তৃতীয় প্রান্তিক শেষে শেয়ার প্রতি যত আয় দেখানো হয়েছিল, চতুর্থ প্রান্তিক শেষে চূড়ান্ত আয় হলো তার অর্ধেকেরও কম।
অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মাসের এই চিত্রের পরও সাউথ ইস্ট ব্যাংক তার বিনিয়োগকারীদের জন্য আগের তিন বছরের তুলনায় বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছ।
টানা তিন বছর ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়ার পর তা কিছুটা বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। এর মধ্যে ৮ শতাংশ নগদ, অর্থাৎ শেয়ার প্রতি দেয়া হবে ৮০ পয়সা করে। বাকি ৪ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়া হবে বোনাস হিসেবে, অর্থাৎ প্রতি ১০০ শেয়ারের বিপরীতে দেয়া হবে চারটি শেয়ার।
বৃহস্পতিবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
২০২০ সালে ব্যাংকটি ১০ শতাংশ নগদ, তার আগের বছর সাড়ে ৭ শতাংশ নগদ ও আড়াই শতাংশ বোনাস এবং ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয় সাউথইস্ট।
নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৫০ পয়সা। আগের বছর এই আয় ছিল ১ টাকা ৮১ পয়সা।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত যেসব ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তাদের মধ্যে খুব কম ব্যাংকেরই আয় কমেছে। তবে সাউথ ইস্টের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, সেটা অন্য কোনো ব্যাংকের ক্ষেত্রে হয়নি।
এই ব্যাংকটি ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ার প্রতি আয় দেখিয়েছে ৩ টাকা ১৩ পয়সা। অর্থাৎ চতুর্থ প্রান্তিকে লোকসান হয়েছে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৬৩ পয়সা।
আয় কমলেও শেয়ার প্রতি সম্পদের দিক দিয়ে খানিকটা উন্নতি হয়েছে সাউথ ইস্টের। গত ডিসেম্বর শেষে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ ছিল ২৫ টাকা ২২ পয়সার। আগের বছর ডিসেম্বর শেষে শেয়ার প্রতি ২৪ টাকা ৯৮ পয়সা সম্পদ ছিল ব্যাংকটির।
যারা এই লভ্যাংশ নিতে চান, তাদেরকে আগামী ১২ জুন শেয়ার ধরে রাখতে হবে। অর্থাৎ সেদিন হবে রেকর্ড ডেট। এই লভ্যাংশ চূড়ান্ত করতে বার্ষিক সাধারণ সভা যাকা হয়েছে আগামী ১১ আগস্ট।
আরও পড়ুন:
পতনমুখি পুঁজিবাজারকে টেনে তুলতে আরও একটি সিদ্ধান্ত নিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, যা বাজারে তারল্য বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে বড় উত্থানের পর সোমবার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগসীমা বাড়িয়ে তিন গুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
কমিশন জানিয়েছে, পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর মাধ্যমে তারল্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাট অফ ডেট এ যোগ্য বিনিয়োগকারীদের তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগসীমা বাড়িয়ে তিন কোটি টাকা করা হয়েছে। এতদিন এই সীমা ছিল এক কোটি টাকা।
কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে কমিশনের ৮২৪তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
রোববার পর্যন্ত আট কর্মদিবসে ৫৫৫ পয়েন্ট সূচক পতনের পর তারল্য বাড়াতে দুই দিনে এটি বিএসইসির দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত। আগের দিন মার্জিন ঋণের অনুপাত ১:০৮ থেকে বাড়িয়ে ১:১ করা হয়।
তবে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে এই সিদ্ধান্তের চেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের নানা নির্দেশনা।
রোববার ১১৫ পয়েন্ট পতনের পর মন্ত্রী পুঁজিবাজার ইস্যুতে বসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআরর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে।
বৈঠকে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দেন মন্ত্রী। সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে ব্যাংকগুলো আইসিবির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ করবে, সেটাকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমার (এক্সপোজার লিমিট) বাইরে রাখা হবে।
এ ছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া ১৫৩ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তহবিলের আকারও বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করা হবে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেশও দেন মন্ত্রী।
