আলোচিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির মোট দেনার পরিমাণ ৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮২ টাকা। এই দেনার বিপরীতে তাদের দৃশ্যমান ও অদৃশ্য মোট সম্পদ রয়েছে ৫৪৩ কোটি ৯৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮২ টাকা। তবে এতে অদৃশ্য সম্পদ হিসেবে ৪২৩ কোটি টাকাই দেখানো হয়েছে ইভ্যালির ব্র্যান্ড ভ্যালু মূল্যায়নের মাধ্যমে।
ব্র্যান্ড ভ্যালু হিসাবে নিলে ইভ্যালির কোনো দেনা নেই।
চলতি বছরের ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে চাওয়া কোম্পানির সম্পদ ও দায় বিবরণীর এমন তথ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দিয়েছেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল।
১৯ আগস্টের মধ্যে কোম্পানির সম্পদ ও দায় বিবরণীসংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক জবাব চেয়ে মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেল থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে চিঠি দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়কে এ তথ্য জানাল ইভ্যালি। এর মধ্য দিয়ে তিন ক্যাটাগরির প্রথমটির জবাব নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইভ্যালির কাছ থেকে পেল মন্ত্রণালয়।
সম্পদ ও দায় বিবরণীসংক্রান্ত পত্রের অনুলিপি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ১৫ জুলাই ২০২১ তারিখ পর্যন্ত গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম, সরবরাহকারীদের কাছে দেনা, ব্যবসায়িক ব্যয়সংক্রান্ত দেনাসহ অন্যান্য সব দেনা বাবদ ইভ্যালির মোট চলতি দায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮২ টাকা।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির এই দায়ের মোট পরিমাণ দেখানো হয়েছিল ৪০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তদন্ত দল প্রতিবেদনে মতামত ব্যক্ত করে জানিয়েছিল, ইভ্যালির প্রকৃত দায় আরও বেশি হতে পারে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ইভ্যালি তাদের যে দেনার হিসাব দিয়েছে (৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮২ টাকা) সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত দলের প্রতিবেদনের তথ্য থেকে ১৩৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮২ টাকা বেশি।
এদিকে ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামিমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল স্বাক্ষরিত প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক হিসাব বিবরণীপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তাদের যে দায় দেখানো হয়েছে, তার বিপরীতে মোট ৪৩৮ কোটি ৪৫ লাখ ৪ হাজার ৮৪১ টাকা অদৃশ্য সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে ব্র্যান্ড ভ্যালু দেখানো হয়েছে ৪২২ কোটি ৬২ লাখ ৮ হাজার ৬৯৫ টাকা এবং শুধু অদৃশ্য সম্পদ দেখানো হয় মোট ১৫ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ১৪৬ টাকা।
অন্যদিকে উল্লিখিত দেনার বিপরীতে ইভ্যালি দৃশ্যমান সম্পদের হিসাব দেখায় মোট ১০৫ কোটি ৫৪ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা। যেখানে চলতি সম্পদমূল্য দেখানো হয়েছে ৯০ কোটি ৬৬ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৪ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে কোম্পানিটির চলতি সম্পদের মূল্য ৬৫ দশমিক ১৭ কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ চলতি সম্পদের মূল্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবের চেয়ে ২৫ কোটি ৪৯ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা বেশি বলে দাবি করেছে ইভ্যালি।
এ ছাড়া দৃশ্যমান সম্পদ বিবরণীতে সম্পত্তি এবং সরঞ্জামের মূল্য দেখানো হয় আরও ১৪ কোটি ৮৭ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫৬ টাকা। এর বাইরে প্রতিষ্ঠানটির ইক্যুইটির দায় রয়েছে আরও ১ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দেশে ডিজিটাল ই-কমার্স সেল নিয়ন্ত্রণ শাখার প্রধান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেল-এর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. হাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে ইভ্যালির কাছ থেকে চাওয়া তিন ক্যাটাগরির জবাবের মধ্যে প্রথম ক্যাটাগরির জবাব পেলাম।’
ইভ্যালি যে ব্যাখা দিয়েছে তাতে মন্ত্রণালয় সন্তুষ্ট কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা সবেমাত্র প্রথম ক্যাটাগরির ব্যাখ্যা সম্পন্ন করেছে। বাকিগুলোর ব্যাখ্যা তারা দিক, তারপর সবগুলো হাতে পেলে পর্যালোচনা করে দেখা হবে। ইভ্যালির দেয়া সব তথ্য রেজিস্টার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানি (আরজেএসসি) এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যের সঙ্গে মেলানো হবে। সরকারি এই দুই সংস্থার সঙ্গে তাদের তথ্যের মিল পাওয়া গেলেই তারা সঠিক তথ্য দিয়েছে বলে বিবেচিত হবে।’
ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে উদ্দেশ করে বলা হয়, ‘বিগত ৩১ জুলাই ২০২১ তারিখে আমাদের পাঠানো পত্রে মন্ত্রণালয়ের চাওয়া তথ্যাদি যথাযথভাবে উপস্থাপনের জন্য তৃতীয় নিরপেক্ষ নিরীক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে সময় চাওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও এই স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রাথমিকভাবে প্রস্তুতকৃত সম্পদ ও দায়ের বিবরণী অনুযায়ী প্রাপ্ত তথ্য সংযুক্ত আকারে উপস্থাপন করা হলো।’
চিঠিতে রাসেল দাবি করেন, ‘বর্তমানে ইভ্যালিতে ই-কমার্স ছাড়াও আরও বেশ কিছু সফল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম যথা: ইফুড, ইজবস, ইবাজার, ইহেলথ, ফ্লাইট এক্সপার্ট ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা কোম্পানির সার্বিক ব্র্যান্ড ভ্যালুকে আরও সমৃদ্ধ করছে। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ও সাম্প্রতিক সময়ে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের একই ধরনের ব্যবসায়ের মূল্যায়নের প্রেক্ষিতে বর্তমানে ইভ্যালির ন্যূনতম ব্র্যান্ড ভ্যালু ৫ হাজার কোটি টাকা হয়। তবে আমাদের কোম্পানির ব্র্যান্ড ভ্যালু নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আমরা শুধু ব্যয়ের সমপরিমাণ অংশটুকু বিবেচনা করেছি।’
চিঠিতে শুধু গত এক মাসে ২ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫৮ কোটি পুরোনো অর্ডার সফলভাবে ডেলিভারি সম্পন্ন করার তথ্য দেন রাসেল। তিনি বলেন, ‘এর বিস্তারিত তথ্য ইতিমধ্যে ইলেকট্রনিক কমার্স অফ বাংলাদেশ ই-ক্যাবকেও পাঠানো হয়েছে।’
মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে রাসেল চিঠিতে জানান, যেহেতু করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কর্তৃক ঘোষিত লকডাউন ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে, তাই ইভ্যালি গ্রাহকদের পুরোনো অর্ডার ডেলিভারি ও সরবরাহকারীদের দেনা পরিশোধের সুবিধার্থে আগামী ২২ আগস্ট থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্পূর্ণ আকারে চালু করে দেয়া হচ্ছে ইভ্যালির অফিস।
সম্পদ বিবরণীর ব্যাখ্যায় রাসেল ব্র্যান্ড ভ্যালুর মূল্যায়নে পাশের দেশ ভারতের ফ্লিপকার্ট ও জোমেটোর সাম্প্রতিক ব্র্যান্ড ভ্যালু মূল্যায়নের সংবাদের চিত্রের কপিও মন্ত্রণালয়ে পাঠান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইভ্যালি ডটকম-এর ব্যবসা পদ্ধতি ও গ্রাহক ভোগান্তির বিষয়ে কারণ দর্শানো ইস্যুতে এখন বাকি থাকল দুই ক্যাটাগরিতে আরও দুই প্রশ্নের জবাব। এর মধ্যে দ্বিতীয় ক্যাগারিতে চলতি বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত গ্রাহকের কাছে মোট দেনার পরিমাণ কত এবং দেনাসংশ্লিষ্ট গ্রাহকসংখ্যা কত, তা জানাতে বলা হয় ২৬ আগস্টের মধ্যে। এ ছাড়া মার্চেন্টদের কাছে দেনার পরিমাণ, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের দায় পরিশোধের সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা জানাতে বলা হয় ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
আরও পড়ুন:
অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করার অভিযোগে ৫৪ ভারতীয় নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। রোববার ভোরে হাতে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ৫০ তরুণকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তাদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। খবর এনডিটিভির।
পুলিশ জানায়, দেশে ফেরত আসা এই তরুণরা সবাই অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। এদের মধ্যে ১৬ জন কর্ণালের, ১৫ জন কৈথালের, ৫ জন আম্বালার, ৪ জন যমুনা নগরের, ৪ জন কুরুক্ষেত্রের, ৩ জন জিন্দের, ২ জন সোনিপতের এবং ১ জন করে পঞ্চকুলা, পানিপত, রোহতক এবং ফতেহাবাদের বাসিন্দা।
করনাল পুলিশ জানায়, সবাইকে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়েছে এবং কোনো দালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
করনালের ডিএসপি সন্দীপ কুমার বলেন, ‘আজ আরো কিছু ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে হরিয়ানার ৫০ জন। কেবল করনাল জেলা থেকেই রয়েছেন ১৬ জন। সবাই ‘ডংকি রুটে’ যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছিল, কিন্তু আজ ফেরত এসেছে।’
পুলিশ আরো জানিয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
