প্রশ্ন: এপিআই (ওষুধ শিল্প) পার্ক উৎপাদনে যাবে কবে?
শফিউজ্জামান: এখন অগ্রগতির শেষ ধাপে আছি আমরা। এখানে ২৭টি শিল্প ইউনিটকে ৪২টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যার যার প্রয়োজন ও সক্ষমতা অনুযায়ী প্লট দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু শিল্প ইউনিট তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে। এর মধ্যে বড় চারটি ইউনিট তাদের অবকাঠামো নির্মাণ শেষ করে জুনের মধ্যেই পরীক্ষামূলক ট্রায়ালে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।
কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার বা সিইটিপি নির্মাণের কাজ ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। দুটি ইউনিটের একটি জুনের আগেই চালু করা যাবে। আরেকটি চলতি বছর ডিসেম্বরের আগে শেষ করা যাবে, যা ব্যবহার করা হবে চাহিদার ভিত্তিতে।
প্লট বরাদ্দ পাওয়া অন্য শিল্প ইউনিটগুলো চলতি বছরের মধ্যে তাদের এপিআইয়ের অবকাঠামো নির্মাণ শেষ করতে পারবে। পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই, আগামী ২০২৩ সালের প্রথম দিকেই আমরা এপিআই (ওষুধ শিল্প) পার্কে পরিপূর্ণ উৎপাদন শুরু করতে পারব।
প্রশ্ন: বেশির ভাগ কোম্পানি এখনও কাজ শুরুই করেনি। এক বছরের মধ্যে তারা কীভাবে উৎপাদনে যাবে?
শফিউজ্জামান: বর্তমানে আমরা ফর্মুলেশন ড্রাগ করি, যা ওষুধের ফিনিশড ফর্মুলেশন। এটা যার যার কারখানায় উৎপাদন হয়। এপিআই পার্কে আমরা ইনগ্রেডিয়েন্ট তৈরি করব। এটাকে বলে র’ ম্যাটেরিয়াল ড্রাগ। এর জন্য বড় বিনিয়োগের দরকার হলেও সময় বেশি লাগে না।
অবকাঠামো নির্মাণেই যে সময়টুকু লাগে। বাকিটুকু আমাদের সক্ষমতা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর বিষয়। অলরেডি ১০-২০ শতাংশ ওষুধের এপিআই আমরা স্থানীয়ভাবেই করছি। আমাদের অনেক টেকনোলজি আছে। বাংলাদেশে অনেক বিশেষজ্ঞ কেমিস্ট-বায়োকেমিস্ট আছেন। এখন আমাদের স্থাপনা নির্মাণ হলেই এপিআই পার্কে উৎপাদন শুরু করতে পারব।
প্রশ্ন: প্লট বরাদ্দ পেয়েও কেন কোম্পানিগুলো এপিআইতে যায়নি?
শফিউজ্জামান: এটা ঠিক, প্লট বরাদ্দ পাওয়া অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও এপিআই পার্কে যায়নি। তার মানে এই নয় যে তারা এপিআই করছে না। ১০-২০ শতাংশ ওষুধের কাঁচামাল স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে। যার যার কারখানায় আলাদাভাবে বানানো হচ্ছে। ওই সব প্রতিষ্ঠান গজারিয়ার এপিআই পার্কেও আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এপিআই পার্কে দীর্ঘসূত্রতার অন্যতম একটা কারণ হলো সরকার এপিআই পার্কে জমির যে মূল্য নির্ধারণ করেছে, তা বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক বেশি।
আমরা সমিতির পক্ষ থেকে বিসিক ও শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। দাম কমাতে বলেছি। এ ছাড়া সার্ভিস চার্জ ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে বলেছি। বিষয়টি এখন বিবেচনাধীন।
প্রশ্ন: কোম্পানিগুলোকে ওষুধ শিল্প পার্কে নিতে সমিতি কী ভূমিকা রাখছে?
