নতুন উদ্যোক্তা তৈরি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দুটি স্টার্টআপ তহবিল তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর মধ্যে একটি হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে, ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল। এখান থেকে উদ্যোক্তাদের ৪ শতাংশ সুদে জামানতবিহীন ঋণ দেয়া হবে।
অপরটি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো দিয়ে করাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তাদের বার্ষিক নিট মুনাফা থেকে ১ শতাংশ নিয়ে স্টার্ট আপ তহবিল গঠন করতে।
বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে ব্যাংকার্স সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
গত বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংক রপ্তানি খাতে সহজ শর্তে ঋণ দিতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট স্কিমের আওতায় একটি তহবিল গঠন করে। এর সুদের হার কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। তবে এর ব্যবহার খুবই কম। এজন্য ব্যাংকগুলোকে এ তহবিল থেকে ঋণ বিতরণ বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৈঠকে ঘোষিত মুদ্রানীতি নিয়েও আলোচনা হয়। গত অর্থবছরে মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জিত হয়নি। চলতি অর্থবছরে যাতে অর্জিত হয়, সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
গত অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। গত জুন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাংকগুলোকে ঋণ প্রবাহ বাড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
করোনার এই সময়ে ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার বাড়ায় এ খাতে ঋণ বিতরণের নীতিমালা শিথিল করতেও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার. ট্যাবসহ অন্যান্য ডিজিটাল সামগ্রী কিনতে ৭০ শতাংশ ঋণ দেয়া হয়। বাকি ৩০ শতাংশ দিচ্ছে গ্রাহক। এ হার আরও বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে সামাজিক দায়বদ্ধতার খাতে ব্যয় বাড়ানোর জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়।
সভায় প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট খাতে ঘোষিত পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিয়েও আলোচনা হয়। এখন পর্যন্ত এই তহবিলের ঋণ বিতরণেই সবচেয়ে পিছিয়ে আছে ব্যাংকগুলো। এরই মধ্যে এ তহবিলের আওতায় বিতরণ করা ঋণের সুদের হার ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
সভায় প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট খাতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের সুদের হারসহ অন্যান্য বিষয়াদি অথরাইজড ডিলার (এডি) শাখায় সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রদর্শন করা, রপ্তানিকারকদের এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ, রপ্তানি কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব অ্যাসোসিয়েশনকে এ বিষয়ে সম্পৃক্ত করে এ স্কিমের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে শাখা ও প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্টদের সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোর দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে সাতক্ষীরায় র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো সাতক্ষীরার আয়োজনে সোমবার সকালে জেলা কালেক্টরেট চত্বর হতে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় মিলিত হয় ।
জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ এর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রিপন বিশ্বাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহিনুর চৌধুরী, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এম আবুল হাশেম।
