ব্যাংকের বিনিয়োগ তদারকির জন্য এবার দৈনিক ভিত্তিতে ব্যাংকগুলোর মুদ্রাবাজারের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রতিদিনের তথ্য বিকেল ৫টার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন বিভাগে পাঠাতে হবে। নিজস্ব ও সাবসিডিয়ারিসহ দৈনিক কোথায় কী পরিমাণ বিনিয়োগ হচ্ছে তাও জানাতে হবে।
বৃহস্পতিবার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে চিঠি দিয়ে এমন নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিভিন্ন কারণে ব্যাংকগুলোর হাতে প্রচুর তারল্য থাকলেও আশানুরূপ ঋণ না বৃদ্ধির কারণে অলস টাকার স্তূপ বেড়েই চলছে। গত জুন শেষে ব্যাংকগুলোর তারল্য দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৩১ হাজার কোটি। এর মধ্যে একদম অলস টাকা ৬২ হাজার ৫০০ কোটি। উদ্বৃত্ত তারল্য যেন অনুৎপাদনশীল খাতসহ ঝুঁকিপূর্ণ খাতে চলে না যায় সেজন্য এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
চিঠিতে লেনদেনের তথ্য পাঠানোর জন্য ছক সংযুক্ত করা হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিদিনের নিজস্ব বিনিয়োগের তথ্যও পাঠাতে হবে। যেখানে নতুন বিনিয়োগ, মোট বিক্রয়মূল্য (সেল ভ্যালু) ও নেট এক্সপোজার পাঠাতে হবে। প্রতিদিনের মার্জিন ঋণের পরিমাণ, স্থিতি ও সমন্বয় জানাতে হবে। এ ছাড়া, নিজস্ব ও সাবসিডিয়ারিতে প্রতিদিনের ঋণসীমা, তহবিল ছাড়, তহবিল সমন্বয় এবং নেট এক্সপোজারের তথ্য দিতে হবে।
করোনা সংক্রমণের প্রভাব মোকাবিলায় সরকারি প্রণোদনার আওতায় কম সুদের ঋণের একটি অংশ যথাযথ খাতে ব্যবহার না হয়ে কিছু ঋণ অনুৎপাদনশীল খাতে যাচ্ছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রণোদনা ঋণের টাকা নিয়ে ঋণগ্রহীতার আগের ঋণের দায় পরিশোধ করা হচ্ছে। ঋণের এমন অপব্যবহার তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কারণে গত ২৫ জুলাই সব ব্যাংকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়।
এ ছাড়া, প্রণোদনার আওতায় ঋণের ব্যবহারসহ বিভিন্ন তথ্য চেয়ে পরবর্তীতে আরও একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ঋণের সঠিক ব্যবহার যাচাইয়ের জন্য মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সর্বশেষ দৈনিক ভিত্তিতে মুদ্রাবাজারে লেনদেন ও বিনিয়োগের তথ্য নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন:জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণসহ ‘নিপীড়নমূলক বদলি আদেশ’ বাতিলের দাবিতে আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে অবস্থান কর্মসূচি ও কলমবিরতি পালন করবে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আর দাবি পূরণ না হলে আগামী ২৮ জুন থেকে কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে লাগাতার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’। এর আগে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৫ ও ২৬ জুন (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থিত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট দপ্তরগুলোতে এবং ঢাকার বাইরে নিজ নিজ দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি ও কলমবিরতি চলবে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি কার্যক্রম এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, বর্তমান চেয়ারম্যান সরকারের বিতর্কিত আমলাদের একজন হিসেবে এনবিআর ও রাজস্ব প্রশাসনে ‘অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা’ করছেন। তার বিরুদ্ধে অসহযোগ কর্মসূচি চলবে বলেও তারা ঘোষণা দেন। ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এনবিআর চেয়ারম্যানকে আগামী ২৭ জুনের মধ্যে অপসারণ না করা হলে ২৮ জুন থেকে কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব অফিসে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি শুরু হবে। তবে এ কর্মবিরতিতেও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বর্তমান চেয়ারম্যান ও তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘অবৈধ বদলি, স্বেচ্ছাচারিতা ও নিপীড়নমূলক আচরণের’ অভিযোগ রয়েছে। এসব অপচেষ্টার প্রতিবাদে কর্মকর্তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন এবং রাজস্ব ব্যবস্থা রক্ষায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছেন। উল্লেখ্য, এর আগেও এনবিআরের অভ্যন্তরীণ সংস্কার এবং কর্মকর্তাদের স্বচ্ছভাবে কাজ করার পরিবেশ নিশ্চিতে একাধিকবার দাবি-দাওয়া তুলে এসেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে এবারের আন্দোলনে সরাসরি চেয়ারম্যানের অপসারণ চাওয়া এটিকে ভিন্নমাত্রা দিয়েছে।
