‘একটা মহিলা মানুষ দুই লাখ-তিন লাখ ট্যাকা জমাইলো কষ্ট কইরা, সেই ট্যাকা সঞ্চয়পত্র কিনন্যা রাখব। কিন্তু ইনকাম ট্যাক্সের কাগজ দিতে হইব। এইডা করলে তো বৎসর বৎসর আবার রিটার্ন দিতে হইব। ইনকাম ট্যাক্স অফিস সম্পর্কে আমগো ধারণা নাইক্যা। এখন সে (মেয়ে) টাকা জমাইতে রাজি হইতেছে না। কয় এই ঝামেলায় যামু না।’
বললেন কবীর শেখ নামে পুরান ঢাকায় বাস করা এক ব্যক্তি। সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক করার শর্ত নিয়ে ক্ষুব্ধ তিনি। নিজ মেয়ের কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন করা নিয়ে তিনি ঝক্কি-ঝামেলার কথা তুলে ধরেন।
বলেন, ‘আমার মেয়ে বলতেছে, তার দ্বারা সম্ভব না। টিন সার্টিফিকেট করমু, ইনকাম ট্যাক্স করমু, মহা ঝামেলা।’
কবীর শেখ জানান, তার মেয়ের স্বামী বিদেশে থাকেন। স্বামীর পাঠানো অর্থ থেকে সঞ্চয় করছেন তার মেয়ে। আয়করসংক্রান্ত কাগজপত্র তৈরি করা তাদের জন্য বিরাট ঝামেলা।
সাধারণ মানুষের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে উপযোগী মাধ্যম সঞ্চয়পত্র। ব্যাংকে টাকা রাখার চেয়ে এই ব্যবস্থায় মুনাফা বেশি। আছে নানান স্কিম। কিন্তু অর্থ জমা রাখার ক্ষেত্রে জুড়ে দেয়া হয়েছে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন সার্টিফিকেট জমা দেয়ার শর্ত।
১ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্রের ওপরে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে টিআইএন নম্বর দেয়ার বাধ্যবাধকতা আনা হয়েছে গত বছর থেকে। এতে দুর্ভোগের মুখে সাধারণ বিনিয়োগকারী। চলতি বাজেটে কেনার ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেয় অর্থমন্ত্রী। বলা হয়, টিআইএন নম্বর ছাড়া ২ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনা ও পোস্টাল সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে। কিন্তু তারপরেও স্বস্তি নেই।
বিনিয়োগকারীদের আক্ষেপ
করযোগ্য আয় নেই। তারপরেও কর শনাক্তকরণ নম্বর দিতে হচ্ছে। এটা ঝামেলার কাজ বলে মনে করেন বিনিয়োগকারী আবুল কালাম। পোস্ট অফিসের লাইনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া খুবই জটিল কাজ।’
মুনাফা তুলতে আসা সোলাইমান জানান, সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করার জন্য টিআইএন শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি খুবই বিরক্তিকর কাজ। বলেন, অনলাইনে কেনা এবং মুনাফা তোলার কাজটি কচ্ছপ গতিতে এগোচ্ছে।
বিনিয়োগকারী নাসিমা খাতুন জানান, ‘ব্যাংকের চেয়ে সুদহার ভালো বলে এখানে আমরা বিনিয়োগ করতে চাই। কিন্তু কর নম্বর দেয়া কঠিন কাজ। সাধারণ মানুষ এই কঠিন মারপ্যাঁচ বোঝে না।’
সীমা খাতুন জানান, অনেকেই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে চান। কিন্তু কর সার্টিফিকেট করতে পারেন না বলেই করেন না।
আলিমুজ্জামান জানান, টিআইএনের ঝামেলার কারণে অনেকেই ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে অর্থ রাখছেন। বেশি মুনাফার লোভে ‘হায় হায় কোম্পানিতে’ টাকা বিনিয়োগ করে পরে সব টাকাই খোয়াচ্ছে।
বিলকিছ আলম বলেন, ২ লাখ টাকা পর্যন্ত টাকা রাখতে টিআইএন নম্বর লাগবে না। কিন্তু পোস্ট অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, এখনও সেই চিঠি আসে নাই।
সুমন দাস জানান, ‘প্রতি তিন মাস পর এসে মুনাফা তোলার জন্য লাইনে দাঁড়াতে হয়। লম্বা লাইন, আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু লাইন একটু কমেনি। অনলাইনে হলে ভালো হয়।’
বাজেটে সিদ্ধান্ত, বাস্তবায়ন নেই
কর শনাক্তকরণ নম্বর ছাড়াই ২ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনা ও পোস্টাল সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে– বাজেটে এমন সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতদিন এ সুবিধা ছিল ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। এর আগে অবশ্য কোনো সঞ্চয়পত্র কিনতেই টিআইএনের প্রয়োজন ছিল না।