এই বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ১১৮ পয়েন্টের উত্থান বিনিয়োগকারীদের মনের চাপ অনেকটাই দূর করেছে।
তবে এই উত্থানেও বিনিয়োগকারীরা যে পুরোপুরি সক্রিয় হননি, সেটি স্পষ্ট লেনদেনে। আগের দিনে ধসে যত টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছিল, এবার উত্থানেও হয়নি ততটা।
রোববার ১১৫ পয়েন্ট সূচকের পতনের দিন লেনদেন ছিল ৬৮২ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। পরদিন ১১৮ পয়েন্ট সূচক বাড়ার দিন হাতবদল হলো ৬৫৮ কোটি ৯৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকার।
বাজারে লেনদেন শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর বিএসইসির আসা আদেশে বলা হয়, পেনশন ফান্ড এবং স্বীকৃত প্রোভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ড ব্যতীত অন্যান্য যোগ্য বিনিয়োগকরীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসীমা ১ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩ কোটি টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আর অনুমোদিত পেনশন ফান্ড এবং স্বীকৃত প্রোভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ডের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ৫০ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে দেড় কোটি টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পেনশন ফান্ড এবং স্বীকৃত প্রোভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ড ইলেকট্রনিক্স সাবসক্রিপশন সিস্টেমে (ইএসএস) নিবন্ধনের জন্য এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) অনুমোদিত কপি এবং নিরীক্ষিত আর্থিক ও ব্যাংক বিবরণী যাচাই করতে হবে।
আরও পড়ুন:টানা পড়তে থাকা পুঁজিবাজারে অবশেষে উত্থান হলো। আগের দিন পতনের সেঞ্চুরির পর এবার উত্থানের সেঞ্চুরি দেখল বিনিয়োগকারীরা।
গত সপ্তাহ থেকে এক দিনে তিন শ বা তার চেয়ে বেশি সংখ্যক শেয়ারের দরপতনের যে চিত্র দেখা গিয়েছিল, এবার দেখা গেল উল্টো চিত্র। বেড়েছে প্রায় সাড়ে তিন শ কোম্পানির দর।
তবে এই উত্থানেও বিনিয়োগকারীরা যে পুরোপুরি সক্রিয় হননি, সেটি স্পষ্ট লেনদেনে। আগের দিনে ধসে যত টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছিল, এবার উত্থানেও হয়নি ততটা।
রোববার ১১৫ পয়েন্ট সূচকের পতনের দিন লেনদেন ছিল ৬৮২ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। পরদিন ১১৮ পয়েন্ট সূচক বাড়ার দিন হাতবদল হলো ৬৫৮ কোটি ৯৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকার।
সোমবার ধস থেকে পুঁজিবাজারের এই ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে নিশ্চিতভাবেই কাজ করেছে পুঁজিবাজার নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের ভূমিকা।
ঈদের অবসর শেষে আট কর্মদিবসে ৫৫৫ পয়েন্ট দরপতনের পর রোববার মন্ত্রী পুঁজিবাজার ইস্যুতে বসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআরর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে।
এই বৈঠকে মন্ত্রী পুঁজিবাজার নিয়ে বেশ কিছু নির্দেশনা দেন যা বাজারে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে। আর যেহেতু এই বাজারে আস্থার সংকটটাই প্রধান সমস্যা, সেখানে দরপতন ঠেকাতে সরকারের এই ভূমিকা বিনিয়োগকারীদের মনের শঙ্কা দূর করেছে অনেকটাই।
বৈঠকে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দেন মন্ত্রী। তিনি পরিষ্কার করে বলেন, করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারের খারাপ অবস্থা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। যে করেই হোক বাজারকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। একটি সুন্দর স্থিতিশীল বাজারে পরিণত করতে হবে।
আর এ জন্য বৈঠকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
এই পরিস্থিতিতে বৈঠকে পুঁজিবাজারে সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবিকে বাজারে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে ব্যাংকগুলো আইসিবির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ করবে, সেটাকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমার (এক্সপোজার লিমিট) বাইরে রাখা হবে।
এ ছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া ১৫৩ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তহবিলের আকারও বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করা হবে।