নির্বাচনের সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, দেশের সব বাহিনীর প্রধানরা আজকে নিশ্চিত করেছেন যে নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে। নির্বাচন করতে যত ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা দরকার হবে নির্বাচন কমিশনের, সেটা আমরা দেব। নির্বাচন কমিশন জাতিকে একটা ভালো নির্বাচন উপহার দেবে, এটাই আমরা সবাই আশা করি।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ‘আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা’ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকাটা শুধু বাহিনীর ওপর নির্ভর করে না। যারা নির্বাচনে অংশ নেন, তাদের ওপরও কিন্তু নির্ভর করে। সেটা আপনারাও তাদের বলবেন।
দিনের ভোট যখন রাতে হয়, সেই সময়ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল, কিন্তু তারা কেন পদক্ষেপ নেয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সে সময় তো আপনারাও মাঠে ছিলেন, কোনো কিছু বলেননি।
সামনের নির্বাচনে রাতে ভোট যেন না হয়, পুলিশ কি সেটা নিশ্চিত করবে এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এটা শুধু পুলিশ নয়, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ পোলিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার এদেরও কিন্তু একটা ভূমিকা থাকে।
তিনি বলেন, যেহেতু পুরো নির্বাচন নির্ভর করে নির্বাচন কমিশনের ওপর। দেশের সব বাহিনী কিন্তু তখন তাদের অধীনে কাজ করে। নির্বাচন কমিশন জাতিকে একটা ভালো নির্বাচন উপহার দেবে— এটাই আমরা সবাই আশা করি। নির্বাচন করতে যত ধরনের সাহায্য সহযোগিতা দরকার হবে নির্বাচন কমিশনের, সেটা আমরা দেব।
‘আজকের মিটিংয়ে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কোন কোন এরিয়াগুলোতে সমস্যা হতে পারে, সে বিষয়ে মাথায় রেখে আমরা কাজ করবো,’ যোগ করেন তিনি।
আওয়ামীলীগের ব্যপারে তিনি বলেন, ‘আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তারা কোনো কার্যক্রম করতে পারেনি। দলটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে।’
তিনি সাবেক নির্বাচন কমিশনকে মব জাস্টিস বিষয়ে বলেন, ‘মবে জড়িতদের ফুটেজ দেখে আইনের আওতায় আনা হবে। এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পূর্বে মবে যারা জড়িত, এমন কতজনকে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সংখ্যা বলতে পারছি না, তবে অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
খুলনায় সুশান্ত দাশ নামে পুলিশের এক উপপরিদর্শককে মারধর করে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকাল সোয়া ৪টায় নগরীর ইস্টার্ন গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তিনি বর্তমানে খানজাহান আলী থানায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের অভিযোগ অভ্যুত্থানের পরে এসআই সুশান্তের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয়রা জানান, ইস্টার্ন গেট এলাকায় বিএনপির একটি কর্মসূচি ছিল। এ সময় সিএনজি চালিত থ্রি-হুইলারে করে যাচ্ছিলেন এস আই সুশান্ত। থ্রি-হুইলারটি ইস্টার্ন গেটের সামনে দাড়িয়ে যাত্রী ওঠানোর সময় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী সুশান্তকে গাড়ি থেকে বের করে মারপিট করে। পরে বিএনপির সিনিয়র নেতারা তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দেন।
খুলনার খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, নিরাপত্তার জন্য এস আই সুশান্তকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। শরীরে তেমন আঘাত লাগেনি, শুধু গায়ের টি-শার্ট ছিড়ে গেছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিদ্যুৎপৃষ্ঠে গোপাল দাশ নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ২ টার দিকে জেটি সড়ক এলাকায় ফিসারীতে কাজ করার সময় বিদ্যুতের তারে লেগে তার মৃত্যু হয়। গোপাল দাশ শ্রীমঙ্গল শহরের ইকোনমিক ফার্মেসীর মালিক ছিলেন, পাশাপাশি জেটি সড়কে একটি ফিসারীও ছিলো তার৷
