প্রত্যেক বাজেটে মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) আওতা বাড়লেও নির্দিষ্ট কয়েকটি খাতের উপর আদায় নির্ভরশীল এখনও। সিগারেট, মোবাইল টেলিযোগাযোগসহ ১০টি খাত থেকে মোট ভ্যাটের ৮০ শতাংশ আদায় হয়।
আবার এমন অনেক খাত রয়েছে, যেসব খাত থেকে আদায় হয় মোট ভ্যাটের ১ শতাংশের কম।
ভ্যাট আহরণের দিক থেকে সবার শীর্ষে অবস্থান করছে তামাকজাত পণ্য খাত বা সিগারেট। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে মোবাইল ফোন। তার পর রয়েছে ওষুধ।
এ ছাড়া আমদানি পর্যায়ে আগাম কর, যোগানদার বা সরবরাহকারী, ওষুধ, বিদ্যুৎ বিতরণ, ব্যাংকিং সেবা, খুচরা ও পাইকারি ব্যবসা, নির্মাণখাত থেকেও উল্লেখযোগ্য ভ্যাট আদায় হয় ।
গত অর্থবছরে (২০২০-২১) এনবিআরের মাধ্যমে মোট ভ্যাট আহরণ হয় ৯৭ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে উল্লেখিত দশ খাতের অবদান ৮০ শতাংশ। এর বাইরে উৎপাদন, সেবা, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসার শতাধিক খাত থেকে অবশিষ্ট ২০ শতাংশ আদায় হয়।
এখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে সংগৃহীত রাজস্বের ৩৯ শতাংশ আসে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের অন্যতম উৎস ভ্যাট থেকে। এর পর রয়েছে আয়কর খাত, ৩৫ শতাংশ। বাকি অংশ আয় হয় আমদানি শুল্ক থেকে। এই তিন উৎস থেকে রাজস্ব আদায় করে থাকে এনবিআর।
সরকারি রাজস্ব আহরণ করা এই প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় বাজেটে ৮৫ শতাংশ অর্থের যোগান দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আদায়যোগ্য ভ্যাটের অর্ধেকেই ফাঁকি হয়। বিশেষে করে সেবা খাতে। বর্তমানে সেবার ৬৮টি খাত আছে, যেগুলোর বেশির ভাগ থেকে নামমাত্র ভ্যাট আহরণ হয়।
দুই বছর আগে করা এনবিআরের এক সমীক্ষায় বলা হয়, সেবা খাতের আদায়যোগ্য ভ্যাটের ৭০ শতাংশই ফাঁকি হয়। মিষ্টির দোকান, কমিউনিটি সেন্টার, হোটেল-রেস্তোরাঁ, প্যাকেজিং সামগ্রী, ইটভাটা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এসব খাতে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি হয় এবং মোট ভ্যাটের ১ শতাংশের কম আহরণ হয়।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে এনবিআরের সাবেক সদস্য মো. ফরিদউদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন,‘ভ্যাট বিভাগের দক্ষতা বৃদ্ধি, আদায় প্রক্রিয়া সহজ করা, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণসহ পুরো ভ্যাট বিভাগকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি, খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে কঠোর নজরদারি আনতে পারলে ভ্যাট আদায় বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ বাড়বে।’
প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি ভ্যাট দিয়েছে
গত অর্থবছরে ভ্যাটদাতা কোম্পানিগুলোর মধ্যে বরাবরের মতোই শীর্ষে ছিল সিগারেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি)। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে যথাক্রমে মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন ও রবি।
ভ্যাট ভোক্তা দিয়ে থাকে। তাই একে ভোক্তা করও বলা হয়। বিভিন্ন কোম্পানি ভোক্তার কাছ থেকে সেই ভ্যাট সংগ্রহ করে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়।
বিএটিবি গত অর্থবছরে ২৪ হাজার ৯১১ কোটি টাকা ভ্যাট দিয়েছে, যা আগের বারের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি।
করোনাকালে যে কয়টি খাত থেকে বেশি ভ্যাট আদায় হয়েছে, তার মধ্যে টোবাকো বা তামাকজাত পণ্য অন্যতম।
করোনায় সেবার অন্যতম খাত মোবাইল ফোনে কথা বলা বেড়েছে। আবার ভিডিও কল, অনলাইন ক্লাস, জুম মিটিংসহ দৈনন্দিন নানা কাজে এখন মোবাইল সেবার ব্যবহার হচ্ছে বেশি। ফলে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আগের চেয়ে ভ্যাট আদায় বেড়েছে।
গত অর্থবছরে ভ্যাটদাতা শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির মধ্যে তিনটিই মোবাইল ফোন অপারেটর। এর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছে গ্রামীণফোন। এই কোম্পানি গত অর্থবছরে ৪ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা ভ্যাট দিয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ২৩ শতাংশ বেশি।
এর পর রয়েছে মোবাইল অপারেটর রবি। এই কোম্পানি আগের বারের চেয়ে প্রায় ৪৮ শতাংশ বেশি ভ্যাট দিয়েছে। রবি সব মিলিয়ে ভ্যাট দিয়েছে ২ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা।
ঢাকা টোব্যাকো কোম্পানি মোট ভ্যাট দিয়েছে ২ হাজার কোটি টাকার মতো।
বাংলালিংক দিয়েছে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা আগের চেয়ে প্রায় ৩১ শতাংশ বেশি।
এ ছাড়া ইউনিলিভার ৬৫৫ কোটি টাকা, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ৫৭৯ কোটি টাকা, পেট্রোবাংলা ৫৭৮ কোটি টাকা, পিডিবি ৫৪০ কোটি টাকা এবং স্কয়ার ফার্মা ৫১০ কোটি টাকা ভ্যাট দিয়েছে সমাপ্ত হওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরে ভ্যাট বিভাগের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন,‘করোনার বছরে সার্বিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা থাকলেও কর্মকর্তারা তদারকি বাড়িয়েছেন। এ জন্য শুল্ক-কর আদায় আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে। বড় কোম্পানিগুলোর ব্যবসাও তুলনামূলক ভালো ছিল।’
