এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা দুই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ করার পর লেনদেন ধারাবাহিকভাবেই বাড়ছে। টানা চার দিন বেড়ে এক দিন সূচক কমার দিন কেবল কমেছে লেনদেন।
বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে যত টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে, চলতি রমজান মাসে এর আগে তা কখনও হয়নি। লেনদেন বাড়তে থাকাকে বাজারের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর হতাশ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবার আশা তৈরি হচ্ছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া বাজার সংশোধনে কখনও কখনও সূচক বেড়েছে টানা কয়েক দিন। এরপর আবার সংশোধনে গিয়ে টানা পড়তে থাকার প্রবণতা দেখা গেছে।
তবে রমজানের শুরুতে ধস পরিস্থিতি থেকে গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেখা গেছে। চলতি সপ্তাহে দেখা গেছে ব্যতিক্রম এক চিত্র। দুই সপ্তাহ মিলিয়ে টানা চার কর্মদিবস বাড়ার পর সূচক কমেছিল এক দিন। এবার সংশোধন এই এক দিনেই শেষ হয়েছে।
সোমবার সূচক সামান্য কমলেও মঙ্গলবারই ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। পরদিন বুধবার দিনভর উঠানামা করতে করতে বেলা শেষে প্রায় আগের দিনের অবস্থানেই শেষ হয় লেনদেন। সূচক বাড়ে কেবল ০.০৭ পয়েন্ট।
এদিন বাজারের ইতিবাচক প্রবণতা যেটি দেখা গেছে, সেটি হলো লেনদেন। দুই সপ্তাহ আগে যেটি চার শ কোটি টাকার নিচে নেমে গিয়েছিল, সেটি এখন নয় শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে আবার হাজার কোটি টাকার দিকে ছুটছে।
বেলা শেষে ৯৩২ কোটি ৪৯ লাখ ৩২ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে, যা রোজায় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ঈদের আগে কেবল আর একটি কর্মদিবস আছে। বৃহস্পতিবার সেটি এক হাজার কোটি টাকা ছড়ায় কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
গত ২৪ এপ্রিল ৮৯৫ কোটি ৮৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা ছিল রোজার সর্বোচ্চ লেনদেন। আর মাসটির প্রথম কর্মদিবস ৩ এপ্রিল লেনদেন ছিল ৮৩৬ কোটি ৬২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
ইউক্রেনে রুশ হামলার পর বাজারে যে ধস নামে, সেটি ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ ঠিক করে দিয়েছিল মার্চে। শুরুতে এটি বাজারে পতন ঠেকাতে পারলেও পরে এটিই লেনদেন কমে যাওয়ার একটি কারণ হিসেবে দেখা দেয়।
পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির দুই শতাংশ দরপতন খুবই স্বাভাবিক একটি চিত্র। নানা সময় দেখা যায়, এর চেয়ে বেশি দর কমার পর সেদিনই ক্রয়চাপে আরও দাম বেড়েছে। কিন্তু দুই শতাংশের এই বিধানের কারণে দেখা যায়, দুই শতাংশ দর কমে যাওয়ার পর ক্রেতা উধাও হয়ে যাচ্ছে। এভাবে দিনের পর দিন দরপতন ঘটতে থাকে।
গত ২০ এপ্রিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করার পরদিন থেকেই লেনদেনে দেখা যায় ইতিবাচক প্রবণতা।
আদেশ আসার পর প্রথম কর্মদিবস ২১ এপ্রিল লেনদেন দেড় শ কোটি টাকা বেড়ে হয় ৭৫৪ কোটি ৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। পরের কর্মদিবস ২৪ এপ্রিল লেনদেন আরও বেড়ে হয় ৮৯৫ কোটি ৮৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা।
এই দুই দিন মিলিয়ে মোট চার কর্মদিবস সূচক বাড়ার পর ২৫ এপ্রিল বাজার সংশোধনে লেনদেন এক দিন কমে হয় ৫৯৩ কোটি ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।
তবে সংশোধন কাটিয়ে পরের দিনই লেনদেন এখান থেকে দেড়শ কোটি টাকা বেড়ে হয় ৭৬৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।
সেখান থেকে আরও ১৬৫ কোটি ৭৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকা বাড়ল লেনদেন।
এদিন বেড়েছে বেশিরভাগ শেয়ারের দরও। সব মিলিয়ে ১৭১টি কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫৮টির, আর অপরিবর্তিত ৫২টির দর ছিল অপরিবর্তিত।
স্টক ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের আগে বাজার থেকে টাকা তোলার সুযোগ না থাকায় সেল প্রেসারটা ছিল না। লেনদেনও বেড়েছে। ঈদের পরে সেল প্রেসার থাকার কথা নয়, আশা করা যাচ্ছে বাজার সার্বিক অবস্থা তখন ভালো হবে।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