এর আগে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি মার্জিন ঋণের অনুপাত বাড়িয়ে ১:১ করে। অর্থাৎ কারও ১০০ টাকা বিনিয়োগ থাকলে তিনি আরও ১০০ টাকা ঋণ নিতে পারবেন, যা আজ থেকে কার্যকর হয়েছে। এর ফলে শেয়ারের দর পড়ে যাওয়ার কারণে যেসব বিও হিসাব ফোর্স সেলের আওতায় চলে এসেছিল, সেগুলো অনেকটাই নির্ভার থাকতে পারবে। পাশাপাশি বাজারে নতুন তারল্য ঢুকবে।
এসব ঘটনায় রোববার লেনদেন শুরুর আট মিনিটেই সূচক বেড়ে যায় ১৩৬ পয়েন্ট। শেষ পর্যন্ত এত বেশি সূচক বাড়তে পারেনি।
দিন শেষে সূচক বেড়েছে ১১৮ পয়েন্ট। বেড়েছে ৩৪৩টি কোম্পানির শেয়ারদর। বিপরীতে কমেছে ১৯টির দর। আর ১৪টির দর ছিল অপরিবর্তিত।
আট কর্মদিবসে ৫৫৫ পয়েন্ট দরপতনের পর রোববার পুঁজিবাজার ইস্যুতে বসেন অর্থমন্ত্রী। বৈঠকে তিনি পুঁজিবাজার নিয়ে বেশ কিছু নির্দেশনা দেন যা বাজারে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে। আর যেহেতু এই বাজারে আস্থার সংকটটাই প্রধান সমস্যা, সেখানে দরপতন ঠেকাতে সরকারের এই ভূমিকা বিনিয়োগকারীদের মনের শঙ্কা দূর করেছে অনেকটাই।
সব খাতেই উত্থান
আগের দিন ৯টি খাতে সব কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছিল। পুরোপুরি বিপরীত চিত্র দেখা গেছে এক দিন পরেই। মোট ২২টি খাতের মধ্যে ৯টি খাতের শেয়ারের শতভাগের দর বেড়েছে। আরও দুটি খাতে কোনো কোম্পানির দাম কমেনি।
শতভাগ শেয়ারের দর বেড়েছে প্রকৌশল, সিরামিক, তথ্য প্রযুক্তি, সেবা ও আবাসন, সিমেন্ট, ভ্রমণ ও অবকাশ, টেলি যোগাযোগ, কাগজ ও প্রকাশনা এবং পাট খাতে।
এর বাইরে বস্ত্র খাতে ৫৯টির মধ্যে ৫৮টির দর বেড়েছে, বাকি একটির দর ছিল অপরিবর্তিত। মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ৩৫টির মধ্যে দর বেড়েছে ৩২টির, অপরিবর্তিত ছিল বাকি তিনটির।
এর বাইরে সাধারণ বিমা খাতে বেড়েছে ৩৭টির দর, কমেছে দুটির, জীবন বিমা খাতে বেড়েছে ১১টির দর, কমেছে দুটির, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ২৮টির বিপরীতে দর কমেছে চারটির, অপরিবর্তিত ছিল বাকি একটির, ব্যাংক খাতে দর বেড়েছে ২১টির, কমেছে ৪টির, অপরিবর্তিত ছিল বাকি ৭টির, আর্থিক খাতে বেড়েছে ১৮টির দর, কমেছে দুটির, অপরিবর্তিত ছিল একটির, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে বেড়েছে ১৯টির দর, কমেছে দুটির, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২৩টির মধ্যে বেড়েছে ২২টির, কমেছে বাকি একটির, চামড়া খাতে বেড়েছে চারটির দর, কমেছে একটির এবং বিবিধ খাতে বেড়েছে ১৩টির দর, কমেছে একটির।
ছয় কোম্পানি দিনের সর্বোচ্চ দরে
এক দিনে দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়েছে ছয়টি কোম্পানি, যে বিষয়টি বেশ কিছুদিন পরে দেখা গেল।
কোম্পানিগুলো হলো প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, এস আলম কোল্ডরোল স্টিল, মাইডাস ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফিড মিল, ভিএসএফ থ্রেড এবং অ্যাপোলো ইস্পাত।
এর বাইরে ৮ শতাংশের বেশি বেড়েছে আরও ৬টির, ৭ শতাংশের বাইরেও বেড়েছে ৬টির দর। ২০টির দর বেড়েছে ৬ শতাংশের বেশি, ৩৩টির দর বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি, ৬১টির দর বেড়েছে ৪ শতাংশের বেশি, ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে ৭০টি কোম্পানির দর।
উত্থানের এই দিনেও খাদ্য খাতের কোম্পানি বঙ্গজ দিনের দর পতনের সর্বোচ্চ সীমায় নেমে হাতবদল হয়েছে। কোম্পানিটির দর কমেছে ৪.৭৯ শতাংশ।
গত কয়েক মাসে অস্বাভাবিক হারে উত্থান হওয়া আরডি ফুডের দর আবারও কমেছে অনেকটাই। ৪.২১ শতাংশ দর হারিয়েছে কোম্পানিটি।
এর বাইরে ৩ শতাংশের বেশি আরও দুটির, দুই শতাংশের বেশি একটির, এক শতাংশের বেশি ৫টির এবং দর হারিয়েছে বাকি কোম্পানিগুলোর দর কমেছে নগণ্য পরিমাণে।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার টেনে তুলতে এবার রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির মাধ্যমে ব্যাংকের বিনিয়োগকে পুঁজিবাজারে এই প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া দেড় শ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়িয়ে তহবিলের আকার দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্তও হয়েছে। সোমবারই এই তহবিল থেকে বিনিয়োগ করা হবে।