কিন্তু বাজেট পাস হওয়ার পর দেড় মাসের বেশি সময় চলে গেলেও নতুন সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। অর্থাৎ সঞ্চয় অধিদপ্তর, পোস্ট অফিস এবং ব্যাংকে এখনও এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে অবগত নয়।
সঞ্চয় অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মোতালেব হোসেন জানান, এ বিষয়ে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি। ফলে আগের নিয়মেই কেনা হচ্ছে সঞ্চয়পত্র।
সঞ্চয়পত্রের সুদহার না কমিয়ে বিক্রি কমাতে ২০১৯ সালের মে মাস থেকে সঞ্চয়পত্র কেনায় বিভিন্ন কঠোরতা আরোপ করে সরকার। টিআইএনের পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র কেনা ও মুনাফা নেয়ার জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক করা হয়। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র কেনার সীমা কমানো এবং ঘোষণার অতিরিক্ত সঞ্চয়পত্র কেনা বন্ধে সব অফিস থেকে অভিন্ন সফটওয়্যারে বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়।
ব্যাংক নয়, সঞ্চপত্রেই সুবিধা বেশি
ব্যাংক খাতে জুন শেষে আমানতের বিপরীতে গড় সুদহার ৪ দশমিক ১৩ ভাগ। অন্যদিকে একই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হারও দাঁড়িয়েছে সাড়ে পাঁচ ভাগের বেশি। অথচ পাঁচ বছর আগেও সুদহার ছিল ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ।
সুদহার যতটুকু, তার সবটাই আবার হাতে আসে না। বাদ দিতে হয় ব্যাংকের চার্জ ও সরকারের শুল্ক। এর মানে টাকার মূল্যমানের অবচয় বিবেচনায় আমানতকারী যে পরিমাণ টাকা রাখছেন, বছর শেষে পাচ্ছেন তার চেয়ে কম।
এ কারণে ব্যাংকে টাকা রেখে সঞ্চয়কারীরা এখন আর প্রকৃত অর্থে লাভবান হতে পারছেন না।
ব্যাংকের সুদহারের সাথে বড় ধরনের তফাতের কারণে গত কয়েক বছরে সাধারণ মানুষের টাকা জমা রাখার নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হয়ে উঠেছিল সঞ্চয়পত্র।
তবে এখানে বিনিয়োগে নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিশেষ করে কেউ সঞ্চয়পত্র কেনার পর এক বছরের মধ্যে ভাঙালে কোনো সুদ পান না। তবে সুদহার বেশি হওয়ার কারণে গত কয়েকটি অর্থবছরে এর বিক্রি সরকারের বাজেটে ধরা লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যেতে থাকে।
লক্ষ্যের চেয়েও বিক্রি বেশি
২০২০-২১ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ১৮৮ কোটি ২৪ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। এর মধ্যে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৭০ হাজার ২২৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
এ হিসাবে গেল অর্থবছরের নিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৯৫৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি।
২০১৯-২০ অর্থবছরের পুরো সময়ে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ আসে ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা।
অটোমেশন কার্যক্রম
২০১৯ সালের ফ্রেব্রুয়ারিতে শুরু হয় অনলাইনে সঞ্চয়পত্র কেনাবেচা কার্যক্রম। ফলে এই সময়ের পর যারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছেন, তাদের মুনাফার অর্থ গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। কিন্তু এর আগে যারা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সঞ্চয়পত্র কিনেছেন, তাদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।
সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ শেষ হবে অটোমেশন কার্যক্রম। তখন সনাতনী ব্যবস্থায় যারা সঞ্চয়পত্র কিনেছেন, তাদের স্কিম পূর্ণ হবে। এরপর নতুন করে যারাই বিনিয়োগ করবেন, তারাই পাবেন অনলাইন সুবিধা।
সঞ্চয়পত্রের বিভিন্ন স্কিম
বর্তমানে দেশে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র স্কিম প্রচলিত আছে। এর মধ্যে পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ।
পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং পেনশনার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ তিন বছর। পরিবার ও পেনশনার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ পাঁচ বছর। পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফা মাসিক কিস্তিতে তোলা যায়। পেনশনার সঞ্চয়পত্রের মুনাফা মাসিক ও ত্রৈমাসিক উভয় ভিত্তিতে তোলা যায়।
২০১৫ সালের ২৩ মে থেকে এ হার কার্যকর রয়েছে। তার আগে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ছিল ১৩ শতাংশেরও বেশি।
বিশ্লেষণ
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ বেশি নেয়া হয়।
চলতি অর্থবছরে বিদেশি উৎস থেকে ঋণ ধরা হয়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। বাকি ৫৫ শতাংশ দেশি উৎস থেকে। কিন্তু দেখা গেছে বছর শেষে সরকারের এ লক্ষ্যমাত্রা ঠিক থাকে না। প্রতিবছর সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরে রাখা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, ব্যাংকে প্রচুর তারল্য উদ্বৃত্ত আছে। সরকার ব্যয়বহুল এ খাত থেকে ঋণ নিচ্ছে। বিদেশি ঋণের সুযোগ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে এখান থেকে আরও অর্থ ছাড়ের সম্ভাবনা থাকত। সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ সহনীয় মাত্রায় রাখা উচিত। সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আছে। এগুলো শিথিল করলে বিক্রির প্রবণতা আরও বাড়বে।
সঞ্চয় অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মোতালেব হোসেন বলেন, টিআইএন বাধ্যতামূলক করার শর্ত পাঁচ লাখ টাকা থেকে করা হলে সুবিধা হতো। তিনি বলেন, স্বল্প বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়েন।
তিনি আরও জানান, টিআইএন শর্ত আরও শিথিল করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আগামী সোমবার (১২ মে) তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করবে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। শুক্রবার এক ফেসবুক পোস্টে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার তদন্ত রিপোর্ট আগামী সোমবার চিফ প্রসিকিউটর বরাবরে দাখিল করবে আশা করছি। তদন্ত রিপোর্ট দাখিল হওয়ার পর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ, অর্থাৎ ‘ফরমাল চার্জ’ দাখিলের মাধ্যমে হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে চানখারপুল হত্যাকাণ্ডের দায়ে সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা হয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ডের দায়ে আনুষ্ঠানিক বিচারের জন্য ফরমাল চার্জ চলতি সপ্তাহেই দাখিল করা হবে এবং এর মাধ্যমে জুলাই গণহত্যার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হবে ইনশাআল্লাহ। এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিলে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ চাইলে বা বিচারিক আদালত এ সম্পর্কে কোনো পর্যবেক্ষণ বা রায় এলে অবশ্যই আইনানুগভাবে দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবে।’
শুক্রবার তার ভেরিফাইড ফেসবুকে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কিছু মানুষ জঘন্য মিথ্যাচার ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করছে। আমি আপনাদের সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই খুনের মামলার আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনে বাধা দেওয়ার দায়িত্ব পুলিশ ও গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর। যা কোনোভাবেই আমার আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত বিষয় নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে আছেন নিম্নআদালতের বিচারকরা। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, আদালতের বিচারকদের দায়িত্ব বিমানবন্দর পাহারা দেওয়া না বা কারো চলাচলে বাধা দেওয়া না।’
ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণের সুযোগ রাখার লক্ষ্যে আইসিটি আইনে সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার বিধান আইন মন্ত্রণালয়ের খসড়ায় ছিল। আইন উপদেষ্টা হিসেবে আমি নিজে এটা উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উত্থাপন করেছি। আমার উত্থাপিত খসড়ার আমিই বিরোধিতা করব এটা কিভাবে সম্ভব? উপদেষ্টা পরিষদের সভায় কোন উপদেষ্টা কী ভূমিকা রেখেছেন এনিয়ে আমাকে, ছাত্র উপদেষ্টাদের বা অন্য কাউকে দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকুন।’
তিনি বলেন, সেখানে যা সিদ্ধান্ত হয় তার দায় দায়িত্ব আমাদের প্রতিটি উপদেষ্টার। আমাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রশ্নে কোনো দ্বিমত নেই। তবে পদ্ধতি নিয়ে সবার নিজস্ব মত থাকতেই পারে। তিনি বলেন, ‘আমাদের এটা মনে রাখা প্রয়োজন যে, আইসিটি আইন চাইলেই আমরা কয়েকদিনের মধ্যে সংশোধন করতে পারবো। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য সন্ত্রাস দমন আইনসহ অন্য আইনগুলোও আছে। কাজেই আইন কোনো সমস্যা না।’ আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ চাইলে বা বিচারিক আদালত এ সম্পর্কে কোনো পর্যবেক্ষণ বা রায় আসলে অবশ্যই আইনানুগভাবে দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবে। আমরা সেই প্রত্যাশায় আছি। ইনশাল্লাহ।’
ষড়যন্ত্র রুখে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গঠনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। এই দেশ জনগণের। আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শুক্রবার রাজধানীর খামারবাড়িতে ইস্টার পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, যে প্রত্যাশা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, দেশ স্বাধীনের পর থেকে সেই প্রতিচ্ছবি আওয়ামী লীগের আমলে দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগ সংবিধানকে নিজেদের দলীয় সংবিধানে পরিণত করেছিল। তাই সংবিধান সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই।
তারেক রহমান বলেন, ৫ আগস্ট যেভাবে হাসিনা পালিয়ে গেছেন সেভাবেই পালিয়ে গেছেন আবদুল হামিদ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নাকি কিছুই জানে না! তাহলে তারা জানেন কী? তিনি বলেন, জনমনে প্রশ্ন উঠছে, সংস্কারের নামে একদিকে অন্তর্বর্তী সরকার যেমন পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগের সুযোগ করে দিচ্ছে, অন্যদিকে ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর মধ্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে, দোসরদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। কিন্তু এই দেশ কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়, এই দেশটা জণগণের।
ফ্যাসিস্টরা দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ ষড়যন্ত্র করতে না পারে। আমাদের যে যার জায়গা থেকে ভূমিকা রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
রোমান ক্যাথলিক গির্জার নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন আমেরিকান কার্ডিনাল রবার্ট প্রভোস্ট। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ মে) সন্ধ্যায় ভ্যাটিকানের কনক্লেভে কার্ডিনালদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়েছেন তিনি।
নিজের ক্যারিয়ারে পেরুতে ধর্মপ্রচার করে বেড়িয়েছেন রবার্ট প্রভোস্ট। এছাড়া ভ্যাটিকানের প্রভাবশালী বিশপস অফিসেরও নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ক্যাথলিক গির্জার দুই হাজার বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো মার্কিন নাগরিক পোপ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
৬৯ বছর বয়সী এই পোপ নতুন নাম নিয়েছেন লিও চতুর্দশ।
