বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জানতে চাওয়া ছয় প্রশ্নের জবাব দিতে ই-কমার্স সাইট ইভ্যালিকে তিন সপ্তাহ সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।
এর মধ্যে গ্রাহকের পাওনাসংক্রান্ত তথ্যের জন্য সাত দিন, সম্পদের দায়দেনাসংক্রান্ত তথ্যের জন্য পাঁচ দিন এবং মার্চেন্টদের কাছে পাওনাসংক্রান্ত বিষয়ের জন্য তিন সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে ইভ্যালিকে সব বিষয়ে সঠিক ও নির্ভুল তথ্য দিতে হবে। তাদের দেয়া তথ্য কতটা সঠিক তা যাচাই করা হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং রেজিস্টার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানির (আরজেএসসি) কাছে থাকা তথ্যের সঙ্গে।
বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য দেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বাংলাদেশ শাখার প্রধান হাফিজুর রহমান। এ সময় মন্ত্রণালয়ের আমদানি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফীকুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৯ জুলাই ইভ্যালিকে চিঠি দিয়ে কাস্টমারদের কাছ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত নেয়া মোট অর্থের পরিমাণ এবং ওই সময় পর্যন্ত মার্চেন্টদের কী পরিমাণ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে সে তথ্য জানতে চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে বকেয়ার পরিমাণ কত এবং সেগুলো পরিশোধের পরিকল্পনা ১০ দিনের মধ্যে জানাতে বলে মন্ত্রণালয়।
প্রশ্নগুলোর জবাব দেয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ফের চিঠিতে ছয় মাস সময় চেয়েছিল আলোচিত ই-কমার্স সাইটটি। গত ১ আগস্ট ইভ্যালির পাঠানো ওই চিঠি গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়।
ইভ্যালির সময় চাওয়ার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত ৯ সদস্যের আন্তমন্ত্রণালয় কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত দেয়ার কথা জানানো হয়। সে অনুযায়ী বুধবার বিকেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তমন্ত্রণালয় কমিটির বৈঠক হয়।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য-প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও প্রতিযোগিতা কমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে হাফিজুর রহমান জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ইভ্যালির দায় ৪০৭ কোটি টাকা এবং এর বিপরীতে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার মূলধনের অস্তিত্ব মেলে। এই পরিস্থিতিতে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের দেনা-পাওনার ভবিষ্যত কী হবে সেটি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে ওই সময় ইভ্যালির কাছে ৬ প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়। আমরা যে প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে চেয়েছিলাম তা পেলে ইভ্যালির সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যেত। তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব না দিয়ে ৬ মাস চেয়েছে।’
হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বৈঠকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে এসেছে, ইভ্যালিকে সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহ সময় দেয়ার। তারই আলোকে জানাচ্ছি, মন্ত্রণালয়ের ছয় প্রশ্নের উত্তর দিতে ইভ্যালিকে সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহ সময় দেয়া হলো। এক্ষেত্রে ইভ্যালির কাছে গ্রাহকের পাওনা সংক্রান্ত তথ্য দিতে সর্বোচ্চ ৭ দিন, ইভ্যালির মোট সম্পদ ও দায়ের পরিমাণ জানাতে ৩-৫ দিন এবং মার্চেন্টদের কাছে দেনার পরিমাণ জানাতে তিন সপ্তাহ সময় পাবে তারা।’
ইভ্যালিকে চিঠি পাঠানোর দিন থেকে এই সময় গননা শুরু হবে জানিয়ে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবারই চিঠি তিনটি পাঠানো হবে বলে আশা করছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজুর জানান, ইভ্যালি অনলাইনে বিজনেস করে। তারা ক্রেতাদের কাছ থেকে কত টাকা নিল, কতো টাকার পণ্য ডেলিভারি করল, সেসব হিসাব ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হালনাগাদ হওয়ার কথা। তাই তাদের সম্পদ ও দায়, ক্রেতাদের কাছ থেকে নেয়া অর্থ ও ক্রেতাদের বকেয়া অর্ডারের পরিমাণের তথ্য দিতে এর চেয়ে বেশি সময় লাগার কথা নয়।