এই বছরের শুরুতে, মার্কিন কর্তৃপক্ষ শত শত ভারতীয় দেশে ফেরত পাঠায়। গত জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে তার প্রশাসন।
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে মোট ১ হাজার ৫১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ (সোমবার) পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ১ হাজার ৩৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য ঘটনায় গ্রেফতার ৪৮২ জন।
অভিযান চলাকালে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পুরাতন রিভালবর, ২টি দেশি পাইপগান, ১টি একনলা বন্দুক, ১টি পাইপগান, ৬ রাউন্ড গুলি, ১টি দেশীয় এলজি, ১টি পুরাতন মরিচাযুক্ত দেশীয় এলজি, ১টি স্টিলের ধারালো চাকু, ২টি সুইচ গিয়ার চাকু, ১টি কাঠের বাট যুক্ত কিরিচ ও ৫টি কিরিচ উদ্ধার করা হয়।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বৃহৎ জোট গঠন করতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য অটুট রাখতে চায় বিএনপি। আর ঐক্য বজায় রাখতে কেউ যেন বিভেদের পথে না যায় সেই বার্তাও দিতে চায় দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশের প্রার্থীদের সঙ্গে দলের হাইকমান্ডের বৈঠক হচ্ছে। দল ও নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার বার্তা দিতেই হাইকমান্ডের এই বৈঠক করছে বিএনপি।
এ সময়, আগামীর বাংলাদেশ হবে তারুণ্যনির্ভর মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তরুণ-যুবকদের রাজনৈতিক ভাবনাকে ধারণ করে সামনের দিনে জাতি বিনির্মাণে কর্মসূচি প্রণয়ন করবে বিএনপি।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে ৩০০টি আসনে চূড়ান্তভাবে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৭৬১টি। সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আখতার আহমেদ বলেন, “আমরা আজ সারাদেশের ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছি। ৬৪টি জেলার ৩০০টি সংসদীয় আসনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ৭৬১টি। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের জন্য কক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ১৩৭টি এবং নারী ভোটারের জন্য ১ লাখ ২৯ হাজার ৬০২টি। অর্থাৎ মোট কক্ষের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি।”
আখতার আহমেদ আরও বলেন, “অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে ১৪টি রাখা হয়েছে, যেখানে প্রায় ১২ হাজার ভোটকক্ষ থাকবে। একটি ভোটকক্ষে গড়ে প্রায় তিন হাজার ভোটারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ‘ক্যাচমেন্ট এরিয়া’ হিসেবে বিবেচিত। প্রয়োজনে পরবর্তীতে এই সংখ্যা সামঞ্জস্য করা হবে।”
ইসির তথ্য অনুযায়ী, খসড়া তালিকায় ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার ৬১৮টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার ১৪৮টি। অর্থাৎ এবার ভোটকেন্দ্র বেড়েছে, তবে ভোটকক্ষ কমেছে। আসন্ন নির্বাচনে মোট ভোটকক্ষ থাকবে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬টি, যেখানে গত নির্বাচনে ছিল ২ লাখ ৬১ হাজার ৫৬৪টি।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ৯ম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি)-এর বৈঠক চলছে ।
রাজধানীর শের-ই-বাংলানগর এলাকার এনইসি কনফারেন্স রুমে আজ সকালে এ বৈঠক শুরু হয়।
বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং সফররত পাকিস্তানের জ্বালানি মন্ত্রী আলি পারভেজ মালিক নিজ দেশের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
দীর্ঘ ২০ বছর বিরতির পর বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শেষবার ২০০৫ সালে জেইসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বর্তমান সরকারের গৃহীত সংস্কার ও নীতিমালা প্রণয়নের কাজ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সঠিক নয়। বরং সংস্কার কার্যক্রম পুরোপুরি চালু থাকবে। সোমবার অন্তর্বর্তী সরকার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম উপদেষ্টা পরিষদের কার্যক্রম নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সরকারের গৃহীত সংস্কার ও নীতিমালা প্রণয়নের কাজ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার যে কথা বলা হয়েছে, এটা সঠিক নয়; বরং সংস্কার কার্যক্রম পূর্ণোদ্যমে চালু থাকবে।
এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদ নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর না করা পর্যন্ত নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে যাবে এবং উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকও নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