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো সাতক্ষীরার সহকারী পরিচালক শাহরিয়ার নাঈম শাইখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুহ. আবুল খায়ের, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন কারিমী, সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন, সাস এর নির্বাহী পরিচালক ইমান আলী, সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের জেলার মনিরুল ইসলাম মনির সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান এনজিও প্রতিনিধিরা।
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো (BNFE) ২০০৫ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশের বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশু, কিশোর-কিশোরী ও প্রাপ্ত বয়স্কদের সাক্ষরতা, উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা, জীবনমুখী দক্ষতায় সক্ষম করে তোলা এবং জীবনব্যাপী শিখার সুযোগ সৃষ্টি করা—এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য।
রূপকল্প (Vision): শিক্ষার সুযোগবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণতকরণ ও সবার জন্য জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিকরণ।
অভিলক্ষ্য (Mission): বিদ্যালয় বহির্ভূত, ঝরেপড়া ও শিক্ষার সুযোগবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে বয়সভিত্তিক উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা, বয়স্ক শিক্ষা, কার্যকর সাক্ষরতা, প্রাক-বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করা এবং সবার জন্য জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে জ্ঞান-ভিত্তিক সমাজ গঠনে সহায়তা করা।
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো বিএনকিউএফ মানদণ্ড অনুযায়ী প্রাক-বৃত্তিমূলক স্তরের শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোতে শিক্ষার্থীদের প্রাক-বৃত্তিমূলক স্তরের প্রশিক্ষণ শেষে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বোর্ডের নিজস্ব অ্যাসেসরের মূল্যায়ন করা হয় এবং ৮ম শ্রেণি সমমান প্রি-ভোকেশনাল কোর্সের সনদায়ন করা হয়।
সাম্প্রতিক কার্যক্রম
১) আউট অব স্কুল চিলড্রেন কার্যক্রম (২০১৮-২০২৪)
ক) দেশের বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশুদের জন্য নন-ফরমাল প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন।
খ) ১০ লক্ষ শিশুকে পুনরায় মূলধারার বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ।
গ) ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে সমাপ্তি ঘোষণা।
২) মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প (৬৪ জেলা) (ফেব্রুয়ারি ২০১৪-জুন ২০২২)
ক) ১৫-৪৫ বছর বয়সী প্রায় ৪৫ লাখ প্রাপ্ত বয়স্ককে মৌলিক সাক্ষরতা ও জীবন-দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রদান।
খ) শিক্ষার্থীদের আয়-উপার্জনমূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণে সহায়তা।
৩) বিদ্যালয় বহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতা কেন্দ্রিক সাক্ষরতা (SKILFO) পাইলট: (সেপ্টেম্বর ২০২৩-জুন ২০২৫)
ক) কক্সবাজার জেলায় ৬,৮২৫ কিশোর-কিশোরীকে ১৩টি ট্রেডে মৌলিক সাক্ষরতা, গণনা দক্ষতা ও জীবিকায়ন প্রশিক্ষণ।
খ) প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা উন্নয়নের জন্য বিশেষ উদ্যোগ।
বর্তমান কার্যক্রম
৪. কার্যকর সাক্ষরতা ও ব্যবহারিক কর্মদক্ষতা প্রশিক্ষণ (প্রাক-বৃত্তিমূলক পর্যায়) প্রোগ্রাম
দেশের ৬৪ জেলার সদর উপজেলায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো’র বিশেষ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘কার্যকর সাক্ষরতা ও ব্যবহারিক কর্মদক্ষতা প্রশিক্ষণ (প্রাক-বৃত্তিমূলক পর্যায়)’ শীর্ষক কোর্স বাস্তবায়নে বিভিন্ন কারণে স্কুল হতে ঝরে পড়া কিশোর-কিশোরীদের (১৫-২৪ বছর ৮ম শ্রেণি উত্তীর্ণ নয়) প্রাক-বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ (BNQF অনুযায়ী NSC Level-1 এর নিচে) প্রদান করা হচ্ছে। প্রতি জেলায় সর্বোচ্চ চারটি ট্রেডে ৪৬০ ঘণ্টার (১০০ ঘণ্টা লিটারেসি ও ৩৬০ ঘণ্টার স্কিল) প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। প্রতি জেলায় ৮০ জন করে ৬৪ জেলায় ৫১২০ জন শিক্ষার্থী প্রথম ধাপে এ প্রশিক্ষণ পাচ্ছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ক) দেশের ৬৪টি জেলায় সাক্ষরতা ও জীবনদক্ষতা প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণ।