টানা দরপতনের মধ্যে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআরর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে বৈঠকে এসব নির্দেশ দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৈঠকে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দেন মন্ত্রী। তিনি পরিষ্কার করে বলেন, করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারের খারাপ অবস্থা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। যে করেই হোক বাজারকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। একটি সুন্দর স্থিতিশীল বাজারে পরিণত করতে হবে।
আর এ জন্য বৈঠকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে বেশ কিছু মতপার্থক্যের ইস্যু ধরেই গত সেপ্টেম্বর থেকে সংশোধন শুরু হয়। পরে যোগ হয় ইউক্রেন যুদ্ধ, জ্বালানি ও খাদ্যমূল্যের দর বৃদ্ধি, মুদ্রার দরপতন, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক ধসসহ নানা বৈশ্বিক ইস্যু।
এই পরিস্থিতিতে বৈঠকে পুঁজিবাজারে সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবিকে বাজারে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে ব্যাংকগুলো আইসিবির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ করবে, সেটাকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমার (এক্সপোজার লিমিট) বাইরে রাখা হবে।
গত কয়েক বছর ধরেই পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। একটি ব্যাংক কত টাকা বিনিয়োগ করতে পারে, তাকে বলে এক্সপোজার লিমিট।
বর্তমানে কোনো শেয়ারের ক্রয়মূল্য অথবা বাজারদর যেটি বেশি, সেটি এক্সপোজার লিমিট হিসেবে গণ্য হয়। তবে বিএসইসি চাইছে এটি শেয়ারের ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ হোক।
আবার কোনো ব্যাংক নিজে যে বিনিয়োগ করে, সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য যে টাকা দেয়, আইসিবিকে যে ঋণ দেয়, সবই এক্সপোজার লিমিটের ভেতরে পড়ে।
এ ছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া ১৫৩ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তহবিলের আকারও বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করা হবে।
বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন, মহামারি করোনার মধ্যেও আমাদের অর্থনীতি ভালো ছিল। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফসহ অনেক দাতা সংস্থা আমাদের প্রশংসা করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও আমরা ভালো আছি। এ অবস্থায় পুঁজিবাজার খারাপ যাবে, সেটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না ‘
ওই কর্মকর্তা বলেন, যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলো বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মন্ত্রী বিশ্বাস করেন।
এসব পদক্ষেপের ফলে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাক আহমেদ সাদেকও।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বাজারে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। আতঙ্কের মধ্যে আছেন ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারী। এ সিদ্ধান্তের ফলে বাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরবে।’
সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার আরও ১১৫ পয়েন্ট পতনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক এখন গত বছরের ২৯ জুনের পর সর্বনিম্ন। সেদিন ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৪২ পয়েন্ট। তবে সে সময় বাজার তলানি থেকে উঠে আসছিল এবং বিনিয়োগকারীরা ছিল ফুরফুরে মেজাজে।
এ নিয়ে গত আট কর্মদিবসেই সূচক পড়েছে ৫৫৫ পয়েন্ট।
এ পরিস্থিতিতে বাজারে তারল্য বাড়াতে মার্জিন ঋণের সীমা বাড়িয়ে ১:১ করা হয়েছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের যত টাকা রয়েছে, তারা সমপরিমাণ ঋণ নিতে পারবেন। এতদিন এটি ছিল ১:০৮। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা ১০০ টাকার বিপরীতে ৮০ টাকা ঋণ নিতে পারতেন।
পুঁজিবাজারে ব্রোকারেজ হাউস বা মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগকারীদের তাদের তহবিলের বিপরীতে ঋণ দিয়ে থাকে। একে মার্জিন ঋণ বলে।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনের মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি মার্জিন ঋণের সীমা বাড়িয়ে বাজারে তারল্য বাড়ানোর চেষ্টা করেছে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিনিয়োগকারীরা এখন তাদের বিনিয়োগের বিপরীতে সমপরিমাণ ঋণ পাবেন ব্রোকারেজ হাউস থেকে। অর্থাৎ কারও বিনিয়োগ ১০০ টাকা থাকলে তিনি ১০০ টাকা ঋণ পাবেন।
