে মাঝের একটি কর্মদিবসে রাজধানীর পরিস্থিতি ছুটির আমেজের মতোই। পুঁজিবাজারও এর বাইরে নয়।
মাঝের ২০২১ সাল বাদ দিলে প্রতি বছরই দেখা যায়, ঈদের পরের কর্মদিবসে লেনদেন কমে যায় অনেকটাই। ছুটি আর সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে যে অবসর শেষ হয়, এর পর থেকেই স্বাভাবিক হতে থাকে লেনদেন।
সকাল ১০টায় লেনদেন শুরু হতেই সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে গেলেও আধা ঘণ্টা যেতে না যেতেই ৩৯ পয়েন্ট কমে যায়। এর পর থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে আরও ২৭ পয়েন্ট যোগ হয়ে শেষ হয় লেনদেন।
ডিএসই ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের আগে অনেক বিনিয়োগকারী ছুটিতে গেছেন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করছেন। যারা ঢাকা ছেড়েছিলেন তারা অনেকে ফেরেননি এখনও। যার কারণে বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কম।’
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে পুঁজিবাজারে কোনো টেকনিক্যাল ইস্যু নেই। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কম। এ কারণেই বাজার কিছুটা নেতিবাচক।’
প্রায় প্রতি বছরই একই চিত্র
ঈদের পর লেনদেন কমে যাওয়ার বিষয়টি প্রতি বছরই দেখা গেছে।
২০১৬ সালে ঈদের আগে শেষ কার্যদিবস ৮ সেপ্টেম্বর লেনদেন হয়েছিল ৪৮০ কোটি টাকা এবং ঈদের পর প্রথম কার্যদিবস ১৮ সেপ্টেম্বর লেনদেন হয়েছিল ৩১৪ কোটি টাকা।
২০১৭ সালে ঈদের আগে শেষ কার্যদিবস ৩১ আগস্ট লেনদেন হয়েছিল ৮৫২ কোটি টাকা এবং ঈদের পর প্রথম কার্যদিবস ৪ সেপ্টেম্বর লেনদেন হয়েছিল ৬৬৭ কোটি টাকা।
২০১৮ সালে ঈদের পর ১৮ জুন প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছিল ৪৮৫ কোটি টাকা। আর পুঁজিবাজারে ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগে ১২ জুন লেনদেন হয়েছিল ৪৫৭ কোটি টাকা।
২০১৯ সালে ঈদের পর ৯ জুন প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছিল ৩০৪ কোটি টাকা। ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগে ৩০ এপ্রিল লেনদেন হয়েছিল ৩০৪ কোটি টাকা।
তবে ২০২০ সাল থেকে দুই বছরের পরিস্থিতি ছিল কিছুটা ভিন্ন। ওই বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে পুঁজিবাজার চাঙা হয়ে উঠতে শুরু করে, যা বজায় থাকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
২০২০ সাল দেশের করোনা পরিস্থিতিতে ঈদুল ফিতরের আগে-পরে বন্ধ ছিল পুঁজিবাজারের লেনদেন। তবে চালু ছিল ঈদুল আজহার সময়।
ঈদুল আজহার আগের দিন সর্বশেষ কার্যদিবস ৩০ জুলাই লেনদেন হয়েছিল ৫৮০ কোটি টাকা। আর ঈদের পর প্রথম কার্যদিবস ৩ আগস্ট লেনদেন হয়েছিল ৬৭২ কোটি টাকা।
২০২১ সালের ১৬ মে রোববার ঈদের পর প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। ঈদের আগের শেষ কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ১ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা।
এই লেনদেনই ছিল এক যুগের মধ্যে ঈদের পর সর্বোচ্চ লেনদেন।
সূচক ফেলল যারা
ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগে আগে বেশ কিছু কোম্পানির লভ্যাংশ ও প্রান্তিক প্রকাশ হওয়ার পর প্রথম কর্মদিবসে দেখা গেছে তার প্রভাব।
সবচেয়ে বেশি সূচক কমিয়েছে যে ১০টি কোম্পানি, তার মধ্যে তিনটিই ছিল ব্যাংক খাতের।
আয় কমে যাওয়ার পর লভ্যাংশ কমানো ওয়ান ব্যাংক আর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর প্রথমবারের মতো লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানো ন্যাশনাল ব্যাংক আর লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট শেষে লেনদেন শুরু করা পূবালী ব্যাংক সূচক টেনে নামিয়েছে।
এর মধ্যে ১১.২৮ শতাংশ দর কমা ওয়ান ব্যাংক ৭.৪৫ পয়েন্ট, ৪ শতাংশ দর হারানো এনবিএল ৫.১৩ পয়েন্ট আর ২.৮১ শতাংশ দর হারানো পূবালী ব্যাংক সূচক কমিয়েছে ৪.৩৭ পয়েন্ট।
তবে সবচেয়ে বেশি সূচক কমিয়েছে রবি। কোম্পানিটির দর ০.৯৩ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ৮.৩৫ পয়েন্ট।
দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ওয়ান ব্যাংক, তৃতীয় অবস্থানে থাকা লাফার্জ হোলসিম মিমেন্টের দর ১.৪ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ৬.৬৩ পয়েন্ট।
এছাড়া বিকন ফার্মা ৬.৬৩ পয়েন্ট, আইসিবি ৬.৪২ পয়েন্ট, স্কয়ার ফার্মা ৬.১২ পয়েন্ট, ইউনাইটেড পাওয়ার ৩.৩৯ পয়েন্ট, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ২.৮৭ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক ফেলেছে ৫৭.৫২ পয়েন্ট।