দেশের বড় কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করে এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের বৃহৎ করদাতা ইউনিট বা এলটিইউ। এলটিইউতে ১১০টি কোম্পানি নিবন্ধিত।
গত অর্থবছরে মোট ৯৭ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা আদায় করেছে ভ্যাট বিভাগ। এর মধ্যে এলটিইউর ওই ১১০টি কোম্পানিই অর্ধেকের বেশি ভ্যাট দিয়েছে। তাদের দেয়া ভ্যাটের পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা।
সার্বিকভাবে সিগারেট খাত থেকে সবচেয়ে বেশি প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা, মোবাইল ফোন খাতে ৮ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা এবং ওষুধ খাত থেকে এসেছে ৩ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগকে সার্থক করতে ও তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাই মিলে সব রকম চেষ্টা করবেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শনিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকের প্রারম্ভিক বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বেলা তিনটার দিকে এ বৈঠক শুরু হয়।
ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাসে প্রথম ইনিংস বা অধ্যায় শেষ হয়েছে। আজ রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হলো। আসুন প্রতিজ্ঞা করি, আমরা যেন গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি অসম্মান না জানাই।
‘যে কারণে তারা আত্মত্যাগ করেছিল, সেটা যেন পরবর্তী সব প্রজন্ম মনে রাখে, তাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে, তাদের আত্মত্যাগকে সার্থক করার জন্য আমরা সবাই মিলে সব রকম চেষ্টা করব তাদের সে স্বপ্ন যেন বাস্তবায়ন করতে পারি।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা এ ত্যাগ না করলে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকলেও জবাব খোঁজার আমাদের কোনো সুযোগ থাকত না। প্রশ্ন আমাদের মনে যতটুকু ছিল, বহু বছর ধরে ছিল, সুযোগ পাইনি। অসংখ্য ছাত্র-জনতা আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা সুযোগ পেয়েছি।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হালদার, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেম সেলিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
এ ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বক্তব্য দেবেন।
এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার, যার সভাপতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সহসভাপতি হিসেবে আছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
আরও পড়ুন:নির্বাচন কবে হবে, সেটি জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির সামনে শনিবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করবে আমাদের নির্বাচনটা কবে হবে। কারণ এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ডিসেম্বরে মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমরা হয়তো কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারব। আর পরে যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে, তারা বাস্তবায়ন করবে।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ছয় মাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছয় সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে। রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে, আমাদের আশা থাকবে সব রাজনৈতিক দল এটাতে স্বাক্ষর করবে। সেটা হবে জুলাই চার্টার।’
সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মন্তব্য করেন প্রেস সচিব।
তিনি বলেন, ‘আর যেসব ক্ষেত্রে প্রধান ঐকমত্য প্রয়োজন, সেটার জন্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশকে পুনর্গঠন এবং এরপরে আমরা যে রাজনৈতিক সমাধানে যাচ্ছি, কীভাবে আমাদের ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনটা হবে, তার জন্য আজকে রাজনৈতিক সংলাপের সূচনা।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর পল্লবীতে শনিবার ভোরে কথাকাটাকাটির জেরে গুলিতে মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ও শাহিনুর বেগম নামের দুই সহোদর আহত হয়েছেন।
তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা তাদের ভগ্নিপতি আমির হোসেন বলেন, ‘আমার শ্যালক জসিম টিভি শোরুমের ব্যবসায়ী। আজ ভোরের দিকে শবে বরাতের নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার সময় বাসার সামনে আমাদের এলাকার কয়েকজন ছেলে শরিফ, তুহিন, শহিদুল, সুজন, রিয়াজের সঙ্গে জসিমের কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে জসিমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে শহিদুল। এতে জসিমের দুই পায়ের হাঁটুর ওপর দুটি গুলি বিদ্ধ হয়।