আগের সপ্তাহের চার কর্মদিবসে ৩০৭ পয়েন্ট সূচকের পতনের স্মৃতি নিয়ে রোববার নতুন সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে আরও ১১৫ পয়েন্ট সূচক পড়ার পর এই নির্দেশনা জারি করা হয়।
পুঁজিবাজারে ব্রোকারেজ হাউস বা মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগকারীদের তাদের তহবিলের বিপরীতে ঋণ দিয়ে থাকে। একে মার্জিন ঋণ বলে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী-রুবাইয়াত-উল ইসলাম নানা সময় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ নিয়ে সতর্ক করলেও আট কর্মদিবসে ৫৫৫ পয়েন্ট সূচকের পতনে ঋণসীমা বাড়িয়েই সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হলো।
বিএসইসির আদেশে বলা হয়, যেকোনো সিকিউরিটিজের প্রাইজ আর্নিংস (পিই) রেশিও ৪০-এর নিচে হলে মার্জিন ঋণের সবোচ্চ সীমা হবে ১:১। অর্থাৎ মক্কেল বা গ্রাহকের তহবিলে ১০০ ভাগ হিসেবে প্রযোজ্য হবে।
এ আদেশ অনতিবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়।
বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী-রুবাইয়াত-উল ইসলামের সই করা এই আদেশে বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানানো হয়।
গত বছরের এপ্রিলে লকডাউন আতঙ্কে পুঁজিবাজারে শেয়ারদর যখন ক্রমেই কমছিল, তখন গত বছরের ৪ এপ্রিল বিএসইসি মার্জিন ঋণের হার ১:০৮ করে। অর্থাৎ প্রতি ১০০ টাকার বিপরীতে ৮০ টাকা ঋণ নেয়া যেত। এর আগ পর্যন্ত ঋণসীমা ছিল ১:০৫। অর্থাৎ প্রতি ১০০ টাকার বিপরীতে ৫০ টাকা ঋণ পাওয়া যেত।
তবে সে সময় এই ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে সূচকের সীমা ছিল। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের নির্দেশ অনুসারে, স্টক এক্সচেঞ্জে মূল্যসূচক ৪ হাজার ১ থেকে ৭ হাজার পয়েন্টের মধ্যে থাকলে বিনিয়োগের ৫০ শতাংশ ঋণ দেয়া যেত। আর সূচক এর ওপরে উঠলে মার্জিন ঋণ দেয়া যাবে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত।
এই নির্দেশনার কারণে সূচক একটি নির্দিষ্ট সীমা পার হলে ক্রয়চাপ আসতে থাকে। আর বিএসইসিও ধারাবাহিকভাবে তাদের নির্দেশনা সংশোধন করতে থাকে।
পরে মার্জিন ঋণসীমা বাড়ানোর পাশাপাশি সূচকের এই বাধা দূর করা হয় গত বছরের ১৫ নভেম্বর। সেদিন জানানো হয়, সূচক যতই থাকুক, বিনিয়োগকারীরা প্রতি ১০০ টাকায় ৮০ টাকা ঋণ পাবেন।
মার্জিন ঋণ নিয়ে শিবলী রুবাইয়াতের সাবধানবাণী
শেয়ারমূল্য যখন বাড়তে থাকে, তখন এই ঋণ কোনো চাপ হিসেবে দেখা দেয় না। তবে শেয়ারমূল্য কমে গেলে সেটি বিনিয়োগকারীর জন্য বোঝা হয়ে যায়।
শেয়ারমূল্য কমে গেলে ব্রোকারেজ হাউস সমন্বয়ের কথা বলে। টাকা দিতে না পারলে একপর্যায়ে শেয়ার বিক্রি করেও দেয়া হয়।
২০১০ সালের ধসের পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মার্জিন ঋণধারীরা। কারণ, বহু হাউস শেয়ার বিক্রি করে তাদের টাকা উশুল করে নিয়েছে। এ কারণে বিনিয়োগকারীর টাকা শূন্য হয়ে গেছে।
গত ১০ অক্টোবর একটি আলোচনায় বিএসইসি চেয়ারম্যান নিজেও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদেরকে মার্জিন ঋণ নিয়ে সতর্ক করেন।
‘সচেতন বিনিয়োগ, টেকসই পুঁজিবাজার’ বিষয়ে এক সেমিনারে সেদিন তিনি বলেন, ‘ফাইন্যান্সিয়াল টার্মস অনুযায়ী, আপনি যত রিস্ক নেবেন, তত রিটার্ন বেশি হবে। এ ক্ষেত্রে যার সক্ষমতা আছে, সে রিস্ক নিতে পারে। রিস্ক নিতে গিয়ে ক্ষতির আশঙ্কাও আছে। তাই স্বল্প পুঁজি নিয়ে রিস্ক নেবেন না। ঋণ নিয়ে রিস্ক নেবেন না। তাই শিক্ষাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন:আরেক সেঞ্চুরিতে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের হতাশা আরও বাড়ল। ঢালাও পড়ল শেয়ারদর। এর মাধ্যমে সূচকের অবস্থান ১১ মাসের আগের অবস্থানে নেমে এল।
রোববার সপ্তাহের প্রথম দিন সূচক পড়ল ১১৫ পয়েন্ট। এ নিয়ে গত আট কর্মদিবসেই সূচক পড়ল ৫৫৫ পয়েন্ট।
গত সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস সোমবারও সূচক পড়েছিল ১৩৪ পয়েন্ট। এর পরের তিন দিনই সূচক এক পর্যায়ে বেড়ে গিয়েও কমে যায়। এবারও তাই হলো।
সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর ৯ মিনিটে সূচক বাড়ে ৩৩ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহের টালমাটাল পরিস্থিতি থেকে কিছুটা হাফ ছেড়ে বাঁচা যাবে কি না, এমন আশার কথা উঠার আগেই মিইয়ে যায়।
১০ মিনিটের পর থেকে টানা কমতে থাকে শেয়ারদর। আর সূচক দ্রুত নেমে আসতে থাকে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই বিষয়টি চালু থাকে।
