সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরের শুরু থেকেই ধীরগতি ছিল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে। মাঝামাঝিতে এসে কিছুটা কাটছাঁট করে আকার ছোট করা হয় উন্নয়ন বাজেটের। শেষ দুই মাসে ব্যয় কিছুটা বাড়লেও বছরের শেষটাও আশাব্যঞ্জক হয়নি। ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে এডিপির ৩৭ হাজার কোটি টাকার বেশি ফেরত গেছে।
পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
যদিও বছরের শুরু থেকে বলা হয়েছিল, করোনার সময় সরকারের ব্যয় কমানোর লক্ষ্য সামনে রেখে শুধু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পকেই এডিপিতে স্থান দেয়া হয়েছে। সেগুলোতেই বরাদ্দ দেয়া হবে। তবে নির্বাচিত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোও পুরো অর্থ ব্যয় করতে পারেনি। এমনকি কাজে বিলম্ব যেন না হয়, তার জন্য শুরু থেকেই পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।
আইএমইডির প্রতিবেদন বলছে, সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে উন্নয়নের পেছনে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬১১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। তবে বছরের মাঝামাঝিতে এসে তা কমিয়ে সংশোধিত এডিপি ২ লাখ ৯ হাজার ২৭২ কোটি টাকায় নামানো হয়। অথচ গত জুন শেষে তা থেকে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫২ কোটি টাকা।
জাতীয়ভাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে ৮২ দশমিক ২১ শতাংশে। বাকি ১৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ পেয়েও খরচ করতে পারেনি সরকারের ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।
বিশাল এডিপি নিয়েও তার পুরোটা খরচ করতে না পারায় বাস্তবায়ন সক্ষমতা ও দূরদর্শিতার অভাবকে দায়ী করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এডিপির যে বাস্তবায়ন হার, তাতে কেবল সংখ্যা বা আর্থিক দিক পাওয়া যায়। কিন্তু বাস্তবে কতটুকু কাজ হয়, তাও খতিয়ে দেখা উচিত। আবার কাজের মান কেমন, তাও দেখা উচিত। এসব বিবেচনায় নিলে এডিপির বাস্তবায়ন চিত্রে হতাশা ছাড়া কিছুই মিলবে না।
বিশ্লেষকরা বলেন, বছরের শুরুতে বরাদ্দ পেলেও তখন খরচ না করে বছরের শেষের জন্য রেখে দেয়া হয়। এতে শেষ সময়ে যেনতেনভাবে অর্থ খরচ করা হয়। এতে শুধু সরকারের অর্থেরই অপচয় হয় না, অর্থব্যয়ের পর তা কোনো কাজেই আসে না। তবে এডিপির কম ব্যয়ের পেছনে করোনার কিছুটা প্রভাবও রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বছরের শুরুতে এডিপির আকার কত বাড়ানো যায় তার একটা প্রবণতা থাকে। কিন্তু আকার বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়ন হার এবং কোয়ালিটি, এই দুটি যদি বৃদ্ধি না হয়, তাহলে টাকার অঙ্কে এডিপি কত বড় হলো তাতে অর্থনীতির কিছু আসে-যায় না। বরাবরই আমরা বলে আসছি, বাস্তবায়ন সক্ষমতা বাড়াতে হবে, অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে, কোনগুলো জাতীয় অর্থনীতির জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলোতে নজর দিতে হবে।’
অর্থ ব্যয় কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর প্রকল্পের সংখ্যা বেড়েই চলছে। তাই আকার ও প্রকল্প সংখ্যায় এডিপি যতটা ভারী হচ্ছে, সেই তুলনায় বাস্তবায়নকারীরা তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না। যদিও প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়ন থেকে শুরু করে কী কাজ করা হবে, কী কেনাকাটা হবে, কীভাবে কেনাকাটা হবে, কী ধরনের লোকবল লাগবে- সবই ঠিক করা থাকে। কিন্তু কাজ শুরুর পর দেখা যায়, সব ক্ষেত্রে অস্পূর্ণতা। মাঝপথে লোকবলের পরিবর্তন হয়, সংশোধন করতে হয়, কাজে দেরি হয়। প্রতিবছরই এ ধরনের একটা চিত্র দেখা যায়। সরকার এ থেকে বের হবে কবে?’