‘এ দৃশ্য দেখে তার বোন শাহিনুর বেগম এগিয়ে আসলে শাহিনুর বেগমের ডান পায়ের হাঁটুর নিচে একটি গুলি বিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। দুইজনকে ওই অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোরের দিকে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘আজ ভোরের দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভাই-বোনকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়েছে। জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা চলছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।’
তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে রবিবার।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ সম্মেলন উদ্বোধন করবেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে জানান, রবিবার সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টা তার কার্যালয়ের শাপলা হলে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।
ডিসি সম্মেলনে বিভিন্ন অধিবেশন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, দিকনির্দেশনা গ্রহণ এবং সমাপনী অনুষ্ঠানসহ ৩৪টি কার্য অধিবেশন থাকবে।
সরকারের নীতিনির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় বৈদ্যুতিক মোটর চালু করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক স্কুলশিক্ষক ও তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের সেলদিয়া গ্রামে শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে বলে জানায় কাপাসিয়া থানা পুলিশ।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন কাপাসিয়ার কির্তুনীয়া ইছব আলী ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া (৫৫)। তাকে বাঁচাতে গিয়ে স্ত্রী ফেরদৌসি আক্তারেরও (৪০) মৃত্যু হয়।
স্বজনদের বরাতে পুলিশ জানায়, গতকাল বিকেলে শহীদুল্লাহ বাড়ির পাশে ছোট একটি পুকুর থেকে মাছ ধরতে পানি সেচের জন্য বৈদ্যুতিক মোটর স্থাপন করেন। মোটরটি চালু করতে গিয়ে শহীদুল্লাহ প্রথমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাকে বাঁচাতে গিয়ে পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা স্ত্রী ফেরদৌসি এগিয়ে গেলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হন। পরে গুরুতর অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তারা মিয়া নামে অপর একজন প্রতিবেশী আহত হন।
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া স্থানীয় কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। তিনি তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
কাপাসিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হালিম বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর লাশ থানায় নিয়ে এসেছেন স্বজনরা। স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:এক দিনে সর্বোচ্চ চার লাখ ৩ হাজার ১৬৪ জন যাত্রী পরিবহন করে নতুন মাইলফলক অর্জন করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে ডিএমটিসিএল শুক্রবার এ তথ্য জানায়।
এতে আরও বলা হয়, ‘ঢাকায় মেট্রোরেল সার্ভিস উদ্বোধনের পর বৃহস্পতিবার এক দিনে সর্বোচ্চ যাত্রী পরিবহনের রেকর্ড এটি।’
এ মাইলফলক অর্জনে সহযোগিতা করার জন্য যাত্রী, শুভানুধ্যায়ী ও অংশীজনদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি ধন্যবাদ জানায় ডিএমটিসিএল।
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
সংগঠনটির আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান শুক্রবার দেওয়া বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে হেফাজতের নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘জাতিসংঘের ফ্যাক্টচেকিং মিশনের দীর্ঘ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসরদের ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো তথ্য-প্রমাণসহ উঠে এসেছে। হাসিনার পরিকল্পনা ও নির্দেশে তার আজ্ঞাবাহী বাহিনীর সদস্যরা গুম, খুন ও নির্যাতনে নৃশংসতার সকল সীমা ছাড়িয়েছে।’
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন, ৫ মে শাপলা চত্বর ও চব্বিশের গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। তা না হলে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকার ও জনগণকে এক মুহূর্তও শান্তিতে থাকতে দেবে নাৎ।
‘তারা একের পর এক স্যাবোট্যাজ ঘটিয়ে ছাত্র নেতৃত্ব ও তৌহিদি জনতাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কালচারাল ঘরানার ফ্যাসিবাদপন্থি আওয়ামী লোকজন আবারও মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষগুলোর মধ্যে তারা বিভেদ-বিভক্তি ছড়িয়ে দিতে তৎপর।’
এতে আরও বলা হয়, ‘ভারত এখনও শত্রু রাষ্ট্রের মতো আচরণ করছে। হাসিনা পরবর্তী নতুন বাংলাদেশকে এখনও তারা মেনে নিতে পারছে না; বরং তাদের আশ্রয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে একের পর এক ষড়যন্ত্র করার সুযোগ দিয়ে যাচ্ছে। তাই গুম-খুন ও গণহত্যার দায়ে হাসিনার বিচার কাজ ত্বরান্বিত করতে হবে।
‘সেই সাথে বিভিন্ন বাহিনীতে তাদের অনুগত চিহ্নিত দোসরদেরও দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। তবেই গণ-অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লব সুরক্ষিত হবে বলে আমরা মনে করি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য