শফিউজ্জামান: আপনারা নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরাতে কত বছর লেগেছে। আবার সেখানে উদ্যোক্তারা যাওয়ার পরও দেখা গেছে, দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও সেখানকার কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) কাজ পরিপূর্ণভাবে শেষ হয়নি। আবার যা হয়েছে, তা দিয়ে পরিবেশের শতভাগ সুরক্ষা দেয়া যাচ্ছে না।
এপিআই পার্ক স্থাপনের দাবিটি ওষুধ শিল্প সমিতিই তুলেছিল। এপিআই পার্কে সিইটিপি নির্মাণে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা ও সক্ষমতা পর্যালোচনা করেছি। এরপর একটি ভালো মানের কোম্পানিকে নিয়োগ দিয়েছি, যার নাম রামকি এনভায়রো সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড। ইতোমধ্যে এ প্রতিষ্ঠানটি টাইমবাউন্ডে থেকেই সিইটিপি নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে (৯৮%) নিয়ে এসেছে। সিইটিপি নির্মাণে ১২০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এই টাকা সমিতির পক্ষ থেকে জোগান দেয়া হয়েছে।
প্রশ্ন: কাঁচামাল উৎপাদনে কোনো বাধ্যবাধকতা আছে কি?
শফিউজ্জামান: হ্যাঁ, এ ধরনের একটি নির্দেশনা সমিতির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। চাইলেই উদ্যোক্তারা যার যার খেয়াল-খুশিমতো কাঁচামাল তৈরি করতে পারবে না। কে কী উৎপাদন করবে, তা জানাতে হবে।
একটা কোম্পানি যে কাঁচামাল তৈরি করবে, সেটা যেন আরেকজন তৈরি না করে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। একই কাঁচামাল একাধিক প্রতিষ্ঠান উৎপাদন করতে গিয়ে নিজেরাই যদি ঝগড়া করি, তাহলে তো আমাদের ক্ষতি হবে। দেশেরও ক্ষতি হবে।
প্রশ্ন: স্বাধীনতার ৫০ বছরে ওষুধ শিল্পের অর্জন সম্পর্কে বলুন।
শফিউজ্জামান: স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন অনেক। তবে আমরা মনে করি, উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো ওষুধ শিল্পের অভাবনীয় বিকাশ। একটা সময় আমাদের কিছুই ছিল না। পাটের বিনিময়ে ওষুধ আনতে হতো। এখন ১৭ কোটি মানুষের চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশে উৎপাদতি হচ্ছে। আমরা শুধু বৈদেশিক মুদ্রাই সাশ্রয় করছি না। পাশাপাশি স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর বিশ্বের ১৫৩টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছি।
প্রশ্ন: ওষুধ শিল্প বিকাশের নেপথ্যে কী কী পদক্ষেপ কাজ করেছে?
শফিউজ্জামান: তিনটি পদক্ষেপ ওষুধ শিল্পের সম্প্রসারণে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। এর একটি হলো ১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধ নীতি। অন্যটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কপিরাইট আইন বা মেধাস্বত্ব ছাড়ের সুযোগ এবং শেষটি সরকারের নীতিসহায়তা।
প্রশ্ন: স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর দেশের ওষুধ শিল্পে কোনো প্রভাব পড়বে কি?
শফিউজ্জামান: কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছি না। কারণ যখন আমরা ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্র্যাজুয়েশন করব, তার পরও ২০৩২ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডব্লিউটিওর এই পেটেন্ট ছাড়ের সুবিধা ভোগ করতে পারব। ওই সময় পর্যন্ত সুবিধা অব্যাহত রাখা গেলে দেশের ওষুধ শিল্পকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারব। তখন আর সমস্যা হবে না।
তা ছাড়া আমাদের প্রযুক্তি আছে। আমরা সবকিছু বানাতে পারি। এখন শেয়ারমার্কেটও জমজমাট। টাকা-পয়সা মানুষের আছে। সবার আয় বেড়েছে। যার কারণে অনেকেই ওষুধ শিল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আমরা ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদনে মনোযোগ দিয়েছি। চালু হচ্ছে এপিআই পার্ক। এখানে শুধু কাঁচামাল উৎপাদন হবে।
প্রশ্ন: এপিআই পার্ক চালু হলে ওষুধ শিল্পের সুবিধা কী হবে?