সক্ষমতা কম থাকার পাশাপাশি করোনাও এডিপিতে প্রভাব ফেলছে বলে মনে করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর বড় এডিপি নেয় সরকার, কিন্তু ব্যয় করতে পারে না। সক্ষমতার অভাব তো রয়েছেই, এবার করোনার কারণে খরচ একটু কম হয়েছে। তবে এর মধ্যেও কিছু কিছু প্রকল্পে কাজ হচ্ছে।’
কোন অংশে কত ফেরত গেল
গত অর্থবছরে সংশোধিত এডিপিতে সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। বছর শেষে এ খাত থেকে অব্যয়িত থেকে যায় ২২ হাজার ৬৬২ কোটি টাকার মতো। খরচ হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা।
বৈদেশিক সহায়তা থেকে নেয়ার জন্য ধার্য করা হয়েছিল ৬৩ হাজার কোটি টাকা। তা থেকে রয়ে গেছে ১০ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে ৫২ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা।
বিভিন্ন বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ছিল ১১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। জুন শেষের হিসাবে তা থেকে ব্যয় হয়নি ৭ হাজার ৬১০ কোটি টাকা।
শেষ দুই মাসে ব্যয়
বরাবরই দেখা যায়, বছরের শুরুতে কাজের তেমন গতি থাকে না। শেষ দিকে অর্থব্যয় লাফিয়ে বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শুধু জুনে এডিপির খরচ হয়েছে ৪৯ হাজার ৯২০ কোটি টাকা বা মোট এডিপির প্রায় ২৪ শতাংশ। এর আগে মে মাসে খরচ হয়েছিল ১৯ হাজার ৪০১ কোটি টাকা বা ৯.২৭ শতাংশ। এতে শেষ দুই মাসেই খরচ হয়েছে ৭০ হাজার ৩২১ কোটি টাকা বা ৩৩ শতাংশ। আর বাকি ১০ মাসে খরচ হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকা।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর ২০১৯-২০ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ, যা গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। চলতি বছর তা থেকে কিছুটা উন্নতি হলেও তা গত বছর বাদে ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, এডিপি বাস্তবায়নে বড় দুর্বলতা হচ্ছে মন্ত্রণালয়গুলোর গাফিলতি। বছরের শুরুতে কাজ না করলেও দেখা যায়, শেষ মাসে প্রচুর টাকা ছাড় করে মন্ত্রণালয়গুলো হিসাব দেখায় বাস্তবায়ন বেড়েছে। এতে কাজ মানসম্মত হয় না। এটা কোনো সিস্টেম হতে পারে না। এ জায়গায় মনিটরিং ও জবাবদিহি জোরদার করতে হবে।’
বাস্তবায়ন হারে শীর্ষে যারা
আইএমইডির প্রতিবেদন বলছে, এডিপি বাস্তবায়নে সবার চেয়ে এগিয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। বিভাগটি মোট বরাদ্দের চেয়ে ৪ শতাংশ বেশি অর্থ খরচ করেছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন হারও ১০১ দশমিক ২৯ শতাংশ। এ ছাড়া, কৃষি মন্ত্রণালয় ৯৭ দশমিক ৫২ শতাংশ, বিদ্যুৎ বিভাগ ৮৯ দশমিক ৭১ শতাংশ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে ৮৮ শতাংশ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রায় ৮৯ শতাংশ, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ৮৯ শতাংশ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ ৯৭ শতাংশ, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় প্রায় ৮৭ শতাংশ, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ৮৫ শতাংশ এবং সেতু বিভাগ প্রায় ৮৪ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে।
ব্যয়ের হারে তলানিতে যারা
ব্যয়ের দিক দিয়ে সবার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ৩৫ দশমিক ৩২ শতাংশ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ৪১ দশমিক ৮৭ শতাংশ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ৪৭ শতাংশ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ৪৮ শতাংশ, আইন ও বিচার বিভাগ ৫০ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করতে পেরেছে।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ার কুমারখালী তরুণ মোড় থেকে হাসিমপুর পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন হাজারও মানুষ। এই সড়ক দিয়েই সদকি, জগনাথপুর ইউনিয়ন এর পাশাপাশি খোকসা উপজেলারও বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ যাতায়ত করে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সংস্কারে নেই কোনো কার্যকর উদ্যোগ। ফলে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ, ঝুঁকিতে পড়ছেন রোগী, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ যাত্রীরা।
স্থানীয়রা জানান, খানাখন্দে ভরা এই সড়ক প্রতি বর্ষায় হয়ে ওঠে আরও ভয়ংকর। প্রতিনিয়ত ঘটে ছোটো বড় দুর্ঘটনা।
যানবাহন-ভ্যান উল্টে যাত্রী আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে। গাড়ির যন্ত্রাংশও নষ্ট হয়ে যায় বারবার। পথচারী আশিকুর রহমান বলেন ‘রোগী নিয়ে যাওয়া যেন বিপদজনক সড়কের কারণে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে।
দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা আপান ইসলাম বলেন, মাঝেমধ্যেই দেখি যাত্রীরা পড়ে গিয়ে নানা দুর্ঘটনা ঘটে। এতে শিশু-বৃদ্ধরা বেশি আহত হন। স্কুলের শিশুদের নিয়ে সবসময় ভয়ে থাকেন অভিভাবকরা।’