খ) আউট অব স্কুল চিলড্রেন প্রোগ্রামের সম্প্রসারণ করে আরও বেশি সংখ্যক শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় আনা।
গ) Alternative Learning Opportunity for Out of School children (ALO) প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৬৪ জেলার নির্বাচিত ৬৪টি উপজেলায় বিদ্যালয় বহির্ভূত ১০-১৪ বছর বয়সী ১৯,২০০ জন শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য ৫ম গ্রেড পর্যন্ত মৌলিক শিক্ষা প্রদান (Back to School) এবং ১৫-২৪ বছর বয়সী ১৯,২০০ জনকে জীবিকায়ন দক্ষতা প্রদান করা হবে।
ঘ) দেশের ৮টি বিভাগের ১৬টি জেলায় বিদ্যালয় বহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতা কেন্দ্রিক সাক্ষরতা (SKILFO) প্রকল্পের বিস্তৃতি, যাতে তিন বছরে ১,০০,০০০ কিশোর-কিশোরীকে দক্ষতাভিত্তিক সাক্ষরতা প্রদান করা হবে।
ঙ) জীবনব্যাপী শিক্ষা (Lifelong Learning)-এর জন্য উদ্ভাবনী শিক্ষা মডেল চালু করা।
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বোর্ড সম্পর্কিত তথ্য :
২৩ ফাল্গুন ১৪২৩ বঙ্গাব্দ/০৭ মার্চ ২০১৭ ব্রিস্টাব্দ তারিখে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন, ২০১৪ এর ধারা ১৬(১) অনুযায়ী ১৩ জন সদস্যের সমন্বয়ে “উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বোর্ড” গঠন করা হয়। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো পরিচালিত প্রাক-বৃত্তিমূলক স্তরের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদান শেষে মূল্যায়ন ও সনদায়ন এই বোর্ডের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলায় বাস্তবায়নকৃত স্কিলফো প্রকল্পের ৬৮২৫ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন ও মূল্যায়নের কাজ এই বোর্ডের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। উক্ত শিক্ষার্থীদের সনদায়নের কাজ চলমান রয়েছে। বর্তমানে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন অকুপেশনে নিজস্ব সনদায়িত অ্যাসেসর রয়েছেন ৫৫ জন, মাস্টার ট্রেইনার রয়েছেন ২১ জন, প্রি-ভোকেশনাল ম্যানেজার রয়েছেন ২৫ জন। ভবিষ্যতে এই পরিসর আরও বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ক্ষমতায় ছিল নির্বাচনগুলো নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে।
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে নিজের করায়ত্ত করেছেন এবং প্রকৃতপক্ষে জনগণের সঙ্গে তার সম্পর্ক একেবারেই ছিন্ন করে ফেলেছিলেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সাক্ষী হিসেবে দেওয়া জবানবন্দিতে একথা বলেছেন সদ্য প্রয়াত বরেণ্য বুদ্ধিজীবী, লেখক, গবেষক ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামীম সাংবাদিকদের বলেন, প্রয়াত বদরুদ্দীন উমর শেখ হাসিনার মামলায় একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন। উনি ট্রাইব্যুনালে এসে সাক্ষ্য প্রদান করতে পারলেন না, তবে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে উনি ওনার সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনের ১৯(২) ধারা অনুযায়ী কোন সাক্ষী যদি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সাক্ষ্য দিয়ে মারা যান, সেক্ষেত্রে প্রসিকিউসনের আবেদনে ট্রাইব্যুনাল তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া সাক্ষ্যকে গ্রহণ করতে পারেন।
তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ক্ষমতায় ছিল নির্বাচনগুলো নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনই তিনি ম্যানিপুলেট করেছেন। এগুলো সম্ভব হয়েছে, কারণ রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ওপর, নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে পুলিশ ও আমলাতন্ত্র-সব কিছুর ওপর তিনি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল। প্রথম থেকেই শেখ হাসিনা ঠিক করেছিলেন যে, তিনি নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করবেন। সেটি করতে গেলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখা সম্ভব নয়। অথচ ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তিনি আন্দোলন করেছিলেন, সংশোধনী এনেছিলেন। কোনো নীতিবোধ বা নৈতিক লজ্জাবোধ তার ছিল না।