বিপরীতে ৪৬ পয়েন্ট যোগ করেছে ১০টি কোম্পানি।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭.৬৭ পয়েন্ট যোগ করেছে ইউনিক হোটেল। করোনার দুই বছরে আয়ে ধস নামলেও সেই পরিস্থিতি কেটে এবার আয় বেড়েছে কোম্পানিটির। চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে দাম বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে আজ বেড়েছে ৬.৯৫ শতাংশ।
এছাড়া ইফাদ অটোর দর ৯.৮৩ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচক বেড়েছে ৬.০৫ পয়েন্ট, জেএমআই হসপিটালের দর ৯.৮৯ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৫.১৯ পয়েন্ট।
এছাড়া শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি ৪.৮৬ পয়েন্ট, সোনালী পেপার ৪.৬৫ পয়েন্ট, আইপিডিসি ৪.১৪ পয়েন্ট, বেক্সিমকো সুসুক বন্ড ৩.৯৯ পয়েন্ট, ম্যারিকো ৩.১৬ পয়েন্ট, রেকিট বেনকিনজার ৩.১ পয়েন্ট ও ইউনিলিভার ৩.০২ পয়েন্ট যোগ করেছে।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
দর বৃদ্ধির শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো গ্রুপের শাইনপুকুর সিরামিকস। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ২৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে ৩১ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়েছে শেয়ারটি।
এর পরেই দর বেড়েছে নতুন তালিকাভুক্ত জেএমআই হসপিটাল। ৭৮ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে প্রতিটি শেয়ার।
প্রায় কাছাকাছি দর বেড়েছে ইফাদ অটোস লিমিটেডের। ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ দর বেড়ে প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫০ টাকা ৩০ পয়সা। আগের কর্মদিবসে দর ছিল ৪৫ টাকা ৮০ পয়সা।
এছাড়া ন্যাশনাল টি কোম্পানির দর ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেড়েছে।
৬ শতাংশ বেশি দর বেড়েছে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক লিমিটেড, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড এবং শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের।
৫ শতাংশের বেশি দর বেড়েছে লাভেলো, মন্নুস্পুল এবং ফাইন ফুডসের।
পতনের শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ১১.২৭ শতাংশ দর কমেছে ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডের। ২০২১ সালের জন্য ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করায় এর কোনো মূল্যসীমা ছিল না।
এর পরেই ৪ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে দর কমেছে ৬টি কোম্পানির। এর মধ্যে জেমিনি সি ফুডের দর ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের দর ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ, বিএনআইসিএলের দর ৪.৪৫ শতাংশ, নাহী অ্যালুমিনিয়ামের দর ৪.৩৫ শতাংশ, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের দর ৪.১০ শতাংশ, ন্যাশনাল ব্যাংকের দর কমেছে ৪ শতাংশ, বিডি থাইফুডের দর ৩.৮৭ শতাংশ, কাট্টালী টেক্সটাইলের দর ৩.৮৩ শতাংশ এবং জেনেক্সিল ইনফোসিসের দর কমেছে ৩.৪৮ শতাংশ কমেছে।
লেনদেনের শীর্ষ পাঁচ খাত
ঈদের পরে প্রথমদিনের লেনদেনে শীর্ষে ছিল বিবিধ খাত। তবে কোনো খাতেই লেনদেন ১০০ কোটি টাকা ছাড়ায়নি।
খাতটিতে ৭৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা লেনদেনের দিনে নয়টি কোম্পানির দর বৃদ্ধি দেখা গেছে। বিপরীতে তিনটির দর কমেছে এবং দুটির অপরিবর্তিত দামে লেনদেন হয়েছে।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রকৌশল খাতের ২৩টি কোম্পানির দর বেড়েছে। কমেছে ১৮টির এবং একটির দর অপরিবর্তিত ছিল। দিনভর ৪৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ।
দর বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। ১৮টি বা ৫৮.০৬ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার। সেইসঙ্গে দর হারিয়েছে ১০টি কোম্পানি এবং তিনটির দাম অপরিবর্তিত ছিল।
চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে থাকা ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে প্রায় সমান সংখ্যক কোম্পানির দর বেড়েছে ও কমেছে।
ব্যাংক খাতে ৩৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা লেনদেনের বিপরীতে দর বেড়েছে ১২টি কোম্পানির। বিপরীতে কমেছে ১১টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৯টির।
অন্যদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ১০টি কোম্পানির দর বৃদ্ধি পেয়েছে, কমেছে ৯টির এবং ৩টি আগের দরেই লেনদেন হয়েছে। এদিন ৩৩ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে খাতটিতে।
শীর্ষ পাঁচ খাত ছাড়াও এদিন বস্ত্র, খাদ্য, বিমা এবং মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে দর বাড়তে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য