উপজেলা শহরে যাতায়াতের প্রধান সড়কের এই যদি হয় হাল। ট্রাকচালক রুস্তম আলী বলেন, মাঝেমধ্যেই এই সড়ক দিয়ে যাতায়ত করি। উঁচুনিচু গর্ত সড়ক হওয়ায় গাড়ির নানা যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে পড়ে প্রায়ই। এগুলো ঠিক করতে করতেই আমাদের লাভ-ক্ষতি প্রায় সমান হয়ে যায়। কুমারখালী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিডি) মো. নাজমুল হক বলেন, এই রাস্তার স্টেমেট পাঠাইছি দেখি বরাদ্দ পাইলে কি করা যাই। তবে উপজেলার আইডিভুক্ত সড়ক কত কিলোমিটার জানতে চাইলে তিনি বলেন,এভাবেতো বলা যায় না অফিসে আসতে হবে ফাইল-টাইলের ব্যাপার স্যাপার।
স্থানীয়রা বলছেন, বরাদ্দের অজুহাত না দেখিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু না করলে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে।
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার একটি আঞ্চলিক সড়ক দীর্ঘ ৫ বছর ধরে খানাখন্দে ভরা রয়েছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই বেহাল পথে চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। যানবাহন, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও রোগী পরিবহনে দেখা দিয়েছে মারাত্মক দুরবস্থা।
সোমবার বেলা ১২ টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, চরফ্যাশন উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের হলুদ দালান মেইন সড়ক থেকে ভাসানচর বেড়িবাঁধ পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৯৯ শতাংশ কার্পেটিং উঠে গেছে। কোথাও কাদামাটি, কোথাও আবার হাটুসম গর্ত তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপর থেকে কোনো সংস্কার করা হয়নি। ফলে ধীরে ধীরে পুরো কার্পেটিং উঠে গিয়ে সড়কটি প্রায় চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ে।
রসুলপুর ৪নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু তাহের মাঝি বলেন, এই সড়ক দিয়ে রসুলপুর ইউনিয়নের ৪ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড ও চরমানিকা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডসহ আশপাশের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করেন। অসুস্থ রোগী হাসপাতালে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। শুধু কষ্ট নয়, অনেক সময় জীবনও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।
একই এলাকার চা দোকানি জাহাঙ্গীর জানান, ২০১১ সালে সড়কটি নির্মাণের পর প্রায় ৮-৯ বছর মানুষ চলাচল করেছে। কিন্তু গত ৫ বছর ধরে কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে গাড়ি ও পথচারী সবাই মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে।
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক শফিউল্লাহ সবুজ বলেন, জরুরি রোগী পরিবহন করতে গিয়ে প্রচুর সময় নষ্ট হয়। মানুষের দুর্ভোগ সীমা ছাড়িয়েছে। অথচ কর্তৃপক্ষ কেউই নজর দিচ্ছেন না।
ওই সড়কে নিয়মিত অটো রিকশা চালক বশির ও বেলাল জানান, এই সড়কে রিকশা চালাতে গিয়ে বারবার যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়। যা আয় করি তার বেশির ভাগই মেরামতে চলে যায়। তাই দ্রুত সড়ক মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।
চরফ্যাশন উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. সাদ জগলুল ফারুক জানান, সড়ক সংস্কারের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই ওই আঞ্চলিক সড়কটির কাজ শুরু করা হবে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথি বলেন, গ্রামবাসীর ভোগান্তির বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ‘আগামীর অগ্রনায়ক’ শীর্ষক বুকলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা এলাকার বিভিন্ন মার্কেটে গিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাঝে বুকলেট বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক সাবেক সহসভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির দলীয় মনোয়ন প্রত্যাশী অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল।
বুকলেট বিতরণকালে অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল বলেন, রাষ্ট্র কাঠামোর ৩১ দফা আগামীর পজিটিভ বাংলাদেশ। ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে পারলেই বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে মাথা তুলে দাড়াবে। বাংলাদেশের জনগণ একটি সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রের গর্বিত নাগরিক হবেন। যেখানে দারিদ্র্যতা ও ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি বলেন, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফার মধ্যেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানসহ মানুষের মৌলিক অধিকার এবং বাস্তবায়নের পথ দেখানো হয়েছে। আমাদের এই ভাবনাকে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। দলের সকল নেতাকর্মী, তরুণরা প্রত্যেকেই এই ৩১ দফার অ্যাম্বাসেডর।
বুকলেট ও গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন, সোনারগাঁ পৌরসভা বিএনপির সহ সভাপতি আনোয়ার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মনির, কাঁচপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সোহেল আরমান, সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শফিক ভূইয়া, সোনারগাঁ পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আতা রাব্বি জুয়েল, সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা বাবু, বৈদ্দ্যের বাজার ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আদিব ইকবাল প্রমুখ।