বদরুদ্দীন উমর আরো বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে তিনিই সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে দিলেন।
কারণ তিনি বুঝেছিলেন যে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে, পরবর্তীকালে তারা আর জিততে পারবে না। সুতরাং নির্বাচনে জিততে হলে তাকে সবকিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতেই হবে।
তিনি প্রশাসনকে দুইভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছেন— প্রথমত ঘুষ, টাকা-পয়সা ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে এবং দ্বিতীয়ত হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে।
বদরুদ্দীন উমর আরো বলেন, ২০০৯ সালের মধ্যেই এই নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করেন। এই নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই তিনি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনগুলো করেছেন। ২০১৪ সালে ভোটকেন্দ্রে কাউকে ঢুকতেই দেয়নি।
২০১৮ সালে ‘রাতের ভোট’ হয়েছে। দিনে ভোট হলেও, আসলে ভোট হয়ে গেছে আগের রাতেই। ২০২৪ সালেও একই ঘটনা। এভাবে নির্বাচন করেও তিনি জয়লাভ করেছেন।
যদিও এগুলোতে জনসমর্থনের কোনো ভিত্তি ছিল না। এইসব নির্বাচনে তার দল ৩০০ সিটের মধ্যে চার-পাঁচটি সিটও পেতো কি-না সন্দেহ। এরপরও তিনি জয়ী হয়েছেন শুধুমাত্র প্রশাসনের ওপর চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রণের কারণে। এটা গোপন কিছু না, সবাই জানে। একটি সরকার যদি চায়, তারা এইভাবে নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করবে, তাহলে সেটা ঠেকানো কঠিন। শুধু নির্বাচনের কারচুপিই নয়, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর নিষ্ঠুর দমন চালিয়েছে শেখ হাসিনা।
তিনি জবানবন্দিতে আরো বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল যাতে কার্যকরভাবে নড়াচড়া করতে না পারে, সে জন্যও নির্যাতন করা হয়েছে। প্রচুর মানুষকে গ্রেফতার করে বছরের পর বছর আটকে রাখা হয়েছে বিনা কারণে। ‘আয়না ঘর’ নামে টর্চার সেল তৈরি করা হয়েছে, যেটা শেখ মুজিবের আমলেও ছিল না। শেখ মুজিব বিরোধীদের সরাসরি হত্যা করতেন। শেখ হাসিনা শুধু হত্যা করতেন না, নির্যাতনও করতেন এবং এতে এক ধরনের বিকৃত আনন্দ পেতেন। সুতরাং, এভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে নিজের করায়ত্ত এবং প্রকৃতপক্ষে জনগণের সঙ্গে তার সম্পর্ক একেবারেই ছিন্ন করেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান শুধু বাংলাদেশে নয়, গোটা ভারতীয় উপমহাদেশে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা।
ভারত বা পাকিস্তানে এমন জনতার শক্তি ও ব্যাপকতার গণঅভ্যুত্থান কখনো দেখা যায়নি। বাংলাদেশ নিজেই একটি ‘গণঅভ্যুত্থানের দেশ।’ ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৯০ সালের ঘটনাগুলো তার উদাহরণ। তবে এইসব অভ্যুত্থানের মধ্যে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান ছিল সবচেয়ে বিস্ফোরক, সবচেয়ে রূপান্তরমূলক।
তিনি জবানবন্দিতে আরো বলেন, ভাষা আন্দোলনের (১৯৫২) মধ্য দিয়ে ভাষার স্বীকৃতি এসেছিল, ১৯৬৯-এ আইয়ুব খানের পতন হয়েছিল, ১৯৯০-এ এরশাদের পতনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এসব আন্দোলনে এমন সর্বগ্রাসী ভাঙন, এমন পলায়নপর সরকার বা দল দেখা যায়নি।
বদরুদ্দীন উমর আরো বলেন, ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। শুধু তিনিই নন-তার মন্ত্রিসভা, দলের কেন্দ্রীয় নেতারা, এমনকি তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও দেশ ছেড়ে পালায়। এই রকম ব্যাপক দলীয় পতন, আতঙ্ক ও আত্মগোপন বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কখনো ঘটেনি। সিরিয়া বা অন্য কোনো দেশে, স্বৈরাচার পতনের পরও এত সংগঠিত দলীয় পলায়ন দেখা যায়নি।