বিনিয়োগকারীরা পারলে সব শেয়ার বিক্রি করে হাফ ছেড়ে বাঁচতে যায়। কিন্তু পড়তি বাজারে আসলে ক্রেতাও নেই সেভাবে। ফলে সর্বনিম্ন দরে শেয়ার বসিয়েও বিক্রি করা যাচ্ছে না।
সব মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ৬৮২ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, যা গত ৯ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক এখন গত বছরের ২৯ জুনের পর সর্বনিম্ন। সেদিন ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৪২ পয়েন্ট। তবে সে সময় বাজার তলানি থেকে উঠে আসছিল এবং বিনিয়োগকারীরা ছিল ফুরফুরে মেজাজে।
তখন শেয়ারদর ও সূচক বাড়ছিল সমানতালে। ফলে শেয়ার কিনে বেশিরভাগই মুনাফা করতে থাকে। আর প্রায় এক যুগের মন্দা কাটিয়ে পুঁজিবাজারে সুবাতাশ ফেরার পর উচ্চাশা বাড়তে থাকায় বিনিয়োগও ক্রমেই বাড়তে থাকে।
কিন্তু সেই উচ্চাশা এখন গলার কাঁটা হয়েছে। বিশেষ করে যারা মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে আটকে গেছেন, তাদের পক্ষে বের হওয়া কঠিন। মার্জিন ঋণে কেনা শেয়ারের দর ২০ শতাংশ কমলে বিনিয়োগকারীর লোকসান হয় দ্বিগুণ। আর ঋণদাতারা তখন বাড়তি টাকা জমা দেয়ার জন্য চাপ দেয়, অথবা শেয়ার বিক্রি করে তাদের টাকা ফিরিয়ে দিতে বলে। এতেও বেড়ে যায় বিক্রয় চাপ।
আবার যারা মার্জিণ ঋণ নেয়নি, তারাও আরও কমে যাবে ভেবে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে টাকা নিয়ে বাজারে ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতা ফেরার অপেক্ষায় আছেন।
রোববার সব মিলিয়ে কমেছে ৩৪৫টি শেয়ারের দর। বিপরীতে বেড়েছে কেবল ২১টির। আর ১৩টি কোম্পানি দর ধরে রাখতে পারে।
আতঙ্ক এতটাই জেঁকে বসেছে যে ২২টি খাতের মধ্যে নয়টির শতভাগ শেয়ারের দর কমেছে। এগুলো হলো সাধারণ বিমা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, কাগজ ও প্রকাশনা, সেবা ও আবাসন, ভ্রমণ ও অবসর, চামড়া, পাট ও করপোরেট বন্ড খাত।
এর বাইরে ব্যাংক খাতে দুটি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৬টির দর, আর্থিক খাতে তিনটির বিপরীতে ১৮টি, ওষুধ ও রসায়ন খাতে দুটির বিপরীতে ২৯টি, বস্ত্র খাতে তিনটি কোম্পানির বিপরীতে ৫৩টি, প্রকৌশল খাতে তিনটির বিপরীতে ৩৯টি, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে দুটির বিপরীতে ৩০টি, জীবন বিমায় ৪টির বিপরীতে ৯টি, বিবিধ খাতে ২টির বিপরীতে ১২টি, তথ্য প্রযুক্তিতে একটির বিপরীতে ১০টি, সিরামিক খাতে একটির বিপরীতে চারটি, সিমেন্ট খাতে একটির বিপরীতে ৬টি কোম্পানি দর হারিয়েছে।
পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাক আহমেদ সাদেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজারে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। আতঙ্কের মধ্যে আছেন ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারী। দেশে মল্যস্ফীতি নিয়ে আতঙ্ক আছে। ডলারের বাজারের অস্থিরতা নিয়ে আতঙ্ক। সব মিলিয়ে বাজারের প্রতি একেবারেই আস্থা নেই বিনিয়োগকারীদের। এ সব কারণেই বাজারে টানা পতন হচ্ছে।’
ঢালাও পতন
বিএসইসির সিদ্ধান্তে এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ৫ শতাংশ হলেও ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের লভ্যাংশ ঘোষণার কারণে এই সীমা ছিল না। এই ‘সুযোগে’ কোম্পানিটির দর কমেছে ৭.৯৩ শতাংশ।
এ নিয়ে গত সাত কর্মদিবসের মধ্যে ছয় দিনই দাম কমল কোম্পানিটির। ৩৪ টাকা ৪০ পয়সা থেকে নেমে এসেছে ২৯ টাকা ৩০ পয়সায় যা গত এক বছরের সর্বনিম্ন অবস্থান থেকে ১০ শতাংশ কেবল বেশি।
৫ শতাংশ পর্যন্ত দর কমেছে ৭টি কোম্পানির। আর ভগ্নাংশের হিসাবের কারণে ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমতে না পেরে আশেপাশে কমেছে আরও ৬০টির বেশি কোম্পানির দর।
সব মিলিয়ে ১১১টি কোম্পানির দর কমেছে ৪ শতাংশের বেশি। আরও ৭১টির দর কমেছে ৩ শতাংশের বেশি।
সবচেয়ে বেশি দরপতনের তালিকায় অবশ্য ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের নাম দেখাচ্ছে। কোম্পানিটি দর হারিয়েছে ৮.৮৫ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ১১ টাকা ৩০ পয়সা। এক টাকা কমে হয়েছে ১০ টাকা ৩০ পয়সা।
তবে কোম্পানিটির লভ্যাংশ ঘোষণার সমন্বয় হয়েছে। রেকর্ড ডেট বৃহস্পতিবারের দরের সঙ্গে ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার সমন্বয়ে দর দাঁড়ায় ১০ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ দর কমেছে আসলে ৪০ পয়সা। তবে বিনিয়োগকারীরা ৫০ পয়সা পাবেন নগদ লভ্যাংশ হিসেবে। নগদ লভ্যাংশ সমন্বয়ের কথা না থাকলেও দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারের দর নগদ লভ্যাংশের সঙ্গে মিল রেখে কমে যেতে দেখা যায়।