একটি সভ্য সমাজে এই মব সংস্কৃতি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সরকারের সদিচ্ছার অভাব নেই, তবে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যে অভিজ্ঞতা দরকার, তার ঘাটতির কারণেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। দেশে চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।
সোমবার দুপুর ১২টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
রহমাতুল্লাহ বলেন, নির্বাচন ছাড়া দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই সরকারের অঙ্গীকার অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা তাদের দায়িত্ব। স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি না করে সেই অঙ্গীকার পূরণ করা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে সরকারের ব্যর্থতা জনগণের আস্থা ও প্রত্যাশাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক যখন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় উদ্যোগের অভাবের কথা স্বীকার করেন, তা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য দুঃখজনক।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে কথা বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হন। পরে শহীদ জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করেছিলেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না।
রহমাতুল্লাহ জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ হলে জাতীয় নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু হবে, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। তাই এখন থেকেই সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা আবারও হুমকির মুখে পড়বে। দলের প্রার্থী মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় হলে দল যাকে মনোনয়ন দেবে, বিএনপি ঐক্যবদ্ধভাবে তার পক্ষেই কাজ করবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম খসরু, সহসভাপতি জাকির হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক নুরুল আলম ফরিদ, কমল সেন গুপ্ত, সাইফুর রহমান মিরণ, সৈয়দ মেহেদী, তারিকুল ইসলাম তুহিনসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা।
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে সঙ্গীত বা গানের শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে এক বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ইং) সকাল ১১টায় নান্দাইলের চন্ডিপাশা খেলার মাঠ থেকে এ মিছিল শুরু হয়ে উপজেলার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে নান্দাইল উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ওপ্রতিষ্ঠান থেকে হাজারো ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
ইত্তেফাকুল উলামা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নান্দাইল উপজেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন,।
"৯২% মুসলমানের এই দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে সঙ্গীতের শিক্ষক নিয়োগ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এটি আমাদের ধর্মীয় চেতনাকে আঘাত করার শামিল। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের জোর দাবি জানাই।
বক্তারা আরও বলেন, সরকার যদি দ্রুত এই বিষয়টি সমাধান না করে, তবে সারা দেশে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
কর্মসূচিকে সফল করতে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় ধর্মীয় জনগণ ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করেন। শান্তিপূর্ণ এই মিছিলের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসল্লী ও সাধারণ মানুষের দাবি সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সারা দেশে দেশীয় মাছের সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। এই সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের কোন বিকল্প নাই। সরকার দেশের নদ-নদীতে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করতে কার্যক্রম গ্রহণ করছে।
উপদেষ্টা আজ সকালে কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান,নারী কৃষক এবং স্হানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বন্যায় নদীগুলোতে পলি পরার কারণে নাব্যতা হ্রাস, পানি দূষণ, চায়না জাল ব্যবহার ও ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে মাছ কারণে দিনদিন মাছের পরিমাণ কমছে। জোরালো অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ মাছ ধরার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করতে হবে। অভিযান চলমান রাখতে নদীগুলোতে স্পীড বোটের ব্যবহার করা হবে।
চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে তারা সরকারি অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া তিনি প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।
খামারিদের উৎপাদিত দুধ সংরক্ষণ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, যথাযথ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের অভাবে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই এই অঞ্চলে চিলিং সেন্টার স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