তিনি বলেন, মার্চেন্টদের দেনা-পাওনার হিসাব হয়তো ম্যানুয়ালি হতে পারে। সেজন্যই মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির দেনার তথ্য জানাতে বেশি সময় দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইভ্যালি তথ্য দিতে ব্যর্থ হলে কমিটি আবারও বৈঠক করে তাদের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
মিডল্যান্ড ব্যাংকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টজনিত ঝামেলার কারণে ক্রেতাদের রিফান্ড দিতে ইভ্যালির সমস্যা হচ্ছে- এ সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজুর রহমান বলেন, সেটা ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ব্যাপার। ব্যাংকের সঙ্গে ইভ্যালির কোনো সমস্যা থাকলে, তা তাদেরই সমাধান করতে হবে।
প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই অতিরিক্ত সচিব ভোক্তাদেরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে ইভ্যালিতে ক্ষতিগ্রস্তদের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিপ্তরে দ্রুত মামলা করারও নির্দেশনা দেন তিনি।
হাফিজুর রহমান বলেন, ‘পাওনাধারী মার্চেন্টদেরও উচিত হবে ইভ্যালির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া। তাহলে ইভ্যালিতে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রকৃত সংখ্যা কত ও দাবিদার কারা মন্ত্রণালয় বুঝতে পারবে। তবে আমরা শিগগিরিই ভোক্তাদের সতর্ক করে সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি।’
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বুধবার পর্যন্ত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে ইভ্যালির বিরুদ্ধে ৬৭৫৭টি অভিযোগ এসেছে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ৪১৬৫টি। বাকিগুলো নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
আরও পড়ুন:
অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করার অভিযোগে ৫৪ ভারতীয় নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। রোববার ভোরে হাতে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ৫০ তরুণকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তাদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। খবর এনডিটিভির।
পুলিশ জানায়, দেশে ফেরত আসা এই তরুণরা সবাই অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। এদের মধ্যে ১৬ জন কর্ণালের, ১৫ জন কৈথালের, ৫ জন আম্বালার, ৪ জন যমুনা নগরের, ৪ জন কুরুক্ষেত্রের, ৩ জন জিন্দের, ২ জন সোনিপতের এবং ১ জন করে পঞ্চকুলা, পানিপত, রোহতক এবং ফতেহাবাদের বাসিন্দা।
করনাল পুলিশ জানায়, সবাইকে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়েছে এবং কোনো দালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
করনালের ডিএসপি সন্দীপ কুমার বলেন, ‘আজ আরো কিছু ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে হরিয়ানার ৫০ জন। কেবল করনাল জেলা থেকেই রয়েছেন ১৬ জন। সবাই ‘ডংকি রুটে’ যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছিল, কিন্তু আজ ফেরত এসেছে।’
পুলিশ আরো জানিয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
এই বছরের শুরুতে, মার্কিন কর্তৃপক্ষ শত শত ভারতীয় দেশে ফেরত পাঠায়। গত জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে তার প্রশাসন।
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে মোট ১ হাজার ৫১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ (সোমবার) পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ১ হাজার ৩৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য ঘটনায় গ্রেফতার ৪৮২ জন।