তিনি জবানবন্দিতে বলেন, এই অভ্যুত্থানের গভীরতা বোঝাতে একটি প্রতীকী চিত্র যথাযথ— শেখ হাসিনার পালানোর পরদিন থেকেই সারা দেশে শেখ মুজিবের মূর্তি ও ম্যুরাল সাধারণ মানুষ নিজেরা ভেঙে ফেলে। কেউ কোনো নির্দেশ দেয়নি, তবুও এটি ঘটেছে। এটি এক ধরনের ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ’, যার বহিঃপ্রকাশ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়ায় হয়েছে। বহু বছর ধরে নির্যাতিত, অবদমিত জনগণের ক্রোধ এই অভ্যুত্থানে বিস্ফোরিত হয়েছে। শেখ মুজিব নিজেই এক সময় পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, “সিরাজ শিকদার কোথায়?” যেটা ছিল একটি অমানবিক ব্যঙ্গ। কিন্তু ইতিহাসের প্রতিশোধ হয়েছিল ওই বছরেরই আগস্টে, যখন মানুষ বলেছিল, “শেখ মুজিব কোথায়?” এভাবে ইতিহাসে অনেক সময় ঘটনাগুলো পুনরাবৃত্তি হয় প্রতিশোধের রূপে।
সদ্য প্রয়াত বরেণ্য ইতিহাসবিদ তার জবানবন্দীতে আরো বলেন, এই অভ্যুত্থানের ফলে আওয়ামী লীগ শুধু ক্ষমতা থেকে বিতাড়িতই হয়নি, তারা জনগণের বিশ্বাস থেকেও বিতাড়িত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মুসলিম লীগের পতনের মতোই এবারের গণঅভ্যুত্থান আওয়ামী লীগের জন্য একটি চূড়ান্ত রাজনৈতিক পরিণতি তৈরি করেছে। ভারতের সহায়তায় তারা হয়তো কিছু অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতা চালাতে পারে, কিন্তু জাতীয় রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের পুনঃউত্থান অসম্ভব বলেই মনে হয়।
বদরুদ্দীন উমর বলেন, এই অভ্যুত্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ছাত্রদের ভূমিকা। তারাই এই আন্দোলনের প্রধান চালিকা শক্তি ছিল। ইতিহাসে ছাত্ররা বারবার নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু এবারের আন্দোলনে তারা যে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা, সাহস ও আত্মত্যাগের পরিচয় দিয়েছে, তা বিরল।
ঊল্লেখ্য বরেণ্য এই বুদ্ধিজীবী, লেখক, গবেষক, ইতিহাসবিদ, চিন্তক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গতকাল মারা গেছেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৯৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। ৭ সেপ্টেম্বর সকালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
গত ২২ জুলাই শ্বাসকষ্ট ও নিম্ন রক্তচাপ নিয়ে বদরুদ্দীন উমর হাসপাতালে ভর্তি হন। দীর্ঘ ১০ দিন চিকিৎসা শেষে গত সপ্তাহে তিনি বাসায় ফেরেন।
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ভারতের বর্ধমানে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আবুল হাশিম ভারতীয় উপমহাদেশের একজন মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ ছিলেন।
ষাটের দশকে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন আর ধর্ম ও রাজনীতি নিয়ে তাঁর লেখা বইগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
তাঁর চিন্তা বুঝতে সহায়ক বিশেষ করে ‘সাম্প্রদায়িকতা’ (১৯৬৬), ‘সংস্কৃতির সংকট’ (১৯৬৭), ‘সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা’ (১৯৬৯)-তিনটি বই।
এই বই লিখেই তিনি ক্ষান্ত হননি। শাসকদের অধীনে চাকরি পর্যন্ত করবেন না, এ মনোভাব পোষণ করে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন বদরুদ্দীন উমর।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে তার পেশাজীবন শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এক সময় তিনি পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন এবং এর সভাপতির দায়িত্ব নেন।
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সব যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টা থেকে চালক, সুপারভাইজার ও সহকারীদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে এ কর্মবিরতি শুরু হয়। তবে শুধুমাত্র একতা ট্রান্সপোর্টের বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন ঢাকাগামী যাত্রীরা। অনেকেই বিকল্প উপায়ে ভ্রমণের চেষ্টা করলেও পর্যাপ্ত বাস না থাকায় বিপাকে পড়েছেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী-ঢাকা রুটে বাস স্টাফদের বেতন অস্বাভাবিকভাবে কম। বর্তমানে ন্যাশনাল ট্রাভেলস চালকদের প্রতি ট্রিপে মাত্র ১১০০ টাকা, সুপারভাইজারদের ৫০০ টাকা এবং সহকারিদের ৪০০ টাকা বেতন দেওয়া হয়। শ্রমিকরা এই বেতন বাড়িয়ে অন্তত দুই হাজার টাকা করার দাবি তুলেছেন।