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎপৃষ্ঠে মারা যাওয়া গোপাল দাশের লাশ উদ্বার করা হয়েছে। পরিবারের লোকজন ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। জেলা প্রশাসকের অনুমতি পেলে সেটা হবে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।
এদিকে গোপাল দাশের মর্মান্তিক মৃত্যুতে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
হবিগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা অভিযান চালিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ৫৫ বিজিবি গত ৫ দিনে ১৫টি পৃথক বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৭২ লাখ ৯৭ হাজার ১০০ টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের চোরাচালানি পণ্য, মাদকদ্রব্য ও যানবাহন জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
৫৫ বিজিবি’র সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবি’র বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় এবং জেলার চুনারুঘাটের গুইবিল বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় বিশেষ চোরাচালান বিরোধী অভিযান চালিয়ে এক কোটি উনসত্তর লক্ষ ছয় হাজার টাকা মূলের ভারত হতে চোরাইপথে আনা মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে, বাই-সাইকেল এবং ভারতীয় গরু জব্দ করা হয়।
চুনারুঘাটের দুধপাতিল, তেলিয়াপাড়া ও সাতছড়ি বিওপি এবং মাধবপুর উপজেলার মনতলা ও হরিণখোলা বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকাগুলোতে বিজিবি কর্তৃক পরিচালিত নিয়মিত অভিযান চলাকালে চোরাকারবারিরা বিজিবি’র উপস্থিতি টের পেয়ে মালামাল ফেলে পালিয়ে গেলে, বিজিবি বিভিন্ন প্রকার চোরাচালানী মালামাল জব্দ করেন। এ সকল মালামালের মধ্যে রয়েছে ০৭ বোতল বিদেশী মদ, ২৫.৮ কেজি ভারতীয় গাঁজা, ৪৩ বোতল ফেনসিডিল, ১৬ ক্যান বিয়ার, ১৩ বোতল ইস্কফ সিরাপ, চা-পাতা এবং বাংলাদেশী মশার কয়েল। আটককৃত মালামালের আনুমানিক বাজারমূল্য ২ লক্ষ ৯৫ হাজার ৭০০ টাকা।
এছাড়াও, মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলাধীন ৫৫ বিজিবি’র অধীনস্থ সিন্দুরখান ও কাকমারাছড়া বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান বিরোধী পৃথক অভিযানে ৯৫ হাজার ৪০০ টাকা মূল্যের ২৪ বোতল ভারতীয় মদ, ফুচকা, চিনি এবং বাংলাদেশী মশার কয়েল আটক করা হয়।
আটককৃত দেশী/বিদেশী মালামাল, মাদকদ্রব্য এবং যানবাহন আইনানুগ প্রক্রিয়ায় শ্রীমঙ্গল, চুনারুঘাট ও মাধবপুর থানায় হস্তান্তর করে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ তানজিলুর রহমান বলেন, “উর্ধ্বতন দপ্তরের দিক-নির্দেশনায় আমরা সীমান্ত এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে অভিযান পরিচালনা করছি। সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং চোরাচালান ও মাদকদ্রব্যের ভয়াবহতা থেকে দেশ ও সমাজকে রক্ষা করাই আমাদের অঙ্গীকার। সাম্প্রতিক অভিযানগুলো ৫৫ বিজিবি’র চোরাচালান বিরোধী অভিযানের সফল প্রতিফলন।”
উল্লেখ্য, চলতি জুন মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত ৫৫ বিজিবি পরিচালিত অভিযানে মোট ৩ কোটি ৩০ লাখ ৭২ হাজার ১০০ টাকা মূল্যের বিভিন্ন ভারতীয় চোরাচালানি পণ্য, মাদকদ্রব্য ও যানবাহন জব্দ করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অপরাধী যত বড়ই হোক, ‘মব জাস্টিস’ বা জনতার উচ্ছৃঙ্খল বিচার সমর্থনযোগ্য নয়।
তিনি বলেছেন, ‘গত তিনটি নির্বাচন ছিল শেখ হাসিনার একক নাটকীয় নির্বাচন। এসব নির্বাচনের সময়কার সকল নির্বাচন কমিশনারই ফ্যাসিবাদের অংশ। তবে তারা যত বড় অপরাধীই হোক, বিচার হতে হবে আইনের মাধ্যমেই, মব জাস্টিসের মাধ্যমে নয়। মব জাস্টিস সমর্থনযোগ্য নয়।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হচ্ছে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা এবং মব জাস্টিসের মতো অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করা।
মব জাস্টিসের সাথে দলের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি প্রশ্ন রাখেন, আদালতে পুলিশের উপস্থিতিতে কীভাবে আসামিরা হেনস্তা হন?