একসময় সচ্ছল জীবন ছিল শুভর পরিবারের। নোয়াখালী সোনাইমুড়ী বজরা গ্রামে কিছু জমিও কিনেছেন। পিতা দুই ভাই প্রবাসে থাকায় পরিবার ভালোই চলছিল। প্রবাসে থেকে পরিবারের ভরণপোষণ চালিয়ে ৫ লক্ষ টাকা সঞ্চয় করেন। এখন এ টাকা সবই হারিয়েছেন।সব টাকাই অনলাইন জুয়া খুইয়েছেন।সোনাইমুড়ী থানার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা ইতিপূর্বে এ থানায় যোগদান করেন। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে লোভে পড়ে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হন। তার একাউন্টে থাকা প্রায় ৮ লক্ষ টাকা হারিয়ে এখন নিঃস্ব। উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের হৃদয় স্থানীয় চৌমুহনী বাজারে মোবাইল দোকান দেন। তার পিতা দীর্ঘ বছর থেকে আমেরিকায় বসবাস করেন। বিদেশ থেকে উপার্জিত অর্থ তার একাউন্টে বেশি পাঠান। সে ব্যবহার করেন দামি মোবাইল। একপর্যায়ে মোবাইল জুয়ায় আসক্ত হয়ে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা হারিয়েছেন।
জানা যায়, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা।এ এখানকার বাসিন্দারা ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে বেশি পাড়ি জমান। এলাকার লোকজন বেশিরভাগ বিত্তশালী। তাই এখানে মুঠোফোন অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। লোভে পড়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও তরুণেরা এই জুয়ায় বেশি আসক্ত হচ্ছেন। জুয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে সর্বস্ব হারাতে বসেছেন তাদের অনেকে। এ কারণে বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি ও দাম্পত্য কলহ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সহজে প্রচুর টাকা উপার্জনের লোভে পড়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য মানুষ এই জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছে। তরুণদের অনেকেই কৌতূহলবশত এই খেলা শুরুর পরেই নেশায় পড়ে যাচ্ছে। প্রথমে লাভবান হয়ে পরবর্তী সময় খোয়াচ্ছে টাকা। বিভিন্ন নামের প্রায় ১০ থেকে ১২টির মতো অ্যাপসে সবচেয়ে বেশী জুয়া খেলা হয়। এসব অ্যাপসে ১০ টাকা থেকে শুরু করে যেকোন অঙ্কের টাকা দিয়ে শুরু করা যায়।
এসব অ্যাপসের অধিকাংশই পরিচালনা করা হচ্ছে রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে। বাংলাদেশে এগুলোর এজেন্ট রয়েছে। তারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জুয়ায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ বা প্রদান করে থাকে। এজেন্টরা বিদেশী অ্যাপস পরিচালনাকারীদের কাছ থেকে হাজারে কমপক্ষে ৪০ টাকা কমিশন পায়।
সোনাইমুড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তরুণ, যুবক, পুলিশ সদস্য, দিনমজুর এবং কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও অনলাইন জুয়ার ফাঁদে জড়িয়ে পড়ছে।
সোনামুড়ী ডিগ্রী কলেজের এক কলেজ শিক্ষার্থী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানালেন, তিনি এবং তার বন্ধুরা ৫০০ টাকা জমা দিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই টাকা হারিয়ে গেছে। পরবর্তীতে ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। পৌর শহরের এক চাকরিজীবী বাড়তি আয়ের আশায় অনলাইন জুয়ার ফাঁদে পড়ে কয়েক লাখ টাকা হারিয়ে এখন ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। এসব অ্যাপের অধিকাংশই বিদেশ থেকে পরিচালিত হলেও বাংলাদেশে এদের স্থানীয় প্রতিনিধি বা দালাল রয়েছে, যারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদান করেন। প্রতি হাজার টাকায় এজেন্টরা অন্তত ৪০ টাকা কমিশন পায়। এর ফলে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে।
সোনাইমুড়ী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক নোমান বলেন, এ উপজেলার সাধারণ মানুষ বেশি মোবাইল জুয়ায় আসক্ত হচ্ছেন। কি খবর প্রতিনিয়ত শোনা যাচ্ছে। আবার পরে প্রচারিত হচ্ছে। এটা এখন সামাজিক ব্যাধি।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, এ উপজেলা বাসী প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় ইউরোপের লোক বেশি বসবাস করে। বহু লোক অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে লাখ লাখ টাকা খুইয়েছেন। প্রতিদিনই থানায় এইসব ভুক্তভোগীরা আসে আইনগত সহযোগিতা পেতে। জুয়া খেলা আইনত দ-নীয় অপরাধ। আমরা অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।শুধু স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী নয়, এদের খপ্পরের পুলিশের উদ্বোধন কর্মকর্তা,সাধারণ জনগণ ও ব্যবসায়ীরা পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।
মন্তব্য