বেতন না বাড়ানো পর্যন্ত রাজশাহী-ঢাকা রুটে অধিকাংশ বাস চলাচল বন্ধ থাকবে বলে আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন।
ন্যাশনাল ট্রাভেলসের চালক আলী হোসেন বলেন, ‘১০ বছর ধরে আমাদের একই বেতন দেওয়া হচ্ছে। গত ২৩ আগস্ট আমরা শুধু ন্যাশনাল ট্রাভেলসের বাস চলাচল বন্ধ করেছিলাম। তখন কর্তৃপক্ষ দুই দিনের মধ্যে বেতন বাড়ানোর আশ্বাস দেয়। কিন্তু দুই সপ্তাহ পার হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই এবার অন্য সব বাস শ্রমিকরাও আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। একতা ট্রান্সপোর্ট ছাড়া সব বাস বন্ধ থাকবে যতক্ষণ না আমাদের দাবি পূরণ হয়।’
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, ‘শ্রমিকরা যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছেন। মালিকরা ১০০ টাকা বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে আমরা শ্রমিকরা খুব দ্রুত মালিকদের সঙ্গে আবারও বৈঠকে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।’
আসন্ন শারদীয় দুর্গা পূজায় মদ-গাঁজার আসর বসানো যাবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রস্তুতি সভার আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পূজামণ্ডপগুলোতে টানা ২৪ ঘণ্টা নজরদারি থাকবে এবং নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে। পূজা উপলক্ষে বসা মেলায় কোনোভাবেই মদ-গাঁজার আসর চালানো যাবে না।
তিনি আরও বলেন, সীমান্ত এলাকায় পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তবে সারাদেশের প্রতিটি মণ্ডপেই আনসার মোতায়েন থাকবে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ঢাকায় প্রতিমা বিসর্জনের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট লাইনের মাধ্যমে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। কার পর কে বিসর্জন দেবে তার ধারাবাহিকতা থাকতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, এ বছর সারাদেশে প্রায় ৩৩ হাজার পূজামণ্ডপ রয়েছে। পূজা আয়োজন কমিটি কোনো ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। গতবার শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করা হয়েছিল। এবার আরও শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শাহবাগ থানার মামলায় আজ সোমবার রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আবু আলম শহীদ খান ১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিবরমির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটা কথা সব সময় মনে রাখতে হবে। বিএনপি হলো সেই রাজনীতিক দল যে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছে।
সোমবার(৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ঠাকুরগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠে জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি হলো সেই রাজনীতিক দল যে আমাদের মিডিয়ার স্বাধীনতা নিশ্চিৎ করেছে। বিএনপি হলো সেই রাজনীতিক দল যে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ২১ দফাকে কেন্দ্র করে বেগম জিয়া নতুন বাংলাদেশের রুপকল্প দিয়েছিলেন। ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা বাংলাদেশ তছনছ হয়েগেছে, ভেঙ্গে গেছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে গেছে সেগুলোকে আবার নতুন করে গড়ে তুলবার জন্য। দেশের সকল রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলবার জন্য, নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবার জন্য ৩১ দফা কর্মসূচী প্রণয়ন করেছে।
তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আজকে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এ জেলায় নতুন একটি বিএনপি গঠন করবেন। যে বিএনপি একদিকে নতুন পথ দেখাবে। তেমনি অন্যদিকে গণতান্ত্রিক ঠাকুরগাঁও প্রতিষ্ঠিত করবে।
এ সময় তিনি সম্মেলনের সফলতা কামনা করেন এবং সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাসুজ্জামান দুদু সহ স্থানীয় অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
মন্তব্য