অভিযান চলাকালে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পুরাতন রিভালবর, ২টি দেশি পাইপগান, ১টি একনলা বন্দুক, ১টি পাইপগান, ৬ রাউন্ড গুলি, ১টি দেশীয় এলজি, ১টি পুরাতন মরিচাযুক্ত দেশীয় এলজি, ১টি স্টিলের ধারালো চাকু, ২টি সুইচ গিয়ার চাকু, ১টি কাঠের বাট যুক্ত কিরিচ ও ৫টি কিরিচ উদ্ধার করা হয়।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বৃহৎ জোট গঠন করতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য অটুট রাখতে চায় বিএনপি। আর ঐক্য বজায় রাখতে কেউ যেন বিভেদের পথে না যায় সেই বার্তাও দিতে চায় দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশের প্রার্থীদের সঙ্গে দলের হাইকমান্ডের বৈঠক হচ্ছে। দল ও নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার বার্তা দিতেই হাইকমান্ডের এই বৈঠক করছে বিএনপি।
এ সময়, আগামীর বাংলাদেশ হবে তারুণ্যনির্ভর মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তরুণ-যুবকদের রাজনৈতিক ভাবনাকে ধারণ করে সামনের দিনে জাতি বিনির্মাণে কর্মসূচি প্রণয়ন করবে বিএনপি।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে ৩০০টি আসনে চূড়ান্তভাবে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৭৬১টি। সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আখতার আহমেদ বলেন, “আমরা আজ সারাদেশের ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছি। ৬৪টি জেলার ৩০০টি সংসদীয় আসনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ৭৬১টি। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের জন্য কক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ১৩৭টি এবং নারী ভোটারের জন্য ১ লাখ ২৯ হাজার ৬০২টি। অর্থাৎ মোট কক্ষের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি।”
আখতার আহমেদ আরও বলেন, “অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে ১৪টি রাখা হয়েছে, যেখানে প্রায় ১২ হাজার ভোটকক্ষ থাকবে। একটি ভোটকক্ষে গড়ে প্রায় তিন হাজার ভোটারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ‘ক্যাচমেন্ট এরিয়া’ হিসেবে বিবেচিত। প্রয়োজনে পরবর্তীতে এই সংখ্যা সামঞ্জস্য করা হবে।”
ইসির তথ্য অনুযায়ী, খসড়া তালিকায় ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার ৬১৮টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার ১৪৮টি। অর্থাৎ এবার ভোটকেন্দ্র বেড়েছে, তবে ভোটকক্ষ কমেছে। আসন্ন নির্বাচনে মোট ভোটকক্ষ থাকবে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬টি, যেখানে গত নির্বাচনে ছিল ২ লাখ ৬১ হাজার ৫৬৪টি।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ৯ম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি)-এর বৈঠক চলছে ।
রাজধানীর শের-ই-বাংলানগর এলাকার এনইসি কনফারেন্স রুমে আজ সকালে এ বৈঠক শুরু হয়।
বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং সফররত পাকিস্তানের জ্বালানি মন্ত্রী আলি পারভেজ মালিক নিজ দেশের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
দীর্ঘ ২০ বছর বিরতির পর বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শেষবার ২০০৫ সালে জেইসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বর্তমান সরকারের গৃহীত সংস্কার ও নীতিমালা প্রণয়নের কাজ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সঠিক নয়। বরং সংস্কার কার্যক্রম পুরোপুরি চালু থাকবে। সোমবার অন্তর্বর্তী সরকার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম উপদেষ্টা পরিষদের কার্যক্রম নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সরকারের গৃহীত সংস্কার ও নীতিমালা প্রণয়নের কাজ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার যে কথা বলা হয়েছে, এটা সঠিক নয়; বরং সংস্কার কার্যক্রম পূর্ণোদ্যমে চালু থাকবে।
এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদ নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর না করা পর্যন্ত নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে যাবে এবং উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকও নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