শফিউজ্জামান: দেশে ওষুধের কাঁচামালের উৎপাদন বাড়বে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কাঁচামালের কাঁচামালও দেশে উৎপাদনের সুযোগ তৈরি হবে। এতে কাঁচামালের আমদানি খরচ বাঁচবে। আবার দেশে নিজস্ব পেটেন্টেড ওষুধের উৎপাদন ও গবেষণা বাড়বে। দেশের দক্ষ জনবল বা কেমিস্ট ও বায়োকেমিস্টরা দেশের ওষুধ শিল্পেই কাজে আগ্রহী হবে। ওষুধের গুণগত মানের বিশ্ব স্বীকৃতি আসবে। বিশ্ববাজারে আমাদের ওষুধের রপ্তানি বাজার আরও বড় হবে।
প্রশ্ন: ভোক্তা পর্যায়ে ওষুধের লাগামহীন দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে কিছু বলুন।
শফিউজ্জামান: ওষুধের দাম আমরা ইচ্ছা করলেই বাড়াতে পারি না। অনুমোদন নিতে হয়। আবেদনসাপেক্ষে ঔষধ প্রশাসন পরিদপ্তর যাচাই-বাছাই করে। এ ক্ষেত্রে তারাও আইন-কানুন ও নীতিমালা অনুসরণ করে সিদ্ধান্ত দেয়। ওষুধের দাম বাড়লে মানুষ বেকায়দায় পড়ে। এটা যাতে না বাড়ে, সে বিষয়ে ওষুধ শিল্প মালিক সমিতি এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সতর্ক রয়েছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে রপ্তানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)। এই পরিস্থিতিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বিপরীতে বিমা দাবি দ্রুত নিষ্পত্তি ও বিমার বাইরে করা পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারি বিশেষ তহবিল গঠন করে ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান ইএবি সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। সংবাদ সম্মেলনে তৈরি পোশাক, বস্ত্রকল, ওষুধ, চামড়াসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা শঙ্কিত। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপক দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডে স্পষ্ট যে কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর নয়। নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে কেবল ব্যবসায়িক ক্ষতি নয়, আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানিকারকরা কার্গো ভিলেজে নিরাপত্তাহীনতা, গুদাম ব্যবস্থাপনায় অব্যবস্থাপনা ও মালামাল চুরির অভিযোগ জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে ইএবি বলেছে, ওষুধ, তৈরি পোশাক, কৃষিপণ্য, ফলমূল, হিমায়িত খাদ্য ও অন্যান্য রপ্তানিকারক খাত এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হতে পারেন, যা ভবিষ্যতে রপ্তানি চুক্তি ও অর্ডারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইএবি সভাপতি বলেন, আগুনের ঘটনাটি যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে এবং দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অঘটন আর না ঘটে।
এ সময় কার্গো ভিলেজের আধুনিকায়ন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন, ওষুধ শিল্পের জন্য আলাদা শীততাপনিয়ন্ত্রিত গুদাম স্থাপন, নিরাপদ দূরত্বে রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ ও সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর গুদাম ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
উল্লেখ, গত শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো এলাকায় আকস্মিকভাবে আগুন লাগে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ফাইল ছবি
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে বলে পুনরায় জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।”
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির সভা শেষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের সফল আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা, বিশেষ করে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বডিওর্ন ক্যামেরা কেনা হবে এবং এ বিষয়ে সরকার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত তিনটি সাধারণ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের আগামী সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক কিছু বড় অগ্নিকাণ্ডের পেছনে নাশকতা আছে কিনা- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, এসব ঘটনা তদন্তের জন্য একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলোতে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করা হবে।
প্রবাসীদের জন্য পাসপোর্ট ফি কমানো এবং বিমান ও বিমানবন্দরে সর্বোত্তম সেবা প্রদানের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে বলেও তিনি জানান। সূত্র: বাসস
নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। ফাইল ছবি
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস
ছবি: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে।
অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব মুঃ রইচ উদ্দিন খান ও মোঃ তারেক হাসান এবং ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ কামরুল হাসান। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব পঙ্কজ বড়ুয়া।
কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র: বাসস
গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পদ্মা সেতুতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্যাশলেস, টোল কালেক্টর ব্যতীত ননস্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC) সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের টোল পরিশোধ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায় এসেছে।
বর্তমানে বিকাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের অ্যাপ এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর টোল পরিশোধ করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা বিকাশ অ্যাপে গিয়ে “টোল” অপশনের অধীনে “মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করুন” এ প্রবেশ করে গাড়ির নম্বর ও চেসিস নম্বরের শেষ ৪ (চার) ডিজিট প্রদান করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। সফল রেজিস্ট্রেশনের পর ফিরতি এসএমএসে একটি Ekpass ID প্রেরণ করা হবে।
এই Ekpass ID ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাপের “Pay Bill” অপশনের “D-Toll Top-Up” সেবার মাধ্যমে রিচার্জ করতে হবে। এরপর পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজার নিকটস্থ রেজিস্ট্রেশন বুথে বিআরটিএ অনুমোদিত RFID ট্যাগ প্রথমবারের মতো যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। একবার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে, যানবাহন কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে ETC লেন ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারবে।
১৮ অক্টোবর সেতু বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ পদ্মা সেতুর ইটিসি বুথ পরিদর্শন করেন এবং ইটিসি সেবা ব্যবহার করে পদ্মা সেতু পারাপার করেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ETC সিস্টেমের লাইভ পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই সেবার পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ETC সিস্টেমের মাধ্যমে মোট ১,৮১৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং মোট ৩৪,৯১,৭০০ টাকা টোল আদায় সম্পন্ন হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মহোদয়ের বিশেষ নির্দেশনা ও দিকনির্দেশনায় পদ্মা সেতুতে এই ETC সিস্টেম বাস্তবায়িত হয়েছে। এটি দেশের টোল ব্যবস্থাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা সময়, জ্বালানি ও মানবসম্পদের অপচয় হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপ এই সেবার আওতায় যুক্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর a2i (এটুআই) কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং নতুন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে সংযুক্তির কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই টোল কালেক্টর ব্যতীত নন স্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে পদ্মা সেতু ব্যবহারকারীরা দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছভাবে টোল পরিশোধ করতে পারবেন—যা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৫ আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহিদ ৫৮ টি পরিবার এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহিদ ১৯টি পরিবারের সদস্যদের মাঝে পরিবার প্রতি ১০ লক্ষ টাকা করে, মোট ৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, "শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। ঐতিহাসিক শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আজকের এই স্বীকৃতি তারই প্রমাণ।" শহীদ পরিবারদেরকে স্বীকৃতি দিতে পেরে সরকার গর্বিত উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন ইতিহাস থেকে যেনো কেউ ঐতিহাসিক শাপলা চত্বরের শহীদদের নাম মুছতে না পারে, এজন্য শাপলা চত্বরেই খোদাই করে লেখা হবে শহীদদের নাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন,"শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহিদদের আর্থিক সহায়তা প্রদান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ।" এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মোদি বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, "স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এই মহতী উদ্যোগে সারা বাংলার আলেম সমাজ সম্মানিত হয়েছে। "
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির চেয়ারম্যান জনাব মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি জনাব নুরুল হক নুর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।
মন্তব্য