জুলাই যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, জুলাই যোদ্ধাগণ অনেকে জীবন উৎসর্গ করেছেন আবার অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের এই ঋণ ভুলবার নয়। এজন্য তিনি সরকারি ও এনজিওর উদ্যোগে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানান।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের সভাপতিত্বে আরো উপস্হিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোক্তাদির খান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণের অতিরিক্ত উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ রানাসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এরপর উপদেষ্টা কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের ছড়ারপাড় গ্রামে নারী কৃষকের বাড়ি পরিদর্শন করেন।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে এ আহ্বান জানান তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘২০০৭ সাল থেকে প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস পালিত হয়ে আসছে। গণতন্ত্রের সারবত্তা ও এর অন্তর্নিহিত শক্তি সম্পর্কে বিশ্বসম্প্রদায়ের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যেই এই দিবসটি পালিত হয়।’
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে গণতন্ত্র চর্চার লক্ষ্যে প্রচলিত একটি বিশেষ দিন। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর শ্রদ্ধা ও তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি, আহতদের সমবেদনা জানাচ্ছি। সারা বিশ্বের গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রতি জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।’
তিনি আরো বলেন, ‘মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলেন একদলীয় বাকশালের আগ্রাসী থাবা থেকে।
তার কালজয়ী দর্শন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মর্মমূলে ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র। আর প্রকৃত গণতন্ত্রের ভিত্তিই হচ্ছে মানবিক মর্যাদা, ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার ও সাম্য। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অগ্রগামী করেছিলেন শহীদ জিয়ার চিন্তা ও দর্শনকে। আর এ জন্য তাকে সহ্য করতে হয়েছে বিভিন্ন সময়ের স্বৈরতন্ত্রের হিংস্র আক্রমণ।
বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকেই বারবার স্বৈরতন্ত্র হানা দিয়েছে। রাজনৈতিক দল ও সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করা, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা, ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচন করা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা ইত্যাদি অনাচার করা হয়েছে রাষ্ট্রশক্তিকে হাতের মুঠোয় নিয়ে। একটি ভীতিকর ও কর্তৃত্ববাদী পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছিল ক্ষমতাকে চিরস্থায়ীভাবে ধরে রাখার স্বপ্নে বিভোর হয়ে। গত দেড় দশক আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আত্মপ্রকাশে গণতন্ত্র ছিল অবরুদ্ধ, বন্দি রাখা হয়েছিল সারা জাতিকে। গণতন্ত্রের নীতিমালা প্রচার ও সমুন্নত রাখার যেকোনো প্রচেষ্টাকেই পতিত আওয়ামী সরকার নির্দয়ভাবে প্রতিহত করেছে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘এবারের আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের মূল প্রতিপাদ্য, ‘অ্যাচিভিং জেন্ডার ইকুইলিটি অ্যাকশন বাই অ্যাকশন’, অর্থাৎ পদক্ষেপের পর পদক্ষেপ গ্রহণ করে লিঙ্গ সমতা অর্জন করতে হবে। গণতন্ত্রে নারী-পুরুষ বা অন্য যেকোনো লিঙ্গের মানুষ লিঙ্গ-নির্বিশেষে সবার সমান সুযোগ ও মর্যাদা লাভ করে। এটি একটি মূল মানবাধিকার। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র-সমাজে কেউ বঞ্চনার শিকার হলে জোরালো প্রতিবাদের পরিবেশ থাকে, সে কারণে নারী-পুরুষ বা অন্য যেকোনো লিঙ্গের ভেদরেখা তীব্র হতে পারে না এবং ক্রমান্বয়ে সমানাধিকার নিশ্চিত হওয়ার পথে অগ্রসর হয়।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র হলো একটি সর্বজনীন মূল্যবোধ ও রাজনৈতিক পদ্ধতি, জনগণের নিজস্ব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিসর নির্ধারণে স্বাধীনভাবে প্রকাশিত ইচ্ছা এবং জীবনের সব ক্ষেত্রে তাদের পূর্ণ অংশগ্রহণের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। গত বছরের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার এক নজিবিহীন গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ইতিহাসে এক ভয়ংকর স্বৈরশাসনের পতন ঘটে। এখন তাই ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আমাদের একযোগে কাজ করে যেতে হবে। আমাদের রাষ্ট্র মেরামতের ভিত্তি হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন; বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের সব মূলনীতির প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োগ। ইনশাআল্লাহ আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যেখানে নিশ্চিত হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সমৃদ্ধি ও স্বনির্ভরতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উদার রাজনৈতিক পরিবেশ এবং সামাজিক স্থিতি ও ন্যায়পরায়ণতা।’
মন্তব্য