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচনের জন্য সাবেক তিন সিইসি দায়ী থাকলেও আইনসম্মতভাবেই তাদের অপরাধের বিচার চায় বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অভিযোগ করেন, দেশে আবারও করোনার ভয়াবহতা বাড়ছে, কিন্তু সরকার কোনে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। একইভাবে ডেঙ্গু পরিস্থিতিও অবনতির দিকে যাচ্ছে। তিনি দ্রুত স্বাস্থ্য খাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এসময় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া,নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদির হোসেন মোহাম্মদ জসিম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ মাহমুদ হোসেন শ্যামল,সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ,সহ-সভাপতি কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, যুগ্ম-সাধারণ বেলাল উদ্দীন সরকার তুহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাহী আদেশে নিয়োগ বিধি সংশোধন করে শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক/সমমনা করে চাকরিতে ১৪তম গ্রেড, ইন সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে টেকনিক্যাল পদমর্যাদা সহ বেতন স্কেল ১১ তম গ্রেডে উন্নীতকরণ সহ ছয় দফা দাবিতে পাবনায় অবস্থান-ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকাল ৯ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত ৩ ঘন্টাব্যাপী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েনের ব্যানারে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন পাবনা জেলার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সংগঠনের সমন্বয়ক মোঃ ফজলুল হক, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি কে এম মাহফুজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রইচ উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, সহ অর্থ সম্পাদক মাহবুব আলম। এছাড়াও বক্তব্য দেন, মামুন, রশিদ মনসুর আলী, রুহুল আমিন, হেনা খাতুন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলার অন্যান্য স্বাস্থ্য সহকারীগণ।
অবস্থান কর্মসূচিতে স্বাস্থ্য সহকারী বলেন, অপ্রতুল সুযোগ-সুবিধা ও সীমিত জনবল নিয়েও প্রত্যন্ত অঞ্চলে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেলেও ভাগ্যের কোন উন্নতি হয়নি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রোগ প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও রোগ থেকে মুক্তির উপায়, নতুন রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানো এবং পরামর্শ দিয়ে থাকি।
কিন্তু বেতন কাঠামোয় রয়েছে চরম বৈষম্য শিকার। যারা পশুকে চিকিৎসা দেয় তাদের বেতন ১১ তম হলেও আমাদের এখনো ১৬ তম গ্রেডই আছে। আমরা ঝড় বৃষ্টির মধ্যে সাপে কাটা রোগীদেরও চিকিৎসা দিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের সেসব উপকরণ দেওয়া হয় না। তাই স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি মেনে নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
তারা আরও বলেন, এই ৬ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা আরও শক্তিশালী ও টেকসই হবে। দীর্ঘদিন ধরে চলমান বৈষম্যের নিরসনের লক্ষে অধিদপ্তর থেকে প্রস্তাবিত সুপারিশ সমূহের বাস্তবায়ন ও প্রয়োজনীয় প্রজ্ঞাপন জারি এখন স্বাস্থ্য সহকারীদের সময়ের দাবি প্রস্তাবিত দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত সকল কর্মসূচী চলমান থাকবে। যদি দাবি মানা না হয় তাহলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
পাবনা সদর উপজেলা স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, স্বাস্থ্য সহকারীরা যেভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষের দৌড় ঘোড়ায় সেবা পৌঁছে দিচ্ছে সে অনুযায়ী তারা বেতন পাচ্ছেন না। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া দরকার। এখনো তারা অবহেলা ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
৬ দফা দাবির সমূহের মধ্যে রয়েছে- নির্বাহী অদেশে নিয়োগ বিধি সংশোধন শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক/সমাধান করে ১৪তম গ্রোভ প্রদান, ইন সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে টেকনিক্যাল পদমর্যাদা সহ বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে 'উন্নীতকরণ, পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করা, পূর্বের নিয়োগবিধি অনুযায়ী নিয়োগ পেলেও কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারী সকল স্বাস্থ্য পরিদর্শক স্বাস্থ্য পরিদর্শকদের অভিজ্ঞতার আলোকে স্নাতক পাস স্কেলে আত্মীকরণ করতে হবে, বেতন স্কেলে উন্নীতকরনের পূর্বে স্বাস্থ্য সহকারী সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শক গন যত সংখ্যক টাইম স্কেল অথবা উচ্চতর গ্রেট প্রাপ্ত বা প্রাপ্য হয়েছেন তা পরবর্তী পুনঃনির্ধারিত বেতন স্কেলের সাথে যোগ করতে হবে, পূর্বে ইন সার্ভিস ডিপ্লোমা এসআইটি কোর্স সম্পূর্ণ কারী স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্যপরিদর্শকস্বাস্থ্য পরিদর্শকদেরকে ডিপ্লোমাধারী সম্পন্ন হিসেবে গণ্য করে সরাসরি ১১ তম দিতে হবে।
মন্তব্য