এরআগে ভ্যাটিকানের সিস্টিন চ্যাপেলের চিমন দিয়ে সাদা ধোঁয়া বের হওয়ায় সবাই জেনেছেন যে নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন। নতুন পোপকে স্বাগত জানাতে ভ্যাটিকান সিটিতে বিপুল মানুষের ভিড় জমেছে।
পোপ হওয়ার যোগ্য ১৩৩ কার্ডিনালকে নিয়ে গঠিত কলেজ অব কার্ডিনালস। কোনো ধরনের মনোযোগ নষ্ট হওয়া ছাড়াই যাতে প্রার্থনা ও ধ্যান করতে পারেন, পাশাপাশি পোপ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন, সে কারণে ভ্যাটিকানের ভেতরে কার্ডিনালদের আলাদা করে রাখা হয়েছে।
নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন হয়। ভোট হওয়ার পর একটি বিশেষ স্টোভে ব্যালট পুড়িয়ে দেওয়া হয়। কালো ধোঁয়া বের হওয়ার অর্থ হচ্ছে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত আসেনি, অর্থা পোপ নির্বাচিত হননি। আর সাদা ধোঁয়া বের হলে বুঝতে হবে নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন।
পোপ নির্বাচনের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রার্থী নেই। তবে বেশ কয়েকজন কার্ডিনাল আছেন, যারা পোপ হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।
আধুনিক সময়ে প্রথম দিনেই পোপ নির্বাচিত হওয়ার নজির নেই। তবে দ্বিতীয় দিনে নির্বাচনের সম্ভাবনা থাকে বেশি। ২০১৩ সালে পোপ ফ্রান্সিস এবং ২০০৫ সালে পোপ বেনেডিক্ট দ্বিতীয় দিনেই নির্বাচিত হয়েছিলেন।
নির্বাচনে এবার অংশ নিয়েছেন ৭০ দেশের ১৩৩ জন কার্ডিনাল, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এটি পোপ ফ্রান্সিসের অধীনে গির্জার বৈশ্বিক বিস্তারের ইঙ্গিত বহন করে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন ও জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা বিভিন্ন প্লাটফর্মের নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার পৌনে পাঁচটায় শুরু হওয়া এই অবরোধ এখনো চলছে। লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছে শাহবাগ এরিয়া। সবার মুখে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি।
এই অবরোধে যোগ দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি, জামায়াত ইসলাম, ছাত্র শিবির, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, সদ্য আত্মপ্রকাশ করা রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ, জুলাই ঐক্যসহ বিভিন্ন সংগঠন।
তবে এর মধ্যেও কিছুটা শূন্যতা অনুভব করছে জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
সেই শূন্যতা বিএনপির। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলম বলেন, বিএনপি এবং তার অঙ্গসংগঠন ব্যতীত সকল রাজনৈতিক দল এখন শাহবাগে।
তিনি লিখেন, বিএনপি আসলে জুলাইয়ের ঐক্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। ঐক্যবদ্ধ শাহবাগ বিএনপির অপেক্ষায়। আজকের এই শাহবাগ ইতিহাসের অংশ এবং ভবিষ্যৎ রাজনীতির মানদণ্ড।
এর আগে গতকাল রাত দশটায় আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান শুরু করে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তার সাথে সংহতি জানিয়ে সেখানে বিএনপি এবং বামপন্থী সংগঠন ছাড়া সেখানে প্রায় সব দল ও সংগঠন উপস্থিত হয়ে সংহতি জানায়।
এরপর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পাশে মিন্টু রোড়ের ফোয়ারার সামনে মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ হলে বেলা বারোটার দিকে যমুনার সামনে থেকে সবাই মঞ্চের সামনে চলে আসেন। জুমার নামাজের পর সেখানেই জমায়েত শুরু হয়। মঞ্চে উপস্থিত হয়ে ইসলাম ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন রাজনেতিক দল বক্তব্য প্রদান করেন। সাড়ে চারটার দিকে সর্বশেষ বক্তব্য দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন শেখ হাসিনা মোদির বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছে। দেশের হিস্যা জনগণের হাতে তুলে দিতে চাই আমরা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি ভাইরাস নিয়ে আমরা এক মিনিটও বেঁচে থাকতে চাই না। আমাদের একজনেরও যদি শেষ রক্তবিন্দু থাকে তারপরও আমরা এটির জন্য লড়াই চালিয়ে যাবো।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে যদি এক বছরও লাগে আমরা এই স্থান ছাড়বো না। বাংলাদেশ উইথ আউট আওয়ামী লীগ যেদিন হবে সেদিনই বাংলাদেশের সম্মৃদ্ধির পথে অগ্রযাত্রা শুরু হবে।