বিপরীতে যে কয়টি কোম্পানির দর বেড়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া ফার্স্ট ফাইন্যান্সের দর। আগের দিন দাম ছিল ৫ টাকা ৬০ পয়সা। বাড়ার সুযোগ ছিল ৫০ পয়সা। ততটাই বেড়েছে।
এছাড়া কোনো একটি কোম্পানির দরও সার্কিট ব্রেকার ছুঁতে পারেনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫.৬ শতাংশ বেড়েছে ডেল্টা লাইফের দর।
আরও দুটির দর ৪ শতাংশের বেশি দুটির দর ৩ শতাংশের বেশি, ৩টির দর ২ শতাংশের বেশি এবং চারটির দর বেড়েছে এক শতাংশের বেশি।
আরও পড়ুন:চলতি সপ্তাহের চার কর্মদিবসের প্রতিদিন হারিয়ে ৩০০ পয়েন্টেরও বেশি পড়ল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স।
এই পতনের মধ্য দিয়ে সূচকের অবস্থান নেমে গেল ১০ মাস আগে ২০২১ সালের ১২ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্নে। সেদিন সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২০৮ পয়েন্ট।
বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫৮ পয়েন্ট।
গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৫৬৫ পয়েন্ট। অর্থাৎ এক সপ্তাহে কমেছে ৩০৭ পয়েন্ট।
রোববার বুদ্ধপূর্ণিমার বন্ধের পর সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস সোমবার ১৩৪ পয়েন্ট সূচক পতনের পর তিন দিনের প্রতিদিনই বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও পড়েছে।
মঙ্গলবার লেনদেন শুরুর সাত মিনিটে ৫৪ পয়েন্ট বেড়ে পরে একপর্যায়ে ১১২ পয়েন্ট কমে যায়। তবে শেষ দুই ঘণ্টার ক্রয়চারে শেষ পর্যন্ত ২৭ পয়েন্ট হারিয়ে শেষ করে লেনদেন।
তৃতীয় কর্মদিবস বুধবারও দেখা যায় একই প্রবণতা। লেনদেন শুরু হয় ৪৩ পয়েন্ট বেড়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কমে যায় ৯৩ পয়েন্ট।
শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতেই দেখা দেয় দরপতন। এক ঘণ্টায় সূচক পড়ে যায় ৮০ পয়েন্টের বেশি। কিন্তু বেলা দেড়টার দিকে হারানো সূচক পুনরুদ্ধার হয়ে বাড়ে আরও ১৫ পয়েন্ট। কিন্তু এরপর দেড় ঘণ্টায় আবার দেখা দেয় দরপতন। শেষ পর্যন্ত আগের দিনের চেয়ে ৫১ পয়েন্ট কমে শেষ হয় লেনদেন।
এ নিয়ে ঈদের অবসর শেষে দুই দিন বেড়ে পরে টানা সাত কর্মদিবসে সূচক পড়ল ৪৩৯ পয়েন্ট।
দিন শেষে ২৬৩টি কোম্পানি দর হারায়। বিপরীতে বাড়ে ৬৭টি। দর ধরে রাখতে পারে ৫০টি কোম্পানি।
পুঁজিবাজারে এই দরপতনের পেছনে নানা বিষয়, শঙ্কা কাজ করছে। ইউক্রেন যুদ্ধ, শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর বাংলাদেশেও একই পরিণতিক আশঙ্কার পর সবশেষ যোগ হয়েছে ডলারের বিপরীতে টাকার মান হারানোর বিষয়টি।
গত এক মাসে টাকার দর কমেছে তিন শতাংশের বেশি, তবে মঙ্গলবার খোলাবাজারে ডলারের দাম সরকারের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে বেশি ছিল আরও অন্তত ১৫ টাকা।
এই পরিস্থিতিতে আরও দরপতনের আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা কম দামে হলেও শেয়ার বিক্রি করে দিতে চাইছেন। এর পাশাপাশি আইসিবির ব্যাংক ঋণ পরিশোধে শেয়ারের বিক্রয়চাপ রাখে ভূমিকা।
রাষ্ট্রায়ত্ত এই বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানটি অবশ্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আশ্বস্ত করেছে যে ব্যাংকের ঋণের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে তাদের প্রস্তাব সক্রিয় বিবেচনায় আছে। পাশাপাশি তারা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষের কাছে বিনিয়োগের জন্য আরও ৫০০ কোটি টাকা চেয়েছে। সেই সঙ্গে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল থেকে আরও টাকার জোগান দেয়ার ঘোষণা এসেছে।
তবে কোনো টোটকাই এবার কাজে লাগছে না। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবার বাজারে হস্তক্ষেপ না করে তাকে স্বাধীনভাবে চলতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
২০২০ সালে করোনার প্রাদুর্ভাবের পর এভাবে দরপতন হতে থাকা পুঁজিবাজারে প্রতিটি শেয়ারের সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়া হয়েছিল। এবারও সেই দাবি জোরালোভাবে উঠেছে বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে।