একসময় সচ্ছল জীবন ছিল শুভর পরিবারের। নোয়াখালী সোনাইমুড়ী বজরা গ্রামে কিছু জমিও কিনেছেন। পিতা দুই ভাই প্রবাসে থাকায় পরিবার ভালোই চলছিল। প্রবাসে থেকে পরিবারের ভরণপোষণ চালিয়ে ৫ লক্ষ টাকা সঞ্চয় করেন। এখন এ টাকা সবই হারিয়েছেন।সব টাকাই অনলাইন জুয়া খুইয়েছেন।সোনাইমুড়ী থানার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা ইতিপূর্বে এ থানায় যোগদান করেন। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে লোভে পড়ে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হন। তার একাউন্টে থাকা প্রায় ৮ লক্ষ টাকা হারিয়ে এখন নিঃস্ব। উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের হৃদয় স্থানীয় চৌমুহনী বাজারে মোবাইল দোকান দেন। তার পিতা দীর্ঘ বছর থেকে আমেরিকায় বসবাস করেন। বিদেশ থেকে উপার্জিত অর্থ তার একাউন্টে বেশি পাঠান। সে ব্যবহার করেন দামি মোবাইল। একপর্যায়ে মোবাইল জুয়ায় আসক্ত হয়ে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা হারিয়েছেন।
জানা যায়, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা।এ এখানকার বাসিন্দারা ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে বেশি পাড়ি জমান। এলাকার লোকজন বেশিরভাগ বিত্তশালী। তাই এখানে মুঠোফোন অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। লোভে পড়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও তরুণেরা এই জুয়ায় বেশি আসক্ত হচ্ছেন। জুয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে সর্বস্ব হারাতে বসেছেন তাদের অনেকে। এ কারণে বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি ও দাম্পত্য কলহ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সহজে প্রচুর টাকা উপার্জনের লোভে পড়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য মানুষ এই জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছে। তরুণদের অনেকেই কৌতূহলবশত এই খেলা শুরুর পরেই নেশায় পড়ে যাচ্ছে। প্রথমে লাভবান হয়ে পরবর্তী সময় খোয়াচ্ছে টাকা। বিভিন্ন নামের প্রায় ১০ থেকে ১২টির মতো অ্যাপসে সবচেয়ে বেশী জুয়া খেলা হয়। এসব অ্যাপসে ১০ টাকা থেকে শুরু করে যেকোন অঙ্কের টাকা দিয়ে শুরু করা যায়।
এসব অ্যাপসের অধিকাংশই পরিচালনা করা হচ্ছে রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে। বাংলাদেশে এগুলোর এজেন্ট রয়েছে। তারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জুয়ায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ বা প্রদান করে থাকে। এজেন্টরা বিদেশী অ্যাপস পরিচালনাকারীদের কাছ থেকে হাজারে কমপক্ষে ৪০ টাকা কমিশন পায়।
সোনাইমুড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তরুণ, যুবক, পুলিশ সদস্য, দিনমজুর এবং কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও অনলাইন জুয়ার ফাঁদে জড়িয়ে পড়ছে।
সোনামুড়ী ডিগ্রী কলেজের এক কলেজ শিক্ষার্থী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানালেন, তিনি এবং তার বন্ধুরা ৫০০ টাকা জমা দিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই টাকা হারিয়ে গেছে। পরবর্তীতে ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। পৌর শহরের এক চাকরিজীবী বাড়তি আয়ের আশায় অনলাইন জুয়ার ফাঁদে পড়ে কয়েক লাখ টাকা হারিয়ে এখন ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। এসব অ্যাপের অধিকাংশই বিদেশ থেকে পরিচালিত হলেও বাংলাদেশে এদের স্থানীয় প্রতিনিধি বা দালাল রয়েছে, যারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদান করেন। প্রতি হাজার টাকায় এজেন্টরা অন্তত ৪০ টাকা কমিশন পায়। এর ফলে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে।
সোনাইমুড়ী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক নোমান বলেন, এ উপজেলার সাধারণ মানুষ বেশি মোবাইল জুয়ায় আসক্ত হচ্ছেন। কি খবর প্রতিনিয়ত শোনা যাচ্ছে। আবার পরে প্রচারিত হচ্ছে। এটা এখন সামাজিক ব্যাধি।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, এ উপজেলা বাসী প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় ইউরোপের লোক বেশি বসবাস করে। বহু লোক অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে লাখ লাখ টাকা খুইয়েছেন। প্রতিদিনই থানায় এইসব ভুক্তভোগীরা আসে আইনগত সহযোগিতা পেতে। জুয়া খেলা আইনত দ-নীয় অপরাধ। আমরা অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।শুধু স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী নয়, এদের খপ্পরের পুলিশের উদ্বোধন কর্মকর্তা,সাধারণ জনগণ ও ব্যবসায়ীরা পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।
মন্তব্য