এরপর তিনি শাহবাগ অবরোধের ঘোষণা দেন। বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কর্ণকুহরে আমাদের দাবি পৌঁছছে না। আমরা এখন শাহবাগ অবরোধ করবো। এরপর সেখানেই চূড়ান্ত ফয়সালা হবে।
হাসনাতের এই ঘোষণার পর মিন্টু রোড়ের সামনে থেকে শাহবাগের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বেলা পৌনে পাঁচটায় শুরু হওয়া এই অবরোধ ছয়টায় এই প্রতিবেদন লেখা অবস্থায় চলছে। এতে আশেপাশের সড়কে যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে। তবে পুলিশ ভিন্ন রাস্তায় এসব যানকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাকিস্তানের আকাশসীমা পরিহার করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এমতাবস্থায় বিমানের টরেন্টো, রোম এবং লন্ডনগামী ফ্লাইট সমূহের সময়সূচিতে পরিবর্তন করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার থেকে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর টরেন্টো, লন্ডন এবং রোম ফ্লাইট সমূহের ফ্লাইটের পরিবর্তিত সময়সূচি জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-টরেন্টো ফ্লাইট বিজি ৩০৫ বা ৩০৬ ঢাকা থেকে প্রস্থান ৩ টা ৪৫ মিনিটের পরিবর্তে ৩ টা (৪৫ মিনিট অগ্রগামী করা হয়েছে)। তবে টরেন্টো থেকে প্রস্থান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
ঢাকা লন্ডন ফ্লাইট বিজি ২০১ বা ২০২ ঢাকা থেকে প্রস্থান ৭ টা ৪০ মিনিটের পরিবর্তে ৭ টা (৪০ মিনিট অগ্রগামী করা হয়েছে) এবং লন্ডন থেকে প্রস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।
শুধু বৃহস্পতিবারের জন্য ঢাকা-লন্ডন, ঢাকা থেকে প্রস্থান ৮ টা ৫০ মিনিটের পরিবর্তে ৮ টা ১০ মিনিটে (৪০ মিনিট অগ্রগামী করা হয়েছে)।
এদিকে ঢাকা-রোম ফ্লাইট বিজি ৩৫৫ বা ৩৫৬ ঢাকা থেকে প্রস্থান ১১ টা ৩০ মিনিটের পরিবর্তে ১০ টা ৪৫ মিনিট এবং রোম থেকে প্রস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।
যাত্রীদের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পরিবর্তিত সময় অনুসারে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর চেক-ইন কাউন্টারে রিপোর্ট করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। যাত্রীদের এই সাময়িক অসুবিধার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তদূর্ধ্ব সমপদমর্যাদার কমিশন্ড প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (কোস্টগার্ড ও বিজিবি-তে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ) বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা আরও দুই মাস বাড়িয়েছে সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষন-২ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেতী প্রু স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৪ মে থেকে পরবর্তী ৬০ দিন পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
সমগ্র বাংলাদেশে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ধারা ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫ (২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অধীন অপরাধগুলো আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উদ্ভূত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সশস্ত্র বাহিনীকে (সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী) বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। এর পর থেকে এই মেয়াদ দুই মাস করে বাড়াচ্ছে সরকার।
মন্তব্য