এই তালিকার শীর্ষে আবারও লোকসানি প্রতিষ্ঠান ইমাম বাটন। ২০১০ সালের পর থেকে কখনও লভ্যাংশ না দেয়া কোম্পানিটির দর আরও বেড়েছে ১০ শতাংশ। আগের দিন দাম ছিল ৫৫ টাকা। সেখান থেকে ৫ টাকা ৫০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা ৫০ পয়সা।
গত অক্টোবর ফেব্রুয়ারি থেকে দুর্বল এই কোম্পানিটির শেয়ারদরে অস্বাভাবিক উত্থান দেখা দিয়েছে। ৯ ফেব্রুয়ারি শেয়ারদর ছিল ২৪ টাকা, আড়াই গুণ হতে সময় লাগল আড়াই মাস।
গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ১৯ টাকা ১০ পয়সা।
তৃতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদনে আয় বৃদ্ধির খবরে ইউনিক রিসোর্ট অ্যান্ড হোটেলের দাম বেড়েছে ৯.৯৮ শতাংশ। এই কোম্পানিটি দর বৃদ্ধির তালিকায় ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে।
আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬৩ টাকা ১০ পয়সায়। দাম বেড়ে আজ হাতবদল হয়েছে ৬৯ টাকা ৪০ পয়সায়।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা জেএমআই হসপিটালের দর বেড়েছে ৯.৯৭ শতাংশ। ২০ টাকায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির দর উঠেছে ৭৮ টাকা ৩০ পয়সায়।
চতুর্থ সর্বোচ্চ সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের দর বেড়েছে ৬.৭0 শতাংশ। আগের দিন প্রতিটি শেয়ার হাতবদল হয়েছিল ১৬ টাকা ৪০ পয়সায়। আজকে সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৫০ পয়সা।
কখনও লভ্যাংশ দেয়ার ইতিহাস না থাকা শ্যামপুর সুগারের দর ৬.৪০ শতাংশ, এপেক্স ফুটওয়্যারের দর ৬.১৭ শতাংশ, বিডি ল্যাম্পসের দর ৫.৯০ শতাংশ, এছাড়া রানার অটোর দর ৫.৪৬ টাকা, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৫.২২ শতাংশ এবং মনোস্পুল পেপারের দর ৪.৭১ শতাংশ বেড়েছে।
দরপতনের শীর্ষ ১০
শীর্ষ ১০টি কোম্পানিরই দর কমেছে পাঁচ শতাংশ ও এর আশেপাশে।
এর মধ্যে চলতি বছর আগের বছরের তুলনায় আয় ৯০ শতাংশেরও বেশি কমে যাওয়ার প্রতিবেদন দেয়া ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের দর কমেছে ৪.৯৯ শতাংশ। এক হাজার ৯৩২ টাকা ২০ পয়সা থেকে নেমে দর দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮৩৫ টাকা ৬০ পয়সায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪.৯১ শতাংশ দর কমেছে আমান ফিডের। ৪২ টাকা ৭০ পয়সা থেকে কমে প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪০ টাকা ৬০ পয়সায়।
আগের দুই দিন ইন্স্যুরেন্স খাতে দর বাড়তে দেখা যায়। আজ দরপতনের শীর্ষ দশের ছয়টি এ খাতের। কোম্পানিগুলো হলো প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স ও ইসলামী ইন্স্যুরেন্স।
শীর্ষ দশের অন্য অন্য দুই কোম্পানি হলো এসইএমল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড ও নাহি অ্যালুমিনিয়ম।
লেনদেনে শীর্ষ পাঁচ খাত
১২০ কোটি ৪০ লাখ টাকা লেনদেন করে শীর্ষে রয়েছে বিবিধ খাত। যা মোট লেনদেনের ১৫.২০ শতাংশ। আর কোনো খাতের লেনদেন ১০০ কোটি ছাড়ায়নি। খাতটির ১০টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৪টির।
এপরেই ৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে বস্ত্র খাতে। সবচেয়ে বেশি ৪২টি কোম্পানির দর বেড়েছে এ খাতের। ১৩টির দর হ্রাস পেয়েছে ও অপরিবর্তিত ছিল ৪টির দর।
তিনটি করে কোম্পানির দর বেড়েছে ও কমেছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতে। ৭৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্য তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল খাতটি। এই খাতের কোম্পানি সোনালী পেপারেই হাতবদল হয়েছে ৬২ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৪টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির দিনে লেনদেন হয়েছে ৭০ কোটি ১০ লাখ টাকা। বিপরীতে দর কমেছে ১৫টি কোম্পানির।
প্রকৌশল খাতের ২৩টি কোম্পানির দর বাড়ার দিনে লেনদেন হয়েছে ৬৯ কোটি ৯০ লাখ। দর কমেছে ১৬টির ও তিনটির অপরিবর্তিত ছিল।
এছাড়া ব্যাংক, খাদ্য, আইটি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে দর বৃদ্ধি দেখা গেছে।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য