তবে বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী-রুবাইয়াত-উল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেছেন, তারা এটা করবেন না। এর কারণ, তাদের বিবেচনায় এই পদক্ষেপগুলো বাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমায়। ইউক্রেন যুদ্ধের পর ধস ঠেকাতে এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করাটাও ক্ষতির কারণ হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাক আহমেদ সাদেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুঁজিবাজারের জন্য খুবই খারাপ সপ্তাহ গেলো একটা। বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা এখন নেই বললেই চলে। সবাই হতাশ-ক্ষুব্ধ’
কেনো বাজারে টানা পতন হচ্ছে- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, আমরাও বুঝতে পারছি না, কেন এমনটা হচ্ছে। বাজারে উত্থান-পতন থাকবে-এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তার তো সুনির্দিষ্ট কারণ থাকতে হবে। এখন কোনো কারণ ছাড়াই পতন হচ্ছে। পুরোপুরি গুজবনির্ভর হয়ে পড়েছে বাজার। নানান দিক থেকে নানান ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সেই গুজবে ভয় পেয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা, বিক্রির চাপে সূচক পড়ছে।’
এদিন চারটি কোম্পানি দিনের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমায় গিয়ে লেনদেন শেষ করেছে। আরও একটি কোম্পানির দর ৮ শতাংশের বেশি বেড়েছে। আরও দুটির দর সাত শতাংশ, একটির দর ছয় শতাংশ, দুটির দর চার শতাংশ বেড়েছে।
ওদিকে ১৫টির মতো কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে যতটা কমা সম্ভব ততটাই। এর মধ্যে একটির দর ৫ শতাংশ, ২২টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ২৮টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ৪৯টির দর কমেছে দুই শতাংশের বেশি।
আরও পড়ুন:বন্ধ বা ক্লোজড বেনিশিফিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব থেকে লেনদেন করার সুযোগ না দিতে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিডিবিএল) নির্দেশ দিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
একই নির্দেশনা ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ এবং এইচএসবিসি ব্যাংককেও দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র সঠিক বা জেনুইন বিও দিয়ে লেনদেন করার জন্য সবাইকে বলা হয়েছে।
বিএসইসির সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমানের সই করা এ সংক্রান্ত চিঠি বুধবার প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি বিদেশিদের শেয়ার বিক্রিতে বন্ধ বিও থেকে ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজের বিরুদ্ধে বেআইনি সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠে। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটির কাছে ব্যাখ্যা চায় বিএসইসি।
জানা গেছে, চার বছর আগে বন্ধ হওয়া বিদেশি বিনিয়োগকারী বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসির শেয়ার কাস্টডিয়ান হিসাবে রক্ষিত আছে। এই বিও হিসাব থেকেই গত ১১ মে বড় অঙ্কের শেয়ার বিক্রি হয়।
এ ঘটনাকে অস্বাভাবিক বলে মনে করে বিএসইসি। এ কারণে বিও হিসাব পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চায় বিএসইসি। এইচএসবিসির কাছেও ব্যাখ্যা তলব করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এই অস্বাভাবিক লেনদেনের আলোকে কমিশন বন্ধ বা ডামি বা ফেক বিও হিসাব থেকে লেনদেন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে চিঠি ইস্যু করে।
চিঠিতে কমিশন জানিয়েছে, বিএসইসির মার্কেট সার্ভেইল্যান্স অ্যান্ড ইন্টিলিজেন্স ডিপার্টমেন্টের পর্যবেক্ষনে বন্ধ/ডামি/ফেক বিও থেকে নিয়মিত লেনদেনের বিষয়টি উঠে এসেছে। আন্তর্জাতিকভাবে এ ধরনের বিও থেকে লেনদেন করার উদাহরন নেই। এ ছাড়া দেশে এ জাতীয় লেনদেন করা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর ব্যাখ্যাও সন্তোষজনক না। এমনকি কোন আইনে এ জাতীয় বিও থেকে লেনদেন করা যায়, তা উল্লেখ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।
এই পরিস্থিতিতে কমিশন সঠিক (জেনুইন) বিও দিয়ে লেনদেন করার নির্দেশ দিয়েছে।
সঠিক বা জেনুইন বিও’র বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘যে বিও সঠিক তথ্যের মাধ্যমে খোলা হয়েছে এবং যে বিওতে সিকিউরিটিজ আছে, শুধুমাত্র ওই বিও থেকেই বিক্রি করা যাবে। এক বিওর সিকিউরিটিজ অন্য বিও দিয়ে বিক্রি করা যাবে না।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য